মদের গন্ধে শ্বাস নেওয়া দায় হয়ে যাচ্ছে আয়েশার কিন্তু তাও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না কারণ মুখ টা কাপড় দিয়ে বাঁধা,,,এতে আহিলের কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই সে তো নিজের কাজে ব্যস্ত,,,আয়েশার শরীরে ডুবে রয়েছে আহিল নিজের কামনা মেটাতে,,,,আয়েশার মন চাইছে হাতের সামনে থাকা ফুলদানিটা দিয়ে আহিল কে আঘাত করতে কিন্তু আফসোস সেটা ও আয়েশা পারবে না কারণ মুখের সাথে সাথে হাত টাও বাঁধা বিছানার সাথে,,,আয়েশা শুধু চোখের জল বিয়োগ দিচ্ছে আর কুঁকীয়ে উঠছে যখন আহিল আয়েশার গলায়,,পুরো শরীরে কামড় দিচ্ছে,,
কিছুক্ষণ পর আহিল আয়েশার অপর থেকে উঠে গেলো আর পাশে রাখা শার্ট টা হাতে নিলো,,,আয়েশার দিকে চোখ যেতেই আহিল দেখলো কাঁদতে কাঁদতে আয়েশার চোখ মুখ ফুলে গেছে আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে আয়েশা জ্ঞান হারাবে,,,কারণ আয়েশা খুবই উইক একটু কিছুতেই আয়েশা খুব ভয় পেয়ে যায় এসব ভেবে আহিল আযেশ্র দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আয়েশার হাতের বাঁধন আর মুখের বাঁধন খুলে দিলো আর গায়ের উপর চাদর টা দিয়ে দিলো
আয়েশা আস্তে আস্তে চাদর টা বুকের কাছে নিয়ে উঠে বসলো আর ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললো
আয়েশা: কেনো করলি তুই আমার সাথে এমন বল?? কি ক্ষতি করেছিলাম আমি তোর?? কেনো এভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেল করে আমার বাবা মা দাদার ক্ষতি করবি ভয় দেখিয়ে বিয়ে করলি??? তোকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম আর তুই আমার এতো বড়ো সর্বনাশ করলি???
আহিল কিছু না বলে চুপ চাপ নিজের শার্ট টা পরে হাসতে লাগলো আয়েশার শেষ কথা গুলো শুনে আর বললো
আহিল: কি বললি?? ভালবাসতিস?? হা হা হা হাসাস না আমায়,,,তুই কোনদিন আমায় ভালোবেসেছিস?? (সেন্টার টেবিল থেকে মদের বোতল টা নিয়ে গ্লাসে মদ ঢালতে ঢালতে)
আয়েশা: আহিল তুই আমার ছোটবেলার বন্ধু,,,ভালোবাসার মানুষ হয়ে ওঠার আগে তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলিস যাকে সব কথা শেয়ার করতাম আমি যার সাথে কথা না বললে আমার দিন কাটত না,,,অসম্পূর্ণ মনে হতো নিজেকে,,,তুই বিদেশে চলে যাওয়ায় নিজেকে সবচেয়ে বেশি একা,,অসহায় মনে হতো,,,বড়ো হওয়ার সাথে সাথে বুঝলাম পারবো না তোকে ছাড়া থাকতে,,,জীবনের প্রত্যেক টা মুহুর্তেই আমার তোকে দরকার,,,আস্তে আস্তে আমার ভালোবাসার মানুষ হয়ে উঠলি তুই,,,সেই তুই বলছিস আমি তোকে ভালোবাসতাম না?? সব মিথ্যে??
আহিল: হ্যাঁ হ্যাঁ সব মিথ্যে,,,সব সব সব তুই আর তোর বাড়ির প্রত্যেকে একেকটা ফ্রড,,জোচ্চোর বিশ্বাসঘাতক,,প্রতারক (গ্লাসের মদ টা এক বারে খেয়ে নিলো)
আয়েশা: ব্যস!!! আমার সর্বনাশ তো করেছিসই এখন আমার পরিবারের নামেও বাজে কথা বলছিস?? কি মুখ দেখাবো আমি ওদের কাছে?? কেনো করলি এমন আহিল?? তুই তো এমন ছিলিস না,,আমার অনিচ্ছাকৃত কোনো কাজ করতিস না আমি যেটা চাইতাম সেটাই করতিস তাহলে আজ কেনো এমন করলি?? কেনো এতো কষ্ট দিচ্ছিস তুই আমায়?? যেই তুই আমাকে সব সময় আগলে রাখতিস বিদেশ গিয়েও প্রত্যেক মুহুর্তে খবর নিতিস আর আজ সেই তুই কি না আমার এতো বড়ো সর্বনাশ করলি,,,আমার তিল তিল করে গড়া একেকটা স্বপ্ন এক নিমিষে ভেঙে দিলি?? আই হেট ইউ আহিল,,আই রিয়েলি রিয়েলি হেট ইউ
আহিল কিছু না বলে বাঁকা হেসে মদের বোতলে চুমুক দিলো আর ডান হাতে থাকা গ্লাস টা আয়েশার পায়ের কাছে ছুড়ে মারলো,,,আয়েশা একটু কেঁপে উঠলো এদিকে আহিল সিগারেটের প্যাকেট গুলো নিয়ে হেলতে দুলতে ব্যালকনি তে গিয়ে ইসি চেয়ারে বসে পরলো আর হাতে মদের বোতল তো আছেই
আয়েশা একটু ঝুঁকে দেখলো আহিল এক হাত দিয়ে মদ খাচ্ছে আর এক হাত দিয়ে একের পর এক সিগারেট টেনে যাচ্ছে এই দেখে আয়েশা বললো
আয়েশা: আমার সর্বনাশ করে এখন এইসব ছাইপাশ গেলা হচ্ছে না?? সব হয়েছে এই বিদেশে যাওয়ার ফল কতবার বলেছিলাম আন্টী কে পাঠিও না আহিল কে বিদেশ,,শুনল না তাই এরম বজ্জাত বিলাতি হনুমান হয়ে বাড়ি ফিরেছে,,,আই হেট ইউ আহিল আই জাস্ট হেট ইউ তুই কি করে পারলি আমার সাথে এমন করতে?? — আয়েশা কাঁদতে লাগলো অঝোরে,,,সারা শরীরে ব্যাথা করছে আয়েশার তাই একটু একটু করে বিছানা থেকে নামলো কিন্তু মাটিতে পা ফেলতেই কুঁকীয়ে উঠলো
আয়েশা: আহ!!! — আয়েশা আস্তে করে পা উঠিয়ে দেখলো কাঁচের টুকরো ঢুকেছে আয়েশা টাং দিয়ে বাড় করতেই ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোতে লাগলো কারণ অনেক টা গভীরে গেঁথে ছিলো কাঁচ টা,,,আয়েশা কাঁচের টুকরো টা হাতে নিয়ে বললো
আয়েশা: বিশ্বাস কর আহিল এই কাঁচ টা আমায় যতো টা না যন্ত্রণা দিয়েছে তার থেকেও বেশি যন্ত্রণা আজ তুই দিয়েছিস আমায়,,,আমার মন টা ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিস তুই,,,যেই তুই কি না আমার চোখে এক ফোঁটা জল আসতে দিতিস না সেই তুই আজ — কাঁদতে কাঁদতে চাদর টা পেঁচিয়ে শক্তি নিয়ে চলে গেলো ওয়াশরূমে আর ধরাস করে দরজা টা বন্ধ করে দিলো
ওয়াশরূমের ট্যাপ ছেড়ে বসে পরলো ধপ করে আয়েশা আর কাঁদতে লাগলো অঝোরে,,,
💫💫 কিছুক্ষণ আগে 💫💫
আহিল কি করছিস ছাড় আমার হাত,,,এইভাবে আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস,,
আহিল আয়েশা কে আর কিছু বকতে না দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো খাটের ওপর আর বললো
আহিল: পাঁচ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নীচে আসবি,,আমি সাজানোর লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি আমি গেলেই ওরা তোকে সাজিয়ে দেবে
আয়েশা: কিন্তু কেনো?? কি আছে আজ আর তুই হঠাৎ এমন ব্যবহার কেনো করছিস??
আহিল: যা বলেছি চুপ চাপ কর,,,আজ আমাদের বিয়ে হবে
আয়েশা: বিয়ে??? আমি তোকে এখন বিয়ে করতে পারব না
আহিল: কেনো?? এই তো বললি তুই আমায় ভালোবাসিস তাহলে বিয়ে করতে প্রব্লেম কোথায়?? নাকি অন্য কাওকে পছন্দ হয়েছে নতুন করে??
আয়েশা: আহিল কি বলছিস তুই এসব?? দেখ তুই তো জানিস আমি বড়ো হয়ে একজন ডাক্তার হতে চাই পড়াশোনা করতে চাই এখনই বিয়ে করে নিলে আমার স্বপ্ন কি করে পুরণ হবে আহিল,,,তুই না হয় একজন সাকসেসফুল বিসনেস ম্যান হয়ে গেছিস নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছিস কিন্তু আমার কি হবে?? আর তুই তো আমাকে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট করতিস এ ব্যাপারে তাহলে আ….
আহিল: শাট আপ!!! নো মোর ওয়ার্ডস!!! চুপচাপ আমায় বিয়ে করবি তুই
আয়েশা: নাহ কক্ষনো না
আহিল: ওহ তাই তো?? তুই সোজা কথার মেয়ে না,,ভালোভাবে বললাম বুঝলি না এবার তাহলে আমার খারাপ দিক টা দেখ — আহিল নিজের পকেট থেকে ফোন বার করে একজন কে ভিডিও কল দিলো আর আয়েশার দিকে ঘোরাতেই আয়েশা আতকে উঠলো কারণ
ভিডিও কলে আয়েশার বাবা মা কে আটকে রাখা হয়েছে আর দাদার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে,,,আয়েশা হাত বাড়িয়ে ফোন টা নিতে গেলেই আহিল ফোন টা কেটে দেয় আর বলে
আহিল: এবার বল বিয়ে করবি নাকি আমি তোর পরিবার কে….
আয়েশা: করবো আমি তোকে বিয়ে,,,প্লিজ আমার পরিবার কে কিছু করিস না,,প্লিজ (কাঁদতে কাঁদতে)
আহিল: গুড গার্ল
বলেই আহিল চলে গেল আর পার্লারের মেয়েরা এসে আয়েশা কে সাজিয়ে দিলো,,,এবং কিছুক্ষণের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হলো,,,
বাসর ঘরে আয়েশা চুপচাপ বসে ছিলো অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় আয়েশা ঘুমে ঢুলছিলো সেই সময় ধরাস করে দরজা খুলে ঢুলতে ঢুলতে টলমল পায়ে নেশায় চুর হয়ে থাকা আহিল ঢুকল রূমে আর দরজা বন্ধ করে দিল
আয়েশা: ওহ বিয়ে করেছিস বলে কি এবার নিজের পুরুষোত্ত দেখাবি??
আহিল উত্তরে কিছু না বলে একটা দড়ি আনল আর আয়েশার সামনে এসে বললো
আহিল: অফকোর্স বেবি,,,কাম ওন লেটস এন্জয় — আহিল কথা বলতেই আহিলের মুখ দিয়ে মদের গন্ধ বেরোল আর আয়েশা আহিলের থেকে দুরে সরে বললো
আয়েশা: একদম কাছে আসবি না আমার,,,ছিঃ!! তুই মদ খেয়েছিস??
আহিল এক ঝটকায় আয়েশা কে কাছে টেনে নিলো আর আয়েশা কে বিছানায় ফেলে হাত মুখ বেঁধে দিলো আর নিজের কামনা পুরন করতে লাগলো
💫💫 এখন 💫💫
আয়েশা এসব ভাবতে ভাবতে শাওয়ারের তলায় জ্ঞান হারালো অন্যদিকে আহিল একের পর এক সিগারেট টেনে যাচ্ছে মদের বোতলে মদ শেষ হয়ে গেছে তাও জানো আহিলের নেশা হচ্ছে না চোখ দুটো জ্বালা করছে,,,আহিল উঠে ঘরে আসতেই বিছানার দিকে তাকালো দেখলো সাদা চাদরে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ,,,এটা দেখেই আহিল হাত মুঠো করে চোখ বন্ধ করে নিলো,,,শুনতে পেল শাওয়ারের আওয়াজ আহিল ভাবলো অনেক্ষন ধরেই তো আয়েশা বাথরুমে তাহলে কি??? ভাবতে না ভাবতেই আহিল ছুটল ওয়াশরূমের দিকে,,,দরজা বন্ধ পেয়ে দরজা ভেঙে ঢুকে দেখলো
,
,
,
,
চলবে??
#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [ I_Am_In_You ]
#লেখনীতে_আয়েশা
#পর্ব_১