বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প #পর্ব- ১০ #লেখনিতে-আসমিতা আক্তার পাখি

0
888

#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব- ১০
#লেখনিতে-আসমিতা আক্তার পাখি

হুর ভাবুক হয়ে মাথা নাড়িয়ে আশেপাশে দেখতে লাগলো।এখন তার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে ছাদের সিঁড়ির খোঁজ করা।আজ যেভাবেই হোক না কেন তাকে ছাদের সিঁড়ি খুঁজতেই হবে। রহস্যময় সিঁড়ি খুঁজতে হবে। পুরো দমে হুর মাঠে নেমেছে। মানে সিঁড়ির তালাশ করছে। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে হাঁটছে।কিন্তু সিঁড়ির খোঁজ পাচ্ছে না। বিরক্ত হয়ে হুর মনে মনে বলে।
“এ আবার কেমন রহস্যময় সিঁড়ি রে বাবা! খুঁজেই তো পাচ্ছি না।কোন লোকে বাড়ি তৈরি করেছে তাকে ইচ্ছেমতো ধোলাই দিতে মন চাচ্ছে। এটা কি বাড়ি হলো নাকি? যে ছাদের কোন সিঁড়ি থাকেনা সেটা কোন বাড়ি হয় না।কুফা বাড়ি! উফ মাথাটা কেমন আউয়া ঝাউলা হয়ে গেছে।

মনে মনে এসব কথা ভাবছে আর দ্বিতীয় তলায় পায়চারি করছে হুর।হঠাৎ করেই থুবড়ে নিচে পড়ে যায়। ধপাশ করে পরার শব্দ হয়। আর্তনাদ করে উঠে সে। হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ার কারণ বুঝে উঠতে পারল না হুর। শরীরের ব্যালেন্স ঠিক রেখে কোন মতে উঠে দাঁড়ালো সে। ডান কোমরে হাত তার।থুবড়ে পড়ে যাওয়ার কারণে কোমরে এবং থুতনিতে ব্যথা পেয়েছে। কোমরে তেমন একটা ব্যথা না পেলেও থুতনিতে ভালোভাবেই ব্যথা পেয়েছে। সাথে সাথে ফুলে লাল টকটকে হয়ে গিয়েছে চিবুক।এসবে তোয়াক্কা করলো না হুর।সে তো গবেষণা করতে ব্যস্ত সে পরলো কিভাবে!কোমরে স্লাইড করতে করতে চোখ মুখ খিচে হুর বলে,
“ইস কোন হাতির কারণে রে এভাবে পড়লাম?এভাবে ঠুস ঠাস পড়তে পড়তে জীবনটা আমার তেজপাতা।কোমর ভেঙ্গে মনে হয় দু ভাগ হয়ে গেছে।

বলা শেষে সাথে সাথে পুরুষালী গম্ভীর কণ্ঠস্বর কর্ণপাত হল হুরের “হু ইজ হাতি?”খিচে থাকা চোখ মুখ খুলে ফেলল হুর। সামনে তাকিয়ে রুদ্ধকে দেখতে পেয়ে ভয় তার করুণ অবস্থা। ভুলভাল কথা এই লোকের সামনেই তাকে বলতে হয়। আর প্রতিবারই তাকে ধমক খেতে হয়। ধমক প্লাস গম্ভীর কন্ঠ।এগুলোতে অনেক ভয় পায় হুর। তবে রুদ্ধ বোধহয় হুরের সাথে এভাবে কথা বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। বা তার সাথে ধমক দিয়ে কথা বলতে মজা পায়।এমনটা ভাবনা হুরের। তবে এখন ভাবনাকে প্রাধান্য দিলে হবে না। রুদ্ধকে নিয়ে তার খুব টেনশন হচ্ছে।ভুল! রুদ্ধকে নিয়ে না, তাকে নিয়ে তার ভিষন টেনশন হচ্ছে। কাঠিন্য গম্ভীর মুখশ্রী দেখে ভয়ের মাত্রা দ্বিগুণ হচ্ছে। ভয়ের চোটে থতমত খেয়ে হুর বলে।
“হু?হাতি!কোথায় হাতি? ওমা আপনার রাজপ্রাসাদে বুঝি হাতিও বসবাস করে?

রাগান্বিত হয়ে হুরের দিকে তাকাল রুদ্ধ।যার মানে এই যে হুরের করা মজা তার পছন্দ হয়নি।মাথা চুলকিয়ে হাসার চেষ্টা করল হুর। তবে কাজ হলো না। রুদ্ধ একই ভঙ্গিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।রুদ্ধকে এখন কি বলবে সেটাই মস্তিষ্কে আওড়াতে লাগলো। বাধা দিল রুদ্ধ। তার দিকে তাকিয়ে ধমকে বলে উঠলো।
“তোমার সাহস কি করে হয় আমায় হাতি বলার?

আশ্চর্য বিম্যুঢ় হয়ে হুর পাল্টা জবাব দেয়,
“আমি তো আপনাকে হাতি বলিনি। যে আমার সাথে ধাক্কা খেয়েছে তাকে হাতি বলেছি।
দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে রুদ্ধ বলে।
“আর ধাক্কাটা তুমি আমার সাথেই খেয়েছো।দ্যাট মিন্স তুমি আমায় হাতি বলেছ।ডাফার!

চুপ হয়ে গেল হুর।নিজের লজিকের জালে রুদ্রকে ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু না রুদ্ধ যেন কোন জালে ফাঁসতে নারাজ।তার দ্বারা সম্ভব ফাঁসানো। কোন কালই ফেঁসে যায়নি সে।আর না কখনো ফাঁসবে। সেটা যতই জটিল জাল হোক না কেন!আকস্মিক ডুকরে কেঁদে উঠল হুর।হঠাৎ হুরকে কাঁদতে দেখে ভেতর দিক থেকে হকচকিয়ে গেল রুদ্ধ।চেহারার গম্ভীরতা কমিয়ে আনলো। শান্ত সুরে জিজ্ঞেস করল,

“কি হলো কান্না করছো কেন?
হুর হেঁচকি তুলতে তুলতে বলল,
“বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে আপনাকে হাতি বলিনি। আমি যদি জানতাম আপনি এখানে আছেন তাহলে কখনো আপনার হাতি বলতাম না।প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিন। আমায় মারবেন না আপনি।আমি আর কখনো আপনার সামনে আসব না। আপনি আর কখনো হাতি বলবো না। প্লিজ লাস্ট বারের মতো আমায় ক্ষমা করে দিন।

কান্নারত হুরের দিকে চেয়ে রইল রুদ্ধ। মেয়েটা মাথা নিচু করে কান্না করছে। কান্নার শব্দ খুবই আস্তে শোনা যাচ্ছে। মেয়েটার একদম কাছে কেউ না আসলে বুঝতে পারবে না সে কান্না করছে। মুহূর্তের রক্তিম আভা ছেয়ে গেল সারা মুখশ্রীতে। থুতনির দিকে চোখ গেল রুদ্ধের। ফুলে আলো হয়ে গেছে। বড়সড়ো না তবে মাঝারি সাইজের আলু বলা যায়।
“কি করছিলে এখানে?

বদ্ধ চোখ জোড়া মেলে রুদ্ধের দিকে তাকালো হুর।কান্নার শব্দ বন্ধ হয়ে এসেছে। তবে চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। দুহাত দিয়ে গাল মুছে মিইয়ে যাওয়া স্বরে বলল,
“আমি সিঁড়ি খুঁজছিলাম ।
কপালে ভাজ পড়ে রুদ্ধের।জিজ্ঞেস করে,
“সিঁড়ি! কিসের সিঁড়ি?

হুর হাত কচলাতে কচলাতে বলে,
“ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি।
বলে আবার রুদ্ধের মুখপানে চাইল। বোঝার চেষ্টা করল রুদ্ধের ফেইস রিঅ্যাকশন। শীতল মুখশ্রী গম্ভীর দেখালো।ভীত হল হুর। পুনরায় হাত কচলাতে কচলাতে বিশ্লেষণের ভঙ্গিতে বলল।
“আসলে আমি বাহির থেকে দেখেছি বাড়িটি তিনতলা। কিন্তু ভেতর থেকে দোতলা দেখা যায়।এই রহস্য আমি বুঝতে পারছি না। বাড়িতে যদি তৃতীয় তলা থেকে থাকে তাহলে তো অবশ্যই সিঁড়ি হবে। কিন্তু সিঁড়ি আমি কোন ভাবে দেখতে পারছি না। আমার মনে হয় এই বাড়িটা যে বানিয়েছে সে ম’দ খেয়ে বাড়িটা বানিয়েছিল। তাইতো সিঁড়ি না বানিয়েই তৃতীয় তলা বানিয়ে দিল।

রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে শীতলতার সহিত তার দিয়েই তাকিয়ে আছে।হুর মনে মনে ভাবছে ” এই লোক আবার এভাবে তাকিয়ে আছে কেন?ভুল তো কিছুই বললাম না।গা’লিও দিলাম না,তাহলে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন?যদিও চাহনি তার খারাপ না। তবে এই শীতল চাহনিতে কেন জানি ভয় লাগছে” মনের কথা আওড়ানো শেষ হলে গম্ভীর কন্ঠ কর্ণপাত হয়।
“আসো আমার সাথে

হুর বুঝতে না পেরে বললো,
“হু?

রুদ্ধ পিছন ফিরে চলে যেতে যেতে বলে।
” ফলো মি!

পীপিলিকার মতো পিলপিল করে রুদ্ধের পিছে যেতে লাগলো হুর।রুদ্ধ নিজের রুমে প্রবেশ করলো তা দেখে হুর রুদ্ধের রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে পড়লো।হুরকে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রুদ্ধ পকেটে এক হাত ঢুকিয়ে কিঞ্চিৎ ভ্রু কুচকে বলে,
“কি হলো থেমে গেলে কেন?

বিব্রত হলো হুর।রুদ্ধের রুম চো’রা চোখে একটু দেখার চেষ্টা করলো। তবে সক্ষম হলো না।রুদ্ধকেও একটু দেখার চেষ্টা করলো।তবে ভয়ের কারনে দেখতে পারলো না।মাথা নিচু করে মিলিত ঠোঁট জোড়া ছাড়িয়ে নিল।জিহ্বার মাথা একটু বের করে কোনো রকমে অধর ভেজালো।বললো,

” আমি আপনার রুমে আসবো?

রুদ্ধ ত্যাড়ামো ভাবে বললো,
“না আমি আমার বাথরুমে তোমায় আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

শুরশুর করে রুমে প্রবেশ করলো হুর।পুরো রুম দেখে অবাকে মুখ হা হয়ে গেছে তার।এত বড় রুম!তার রুম থেকে তিন গুন বড় এই রুম।এবং আসবাবপত্র ও দেখার মতো।গোল বিছানা!ঠিক রুমের মাঝ বরাবর।দু’পাশে ছোট টেবিল।ড্রেসিং টেবিল, ওয়ার্ড্রব,মস্ত বড় আলমারি,এবং সাজিয়ে রাখা তিনটি সোফা। সোফার ঠিক সামনে বড় আকারের টিভি।সোফার ঠিক কিছুটা দূরে মাছের অ্যাকোরিয়াম রাখা।লেজ নাড়িয়ে নাড়িয়ে বেশ করেকটি মাছ এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে।রংবেরঙের মাছ।ভাবনার ধ্যান ভাঙ্গে রুদ্ধের কথায়,
“বসো!

তর্জনী দিয়ে বিছানার দিকে দেখিয়ে বললো।হুর কয়েকবার বিছানার দিকে তাকিয়ে রুদ্ধের দিকে তাকালো।রুদ্ধ তা দেখে চলে গেল আলমারির কাছে।হুর বিছানায় বসলো।রুদ্ধ ফার্স্ট এইড বক্স এনে বিছানার ওপর রাখল।গা থেকে কোট খুলে শার্টের হাতার বোতাম খুলে কনুইয়ের উপর অব্দি ওঠালো। হুর টুকুর টুকুর নয়নে রুদ্ধকে দেখতে লাগলো। চোখ তার বারবার রুদ্ধের ফোলা ফোলা বুক এবং হাতের বাহুতে।বেশ আকর্ষণীয় লাগছে চওড়া ফোলা বু’ক এবং বাহু।রুদ্ধ এবার হুরের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।মুখ উঁচু করে রুদ্ধের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল হুর।লম্বায় যেখানে হুর ৫ ফুট ৩ ইঞ্চ সেখানে রুদ্ধ ৬ ফুট ১ ইঞ্চ।তাই মাথা উঁচু করে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে আছে। রুদ্ধ ফার্স্ট এইড বক্স থেকে স্যাভলন আর তুলো বের করলো।তুলোয় স্যাভলন লাগিয়ে হুরের থুতনির এক পাশে আলতো হাত ছোয়াল।ডান হাতে থাকা তুলো চেপে ধরলো হুরের ক্ষত স্থানে। জ্বলে উঠলো ক্ষত জায়গা।চোখ মুখ খিচে বন্ধ করলো।বাম হাত চলে গেল রুদ্ধের ডান হাতের উপর।নিজ হাতে নরম কিছুর স্পর্শ পেয়ে হাতের দিকে তাকালো রুদ্ধ।পলকবিহীন কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। তারপর হুরের মুখের দিকে একটু ঝুকে হুরের ক্ষত স্থানে ফু দিতে লাগলো।থুতনিতে জ্বলার রেশ করে আসতেই চোখ খুলে তাকালো হুর।রুদ্ধকে নিজের এত কাছে দেখে চোখ স্থির হয়ে গেল তার।নিশ্বাস থমকে গেল।খুব সুন্দর স্মেল আসছে তার কাছ থেকে।হয়তো পারফিউম এর!গরম নিশ্বাস মুখে আচঁড়ে পড়তেই হৃদপিণ্ড বেগতিক বিট করতে লাগলো।কণ্ঠনালী শুকাতে লাগলো।বহু আগে শুকিয়ে গেছে তার ওষ্ঠ।কন্ঠনালী না ভেজালেও এখন ওষ্ঠ ভেজাতে হবে। যেমন ভাবনা তেমন করনীয়। হুর জিহবা দ্বারা পুনরায় নিজের ওষ্ঠ ভিজিয়ে নিল।হুরকে ঠোঁট ভেজাতে দেখে রুদ্ধের কাজ থেমে গেল। হুরের মুখ আর ঠোঁটের দিকে তাকাতে লাগলো।গোলাপি ঠোঁট জোড়া, কেঁপে কেঁপে উঠছে। ব্যাপারখানা ভালো লাগছে রুদ্ধের কাছে। হুরকে এভাবে কাঁপতে দেখে স্মিত হাসলো সে।মনোযোগ সেখান থেকে সরিয়ে নিজের কাজে ধ্যান লাগালো। ভালোভাবে থুতনিতে স্যাভলন লাগিয়ে পরিষ্কার করে সেখানে ওয়েটমেন্ট লাগিয়ে দিল। হুরের কাছ থেকে সরে এসে পিছন ফিরে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে ওয়াশরুমের দিকে অগ্রসর হওয়া অবস্থায় বলে উঠলো।

“যতক্ষণ না অব্দি আমি আসছি এখানেই বসে থাকো।
থমকানো হৃদয় নিয়ে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইল হুর।হৃদ স্পন্দন এর মাত্রা বেগতিক।আটকে রাখা নিঃশ্বাস জোরে জোরে নিতে লাগল।দুই হাতের মুঠোয় বেডশীট চেপে ধরে রাখল।নিজেকে শান্ত রাখার প্রচেষ্টা। তবে শান্ত হতে সে পারছে না।কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রইল। নিঃশ্বাসের গতি কমে আসলে ফট করে চোখ খুলল। মাথা ঘুরিয়ে পুনরায় রুমটাকে দেখতে লাগলো।এ বাড়িতে প্রথম দিন তার অবস্থান এই রুমেই ছিল।তবে তখন এত কিছু খেয়াল করেনি। রুমটা তার খুবই পছন্দ হয়েছে। যত দেখছে ততই যেন দেখতে ইচ্ছে করছে।তবে রুমের আসবাব পত্র সব সাদা রংয়ের ।শুধু আসবাব পত্র নয় ,দেয়াল এবং রুমে থাকা পর্দা গুলো ও সাদা।রুমের মাঝ বরাবর একটি বড় ঝুমুর ও টাঙ্গানো।সেটাও সাদা পাথরের তৈরি।খট করে ওয়াশরুমের দরজা খুলে গেল।সেদিকে তাকালো হুর। ঘাড়ে তোয়ালে ঝুলিয়ে বু’কের দিকটায় ঝুলে আছে। তোয়ালের এক কোণা দিয়ে চুলের পানি মুছতে মুছতে আলমারির কাছে গিয়ে দাঁড়ালো রুদ্ধ। সেখান থেকে একটি টি-শার্ট বের করে পড়ে নিল। ড্রেসিং টেবিলের কাছে গিয়ে চুল আঁচড়ে নিল।চুল সেট করা হয়ে গেলে হুরকে বলে।
“ফলো মি!
ঝটপট বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো হুর।রুদ্ধ ব্যালকনির কাছে গিয়ে দাড়ালো। ব্যালকনির পাশে থাকা পর্দা টান মেরে সরিয়ে দিল। আখি পল্লবে ভেসে উঠলো একটি দরজা। দরজা খুলল রুদ্ধ।সাথে সাথে দৃষ্টিগোচরে আসলো চওড়া সিঁড়ি।বিস্মিত হল হুর।রুমের ভেতরে যে মানুষ সিঁড়ি বানায় তা এই প্রথম দেখলো। তবে এই সিঁড়িটি কিসের তা বোধগম্য হচ্ছে না।জিজ্ঞেস করতে মন চাইলো। কিন্তু রুদ্ধের ভয় করতে পারল না। রুদ্ধ সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগলো। পিছু পিছু আসছে হুর ও। লাস্ট সিঁড়িতে এসে আবারো দৃষ্টিগোচরে আসলো আরেকটি দরজা। তবে এটা কাজের দরজা। কাঁচের দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করল রুদ্ধ।রুদ্ধের সাথে সাথে হুর ও প্রবেশ করল।আশ্চর্যতায় ছেয়ে গেল মুখশ্রী।এটাতো ছাদ!তারমানে রুদ্ধের রুম থেকে ছাদে প্রবেশ করা যায়। ছাদে প্রবেশ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে রুদ্ধের বদ্ধ রুম।আকাশ সম বিস্ময় নিয়ে ছাদ দেখতে লাগলো হুর। তবে স্পষ্টভাবে তেমন কোন কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। অন্ধকারের কারনে। রুদ্ধ লাইট অন করতেই ঝকঝকে হয়ে উঠলো বিস্তার ছাদটি। হা হওয়া মুখে দুহাত চেপে ধরল সে। অপরূপ সুন্দর ছাদ। যে কেউ ছাদের প্রেমে পড়তে বাধ্য। বাম পাশে সুইমিং পুলের ব্যবস্থা। সুইমিং পুলের একপাশে কাঠের বেঞ্চ ও রাখা। যেখানে আরামে মানুষ শুয়ে বসে থাকতে পারবে। এক পাশে বিভিন্ন ধরনের ফুল গাছ দিয়ে ভরা। কয়েকটার নাম জানে হুর, তবে সবগুলোর নাম জানে না।এমন ফুল বোধ হয় কখনো সে দেখেনি।হাতের ডানপাশে বড় একটি রুম দেখা গেল। পুরো ছাদ বিরাজ করে একটি মাত্র রুম। তবে বাহির থেকে দেখা গেলে বোঝা যায় পুরোটাই তিন তলাই রুম দিয়ে ভরা।ছাদটা ঝলমল করার মূল কারণ ফেইরি লাইট।রংবেরঙ্গী ফেইরি লাইট দিয়ে সাজানো পুরোটি ছাদ। বিশেষ করে সুইমিংপুলের এরিয়াতে।বিস্ময় নিয়ে হুর সবটা দেখছে।বিস্ময়ে বড় বড় চোখ জোড়া আরো বড় হয়ে এলো। টুকুর টুকুর করে সব কিছু দেখতে লাগলো। মনমুগ্ধকর এক পরিবেশ। থেকে যেতে ইচ্ছে করছে তার এখানে। তবে চাইলেই যে সব আশা পূরণ করা যায় না তাও সে ভালোভাবেই জানে। তাই মনের মাঝে নতুন আশা পোষণ করলো না সে।হুরের হাব ভাব সব পর্যবেক্ষণ করলো রুদ্ধ। কন্ঠশক্ত রেখে হুরকে জিজ্ঞেস করল,

“ছাদের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে?

বিস্ময় চোখ নিয়ে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে মাথা উপর নিচ নাড়ালো।

( দুটো গল্প একসাথে কনটিনিউ করতে কষ্ট হচ্ছে।ব্যস্ততা এবং অসুস্থতার কারণে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারছি না। তাই ভাবছি এই গল্পটা কিছুদিন বন্ধ রাখতে।”তোমাতেই মুগ্ধ” গল্পটা খতম করে তারপর না হয় এই গল্পটা লিখব )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here