#প্রেমকুঞ্জ 💓
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
| একাদশ পর্ব |
“ফরহাদ সাহেব! আপনার হাতের কৃষ্ণচূড়া ফুলটা কি আমি নিতে পারি!
বাড়ির সামনে দেওয়ালের সাথে ঘেসে দাঁড়িয়ে ফরহাদ! তার সামনে আসমানি রঙের শাড়ি পড়ে দাঁড়ানো নীলুফার হাস্যোজ্জ্বল মুখ! নীলু কে বোধহয় আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে। চোখের পাতা ফেলে ফেলে তাকিয়ে আছে ফরহাদ নিলুফারের দিকে। অতঃপর নড়েচড়ে উঠল সে। হেসে ফুলটা নিলুফারের হাতে দিল সে। নিলুফার মুচকি হেসে ফুলটা হাতে নিয়ে চলে গেল। আজ বুধবার, সেই খেয়াল আছে ফরহাদের। নিলুফার আজ অন্য দিনের তুলনায় একটু বেশিই সাজগোজ করবে। এটাও জানা ছিল! কপালের টিপ টা একটু সরে ছিল। ফরহাদের বলার ইচ্ছে ছিল টিপ টা একটু সরে গেছে। ঠিকমতো কপালে বসে নি। কিন্তু বলা হলো না। আরো একটা কথা বলা হয়নি, কৃষ্ণচূড়া ফুলটা নিলুফারের জন্য’ই এনেছিল সে। এতো সাজগোজের পর এই ফুলের একটা কমতি থেকে যাবে বলে মনে করে ফরহাদ। যদিও জানে নিলুফার নিজেই একটা ফুটন্ত ফুল, ঠিক তার নামের মতোই! নদীতে ভাসমান একটা ফুটন্ত পদ্ম! তবুও ফরহাদের ইচ্ছে নিলুফারের খোঁপায় গাঁধা কৃষ্ণচূড়া ফুলটা সে দেখবে। নিলুফার তাই করছে। হাতের কলমটা দিয়ে চুল গুলো খোঁপা করছে। আন্দাজে সে চুলে ফুলটা গাধছে। ফরহাদ সেখান থেকে দাঁড়িয়ে দেখে যাচ্ছে। এটাই তার জন্য প্রাপ্তি! সে জানে আজকের সাজটা তার জন্য না, তবুও নিলুফার কে এই সাজে দেখতে পেরে তৃপ্ত সে। নিলুফারের পিছু পিছু আজ যাবে না। এভাবে প্রতিদিনই নিলুফারের অগোচরে তার পিছন পিছন যেত কিন্তু আজ যাবে না। তাহলে একটু বেশিই কষ্ট পাবে সে! ফরহাদ হাঁটা ধরল ছাদের দিকে। সেখানে দাঁড়িয়ে নিলুফারের ফিরে আসা অবদি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাবে সে। সাথে এক প্যাকেট সিগারেট আছে।
—–
“খুব সুন্দর লাগছে আজ তোমায়!
“খোঁপায় ফুল দেখে বললে!
আবরার হেসে বলল, আমার এই ফুল দেখতে বরাবর সুন্দর! কিন্তু আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে।
নিলুফার হেসে ফেলল। শহিদ মিনারের প্রাঙ্গনে বসল দুজন।
“চাকরিটা তাহলে পেয়েই গেলে!
“হুম অবশেষে..
“তাহলে এখন থেকে তো আর বুধবার দেখা হবে না আমাদের
“হুম, তা ঠিক!
নিলুফার চাঁপা শ্বাস ফেলল। দুজনের আজ এতো কাছকাছি থাকার পরও কোথায় জানি মনে হচ্ছে দুজনে খুব দূরত্বে আছে। নিলুফার আবরারের দিকে ফিরে বলল, “কিছু কি হয়েছে?
“না কি হবে?
“তাহলে তোমাকে এমন লাগছে কেন?
“কেমন লাগছে!
“একটু অস্বাভাবিক!
আবরার হেসে বলল, চাকরি নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি তো তাই।
“চিন্তা করো না। কবে থেকে যাচ্ছো।
“এই শনিবার।
“ওহ আচ্ছা। প্রথম দিন যাবার আগে আমাকে একবার টেলিফোন করো তো।
“কেন?
“এইভাবেই কথা বলব। তোমায় অল দ্যা বেস্ট বলবো!
“আচ্ছা করবো!
নিলুফার হেসে দাঁড়িয়ে বলল, চলো এক কাপ চা খেয়ে আসি!
“চলো!
দু’জনে চায়ের টং এ এসে দাঁড়াল। এক কাপ বলে তিন কাপ চা খেলো নিলুফার। আবরার এক কাপ চা খেয়ে শুধু নিলুফার কে দেখতে লাগল। নিলুফার চা খাবার মাঝে মাঝে মৃদু মৃদু হাসল।
আজ নিলুফারের চাহিদা অন্য দিনের তুলনায় অন্যরকম ছিল। আবরার কে টেনে মিষ্টির ভান্ডারে গেল। সেখান থেকে দই, মিষ্টি খেল। বিকালে খেল ফুচকা। পার্কে দুজন মিলে অনেকক্ষণ গল্প করল। বাদাম খেল। আবারার বাদামের খোসা ছাড়িয়ে নিলুফার কে দিতে লাগল আর নিলুফার একটা একটা করে বাদাম মুখে দিচ্ছে। সন্ধ্যা অবদি আবরারের হাত হাত রেখে হাঁটতে লাগল নিলুফার!
“সন্ধ্যে নেমে যাচ্ছে, বাসায় ফিরবে না।
নিলুফার আবরারের হাত শক্ত করে ধরে বলল, যেতে ইচ্ছে করছে না।
“এটা কি ধরনের কথা নিলু!
“জানি না!
“বাড়িতে সবাই চিন্তা করবে।
“করতে দাও, আমি আরো কিছুক্ষণ থাকবো তোমার সাথে!
আবরার হেসে ফেলল। নিলুফার হেসে আবরারের কাঁধে মাথা রাখল। দু’জনেই নিঃশ্বাস ফেলছে ধীরে ধীরে! রাত্রি নেমে যাচ্ছে। টিএসসি রোড দিয়ে হাঁটছে দুজন। মাথার উপরে ল্যাম্পপোস্টের আলো। রাস্তায় মানুষজন তেমন একটা নেই। আজান একটু আগেই দিয়েছে, তাই হয়তো খালি খালি। আরেকটা গলি পেরিয়ে এখন মেইন রোড! হঠাৎ মাঝ গলিতে থেমে গেল নিলুফার। আবরার অবাক হয়ে তাকিয়ে গেল।
“থেমে গেলে যে!
“তোমার আর যেতে হবে না।
“কেন?
“আমি একাই যেতে পারবো। তুমি বরং এখান থেকেই চলে যাও।
“এই না বললে তোমাকে এগিয়ে দিতে।
“হুম বলেছিলাম, কিন্তু এখন বলছি তুমি চলে যাও। এখান থেকেই চলে যাও!
“নিলু!
নিলুফার চলে যেতে দিল। আবরার তার হাতটা ধরে নিজের দিকে ফিরাল। নিলুফারের দুচোখে অশ্রু জমে আছে। আবরার বলে উঠল, কি হয়েছে নিলু!
“তুমি চলে যাও!
“হ্যাঁ চলে তো যাবোই, কিন্তু তুমি কাঁদছো কেন?
“কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি! বড্ড ভালোবাসি তোমায়। একটা আবদার করবো, একটু জড়িয়ে ধরবে আমায়!
“নিলু!
“ধরো না!
আবরার বুকে টেনে নিল নিলুফার কে। চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল নিলুফারের। খানিকক্ষণ এভাবে থাকার পর আবরার তাকে ছেড়ে দিল। হাত শক্ত করে ধরে বলল,
“আজ চিঠি দিলে না আমায়!
নিলুফার হুট করেই হেসে উঠলো। বলল,
“আজ চিঠি আনে নি গো। রাগ করো না লক্ষ্মী টি। আচ্ছা তুমি কি মনে করেছিল আমি সত্যি সত্যি কাদঁছিলাম। না কাঁদি নি, একটু ভান করেছি। যাতে তুমি আমায় জড়িয়ে ধরো! দেখলে কি চালাক আমি!
আবরার অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। নিলুফার এবার খিলখিলিয়ে হাসল। আবরারের গালে হাত রেখে বলল, তুমি এভাবে তাকিয়ো না গো, তাহলে আমি তোমার প্রেমে মা*রা যাবো।
“সাবধানে যেও!
“হুম তুমিও যাও!
বলেই হাঁটা ধরল নিলুফার। কাঁধের ব্যাগ টা কে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল সে। পেছন ফিরে তাকাল আবরারের দিকে। আবরার দাঁড়িয়ে আছে এখনো। নিলুফার মৃদু হেসে আবারো সামনে ফিরল। কি করে বুঝাবে নিজের মন কে, আজ যে তার শেষ দেখা। এরপর আর কখনো দেখা হবে না আবরারের সাথে। এরপর আর কখনো কোন অধিকার থাকবে না আবরারের উপর। সব জানে সে সব! আবরারের মুখ দেখেই বুঝে গেছিল সব। দুটোনায় ভুগছে সে। নিলুফার নিজ থেকেই মুক্তি দিয়ে দিল তাকে। আজ আবরার সাহস করে নি। সারাটা দিন ইচ্ছে করেই ছিল আবরারের সাথে। যদি আবরার একবার মুখ ফুটে বলতো, চলো নিলুফার আজ’ই আমরা বিয়ে করে ফেলি!
নিলুফার হয়তো তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যেতো। কিন্তু আবরার তা বলেনি। খুব বড় ভুল করলো আবরার খুব বড়!
—–
মিটি মিটি পায়ে হেঁটে চলছি আমি। খুব অসহায় লাগছে নিজেকে। হাঁটার ক্ষমতা অবদি পাচ্ছি না। হঠাৎ সামনে তাকাতেই দূর থেকে ফরহাদ কে দেখতে পেলাম। পরণে এখনো সকালের পোশাক। খয়েরি রঙের একটা পাঞ্জাবি পড়ে দূরে দাঁড়িয়ে আছে সে। কার জন্য দাঁড়িয়ে, আমার! ভাগ্যের পরিহাস দেখে হাসি পাচ্ছে।
ফরহাদ এখনো আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি হেঁটে তার কাছে এলাম। হেসে বলে উঠি,
“কি ব্যাপার ফরহাদ সাহেব,এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে। আমার অপেক্ষা করছিলেন নাকি।
ফরহাদ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে নিলুফারের মুখের দিকে। কেন জানি নিলুফারের মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু ঠিক নেই।
“কি হয়েছে, এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? দেখুন আপনার দেওয়া ফুলটা খোঁপায় গেধেছি। খুব সুন্দর লাগছে না আমায়।
ফরহাদ হেসে বলল, হুম!
নিলুফার হাসল। হেসেই বলল, “জানেন ফরহাদ সাহেব, আবরারের চাকরিটা হয়ে গেছে। সত্যি সত্যি হয়ে গেছে। এই খুশিতে আমি আজ হাফ কেজি মিষ্টি খেয়েছি !
ফরহাদ মৃদু হাসার চেষ্টা করল। নিলুফারের হাসি থেমে গেল। গলাও ভার ভার হয়ে যাচ্ছে। ফরহাদের থেকে চোখ সরিয়ে নিল সে। শুধু বলে উঠল,
“আপনি কষ্ট পাবেন, বুঝলেন তো ফরহাদ সাহেব। কষ্ট পাবেন!
বলেই নিলুফার হাঁটা ধরল। ফরহাদ স্থির চোখে তাকিয়ে আছে নিলুফারের চলে যাবার দিকে। নিলুফার বলল কষ্ট সে পাবে। কিন্তু মনে হলো নিলুফারের বলার মাঝে কষ্ট আছে। আচ্ছা কষ্ট কি সে পেয়েছে!
——
শনিবার ভোর বেলা! নিলুফার সারারাত ঘুমায় নি। জেগে ছিল আবরারের জন্য। আবরার ফোন করবে এটা সে জানতো। নিলুফার বেশ স্বাভাবিক ছিল এ কদিন। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া ঘুম সব’ই করেছে। কিন্তু কে বলবে তার মাঝে কতো কষ্ট লুকিয়ে আছে। টেলিফোন বেজে উঠলো। দেরি না করে তাড়াতাড়ি করে ফোন তুলল নিলুফার। কানে দিতেই ওপাশ থেকে আবরার বলল,
“নিলু!
নিলুফার হাসল। হাসির শব্দ পাচ্ছে আবরার। আবরার বলল,
“কি করছিল?
“তোমার টেলিফোনের অপেক্ষা! তৈরি হয়েছো তুমি।
“হুম, আধ ঘন্টা পর বের হবো।
“নাস্তা করেছ?
“মা বানাচ্ছে!
দীর্ঘশ্বাস ফেলল নিলু। আবরার বলে উঠল,
“কি হয়েছে নিলু!
“কিছু না, তোমার গলার আওয়াজ শুনতে বেশ ইচ্ছে করছে। তুমি কথা বলতে থাকো।
“বলছি তো, কিন্তু তুমি বলো তোমার কি হয়েছে? আমি জানি তোমার কিছু হয়েছে?
নিলুফার হেসে বলল, সত্যি!
“হাসির মাঝে কি আড়াল করছো?
নিলুফার থমকে গেল। চোখের কোনে অশ্রু জমছে তার। গলাও জমে যাচ্ছে তার। নিলুফার বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলল, যা আমার থেকে তুমি লুকাতে চাইছো!
আবরার চুপ হয়ে গেল। নিলুফার কাঁদছে। নিঃশব্দে কাঁদছে। আবরারের গলা ধরে যাচ্ছে। সে ঘন ঘন শ্বাস ফেলে বলল,
“নিলু!
“তোমার পরিবার মেনে নেয় নি আমায়!
“নিলু!
নিলুফার হেসে বলল, দেখলে আমি বলেছিলাম না। তোমার চাকরি টা হয়ে গেলে তুমি আর আমায় পাবে না। দেখলে কথাটা ফলে গেল।
আবরারের দম বোধহয় আটকে যাচ্ছিল। নিলুফার হাসছে। কেন হাসছে এই মেয়েটা এটাই বুঝতে পারছে না আবরার। আবরার বলে উঠল,
“নিলু আমরা বিয়েটা করে নিই। আজ আসবে তুমি আমরা বিয়ে করবো।
“এখন বলছো! তুমি জানো সেদিন আমি সারাটা দিন এই কথাটা শোনার জন্য তোমার সাথে ছিলাম।
“আমি..
“তোমার মা তার মরা মুখের কসম দিয়েছে।
ওপাশ থেকে আর কোন কথার আওয়াজ আসছে না। নিলুফার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“তোমার সাহস হয় নি আবরার। বরাবরের মতোই আমাকে নিয়ে তুমি উদাসীন। কিন্তু আমি উদাসীন ছিলাম না। বড্ড ভালোবাসি আমি তোমায়। বড্ড!
কাঁদছে নিলুফার খুব কাঁদছে। ওপাশে টেলিফোন হাতে কানে নিয়ে আবরার নিশ্চুপ। নিলুফারের কান্নার টের সে পাচ্ছে। নিজেকে এখন খুব অসহায় মনে হচ্ছে তার। নিলুফার বলতে শুরু করল,
“জানো, আমিও খুব ভিতু। কথা গুলো সামনাসামনি বলতে পারি নি তোমায়! তাই তোমাকে আজ সকালে টেলিফোন করতে বলেছি। এইই আমাদের শেষ কথা। খবরদার বলছি আর কখনো ফোন করবে না আমায়, কখনো না!
“কি বলছো তুমি এসব! তুমি না বলেছিলে অল দ্যা বেস্ট জানাবে আমায়।
“জানাচ্ছি তো, তোমার জীবনের নতুন অধ্যায়ে। দেখো খুব সুখী হবে তুমি। অনেক ভালোবাসবে সে তোমায়!
“নিলু থামো তুমি
“দুটোনায় ভুগো না আবরার! আমি নিজ থেকে মুক্তি দিয়ে দিলাম তোমায়। তুমি চাও নি তবুও দিলাম। কি করবে বলো, মা বাবা ছেড়ে আমার কাছে চলে আসলে তো আর হবে না। জীবনে এদেরও অনেক দরকার আছে।
আবরার চুপ হয়ে নিলুর কথা শুনছে। নিলু কান্না থামিয়ে এবার বড় শ্বাস নিল। হেসে বলল, তা কি পড়েছ আজ। সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট! বড় বাবু লাগছে বুঝি তোমায় আজ।
“নিলু এমন করো না।
“করতে হয় আবরার। করতে হয়। আচ্ছা নাম কি তার, কখনো বললে না তো। সে কি দেখতে খুব সুন্দরী।
“আমার নিলু সবচেয়ে সুন্দরী!
নিলুফার হাসছে, খিলখিলিয়ে হাসছে। হঠাৎ করেই সেই হাসি থেমে গেল। নিলুফার বলে উঠল, অল দ্যা বেস্ট তোমায়।
“টেলিফোন রেখো না।
“না আজ তোমার কথা হবে না। শোন আমার শেষ আবদার টা রেখো। আমার দেওয়া সব চিঠি খুব যত্ন করে রাখবে তুমি। আমার সাথে কাটানো সব মুহুর্তে খুব করে মনে রাখবে, পারবে না!
“….
“আবরার, আমি ভালোবাসি তোমায়। বড্ড ভালোবাসি! ভালো থেকো। খরবদার বলছি আর কখনো ফোন করবে না এখানে। খুব খারাপ হবে তখন। খুব!
আবরার কিছুই বলতে পারছে না। কথা বলার শক্তিটা বোধহয় হারিয়ে ফেলেছে সে। এই মনে হচ্ছে নিলুফার এখন’ই হেসে বলবে, আহ! এসব কিছু সত্যি ভাবলে নাকি তুমি। আমি তো সব মজা করেছি। খুব বোকা তুমি আবরার। খুব! লক্ষ্মী টি রাগ করো না! হি হি হি! আবারো সেই হাসির শব্দ।
নিলুফার হাসছে। হেসেই বলছে,
“শেষবারের মতো বলবে না আমায় ভালোবাসো তুমি, কি হলো বলো!
আবরারের গলা কাঁপছে। নিলুফার খুব আগ্রহে দাঁড়িয়ে আছে। আবরার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে নিল তখন’ই লাইন কেটে গেল। নিলুফার ফোন কেটে দিয়েছে। থমকে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল আবরার। নিলুফার ফোন রেখে দৌড়ে ঘরে ঢুকল। আজ কাঁদবে সে, খুব কাঁদবে। এই কয়েকদিনের জমিয়ে থাকা চাপা কষ্ট, অভিমান আর ঝড়বে তার অশ্রুর সাথে। ঘরের কোনে মুখে হাত দিয়ে কেঁদে যাচ্ছে নিলুফার। অনেক জোরে জোরে কাঁদার চেষ্টা করছে কিন্তু মুখে হাত দেবার কারণে সেই কান্নার শব্দ দরজা ভেদ করে বাইরে যাচ্ছে না। ঘরের কোনের মাঝেই সেই চাপা কষ্ট বন্দি হয়ে গেল!
#চলবে….
[ রি চেক করা হয়নি, ভুল গুলো ক্ষমার চোখে দেখার অনুরোধ রইল ]