যার_কথা_ভাসে_মেঘলা_বাতাসে #পর্ব_২ #তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া

0
304

#যার_কথা_ভাসে_মেঘলা_বাতাসে
#পর্ব_২
#তাসমিয়া_তাসনিন_প্রিয়া

(প্রাপ্ত বয়স্কদের ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত)

জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলেনি কন্ঠ। অথচ এই প্রেম করতে গিয়ে কতশত মিথ্যা গল্প আওড়াচ্ছে আজকাল। মাঝে মধ্যে তো কন্ঠর মনে হয় প্রেম একটা লস প্রজেক্ট ছাড়া কিচ্ছু না।

” কী ব্যাপার কন্ঠ? এরকম খুঁড়িয়ে হাঁটছিস কেনো?”
ইফতির হাত ছেড়ে একা একা সোফায় বসলো কন্ঠ। তাতেই শারমিন সুলতানার এই কড়া প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো। আজকালকার মেয়েদের একদম বিশ্বাস করেন না কন্ঠর মা। চোখকান খোলা রাখেন বলেই বিভিন্ন খবর রাখেন শারমিন সুলতানা। এইতো কন্ঠদের দুই বাড়ি পর স্নেহাদের বাড়ি,স্নেহা কন্ঠর দুই বছরের সিনিয়র। গত বছর তার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ে হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু বিয়ের আগে গর্ভবতী হওয়া মোটেও স্বাভাবিক নয়। স্নেহা সেই অস্বাভাবিক কাজটি সংঘটিত করেছে। পরবর্তীতে স্নেহার পরিবার বাধ্য হয়ে স্নেহার প্রেমিকের সাথেই বিয়ে দেয়।
” ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করো,উনাকে সব বলেছি। এক কথা বারবার রিপিট করতে করতে পারবোনা। ”
কন্ঠ হিজাবের ব্রোঞ্জ খুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। বোরকা না পরলেও হিজাব পরা বাধ্যতামূলক তার জন্য। ইফতি কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো সেখান থেকে। কন্ঠর এরকম খামখেয়ালি আচরণ সহ্য হয় না তার।
” আজকের পর যদি কখনো বাড়ি ফিরতে রাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সমুদ্রকে সাথে নিয়ে যাবি।”
” ঠিক আছে মা। আমি তাহলে রুমে যাচ্ছি। আর হ্যাঁ রাতে খাবো না কিছু। যা খেয়েছি তাতেই পেটের অবস্থা খারাপ। ”
” ঠিক আছে। তাহলে ফ্রেশ হয়ে নিস আর হ্যাঁ ব্যাথার জন্য ঔষধ খেয়ে নিস।”
কন্ঠ আবারও নিখুঁত অভিনয় করে খুঁড়িয়ে হেঁটে রুমে গেলো। দরজা আঁটকে বড়ো একটা নিঃশ্বাস ফেলে ওয়াশরুমে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিলো। এই প্রহরটা যেনো কেমন! সামনাসামনি দেখা হলে কত কেয়ার অথচ দূরে থাকলে ভীষণ উদাসীন কন্ঠর প্রতি। সেই নিয়ে কন্ঠর ভীষণ মন খারাপ লাগে। এতক্ষণ প্রহরের সাথে ছিলো বলেই সেই সব মন খারাপের কথা মনে ছিলো না। কিন্তু বাসায় ফিরতেই মনটা কেমন লাগছে। একবার কল দিয়ে তো জানতে পারতো কন্ঠ বাসায় ফিরলো কি-না? নাহ সেসব প্রহরের ধাঁচে নেই।

রাতের খাওয়াদাওয়া করছে মজিদ ও শারমিন দম্পতি। মজিদ মল্লিক এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অন্যতম। তাই এবার ভোটে সবাই চাইছে কমিশনার পদে সে জয়যুক্ত হয়ে এলাকার উন্নতি করুক। কিন্তু মজিদ মল্লিক সরকারি চাকরি করে। চাকরি রেখে এসব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানো আদৌও ভালো হবে কি-না সে বিষয় তিনি সন্দিহান।
” আপনি বরং জাহাঙ্গীরের সাথে পরামর্শ করে দেখুন। ইফতির সাথেও কথা বলতে পারেন। বয়স কম হলেও বুদ্ধিমান ছেলে ও।”
স্বামীর প্লেটে এক চামচ ভাত দিলেন শারমিন সুলতানা। মজিদ মল্লিক মুসুরি ডালের বাটি থেকে এক চামচ ডাল নিজের প্লেটে নিয়ে ভাত মাখাচ্ছেন।
” তা ঠিক বলেছো তুমি। আচ্ছা কী ব্যাপার আজকে? আমার পাগলি মেয়েটার কোনো সাড়াশব্দ নেই যে!”
” সারাদিন বান্ধবীর বাসায় ছিলো। প্রচুর খাওয়াদাওয়া করেছে না-কি এজন্য এখন খাবে না।”
” ও তাই বলো। ইফতির কাছে প্রাইভেট পড়লেই তো ভালো হয়। তাহলে আর প্রতিদিন বাইরে বেরুতে হয় না অহেতুক। ”
” ইফতির আর সময় কই বলুন! সমুদ্রকেই তো পড়ায় না ও। অবশ্য সমুদ্রকে পড়ানো সম্ভবও নয়। সে তো আরেক পাগল!”
” হ্যাঁ ঠিক বলেছো। আমাদের বংশে কন্ঠ আর সমুদ্রের মতো পাগলের আবির্ভাব কীভাবে যে হলো তাই ভেবে পাইনা। ইফতিকে দেখো কতো শান্ত, ভদ্র। ”
” পাগলের আবির্ভাব তো এমনি এমনি ঘটেনি। বয়সকালে আপনারা কতটা শান্ত ছিলো জানা আছে। ”
মজিদ মল্লিক চুপসে গেলো স্ত্রীর কথা শুনে। সত্যি বলতে মজিদ নিজেই কৈশোরে খুব চঞ্চল ছিলো। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে দায়িত্ব আর কর্তব্যের ভাড়ে চঞ্চলতা উবে গেছে।

আজকে কলেজে নবীন বরণ উৎসব। উচ্চমাধ্যমিকে পদার্পণকারী সকল শিক্ষার্থীকে ফুল দ্বারা বরণ করা হবে। সেই সাথে বিনোদন হিসেবে নাচ আর গানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও অনুষ্ঠান দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে তবুও মায়ের আদেশ অনুযায়ী সমুদ্রকে সাথে নিয়ে এসেছে কন্ঠ। কন্ঠদের উপজেলায় দু’টো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চমাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত এখানে লেখাপড়ার সুযোগ আছে। ইফতি যে কলেজে চাকরি করে সেখানেই পড়ে সমুদ্র। কন্ঠ পড়ে আলাদা কলেজে। কন্ঠর মা-বাবা অবশ্য কন্ঠকে সমুদ্রের সাথে এক কলেজেই ভর্তি হতে বলেছিলেন কিন্তু ইফতি থাকায় কন্ঠ রাজি হয়নি।
” কন্ঠ!”
অনিমার ডাকে কন্ঠ ক্যাম্পাসের মাঝ বরাবর গিয়ে দাঁড়ায়। সেখানেই অনিমা,অর্ষাসহ বাকি ক্লাসমেটরা আছে। সবাই বেশ সুন্দর করে সেজেছে। কন্ঠ তো তিন-চারটা লিপস্টিক পথেই পরিবর্তন করেছে। কোনোটাই তার মন মতো হচ্ছিল না। শেষমেশ সমুদ্র ধমক দেওয়ায় আর কোনো লিপস্টিক লাগায়নি। অবশ্য কন্ঠর দোষ নেই এতে। ওর শাড়িতে অনেক রঙ আছে। লালা,গোলাপি,কমলা সব! এজন্যই ম্যাচিং লিপস্টিক নিয়ে তার এতো বিভ্রাট। সমুদ্র তো এজন্য কন্ঠকে লিপস্টিক পাগলি বলে ডাকে। অনিমা বাদে সবাই শাড়ি পরেছে। অনিমা শাড়ি সামলাতে পারেনা। সেই কারণে কখনো শাড়ি পরে বাইরে বেরোতে পারে না বেচারি।
” কী সুন্দর লাগছে তোদের! পুরাই জোস মামা।”
” তোকেও কি কম সুন্দর লাগছে না-কি? ”
” সবই তো বুঝলাম কিন্তু তোরা মামা ডাকছিস কেনো? নিজেদের কি মনে মনে ছেলে ভাবছিস? ডাকলে খালা বলে ডাক।”
সমুদ্র কন্ঠকে উদ্দেশ্য করে বললো। ওর কথায় সবাই হাসলো। কন্ঠ সমুদ্রকে থাপ্পড় মারার জন্য সামনে এগুতে গেলেই শাড়ির কুঁচিতে আঁটকে গিয়ে বসে পড়ে কন্ঠ। অর্ষা দ্রুত কন্ঠকে দাঁড়াতে সাহায্য করে।
” সমুদ্র তোকে বাড়ি গিয়ে ধরবো। তোর জন্য আমার এই অবস্থা হলো। ”
” তুই তো এমনিতেই যেখানে সেখানে ধপাস করে পড়িস। যাগগে চল অনুষ্ঠানে জয়েন করি। ”
” তোরা যা আমি আসছি একটু পর। ”
অর্ষা মুচকি হেসে বললো। অনিমা অর্ষার কোমরে কনুই দিয়ে গুঁতো দিলো।
” কাহিনি কী মামা? কোথাও লটরপটর শুরু করেছিস না-কি? ”
” মুখের ভাষার কী শ্রী! তোমরা প্রেম করলে সেটা প্রেম আর আমারটা বুঝি লটরপটর? ”
” আমি তো এসবে নেই ভাই তবে ক…”
অনিমা কিছু বলার আগেই অর্ষা মুখ চেপে ধরে। কন্ঠর তো চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেছে। সমুদ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সবার দিকে। অর্ষা কি
কন্ঠর বিষয় কিছু বলতে চেয়েছিল? সমুদ্রর যতই কন্ঠর সাথে ভাব থাকুক প্রেমের বিষয় কিছু জানলে সমুদ্র নির্ঘাত বাসায় জানিয়ে দিবে।
” অনিমা তুমি অর্ষার মুখ চেপে ধরলে কেনো?”
” আরে ওই যে স্যার আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে দেখতে পাচ্ছো না তুমি? ”
সমুদ্র পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো সত্যি ইনামুল স্যার দাঁড়িয়ে আছেন। এই স্যারকে ওঁরা কেউ পছন্দ করে না। করবেই বা কেনো? উনার ছেলে অভ্র সব সময় সবার সাথে খারাপ আচরণ করে। কিন্তু তবুও উনি ছেলের কোনো দোষ খুঁজে পাননি কখনো।
” কন্ঠ!”
নয়না আসছে কন্ঠদের দিকে। নয়না অনার্স ফাইনাল ইয়ারে এবার। কন্ঠসহ উপস্থিত সবাই জানে ইফতি তার ক্রাশ। সেইজন্য কন্ঠর সাথে সবসময় ভাব জমানোর চেষ্টা করে সে। ইতিমধ্যে নয়না কন্ঠর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
” কেমন আছো নয়না আপু?”
” হ্যাঁ ভালো। তোমাকে বেশ সুন্দর লাগছে। ”
নয়না মুচকি হেসে বলে,
” তোমাকেও দারুণ লাগছে। ইফতি ভাইয়া আসেননি? ”
” নাহ ভাইয়া উনার কলেজের অনুষ্ঠান রেখে এখানে আসবে কেনো?”
সমুদ্র নয়নাকে অপছন্দ করে বলে সব সময় এমন তেঁতো তেঁতো কথা বলে। নয়নার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কন্ঠ নয়নার হাত ধরে বললো,
” তুমি বরং আমাদের বাসায় যেও তখন ইফতি ভাইয়ার সাথে দেখা হবে। ”
” ঠিক আছে। তোমরা থাকো আমি আসছি।”
নয়না হাসিমুখে হলরুমের দিকে যাচ্ছে। সেখানেই অনুষ্ঠান। সমুদ্র সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” ঠিক আছে,আমরাও চলো চলো।”

সবাই হলরুমে অনুষ্ঠানের জায়গায় যায়। শুধু অর্ষা যায়নি। কলেজের ক্যাম্পাস পেরিয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে অর্ষা। আজকে একেবারে লাল টুকটুকে রঙের শাড়ি পরেছে সে। সাথে ম্যাচিং লিপস্টিক ও কানের দুল আর চোখে কাজল। এতো সুন্দর করে সেজেগুজে দাঁড়িয়ে থেকেও যদি প্রেমিক সাহেব দেরি করে আসে তখন কি মোটেও ভালো লাগে?
” হাই অর্ষা।”
আবরিশামের আগমনে অর্ষার ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটে উঠেছে। কিন্তু আবরিশামের দেরি করে আসার কথা মনে পড়তেই মনটা অভিমানে ছেয়ে গেলো অর্ষার।
” হাই, হ্যালো কিচ্ছু লাগবে না। ”
আবরিশাম অর্ষার হাত ধরে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে শুরু করেছে। অর্ষা মুখে রাগরাগ ভাব দেখালেও হাত ধরে ঠিক হাঁটছে।
” আমার রাগিণী কি ভীষণ রাগ করেছে? একটা চুমু খাই কপালে?”
” এই খবরদার! এই লোকসমাগমের মধ্যে এরকম অসভ্যতা করো না। ”
” কপালে কিস করাকে অসভ্যতা বলে না। সুতরাং নিজে থেকে করতে দিবে না-কি জোর করবো বলো?”
অর্ষা আবরিশামের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আবরিশামের ঠোঁটের কোণে দুষ্ট হাসি। সামনে একটা দশবারো বছরের শ্যামলা দেখতে ছেলে লাল গোলাপ বিক্রি করছে দেখে পাঁচটা ফুল কিনলো আবরিশাম। যাক ফুলের জন্য কিসের কথা ভুলবে ভেবে মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে অর্ষা।
” ফুলগুলো খুব সুন্দর। শোনো,এরপর থেকে কখনো দেরি করে আসবে না। প্রেমিকারা যখন তার প্রেমিকদের জন্য সেজেগুজে বের হয় তখন প্রেমিকদের উচিত আগেভাগে এসে দাঁড়িয়ে থাকা।”

আবরিশাম চারটা ফুল অর্ষার হাতে দিয়ে অন্য ফুলটা অর্ষার খোঁপায় গুঁজে দেয়।
” ঠিক আছে। এরপর থেকে আর কখনো দেরি করে আসবো না। আর সরকারের কাছে আবেদন করবো যাতে দেশে এই নিয়ম চালু করে দেয় কেমন? ”
” ফাজিল একটা। ”
” চোখ বন্ধ করো তো।”
” কিন্তু কেনো?”
” যা বললাম তাই করো নয়তো কপালে চুমু খেলাম কিন্তু। ”
অর্ষা ভয়ে দ্রুত চোখ বন্ধ করে ফেললো। আবরিশাম হেসে পকেট থেকে কতগুলো চকলেট বের করে অর্ষার হাতে দিলো।
” চকলেট! লাভ ইউ।”
” দেরি হবে ভেবে পথে কিনেছিলাম। এখন কি কলেজে ফিরবে না-কি আমার সাথে যাবে?”
” ইচ্ছে করছে না ফিরতে কিন্তু বন্ধুরা আছে তো সাথে। ”
” তাহলে যাও। আমরা আরেকদিন ঘুরবো। বন্ধুদের সাথে মজা করো সুইটহার্ট। ”
” আচ্ছা যাচ্ছি। ”
” চলো এগিয়ে দিয়ে আসি।”
আবরিশাম কলেজের গেইট পর্যন্ত অর্ষাকে পৌঁছে নিজের বাড়ির দিকে রওনা হয়। আজকে আবরিশামের বড়ো বোন আর দুলাভাই নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরবে। অর্ষা আবরিশামকে যতটা প্রায়োরিটি দেয় বন্ধুদেরও তেমনই গুরুত্ব দেয়। কারণ বন্ধুত্ব মোটেও প্রেমের চেয়ে ছোটো নয়।

” কন্ঠ বাস্তবতা কী সেটা তুমি বোঝো? সারাদিন কথা বললেই ভালোবাসা হয় আর কথা না বললে ভালোবাসা থাকে না? ”
মেসেঞ্জারে প্রহরের টেক্সট দেখে চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে। দুই দিন পর কন্ঠ প্রহরকে নক করেছিলো। এমনিতে তো কলে কথা হয় না। তাই টেক্সট করে শুধু বলেছিলো, ‘তুমি কি আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না?’
তার উত্তরে প্রহর এই মেসেজ পাঠায়। কন্ঠ যথেষ্ট নিজেকে সামলে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু যখন দেখে কন্ঠ নিজে থেকে নক না করলে প্রহর কোনো টেক্সট পর্যন্ত করে না তখন মুড সুইং হয় কন্ঠর। যতই মনকে বোঝায় প্রহর ব্যস্ত কাজ শেষ হলে ঠিক নক করবে কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনকে আর শান্ত রাখতে পারে না। প্রায় পাঁচ মিনিট মেসেজটার দিকে তাকিয়ে ছিলো কন্ঠ। প্রহর জানে কন্ঠ তার প্রতি কতটা দূর্বল। তবুও জেনে-বুঝেই এমন করে। চব্বিশ ঘণ্টা কেউ ব্যস্ত থাকে? এক মিনিট কথা বলার সময় যে হয় না এটা মিথ্যা। ইচ্ছে থাকা দরকার তার জন্য। কিন্তু এসব কিছুই মনে থাকে না মেয়েটার। প্রহর সপ্তাহে একবার দেখা করে কন্ঠর সাথে। আর তাতেই সব কষ্ট ভুলে গিয়ে চির চঞ্চল হয়ে উঠে সে।
” ঠিক আছে। কথা বলতে তো বলিনি সারাদিন। আমার ইদানীং মনে হয় তুমি আমাকে…. ”
কন্ঠ টেক্সট পাঠায় কিন্তু কেবল সিন করে রেখে দেয় প্রহর। কন্ঠর অপেক্ষা শেষ হয় না। কাজের ফাঁকে ফাঁকে শুধু মেসেঞ্জার চেক করে সে। কিন্তু রিপ্লাই আসে না!
” কোনো সমস্যা প্রহর? তোমার চোখমুখ এমন বিরক্ত লাগছে কেনো?”
আশিক প্রহরের সহকর্মী। একই ফিল্ডে কাজ করে দু’জন।
” আর বলবেন না মেয়ে মানুষ ব্যস্ততা বোঝে না।”
” সেটা আর বলতে! মার্কেটিং জবে যে কতটা খাটতে হয় সেটা সবাই বোঝে না ভাই। তবুও কী আর করার! নারী ছাড়া আমরা অচল। তাই তাদেরকেও বুঝিয়ে-সুঝিয়ে রাখতে হবে। ”
আশিকের কথায় কোনো প্রতুত্তর করলোনা। মাসের শেষ সপ্তাহ আজ। কাজের ভীষণ চাপ প্রহরের।
চলবে,

পেইজে ফলো দিয়ে সাথে থাকুন। আমার দ্বিতীয় বই “নীরবে রাত্রি নামে” রোমান্টিক থ্রিলার ধরনের। ইচ্ছে হলে অর্ডার করতে পারেন। এছাড়াও বইটই এ পাবেন আমার লেখা ই-বুক ” মন ফাগুনের পবন” ও ” শুভ্রপরী”।

আগের পর্বের লিংক https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=385344244146527&id=100080128645410&mibextid=Nif5oz

পরের পর্বের লিংক https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=386602897353995&id=100080128645410&mibextid=Nif5oz

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here