কাব্যের_বিহঙ্গিনী #পর্ব_২ #লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

0
579

#কাব্যের_বিহঙ্গিনী
#পর্ব_২
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

(অনুমতি ব্যতিত কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ)

চলন্ত ট্রেনটা থেমে যাওয়ায় মেহবিন পুরোনো এক তিক্ত স্মৃতি থেকে বেরিয়ে এলো। সেদিনের পর তার জীবনটা আরো ছয় বছর এগিয়েছে। এখন মেহবিন মুসকান নামের আগে ডক্টর যুক্ত হয়েছে। সে এখন ডক্টর মেহবিন নামে পরিচিত। বেলা এগারোটায় ট্রেনটা থেমেছে। সে আস্তে ধীরে তার ব্যাগ নিয়ে ট্রেন থেকে নামলো গন্তব্য তার মহুয়াপুর নামক গ্রামে। সেখানের সরকারি হাসপাতালের ডক্টর হিসেবে দুদিন পর তার জয়েন হওয়ার কথা। এখানে তার পরিচিত কেউ নেই তাই সকাল সকাল এসেছে যদি আজ ঘর ভাড়া পাওয়া যায়। নাহলে আবার ফিরে যেতে হবে। আর বাধ্য হয়ে কোয়াটারে থাকতে হবে কিন্ত সে চায়না সেখানে থাকতে। তাইতো দুদিন আগেই এসেছে। হাতের ট্রলি ব্যাগ আর কাঁধের ব্যাগটা নিয়ে সে রিক্সা খুঁজতে লাগল। একটা জায়গায় কয়েকটা রিক্সা দেখে সেখানে গিয়ে একজন রিক্সাচালক কে জিজ্ঞেস করল,,

“মহুয়াপুর গ্ৰামে যাবেন?”

রিক্সাচালক দাঁত কেলিয়ে বলল,,

“হ যামু তয় পঞ্চাশ টাহা ভাড়া।’

“সমস্যা নেই চলুন।”

তখন পাশ থেকে আরেকজন রিক্সাচালক বললেন,,

“আফা ও আপনার কাছে বেশি টাহা চাইতেছে মহুয়াপুরের ভাড়া ত্রিশ টাহা।আপনি নতুন দেইখা ও আপনার থেইকা বেশি চাইছে। আমি এহন ঐদিকেই যামু।আপনে আমারটায় আসেন আমি আপনারে পৌঁছায়ে দিতাছি।”

“তোর রিক্সায় যাইবো কেন ? উনি আমারে জিগাইছে তাই আমিই যামু। আফা আপনে ত্রিশ টাহাই দিয়েন।”

মেহবিন এতোক্ষণ দুজনের কথা শুনছিল। বুঝতে পারলো নতুন দেখে টুপি পরানোর চেষ্টা করছিল। তবে আরেকজন সৎ রিক্সাচালক কে দেখে ওর মুখে হাঁসি ফুটে উঠল। মেহবিন প্রথম জন কে বলল,,

“নিঃসন্দেহে আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম মানে আপনার রিক্সাতেই যেতাম। কিন্তু আপনি একটু লাভ করতে গিয়ে আমাকে নেওয়ার সুযোগ টা হাত ছাড়া করলেন। আমি ওনার রিক্সায় যাবো এটা ওনার সততার পুরস্কার। তবে আপনাকে একটা কথা বলি দয়া করে এই জিনিসটা করবেন না। নতুন দেখে তার কাছে থেকে বেশি টাকা নেবেন না। কারণ সে যদি জানতে পারে আপনি তার থেকে বেশি টাকা নিয়েছেন। তাহলে তার মনে আপনাকে নিয়ে একটা বিরুপ ধারনা হবে। এরপরে আপনাকে দেখলেও আপনার রিক্সায় যেতে চাইবে না।কারন তারা আপনার প্রথম ব্যবহার ভুলবে না। আমাদের সাথে ভালো বা খারাপ কিছু হলে আমরা খারাপটাই বেশি মনে রাখি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

এ কথা শুনে রিক্সাচালকটা মাথা নিচু করলেও বাকি রিক্সাচালকদের মুখে হাঁসি ফুটে উঠল। যার রিক্সায় যাবে সেই লোকটা মেহবিনের কাছে গিয়ে বলল,,

“আফা ব্যাগটা আমারে দেন। আমি উঠাই দিতাছি আপনে বসেন।”

মেহবিন হেঁসে লোকটাকে ব্যাগ দিয়ে রিক্সায় উঠে বসলো। লোকটা ব্যাগ উঠিয়ে দিয়ে রিক্সা চালাতে লাগলো। হুট করেই রিক্সাচালক বলল,,

“আপনে কিছু মনে কইরেন না আফা। ও একটু ঐরকমই নতুন কেউরে দেখলে একটু টাকা বাড়ায় নেয়। এমনিতে ভালো মানুষ । আসলে খালি রিক্সা চালায় খায় তো যদি দশ বিশ টাহা কইয়া বেশি নিতে পারে।”

মেহবিন মুচকি হাসলো গ্ৰামের মানুষেরা এরকমই সহজ-সরলই হয়। সে একজন রিক্সাচালক হয়েও আরেকজন রিক্সাচালক এর গুনগান করছে। মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“আপনার নাম কি ভাই?”

“আমার নাম আবুল মিয়া!”

“আচ্ছা আবুল ভাই আপনিও রিক্সা চালান আপনি তো টাকা বাড়িয়ে বললেন না। উল্টো টাকা বাড়িয়ে বলাতে প্রতিবাদ করলেন।”

“আমার এতো টাহার দরকার নাই। আমি একজন কৃষক আমার একটু জমি আছে ক্ষেতের কামের পাশাপাশি রিক্সা চালাই। কারন ঐটুকু জমিতে তেমন ভালো আয় হয় না। রিক্সা চালাইয়া আর ঐ জমি থেইকা যা আয় হয় তা দিয়াই সংসার ভালো মতো চইলা যায়। তাছাড়া আমার আব্বা আমারে ছোটবেলায় একবার কইছিলো। জীবনে চাইলে অনেক রোজগার করতে পারবি কিন্তু অসৎ পথে কিছু করলে সেটা ধইরা রাখতে পারবি না আর সুখী ও হবি না। সৎ পথে রোজগার করলে হয়তো কম টাকা রোজগার করতে পারবি কিন্তু দিনশেষে সুখী হবি। অসৎ পথ বাইছা নিবি মানে আল্লাহ তোর ওপর নারাজ হইবো। সৎ পথে থাকবি আল্লাহ তোর ওপর খুশি হইবো। এরপর থেইকা আমি নিয়্যত করছি জীবনে নুন ভাত খাইলেও অসৎ পথে রোজগার করুম না। জীবন তো আল্লাহ একটাই দিছে অসৎ পথে না কামাইয়া, সৎ পথে একটু কম খাইয়া আল্লাহরে খুশি কইরা নিজেও একটু সুখী হইয়াই মরলাম।”

কথাটা শুনে মেহবিনের মনে প্রশান্তি ছেয়ে গেল। মেহবিন বলল,,

“আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করবেন ইনশাআল্লাহ।রাসূল(সাঃ) বলেছেন,
“সকল কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল,আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে!
[সহীহ বুখারী:০১]

“এইডা আমি জানি ছোটবেলায় পরেছিলাম এহন সময় নাই পরার। আইচ্ছা আপনি কাগো বাড়ি যাইবেন?”

“আসলে আমি এখানের কাউকে চিনি না ঢাকা থেকে এসেছি । এখানের হাসপাতালে আমি ডাক্তার হিসেবে জয়েন করবো দুদিন পর। যদি বাসা ভাড়া পাওয়া যায় এই জন্য দুদিন আগেই আসলাম।”

“তারমানে আপনে ডাক্তার।”

“জি !”

“কিন্তু আমগো গ্ৰামে তো কোন বাড়ি ভাড়া দেয় না।”

“তাহলে কি করে হবে? একটা বাসার দরকার আমার। এখানে তো আর পরিচিত কেউ নেই।”

“আরে আপনি চিন্তা কইরেন না আমগো চেয়ারম্যান খুব ভালো। শহর থেইকা কেউ দুই দিনের জন্য আইলে হেগো বাড়িতেই থাকে। হেগো বাড়িও অনেক বড় সেই আগেকার জমিদার গো মতো।”

“আমি তো আর দুদিন থাকবো না আবুল ভাই। এখানেই থাকবো কতদিন তার ঠিক নেই। অন্যের বাড়িতে থাকাটা ভালো দেখায় না। আপনি একটু দেখেন না কেউ বাসা ভাড়া দেবে কি না।”

“আইচ্ছা সমস্যা নাই আমি খোঁজ লাগামু নে। ভাই যখন ডাকছেন তাহলে এই ভাই আপনারে সাহায্য করবো। ততক্ষণ আপনে বরং আমার বাড়ি চলেন পরাই আইসা পরছি আর পাঁচ মিনিট লাগবো।”

এই মুহূর্তে ওর কি করা উচিত জানা নেই। হুট করে এভাবে অপরিচিত মানুষের বাড়ি যাওয়া কি ঠিক হবে। ভাবতে ভাবতে আবুল মিয়া বলে উঠলো,,

“এই কুদ্দুস দৌড়াইয়া কই যাস?”

মেহবিন দেখলো চল্লিশ বছর বয়সি এক লুঙ্গি আর ফতুয়া পরিহিত লোক আবুল মিয়ার কথা শুনে দাঁড়িয়ে পরলো। আর কুদ্দুস নামক লোকটা বলল,,

“আর কইস না ঐ চেয়ারম্যানসাবের এর পাগল মাইয়া আজ আবার সিড়ি থেইকা পইরা মাথা ফাটাই ফালাইছে। কিন্তু তারে যে ডাক্তার দেহে হে শহরে গেছে। তাই হাসপাতালে যাইতেছি ডাক্তার আনতে হেতিরে তো আর হাসপাতালে নিবো না ডাক্তারই আনা লাগবো। হেতি তো আবার সব ডাক্তার আর রক্ত সহ্য করবার পারে না।মেলা রক্ত পরতাছে কি যে করি?”

“ও আইচ্ছা তোর আর হাসপাতালে যাওয়া লাগবো না আমার রিক্সায় যে আছে হেও একজন ডাক্তার শহর থেইকা আইছে। আমি চেয়ারম্যান বাড়ি লইয়া যাইতেছি। কি আফা পারবেন তো।”

মেহবিন তখন বলল,,

“জি পারবো। আমার কাছে সবকিছুই আছে। আপনি চেয়ারম্যান বাড়ি চলেন আবুল ভাই। আর আপনি আমার বড় আবুল ভাই আমাকে তুমি বা তুই করে বইলেন।

“হেইডা কওয়া যাইবোনে। লও এহন যাই আর কুদ্দুস তুই ও যা আমরা আসতেছি।”

কুদ্দুস নামক লোকটা এক দৌড়ে চলে গেল। আবুল ও চলল মেহবিন কে নিয়ে কয়েক মিনিটের মাথায় ওরা পৌঁছে গেল। মেহবিন রিক্সা থেকে নেমে সামনে তাকাতেই দেখলো আবুল ঠিকই বলেছিল কোন জমিদার বাড়ির থেকে কম না। আগেকার জমিদারদের বাড়ির মতো বাড়িটি দুই তালা বিশিষ্ট। মেহবিন আবুল এর সাথে চলতে লাগলো । সদর দরজা দিয়ে ঢুকতেই কতগুলো মুখকে দেখতে পেল সবাই বেশ চিন্তিত বোঝা যাচ্ছে। যার মাথা ফেটে গেছে সে সোফায় বসে আছে তার পাশে একজন কাপড় দিয়ে রক্ত পড়া যায়গায় চেপে ধরে রেখেছে। মেহবিন ঢুকতেই কুদ্দুস বলল,,

“ওই যে চেয়ারম্যানসাব ডাক্তার আইসা পরছে।”

চেয়ারম্যান সদর দরজায় তাকালেন। রিক্সাচালক আবুলের সাথে একটা কালো বোরকা হিজাব পড়া একটা মেয়ে। মেহবিন মেয়েটাকে দেখে তাড়াতাড়ি এগিয়ে এলো। তখন চেয়ারম্যান বললেন,,

“সাবধানে মিশুর রক্তে ফোবিয়া আছে‌। আর ও কিন্তু সবাইকে ওর ট্রিটমেন্ট করতে দেয় না আঘাত ও করতে পারে।”

মেহবিন ওর ব্যাগ খুলে সব বের করতে করতে বলল,,

“চিন্তা করবেন না আমি পারবো। আপনার মেয়ে কি অজ্ঞান হয়ে গেছে না এখনো জ্ঞান আছে।”

তখন মিশু নামক মেয়েটা থেমে থেমে বলল,,

“আম্ আমমি এত্ টটাও দূররর্বল না আররর ভীতততউ ও না শু শুধু রররক্ত সহ্য ককককরতে পারিহ্ না। তাআআই চো’চোখ বব্ বন্ধ করর্ রে
আ আছি।”

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“বাহ তাহলে তো তুমি বেশ সাহসী। আমি তো ভেবেছিলাম তুমি ভীতু। তো দেখি তুমি কেমন সাহসী একটু চোখ খুলো তো।”

মেহবিনের কথা শুনে মিশু নামক মেয়েটার কেন যেন ভয়টা কমে গেল। তবুও রক্তে যেহেতু ফোবিয়া তাই ভালোভাবেই না তুতলিয়ে বলল,,

“না না আমি চোখ খুলবো না। রক্ত রক্ত রক্ত!”

“ওকে ওকে রিল্যাক্স চোখ খুলতে হবে না। আমি তাহলে রক্ত মুছে ফেলি তারপর তুমি চোখ খুলো ঠিক আছে।”

তখন মিশু আদুরে গলায় বলল,,

“আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু তুমি কিন্তু ব্যাথা দেবে না। আর হ্যা ওষুধ ও দেবে না খুব জ্বালাপোড়া করে আমার একটু সহ্য ও হয় না।”

“আরে তুমি না সাহসী এই একটু জ্বালাপোড়া সহ্য করতে পারবে না। সাহসী মেয়েরা যাই হয়ে যাক না কেন কোন কিছু তে ভয় পায় না। ভয় পায় তো ভীতুরা সাহসী মেয়েরা কোন কিছুতে ভয় পায় না।”

“আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমিও ভয় পাবো না।”

“আচ্ছা ঠিক আছে।”

মেহবিন যে কাপড় ধরে রেখেছিল তাকে বলল মাথাটা সোজা করে ধরতে। আঘাত পেয়েছে কিন্তু গভীর ক্ষত হয় নি এই জন্য চিন্তার কারণ নেই। মেহবিন আস্তে আস্তে রক্ত পরিষ্কার করতে লাগলো যেই না ওষুধ লাগালো মেয়েটা চিৎকার করে মেহবিনের বা হাতে কামড় দিয়ে ধরে রইলো হুট করে এমন হওয়ায় বাড়ির সবাই হতভম্ব। মেহবিন একটু আওয়াজ করে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে নিল। তখন চেয়ারম্যান সাহেব বললেন,,,

“মিশু কি করছো কি? ডাক্তার ব্যাথা পাচ্ছে তো ছাড়ো ওনাকে।”

বাবার কথা কানে যেতেই মিশু ছেড়ে দিল। হাত ছাড়া পেতেই মেহবিন দেখলো হাতে কামড়ের দাগ বসে গেছে রক্ত ও বের হচ্ছে হালকা হালকা। মেহবিন একবার হাত বুলিয়ে তারপর বলল,,

“তো এবার কি ওষুধ দিয়ে তোমার ব্যান্ডেজটা করতে পারি।”

মেহবিনের এমন কথায় সকলে ওর দিকে অবাক চোখে তাকালো। মিশু নিজেও এখন চোখ খুলে মেহবিনের দিকে তাকালো। মেহবিন কে দেখে মিশু একদম শান্ত হয়ে গেলো। মিশুর কি হলো মেহবিনের চোখের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো। মেহবিন যত্ন সহকারে ওষুধ লাগিয়ে দিলো মিশু আর একটা শব্দও করলো না।এটা সবাইকে বেশ অবাক করলো কারন মিশু আঘাত সহ্য করতে পারে না। মেহবিন চেয়ারম্যান সাহেব কে একটা কাগজে ওষুধের নাম লিখে দিয়ে ওগুলো আনিয়ে নিতে বলল। সব কাজ শেষে মিশুকে বলল,,

“বাহ তুমি তো দেখি সাহসী হয়ে গেলে!”

তখন মিশু বলল,,

“হুম তোমায় দেখে।”

মেহবিন হাসলো আর বলল,,

“ভালো তো এখন কিছু খেয়ে ওষুধ খাও তারপর একটা ঘুম দাও দেখবে ব্যাথা অনেক কমে যাবে।”

“উঁহু আমি যাবো না তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবো তুমি কতো সুন্দর।”

“তাই বুঝি কিন্তু তুমি আমার থেকেও সুন্দর শুধু একটু অগোছালো। এখন নিজের রুমে গিয়ে রেস্ট নাও।

“আচ্ছা নেব যদি তুমি আমার বন্ধু হও তবে!”

“যদি না হই তাহলে?”

“তাহলে আমি কিছুই করবো না এই যে বসে রইলাম।”

“আচ্ছা ঠিক আছে হবো তোমার বন্ধু।”

“তাহলে হাত মেলাও।”

বলেই মিশু হাত এগিয়ে দিল। মেহবিন ও এগিয়ে দিল কিন্তু মিশু মেহবিনের হাত ধরে জোরে জোরে নাড়াতে লাগলো আর খিলখিল করে হাসতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর মেহবিনের হাত ছেড়ে বলল,,

“এটাকে বলে মিশুর হ্যান্ডশেক। এখন তাহলে আমি রুমে যাই আর হ্যা তুমি আমার বন্ধু হলে আমার সব কথা শুনবে ঠিক আছে।”

“আচ্ছা ঠিক আছে।”

মিশু হেঁসে উঠল হয়তো কেউ ওর কথা শুনবে এই জন্য। তখন চেয়ারম্যান সাহেব বললেন,,

“আরিফা যাও মিশুকে নিয়ে ওপরে যাও। আর ওকে কিছু খায়িয়ে দাও।”

আরিফা নামক মহিলা মিশুকে নিয়ে চলে গেল। মেহবিন একবার ভালো করে মিশুকে দেখলো বয়স উনত্রিশ কি ত্রিশ হবে কিন্তু মনে হলো একটা পাঁচ বছরের অবুঝ বাচ্চা। যদিও ওর মনে আছে কুদ্দুস বলেছিল চেয়ারম্যান এর পাগল মাইয়া তাই তো কামড় খেয়েও কোন রিয়াক্ট করেনি। চেয়ারম্যান সাহেব হুট করে বললেন,,

“আপনাকে ধন্যবাদ সবকিছুর জন্য এবং দুঃখিত ও সবকিছুর জন্য! আসলে ও একটু অসুস্থ।

“এটা আমার দায়িত্ব ছিল। ডাক্তারদের দায়িত্বই মানুষের সেবা করা। তাছাড়া আপনার মেয়ের কথা শুনেই বুঝেছিলাম সে স্বাভাবিক নয়। তাই দুঃখিত হওয়ার কারন নেই।”

“তা আপনাকে তো এর আগে কোনদিন এ গ্ৰামে দেখিনি? আপনার নাম?

“আমি ডক্টর মেহবিন আজই এসেছি গ্ৰামে। আপনি তো এই এলাকার চেয়ারম্যান তাই না?

“হুম এই এলাকার চেয়ারম্যান শেখ শাহনাওয়াজ। তবে আমি সবার কাছে চেয়ারম্যানসাহেব নামেই পরিচিত।

“ওহ আচ্ছা। তাহলে আজ উঠি।”

তখন আবুল এগিয়ে এসে বলল,,

” চেয়ারম্যান সাব একটা কথা ছিল। আসলে এই উনি দুইদিন পর আমগো হাসপাতালে ডাক্তারি করবো। এহানে ওনার চেনা জানা নাই তাই আগেই আইছে যদি কোন ঘর ভাড়া পাওয়া যায় হের লাইগা।”

“তাহলে আপনার এখানে আসা উচিত হয় নি। আপনাকে দেখে শহরের মনে হচ্ছে। শহরে ছেড়ে এখানে আসাটা আমার উচিত হয় নি। কয়েক মাস আগেই এখানের হাসপাতালের একজন ডাক্তার খুন হয়েছিল। তাছাড়া হাসপাতালের ডাক্তারদের কোয়াটারের ব্যবস্থা আছে তো।

এ কথা মেহবিন বলল,,

“আসলে আমার শহরের থেকে গ্ৰামের মানুষদের সেবা করার বেশি ইচ্ছে। তাছাড়া যে ডক্টর খুন হয়েছে নিশ্চয়ই কারো বারা ভাতে ছাই দিয়েছিল তাই তার সাথে এরকম হয়েছে। আমি এসেছি মানুষের সেবা করতে। সবথেকে বড় কথা আমি কোয়াটারে থাকতে চাইনা তাই একটা বাসা খুঁজছি।”

“আপনার যদি আপত্তি না থাকে তাহলে আপনি আমাদের সাথে আমাদের বাড়িতে থাকতে পারেন। এখান থেকেই হাসপাতালে যাবেন। আমাদের বাড়িতে অনেক গুলো রুম ফাঁকা আছে।”

“দুঃখিত আপনার প্রস্তাব গ্ৰহন করতে পারছি না । আপনার আপত্তি না থাকলেও আমার আপত্তি আছে এখানে থাকতে। আপনি যদি অন্য কোথাও একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে বেশ উপকৃত হতাম।

তখন চেয়ারম্যান সাহেব এর পাশে এসে আরিফা নামক মহিলা বললেন,,

“একা একটা মেয়ে গ্ৰামে একা থাকাটা ভালো দেখায় না। তাছাড়া গ্ৰামে একা একটা মেয়ে থাকাটাও রিক্স।কখন কি হয়ে যায়।

“আমার জন্য চিন্তা করবেন না। আমি একা থাকতে পারবো। আমার অভ্যেস আছে‌। আল্লাহর রহমতে এটুকু সাহস আছে রাতে একটা গাছের নিচেও থাকতে পারবো। তাছাড়া আমার সুরক্ষার জন্য আমি নিজে যথেষ্ট। চেয়ারম্যান সাহেব যদি সাহায্য করতে পারেন তাহলে করবেন নাহলে আমি নিজেই খুঁজে নিচ্ছি। এতো বড় গ্ৰাম একটা না একটা ঘর তো নিশ্চয়ই পাবো থাকার জন্য। যদি তাও না হয় তাহলে বাধ্য হয়ে কোয়াটারে থাকতে হবে এই আর কি।

কথাটা বলেই মেহবিন শেখ শাহনাওয়াজ এর দিকে তাকালো। ওকে তাকাতে দেখে শেখ শাহনাওয়াজ চোখ নিচু বললেন,,

“আপনি আজ যা করলেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আপনার বাড়ি খুঁজতে হবে না। যেহেতু আপনি এখানে থাকতে চাইছেন না তাহলে আমার আরেকটা বাড়ি আছে। হাফ ওয়াল ওপরে টিনশেড বাথরুম সব ভেতরেই টিনশেড হলেও বাড়িটা বেশ সৌখিনভাবেই বানিয়েছিলাম। ওখানে কেউ থাকে না আপনি চাইলে সেখানে উঠতে পারেন।

একথা শুনে চেয়ারম্যান বাড়ির সকলে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল‌। কারন বাড়িটা তার অনেক শখের সে এখন অব্দি কাউকে ও বাড়িতে থাকতে দেয় নি। আর আজ একটা অচেনা মেয়েকে সেই বাড়িতে থাকতে দিচ্ছে। এ কথা শুনে আরিফা বেগম বললেন,,

“ও বাড়িতে কেন? আজ পর্যন্ত এই বাড়ির কাউকে ও বাড়িতে থাকার অনুমতি দেন নি। তাছাড়া একটা মেয়ে একা কিভাবে ও বাড়িতে থাকবে।”

“দিই নি বলে মনে দেব না তা তো কোন কথা নেই তাই না। আচ্ছা বাদ দাও তুমি। এবার আপনি বলুন আপনার আপত্তি নেই তো?”

“না কোন আপত্তি নেই বরং এটা আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট। কারন ওটা যদি আপনার বাড়ি হয়ে থাকে তারমানে দ্বিতীয় চেয়ারম্যান বাড়ি।আমি ওখানে একা থাকলেও আপনার কথা ভেবেই কেউ আমাকে ডিসটার্ভ করবে না। তবে হ্যা বাড়ি ভাড়া কিন্তু নিতে হবে আপনাকে। কতো দিতে হবে সেটা যদি বলতেন?

তখন চেয়ারম্যান সাহেব হেঁসে বললেন,,

“না দিলেও সমস্যা হতো না কারন ওটা এমনিই পরে আছে। আপনি যেহেতু দিতেই চাইছেন তাহলে দুই হাজার টাকা দিয়েন।”

“মাত্র দুই হাজার?”

“কেন কম হয়ে গেল বুঝি!”

“ঢাকার তুলনায় তা একটু হলো আর কি! যাই হোক শুকরিয়া সবকিছুর জন্য ‌।

“পেমেন্ট মাস শেষে করলেই হবে এডভান্স করতে হবে না।”

“আচ্ছা ঠিক আছে।”

“দুপুর তো হয়েই এলো আপনি বরং এখানে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন । আপনার বাড়ি পরিস্কার করাই আছে শুধু ঝাড়ু দিতে হবে টেনশন করবেন না।”

“ধন্যবাদ কিন্তু আমার খিদে পায় নি। আমি বরং আপনার বাড়িতে গিয়ে দেখি কতটা করতে হবে। আপনি বরং বাড়ির চাবিটা দিন আমাকে।

শেখ শাহনাওয়াজ নিজের রুম থেকে চাবি নিয়ে এলেন আর বললেন,,

“আমার শখের একটা অংশ ঐ বাড়ি। আশা করছি বেশ যত্নেই থাকবে।”

এ কথা শুনে মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“আমি কোন বাচ্চা নই চেয়ারম্যান সাহেব। ভয় নেই আপনার বাড়ি ভেঙ্গে ফেলবো না। তবে হ্যা কোন সময় আমি থাকতে যদি ভূমিকম্পে বাড়ি ভেঙ্গে যায় তাহলে তার দায় আমি নিতে পারবো না। আসছি সবকিছুর জন্য শুকরিয়া।”

বলেই মেহবিন আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। পেছনে আবুল ও বের হলো। মেহবিন যেতেই সবাই চেয়ারম্যান বাড়ির সকলে তাকিয়ে রইল শেখ শাহনাওয়াজ এর দিকে। তা দেখে শাহনাওয়াজ সাহেব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,,

“ও বাড়িটা এমনিতেও পরে থাকে তার থেকে যদি কেউ থাকে তাহলে বাড়িটার একটু যত্ন হবে। সবথেকে বড় কথা মেয়েটা মিশুর জন্য যেটুকু করেছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। মিশুর বন্ধু হয়েছে তার জন্য এটুকু করাই যায়।”

তখন আরিফা জামান বললেন,,

“আচ্ছা আজ পর্যন্ত আপনার কথা মেনে নিই নি কখনো হয়েছে আজ ও মেনে নিলাম। কিন্তু আরবাজ ও কি মেনে নেবে?”

“আরবাজ শাহনাওয়াজ আমার সন্তান। সব শুনে নিশ্চয়ই মেনে নেবে।”

“আপনাদের বাপ ব্যাটার ব্যাপার আমি বুঝি না। আর কুদ্দুস আসেনা কেন মিশুকে তো ওষুধ খাওয়াতে হবে। মেয়েটার যে স্বভাব না খেয়েই ঘুমিয়ে পরে নাকি।”

_________________

আবুল এসেই রিক্সা চালাতে শুরু করলো কিছু দূর যেতেই আবুল বলল,,

“এতো ভালো বাড়িতে থাকবার কথা কইছিল চেয়ারম্যানসাহেব তাও আবার আপত্তি করলা কেন তুমি ‌‌?

মেহবিন মুচকি হেসে বলল,,

“আসলে আবুল ভাই আমার একটা ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে। ওনাদের বাড়িতে থাকলে নিশ্চয়ই না চাইতেও একটা নিয়মের ভেতরে থাকতে হবে। সব থেকে বড় কথা একটা ভুল পেলে তখন উনারা কথা শোনাতে ছাড়বেন না। যেটা আমার পোষাবে না কারন আমি নিজেই আমার মর্জির মালিক।”

“হুম বুঝছি তোমার বাড়ি পরিস্কার করতে হইবো না আমি আমার বউরে কইয়া দিতাছি হেই পরিস্কার কইরা দেবনে। এমনিতেও অনেক দূর থেইকা আইছো তুমি একটু আরাম করো।”

“শুধু শুধু ভাবিকে কেন কষ্ট দিবেন আবুল ভাই আমি পারবো।”

‘তুমি না আমারে ভাই ডাকো তাইলে আমি আমার বইনের জন্য এইটুকু পারুম না। নামো আমার বাড়ি আইসা পরছে তুমি কয়টা খায়া লও আজ আমার বউ সকালে কই মাছ রানছিল। তার রান্ধন অনেক মজা।”

আবুলের কথা বলার ভঙ্গিতে মেহবিন হেঁসে ফেললো। আবুল রিক্সা থেকে ব্যাগ নিয়ে ডাকতে লাগল,,

“ফাতেমার মা ও ফাতেমার মা! কই গেলা তুমি দেহো কেরা আইছে তোমার বাড়ি।”

আবুলের হাঁক ডাকে ওনার বউ বের হয়ে আসলো। আর বের হয়ে তার স্বামীর সাথে ব্যাগ আর একটা মেয়েকে দেখে চমকে উঠলেন আর কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললেন,,

“আপনে আরেকটা বিয়া কইরা নিয়াইছেন। আপনে এমনটা করতে পারলেন। ঐ ফাতেমা কোনে গেলি দ্যাখ তোর বাপ তোর জন্য নতুন মা নিয়াইছে এহন আমারে এই বাড়ি থেইকা বাইর কইরা দিব।”

বলেই মহিলাটা কেঁদে উঠলেন। এটা দেখে মেহবিন আর আবুল দু’জনেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন। এদিকে মায়ের কথা শুনে ফাতেমাও বের হয়ে এসেছে। আবুল ব্যাগ রেখে দৌড়ে গিয়ে ফাতেমার মাকে বলল,,

“আসতাগফিরুল্লাহ নাউযুবিল্লাহ কি কও এইসব আমি কেন বিয়া করুম? তুমি কি মরছো নাকি।”

‘তারমানে আমি মরি নাই দেইখা বিয়া করেন নাই‌। ওরে নিয়াইছেন আমি মরলে ওরে বিয়া করবেন।”

“আসতাগফিরুল্লাহ নাউযুবিল্লাহ কি কও এইসব।”

মেহবিন না চাইতেও হেঁসে ফেললো গ্ৰামের মেয়েরা কি এরকমই সহজ সরল। মেহবিন এবার এগিয়ে গিয়ে বলল,,

“ভাবি চিন্তা করবেন না আমাকে আবুল ভাই বিয়ে করার জন্য আনে নি। সে তার বউকে অনেক ভালোবাসে তাই অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা ভাববেও না। আসলে আমি আজই গ্ৰামে এসেছি চেয়ারম্যান বাড়ির আরেকটা বাড়িতে ভাড়ায় উঠেছি। আবুল ভাই আমার সাথেই ছিল তাই এখানে নিয়ে এসেছে।”

তখন ফাতেমার মা হেঁসে বলল,,

“তুমি সইত্য কইতেছো?”

“হুম সত্যি বলছি।”

“ফাতেমার বাপ আপনের আগে কইবেন না আমারে।’

‘তুমি কইতে দিলা কখন। তোমার মাথায় যে গোবর আছে হেইডা জাইনাই তো আমি তোমারে বিয়া করছিলাম।

“আপনে আবার আমারে,,

“আচ্ছা বাদা দাও যাও খাওন বাড়ো। ডাক্তার আফায় আমগো লগে খাইবো। তারপর তুমি আর ফাতেমা গিয়া বাড়িঠা পরিস্কার কইরা দেও। ততক্ষনে ডাক্তার আফায় আরাম করুক।”

তখন ফাতেমা নামক মেয়েটা বলল,,

“তারমানে আপনি ডাক্তার?”

‘হুম!”

“আপনি জানেন আমারও শখ একদিন ডাক্তার হমু।”

“বেশ তো মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করো ইনশাআল্লাহ একদিন ডাক্তার হবে। তা কোন ক্লাসে পড়?”

“ক্লাস এইটে ।”

তখন আবুল বলল,,

‘হইছে আবার পরে গপ্পো করিস। ফাতেমা যা ওনারে কলপারে নিয়া যা।”

মেহবিন হাত মুখ ধুয়ে ওদের সাথে খেতে বসলো। মেহবিন জানতে পারলো আবুলের একটা ছেলেও আছে ক্লাস থ্রিতে পরে এখন সে স্কুলে আছে। খাওয়া শেষ করে মেহবিন ও গেল তাদের সাথে নিজের ঘর নিজেও না হয় একটু পরিস্কার করুক। আবুল আর ওনার বউ মানা করেছিল কিন্তু ও শুনেনি। আবুল ওদেরকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। পাকা রাস্তা থেকে একটা গলির মতো কাঁচা রাস্তা আছে সেদিক দিয়ে দুই তিন মিনিট গেলেই চেয়ারম্যানসাহেব এর বাড়ি। চারদিকে সিমেন্ট এর বর্ডার করা একটা বাড়ি। হাফওয়াল ওপরে টিনশেড গেটের সামনে দাড়াতেই মেহবিনের ভেতরে একটা শীতল বাতাস বয়ে গেল। ওর বাড়ির সামনেই রাস্তার ওপাশে অনেক গুলো বাড়ি সবগুলোই টিনশেড এর। কিন্তু এই বাড়ির ডানে বামে আর কোন বাড়ি নেই। মেহবিন চাবি দিয়ে প্রথমে গেটের তালা খুললো এই বাড়ির তালা খুলতে দেখে রাস্তার ওপাশে থেকে কিছু মহিলাবিন্দু বের হয়ে এগিয়ে এলেন। মেহবিন বাড়ির ভেতরে ঢুকলো তখন পেছন থেকে এক মহিলা ফাতেমার মাকে জিজ্ঞেস করলেই মেহবিন এর কথা জানালো আর এখানে থাকবে বলল। মেহবিন আর দাড়ালো না সে গিয়ে বাড়ির তালা খুললো সামনে বারান্দা চারদিকে লোহার গ্ৰিল দেওয়া। দুটো রুম করা বাড়িটায় বারান্দায় একপাশে বাথরুম আরেক পাশে রান্না ঘর বলতে গেলে গ্ৰামের মধ্যে শহরের ছোঁয়া। রুমের তালা খুলে মেহবিন বুঝলো বাড়ির পেছন দিকেও বারান্দা আছে আর পেছনে বড় একটা পুকুর আছে। তাছাড়াও বাড়িটা বেশ পরিস্কার মাসে বা পনেরোদিনে পরিষ্কার করা হয়। গ্ৰামের মাঝে এরকম একটা জায়গায় বাড়ি সত্যি চমৎকার। সবশেষে মেহবিনের মনে হলো রেডিমেট ফ্ল্যাটের মতো। দুই ঘরে দুইটা খাট একরুমে চেয়ার টেবিল আলমারি। আরেকটা রুমে ড্রেসিং টেবিল আর আলনা। চেয়ারম্যান সাহেব সৌখিন ভাবে যে বানিয়েছে তাই এরকম। তিনজন মিলে বাড়িটা পরিস্কার করে নিল। ফাতেমা আর ফাতেমার মা চলে গেল। মেহবিন পুরো বাড়িটা আরো একবার দেখলো। ফোনে একটা মেসেজ আসতেই মুচকি হেঁসে রিপ্লাই করলো,,

“আমি আমার গন্তব্যের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে গিয়েছি।”

~ চলবে,,

বিঃদ্রঃ প্রথমেই দেরি হওয়ায় জন্য দুঃখিত। গল্পটি গ্ৰামীন শহরে প্লটের হবে। দয়া করে গ্ৰামের ভাষাটা একটু কষ্ট হলেও বুঝে নেবেন কারন দুবার লেখা পসিবল না। ভুলত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here