স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_১ ( সূচনা পর্ব )

0
646

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_১ ( সূচনা পর্ব )

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

– ” নিজের চেহারা কখনও আয়নায় দেখেছিস? আর তোকে কিনা ভালোবাসবো আমি? মাথা খারাপ নাকি আমার? ”

নক্ষত্রের এমন কথায় যেন থমকে গেল পূর্বাশা। পায়ের নিচের মাটি যেন মুহুর্তেই চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে আলাদা হয়ে গেল। বুকের ভিতরে চিনচিনে ব্যথার আবির্ভাব অনুভব করলো মেয়েটি। কি বলছে এসব নক্ষত্র তাকে? ছেলেটা তো তাকে ভালোবাসে, পগলের মতো ভালোবাসে। নিশ্চই মজা করছে নক্ষত্র। নিজেকে ধাতস্থ করলো পূর্বাশা, ঠোঁট টেনে একটু জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করলো সে, বলল – ” আপনি মজা করছেন নক্ষত্র ভাই তাই না? দয়া করে এমন মজা আমার সাথে করবেন না। আপনার মজাতেও আমার যে ভীষন কষ্ট হয়। ”

নক্ষত্র তাকালো পূর্বাশার মুখ পানে, শক্ত কন্ঠে বলল – আমি কোনো মজা করছি না যেটা সত্যি সেটাই বলছি আমি। ঐ তো চাপা গায়ের রং, আমার গায়ের রঙের সাথে মিলিয়ে দেখেছিস কখনও? উচ্চতাও তো চোখে না পড়ার মতো, আমার কাঁধেরও নিচে তোর অবস্থান। আর শারীরিক কাঠামোর কথা না হয় নাই বললাম। দেখলে তো মনে হয় অপুষ্টিতে ভুগছিস। তোর মতো মেয়েকে আর যাই হোক ভালোবাসা যায় না, যা করা যায় সেটা হলো টাইম পাস।

বুকের মধ্যে যেন মোচড় দিয়ে উঠলো পূর্বাশার। মুহুর্তেই তীব্র ব্যথায় যেন জর্জরিত হয়ে উঠলো মেয়েটা। হৃদয়ে দহনের আগুন জ্বলতে শুরু করলো। বেশামাল হয়ে পড়লো মেয়েটা, কন্ঠ রোধ হয়ে আসছে যেন তার। চাইলেও কন্ঠ থেকে বের করতে পারছে না কোনো শব্দ। তবুও নিজেকে একটু সামলে নিতে চেষ্টা করলো মেয়েটা। কম্পিত কন্ঠে বলল – ” তাহলে এতদিন আমাদের সম্পর্ক! আমাদের ভালোবাসা! সবাটাই কি মিথ্যা ছিল? অভিনয় ছিল সবটা?

নক্ষত্র যেন অবাক হলো, অবাক কন্ঠেই সে বলল – ” এত দিন কোথায় মাত্র তো ১৫ দিন প্রেম ছিল তোর আর আমার। সেই ১৫ দিনকে তুই এত দিন বানিয়ে ফেললি? ”

– ” তার আগের পাঁচ মাস? ”

নক্ষত্র হাসলো একটু, বলল – ” ঐ পাঁচ মাস তো আমি তোর পিছনে ঘুরেছি তুই পাত্তা দিসনি তাই কোনো সম্পর্কও হয়ে ওঠেনি আমাদের। জানিস তো ঐ পাঁচ মাসে কতবার যে আমার তোর উপরে রাগ উঠেছে ইচ্ছে করে ঠাস ঠাস করে তোর দুগালে থাপ্পর লাগিয়ে বুঝিয়ে দেই আমাকে প্রত্যাখ্যান করার শাস্তি কিন্তু তার করলে তো আর হতো না। চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম যে, চ্যালেঞ্জে যে জিততেই হতো আমাকে। তুই তো জানিস ছোট বেলা থেকেই হাড় জিনিসটা পছন্দ করিনা আমি। ”

নক্ষত্রের কথায় কিছুটা অবাক হলো পূর্বাশা, অস্ফুট কন্ঠে বলল – ” চ্যালেঞ্জ! ”

– ” হ্যা চ্যালেঞ্জই তো। ছোট মামার মেয়ে পাপিয়া ও বললো যে তোকে নাকি পটাতে পারবে না কেউ। ভীষণ শক্ত মেয়ে তুই। তখনই এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিলাম আমি। আর জিতেও গেলাম। তাও ভালো অন্তত এই চ্যালেঞ্জের জন্য আমার মতো একটা ছেলের সাথে ১৫ দিন প্রেম করার সুযোগ পেয়েছিস, নয়তো তোর মতো মেয়ের পিছনে এ নক্ষত্র ঘোরে না। ”

পূর্বাশা সহ্য করতে পারলো না আর। যে মানুষটাকে এতদিন বিশ্বাস করে ভালোবেসে এসেছে। যার সাথে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছে সে কিনা আজ বলছে সব অভিনয়, সব মিথ্যা? পূর্বাশা দৌড়ে এলো নক্ষত্রের কাছে। পা উঁচু করে চেপে ধরলো নক্ষত্রের কলারটা। ক্ষ্যাপাটে কন্ঠে বলল – ” আপনি সামান্য একটা চ্যালেঞ্জের জন্য এত বড় একটা ধোঁকা দিলেন আমাকে? অভিনয় করলেন আমার সাথে? ”

নক্ষত্র নিজের হাত উচাঁলো, শক্ত হাতে নিজের কলার থেকে হাত সরিয়ে দিল পূর্বাশার, বলল – আমি তোকে ধোঁকা দেইনি কোনো। মাত্র তো ১৫ দিন সম্পর্ক ছিল আমাদের তার আগে তুই পাত্তা দিসনি আমাকে। আর আশা করছি এই ১৫ দিনে তুই আমাকে ভালোবেসে একদম উল্টে ফেলিসনি তাই না। সুতরাং আমাকে ধোঁকাবাজ বলা থেকে বিরত থাক।

পূর্বাশা মলিন হাসলো, মলিন কন্ঠে বলল – ভালোবাসা কি আর ১৫ দিনে হয়েছে নক্ষত্র ভাই? আমার ভালোবাসা তো জন্মেছে ঐ পাঁচ মাসে। ঐ পাঁচ মাসে তোমার নিখুঁত অভিনয়েই যে আমি তোমার প্রতি আসক্ত হয়ে উঠেছিলাম। হৃদয়ে জায়গা দিয়েছিলাম তোমাকে। আর তুমি কিনা এই ১৫ দিনের ব্যাখ্যা দিচ্ছো? তাহলে ঐ পাঁচ মাসের ব্যাখ্যা কে দিবে নক্ষত্র ভাই?

নক্ষত্র দমে গেল কিছুটা। পূর্বাশার কথার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু উত্তর দেওয়ার মতো খুঁজে পেল না সে। তবুও নিজেকে বাঁচাতে হবে যে। নিজের অন্যায় বা ভুল যে কোন রূপেই স্বীকার করা যাবে না। অবশ্য নক্ষত্র তো মানেই না সে ভুল বা অন্যায় করেছে কোনো। নক্ষত্র তাকালো পূর্বাশার পানে, বলল – তোর এত কথা শুনতে চাইনি আমি। আমার যা বলার বলে দিয়েছি আমি। আজকের পর থেকে তোর সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই আমাদের কথাটা মাথার মধ্যে ভালোভাবে ঢুকিয়ে নিস।

কথাটা বলেই রুমের বাইরে যেতে উদ্যত হলো নক্ষত্র কিন্তু পারলো না। পিছন ঘুরে দুই কদম যেতেই তার পায়ে লুটিয়ে পড়লো পূর্বাশা। দুই হাতে জাপটে ধরলো নক্ষত্রের পা জোড়া। হাউমাউ করে কেঁদে বলল – ” আমি আপনাকে ভীষন ভালোবাসি নক্ষত্র ভাই। দয়া করে আমাকে ছেড়ে যাবেন না। আমি সহ্য করতে পারবো না।

কথাটুকু বলে একটু থামলো পূর্বাশা অতঃপর আবার, বলল- আপনি আমাকে যা বলবে আমি তাই করবো । তবুও ছেড়ে যাবেন না নক্ষত্র ভাই। মরে যাব আমি। আমার উপর দয়া করুন। ভিক্ষে দিন আমায় একটু ভালোবাসা। আমি যে বাঁচতে পারবো না আপনাকে ছাড়া।

পূর্বাশার অসহায় কান্নারত কন্ঠস্বরও গলাতে পারলো না নক্ষত্রের হৃদয়। সে যেন আরও বিরক্ত হলো মেয়েটার কান্নায়। নিজের পা ছাড়িয়ে নিতে চাইলো পূর্বাশার হাতের বন্ধন থেকে, বিরক্তিভরা কন্ঠে বলল – পা ছাড় পূর্বা, পা ছাড়।

পূর্বাশা তবুও পা ছাড়লো না নক্ষত্রের। বরং আরও শক্ত করে ধরলো তার পা জোড়া, কান্নারত কন্ঠেই বলল – আমাকে ছেড়ে যাবেন না নক্ষত্র ভাই। আমি যে আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি, বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। দয়া করে আমাকে এত বড় শাস্তি দিবেন না।

নক্ষত্র এবার যেন বিরক্ত হলো আরও বেশি। একটা লাথি মেরে নিজের পা দুটো ছাড়িয়ে নিল‌ পূর্বাশার বন্ধন থেকে। মেয়েটা ছিটকে পড়লো মেঝেতে। সেদিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চাপলো নক্ষত্র, ক্রোধিত কন্ঠে বলল – বাঙালির এই একটা বাজে স্বভাব খেতে দিলে শুতে চায়। এই যে পাঁচ মাস তোর পিছনে ঘুরেছি, ১৫ দিন তোর সাথে প্রেমের অভিনয় করেছি এটাই তোর সৌভাগ্য। আবার কিনা আমাকে বলছিস ছেড়ে না যেতে? ঐ চেহারায় আবার আমাকে আশা করিস? নিজের চেহারার সাথে মিলিয়ে কাউকে খুঁজে নে যা, রাস্তা ঘাটে অহরহ রিক্সা চালক, টোকাই, ভ্যান চালক আছে। তোর সাথে তাদের মানাবে ভালো। আমার পিছনে আসার চেষ্টাও করিস না বুঝেছিস? বাজারী মেয়ে কোথাকার, সুন্দর ছেলে দেখলেই গায়ে লাফিয়ে উঠতে চায়, যত্তসব।

নক্ষত্র এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে বেরিয়ে গেল পূর্বাশার কক্ষ থেকে। তবে পূর্বশা উঠলো না আর। দাঁড়ানোর শক্তি যেন হারিয়ে ফেলেছে সে তাই বসে রইলো মেঝেতেই। নক্ষত্রের বলা কথাগুলো বারংবার বেজে চলছে তার কর্ণকুহরে। সে বাজারী মেয়ে? সুন্দর ছেলে দেখলেই গায়ে লাফিয়ে ওঠে? হয়তো তাই, এই মাত্র তো সে বাজারী মেয়েদের মতোই আচরন করেছে। ছেলেটা তাকে ভালোবাসে না জেনেও তার কাছে ভালোবাসার দাবী করেছে পূর্বাশা। হাউমাউ করে কেঁদে লুটিয়ে পড়েছে তার পায়ে। ভিক্ষে চেয়েছে ছেলেটার কাছে ভালোবাসা। সে তো বাজারী মেয়েদের মতোই কাজ করেছে। তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো পূর্বাশা।

কিঞ্চিৎ সময় নিয়ে মেঝতে বসে থেকে সেখান থেকে মেয়েটা। টলতে টলতে গিয়ে দাঁড়ালো ড্রেসিং টেবিলের বড় আয়নাটার সম্মুখে। দেখতে লাগলো নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। নিজের চেহারা উপর যেন ঘৃনা জন্মে গেল তার। এতটা কুৎসিত কেন দেখতে সে? গায়ের রংটা বড্ড চাপা যে। শুকনা ছিপছিপে শরীরের গঠন, উচ্চতা ঐ টেনেটুনে পাঁচ ফুট হবে। ছোটবেলা থেকে এ নিয়ে কম কথা শুনতে হয়নি তাকে। কালির ড্রাম, চিকনি, কোকিল, কালিতারা ইত্যাদি ইত্যাদি অজস্র নাম শুনতে বড় হতে হয়েছে পূর্বাশাকে। তারপর যখন ধীরে ধীরে একটু একটু করে বড় হতে শুরু করলো তখন আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সবার মুখে একটা শুনেছে সে। এই মেয়েকে বিয়ে দিবে কোথায়? যৌতুক দিয়েও তো বিয়ে দিতে পারবে না বোধহয়। যা গায়ের রং, তোমাদের ঘরে এমন একটা মেয়ে জন্ম নিল কি করে? নিশ্চই পে’টে নিয়ে কুৎসিত কারো ছবি টবি দেখেছো। ধীরে ধীরে সমাজ, মানুষ সকলের থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করলো মেয়েটা। নিজের একাকিত্বকেই সঙ্গী করলো সে। ঘরের চার দেওয়াল আর স্কুল কলেজের গন্ডিতেই কেটে যাচ্ছিল তার জীবন। মানুষের তিরস্কারমূলক বানী শোনার ভয়ে কারো সামনে যাওয়া, কোথাও বেড়াতে যাওয়া, আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাওয়াও বন্ধ করেছিল। আর ভালোবাসা! সে তো কখনও কল্পনাও করেনি যে তাকে কেউ কখনও ভালোবাসবে, বুকে আগলে নিবে। তাই এসব থেকে বরাবরই দূরে থেকেছে পূর্বাশা। কিন্তু তারপর তার জীবনে আগমন ঘটলো নক্ষত্রের। ছেলেটা সম্পর্কে তার ফুফাতো ভাই, বড় ফুফুর বড় ছেলে। বয়সে তার থেকে বছর তিনেক বড় হবে সম্ভবত। হঠাৎ একদিন সে এসে পূর্বাশার সম্মুখে দাঁড়ালো ভালোবাসার দাবি নিয়ে। পূর্বাশা সেদিন অবাক হয়েছিল বেশ তবে গ্রহন করেনি নক্ষত্রের ভালোবাসা, সাথে সাথেই প্রত্যাখ্যান করেছিল তাকে। সারা জীবন একাকিত্বকে সঙ্গী করে বাঁচতে বাঁচতে তার মনে একটা বদ্ধমূল ধারনা জন্মে গিয়েছিল যে তার ভালোবাসার অধিকার নেই কোনো। তবে তার সেই ধারনা ভেঙে দিয়েছিল নক্ষত্র। পূর্বাশা যতবারই প্রত্যাখ্যান করেছে ছেলেটাকে, ছেলেটা ততবারই ভালোবাসার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছে তার সম্মুখে। একটা বারের জন্যও পিছু হটেনি। নক্ষত্রের যত্ম, ভালোবাসা, পাগলামী দেখে একটা সময় পূর্বাশাও দূর্বল হয়ে পড়ে নক্ষত্রের প্রতি, ভালোবেসে ফেলেছে নক্ষত্রকে। তার হৃদয়ের সকল ধারনাকে ভেঙে চুড়ে সেখানে জায়গা দিয়েছিল তার প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসা নক্ষত্রকে। কিন্তু সেও আজ এভাবে ধোঁকা দিল তাকে। সবটা অভিনয় বলে চলে গেল এত সহজে? চোখ বন্ধ করে নিল পূর্বাশা। গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে অঝড়ে অশ্রুকন। সে দেখতে খারাপ কেন? সৃষ্টিকর্তা তাকে এই রূপে কেন সৃষ্টি করেছে? আর একটু সুন্দর বানালে কি হতো? আর একটু সুন্দর হলে হয়তোবা সেও বাঁচতে পারতো আর পাঁচটা সাধারন মেয়ের মতো। শুনতে হতো না সমাজের বিষাক্ত কটুকথাগুলো। আর একটু সুন্দর হলে হয়তো আজ তার ভালোবাসার মানুষটাও তার হতো, সে ভালোবাসতো তাকে। কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই ড্রেসিং টেবিলে তার চোখে পড়লো একটা লাল রঙা লিপস্টিক। হাত বাড়িয়ে হাতে নিল সে লিপস্টিকটা, গালে ঠোঁটে মাখলো সেটা। পাগলের মতো বলতে শুরু করলো – কে বলেছে আমি সুন্দর না? এই তো সুন্দর আমি, ভীষন সুন্দর। এবার তো নক্ষত্র ভাই ভালোবাসবে আমার, ভীষণ ভালোবাসবে।

চলবে……

ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি লিংক –
https://www.facebook.com/profile.php?id=100090661336698&mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

গ্রুপ লিংক –
https://www.facebook.com/groups/233071369558690/?ref=share_group_link

Note : এই গল্প প্রতিদিন চাহিয়া কেউ লজ্জা দিবেন না। আপনারা সবাই জানেন আমার পরীক্ষা চলতেছে তাই ততটা রাখতে পারছি না। কিন্তু সমস্যা হলো পড়তে বসলেই নতুন নতুন গল্প মাথার মধ্যে এসে ভীর করে। এমনি সময় খবর নেই কিন্তু পড়তে বসলেই আমার সব মনে পড়ে। একটু একটু সময় বের করে বেশ কয়েকদিন মিলিয়ে এইটুকু লিখেছি ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করে দেই। আবার যখন সময় পাবো তখন লিখবো। আপনারা দয়া করে অপেক্ষা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here