স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_২

0
388

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_২

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

হাত বাড়িয়ে হাতে নিল সে লিপস্টিকটা, গালে ঠোঁটে মাখলো সেটা। পাগলের মতো বলতে শুরু করলো – ” কে বলেছে আমি সুন্দর না? এই তো সুন্দর আমি, ভীষন সুন্দর। এবার তো নক্ষত্র ভাই ভালোবাসবে আমায়, ভীষণ ভালো বাসবে। ”

কথাগুলো বলতে বলতেই ডুকরে কেঁদে উঠলো পূর্বাশা। হাতের লিপস্টিকটা ছুঁড়ে ফেলে দিল কাছে কোথাও। আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব নজরে আসতেই নিজের ডান হাত বাড়িয়ে সজোরে আঘাত করলো আয়নার গ্লাসে, চিৎকার করে বলে উঠলো – আমি কেন সুন্দর নই? কেন সুন্দর নই আমি?

মুহুর্তেই আয়নাটা ভেঙে চুরমার হয়ে গড়িয়ে পড়লো মেঝেতে। মেয়েটার নাজুক হাতটাও সহ্য করতে পারলো না কাঁচের আঘাত, র’ক্তা’ক্ত হলো তার হাতটা। লাল র’ক্তে রঙিন হয়ে সেটা। তবে সে অনুভব করতে পারলো না তার হাতের ক্ষতের ব্যথা। এই মুহুর্তে তার হৃদয়ের কঠিন ব্যথার নিকট শরীরের এই ব্যথা যে বড়ই তুচ্ছ, নগন্য। পূর্বাশা কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো ড্রেসিং টেবিলের পাশ ঘেঁষে। র’ক্তা’ক্ত হাতটা উঠিয়ে বুলালো নিজের অতি সামান্য কৃষ্ণবর্ণা মুখশ্রীতে। পাগলের মতো অনর্গল বলতে শুরু করলো – কেন সুন্দর নই আমি? কেন কেন কেন?

কাঁদতে কাঁদতেই হঠাৎ মেয়েটার চোখে পড়লো আয়নার ভাঙা টুকরো টুকরো কাঁচের উপর। কান্না বন্ধ হয়ে গেল মেয়েটার। ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো পূর্বাশা, মুহুর্তেই আবার চোখ মুখ শক্ত করে ফেললো সে। হাত বাড়িয়ে কাঁচের টুকরোটা হাতে উঠিয়ে নিল মেয়েটা। নিজের প্রতি নিজের বি’ষা’ক্ত তিক্ত অনুভূতির রেশ নিয়েই বলল – আমার মতো মেয়ের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই কোনো। যার রূপ নেই, সৌন্দর্য নেই, ভালোবাসার অধিকার নেই তার বেঁচে থাকরও অধিকার নেই।

একটু থামলো পূর্বাশা অতঃপর আবার বলল – হ্যা আমি ম’র’বো। এই সমাজকে মুক্তি দিয়ে যাব আমার মতো এক কুৎসিত মেয়ের থেকে। মুক্তি দেব আমার বাবা মা পরিবারকে। আমার মতো এক মেয়েকে জন্ম দিয়ে তাদেরও তো কম কথা শুনতে হয়নি। মুক্তি দিয়ে যাব আমার ভালোবাসার মানুষকে। সবচেয়ে বড় কথা মুক্তি পাবো আমি। এই ভদ্র সমাজ, এই ভদ্র সমাজের সভ্য সৌন্দর্য প্রিয় মানুষের থেকে মুক্তি পাবো আমি, এবার আমারও মুক্তি মিলবে, মুক্তি।

কথাটা শেষ করেই ডান হাতের আয়না ভাঙা কাঁচের টুকরোটা ধরলো বাম হাতের কব্জির উপরে। এর আগেও পূর্বাশা আ’ত্ম’হ’ত্যা করার চেষ্টা করেছে অনেকবার কিন্তু পারেনি, হাত কেঁপেছে তার। বাবা মা ছোট ভাই বোন দুটোর কথা মনে পড়ে মন কেঁদেছে তার। কিন্তু আজ আর কাঁদবে না, কাঁদতে দিবে না সে। যে জীবন এত বিষাক্ততা, এত তিক্ততা দিয়ে পরিপূর্ণ সে জীবন রাখবে না আর সে। অনেক হয়েছে, অনেক সহ্য করেছে সে। আর যে সহ্য হচ্ছে না তার। দেয়ালে পিঠ থেকে গেছে এবার। আর চলার শক্তি নেই তার মাঝে। এবার সে মুক্তি চায়। এই সমাজ, সমাজের মানুষ, তাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য কটুক্তি, তিরস্কার থেকে এবার মুক্তি চায় পূর্বাশা। মন শক্ত করলো মেয়েটা, চোখ বন্ধ করে নিজের কব্জির উপর আঘাত করলো কাঁচের টুকরোটা দিয়ে। মূহুর্তেই কেটে গেল সেখানটা, গলগলিয়ে রক্ত বেরিয়ে এলো কাটা স্থান থেকে। সে রক্তের পানে তাকিয়ে হাসলো মেয়েটা। মনে পড়লো কলেজে বান্ধবীরা সেদিনই তো বলেছিল তাকে – তোর গায়ে রক্ত আছে? তাও নেই সম্ভবত। রক্ত থাকলে তো সুন্দর হতিস। এমন কালটুস আর হ্যাংলা হতিস না।

যদিও চেহারার সৌন্দর্যের সাথে রক্তের কি সম্পর্ক জানা নেই পূর্বাশার। তবে নিজের হাতের কব্জি থেকে এভাবে গলগলিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসতে দেখে খুশিই হলো সে, বিরবিরিয়ে বলল – কে বলেছে রক্ত নেই তাই অসুন্দর আমি? এই তো কত রক্ত আমার শরীরে, কত রক্ত।

কথাটা বলেই আবার হুট করে জোরে শব্দ করে পাগলের মতো হেসে উঠলো পূর্বাশা। চিৎকার করে বলল – এবার আমার মুক্তি। এবার আমার শান্তি। আমাকে আর এই সমাজের তিক্ত বিষাক্ত বানী শুনতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা মাকেও আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে ছোট হতে হবে না। আমাকে আর ভালোবাসার জন্য ভিক্ষাও করতে হবে না।

কথাগুলো বলতে বলতেই মেঝেতে ষ লুটিয়ে পড়লো পূর্বাশা। পরম আবেশে চোখ বন্ধ করে নিল সে, বিরবিরিয়ে বলতে লাগলো – এবার আমার মুক্তি, এবার আমার মুক্তি।

এই সমাজ, এই দুনিয়া থেকে মুক্তি পেতে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েও বুঝি মুক্তি আর হলো না পূর্বাশার। সে পুরোপুরি জ্ঞান হারানোর আগেই সেখানে এসে উপস্থিত হলেন তার মা পাখি বেগম। এতক্ষন নিচ থেকে মেয়ের চিৎকার শুনেছেন সে অনেকবার তবে দৌড়ে আসতে পারেননি। রান্নাঘরে রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। ছোট ছেলে মেয়ে দুটোও গেছে স্কুলে তাই তাদেরও পাঠাতে পারেনি বোনের কাছে। তবে তখন তো আর বুঝতে পারেনি মেয়ে এখানে এমন একটা অঘটন ঘটিয়ে বসেছে। এ কথা জানলে তো তিনি নিশ্চই দেরী করতেন না এত। কাজ ফেলে রেখেই ছুটে আসতেন আদরের মেয়ের কাছে। হাতের কাজ শেষ করে এসে মেয়ের এমন অবস্থা দেখে যেন থমকে গেলেন তিনি। চিৎকার করে উঠলেন সাথে সাথেই। পূর্বাশা বলে দৌড়ে কাছে গেলেন মেয়েটার। বসে পড়লেন মেঝেতে, দ্রুতই মেয়ের মাথা নিজের কোলের উপর নিলেন। অস্থির কন্ঠে শুধালেন – এ তুই কি করেছিস মা? কেন করেছিস?

পূর্বাশা নিভু নিভু দৃষ্টিতে তাকালো মায়ের মুখ পানে। মায়ের এমন অস্থিরতা দেখে হাসলো সে। নিজের দূর্বল র’ক্তা’ক্ত হাত খানা অনেক কষ্টে টেনে হিচড়ে মেঝে থেকে রাখলো মায়ের গালে, ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বলল – এবার আমার মুক্তি মা।‌ এবার আমি একটু শান্তি হবে।

কথাটা বলেই চোখ বন্ধ করে নিল মেয়েটা। পাখি বেগমের গাল থেকে মেয়ের হাতটা ধপ করে পড়ে গেল নিচে। চিৎকার করে উঠলেন পাখি বেগম, কান্নারত কন্ঠে ডাকলেন মেয়েকে, বললেন – পূর্বা! পূর্বা! এই পূর্বা!

কোনো সাড়া এলো না পূর্বাশার কন্ঠনালি থেকে। পাখি বেগম বিচলিত হলেন। রক্তাক্ত হলো তার হৃদয়, মেয়ের হয়ে যায়নি তো কিছু? এমন একটা দূর্যোগের সময় বাড়িতেও নেইও কেউ। কাকে ডাকবে, কি করবে সে ভেবে পাচ্ছে না কিছুই। একটু আগে নক্ষত্র এসেছিল সেও চলে গেছে। ছেলেটা তো এই রুম থেকে বেরিয়েই চলে গেল বোধহয়। তবে কি নক্ষত্রের সাথে কিছু হয়েছে পূর্বাশার যার জন্য এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেলেছে মেয়েটা। পাখি বেগমের মস্তিষ্কে কথাটা একবার হানা দিলেও পাত্তা দিলেন না তিনি। এই মুহূর্তটা ওসব ভাবার সময় নয়। মেয়েটাকে বাঁচাতে হবে আগে। সে বেঁচে থাকতে কিছু হতে দিবে না মেয়ের। মেয়ের মাথাটা নিজের কোল থেকে নামিয়ে উঠে দাঁড়ালেন পাখি বেগম। দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। ডেকে আনলেন তাদের। কোনোমতে তাদের সহযোগিতায় মেয়েকে নিয়ে ছুটলেন হাসপাতালে। ইতমধ্যে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় নিজের স্বামী আহমেদ সাহেবকেও খবর দিয়েছেন তিনি। সেও হাসপাতালে এসে পৌঁছেছে বেশ কিছুক্ষণ। মেয়ের এমন কান্ডে যেন ক্ষত বিক্ষত হয়েছে পিতার মন। মেয়েটা কেন এমন করলো? যদি কিছু হয়ে যায় মেয়েটার? সন্তান যতই কুৎসিত খারাপ হোক না কেন মা বাবা কি কখনও ফেলে দিতে পারে তাদের? কখনও পারে না। আহমেদ সাহেব অস্থির পায়ে পায়চারী করছেন অপারেশন থিয়েটারের সম্মুখে। আর পাখি বেগম আঁচলে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছেন এক কোনে বসে। তাকে শান্তনা দিচ্ছেন দুই তিনজন প্রতিবেশী নারী। এরা সেই প্রতিবেশী যাদের তিক্ত বানীতে ধীরে ধীরে বিষিয়ে উঠেছিল মেয়েটার নরম, নাজুক মন। এরা সেই প্রতিবেশী যাদের জন্য আজ মেয়েটার এই অবস্থা। আমরা আসলে বেঁচে থাকতে পাশে কাউকে পাই না আর ম’রে গেলে শান্তনা দেওয়ার মানুষের অভাব হয় না। আজকের চিত্রটা কিন্তু অন্য রকমও হতে পারতো। এই প্রতিবেশীরা যদি ছোটবেলা থেকে গায়ের রং, শারীরিক গঠন কিংবা উচ্চতা নিয়ে মেয়েটাকে তিরস্কার না করে সামনের দিকে এগিয়ে চলার জন্য সাহস দিতো, তার পাশে থাকতো তবে মেয়েটার মনে এত হীনমন্যতার সৃষ্টি হতো না। তার বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা হারিয়ে যেত না এই টুকু বয়সেই। সেও আজ হাসিখুশি ভাবে সমাজের আর পাঁচ জনের মতোই বাঁচতে পারতো।

আহমদ সাহেবের অস্থিরতা এবং উদ্বিগ্নতার মধ্যেই হাসপাতালে এসে উপস্থিত হলেন তার আত্মীয় স্বজনদের কিছু অংশ। বিশেষ করে তার দুই বোন ডালিয়া বেগম এবং জুলিয়া বেগম। হাসপাতাল করিডোররে ঢুকেই তার ছোট বোন জুলিয়া বেগম এগিয়ে গেলেন ভাইয়ের নিকটে, বিচলিত কন্ঠে শুধালেন – কি অবস্থা মেয়েটার এখন?

আহমেদ সাহেব অসহায় দৃষ্টিতে তাকালেন বোনের পানে, উত্তর দেওয়ার জন্য দুই ঠোঁট ফাঁক করলেন। কিন্তু কন্ঠনালি থেকে কোনো শব্দ বের করার আগেই সেখানে উপস্থিত হলেন তাদের বড় বোন ডালিয়া বেগম, ঠোঁট বাঁকিয়ে বললেন – ওই মুখ পুড়ির কথা আবার কি জিজ্ঞেস করছিস তুই? দেখ ম’রে টরে গেছে কিনা এর মধ্যেই। ম’র’লো তো ম’র’লো আমাদের মান সম্মান ক্ষুয়িয়ে মরলো।

বোনের এমন কথায় ভীষন রাগ হলো জুলিয়া বেগমের। এই পরিস্থিতিতে এসেও এই নারী ভালো হলো না একটুও। ছোট বেলা থেকে মেয়েটাকে উঠতে বসতে কটু কথা শুনিয়েও যেন হয়নি এনার। আজ মেয়েটার এই পরিস্থিতিতে এসেও এমন ধরনের কথা বলতে বিন্দু পরিমাণ আটকাচ্ছে না তার? জুলিয়া বেগম ক্রোধিত কন্ঠে ধমকে উঠলেন বোনকে বললেন – বড় আপা তুমি মানুষ নাকি অন্য কিছু?

ছোট বোনের ধমকনোতে ক্রোধে পরিপূর্ণ হয়ে উঠলেন ডালিয়া বেগম, ঝাঁঝালো কন্ঠে বললেন – এই তুই আমাকে কি ধমকাচ্ছিস কাকে? ভুলে যাস না আমি তোর বড় বোন।

বোনের এহেন কোথায় আর চুপ থাকতে পারলেন না আহমেদ সাহেব। ছোট বেলা থেকে তো আর এই বোনের কম কথা সহ্য করতে হয়নি তার মেয়েকে। তাই বলে এমন পরিস্থিতিতেও? ক্রোধিত হলেন আহমেদ সাহেব, ক্রোধিত কন্ঠে বললেন – বড় বোন বলেই এতদিন তোমাকে সম্মান দিয়ে চুপ থেকেছি আমি। তাই বলে আজ এই পরিস্থিতিতে এসেও আমার মেয়ের বিরুদ্ধে তোমার মুখে শুনতে এই ধরনের কথা শুনে আমি আশ্চর্যান্বিত না হয়ে পারছি না বড় আপা। তোমাকে এখানে আমি ডাকিনি, তুমি নিজে থেকে এসেছো। তবে তোমাকে এখানে আমি প্রয়োজন মনে করছি না একটুও তুমি চলে যেতে পারো আমি বাঁধা দেব না। কিন্তু আমার মেয়েকে নিয়ে একটা কথা বললেও আজ তোমাকে আর ছাড় দেব না বলে দিলাম।

জুলিয়া বেগম বুঝলেন ভাই রেগে যাচ্ছে। ভাইকে শান্ত করার ভঙ্গিতে সে বলল – শান্ত হ ভাইয়া। এটা হাসপাতাল, এখানে কোনো ঝামেলা করা ঠিক হবে না।

ছোট দুই ভাই বোনের কথায় ঠোঁট বাঁকালেন ডালিয়া বেগম, বললেন – হ্যা হ্যা এখন তো সব দোষ আমার। আর তোর ঐ গুনধর মেয়ের জন্য সমাজে যে মুখ দেখানো আমাদের দুষ্কর হয়ে পড়েছে তার বেলায়? এই তো এলাকা থেকে আসার সময়ই শুনে এলাম মানুষ বলছে ” নিশ্চই কোনো কুকাম ঘটিয়েছে আহমেদ সাহেবের মেয়ে আর সেটা ঢাকার জন্যই আ’ত্ম’হ’ত্যা’র পথ বেছে নিয়েছে। নয়তো আ’ত্ম’হ’ত্যা করতে যাবে কেন?

কথাটা বলে একটু থামলেন ডালিয়া বেগম, নাক ছিটকে বললেন – ছোট বেলা থেকে ঐ চেহারা নিয়ে তো আমাদের কাউকে শান্তি দেয়নি ঐ মেয়ে। এখন ম’রা’র সময়ও শান্তি দিল না। আমাদের মান সম্মান আর কিছু রইলো না এই সমাজে, ছিঃ ছিঃ।

চলবে……

ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি লিংক –
https://www.facebook.com/profile.php?id=100090661336698&mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

গ্রুপ লিংক –
https://www.facebook.com/groups/233071369558690/?ref=share_group_link

[ আহরাব ইশতিয়াদ এবং নিশিতা জুটির উপর লেখা আমার প্রথম উপন্যাস “স্নিগ্ধ প্রেয়শী” পড়ে নিন বইটই অ্যাপে, মাত্র ৪০ টাকা। বইয়ের লিংক এবং কিভাবে কিনবেন পেয়ে যাবেন কমেন্ট বক্সে ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here