তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [I_Am_In_You] #লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল) #পর্ব_১৭,১৮,১৯

0
203

#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [I_Am_In_You]
#লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল)
#পর্ব_১৭,১৮,১৯

আয়েশা কথা শেষ করার আগেই ওর পায়ের কাছে হুমড়ি খেয়ে একটা মেয়ে পরলো,,,আয়েশা সেই দেখে পিছিয়ে আসতেই যাকে দেখলো তাকে দেখে বলে উঠলো,,,

আয়েশা: রিয়া!

রিয়া মাথা উঁচু করে আয়েশার দিকে তাকালে আর নিজের চোখের জল মুছে উঠে দাঁড়ালো আস্তে আস্তে কিন্তু টাল সামলাতে না পেরে পরে যেতে নিলেই আয়েশা ধরতে যায় আর কোথা থেকে আহিল সামনে এসে আয়েশা কে আটকে দেয়,,,আহিল আয়েশার দিকে ফিরে রয়েছে আর আয়েশার বাহ ধরে রেখেছে,,,এদিকে রিয়া কে কেউ না ধরায় রিয়া ঠাস! করে আবার পরে গেছে,,,

আহিল: তোমার ওকে ধরার কোনো প্রয়োজন নেই,,,ওর মতো পাপী মানুষ কে ছুলে তুমি হয়তো অপবিত্র হবে না কিন্তু ওর পাপ গুলো ধুয়ে যাবে যা আমি চাই না,,

আহিল কথা গুলো বলেই রিয়া কে মেঝে থেকে হেঁচকা মেরে টেনে তুলে দাঁড় করিয়ে বললো,,

আহিল: চুপচাপ সব সত্যি টা স্বীকার কর নাহলে আমি কি করতে পারি তুই ভালো করে জানিস,,

রিয়া: ত..তুই আমাকে শুধু শু..শুধু ভুল বুঝছিস,,,

আহিল: ও লহ রিয়া স্টপ দিস ননসেন্স ওকে,,,

রিয়া: আ..আমি কিছু ক..করিনি

আহিল: তার মানে তুই বলবি না তাই তো?? ফাইন বলিস না,,আমি বরং তোর বোন কে…

আহিল কে থামিয়ে দিয়ে রিয়া বলে উঠলো,,,

রিয়া: নাহ! আমার বোন কে কিচ্ছু করবি না প্লিজ,,,আমি বলছি সবটা,,

আহিল: দেট’স গুড

রিয়া: তুই আমেরিকার থেকে ফেরত আসার পর একদিন ঋক আমাকে বলেছিল যে তোর বাড়ি যেতে,,,ও বলেছিল তুই নাকি বিয়ে করেছিস কিম্তু আমি বিশ্বাস করিনি,,,ওর কথা মতো তোর বাড়িতে এসে দেখলাম সত্যি তুই আয়েশা কে বিয়ে করেছিস,,আর ঋক বলে দিয়েছিল আমায় তোদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন তা জানো আমি ওকে গিয়ে বলি তাই ইচ্ছে করে আয়েশার রাস্তায় পা দিয়েদি আর ও তোর গায়ে কফি টা ফেলে দেয় কিন্তু সেখানে আমি কিছু বুঝতে পারিনি,,,পরে যখন তুই আর আয়েশা তোর রূমে ছিলি আয়েশা তোকে ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছিল সে সব আর তুই আমাকে আয়েশা কে নিয়ে যা যা বলেছিস সব ঋক কে বলেদি,,,ঋক সব শোনার পর কনফিউস হয়ে যায় আর তারপর আয়েশার সাথে দেখা করার কথা ভাবে,,,

এটা ছিলো ঋকের সেকেন্ড প্লান,,ঋক ইচ্ছে করে আহিল কে দেখে আয়েশা কে জড়িয়ে ধরে ছিলো আর ওসব বলেছিল যাতে আহিলের আয়েশার প্রতি সন্দেহ আর অবিশ্বাস টা জোরালো হয়,,,সেটাই হয়েছিল আহিল আয়েশা কে বিশ্বাস করেনি,,,কিন্তু সেই রাত্রে আহিল হোটেল গেছে এটা শুনে ঋক আমায় বললো যাতে আমি আহিলের ড্রিংকসে ড্রাগ মিশিয়ে দি,,,ড্রাগসের ফলে আহিলের কিছু মনে থাকবে না তাই সেই সুযোগে আহিলের ক্লোস হয়ে তার ছবি তুলে আয়েশা কে পাঠালে,,,আহিলের মতো আয়েশার মনেও অবিশ্বাস জন্মাবে,,,কিন্তু সেই প্লান টা ভেস্তে গেলো,,,

জ্যাক: আমার জন্য!!!

রিয়ার কথার মাঝেই জ্যাক আর আরোহী সেখানে উপস্থিত হলো,,,জ্যাক রিয়া কে কথা শেষ না করতে দিয়ে নিজেই বলে উঠলো,,,এদিকে আহিল রিয়ার কথা গুলো শুনে রাগের পাশাপাশি অপরাধবোধ অনুভব করছে,,,মনে করছে এদের এই সামান্য ষড়যন্ত্রর কাছে আহিলের ভালোবাসা হেরে গেলো,,,

রিয়া: হ্যাঁ সেটা ঋক কে জানাতে ঋক ভীষণ রেগে যায় আর বলে পরেরদিন জানো আমি আহিলের কাছে গিয়ে সবটা আয়েশার বিরুদ্ধে বলি,,,কিন্তু সেখানে জ্যাক আর আরোহী আহিল কে আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিয়ে দেয় আর আমি চুপচাপ সরে এসে ঋক কে জানাতেই ঋক বলে যে এবার সব কিছু ও করবে,,,এরপর আমি শুনতে পাই আয়েশার দাদার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে আর সেইদিনেই জ্যাক কে কেউ মারার চেষ্টা করেছে,,,এসব শুনে আমি বুঝতে পারি যে এগুলো ঋক করেছে কারণ জ্যাকের জন্য ওর প্লান ভেস্তেছিলো তাই ও আমাকে বলেছিল যে জ্যাক কে কোনো মতে ওর রাস্তা থেকে সরাবে,,,

অঙ্কুর: আজকের প্লান টাও নিশ্চই ঋকের,,,তাছাড়া আর কারই বা হবে,,

রিয়া: হমম,,ঋক আমাকে বলেছিল যে আহিলের ক্লোস হতে আর সেটা জানো আয়েশা নিজের চোখে দেখে,,,তাই আমি আহিলের জন্য কফি আনতে গিয়ে ঋক কে ফোন করি আর বলি ও জানো আয়েশা কে বলে দেয়,,,তারপর তো আহিল নিজে থেকেই আয়েশা কে ওসব বলে,,,আমি ভাবিনি এটা আহিলের প্লান ছিলো (কথাটা শুনে আহিল বাঁকা হাসলো)

রিয়া: আহিল,,আহিল প্লিজ এবার আমার বোন কে ছেড়ে দে,,,আর আমাকেও যেতে দে প্লিজ,,আমি তো সব বলে দিলাম বল,,,

আহিল: এতো সহজে কি করে তোকে যেতে দি বল তো,,,তোকে পেয়েছি কিন্তু ঋক কে তো পাইনি আর তুই হলি ঋকের ডান হাত,,তোর দ্বারাই আমি ঋকের কাছে পৌঁছাতে পারবো,,,তুই টেনশন করিস না তোর বোন কে আমি কিছু করবো না,,,

রিয়া: তুই আমার দ্বারা ঋকের কাছে পৌঁছাতে পারবি না,,,ও আমার সাথে দরকার পরলে কন্টাক্ট করে তাও আবার আলাদা আলাদা নম্বর দিয়ে,,,লোকেশন ট্রাক করার ও উপায় নেই কারণ ও যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কল করে,,কল করার পর সে জায়গায় সিম টা ফেলে দেয়,,

আহিল: গার্ডস,,,ওকে নিয়ে যাও আর ওর বোনকে ওর সাথেই রেখো,,

গার্ডরা রিয়া কে নিয়ে চলে যেতেই জ্যাক বলে উঠলো,,

জ্যাক: এতো দেখছি আমার থেকে ও উপরে যায় বুদ্ধি তে 🤔🤔 যেখানে আমার থেকে বুদ্ধি তে উপরে যায় সেখানে তো আহিলের কোনো প্রশ্নই ওঠে না ও তো আস্ত একটা কুলুর বলদ 😪😪

আহিল: জ্যাকককক!! একটু বেশি কথা বলছিস না তুই??(দাঁতে দাঁত চেপে)

জ্যাক: চিল্লাবি না একদম,,আমি বুদ্ধি না খাটালে তুই বৌদি কে আরো অবিশ্বাস করতিস আর রিয়ার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেতিস না,,,কতো ভালো বল আমি 😌😌

আরোহী: রিয়ার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পেরেছো আমার বুদ্ধিতে এটা তুমি ভুলে যাচ্ছো জ্যাক 😒😒

জ্যাক: আব হ্যাঁ হ্যাঁ আমাদের দুজনের বুদ্ধিতে 😅😅

আরোহী: আমি তোমাকে প্রথম থেকে সাহায্য না করলে কি করে কি করতে তুমি হম??😏😏

জ্যাক: 😒😒

আহিল: জ্যাক তুই বোধ হয় সেদিনের তোর অবস্থাটার কথা ভুলে যাচ্ছিস (হাতের স্লীভস গোঁটাতে গোঁটাতে)

জ্যাক: এ..এই আ..আমার ও হাত আছে বলে দিচ্ছি,,,শুধু তো মারতেই পারিস বুদ্ধি তো নাই,,,ভীমের বাচ্চা একটা,,

আহিল: ওয়াট!! ওয়াট ডু ইউ মিন বাই ভীমের বাচ্চা,,

জ্যাক: ক..কেনো মহাভারত দেখিস নাই,,

আহিল: তুই মহাভারত ও দেখে বসে আছিস??

অঙ্কুর: আহা! সেটা বড়ো কথা নয়,,,বড়ো কথাটা হলো জ্যাক যা বলেছে তা একদম পিওর সত্য,,

আহিল: তবে রে,,,

ব্যাস তিন জনে মিলে সারা ড্রয়িং রুম দৌঁড়ে বেড়াচ্ছে আর ওদের দেখে সবাই হাসছে,,,আয়েশার তো হাসি থামার নামই নেই,,যখন থেকে আহিল কে জ্যাক কুলুর বলদ বলেছে তখন থেকে আয়েশা হেসেই চলেছে খিল খিল করে,,,আহিল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে থেমে গেলো আয়েশার হাসির শব্দ শুনে,,,আহিল কতদিন পর আয়েশার এমন মন খুলে হাসি দেখছে,,,আহিলের ডান কাঁধে জ্যাক হাত রাখলো আর বাম কাঁধে অঙ্কুর,,আহিল ওদের দিকে তাকিয়ে নিজের দু হাত দুজনের কাঁধে রাখলো আর তিন জনে হেসে দিলো,,,

সবাই মিলে হাসি ঠাট্টা করে খেতে গেলো,,,দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে গেলো,,,এবার পালা বাড়ি যাবার,,,আহিল আয়েশার রূমে গেলো আর গিয়ে দেখলো আয়েশা এক মনে জানলার বাইরে তাকিয়ে আছে,,,আহিল পিছনে এসে দাঁড়াতেই আয়েশা বলে উঠলো,,,

আয়েশা: আপনি চলে যান,,,আমি আপনার সাথে ফিরবো না,,

আয়েশার মুখ থেকে আপনি ডাকটা শুনে আহিলের ভীষণ খারাপ লাগলো,,,তার থেকেও বেশি কষ্ট হলো যখন আয়েশা বললো ও আহিলের সাথে ফিরবে না,,,আহিল বললো,,

আহিল: আয়ু,,

আয়েশা: প্লিজ!! (আহিল কে থামিয়ে দিয়ে) আয়ু নামে আপনি আমায় আর ডাকবেন না,,আপনার এই অধিকার টা আপনি হারিয়ে ফেলেছেন,,,আমি তো মিডল ক্লাস ফ্যামিলি থেকে বিলং করি,,,আমাকে আপনার সাথে কোনো দিক দিয়েই মানায় না,,,তাই আমি আপনার সাথে সমস্ত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে চাই,,,আপনার আর আমার কোনো সম্পর্ক নেই আজ থেকে,,

আহিল আয়েশার কথা শুনে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না,,,আহিল তো ইচ্ছে করে ওসব বলে ছিল,,,ঐসব তো প্লানের একটা অংশ ছিলো যা আয়েশা জানে তারপর ও কেনো এমন করছে আয়েশা,,

আহিল: আয়ু…(থেমে গেলো) আয়েশা তুমি তো সবটা জানো,,,আজ আমি যা যা বলেছি তা না বললে রিয়া কে কীভাবে ধরতাম বলো,,

আয়েশা: হম জানি,,,আমি আপনার আজকের কথা নিয়ে কিছু বলছি না,,কিন্তু একবার ভেবে দেখুন প্লানের অংশ হলেও কথাগুলো কিন্তু সত্যিই বলেছেন আপনি,,

আহিল: আয়েশা প্লিজ,,,

আয়েশা: আমি আর আপনার কোনো কথা শুনতে চাই না,,এতদিন আমি আপনাকে ভালোবেসে এসেছি বিশ্বাস করে এসেছি আর আপনি?? আপনি দিনের পর দিন আমায় সন্দেহ করে এসেছেন,,,অবিশ্বাস করে এসেছেন,,ভালোবেসে কি এটাই পাওনা ছিল আমার?? অনেক তো সহ্য করলাম,,যা করিনি তার শাস্তি দিয়েছেন আপনি আমায়,,,আমি যা যা স্বপ্ন দেখেছিলাম আপনাকে আর আমাকে নিয়ে তা আপনি এক নিমিষে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন,,,বিয়ে করে স্ত্রীয়ের মর্যাদা দেননি,,এরপরেও আপনার সাথে সংসার করার কথা বলছেন?? পারবো না আমি!! যেই মানুষ টা আমাকে এক মুহুর্তেই জন্য বিশ্বাস করেনি সে কোনদিন আমায় ভালইবাসেনি,,,চলে যান আপনি,,,চলে যান,,,

আয়েশা কান্নায় ভেঙ্গে পরলো,,আর আহিল,,আয়েশার প্রত্যেক টা কথা আহিলের মন কে ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে তার ফলস্বরূপ আহিলের চোখের জল,,,আজ শুধু আয়েশা নয় আহিল ও কাঁদছে,,আহিল নিজের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছে,,,আহিলের মনে ও তো এই প্রশ্ন এসেছিল ” যেখানে আহিল আয়েশা কে বিশ্বাস করেনি সেখানে সত্যি কি আহিল ভালোবেসে ছিলো?? ” আজ আয়েশা সেই উত্তর দিলো ” নাহ! আহিল ভালোবাসেনি ” তাই আহিল আর কিছু বললো না চুপচাপ আয়েশার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো…..

[ফিরে আসবো আগামী পর্বে 🍁]

#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤[I_am_in_you]

#লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল)

#পর্ব_১৮

আহিল আয়েশাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা পার্কের বেঞ্চে নীচের দিকে তাকিয়ে বসে রয়েছে,,হঠাৎই নিজের পাশে কাওর উপস্থিতি টের পেলো আহিল,,পাশে তাকিয়ে দেখলো অঙ্কুর ও বসে আছে ওর মতই,,,অঙ্কুরের দিকে তাকাতেই অঙ্কুর বললো,,,

অঙ্কুর: কি এতো ভাবছিস বল তো?? তুই যখন থেকে বসে আছিস আমিও তখন থেকেই বসে আছি,,,বসে বসে মশা গুলো আমার গায়ের হাফ রক্ত সাবাড় করে দিলো আর তোর কোনো পাত্তাই নেই,,কি হ…

অঙ্কুরের কথা শেষ হওয়ার আগেই আহিল অঙ্কুর কে ঝাপটে ধরলো,,,অঙ্কুর ও আহিল কে জড়িয়ে ধরতেই বুঝলে আহিল কাঁদছে,,,আহিল আর আয়েশার মধ্যে যে সব কিছু ঠিক নেই তা অঙ্কুর বুঝতে পেরেছে যখন রিয়ার বলা কথা গুলোর সময় আহিল মাথা নীচু করে ছিলো,,,আর আহিল যখন চোখ মুছতে মুছতে বাড়ি থেকে বেড়ায় তখন সেটা অঙ্কুরের চোখে পরে,,,অঙ্কুর আয়েশার ঘরের দিকে এগোতেই দেখতে পেয়েছিল আয়েশা কাঁদছে,,,তাই অঙ্কুর আহিলের পিছনে চলে আসে,,,অনেক দিন পর দুই বন্ধু একসাথে হয়েছে,,,যেই আহিল কে ছড়া অঙ্কুর এক দণ্ড থাকতো না বন্ধুত্ব হওয়ার পর থেকে তাকে ছেড়ে এতদিন থেকেছে,,,তার ওপর আবার এতো ভুল বোঝাবুঝি,,,

আহিল কে সোজা করতেই আহিল অঙ্কুরের থেকে সরে আসে আর মাথা নীচু করে বলে ওঠে,,,

আহিল: আমাকে ক্ষমা করেদে অঙ্কুর,,আমি তোর বোনকে ভালো রাখতে পারিনি ওকে ভালোবাসতে পারিনি শুধু কষ্ট দিয়েছি,,অবিশ্বাস করেছি,,

অঙ্কুর: কে বললো তুই আমার বোনকে ভালোবাসতে পারিসনি?? তুই যদি আশু কে ভালো না বাসতি তাহলে ঐ ছবি ভয়েজ গুলো দেখা বা শোনার পর,,,আমেরিকা থেকে বিয়ে করতিস না,,,তুই বিয়ে করেছিলি আশু কে নিজের করে রাখার জন্য,,,যা শুধু ভালোবাসলেই মানুষ করে,,,

আহিল: না রেহ যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে আর যাই হোক ভালোবাসা থাকতে পারে না,,আমার উচিত ছিলো ওকে বোঝা,,,ওকে বিশ্বাস করা,,যার কোনটাই আমি পারিনি,,আমি ওর যোগ্য নই,,

অঙ্কুর: আহিল তুই তো সময় পাসনি ওকে বোঝার,,,তোর সাথে আমার বন্ধুত্ব হওয়ার পর তুই যখন আশু কে দেখিস তোর ওকে ভালো লাগে,,আস্তে আস্তে বুঝতে পারিস তুই ভালোবাসিস আশু কে,,,এরপর আমি জানলাম আর তারপর আশু,,,যেই সময় টা তোর আর আশুর একসাথে থাকা উচিত ছিলো একে অপরকে সময় দেওয়া উচিত ছিলো ঠিক সে সময় আনি…(থেমে গেলো) সে সময় তুই আমেরিকা চলে গেলি,,,আর সেখানে গিয়ে তুই যেগুলো দেখেছিস সেগুলো দেখার পর যে কেউ অবিশ্বাস করবে,,,হ্যাঁ মানছি তোর আশু কে একবার জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল বাট তুই তো পারতিস ওকে ভুল বুঝে অবিশ্বাস করে ছেড়ে দিতে,,,যখন আমরা কাওকে অবিশ্বাস করি তার সঙ্গে সব সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেদি কিন্তু তুই কি করেছিস?? আশু কে নিজের সাথে বেঁধে ফেলেছিস,,,ওকে আগলে আগলে রেখেছিস যাতে ও তোকে ছাড়া অন্য কাওর কাছে যেতে না পারে,,,আহিল একেক জনের ভালোবাসা একেক রকম হয়,,আর আশু নিজেও খুব ভালো ভাবে জানে তোর থেকে বেশি ভালো ওকে কেউ বাসতে পারবে না,,তাই যা গিয়ে আশুর অভিমান ভাঙা,,

আহিল অঙ্কুরের কথায় সাহস পেলো আর অঙ্কুর কে বললো,,,

আহিল: হমম তার জন্য তো একটা টেরা প্লানের দরকার

অঙ্কুর: টেরা প্লান মানে??

আহিল: তোর বোন তো আর এতো সহজে মানবে না তাই টেরা প্লানের দরকার হিহি😁😁

অঙ্কুর কিছুক্ষণ ভাবলো তারপর আহিল কে কিছু বলতে নিলেই দেখলো আহিল গায়েব,,,

অঙ্কুর: উফ্ফ এই জন্যই এই দুটোর মধ্যে এতো ঝামেলা,,খুনসুটি আর গেলো না,,,

কিছুক্ষণের জন্য অঙ্কুর থেমে গেলো,,,অঙ্কুরের চোখে ও আজ জল অঙ্কুর ভাবছে,,,আজ ও নিজে যেমন আহিল কে বোঝাতে পারলো তেমন যদি ওকেও কেউ বোঝাতো তাহলে হয়তো আজ আনিকা ওর সাথে থাকতো,,ওর পাশে থাকতো,,,

অঙ্কুর: আনিকা আমি তো তোমাকে ভালোবেসেছি,,,এখনো ভালোবাসি তুমি তো জানতে আমার মাথা গরম হয়ে গেলে আমি রেগে গেলে কি বলি না বলি তার ঠিক থাকে না,,তাহলে কেনো আমার রাগের মাথায় বলা কথা গুলো ধরে নিলে আর চলে গেলে আমায় ছেড়ে,,,আমাকে একটা শেষ সুযোগ ও দিলে না তোমায় ফিরে পাওয়ার,,,আমি যে আর পারছি না তোমাকে ছাড়া থাকতে,,,পারছি না,,,

অঙ্কুর চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বললো,,,

🍁

আয়েশা মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে রয়েছে আর নিজে নিজেই বলছে,,

আয়েশা: বেটা বদ,,খচ্চর,,গন্ডার,,বিলাই,,কুত্তা,,ভামবিড়াল,,ভোঁদড়,,আমেরিকান হনুমান,,বিলাতি লাল মুখপোড়া হনুমান,, আমি যেতে বললাম আর চলে গেলো! আহিলের বাচ্চা কাহিল তোকে তো আমি দেখে নেবো 😠😠 কোথায় আমি রাগ করেছি আমায় আদর করে রাগ ভাঙাবে তা না করে আমার কথা শুনে চলে গেলো,,একবার বকা ও দিলো না আপনি বলেছি দেখে,,,ধুর! ভালো লাগে না 😭😭 আর কথাই বলবো না আমি,,,ও কি জানে না আমি ওকে কতটা ভালোবাসি?? ওর কি করে মনে হলো আমি ওর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করবো?? আমি তো জানি ও আমায় কতটা ভালোবাসে,,ও যেগুলো দেখেছে শুনেছে ওর জায়গায় আমি থাকলে হয়তো আমি ও এক ভুল করতাম,,,আমরা সবাই একটা ষড়যন্ত্রর স্বীকার হয়েছি,,,বেটা বদ পোলা আমায় এগুলো জোর করে না বুঝিয়ে আমার কথা গুলো মেনে নিয়ে চলে গেলো 😭😭 অন্য সময় আমার কোনো কথা শোনে না আর আজ দেখো 😭😭 আসুক বেটা বদ বিলাতি হনুমান আমায় নিতে,,,ঝাড়ু পিটা করবো 😠😠

এইসব কথা বলতে বলতেই আয়েশার কানে গাড়ির হর্নের আওয়াজ এলো,,,আয়েশার মনে পরে গেলো যখন প্রথম আহিলের সাথে ওর ঝগড়া হয়েছিল তখন আহিল এভাবেই ওর ব্যালকনির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতো,,,আয়েশা সঙ্গে সঙ্গে চোখ মুছে উঠে দাঁড়ালো আর দৌঁড় দিয়ে ব্যালকনি তে চলে গেলো,,,

আয়েশা ব্যালকনি তে এসে দাঁড়াতেই দেখলো আহিল গাড়ির ছাদে পা ভাঁজ করে ডান কুনুই হাঁটুর ওপর ভর দিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে রয়েছে,,,আয়েশা কে দেখেই হাত টা গাল থেকে সরে গেলো আর আহিল একটা টাসকি খেলো,,,এটা দেখে আয়েশার হাসি পেলেও আয়েশা নিজেকে কন্ট্রোল করে নিলো,,,আর মনে মনে বললো,,

আয়েশা: কন্ট্রোল আয়েশা কন্ট্রোল,,,বেটা আহিল কে তোকে কাহিল করতে হবে,, (রেগে মুখ ফিরিয়ে নিলো)

আহিল লাফ দিয়ে নামলো আর দু-কানে হাত দিয়ে দাঁড়ালো আর উঠবোস করতে শুরু করলো,,,আহিল সমানে উঠবোস করছে আর বলছে,,,

আহিল: আয়ু বেবি!! আয়ু বেবি এবার থেকে তোমার কথা না শুনে কোনো কথা বিশ্বাস করবো না,,,আই প্রমিস,,এবারের মতো ক্ষমা করে দাও প্লিজ আয়ু বেবি! আই সোয়ার আমি আর কোনো দিন তোমায় ভুল বুঝবো না,,তুমি যদি সাদা কে কালো বলো আর কালো কে সাদা সেটাও বিশ্বাস করবো,,,ইভেন তুমি যদি বলো আমি ওবামা কিংবা ওসামা বিন লাদেনের থেকেও খারাপ দেখতে সেটাও মেনে নেবো বাট ক্ষমা করে দাও প্লিজ,,,

আয়েশার তো ভীষণ হাসি পাচ্ছে এসব দেখে কিন্তু তাও হাসছে না একবার আহিলের দিকে তাকাচ্ছে আর একবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে,,,আহিলের শেষ কথাটা শুনে আর হাসি চেপে রাখতে পারলো না তাই হেসেই দিলো,,,আর আহিল আয়েশার হাসি দেখে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে গেলো কিন্তু কান থেকে হাত নামায়নি,,আয়েশার হাসি দেখে আহিল ও হাসছে হাল্কা,,,আয়েশা হাসতে আহিলের দিকে তাকালো আর আহিল কে কান থেকে হাত নামিয়ে গাড়ির ভিতর থেকে একটা লাল গোলাপ ফুলের বুকেট হাতে নিয়ে এক হাঁটু গেড়ে বসলো আর চিৎকার করে বললো,,,

আহিল: আই লাভ ইউ আয়েশা! আই লাভ ইউ আ লট,,,উইথআউট ইউ আই ক্যান্ট ইমাজিন মাইসেল্ফ,,,আই প্রমিস ইউ আই উইল নেভার লিভ ইউ অ্যালোন,,,ইউ আর মাই সৌলমেট,,আই লাভ ইউ ফরেভার আন্ড এভার আন্ড এভার,,,প্লিজ ডোন্ট লিভ মি অ্যালোন,,আই ক্যান্ট লিভ উইথআউট ইউ,,,

আয়েশা কিছু বলতে পারছে না,,সব কিছু জানো স্বপ্ন মনে হচ্ছে,,,আয়েশা কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না,,বলার শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলেছে খুশির চোটে,,,আয়েশা কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই আহিল উঠে দাঁড়ালো আর দু দিকে হাত ছড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললো,,,

আহিল: আই লাভ ইউ আয়েশাআআআআ!

আয়েশা আহিলের পাগলামি দেখে হেসে পাশে তাকাতেই আতকে উঠলো আয়েশা শুধু বললো,,,

আয়েশা: আহিলললললল!!

আয়েশা আর কিছু বলবে তার আগেই দ্রুত গতিতে আস্তে থাকা একটা গাড়ি আহিল কে মেরে দিলো আর আহিল ছিটকে পরলো,,,আহিলের চোখ দুটো আস্তে আস্তে বুজে আসছে,,,আহিল আবঝা চোখে দেখতে পাচ্ছে আয়েশা ওর ব্যালকনি তে দাঁড়িয়ে আছে………………

[ফিরে আসবো আগামী পর্বে 🌹]

#তোমার_মাঝে_আমি 🌸❤ [I_Am_In_You]

#লেখিকা_আয়েশা (কোয়েল)

#পর্ব_১৯

আহিলের সাথে গাড়ির সংঘর্ষ হওয়ার ফলে আহিল ছিটকে পরলো অপর পাশে,,,মুহুর্তের মধ্যে যে এমন কিছু ঘটবে আয়েশা ভাবতে পারেনি,,,যেই আহিল ওর চোখের সামনে পাগলামি করছিল সেই আহিলের নিথর রক্তে ভেজা দেহ আয়েশার চোখের সামনে রয়েছে,,,মুহুর্তেই আহিলের শরীর রক্তে ভিজে গেছে যা আয়েশা ওখানে দাঁড়িয়েই রাস্তার আলোতে দেখতে পাচ্ছে,,,

আয়েশার চোখের সামনে যে মুহুর্তে এমন কিছু ঘটবে আয়েশা ভাবতেই পারেনি,,,আয়েশা এক পা দু-পা করে পিছোতে পিছোতে দৌঁড়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলো আর সদর দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো,,,আয়েশা আস্তে আস্তে আহিলের দিকে এগিয়ে আসছে,,সব কিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে আয়েশার,,,আহিলের কাছে বসে আহিলের মাথাটা নিজের কোলে নিতেই আয়েশার দু-হাত রক্তে ভিজে গেলো,,,আয়েশা আহিল কে একবার ডাকতেই জানো আহিল একটা জোরে লম্বা শ্বাস নিলো জানো আয়েশার জন্যই আহিলের শ্বাসটা আটকে ছিলো,,,

আয়েশা: এই আহিল,,,আহিল ওঠো না প্লিজ,,(কাঁদতে কাঁদতে)

আহিল: আ..আয়ু তুমি ক..কাঁদছো কেনো?? আ..আমি আর তো..তোমার কা..কান্নার কারণ হ..হতে চাই না,,তুমি ঠ..ঠি..ঠিকই বলেছিলে ভা..ভালোব..বাসলে বি..বিশ্বাস করতে হয় যে..যেটা আমি করিনি,,,তো..তোমায় না জে..জেনে বুঝে ক..কষ্ট দিয়েছি ত..তা..তাই এটা আমার শা..শাস্তি,,তোমার থে..থেকে আলাদা হ..হওয়ার শাস্তির থেকে ব..বড়ো শাস্তি কি বা হ..হতে পারে আ..আমার জন্য??

আয়েশা: আলাদা হবে মানে টা কি হ্যাঁ?? কিচ্ছু হবে না তোমার,,তুমি আমায় প্রমিস করেছিলে তুমি আমায় ছেড়ে কোথাও যাবে না,,

আহিল: আমি তো..তোমার যো..যোগ্য নই আয়ু,,আ..আমি ম..মরে গেলে ত..তুমি এমন এ..একজন কে নি..নিজের জী..জীবনস..সঙ্গী করো যে তো..তোমায় ভ..ভা..ভালোবাসার সাথে বি..বিশ্বাস করবে,,,আর র..রইলো আলাদা হ..হওয়ার কথা সেটা তো আ..আমি চাইলেও পা..পারবো না কা..কারণ #তোমার_মাঝে_আমি,,,আ..আই লাভ ই..ইউ আয়….

আহিল নিজের কথা শেষ করতে পারলো না তার আগেই জ্ঞান হারালো চোখ দুটো আস্তে আস্তে বুঁজে গেলো,,,আয়েশা কান্না থামিয়ে দিলো আহিলের কথা সম্পূর্ণ না করায়,,,আয়েশা আহিল কে ডাকতে শুরু করলো,,,

আয়েশা: আহিল!! এই তুমি কথা কেনো বলছো না?? আমি তোমার ওপর আর রেগে নেই,,একটু ও রেগে নেই,,কিন্তু তুমি যদি এখন আমার সাথে কথা না বলো আমি আর কথা বলবো না তোমার সাথে,,,এই আহিল ওঠো না প্লিজ,,,আহিলললললল!

অঙ্কুর: বাবা! এটা আশুর গলা না?

আয়েশার বাবা: হ্যাঁ,,,কিছুক্ষণ আগেই তো ও দৌঁড়ে আমাদের সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলো,,

আয়েশার মা: আর ও এমন আহিল বলে চিৎকার দিলো কেনো?? কিছু হলো না তো??

এই বকেই অঙ্কুর আর ওর বাবা মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো আয়েশা আহিলের মাথাটা কোলে নিয়ে বসে আছে,,,আর আহিলের শার্ট রক্তে ভিজে গেছে,,অঙ্কুর তো এই দৃশ্য দেখে পুরো স্তব্ধ4হয়ে গেছে,,,যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলো ও সেই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে নড়ার শক্তি পাচ্ছে না,,,আয়েশার কাছে ওর বাবা মা ছুটে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,,

আয়েশার বাবা: কি হয়েছে আহিলের?? কি করে হলো এসব??

আয়েশা: কিচ্ছু হয়নি আমার আহিলের (ধমক দিয়ে) কিছু হয়নি ওর ও এখুনি আমার সাথে কথা বলবে,,,(আহিলের দিকে তাকিয়ে) কি হলো বলবে না বলো?? তোমার আয়ু তোমায় ডাকছে আহিল,,,ওঠো না প্লিজ!

আয়েশার মা এমন বেগতিক অবস্থা দেখে অঙ্কুরের খোঁজ করলো কিন্তু অঙ্কুর কে আশে পাশে দেখতে না পেয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলো অঙ্কুর মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে,,,আয়েশার মা চিৎকার করে অঙ্কুর কে বললো,,,

আয়েশার মা: অঙ্কুর!! তুই ওভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে অ্যাম্বুলেন্স কে ফোন কর,,,

মায়ের ডাকে অঙ্কুরের হুঁশ ফিরলো আর ও তড়িঘড়ি করে ফোন করলো,,,,

ইন নার্সিংহোম 🏥🏥

আই.সি.ইউ বাইরে সবাই রয়েছে কারণ আহিল ভিতরে ওকে ডক্টর চেক করছে,,,এমারজেন্সি তে ওকে ভিতরে নেওয়া হয়েছে,,,আরোহী আর আয়েশার মা কোনমতে আহিলের মা কে সামলাচ্ছে,,,আয়েশার বাবা চেয়ারে বসে বারবার আই.সি.ইউ দিকে তাকাচ্ছেন,,,অঙ্কুর দেয়ালে ঠেস দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে আর আয়েশা ওর বাবার পাশেই বসে আছে,,,এখন আর আয়েশা কাঁদছে না শুধু আহিলের কথা গুলো ভাবছে বসে বসে,,,আয়েশার বাবা একবার আয়েশার দিকে তাকালো আরেক বার অঙ্কুরের দিকে,,,উঠে অঙ্কুরের কাছে চলে গেলো কারণ অঙ্কুর সেই প্রথম থেকেই চুপচাপ হয়ে রয়েছে,,,শক টা হয়তো নিতে পারেনি,,,আয়েশার বাবা অঙ্কুরের পাশে দাঁড়ালো আর কাঁধে হাত রাখলো অঙ্কুরের,,,অঙ্কুর একটু নড়ে উঠলো,,,

আয়েশার বাবা : তুই যদি এভাবে ভেঙে পরিস তাহলে তোর বোনের কি হবে ভাবতে পারছিস?? একবার তাকিয়ে দেখ মেয়েটার অবস্থা (আয়েশার দিকে ইশরা করে) যখন তোর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল তখন আহিল একা হাতে সবটা সামলেছে,,,আয়েশা কে ওর মা কে শক্ত করেছে,,আর আমাকে ভরসা দিয়ে গেছে,,,আজ যখন আহিলের পরিবারের তোকে প্রয়োজন তখন তোকে ও তো ওদের পাশে দাঁড়াতে হবে,,,শক্ত হতে হবে,,

অঙ্কুর: এরম কেনো হলো বাবা??(জড়িয়ে ধরে) সব তো ঠিক ছিল তাহলে আবার কেনো ওলট পালট হয়ে গেলো?? আহিল ও কি আনিকার মতো আমায় ছেড়ে চলে যাবে??

আয়েশার বাবা: নাহ! কিচ্ছু হবে না আহিলের তুই দেখিস,,

আই.সি.ইউ থেকে ডক্টর বেরিয়ে এলো আর সবাই ডক্টরের কাছে চলে গেলো কিন্তু ডক্টরের মুখ দেখে অঙ্কুরের বুক টা কেমন ধক করে উঠলো তবুও নিজেকে শক্ত করে বললো,,,

অঙ্কুর: ডক্টর আহিল কেমন আছে?? ও ঠিক আছে তো??

ডক্টর: আই আম সরি,,,হি ইস নো মোর,,

অঙ্কুর এক কদম পিছিয়ে গেলো কথাটা শুনে,,,ডক্টর আবার বললো,,,

ডক্টর: হি ইস ইন কোমা,,,মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন উনি তাই কোমায় চলে গেছেন আর কোমায় যাওয়া ব্যক্তিরা মৃত ব্যক্তির সমান কারণ কবে জ্ঞান ফিরবে বা আদৌ জ্ঞান ফিরবে কি না আমরা জানি না,,,তার মধ্যে মাথায় যেহেতু চোট পেয়েছে তাই যদি ব্রেন এ ব্লাড সয়েলিং হয় তাহলে তো আর কোনো আশা থাকবে না,,,আই আম সরি,,,

আয়েশা: নাহহহহহ!!

আয়েশা পিছন দিয়ে চিৎকার করে উঠলো আর অজ্ঞান হয়ে পরে যেতে নিলেই পিছন দিয়ে জ্যাক আয়েশা কে ধরে নিলো,,,জ্যাক এর আস্তে একটু দেরী হয়ে গেছে কিন্তু আসতে না আসতেই যে এমন কথা শুনতে হবে জ্যাক তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি,,,ডক্টর বললো,,

ডক্টর: ওনাকে একটা কেবিনে নিয়ে গিয়ে শুয়ে দিন হয়তো এতো বড়ো শক টা মেনে নিতে পারেননি,,,আমাকে যেতে হবে,,,

আয়েশা কে জ্যাক কোলে করে নিয়ে একটা কেবিনে শুয়ে দিলো,,,এদিকে আহিলের মায়ের ও অবস্থা ভালো না,,,আয়েশা কে যে কেবিনে রেখেছে সে কেবিনে আহিল কে যে ডক্টর চেক করেছেন মিঃ মুখার্জি সে প্রবেশ করলো,,,আয়েশা কে চেক আপ করতে,,,সেই কেবিনে সবাই রয়েছে,,

মিঃ মুখার্জি: যা বলেছিলাম,,,এতো বড়ো শক টা মেনে নিতে পারেনি তাই অজ্ঞান হয়ে গেছে,,,সেন্স ফিরে আসবে কিছুক্ষণ পরের,

[ফিরে আসবো আগামী পর্বে 🌹]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here