#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব-৪২ ( প্রথমাংশ )
#লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )
ঘুম থেকে ওঠার পর নিজেকে রুদ্ধর বাহুদরে আবদ্ধ পেল হুর। আ/দরের সহিত রুদ্ধর কপালে যখন চুম্বন দিবে তখন মনে পড়ে গেল গতকালকের ঘটনা।তৎক্ষণাৎ রুদ্ধর কাছ থেকে সরে আসলো সে। কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে থেকে চলে গেল ওয়াশরুমে। ওয়াশরুমে নিজের মুখের অবস্থা দেখে চমকে উঠলো।আগের তুলনায় মুখ অনেক চুপসে গেছে। চোখ ফোলা। ইদানিং শরীরটাও ভালো লাগছে না। তার ওপর তিন মাসের অধিক হল হুরের পিরিয়ড হচ্ছে না। এ নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ভুগছে সে। প্রথমে মনে করেছিল হয়তো প্রেগন্যান্ট আছে। কিন্তু প্রেগনেন্সির কোন লক্ষণ চোখে পড়ছিল না। তাই প্রেগনেন্সির ব্যাপারটা স্কিপ করল।আর বিয়ের আগে মাঝে মাঝে তার পিরিওড গ্যাপ গিয়েছে। তাই এ নিয়ে আর চিন্তা করলো না।
শাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হল। রুদ্ধকে বিছানায় বসে থাকতে দেখা গেল। তার দিকেই তাকিয়ে আছে। চোখ ফিরিয়ে নিল হুর। তাকাবে না সে লোকটার দিকে। যে লোকটা কথায় কথায় হুমকি দেয়,মারে, তার সাথে কোন কথা নেই হুরের।মনের মাঝে একরাশ অভিমান নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তোয়ালে পেঁচানো চুলগুলো ছেড়ে দিল। দুর্বল হাত দিয়ে চুলের পানি মুছতে লাগলো।রুদ্ধর চোখ পড়ল হুরের ফর্সা গালের দিকে। তিনটে আঙুলের ছাপ পড়ে গেছে। গতকাল রাতে তেমন আলো না থাকায় দেখতে পারেনি।বিছানা থেকে উঠে হুরের কাছে গেল। কোন কথা না বলে হুরের হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে নিজেই হুরের চুল মুছতে লাগলো। ঈষৎ ভ্রু কুঁচকে এলো হুরের। গতকাল রাতে মেরে এখন আদিখ্যেতা দেখানো হচ্ছে।প্রয়োজ নেই তার এই আদিখ্যেতার।রাগে রুদ্ধর হাত থেকে তোয়ালে ছিনিয়ে অভিমানী স্বরে বলে।
“ভুলেও আমার কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করবেন না। আমার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।আর এইসব আদিখ্যেতা আমায় দেখাবেন-ই না।
কিছু পল্লব হুরের দিকে তাকিয়ে সিরিয়াস ভঙ্গিতে শুধাল,
“সত্যি দূরত্ব বজায় রাখব তো?
আয়নায় ভেসে ওঠা রুদ্ধের প্রতিচ্ছবি দেখল হুর।অনিমেষ তাকিয়ে রইল রুদ্ধ চোখের দিকে।ছলছল আঁখি নিয়ে বলল,
” হ্যাঁ, দূরত্ব বজায় রাখুন।
ব্যাস আর কিছু বলতে হয়নি হুরের। তার আগেই রুদ্ধ রুম ত্যাগ করেছে। রুদ্ধের যাওয়ার পানে হুর অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে।চোখ দিয়ে পানি পড়ার সাথে সাথে হাতের পিঠ দিয়ে মুছে নিল।
সময় ৬টা। হুর ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আনমনে বাহিরের দিকে চেয়ে দৃশ্য দেখছিল।তখনই মনে হলো কেউ তাকে ডাকছে। ব্যালকনি থেকে রুমে এসে দেখল দরজার বাহিরে রিফা দাঁড়িয়ে আছে। হুরকে দেখে মুচকি হেসে ভেতরে আসল।হুরের মুখশ্রী শক্ত। রিফা হুরের বিছানায় আয়েশ করে বসে বলে,
“তো বুঝলে তো তোমার স্বামী তোমাকে ঠকাচ্ছে?
এবার হুরের ঠোঁটের কোণে হাসি দেখা গেল।বলল,
“শুধু ঠকায়নি,ঠকিয়ে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে।তাই তো দেখতে এসেছেন তাই না?
হকচকিয়ে উঠল রিফা।তা দেখে হুর বলে,
” আপনি কি মনে করেছিলেন আপনার জালে আমি ফেসে যাব?হ্যাঁ, ফেসে গিয়েছিলাম। তবে পরে বুদ্ধি করে নিজেকে ছাড়িয়েও নিয়েছিলাম।আপনি কি কারণে এসব করছেন তা আমি জানি না।কিন্তু এটা ঠিক বুঝতে পেরেছি আমাকে এ বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্য আপনার এসব নাটক।
ধরা পড়ে যাওয়ায় আরো চমকিত হল রিফা।সে ভাবতে পারেনি হুর সত্য জেনে যাবে। সত্য জেনেছে তবে অর্ধ।এখন এই অর্ধ সত্য দিয়ে তাকে নাচাতে হবে।ভেবেই আনন্দ পেল রিফা।বিদ্রুপ করে বলল,
“জেনে খুশি হলাম তুমি আমার জালে আটকা পড়নি।তবে অর্ধেক সত্য যেহেতু জেনেছ পুরো সত্য ও খুবই শীঘ্রই জেনে যাবে।যেদিন জানবে সেদিন নিজের স্বামীর নামে আর বড় বড় কথা বলতে পারবে না।মেনে নিতে পারবে না রুদ্ধর আসল চেহারা।
প্রতুত্তর করেনা হুর। চুপ থেকে রিফার দিকে তাকিয়ে থাকে। রিফা কে তার কথার উত্তর দিলে কথা আরো বাড়বে। আর কথা বাড়াতে চাচ্ছে না হুর। আয়েশা চুপ হয়ে রইল। হুরকে কোন কিছু না বলতে দেখে অট্টহাসিতে মেতে উঠল।হাসতে হাসতেই রুম থেকে বেরিয়ে পড়ল। বিছানায় ধপ করে বসে পড়ল হুর। রিফা কোন সত্যর মুখোমুখির কথা বলছে সেটা সে ধরতে পারছে না।অতিরিক্ত চিন্তার কারণে মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গেছে। রুদ্ধের সাথেও তার সম্পর্ক আজকাল তেমন ভালো যাচ্ছে না।
———————–
ঘন্টার কাঁটা আটটার ঘরে।মিনিটের কাটা ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে একে।আর পাল্লা দিয়ে চলছে সেকেন্ডের কাঁটা। রুদ্ধ ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে গলা ফাটিয়ে রিফাকে রাখতে লাগলো। হঠাৎ রুদ্ধর কর্কশ কণ্ঠ শুনে সবাই হকচকিয়ে গেল। তড়িঘড়ি করে সবাই নিজের রুম থেকে বেরিয়ে আসলো ড্রয়িং রুমে।ফায়াজ আর হুরের আসতে একটু দেরি হল। দুজনে রুম ই উপর তলায় তাই। এলোমেলো হয়ে আছে রুদ্ধর চুল। গায়ের কাপড়ও খানিকটা কুচকে আছে।কর্কশ গলায় কাউকে ডাক দিতেই পিছন থেকে দুজন লেডি গার্ড আসলো।রুদ্ধর সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। রুদ্ধ রিফার দিকে তর্জনীয় আঙ্গুল দেখিয়ে বলল,
“এই আবর্জনা কে আমার ঘর থেকে বের করে দিন।
সাথে সাথে চোখ বড় হয়ে যায় রিফার। বিচলিত হয়ে ফায়াজ আর সোহেল শেখের দিকে তাকিয়ে রয়।উদ্বিগ্ন স্বরে বলে,
“হোয়াট আর ইউ টকিং রুদ্ধ?আমাকে কেন ঘর থেকে বের করে দিতে চাইছো?কি করেছি আমি?
আচানক শব্দ করে হাসতে লাগলো রুদ্ধ।কোনমতে নিজের হাসি থামিয়ে বলল,
“তুমি কি বুঝতে পারছ না তুমি কি করেছ?
ঢোক গিললো রিফা।তোতলানো স্বরে বলল,
“প্লিজ রুদ্ধ আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিও না।কোথায় যাব আমি?যাওয়ার মত কোন আমার কাছে নেই।বিনা অপরাধে তুমি এভাবে আমাকে ঘর থেকে বের করে দিতে পারো না।
রদ্ধর ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি।রিফার কাছে এসে টিটকারি মেরে অসহায় স্বরে বলে,
“ওহ্ রিফা বেইবি কে বলল তোমায় আমি অপরাধ বিহীন বাড়ি থেকে বের করে দিতে চাচ্ছি?আলবাত তুমি অপরাধ করেছ।শোনো আমি হচ্ছি সাপের মত। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমার লেজে কেউ পা দিবে তা তখন অবধি আমি শান্ত থাকবো।লেজে পা দেয়া মানেই সাপের ছোবল খাওয়া।
রিফা আর রুদ্ধর কথা কেউর ই বোধগম্য হচ্ছে না। সবাই ফ্যাল ফ্যাল করে রুদ্ধ আর রিফার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের কথা বোঝার চেষ্টা করছে। শেষে না পেরে সোহেল শেখ প্রশ্ন করে উঠলো।
“কি হচ্ছে রুদ্ধ তুমি রিফাকে বের করে দিতে চাচ্ছ কেন?কি করেছে ও?তোমার ভুলে গেলে হবে না ও একটি মেয়ে। আর এ রাতের বেলা কোথায় ঠাঁই পাবে সে?
রুদ্ধ অবাক হওয়ার ভান করে বলল,
“কোথায় যাবে মানে? সে তার বয়ফ্রেন্ড এর কাছে যাবে।আর আরেকটা গুড নিউজ আছে তোমাদের কাছে। তোমাদের আদরের রিপা অন্তঃসত্ত্বা। তার বয়ফ্রেন্ডেরই বেবি সে ক্যারি করছে। আর তা গছিয়ে দিতে চাইছে আমার ঘাড়ে। আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে আমার বউ হওয়ার সে স্বপ্ন দেখছে।অ/বৈধ কাজ করে বৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাচ্ছে।আমার সহজ সরল বউ রিফার কথায় ফেঁসে গিয়েছিল । যা নয় তাই আমাকে শুনিয়ে দিয়েছিল। তখন স্বামীকে নয় সতীনকে বিশ্বাস করেছিল।যেই মেয়ে আমার ঘরে থেকে, আমার খাবার খেয়ে আমার বউকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে চায় সেই মেয়েকে আমি আমার ঘরে রাখবো না। দরকার হলে রিফাকে দুনিয়া থেকে গায়েব করে দিব। তারপরও তার জন্য আমার জীবনে আমি ঝামেলা হতে দিব না।
স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সবাই।মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে রিফা। রুদ্ধ সে এভাবে সবার সামনে তার সত্য খোলাসা করবে তা আঁচ করতে পারেনি।লজ্জা অপমানে থম থমে হয়ে এসেছে তার মুখশ্রী।মুখ তুলে সবার পানে চেয়ে থাকার সাহসটুকু নেই। নিস্তব্ধ হয়ে সোহেল শেখ রিফাকে জিজ্ঞেস করলেন।
“এ কি শুনছি রিফা মা?রুদ্ধ যা বলছে তা কি সব সত্য?
রিফার মুখে টু শব্দ পর্যন্ত নেই। যেখানে ধরা খেয়ে বলির বাঁকড়া হয়েছে সেখানে আর বলার মত কিছু খুজে পাচ্ছে না। মিথ্যা বলতে গেলেও রুদ্ধ তাকে ধরে নিবে। কারণ রুদ্ধ কখনো প্রুভ ছাড়া কাজ করে না। তাই নিজেকে আর ছোট করল না। ঠায় দাঁড়িয়ে রইল চুপ হয়ে। চুপ থাকা সম্মতির লক্ষণ মনে করলেন সোহেল শেখ। মুহূর্তেই চোখে জল জড়ো হলো। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললেন,
“তোমাকে আমি নিজের মেয়ে মনে করতাম।কখনো মনে করতাম না তুমি আমার ভাইয়ের মেয়ে। সব সময় তোমায় আগলে রাখতাম। যখন যা চাইবে তাই দিতাম। তার প্রতিশ্রুতি তুমি এভাবে দিলে?নিজের জীবন নষ্ট করে এখন আমার ছেলের জীবন নষ্ট করতে চাইছো?কেন করলে তুমি এমন? কি কমতি দেখেছিলাম আমরা?
তরতর করে ভেতরে থাকা ক্ষোভ বের হয়ে আসলো রিফার। চিলিয়ে বলল ,
“তুমি যতই আমায় নিজের মেয়ে মনে করো না কেন পাপা আমি তো ছিলাম তোমার ভাইয়ের ই মেয়ে।তুমি আমায় সব দিলেও তোমার প্রোপারটি আমায় দিতে না। প্রপার্টি পেত তোমার দুই ছেলে। তখন কোথায় যেতাম আমি? কি হতো আমার? তারপর তোমার সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেল। তোমার সাথে সাথে আমরা ভেঙ্গে পড়লাম।ঠাঁই হলো রুদ্ধর বাড়িতে।রুদ্ধর বিলাসিতা দেখে তার প্রতি আমার লোভ লেগে যায়।যখন শুনি হুরের নামে ৮০% প্রপারটি লেখা তখন লোভের মাত্রা তীব্র হয়। মুখ্য উদ্দেশ্য একটাই হয়ে দাঁড়ায় হুরকে রুদ্ধ জীবন থেকে আলাদা করে দেওয়া। এবং রুদ্ধর জীবনে নিজেকে রাণী করে রাখা। তাই ষড়যন্ত্র শুরু করে দেই। হুরের কান ভরতে থাকি। সহজ সরল হুর প্রথমে আমার চালাকি ধরতে পারল না। আমি যেভাবে নাচাতে চেয়েছিলাম সেভাবেই নাচছিল।মনে করেছিলাম রুদ্ধর জীবন থেকে হুর চলে যাবে। তার আগেই রুদ্ধ সব বলে দিল তোমাদের।
স্তম্ভিত হয়ে গেল ফায়াজ আর সোহেল শেখ। কখনো ভাবতে পারেনি রিফার মধ্যে এতটা হিংসা আর লোভ লুকায়িত আছে।আপন মানুষদের সত্য কথা বরাবরই কষ্টদায়ক হয়।কষ্টে বু/ক চিন চিন করতে লাগলো সোহেল শেখের। ভাঙ্গা গলায় আবার বললেন,
“আমার কিছু হয়ে গেলে তোমাদের তিনজনের নামে প্রপার্টি ভাগ করে দেয়া হতো। আমি আগেই সব কিছু উইল করে রেখেছিলাম।
সোহেল শেখের দিকে তাকালো রিফা।চোখে পানি টইটুম্বর।রিফা সর্বদা মনে করে এসেছিল সোহেল শেখ দুই ছেলের নামে প্রপার্টি লিখে দিবেন।কিন্তু সত্যটা অন্য ভাবে সামনে এলো।রুদ্ধ ও লেডি গার্ডদের দিকে তাকিয়ে আবার আদেশ করল।
“বের করে দিন তাকে।
লেডি গার্ড দুজন রিফা দুবাহু ধরে টেনে যেতে নিয়ে যেতে লাগলো।চিৎকার করে দুজনকে থামাতে বলছে রিফা। লেডি গার্ডের শক্তির সাথে পেরে উঠতে পারছে না।ধস্তাধস্তি করার এক পর্যায়ে নিজেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে রুদ্ধর মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ালো সে।উপহাস করে বলল,
“মিস্টার রুদ্ধ আমার সত্য তো আপনি বললেন ।আপনার সত্যটা না হয় আমি বলে দেই। কি বলেন?
কঠিন হয়ে আসলো রুদ্ধ মুখ। ভাব খানা এমন রিফাকে পারলে ভস্ম করে দিবে। ক্রুর হাসলো রিফা। হুরের কাছে গিয়ে বলল,
“তুমি তোমার স্বামীকে খুব ভালো মনে করো তাই না?তুমি কি জানো তোমার স্বামী একজন খু/নি?সে টাকার বিনিময়ে মানুষদের খু/ন করে। না, হলে সে এত কোটি কোটি টাকা কোথা থেকে উপার্জন করতে পারতো?এবং তোমার নামে যে ৮০% প্রোপার্টি আছে সেটাও তার অবৈধ টাকা।তোমার স্বামী একটা খু/নি। ভয়ংকর খু/নি। তার চোখে কেউ পড়ে গেলে,তাকে কেউ বাঁচাতে পারে না।নিঃশংস্বভাবে সবাইকে খু/ন করে।
বিঃদ্রঃ ৪০তম পর্বে ৪০০+ রিয়েক্ট দেখে বিশ্বাস ছিল যে,পরের পর্বতেও এমনই রিয়েক্ট আসবে। তবে ব্যাপার না!আমি আগেই বলেছিলাম রিয়েক্ট এর উপর ভিত্তি করে আমি পর্ব পোস্ট করব।তাই লেট করে দেয়া। 🙂