স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_১৩

0
295

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_১৩

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

জায়ান এবার দৃষ্টি সরালো তৃষামের দিক থেকে, তাকলো পূর্বাশার পানে। দৃষ্টিতে তীক্ষ্মতা বজায় রেখেই সে বলল – বাংলাদেশ থেকে আসতে না আসতেই দেখছি তোর বোনের শরীরে আধুনিকার ছোঁয়া লেগেছে। এক মাস যেতে না যেতেই পোশাক থ্রী পিস থেকে টিশার্টে নেমেছে। এক বছর গেলে কি হবে কে জানে!

জায়ানের কথাটা ঠিক পছন্দ হলো না তৃষামের, মৃদু স্বরে ধমকে উঠলো সে, বলল – জায়ান!

পূর্বাশার সম্মুখে আর দাঁড়ালো চাইলো না তৃষাম। আবার এই জায়ান কি বলতে কি বলে ফেলবে তারপর কষ্ট পাবে মেয়েটা। এমনিই মেয়েটার জীবনে কষ্ট, তিরস্কারের কমতি নেই। তার থেকে এখান থেকে চলে যাওয়াই শ্রেয়। তৃষাম তাকালো পূর্বাশার পানে, বলল – খেয়ে নিস তাড়াতাড়ি। এখন আসছি আমরা।

কথাটা বলেই চলে গেল তারা। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো পূর্বাশা। সে আর গেল না ভিতরে। মনটা ভালো লাগছে না একটুও। হাতে খাবারের প্যাকেটটা নিয়েই আনমনে হাঁটা শুরু করলো সে। হাঁটতে হাঁটতেই চলে এলো কলেজের মাঠের ভিতরের দিকটায়। এই রাতের বেলাতেও কৃত্রিম আলোর ঝলকানিতে চারদিকে বেশ উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। বেশ অন্যরকম উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থা থাকায় এখানে যেন এখনও দিনের আলোর মতোই চমৎকারভাবে সকল কর্মকান্ড সম্পন্ন করা সম্ভব। পূর্বাশা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রাতের মাঠটা প্রদর্শন করতে করতেই সম্মুখে হাঁটছিল। হঠাৎ কোথা থেকে একটা সাইকেল এসে লাগিয়ে দিল তার গায়ে। ছিটকে মাটিতে পড়লো মেয়েটা। ব্যথাতুর ধ্বনি তুললো কন্ঠে। সাথে সাথে সাইকেলটাও থামিয়ে দিল সাইকেল চালক। অস্থির ভঙ্গিতে সে নেমে এলো সাইকেল থেকে।‌ পূর্বাশার পানে তাকিয়ে চাইনিজ ভাষাতেই সে বলল – আপনি ঠিক আছেন?

সম্মুখে কারো কন্ঠস্বর শুনে মাথা তুলে তার পানে তাকালো পূর্বাশা। চোখের সম্মুখে দৃশ্যমান হলো ছোট চোখের, ফর্সা লম্বাটে গড়নের এক চাইনিজ সুদর্শন যুবক। তবে তার ভাষা বুঝলো না কিছুই। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো যুবকের পানে। যুবক বোধহয় বুঝতে পারলো পূর্বাশার মনের কথা অথবা মেয়েটার চেহারা দেখেই সে বুঝে নিয়েছে মেয়েটা ভিনদেশী। এবার সে ইংরেজিতেই বলল – আপনি ঠিক আছেন?

পূর্বাশা এবার বুঝলো যুবকের কথা, সে মাথা ঝাঁকিয়ে বলল – হ্যা ঠিক আছি আমি।

কথাটুকু বলে পূর্বাশা একা একাই উঠার চেষ্টা করলো কিন্তু যুবকের চিন্তিত ভঙ্গি ঠিক হলো না, হন্তদন্ত হয়ে সে হাত বাড়িয়ে দিল পূর্বাশাল পানে, অপরাধীর স্বরে বলল – স্যরি। আমি আসলে খেয়াল করিনি। ভেবেছিলাম রাতের বেলায় মাঠে তো আর কেউ আসবে না তাই চারদিকে খেয়াল না করেই সাইকেল চালাচ্ছিলাম।

পূর্বাশা ধরলো না যুবকের হাতটা। নিজেই ধীরে সুস্থে উঠে দাঁড়ালো। ঠোঁট টেনে একটু হাসার চেষ্টা করে যুবককে অভয় দিয়ে বলল – সমস্যা নেই ঠিক আছে।

কথাটুকু শেষ করেই পা টেনে টেনে সামনের দিকে হাঁটা ধরলো পূর্বাশা। যুবক আবার এগিয়ে এলো পূর্বাশার কাছে, বলল – আপনি তো পা টেনে টেনে হাঁটছেন নিশ্চই পায়ে ব্যথা পেয়েছেন?

তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো পূর্বাশা। বাংলাতেই বলল – আমার মনের ব্যথার কাছে এ ব্যথা যে কিছুই নয়, নিতান্তই ক্ষুদ্র।

যুবক বুঝলো না পূর্বাশার ভাষা, মাথা চুলকে সে ইংরেজি বাক্য বলল – কিছু কি বললেন?

মৃদু হাসলো পূর্বাশা, বলল – না।

বলেই আবার হাঁটা ধরলো মেয়েটা। ছেলেটাও তার পিছু পিছু হাঁটা ধরলো, অপরাধীর কন্ঠে আবার বলল – আপনি নিশ্চয়ই নিজের ব্যথার কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছেন। সত্যিই আমি দুঃখিত আমি বুঝতে পারিনি।

– এতবার স্যরি বলার কিছুই হয়নি। আমি ঠিক আছি। আপনি বরং আপনার সাইকেলটা দেখুন ঠিক আছে কিনা।

কথাটুকু সম্পন্ন করেই একটু দ্রুত বেগে পা টেনে টেনে হেঁটে হোস্টেলের দিকে গেল সে। পূর্বাশা চলে যেতেই যুবকটিও এলো তার সাইকেলের কাছে। হঠাৎ মাঠের মধ্যে খেয়াল করলো একটা খাবারের প্যাকেট পড়ে থাকতে। হয়তো একটু আগে এক্সিডেন্ট হওয়া মেয়েটার খাবার এগুলো। যুবকটি দ্রুত খাবার প্যাকেটটা হাতে তুলে নিল, দৌড়ে গেল পূর্বাশাকে খুঁজতে কিন্তু পেল না। হতাশ হয়ে ফিরে এলো সে।

_________________________________

ভোরের আলো ফুটেছে। চারদিকে সূর্যের উজ্জ্বল আলোয় ভরে উঠেছে। রাতের নিস্তব্ধতায় ঘেরা শহরটাও যেন কোলাহলে ভরে উঠেছে, প্রান ফিরে পেয়েছে যেন নিজস্বতায়। প্রশিক্ষণের সময় হতেই পূর্বাশা সুজা ওদের সাথেই মিলিটারি পোশাক পা টেনে টেনে বেরিয়ে এলো হোস্টেলের বাইরে। পূর্বাশার পায়ের অবস্থা দেখে চিন্তিত হলো সেনজেই, সুজা এবং জেফি তিনজনই। জেফি একটু চিন্তিত কন্ঠেই বলল – তুমি পারবে তো প্রশিক্ষণ দিতে?

জেফির কথার মধ্যেই সুজা বলল – নয়তো আমরা কতৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়ে তোমাকে ছুটি আনিয়ে দেই?

তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলল পূর্বাশা, দৃঢ় কন্ঠে বলল – আমি পারবো।

কথাটা বলে সামনের দিকে তাকাতেই হঠাৎ তার সামনে দৃশ্যমান একটা একটা খাবারের প্যাকেট। চমকে উঠলো পূর্বশা। খাবারের প্যাকেটকে ধরে রাখা বলিষ্ঠ হাতটা অনুসরন করে সে তাকালো পাশে। একি, এ তো কালকে রাতের সেই ছেলেটা। যার জন্য তার পায়ের এখন এই অবস্থা। সে খাবারের প্যাকেট নিয়ে এখানে কি করছে? পূর্বাশাকে অবাক চোখে তাকিয়ে দেখতেই যুবকটি বলল – কতক্ষন ধরে অপেক্ষা করছিলাম আপনার জন্য। আপনার এতক্ষনে বের হওয়ার সময় হলো?

যুবকটির কথা শুনে পূর্বাশা যেন অবাক না হয়ে আর পারলো না। অবাক সুরেই সে বলল – আপনি!

ছেলেটা হাসলো একটু, নিজের পরিচয় দিয়ে বলল – আমি লীন ইয়ান। কাল রাতে আপনার উপরে যে সাইকেল নামক দানব চালিয়েছিলাম সেই আমি।

– হ্যা চিনেছি কিন্তু আপনি খাবার নিয়ে এভাবে এখানে।

ইয়ান মাথা চুলকালো, কাঁচুমাচু করে বলল – আসলে কাল ভুলবশত আপনার খাবার ফেলে এসেছিলেন মাঠে তাই আর কি।

– কিন্তু আপনার দেওয়া আবার আমি নিতে পারবো না।

– এটা তো এক প্রকার আপনার খাবারই। কালকের রাতের খাবারটা বাসি হয়ে গিয়েছিল বলে নতুন করে কিনেছি শুধু। প্লীজ না করবেন না আপনি।

পূর্বাশা মুগ্ধ হলো যুবকটির ব্যবহারে। এও পুরুষ মানুষ আর ঐ জায়ান, নক্ষত্রও পুরুষ মানুষ। পূর্বশা সৌজন্য সূচক হাসলো, বলল – আসলে আজ সকালের খাবার আমি খেয়ে ফেলেছি। আবার খাব দুপুরে। এই খাবারটা দুপুর পর্যন্ত রেখে দেওয়ার দরকার নেই। তার থেকে আপনি বরং এই খাবারটা রাস্তার পাশে যারা খেতে পায় না বা কোনো প্রানী অনাহারে আছে তাদের দিয়ে দিন। আমিই দিতাম কিন্তু আমার এখন প্রশিক্ষণে যেতে হবে। তাই প্লীজ আমার হয়ে এই কাজটা আপনিই করে দিন।

ইয়ান মুগ্ধ হলো পূর্বাশার কথায়, নরম কন্ঠে বলল – আপনি খুব দয়ালু প্রাকৃতির।

– ধন্যবাদ।

কথাটুকু বলেই পূর্বাশা পা বাড়ালো সম্মুখের দিকে। তাকে পিছু ডাকলো ইয়ান। থমকে দাঁড়ালো পূর্ববাংলা। ইয়ান কিছুটা ইতস্তত কন্ঠেই শুধালো – আপনার নামটা….

– পূর্বাশা।

এইটুকু বলেই পূর্বাশা আর দাঁড়ালো না। ওদিকে প্রশিক্ষণের দেরী হয়ে যাচ্ছে তার। তাই দ্রুত সে প্রস্থান করলো সেখান থেকে। পূ্র্বাশা যেতেই তার নাম উচ্চারণের যুদ্ধে নামলো ইয়ান। ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বলল – ফুর….ফুর।

বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করলেও সম্পূর্ণ না উচ্চারন করতে ব্যর্থ হলো ইয়ান। শেষ পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করে ভাঙা ভাঙা কন্ঠে উচ্চারন করলো – ফুর্ভা।

****

কিঞ্চিৎ সময় পরই প্রশিক্ষনের মাঠে পৌঁছালো সবাই। প্রতিদিনের মতোই সবার সাথে লাইনে দাঁড়ালো সে। তবে আজ আর সাথে করে আনেনি কিছুই। ক্ষানিক সময় পরই প্রশিক্ষণ শুরু হলো সকলের। আজ তাদের প্রশিক্ষণের বিষয় হলো উচ্চ লাফ। একে একে সকলে এগিয়ে যাচ্ছে লাফ দিতে। পূর্বাশার ভয় করছে ভীষন। একে তো এই উচ্চ লাফ, দীর্ঘ লাফে স্কুল জীবনে কখনও অংশগ্রহণ করেনি। তার উপর পায়ে প্রচন্ড ব্যথা। পা টা মচকে গেছে বোধহয়। ধীরে ধীরে যত পূর্বাশার সময় এগিয়ে আসছে ততই যেন সংকোচ, ভয় গাঢ় হচ্ছে তার। পূর্বাশার ভাবনার মধ্যেই তার সময় এসে উপস্থিত হলো। খুড়িয়ে খুড়িয়ে এসে দাঁড়ালো সে সম্মুখে। মেয়েটাকে খোড়াতে দেখেই ভ্রু কুঁচকালো জায়ান। এর পায়ে আবার কি হয়েছে? কিছু একটা বলতে উদ্যত হলো। কিন্তু তার আগেই ভেসে এলো প্রধান প্রশিক্ষকের কন্ঠস্বর, বেশ চড়া গলায় ইংরেজি বাক্যে সে বলল – মিস ফূর্ভাশা আপনার জন্য ছুটির আবেদন করা হয়েছে। আপনি গিয়ে বিশ্রাম করুন।

প্রধান প্রশিক্ষকের কথা শুনে অবাক হলো পূর্বশা। তার জন্য আবার কে ছুটির আবেদন করলো? সে তো করেনি। ঘাড় ঘুরিয়ে সেনজেই, সুজা আর জাফির দিকে তাকালো পূর্বাশা। তারাও মাথা নাড়িয়ে বুঝালো এ কাজ তাদের নয়। জায়ানও ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে তাদের পানেই। কিন্তু কথা হলো পূর্বাশার জন্য ছুটির আবেদন কে করলো? পূর্বাশার ভাবনার মধ্যেই তার দিকে মাঠের মধ্যে দৌড়ে এলো ইয়ান, হাঁপাতে হাঁপাতে বলল – স্যরি স্যরি আমার আপনার জন্য ছুটির আবেদন করতে একটু দেরী হয়ে গেল।

জায়ানের দৃষ্টি তীক্ষ্ম হলো। পূর্বাশাও অবাক দৃষ্টিতে তাকালো ইয়ানের পানে, বলল – আপনি আমার ছুটির জন্য আবেদন করেছেন?

– হ্যা, সকালেই দেখেছিলাম আপনি খোড়াতে খোড়াতে প্রশিক্ষণের জন্য যাচ্ছিলেন। ভুলটা তো আমারই, আমার জন্যই আপনার পায়ে ব্যথা পেয়েছেন। তাই একটু সাহায্য করতে চাইলাম আপনার আর কি? এখন চলুন আমার সাথে….

– কোথায়?

– মেডিকেল সেক্টরে। ডাক্তার দেখাতে হবে আপনার।

পূর্বাশা অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে হাসলো, বলল – না না তার আর দরকার হবে না এইটুকু ব্যথা এমনিই সেড়ে যাবে।

– কতটুকু ব্যথা তা তো আপনার হাঁটা চলা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। চলুন আমার সাথে।

ইয়ানের জোরাজুরিতে শেষ পর্যন্ত মেডিকেল সেক্টরে যেতে রাজি হলো পূর্বাশা। তাছাড়া সেনজেই, সুজা আর জেফিও জোর করছিল ভীষন। পূর্বশা নিজেই খোড়াতে খোড়াতে হাঁটা ধরলো মেডিকেল সেক্টরের দিকে। ইয়ান নিজের হাত বাড়িয়ে ধরতে চাইলো পূর্বাশার হাত খানা। হয়তো তাহলে মেয়েটার হাঁটতে একটু সুবিধা হবে। ইয়ান হাত বারিয়ে পূর্বাশার হাত ধরতে যেতেই কোথা জায়ান এসে তড়িৎ গতিতে কোলে তুলে নিল পূর্বাশাকে। হকচকিয়ে উঠলো মেয়েটা, সাথে লজ্জিতও হলো বেশ। মাঠের এতগুলো মানুষের মধ্যে কোলে তুলে নিল এভাবে। সবাই কেমন ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে তাদের পানে। ঐ ছেলেটা ইয়ান সেও কেমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাদের পানে। এর আগেও অবশ্য একদিন পূর্বাশাকে কোলে তুলে নিয়েছিল জায়ান। কিন্তু সেদিন তো সে অজ্ঞান ছিল। তাই লজ্জা বা ভয় কোনোটাই অনুভব করেনি। কিন্তু আজ তো সে পুরৈ স্বজ্ঞানে রয়েছে। লজ্জায় যেন মাথা কাটা যাচ্ছে তার। তাছাড়া নিজের শরীরে কোনো পুরুষের স্পর্শও ঝংকার তুলছে তার প্রতিটি শিরা উপশিরায়। কেমন অস্বস্তি, জড়তা আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রেখেছে তাকে। বুকের মধ্যেও কেমন ঢিপ ঢিপ শব্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন বুকটা ভেদ করে হৃদপিন্ডটা লাফিয়ে বেরিয়ে আসবে এখনই। নিজের ভিতরে একরাশ অস্বস্তি নিয়েই পূর্বাশা জায়ানকে বলল – আমাকে নিচে নামিয়ে দিন। আমি হেঁটে যেতে পারবো।

চলবে…….

ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি লিংক –
https://www.facebook.com/profile.php?id=100090661336698&mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

গ্রুপ লিংক –
https://www.facebook.com/groups/233071369558690/?ref=share_group_link

[ আহরাব ইশতিয়াদ এবং নিশিতা জুটির উপর লেখা আমার প্রথম উপন্যাস “স্নিগ্ধ প্রেয়শী” পড়ে নিন বইটই অ্যাপে, মাত্র ৪০ টাকা। বইয়ের লিংক এবং কিভাবে কিনবেন পেয়ে যাবেন কমেন্ট বক্সে ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here