স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_৬

0
316

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_৬

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

দ্বিতীয় মেয়েটির কথা শুনে প্রথম মেয়েটি আবার তাকালো পূর্বাশার পানে, ঠোঁট টেনে হেসে বলল – আ’ম স্যরি। আই ফরগট দ্যাট, ইউ আর এ ফরেইনার। মাই নেম ইজ শী সেনজেই। নাইস টু মিট ইউ। ( আমি দুঃখিত। আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে তুমি একজন বিদেশী। আমার নাম শী সেনজেই। তোমার সাথে সাক্ষাৎ হয়ে ভালো লাগলো )

দ্বিতীয় মেয়েটিও এবার হেসে দিল পূর্বাশার পানে তাকিয়ে, বলল – আমি জেফি। তুমি আমাদের নতুন বন্ধু তাই না? আমরা যখন শুনেছি এবার আমাদের সাথে বিদেশি কোনো শিক্ষার্থী রুমমেট হিসেবে পড়েছে তখন থেকেই ভীষন এক্সাইটেড আমরা।

তৃতীয় মেয়েটিও এসে দাঁড়ালো পূর্বাশার পাশে, অন্যদের দিকে তাকিয়ে বলল – শুধু তোরাই কি কথা বলবি ওর সাথে আমাকেও সুযোগ দে একটু।

কথাটা বলে একটু থামলো মেয়েটা। হাস্যজ্জ্বৌল চোখ মুখে বলল – হাই, আমি সুজা।

নিজের নামটা বলেই সুজা নিজের ফর্সা গোলগাল হাত বাড়িয়ে ধরলো পূর্বাশার লম্বা কালো বিনুনিটা পানে, অবাক কন্ঠে বলল – ওয়াও, তোমার চুলগুলো ভীষন লম্বা এবং সুন্দর। কিন্তু তোমার নাম কি?

পূর্বাশা এবার নিজের পরিচয় দিতে ইংরেজি বাক্যে বলল – আমি পূর্বশা।

নামটা শুনলো সেনজেই, জেফি এবং সুজা। কিন্তু উচ্চারন করতে পারতে পারলো না কেউই। জেফি বেশ কতক্ষন তার ভাঙা ভাঙা কন্ঠে উচ্চারনের চেষ্টা চালালো – ফুর… ফুরভা…ফুর

শেষে হাল ছেড়ে দিয়ে বলল – তোমার নামটা খুব কঠিন। আমরা উচ্চারণ করতে পারছি না। আমরা বরং তোমাকে লিটেল সিস বলেই ডাকবো।

পূর্বাশা বীনা বাক্যে মেনে নিল ওদের কথা। মনের ভিতরে তার উপচে পড়া আনন্দ আজ। অবশেষে ভিনদেশে এসে তারও কিছু বান্ধবী হলো। তবে একটা বিষয়ে মেয়েটা অবাক হলো বেশ এরা এত ফর্সা হওয়ার পরও তার গায়ের রং নিয়ে বলল না কিছুই। একবার বিদ্রুপও করলো না। এদেশের মানুষ কি এতটাই ভালো? তাহলে ঐ জায়ান না কি ছেলেটা ও ওমন নাক উঁচু স্বভাবের হলো কিভাবে? হতে পারে ঐ ছেলেটা এ দেশীয় নয়। ঐ বাংলাদেশী চাকমা মারমা উপজাতির লোক। এদেশে এসে চায়নিজ হওয়ার ভং ধরে বসে আছে। হতেও পারে। আজকাল কোনো কিছু অসম্ভব তো নয়।

সময় গড়িয়েছে কিছুটা। পূর্বাশা এখানে এসে পৌঁছেছে দুপুরে দিকে। এখন দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকাল। ক্ষুধায় পেটটা চো চো করছে তার। সেই সকালে বাসা থেকে যে খেয়ে বেরিয়েছিল তারপর থেকে এখন অব্দি তার পেটে পড়েনি কিছুই। প্লেনে খাবারের ব্যবস্থা ছিল যদিও কিন্তু ভয়ে নার্ভাসনেসের কারনে খেতে পারেনি কিছুই। প্লেন থেকে নামার পরে যে আসার পথে কিছু খাবে তাও পারেনি। যে নাক উঁচু ছেলে আনতে গিয়েছিলাম ওকে তার তাড়াহুড়োর চোটেই তো প্রান ওষ্ঠাগত মেয়েটার আবার খাবে কখন। আর নিজের চাপা স্বভাবের জন্য এখানে এসেও খাবারের কথা বলতে পারেনি কাউকে। ছোটবেলা থেকে মানুষের কথা শুনতে শুনতে যে একাকীত্ব চাপা স্বভাব মিশে গেছে তার চরিত্রে তা কি আর এতটুকু সময়ের মধ্যে দু চারজন মানুষের মধ্যেই কেটে যাবে নাকি? তাছাড়া মানুষের সাথে কথা না বলতে বলতে একা একা থাকতে থাকতে কেমন কথা বলতেই ভুলে গেছে মেয়েটা। এখন মানুষের সম্মুখে আসলে তাদের সাথে কথা বলতে গেলে ইতস্তত লাগে তার। কথার মধ্যে গুলিয়ে ফেলে সে। আর অপরিচিত হলে তো কথাই নেই। কিন্তু এদিকে ক্ষুধাও যে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। ভাবলো তৃষামকে একটা মেসেজ করবে বলবে ক্ষুধার কথা যদিও এতেও ইতস্তত লাগছে তার। কিন্তু কি আর করার, নিজের ইতস্ততবোধ নিয়েই মোবাইলটা হাতে নিল পূর্বাশা তবে তৃষামকে মেসেজ করার আগেই তার সম্মুখে এসে দাঁড়ালো তার নতুন তিনজন চীন দেশিও রুমমেট। তাদের মধ্য থেকে সেনজেই হাস্যজ্জ্বৌল মুখে বলল – চলো আজ বাইরে খাই আমরা। তুমি তো এ দেশে নতুন, তোমাকে না হয় আজ আমাদের দেশের কিছুটা অংশের সাথে একটু পরিচয় করিয়ে দেই।

পূর্বাশা এই মেয়ে তিনটাকে যত দেখছে ততটাই অবাক হচ্ছে। এত অল্প সময়ে কাউকে এতটা আপন করে নেওয়ার যায় যতটা এরা নিয়েছে? কই সে তো পারলো না। মেয়ে তিনটাকে আপন না করতে পারলেও তাদের কথায় রাজি হয়ে গেল পূর্বাশা। বাইরে ঘুরে চীন দেশটাকে একটু হলেও চেনার বড্ড ইচ্ছে ছিল তার। এরা যে এত সহজে তার ইচ্ছে পূরণ করবে ভাবতে পারেনি পূর্বাশা। দ্রুতই বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরী হতে শুরু করলো তারা চারজন। রুমমেট তিনজন নিজেদের আধুনিক পোশাকে সাজালেও পূর্বাশা এবারও থ্রী পিসই জড়িয়েছে শরীরে। থ্রী পিস পড়ে বের হতেই সেনজেই, সুজি এবং জেফি ঘুরে ঘুরে বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করলো পূর্বাশাকে। সুজি বেশ কৌতুহলের সাথেই প্রশ্ন করলো – এটা কি ধরনের পোশাক? এর নাম কি?

পূর্বাশা তাকালো তাদের তিনজনের পাশেই, দেখলো তিনজনের চোখ মুখেই এই পোশাক নিয়ে ভরপুর কৌতুহল। নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে সে বলল – এটা থ্রী পিস। বাংলাদেশী মেয়েরা এই পোশাকই সাধারন পড়ে।

– এই পোশাকটা বেশ সুন্দর। তোমাকেও সুন্দর লাগছে।
আমাদেরও একদিন পড়তে দিবে।

জেফির কথায় সায় জানালো বাকি দুইজনও। পূর্বাশা অবাক দৃষ্টিতে তাকালো মেয়ে তিনটার দিকে। তাকে সুন্দর লাগছে? এই প্রথম সে মা বাবা ব্যতীত এই কথাটা শুনলো করো কাছ থেকে। বেশ আবেগী হয়ে পড়লো মেয়েটা। ভিতর থেকে কান্নারা ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে এই মুহুর্তে। এ যে দুঃখের কান্না নয় সুখের কান্না। তবে নিজেকে সংযত করলো পূর্বাশা, ভাঙা কন্ঠে বলল – দেব। আজই পড়বে?

জেফি এবং সুজি উৎফুল্লতার সাথে হ্যা বোধক মত পোষণ করলেও সেনজেই না বোধক মত পোষণ করলো। সে বলল – এখন আবার এই পোশাক পড়ে তৈরী হতে গেলে সময় লাগবে অনেকটা। আমাদের দেরী হয়ে যাবে। তাছাড়া মেয়েটা এতটা পথ জার্নি করে এসেছে ওর আগে খাওয়া দাওয়া প্রয়োজন।

সেনজেইয়ের কথায় আজকের মতো থ্রী পিস পড়া স্থগিত রাখলো সবাই। সিদ্ধান্ত নিল অন্য একদিন তারা তিনজন থ্রী পিসে নিজেদের সাজাবে। অতঃপর পূর্বাশসহ চারজন মিলে বেরিয়ে এলো হোস্টেলের বাইরে। হোস্টেলের বাইরে এসেই দেখা মিললো তৃষামের। সাথে সকালের সেই নাক উঁচু ছেলে জায়ানও রয়েছে মোবাইলে কি যেন দেখছে ছেলেটা।সর্বক্ষন মোবাইলে কি দেখে এই ছেলেটা? নিশ্চই গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে। এবার অবশ্য তাদের সাথে আরও একটা ছেলে রয়েছে। এটাকেও দেখতে চাইনিজদের মতোই লম্বা তেল চকচকে ফর্সা চেহারার সাথে মানানসই ছোট ছোট মার্বেলের মতো চোখ। পূর্বাশাকে দেখেই সাথের দু’জনকে নিয়ে তৃষাম এগিয়ে এলো তার দিকে, অপরাধীর কন্ঠে বলল – দুঃখিত পূর্বা, বিশ্বাস কর আমি ভীষন জরুরী একটা কাজে আটকে গিয়েছিলাম তাই তোকে আনতে যেতে পারিনি। মাফ কর আমাকে।

তৃষামের কথা শেষ হতেই মুখ খুললো জায়ান, মোবাইলের দিকে দৃষ্টি রেখে ভাবলেশহীনভাবে বলল – মাফ যখন চাইছিস কি এমন জরুরী কাজ ছিল সেই কাজের বর্ণনা দিয়েই মাফ চা। বল তোর জরুরী কাজ ছিল ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া নতুন নতুন সুন্দরী মেয়েদের দেখা। তাদের সাথে যেচে খাতিল করা।

হুট করে জায়ানের এমন কথায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো তৃষাম। এখানে আর কেউ জায়ানের কথা না বুঝলেও পূর্বাশা তো বুঝেছে। যার কাছে মাফ চেয়েছে সেই তো বুঝে গেছে। তৃষাম দ্রুতই তীব্র প্রতিবাদ করে উঠলো জায়ানের কথার, পূর্বাশার পানে তাকিয়ে বলল – মিথ্যা বলছে জায়ান। আমি মোটেও এমন ধরনের ছেলে নই। সত্যিই আমার জরুরী কাজ ছিল।

পূর্বাশা অবশ্য কানে নেয়নি জায়ানের কথা। আর তার মতো একজন তুচ্ছ মানবীকে কেউ আনতে যাবে এটাই তো অনেক কিছু তার কাছে। সেখানে তৃষাম না যেতে পারলেও কাউকে পাঠিয়েছে তাকে আনতে। একদম তো একা ছেড়ে দেয়নি। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলল পূর্বাশা, কোমল কন্ঠেই বলল – ইটস ওকে ভাইয়া। আমি কিছু মনে করিনি।

তৃষাম খুশি হলো কিছুটা। হাসি মুখেই সে বলল – আমি এখনই কল করে বের হতে বলতাম তোকে। সকালে তোকে আনতে যেতে পারিনি তাতে কি হয়েছে এখন আমরা ঘুরবো, চল।

পূর্বাশা তাকালো সেনজেই, সুজি আর জেফির পানে। মেয়ে তিনটা তার একটু দূরেই দাঁড়ানো। কানের পাশে চুল গুজছে একটু পর পর। চোখে মুখে তালের লাজুকতার ছাপ। এদের হাবভাব দেখে ভ্রু কিছুটা সংকুচিত হলো পূর্বাশার। এদের হঠাৎ এত লজ্জা পাওয়ার কারন কি? মনের কোনে প্রশ্ন জাগলেও সেদিকে বেশি মাথা ঘামালো না সে। তৃষামের পানে তাকিয়ে নরম কন্ঠে বলল – আমার সাথে আমার রুমমেটটা আছে। ওরাও ঘুরতে যাবে বলেছে।

তৃষাম তাকালো মেয়ে তিনটার দিকে। চোখে মুখে যেন তার আনন্দ ফুটে উঠল, সহাস্যে সে বলল- তাতে কি? চল আজ সবাইকে আমি ঘুরাবো এবং খাওয়াবো।

পূর্বাশার ইতস্ততবোধ হলো। এরা কি তৃষামদের সাথে ঘুরতে যেতে রাজি হবে? যদি রাজি না হয়। সে তো আর নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছে চাপিয়ে দিতে পারে না কারো উপর, পূর্বাশা তৃষামের পানে তাকিয়ে বলল – আমি জিজ্ঞেস করে নেই ওদের তিন জনের কাছে।

কথাটা বলেই সেনজেই, সুজা আর জেফির পানে এগিয়ে গেলো পূর্বাশা। তাদের মতামত নেওয়ার ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করল – তোমরা কি তৃষাম ভাইদের সাথে যেতে চাও?

পূর্বাশার কথা শুনেই সুজা তাকে প্রশ্ন করলো – তৃষ্ণায় ভাইদের সাথে কি জায়ান ভাইও যাবে?

পূর্বাশা তাকালো জায়ানের পানে, বলল – সম্ভবত যাবে।

জায়ান যাবে শুনেই রাজি হয়ে গেল তিনজন। সেনজেই খুশিতে গদগদ হয়ে বলল – জায়ান ভাই যেখানে আমরা আছি সেখানে।

সেনজেইয়ের কথা শুনে কিছুটা অবাক হলো পূর্বাশা। কি এমন এই ছেলে যার কথা শুনে এক মুহুর্তেই ভোল পাল্টে গেল এই তিন মেয়ের। এর মানে এই নাক উঁচু জায়ানকে দেখেই এতক্ষন লাজুক লতা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল এই তিনজন? পূর্বাশা বেশ অবাক কন্ঠেই প্রশ্ন করলো – এই জায়ান ছেলেটা এই জনপ্রিয় নাকি?

– হ্যা হ্যা ভীষন জনপ্রিয়। তুমি আজ এসেছো তো তাই জানো না। আর আমরা এসেছি এক সপ্তাহ হয়েছে এর মধ্যেই এই ছেলের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জেনে গেছি আমরা।

জেফির কথার মাঝ পথেই তাকে থামিয়ে দিল সুজা। সে বলল – ওর নাম শীও জায়ান। আমাদের ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে সুদর্শন ছেলে ও। তাছাড়া ক্লাস টপারও।

ওদের কথা শুনে বেশ অবাক হলো পূর্বাশা তবে বলল না কিছুই। তৃষামের কাছে এসে জানালো তারা রাজি ওদের সাথে যেতে। তৃষাম এবার সবার পানে তাকিয়ে হাসি মুখে বলল – পাশেই একটা পার্ক আছে। চলো তাহলে আগে আমরা ঘুরতে যাই সেখানে খাবো তারপর ফিরবো।

পরে খাবে শুনে চুপসে গেল পূর্বাশার মুখটা। তার যে ক্ষুধা লেগেছে ভীষণ। বলতেও পারছে না সবার সামনে। এভাবে হুট করে সবার সামনে আগে খাওয়ার কথা বললে আবার কি না কি ভাবে। তাকে নিশ্চই সবাই খাদক ভাববে। তার উপর অপরিচিত মানুষের মধ্যে তার ইতস্ততবোধ তো আছেই। তৃষামের কথা শুনে হাতের মোবাইলটা পকেটে রাখলো জায়ান। একবার একবার তাকালো সবার পানে অতঃপর হুট করেই বলল – আমি খাব আগে।

তৃষাম অবাক হলো জায়ানের কথা শুনে, অবাক কন্ঠেই বলল – তুই না খেয়ে এলি আবার খাবি?

– ঐ বাংলাদেশে তোরা কি যেন বলিস। “মাইট” সম্ভবত, আমার পেটে মাইট ভরে রেখেছি তো তাই ক্ষনে ক্ষনে ক্ষুধা লাগে আমার। চল খাবো আগে।

– কিন্তু…..

– কোনো কিন্তু না, আগে খাওয়া দাওয়া তারপর ঘোরাঘুরি।

চলবে……

ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি লিংক –
https://www.facebook.com/profile.php?id=100090661336698&mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

গ্রুপ লিংক –
https://www.facebook.com/groups/233071369558690/?ref=share_group_link

[ আহরাব ইশতিয়াদ এবং নিশিতা জুটির উপর লেখা আমার প্রথম উপন্যাস “স্নিগ্ধ প্রেয়শী” পড়ে নিন বইটই অ্যাপে, মাত্র ৪০ টাকা। বইয়ের লিংক এবং কিভাবে কিনবেন পেয়ে যাবেন কমেন্ট বক্সে ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here