#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব- ১১
#লেখনিতে- আসমিতা আক্তার পাখি
সবেমাত্র ক্লাস থেকে স্যার বেরিয়েছে। নিজের বেঞ্চ ছেড়ে সবাই উদ্বেগ হচ্ছে ক্যান্টিনে যাওয়ার জন্য। হুর নিজের ব্যাগ গুছিয়ে রাখছে। সেই মুহূর্তে সামনে দেখতে পায় তার সামনে আকাশকে। চোখ তুলে আকাশের দিকে চাইলো হুর। তাকে দেখেই কিছুটা নার্ভাস মনে হচ্ছে। এত নার্ভাসনেস এর কারণ ধরতে পারল না হুর। প্রশ্নবোধক চাহনি নিক্ষেপ করে তার দিকে তাকিয়ে রইল। আকাশ আমতা আমতা করে কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছে না। এতে বিরক্ত হলো হুর। সহসা বলে উঠলো,
“কি হলো কিছু কি বলতে চাইছো?বললে বলো না হলে চলে যাও। এই মুহূর্তে আমার অনেক ক্ষুধা পেয়েছে। আমি ক্যান্টিনে যাবো।
আকাশ হুরের পাশে বসা স্নেহা মিম আর মুক্তার দিকে তাকালো। তারাও উৎসুক দৃষ্টি আকাশের দিকে নিক্ষেপ করে তাকিয়ে আছে। মূলত জানতে চাচ্ছে আকাশের এখানে আসার কারণ কি!আকাশ তাদের চোখের চাহনি তারা বুঝে গেল তাদের মনের প্রশ্ন। দু হাত মুঠো করে ছোট একটি নিঃশ্বাস ফেলল সে। মোলায়েম স্বরে বলল,
“সবাই আমার সাথে বন্ধুত্ব করলেও তুমি আমার সাথে বন্ধুত্ব করো নি কারণটা কি জানতে পারি?
হুরের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল আকাশ।মেয়েটির সরল মুখে কি জবাব আসবে তারই অপেক্ষা।নিজেকে শিথিল রাখল হুর। কন্ঠ খাদে নামিয়া উত্তর দিল।
“তুমি যেহেতু আমার বাকি তিন বান্ধবীর সাথে বন্ধুত্ব করেছ সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় এক না একদিন আমি তোমারও বন্ধু হব। ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করো। এমনটা বলছি না যে আমি তোমার সাথে বন্ধুত্ব করব না। বন্ধুত্ব আমি করবো ঠিকই কিন্তু আমার সময় লাগবে। তোমাকে ভালোভাবে না চেনা অব্দি তোমার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছি না। আশা করি তুমি আমায় বুঝবে।
হুরের প্রত্যাখানে হাসলো আকাশ। মেয়েটি এমনভাবে প্রত্যাখ্যান করে যে না হেসে পারা গেল না। এমন প্রত্যাখান শুনে যে কেউই গলে যেতে বাধ্য। আকাশ ও বাধ্য হল গলে যেতে। হুরের মুখ পানে চেয়ে স্মিত স্বরে বলল।
“আচ্ছা, ঠিক আছে সমস্যা নেই। আমি অপেক্ষা করবো তোমার জন্য। তবে এখন একসাথে তো খাবার খাওয়াই যেতে পারে তাই না?ধরে নাও আমি আজ তোমাদের অফার করছি।অ্যাজ এ ক্লাসমেট। অন্যদিন না হয় আমি তোমাদের কাছ থেকে অফার চেয়ে নিব।
আকাশের দেয়া প্রপোজাল এ নিজের মুখে খানিক চিন্তিত ভাবপ্রকাশ্যে আনল হুর। তারপর আলতো হেসে বলল।
“আচ্ছা, যাও আজ তোমায় সুযোগ করে দিলাম।যত পারো আজ আমাদের খাইয়ে দাও। শুধু আজ কেন ভবিষ্যতে আরো কতবার তোমাকে লুফে নিব সেটা তুমি নিজেও টের পাবে না। সবকিছুর সাথে কম্প্রোমাইজ হলেও খাবারের সাথে নো কম্প্রোমাইজ।
শেষের কথা অভিজ্ঞদের মত করে বলল হুর।হেসে ফেলল সবাই। স্নেহা বলল,
“ফ্রির খাবার খেতে খুবই মজা। আর যদি হয় ক্লাসমেটের কাছ থেকে এমন প্রস্তাব পাওয়ার তাহলে তো আর কোন কথাই নেই!তুমি চিন্তা করো না আকাশ। আজ তুমি এক পয়সাও নিজের সাথে করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবে না। মস্ত বড় একটা সুযোগ হাতে পেয়েছি। এটাকে একদমই হাতছাড়া করা যাবে না।
তাল মেলালো মিম,
“একদমই ঠিক বলেছিস। চলো আকাশ দ্রুত চলো, অনেক ক্ষুধা লেগেছে। আজ দেখবো তুমি আমাদের কত খাওয়াতে পারো।
হুরের কথা তে ভড়কে না গেলেও মিম আর স্নেহার কথা শুনে ভড়কে গেল আকাশ। কারণ সে হারে হারে চেনে এদের স্বভাব।হকচকিয়ে বলে ওঠে,
“আচ্ছা, ঠিক আছে আমিও দেখবো আজ তোমরা কত খেতে পারো।
বিকেল তিনটা। হুর দুপুরের খাবার খেয়ে ড্রয়িং রুমের সোফাতেই উল্টো হয়ে শুয়ে পড়েছে। ভেজা চুল তার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সোফা এবং ফ্লোরে। রুদ্ধ বাড়িতে প্রবেশ করে ড্রইং রুমের দিকে এগিয়ে যেতে নিলেই সোফায় ঘুমরত অবস্থায় হুরকে দেখতে পায়। ভ্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে আসে তার। রুম ছেড়ে ড্রয়িং রুমের সোফা ঘুমানোর রহস্যটা বোধগম্য হচ্ছে না তার। অনেক চিন্তা করেও সমীকরণ মেলাতে পারল না সে। পাশ থেকে জেরিনকে দেখতে পেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল।
“ও এভাবে ঘুমিয়ে আছে কেন?
রুদ্ধের প্রশ্নে কিছুটা হাসলো জেরিন। শব্দহীন হাসি। হুরের দিকে তাকিয়ে থেকে মুচকি হেসে বলল।
“দুপুরের খাবার তার পেটে অতিরিক্ত পড়ে গেছে। তাই ভরা পেট নিয়ে সিঁড়িতে উঠতে পারবে না বলে নিজের রুমে যায়নি। সোফার রুমে বসে থেকে কখন যে উল্টো হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেও জানে না। ও ঘুমাচ্ছে দেখে আমিও আর ডাক দেইনি।
রুদ্ধের কাছ থেকে কোন উত্তর আসলো না। উত্তরের আশা ও করলো না জেরিন। কারণ সে জানে রুদ্ধ তার কথার পিঠে কোনো জবাব দেবে না। নিজের সময় অপচয় না করে জেরিন সেখান থেকে চলে গেল। রুদ্ধ এক পলক হুরের দিকে তাকালো। হুরের সামনের চুলগুলোর কারণে তার মুখমণ্ডল দেখা যাচ্ছে না।অকস্মাৎ নড়েচড়ে উঠলো হুর। বাম পাশে ফিরতে চাইল। কিন্তু বাম পাশে ফিরতে গেলে তো ধপাশ করে ফ্লোরে পড়ে যাবে। তবে সেই দিকটায় খেয়াল নেই হুরের।সে এখন ঘুমে বিভোর। রুদ্ধ যখন দেখলো হুর আস্তে আস্তে বাম সাইডে হেলে পড়ে যাচ্ছে তখন দ্রুতগতিতে হুরের কাছে এসে তাকে ধরে ফেলে।
হুরকে ঠেলে দিয়ে ভালোভাবে শুইয়ে দেয়। এতেও তার মন মানে না। ভাবে আবার যদি পাস ফিরে শুইতে চায় তাহলে আবারো পড়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তাই আর একুল ওকুল না ভেবে চট করে হুরকে কোলে তুলে নেয়। বিপত্তি ঘটল চুল নিয়ে। লম্বা ঘন ছেড়ে দেয়া চুল নিজের মতো করে মাটিতে লুটুপুটু খাচ্ছে। ভাবনার পড়ে গেল রুদ্ধ। চুল নিয়ে কি করা যায় ভাবতে লাগলো। তবে মাথায় কোনো বুদ্ধি খেললো না। তাই হুরকে সেভাবে কোলে নিয়েই এগিয়ে যেতে লাগলো।দু কদম এগোনোর পর থেমে গেল।কারন তৃতীয় কদম ফেলার সাথে সাথে পায়ের নিচে হুরের চুল এসে যায়। চুলে টান পড়ায় কুকিয়ে উঠে হুর।তৎক্ষনাৎ রুদ্ধের বুকে মাথা রেখে বাম হাত রুদ্ধের গলায় থাকা টাই মুঠ করে ধরে।এতক্ষন যাবত হুরের মাথা রুদ্ধের বাহুতে ছিল। বাহু থেকে মাথা বুকে আসতেই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তার।রাগ ও লাগছে তার প্রতি। এতটা কেয়ারলেস মানুষ কিভাবে হতে পারে? ঘুমানোর জন্য রুম থাকা অবস্থাতে সোফায় ঘুমানোর অপরাধে তাকে কঠিনই শাস্তি দিতে ইচ্ছে করছে তার।বাম হাত কিছুটা ঢিলু করে হুরের চুলের মুঠো ধরে উঁচু করে। তারপর হুরকে নিয়ে উপরের দিকে অগ্রসর হলো।
হুরের বিছানায় শুইয়ে দিল। হুরকে বিছানায় শুইয়ে দিলেও হুর রুদ্ধকে ছাড়ে না। সে তার টাই এখনও ধরে আছে।বিপাকে পড়ে গেল রুদ্ধ।নিজের টাই এর দিকে কয়েকপলক তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে টাই ধরে কয়েকবার ঝাড়া মারে হুরের হাত ছাড়ানোর।কিন্তু সফল হলো না। এবার হুরের হাতের উপর হাত রেখে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে।হাত স্পর্শ করতেই চমকে উঠলো রুদ্ধ।বিস্ময় নিয়ে হুরের মুখের দিকে তাকালো। আবার তাকালো হুরের হাতের দিকে।চোখের পলক কয়েকবার ঝাপটা মেরে হুরের হাত স্পর্শ করলো। তুলোর চেয়েও তুলতুলে মনে হলো হুরের শরীর।কিন্তু রুদ্ধ তো জানে যারা দেখতে গুলুমুলু তাদের শরীর ভীষণ তুলতুলে হয়।কিন্তু হুর তো দেখতে রোগা পাতলা।তাহলে হুরের শরীর এত নরম তুলতুলে কিভাবে হল সেটাতেই বিষয় হতভম্ব হয়ে গেছে সে।হুরের হাত আরেকটু টিপে পরক করে নিল আসলেই কি ফুলের শরীর নরম নাকি তার বুঝতে ভুল হচ্ছে। কিন্তু না কয়েকবার পরীক্ষা করার পরও যখন দেখল প্রতিবারের ফলাফল একই আসছে। তখন মানতে বাধ্য হলো যে রোগা পাতলা শরীরের রমণীদের ও শরীর নরম তুলতুলে হয়।হুরের দিকে আর চেয়ে থাকতে পারলো না আর রুদ্ধ। হুরের প্রতি তার আকর্ষণ বেড়ে যাচ্ছে। যা তার পার্সোনালিটির সাথে যায় না। আকর্ষিত হতে চায় না হুরের মাঝে। তাই নিজেকে সংযত করে হুরের হাত নিজের টাই এর থেকে ছুটিয়ে চলে গেল।
ঘুম থেকে উঠতে উঠতে সাড়ে পাঁচটা বেজে যায় হুরের।সে ফ্রেস না হয়েই রুম থেকে ঘুমো ঘুমো চোখ নিয়ে নিচে নেমে পড়ে। ড্রয়িং রুমে এসে সোফায় আবারও বসে থেকে মাথা সোফার সাথে হেলান দিয়ে চোখ বুঝে ফেলে। ঘুম তার এখনো কমপ্লিট হয়নি। আজ খুব ঘুম পাচ্ছে তার। এত ঘুমের রহস্য সে ঠাহর করতে পারছে না। কিছু সময় ভেবে এই ঘুমকে হুর “মরা ঘুম” নামে আখ্যায়িত করল।ঘুমোতে তার মোটেও ইচ্ছে করছে না। কিন্তু ঘুমের রেশ এখনো থাকায় চোখ বাধ্যতামূলক বন্ধ করতে হচ্ছে। গভীর নিদ্রায় তলিয়ে যাওয়ার আগেই কর্ণকুহরে গম্ভীর স্বরের ধমক প্রদর্শন হয়।
“এই মেয়ে এভাবে সোফায় পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছ কেন? বিকেলের সময়ও দেখেছি সোফায় উল্টো হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলে। এটা সোফা তোমার বেড নয়,যে যখন মন চাইবে তখন শুয়ে থাকবে। ঘুমোতে হলে রুমে গিয়ে ঘুমাও।
ফট করে আঁখি পল্লব খুলে ফেলল হুর। ইয়া বড় বড় করে চোখ রুদ্ধের মুখশ্রীতে তাক করল।রুদ্ধের কথা কান অব্দি পৌঁছালেও মস্তিষ্ক অবধি পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি। ঘুমের ঘোর এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাই ড্যাবড্যাব করে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইল সে। হুর কে এভাবে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে কপালে কয়েকটি ভাজ পড়লো রুদ্ধের।জিজ্ঞেস করল,
“কি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
হুর মনে করেছিল সে স্বপ্নের মাঝেই রুদ্ধকে দেখতে পাচ্ছে। এবং স্বপ্নের মধ্যে এসে তাকে উরাধুরা বকাঝকা করছে। তাইতো এভাবে দৃষ্টিপাত করে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। যখন বুঝলো এটা কোন স্বপ্ন না তখন বিচলিত হলো তার মন। রুদ্ধের বলা কথা মস্তিষ্কে ঢোকাতেই তৎক্ষণাৎ উত্তরের সন্ধান খুঁজতে লাগলো। ঘুমের রেশ পুরোপুরিভাবে কাটেনি দেখে মস্তিষ্ক তাকে সঠিকভাবে কোন উত্তর দিতে পারছে না। তবে এই পরিস্থিতি থেকে বের তো হতেই হবে। তাই নিজের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলে বলে উঠলো।
“আসলে কিভাবে কিভাবে যে চলে এসেছি নিজেই বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয় কি জানেন? আমার বোধহয় ঘুমের ঘোরে চলার অভ্যেস আছে।তাই মনে হয় ঘুমের ঘোরে এখানে এসে শুয়ে পড়েছি। আপনি কিছু মনে করবেন না হ্যাঁ!পরবর্তীতে ঘুমের ঘোরে আর যেখানেই যাই না কেন আপনার সোফাতে এসে কখনো ঘুমাবো না।
বলে একটু হাসার চেষ্টা করল ।তবে জোর জবরদস্তির হাসি মুখে আসছেই না। এমনভাবে ফ্যাসাদে পড়েছে যে পা দিয়ে তো দূর, হাত দিয়ে ও হাঁটতে পারছে না সে।রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ ,হয়তো কিছু বলবে সেই আশায়।কিন্তু রুদ্ধ কে কোন কিছু বলতে না দেখে স্বস্তিকর এক নিঃশ্বাস ছাড়লো সে। আচানক রুদ্ধ প্রশ্ন করে,
” কেমন যাচ্ছে তোমার পড়াশোনা?
আকস্মিক পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করতেই কিছুটা থতমত খেয়ে গেল হুর। নিজেকে সংযত রেখে প্রশ্নের জবাব দিল।
“হ্যাঁ, হ্যাঁ ভালোই যাচ্ছে।
সোফায় বসে ভরাট কন্ঠে আবার বলল,
“ফ্রেশ হয়ে ডিরেক্ট ডাইনিং এ আসো।
হুর বুঝলো না হঠাৎ ডাইনিং এ আসার জন্য তাকে নেমন্তন্ন কেন করা হচ্ছে। রুদ্ধের দিকে জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেও রুদ্ধ সেদিকে পাত্তা দেয় না। গম্ভীর স্বরে আবার বলে,
“গো ফাস্ট।
কথা বাড়ালো না হুর। উঠে গিয়ে সোজা চলে গেল তার রুমে। ফ্রেশ হয়ে সোজা ডাইনিং টেবিলে চলে আসলো। রুদ্ধ তার বরাদ্দ করা চেয়ারে বসে আছে।বিপরীত পাশের চেয়ারে রুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে বসল হুর। সেই মুহূর্তে ডাইনিং টেবিলে প্রবেশ করে জেরিন।ট্রেতে করে খাবার এনে টেবিলে রাখল।হুর জেরিনের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল।
“লিলি আপু কোথায়? অনেকক্ষণ ধরেই তাকে দেখছি না।
কাজের ফাঁকে জেরিন হুরের প্রশ্নের উত্তর দিল।
“কিছু কাজের জন্য বাহিরে গিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে।
খাবার রেখে নিজের কাজে চলে গেল জেরিন। এদিকে ডাইনিং টেবিলে দুজনের মাঝে নিস্তব্ধতা।রুদ্ধ সব খাবারের প্লেটের ওপর থেকে ঢাকনা সরিয়ে দিয়েছে। প্লেট এবং বাটির ওপর থেকে ঢাকনা সরাতেই হুরের দৃষ্টিগোচরে আসে স্পাইসি চিকেন, তন্দুরি,চাওমিন ,চিকেন হোয়াইট সস পাস্তা, সাথে আছে কয়েক পদের সস।খাবারের দিকে চোখ সরিয়ে রুদ্ধের দিকে তাকালো। রুদ্ধ হুরের দিকেই এতক্ষণ তাকিয়ে ছিল। হুরের চোখে মুখে প্রশ্নবোধক চাহনি দেখে রুদ্ধ চোখের ইশারায় খাবারের দিকে তাকিয়ে তাকে খেতে বলল।নিজ প্লেটে অল্প অল্প করে খাবার নিয়ে খেতে লাগলো সে।টুংটাং চামচের শব্দ আসছে ডাইনিং টেবিল জুড়ে।শব্দটা আসছে অবশ্য রুদ্ধের কাছ থেকে। রুদ্ধ কাটা চামচ এবং নাইফ দিয়ে চিকেন কেটে কেটে খাচ্ছে। আর হুর তার হাত ব্যবহার করে খাচ্ছে। এমন বড়লোকী লাইফস্টাইল তার পছন্দ নয়। হাত থাকতে কিসের জন্য প্রতিবন্ধীদের মতো চামচ আর ছুরি ব্যবহার করে খেতে যাব?যতদিন পর্যন্ত হাত ভালো থাকবে ততদিন পর্যন্ত হাত ব্যবহার করে খাবার খাব। তাও বড়লোকদের মত কাটা চামচ ছুরি ব্যবহার করে খাব না। মনে মনে এসব ভাবছে হুর। বেশ অ্যাটিটিউড এর সাথে খাবার খাচ্ছে রুদ্ধ। লুকিং লাইক এ শাহেনশা!
( অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্বের জন্য😓 )