বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প #পর্ব-১৪ #লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

0
869

#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব-১৪
#লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

হুরের সাথে আকাশের সম্পর্ক আগের থেকে উন্নত হয়েছে।এখন প্রায় সময়ই আকাশের সাথে টুকটাক কথা হয়। হুর যখন তার সাথে কথা বলে তখন আকাশের মনে হয় সে যেন আকাশের চাঁদ নিজের হাতের মুঠোয় পেয়ে গিয়েছে। আনন্দে ছেয়ে যায় তার সারা মুখ।আকাশের দুই বন্ধুর সাথেও হুর,মিম,মুক্তা, স্নেহা সবাই বন্ধুত্ব করে নিয়েছে। ধরতে গেলে তাদের এখন দল বলা যায়।একে অপরের সাথে সবাই ফ্রি হয়ে গিয়েছে। এবং কি পড়াশোনাতেও একে অপরের সহায়তা করে।ইদানিং কলেজে যাতায়াত করতে বেশ ভালো লাগে হুরের। কলেজে গেলে বন্ধুবান্ধবদের দুষ্টামি এবং তাদের সঙ্গে পড়াশোনা করতে ভীষণ ভালো লাগে।আজ তাদের এক্সট্রা ক্লাস আছে। এক্সট্রা ক্লাসের পর তাদের ল্যাবেও নিয়ে যাওয়া হবে।তাই আজ বাসায় যেতে অনেকটা সময় লেগে যাবে।যথারীতি ক্লাস শেষে সবাই ল্যাবের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো।যেসব তথ্য তারা জানে না সেসব তথ্যই জানানোর জন্য স্যার তাদের ল্যাবে নিয়ে গিয়েছে।

ক্লান্ত হয়ে সবাই কলেজের ফাঁকা মাঠে ঘাসের ওপর বসে আছে। কমবেশি সবাই ঘামে জর্জরিত অবস্থা।আকাশ তার ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে হুরের সামনে ধরলো।কয়েক পল্লব বোতলের দিকে তাকিয়ে রইল হুর। তা দেখে আকাশ নিজ থেকেই বলল,
“তোমাকে খুব তৃষ্ণার্ত দেখাচ্ছে। পানি খেয়ে গলা ভিজিয়ে নাও।

আকাশের হাত থেকে পানি নিয়ে নিল হুর।পাশ থেকে খোঁচা মেরে মুক্তা বলে উঠলো।
“তৃষ্ণার্ত তো আমরা সবাই-ই।তবে আমাদের এদিকে নজর না পড়ে সর্বপ্রথম তোমার নজর হুরের দিকে পড়ল। ব্যাপারটা একটু তৃষ্ণার্ত তৃষ্ণার্ত মনে হলো না?

বরাবরের মতো এবারও এই মেয়ের কথা শুনে ঘাবড়ে গেল আকাশ।সে যেই কোন কাজ করুক না কেন এই মেয়েগুলো তাকে শান্তিতে বাঁচতে দিবে না। খোচা না মেরে কথা বলাও বন্ধ করবে না। সর্বদা বিব্রত করে যাবে।মিনমিন স্বরে আকাশ বলল,
“আমি তো দেখতে পাচ্ছি সবাই-ই তৃষ্ণার্ত। আমি সবাইকেই পানি দিব। বোতল যেহেতু একটা তাই এক এক করে সবাইকে পানি খেতে হবে। হুরের পর না হয় তোমরাও খেও।

আকাশের পাশে বসা ফিহান পিঠে চাপড় মেরে বলল।
“আকাশের তো দেখি ভালই উন্নতি হয়েছে। বন্ধুদের ভুলে এখন বান্ধবীদের পিছে লেগেছে। বন্ধু তো আমাদেরকে ভুলেই গেছে।

আকাশের এখন এখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে মন চাচ্ছে। না, চাইতেও সর্বদা ফ্যাসাদে পড়ে যায় সে।শুধুমাত্র পানির জন্য যে সবাই তাকে এভাবে হেনস্ত করবে জানলে কখনোই হুরকে পানি অফার করত না।অফার করতো কিন্তু সবার সামনে না।ফিহানের দিকে তাকিয়ে মেকি হাসলো আকাশ।
“আরে এভাবে বলছিস কেন?আমি কি তোদেরকে পানি খেতে মানা করেছি? ওরা খাওয়ার পর না হয় তোরাও খাস।

আকাশের দিকে চেয়ে শিহাব খানিকটা ব্যঙ্গ স্বরে বলল।
“পানি বেঁচে থাকলেই তো খেতে পারবো। এ পেত্নীদের দেখে বোঝা যাচ্ছে তারা পানির এক ফোটাও অবশিষ্ট রাখবে না বোতলে।

চোখের ইশারায় আকাশকে স্বামীর দিকে তাকাতে বলল ও শিহাব। আকাশ সামনে টাকা দিয়ে দেখল ইতিমধ্যে হুর বোতলের অর্ধেক পানি গট গট করে খেয়ে নিয়েছে।বোতলটা এবার ছিনিয়ে মুখটা তার হাতে নিয়ে নিল। সেও পানি পান করতে লাগলো। এভাবে করে তিনজনই পানি খেল। খাওয়া শেষে দেখলেও বোতলে অবশিষ্ট এক ফোটাও পানি নেই। তবে তাদের মাঝে মনস্তাপ একদমই নেই।স্নেহা শিহাবের দিকে তাকিয়ে কুটিল হাসি দিয়ে বলল।
“ওহ সর‍্যি! পানি তো সব শেষ হয়ে গিয়েছে।এখন তোমরা পানি কিভাবে খাবে?আচ্ছা, সমস্যা নেই বাসায় গিয়ে তোমরা পানি খেয়ে নিও। এখন আমাদের উঠতে হবে অনেক লেট হয়ে গেছে।টাটা!

বলে তিনজন উঠে দাঁড়ালো।হুর এখনো বসে আছে।চোখে মুখে লেগে আছে অসহায়ত্বের রেশ।গরম এবং ক্লান্তিত্বের কারণে মুখ কিছুটা লাল হয়ে গেছে।বিশেষ করে গাল দুটি।চেহারায় মলিনতার ছোঁয়া।তৃষ্ণার্ত আকাশ,শিহাব,ফিহানের দেখে মলিন মুখে চেয়ে রইলো। অসহায়ত্ব বোধ করলো। মলিন স্বরে বলল,

“সরি আমি জানতাম না তোমাদের ও তৃষ্ণা পেয়েছে। না, হলে আমি পানি কম খেতাম। আচ্ছা, সমস্যা নেই তোমরা চলো দোকানের পাশে আমি তোমাদের পানি কিনে দিচ্ছি।
শিহাব আর ফিহান একে অপরের দিকে তাকিয়ে হা হা করে হেসে দিল।হাসি যেন থামছেই না।বসে থাকা অবস্থাতেই পেটে হাত দিয়ে হাসতে লাগলো। শিহাব ফিহারের হাসির উৎস খুঁজে পেল না হুর। তাইতো বো’কার মত তাদের হাসির দিকে তাকিয়ে রইল। অপেক্ষা হাসি বন্ধ হওয়ার। এক সময়ে শিহাব আর ফিহান তাদের হাসি নিয়ন্ত্রণে আনে।
“আরে বো’কা মেয়ে আমরা তো মজা করছিলাম। তোমায় পানি কিনে দিতে হবে না। প্রয়োজন পড়লে আমরা গিয়ে নিতে পারব। এখন তোমরা যাও বাসায়। কাল আবার দেখা হচ্ছে।

তাদের দিকে মুচকি হেসে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো হুর। বান্ধবীদের সাথে কথা বলতে বলতে এগিয়ে গেল। পিছন পিছন আসছে শিহাব আকাশ আর ফিহান।

ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় প্রবেশ করল হুর। শরীরটা যেন একদমই চলছে না। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও শরীরটা কে টেনেটুনে হেঁটে সামনে এগুচ্ছে হুর।ড্রয়িং রুমে এসে সোফায় ধপ করে বসে পড়লো। কিছুক্ষণ বসে শরীরে এসির বাতাস ছোঁয়ালো।চোখ জোড়াও বুজে আসছে। ক্লান্ত শরীরে ঘুমেরা ভর করছে। কিছুক্ষণ ঘুমানোর প্রয়োজন। আধো আধো চোখে লিলিকে দেখতে পেল। লিলিকে দেখে মলিন হাসলো সে।লিলি নেতিয়ে যাওয়া হুরকে দেখে প্রশ্ন করলো।
“ভীষণ ক্লান্ত লাগছে তোমায়। ফ্রেশ হয়ে আসো খাবার খেয়ে নিবে।

আধো আধো চোখ জোড়া কোনমতে খুলে দুর্বল কন্ঠে বুর বলল।
“আমি এই মুহূর্তে কিছু খাব না আপু। এখন আমি ঘুম দিব। ঘুম থেকে উঠে খাবো। বড্ড ক্লান্ত লাগছে শরীর।

বলে উঠে দাঁড়ালো। কাঁধের ব্যাগ সোফাতে রেখেই ঢুলতে ঢুলতে সিড়ি বেয়ে উঠে পড়ল।রুমে এসে বিছানায় ধপ করে শুয়ে পড়লো। বিছানায় শুয়ে থেকেই ক্রস বেল্ট এবং কোমর বেল্ট খুলে ফেলল।ধীরে ধীরে চোখ বুজে আসলো।কিছুক্ষণ পর লিলির কন্ঠ কর্নপাত হলো। লিলি তাকে ডেকে যাচ্ছে।চোখ খুলতে মন চাইছে না তার। তাই চোখ বন্ধ করেই পড়ে রইল বিছানায়। হুরের কোন সারা শব্দ না পেয়ে লিলি বিছানার কাছে এসে হুরের শরীরের ওপর হাত রেখে ঝাঁকিয়ে উঠানোর চেষ্টা করল।হুরকে চোখ খুলতে দেখে বলল ,

“রুদ্ধ স্যার তোমায় ডাকছে খাবারের জন্য। তিনি অপেক্ষা করছেন তোমার। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।

হুরের আবারও দুর্বল কণ্ঠস্বর।
“প্লিজ আপু আমায় জোর করো না, আমাকে ঘুমোতে দাও।আমি পরে খেয়ে নিব।উনাকে কিছু একটা বলে দাও।

হতাশ হয়ে রুম থেকে বের হলো লিলি।ডাইনিং টেবিলে এসে রুদ্ধের উদ্দেশ্যে বলল।
” স্যার হুরকে খুবই ক্লান্ত লাগছে।ও বলেছে সে নাকি এখন ঘুমাবে। ঘুম থেকে উঠে খাবার খাবে।

এক নজর লিলির দিকে তাকিয়ে টেবিলে থাকা ফাঁকা গ্লাসের দিকে কিছুক্ষণ মনোযোগ সহকারে তাকালো। তারপর চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সিঁড়ির দিকে অগ্রসর হলো।বড় বড় পা ফেলে দুই সিঁড়ি অতিক্রম করে উপরের দিকে হেটে যাচ্ছে সে।লিলি কিছুক্ষণ রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে থেকে চলে গেল জেরিনের কাছে।হুরের রুমের কাছে এসে দরজায় টোকা দিল রুদ্ধ। ভেতর থেকে কোন সারা শব্দ এলোনা। পরপর তিনবার টোকা দিল। ফলাফল এবারও শূন্য। তাইবিনা অনুমতিতে রুমে প্রবেশ করল সে। বিছানায় উবুর হয়ে শুয়ে আছে হুর।দুই হাত ভাঁজ করে তার মাঝে মাথা রাখা।হুরের আরেকটু কাছে যেতেই স্থির হয়ে গেল তার নেত্রপল্লব।গতকাল হুর শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পড়লেও আজ রুদ্ধ নিজে পড়েছে।হুরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিতে চাইলেও পারছে না।চোখ নিবদ্ধ হয়ে আছে হুরের পিঠের ওপর।উবুর হয়ে শুয়ে থাকার কারনে জামা কাধ থেকে কিছুটা নেমে এসেছে। যার ফলে জামার ভেতরে থাকা ছোট ব্লা’উজের ফিতা দেখা যাচ্ছে।শুধু ফিতা নয় পিঠেও তার অবয়ব বোঝা যাচ্ছে।বুকে পিড়া শুরু হয়ে গেছে।নিজেকে সংবরণ করল সে। হুরের থেকে চোখ সরিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করলো।দম ছাড়া এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে পুনরায় হুরের দিকে তাকালো।তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা চেয়ে রইল।গম্ভীর স্বরে ডাকল,

“এই উঠো।

উঠলো না হুর। রুদ্ধ মনে করল তার গলার স্বরের ভলিউম কিছুটা কম ছিল। তাইতো হুর তার ডাকে সাড়া দেয় নি। তাই আগের চেয়ে দ্বিগুণ আওয়াজ তুলে ডাকলো। তাতেও কোন লাভ হলো না। নিজের মত পড়ে রইল বিছানায়।এবার আর হুরের দিকে তাকিয়ে রইল না রুদ্ধ। চোখ নিচু করে ফ্লোরের দিকে ডাকলো। সাদা চকচকে টাইল’স।ময়লার ছিটে ফোঁটা দেখা যাচ্ছে না।সেখানে তাকিয়ে থেকেই জোর গলায় আবার হুরকে ডাকতে চাইল।কণ্ঠস্বর দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না।তবে চেষ্টা করা বন্ধ করল না।নিজেকে এবং নিজের কণ্ঠস্বরকে সংযত রেখে কাঠিন্য গলায় বলার চেষ্টা করলো।কিন্তু তার আগেই হুর নড়েচড়ে উল্টো থেকে সোজা হয়ে শুয়ে পড়লো।এবার যেন দম আটকে গেল রুদ্ধের। সিচুয়েশনটা বিব্রতকর।শুধু বিব্রতকর নয় বিশ্রীকর।ওড়না বিহীন শুয়ে আছে হুর।নিশ্বাস নেয়ায় বুক, পেট বারবার উপর নিচ হচ্ছে।যা ভয়াবহ এক ব্যাপার মনে হচ্ছে রুদ্ধের কাছে।থেমে থেমে শ্বাস নিচ্ছে।আর দেখতে না পেয়ে চিল্লিয়ে উঠলো।

“হুর।

ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো হুর।সামনে রুদ্ধকে বসে থাকতে দেখে বিস্মিত হলো।রুদ্ধ তার রুমে ভুলেও আসে না। তাই এখন তাকে এখানে দেখে অনেকটা অবাক হলো।বিস্ময়ে চোখ হালকা বড় হয়ে এলো।জিজ্ঞেস করলো,
“আপনি?আপনি এখানে?

রুদ্ধ বারান্দার দিকে চোখ রেখে কঠিন গলায় বললো,
” নিজেকে গোছাও!

রুদ্ধের কথার অর্থ বুঝতে পারলো না হুর।ঈষৎ ভ্রু কুচকে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইলো।তবে রুদ্ধের চোখ অন্যদিকে। এতে রুদ্ধের কথার মর্ম বুঝতে আরো কষ্ট হচ্ছে তার। হঠাৎই চোখ গেল তার সামনে থাকা আয়নার দিকে। আয়নায় নিজের প্রতিচ্ছবি দেখার সাথে সাথে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইল আঁখি পল্লব। তাড়াহুড়া করে ওড়না খুঁজতে লাগলো। তবে খাটের আনাচে-কানাচেও ওড়নার সন্ধান মিলছে না। বাধ্য হয়ে গায়ে দেয়ার পাতলা চাদর গায়ে জড়িয়ে নিল।অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ায় ভেতরে ভীষণ অস্বস্তি হতে লাগলো।রুদ্ধ যখন বুঝলো হুর নিজেকে পরিপাটি করে নিয়েছে তখন তার দিকে ফিরে চাইল। আপাদ মস্তক দেখে শান্ত স্বরে বলল,

“দশ মিনিটের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে নিচনে খেতে আসো।

অতঃপর প্রায়ান করল রুম। স্বস্তির এক লম্বা শ্বাস ছাড়লো হুর।মনে মনে নিজেকে খুবই বকতে লাগলো। বকাও উচিত। আজ নিজের হেঁয়ালিপনার কারণে বাজে এক পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে তাকে।মনে মনে কয়েকটি কথা আওড়ে নিলো সে,
“আচ্ছা উনি কি ভাবছে আমার ব্যাপারে?কেন যে সতর্ক হয়ে ঘুমাতে পারলাম না!ইজ্জতের রফা দফা হয়ে গেছে। হে মাবুদ! এখন উনার সামনে নিজের চেহেরা কিভাবে দেখাবো?দুষ্কর হয়ে যাবে, তার মুখোমুখি হতে।

অসস্তি নিয়ে মাথা নিচু করে খাবার খাচ্ছে হুর। তবে আজ খাওয়াতে কেমন রুচি পাচ্ছে না। খাবারের স্বাদ সে নিতে পারছে না। কারণ একটাই সামনে বসে আছে রুদ্ধ।নিচে আসার পর থেকে একবারও রুদ্ধের মুখপানে তাকায়নি সে। লজ্জা অস্বস্তি সব আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে রেখেছে তাকে।তাইতো ভুল করেও রুদ্ধের দিকে তাকায় নি। তবে আজ রুদ্ধ আড় চোখে এবং সরাসরি হুরের পানে বারবার তাকাচ্ছে। কেন তাকাচ্ছে তা তার জানা নেই? তবে তাকিয়ে থাকতে ভালই লাগছে। মেয়েটা যে লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছে, তাও ঢের বুঝতে পারছে।আজকের এই নিস্তব্ধ পরিবেশে বেশ আনন্দিত হচ্ছে রুদ্ধ।তা একান্তই মনে মনে।ডাইনিং টেবিলের কাছে আসলো জেরিন। রুদ্ধ আর হুরের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করল।
“আর কিছু কি লাগবে আপনাদের?

জেরিন এর কথায় রুদ্ধের ঘোর ভাঙলেও হুরের দিক থেকে নজর সরালো না। চোখ তার এখনো হুরের দিকেই রয়েছে।তবে দৃষ্টি বদল হলো হুরের।খাবারের প্লেট থেকে চোখ সরিয়ে জেরিন এর দিকে তাকালো। মাথা ঝাঁকিয়ে না বোঝালো। আড় চোখের রুদ্ধের দিকে তাকাতে বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে হুরের। তবে সাহসে কুলাচ্ছে না। তাই ইচ্ছেকে মাটি চাপা দিল। মনোযোগ পুনরায় খাবারে দিল। হুরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে রুদ্ধের দিকে তাকাল জেরিন। হুরের প্রতি এমন রুদ্ধের চাহনি দেখে কিছুটা ভড়কে গেল।কিছু লাগবে কিনা দ্বিতীয়বারের মতো প্রশ্ন করতে ভুলে গেল। প্রশ্ন করলেই বা কি!প্রথমবার প্রশ্নের জবাব যেহেতু দেয়নি তাই দ্বিতীয়বার উত্তর পাওয়ার আশা নিতান্তই হাস্যকর।তাই আর চেয়েও দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করতে পারল না জেরিন।
কোন মতে খাবার খেয়ে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো ও হুর। বেসিনে হাত ধুয়ে দৌড়ে চলে গেল তার রুমে।রুমের মধ্যে প্রবেশ করতেই সর্বপ্রথম দরজা লাগিয়ে দিল। ঠাস করে আওয়াজ হল। সে শব্দ কর্ণপথে আসল রুদ্ধের। বাড়িটা খুবই নিস্তব্ধ হওয়ার কারণে সহজেই বিকট শব্দটা কানে আসতে পারলো।

To be continue…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here