বেলী_ফুলের_সুবাস #পর্ব :৩০ #মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)(১৮+ এলার্ট)

0
180

#বেলী_ফুলের_সুবাস
#পর্ব :৩০
#মেঘকন্যা (ছদ্মনাম)(১৮+ এলার্ট)

সুবাস রুমে প্রবেশ করলো।পুরো রুম থেকে শুধু ফুলের ঘ্রাণ আসছে নাকে।পুরো শরীর হিম হয়ে যাচ্ছে সুবাসের।সুবাস লাইট অন করলো।পুরো রুম জুড়ে গোপাল ফুল ও হার্ট শেপ বেলুন দিয়ে সাজানো।পুরো রুম গ্ধনে মো মো করছে।বেডে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বড়ো করে হার্ট শেপ আঁকা।এবার সুবাসের চোখ গেলো ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে থাকা বেলীর দিকে।বেলী তার দিকে পিঠ দিয়ে দাড়িয়ে আছে। পরনে পাতলা ফিনফিনে জর্জেটের লাল শাড়ি।চুল গুলো সামনের দিকে নিয়ে আসা। ব্লাউসের বড় গলা দিয়ে পুরো পিঠ চোখে ভেসে উঠছে।আয়নায় বেলীকে দেখা যাচ্ছে।চোখ দুটো বন্ধ। গাল জুড়ে লাল আভা।সুবাস সকাল থেকে একের পর এক চমক খাচ্ছে।প্রথমে নিজ থেকে বেলীর কাছে আশা।এখন আবার এতো কিছু।কেমন যেনো শিহরণ হচ্ছে সুবাসের শরীর জুড়ে।কেমন পুরুষালি হরমোন গুলো শরীর জুড়ে নেচে উঠছে। নিষিদ্ধ চাওয়া গুলো তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে।

সুবাস বেলীর দিকে এগিয়ে গেলো।বেলীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে পর পর কয়েকটা চুমু খেল।বেলী দু হাতে শাড়ি খামচে ধরলো।বেলীকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালে ঠোঁট ছোয়ালো।ঠোটের ভাঁজে ঠোঁট গুজে দিলো।
বেশ কিছু ক্ষণ পর বেলীর দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকলো।বেলী চোখ বন্ধ করে নিলো।এই চোখে তাকানোর সাহস বেলীর নেই।মনে হচ্ছে এই চোখে তাকালেই গভীর ভাবে তলিয়ে যাবে সে।এই চোখের ভাষা অন্য।চোখের ভাষা স্থির,শান্ত।কোনো কিছুর চাওয়া আছে এই চখে।যেনো কোনো কিছুর আকুল আবেদন।বেলীর কানের কাছে সুবাস নিজের ঠোট ছুইয়ে বললো

-”বেলী…….তোমার এই রূপ আমাকে নিয়ন্ত্রন হারা করে দিচ্ছে।নিজেকে ধরে রাখা কষ্ট সাধ্য হচ্ছে।নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছি না।নিষিদ্ধ চাইয়া গুলো মুক্ত আকাশের উড়ন্ত পাখি নেয় উড়তে চাইছে।শরীর জুড়ে নতুন অনুভুতি গুলো ছেয়ে যাচ্ছে।”

বেলীর শরীর সুবাসের কথায় যেনো হিম হয়ে যাচ্ছে।পেটের মধ্যে মোচড়া মচড়ি শুরু হচ্ছে। শ্বাস – প্রশ্বাস ঘন হচ্ছে।কেমন ঠান্ডা শির শির অনুভূতি হচ্ছে।।এই শির শির বেলীর শরীরে শিহরন জগতে যথেষ্ট।

-”বেলী তুমি কি আমাকে শুনতে পারছো?তোমাকে আমার আরো কাছে চাই বউ।তোমার শরীর জুড়ে মিশতে চাই।তোমাকে সবটা জুড়ে ভালোবাসতে চাই। নিজের করে পেতে চাই।”
……….

-”বেলী তোমাকে নিজের মাঝে বিলীন করতে চাই।তোমার রন্দ্রে রন্ধ্রে মিশতে চাই।তোমাকে ভালোবেসে সর্ব সুখ দিতে চাই।দেবে কি আমায় সেই সুযোগ?”

এমন আকুল আবেদন কি ফিরিরে দেয়া যায়?নাহ দেয়া যায় না।বেলী ফিরিয়ে দিতে চায় না। এই চাওয়া কে ফিরিয়ে দেয়া বেলীর জন্য কষ্টসাধ্য।তবে বেলী চেয়ে ও নিজের মুখ দিয়ে কথা বের করতে পারছে না।কেমন যেনো গলায় সব কথা আটকে যাচ্ছে।বেলীকে চুপ থাকতে দেখে সুবাস বেলীকে ছেড়ে দিলো।হাতের বাধন হালকা হলো।সুবাস উল্টো দিকে ঘুরতে নিলেই বেলী সুবাসের পিঠে মাথা ঠেকিয়ে জড়িয়ে দিলো।অতি কষ্টে উচ্চারণ করলো

-”সুবাস”

এই প্রথম বেলীর মুখে নিজের নাম শুনে বেশ অবাক হলো সুবাস।ঠোঁট জুড়ে হাসি ফুটে উঠলো।নতুন শিহরণ হলো প্রেয়সীর মুখে নিজের নাম শুনে।

-”আমি আপনার ভালোবাসা পেতে চাই।আপনাকে গভীর ভাবে অনুভব করতে চাই।”

বেশ সুবাসের যা বুঝার বুঝে গেলো।প্রেয়সীকে কোলে তুলে নিলো।বেলীকে বেডে শুইয়ে নিজের ভর বেলীর উপড় ছেরে দিলো।বেলীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো।সর্ব সুখে বিলীন হলো দুটি মানুষ।এক হলো তাদের হৃদয়।তলিয়ে গেল ভালবাসায় নতুন রূপে।তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হলো এই চার দেয়াল,আকাশের চাঁদ এবং তারা দুজন।
__________

ফারদিনরা সন্ধার পর চলে গিয়েছে। সামিয়াদের পুরো পরিবার সবাই আজ সাজিয়ার বাসায় থাকবে।রাতে খাবার শেষ করে সাজিয়ার রূমে শুয়ে পড়লো সামিয়া।কিছু ক্ষন আগের ঘটনায় ডুব দিলো

সবাই বসার ঘরে বসে বিয়ের কথা বলছিলো। যেহুতু সামনের শুক্র বারে নিহাল ও ফিহার বিয়ে হবে তাই ঠিক করা হলো সেই দিনই সাজিয়া ও ফারদিনের বিয়ে হবে।যে কনভেনশন সেন্টারে বুক করা হয়েছে সেখানে হবে।এটা মিতু চৌধুরী আপত্তি করলে বিলকিস বগমের কথায় রাজি হতে হয়েছে।সাজিয়া তার নাতনি।তাই তিনি চান এক সাথে এক সেন্টারে যেনো বিয়ে হয়।তাদের কথার মাঝে মিতু চৌধুরী বিলে উঠেন।

-”আসলে আম্মা আমি একটা কথা বলতে চাই আপনাদের।আপনারা কেউ আমাকে ভুল বুঝবেন না দয়া করে।”
বিলকিস বেগমকে উদ্দেশ করে বলেন তিনি।মা নেই বলে তিনি বিলকিস বেগমকে আম্মা বলে ডাকেন।

-”বলো কি বলবা তুমি।”

-”আমি আমার ইয়াসিরের জন্য সামিয়াকে চাচ্ছিলাম আম্মা।রাজিয়া আপা আমি সামিয়াকে আমার ছেলের জন্য চাচ্ছিলাম।”

তার কথা শুনে সবাই অবাক হলো।বিশেষ করে সামিয়া।বরাবর বসে থাকা ইয়াসিরের দিকে তাকালো।লোকটা তার দিকে কেমন নির্লজ্জ মতো তাকিয়ে আছে। কেউ দেখলে কি হবে?ভাগ্যিস কেউ এই দিকটায় তাকাচ্ছে না।

-”আমি রাজি মিতু।তোমার পোলার লগে আমগো সামিয়ারে বেশ মানাইবো।”
বিলকিস বেগম বলে উঠলেন

-”আমি রাজি মিতু আপা।তবে এবার আমি আমার মেয়ের মতামত নিতে চাই।আমি চাই সামিয়া ও ইয়াসির নিজেদের মতো করে কথা বলে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাক।”

রাজিয়া বেগমের কোথায় সামিয়া ও ইয়াসির কে আলাদা রুমে পাঠানো হলো।

-”আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই না ইয়াসির ভাই।”

সামিয়ার কণ্ঠে স্পস্ট অভিমানের চাপ।সামিয়ার কথায় ইয়াসির হাসলো।

-”কেনো বিয়ে করবে না?এতো দিন তো বিয়ের জন্য লাফালাফি করতে।তবে এখন কেনো না বলছো?”

-”আগে অন্য ব্যাপার ছিল।এখন ব্যাপার অন্য। এখন আপনি আমার উপর দয়া দেখিয়ে বিয়ে করতে চাচ্ছেন।”

-” ওয়েট ওয়েট!কিসের দয়া?”

-”এই যে আমার বিয়ে ভেঙেছে।আমার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছে।এখন তো আমাকে কেউ বিয়ে করবে না।আমার কোনো সম্মান নেই।আমার গায়ে ধ*র্ষিতার ট্যাগ।আমি এখন ফেলানো জিনিস।আমার কোনো দাম নেই।তাই আপনি আমাকে বিয়ে করে দিয়া দেখবেন।আপনার দয়া আমার চাই না।

-”কি সব বলছো তুমি? কেনো এমন ভাবে কথা বলছো?তোমার সাথে খারাপ কিছু হিয় নি। যা হয়েছে সব অ্যাকসিডেন্ট।আমি তোমাকে দয়া দেখাচ্ছি না।আমি তোমাকে সত্যি বিয়ে করতে চাই।আমি তোমাকে বিয়ে করবো।”

-“আমি আপনাকে বিয়ে করবো না।আমার মত না থাকলে কেউ আমাকে বিয়ে দিবে না।আমি মরে যাবো তাও আপনার কাছে বিয়ে বসবো না।”

কথাটা শুনা মাত্র ইয়াসির ঘরের দরজা লাগিয়ে দিলো।সামিয়াকে বেডে সাথে চেপে ধরে গলায় মুখ গুজে পর পর কয়েকটা চুমু খেল।ঘটনা গুলো এত তাড়াতাড়ি হলো যে সামিয়ার বুঝতে সময় লাগলো।শরীর জুড়ে কেমন অনুভূতি হলো।দু চোখ বন্ধ করে নিলো।ইয়াসিরের গায়ের গন্ধ নাকে লাগায় কেমন যেনো হচ্ছে।সামিয়া কাপতে লাগলো।

সামিয়াকে ছেড়ে দিয়ে দিলো ইয়াসির।নিজ কোলে বসিয়ে কোমর চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।কপালে চুমু খেয়ে বললো

-”আর যদি কখনো মরার কথা বলে তবে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। আর বিয়ে তো তোমাকে আমার কাছেই বসতে হবে।তুমি চাও বা না চাও।তাই চুপ চাপ নিচে গিয়ে হুম বলে দিবে বিয়ের জন্য।বাড়াবাড়ি করলে খারাপ হবে।”
……..

-বি রেডী মাই ফিউচার ওয়াইফ ফর টেকিং মাই রোমান্টিক টর্চার।”

বলেই সামিয়ার গালে চুমু খেয়ে চলে গেলো সে।
সামিয়া পলক ঝাঁপিয়ে বার কয়েক ইয়াসিরকে দেখলো। এ কোন ইয়াসির দেখছে সে।হাত আপনা আপনি গালে চলে গেলো।অতপর নিচে চলে গেলো।সকলের প্রশ্নের উত্তরে হুম বললো অর্থাৎ সে বিয়েতে রাজি।তাই ঠিক করা হলো একই দিনে একই জায়গায়,সামিয়া – ইয়াসির,নিহাল – ফিহা,সাজিয়া – ফারদিনের বিয়ে হবে। সবার মুখে খুশির আমেজ।

সামিয়ার ভাবনার মাঝে সাজিয়া তাকে ধাক্কা দিলো
-”কি এতো ভাবছেন ভাবি জি?”

-”আমি কিভাবে তোর ভাবি হই?তোর ভাইয়ের সাথে আমার এখনও বিয়ে হয় নাই।”

– “আরে ভাবি রাগ করছেন কেনো?আপনি কয়দিন পর শুধু আমার ভাইয়ের বউ না আমার ভাইয়ের বাচ্চার মা হবেন।”
বলেই হাসতে লাগলো সাজিয়া।বেশ কিছু ক্ষন কথা বলে তারা ঘুমিয়ে গেলো।
(আসসালামুআলাইকুম।আজকের পর্ব লিখতে গিয়ে আমি লজ্জায় শেষ।আপনারাও কি লজ্জা পাচ্ছেন?কেমন আছেন সবাই। ধন্যবাদ সবাইকে এতো বেশি সাপোর্ট করার জন্য।ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন। ভালোবাসা নিবেন )
চলবে……….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here