#আশার_হাত_বাড়ায় |৭|
#ইশরাত_জাহান
🦋
শ্রেয়াকে নিয়ে অতীতে চলে যায় অর্পা।যেই অতীতে অর্পার কিছু কষ্টের মুহূর্ত থাকে।মা হারা অর্পার খারাপ সময়টা।পুরনো দিনগুলোর কথা মনে পড়ে চোখ থেকে পানি পড়ছে অর্পার।মিরাজ তার বুকে ঠান্ডা অনুভব করলো।শার্ট ভিজে এসেছে তার।অর্পাকে উঠিয়ে ওর চোখের পানি মুছে দিলো মিরাজ।অর্পার ললাটে ভালোবাসার ছোঁয়া দিয়ে বলে,”তোমার অতীত ভেবে কষ্ট পাবে না।অতীতে তোমার ভালোবাসা শুধু শ্রেয়া থাকলেও এখন তোমার ভালোবাসা আমি আছি এই পরিবার আছে।কিন্তু আমাকে ভালোবাসার কেউ নেই।”
শেষের কথাটি মিরাজ মুখ ফুলিয়ে বলে।অর্পা হেসে দেয় মিরাজের এমন মুখ ফোলানো দেখে।মিরাজের মুখের দুই পাশ হাত দিয়ে টিপে দেয়।তারপর বলে,”হিংসুটে বর আমার।”
“হিংসুটে হবো না?বউ সারাক্ষণ এদিক ওদিক নিয়ে ভাবে।আমাকে নিয়ে ভাবেই না।”
“আস্ত আমিটাই তো তোমার আছি।ভাববো আর কি?”
বলেই মিরাজকে আলিঙ্গন করে অর্পা।শ্রেয়ার লাঞ্চ শেষ।এখন সে তার কেবিনে ঢুকবে।এনি চলে গেছে নিজের কাজে।শ্রেয়া একা একা আসতে থাকে কেবিনের দিকে।হঠাৎ পাশে থাকা একটি ডিসপ্লে ডলের হাতের সাথে শ্রেয়ার ওড়না লেগে যায়।শ্রেয়া বুঝে উঠতে পারে না।হাঁটতে যেয়ে ডিসপ্লে ডল পড়ে যেতে নিলে শ্রেয়া একটু ঝুঁকে হাত দিয়ে ধরে রাখে।পাশে থাকা একটি মেয়ে দৌড়ে আসে সাথে সাথে।ডিসপ্লে ডল উঠিয়ে শ্রেয়াকে ঝাড়ি দিয়ে বলে,”দেখে শুনে চলতে পারো না।তুমি জানো এই একটা ডিসপ্লে ডলের দাম কত? আর এই লাক্সারি ড্রেস এটার দাম মার্কেটে এখন হাই রেঞ্জে।যদি ড্রেসটির কিছু হতো পারতে ক্ষতিপূরণ দিতে?”
ঘাবড়ে যায় শ্রেয়া।মেয়েটির কথাগুলোতে মাথা নিচু করে আছে।আরেকটি মেয়ে দৌড়ে এসে বলে,”আর ইউ ক্রেজি লিজা!এই মেয়ে কিভাবে ড্রেস প্রাইজ সম্পর্কে আইডিয়া রাখবে।এই মেয়ে নিজেই তো সুইটেবল না। আই ডোন্ট নো স্যার কি দেখে একে কাজে নিয়েছে তবে যার ভিতরে নিজস্ব ফ্যাশন নেই সে কিভাবে ফ্যাশন হাউজে কাজ পায় আমার মাথায় আসছে না।”
মেয়েটির কথাতে হেসে দেয় লিজা। তাল মিলিয়ে বলে,”ইউ আর রাইট ইভা।এই মেয়ে নিজেই তো আনকালচারাল।নরমাল কাপড়ের সালোয়ার কামিজ পরে এসেছে। মাথাটা দেখো কিভাবে নিচু করে রেখেছে।এই মেয়েকে কাজে নিয়ে কোম্পানির ফ্যাশনকে অপমান ছাড়া কিছুই করা হলো না।”
চোখ ভিজে আসতে থাকে শ্রেয়ার।মেয়ে দুটোর দিকে তাকালো শ্রেয়া।দুজনেই শার্ট কোর্ট পরে আছে।পায়ের জুতোটাও দামী।খুব বেশি না সাজলেও নিজেদেরকে পারফেক্ট ফ্যাশনের সাথে বজায় রেখেছে এরা।শ্রেয়া চুপ করে ওদের কথাগুলো হজম করতে থাকে।ঠিক তখন পিছন থেকে ভেসে আসে,”কেউ কিছু না জানলে তাকে শিখিয়ে দিতে হয়।এটা তোমরা জানো না?”
সবাই পিছনে তাকালো।দেখতে পেলো স্কুল ড্রেস পরে ঘাড়ে ব্যাগ নিয়ে দাড়িয়ে আছে মিমি। হাত দুটো ব্যাগের দুই পাশে ধরে আছে।মুখে রাগ স্পষ্ট।কোম্পানির সিইওর মেয়ে বলে সবাই চুপ হয়ে গেলো।মিমি এবার শ্রেয়ার পাশে এসে দাড়ালো।কিছু বলতে যাবে তখনই ফারাজ আসে নিজের কেবিন থেকে।ড্রাইভারের কল পেয়েছে সে।মিমিকে উপরে পাঠিয়ে দিয়েই কল দেয় ফারাজকে।বাইরে এসে মিমিকে রাগ করতে দেখে বলে,”কি হয়েছে?”
মিমি এবার ফারাজের কাছে এসে বলে,”এনি তো বলেছিলো কোম্পানিতে সবাই বন্ধু হয়ে থাকে।তাহলে ওরা কেনো বকাঝকা করছে?বন্ধু কি একে বলে?”
ফারাজ এগিয়ে এলো শ্রেয়া ও মেয়েগুলোর দিকে। ইভা আগ বাড়িয়ে বলে ওঠে,”আসলে স্যার এই মেয়েটি ডিসপ্লে ডল ফেলে দেয়। লাকিলি লিজা ধরে নেয় ডল।এটা তো আমাদের স্পেশাল ব্রাইডাল ড্রেস।”
আর কিছু বলতে না দিয়ে ফারাজ বলে ওঠে,”আমাদের কোম্পানির রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন ভুলে গেছেন মিস লিজা?যদি ভুলে যান তাহলে আবার মনে করিয়ে দেই।এখানে কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী না বরং বন্ধু হয়ে কাজ করি।এই কোম্পানির ছোট থেকে বড় পজিশনে সবাই একটা টিম।একজন পুরোনো মেম্বার হয়ে আপনাদের মাথায় রাখা উচিত ছিলো এই কোম্পানির রুলস নিয়ে।উনি কোনো ক্ষতি করলে তার ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা আছি।আমাদের কাছে এটা নিয়ে ডিসকাস করা উচিত ছিলো।”
মিমি এবার বলে ওঠে,”আমি দেখেছি আণ্টির ওড়না লাগার সাথে সাথে যখন পড়ে যাবে তখন আণ্টি ডলটা ধরে নেয়।তাহলে কিভাবে ওই আণ্টি এসে ঠিক করলো?ডল তো পড়েই নি।উল্টো তোমরা ভালোভাবে না বুঝিয়ে বাজে ব্যাবহার করেছো।”
মেয়ে দুটোর মুখ এবার শুকিয়ে গেলো।শুকনো ঢোক গিলতে থাকে ভয়তে।মিমি নিজেই শ্রেয়ার উইটনেস।ফারাজ মেয়ে দুটোর দিকে তাকিয়ে বলে,”অফিসের রুলসের বাইরে চলা আমি এলাউ করব না।এখানে কেউ কাউকে অপমান নয় মিলেমিশে থাকবে। আর হ্যাঁ!প্রপার ফ্যাশন সম্পর্কে কেউই আগে থেকে অবগত থাকে না। আস্তে আস্তে নিজেকে তৈরি করতে হয়।উনি এখন ট্রেনিংয়ে আছে।এই এক সপ্তাহ ট্রেনিংয়ের পর বোঝা যাবে উনি সুইটেবল কিনা।”
বলেই মিমিকে নিয়ে ক্যান্টিনে যেতে নেয় ফারাজ।কিছুদূর হেঁটে পিছনে ঘুরে দাড়ালো ফারাজ।শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,”দোষ ওদের যেমন ছিলো দোষ আপনারও আছে।নিজেকে সামলে রাখতে শিখুন।এটা বাচ্চাদের স্কুল নয় যে হাতে কলমে সব শিখিয়ে দিতে হবে।এখানে আপনাকে সবকিছু দ্রুত গতিতে ক্যাপচার করে নিতে হবে।বি কেয়ারফুল।”
বলেই চলে গেলো ফারাজ।ফারাজের হাত ধরে হাঁটতে থাকে মিমি।শ্রেয়া ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ মিমি হাঁটতে হাঁটতে পিছনে মাথা ঘুরিয়ে তাকালো শ্রেয়ার দিকে।শ্রেয়া নিজেও তাকিয়ে আছে মিমির দিকে।শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে ফোকলা দাঁতের মিষ্টি হাসি দিলো মিমি।এটা দেখে শ্রেয়া হেসে দেয়।তারপর চলে আসে নিজের কেবিনে।কেবিনে বসতেই শ্রেয়ার ফোনে একটি ম্যাসেজ আসে।ফোনটি নিয়ে শ্রেয়া দেখতে থাকে ম্যাসেজটি।রিমলি করেছে ম্যাসেজ।লেখা আছে,”মা সব জেনে গেছে।তোমার শাশুড়ি মাকে কল করে জানিয়েছে।মা আমাকে বারবার বলছে তোমাকে কল করতে।আমি মিথ্যা বলেছি যে ফোনে নেটওয়ার্ক নেই।বেশিক্ষণ এক মিথ্যা বললে ধরা পড়বো।তাই তুমি কল রিসিভ করবে না।আমি আলাদাভাবে কল দেওয়ার আগে তোমাকে ম্যাসেজ দিবো।এখন মা রেগে আছে।উল্টা পাল্টা কথা শুনিয়ে দিবে তোমাকে।আমি চাই না তুমি এসব শুনো।”
ম্যাসেজটি পড়ে দীর্ঘশ্বাস নিলো শ্রেয়া।ছোট্ট করে লিখে দিলো,”আচ্ছা।”
তারপর আবার ল্যাপটপে কাজ করতে শুরু করে শ্রেয়া।লাঞ্চ শেষ করে মিমিকে নিয়ে এসেছে ফারাজ।ফারাজ তার নিজের কেবিনে বসে কাজ করছে আর মিমি নিজের মতো বসে বসে আশেপাশে দেখছে তো আবার নিজের পুতুল নিয়ে খেলছে।হঠাৎ মিমির চোখ যায় শ্রেয়ার দিকে।শ্রেয়াকে দেখে মিমি ফারাজের কাছে আসে। ফারাজের কাছে এসে বলে,”আমি ওই আন্টির কাছে যাই?”
ফারাজ একবার শ্রেয়াকে দেখে নিলো।তারপর মিমির দিকে তাকিয়ে বলে,”বিরক্ত করবে না কিন্তু আন্টিকে।”
“আচ্ছা।”
বলেই পুতুল হাতে দৌড় দেয় মিমি।শ্রেয়ার কেবিনে এসে নক করে বলে,”মে আই কাম ইন?”
মিমিকে দেখে শ্রেয়া খুশি হয়ে বলে,”হ্যাঁ,আসো।”
মিমি দৌড়ে আসে শ্রেয়ার কাছে।এসেই শুরু করে দেয় গল্প।খুব বেশি বিরক্ত মিমি করেনা।মিমি শুধু বসে বসে কাজগুলো দেখতে থাকে আর সেগুলো নিয়েই প্রশ্ন করে।
মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে রনি।ঘরে খাট নেই।তাই সে খাট আর ড্রেসিং টেবিল কিনতে গেছিলো।কিন্তু এর জন্য ব্যাংক থেকে টাকা নিতে গেলে দেখতে পায় ব্যাংক একাউন্ট লক করা।ওদিকে অফিস থেকে বলে দিয়েছে তার চাকরি আর নেই।রনি বুঝতে পারছে না এতকিছু একসাথে কেনো হচ্ছে তার সাথে।রুবিনা এসে ছেলের পাশে বসে আছে।শান্তনা দিতে থাকে রনিকে।যেহেতু রনির চাকরি নেই আবার ব্যাংক লক তাই রুবিনা বলে,”আজ থেকে তুই আমার ঘরে ঘুমা।আমি রুহি আর রুমার ঘরে ঘুমাচ্ছি।চাকরি পেলে তারপর নাহয় জিনিসপত্র কিনবি।”
মায়ের থেকে শান্তনা পেয়ে একটু ভালো লাগলো রনির। কাল থেকে আবার চাকরির অ্যাপ্লাই করতে হবে।ফোন হাতে নিয়ে দেখছে কোথায় কোথায় সার্কুলার দেওয়া আছে।
হাতে কলম নিয়ে নাড়াচাড়া করছে আর শ্রেয়াকে ভালোভাবে পরখ করছে মিসেস তানহা।উনি একজন ডিভোর্স স্পেশালিস্ট। মোটা গোলগোল চশমা চোখে শ্রেয়াকে দেখে নিয়ে বলে,”ডিভোর্স দেওয়ার কারণ?”
একটু ভয় পায় শ্রেয়া।উকিলের সামনে বসে কথা বলছে এই প্রথম।তারপরও সাহস যুগিয়ে বলে,”এক্সট্রা ম্যারিটাল এফেয়ার।”
“হাসব্যান্ড এর?”
“হুম।”
“ফিরিয়ে আনতে পারলে না কেনো?পরকীয়া করলেই স্বামীকে ছেড়ে দিতে হবে।অধিকার জিনিসটা দেখাও না কেনো?”
কিছুক্ষণ চুপ থেকে শ্রেয়া আস্তে সুরে বলে,”কেউ হারিয়ে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু কারো মনটাই হারিয়ে গেলে তাকে জলজ্যান্ত পাওয়া গেলেও অধিকার পাওয়া যায় না।”
“হুম বুঝলাম।তো কোনো প্রমাণ আছে তোমার কাছে?”
শ্রেয়া ফুল হাতার সালোয়ার কামিজ পরা ছিলো।জামার হাতা উচু করে দেখিয়ে দিলো মিসেস তানহাকে।পুরে যাওয়া হাত দেখে মুখটা কুঁচকে এলো তার।মায়া হলো শ্রেয়ার উপর।ডিভোর্স স্পেশালিস্ট হিসেবে মিসেস তানহা চেয়েছিলো শ্রেয়াকে কিছু টিপস দিবে।সংসার ধরে রাখার জন্য।কিন্তু শ্রেয়ার হাতের এই অবস্থা দেখে তার মুখ থেকেই বেড় হয়,”জা নো য়া র।”
বিদ্রুপের হাসি হাসলো শ্রেয়া। তানহার দিকে তাকিয়ে বলে,”এটা কম আরো দেখতে চান?”
বলেই শ্রেয়া ঘুরে দাড়ালো।গলা থেকে চুলগুলো সরিয়ে দেখিয়ে দিলো তানহাকে। চার পাচটা বেল্টের আঘাতের দাগ।যা এখন কালো হয়ে আছে।শ্রেয়া এবার চেয়ারে বসে বলে,”এরকম আরো অহরহ গোপন প্রমাণ আছে।তাছাড়া স্ট্রং এভিডেন্স আমি সাথে রেখেছি।”
তানহা এবার বিনাবাক্যে বলে,”তোমার আর তোমার হাসব্যান্ডের ফুল ডিটেইলস দিবে। আর হ্যাঁ যেহেতু এখানে তোমার দোষ নেই তাই ডিভোর্সের জন্য তুমি কিছু ডিজার্ভ করো তার থেকে।আই থিঙ্ক তুমি বুঝতে পারছো।তুমি কি আদায় করে নিতে চাও নাকি এমনিতেই ছার দিবে?”
“অবশ্যই আমি আমার কাবিনের টাকা চাই।ওরা আমার মৃত বাবার জমানো অনেক টাকা খেয়েছে।বিয়ের সময় মা এতকিছু দিয়েছিলো তারপরও তারা আমার মায়ের থেকে অনেক টাকা নিয়েছে।আমি না করলেও মা দিয়ে দিতো।যেটা কাবিনের থেকেও বেশি।আর ওদের প্রতি দয়া দেখাতে গেলে শুধু আমি না প্রতিটি নারী জাতিকে হারিয়ে দেওয়া হবে।”
“ওকে,তাহলে তুমি ডিটেইলস দেও।আমি পেপার রেডি করে তোমাকে ইনফর্ম করবো।”
“জি ম্যাম।”
বলেই শ্রেয়া তার আর রনির সম্পর্কে বলতে থাকে।রনির পরিচয় পেয়ে মিসেস তানহার ভ্রু কুঁচকে যায়।পাশে থাকা ল্যাপটপ থেকে কিছু ডকুমেন্ট দেখতে থাকে।তারপর শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”তুমি তোমার প্রতি অন্যায়ের বিচার পাবে।”
একটু অবাক হলেও শ্রেয়া বলে,”আমি তো আমার অন্যায়ের বিচার চাইতেই এসেছি।”
“অপেক্ষা করো আর নিজের সফলতার জন্য এগিয়ে যাও।সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ ডিভোর্স পেপার আমি তাড়াতাড়ি রেডি রাখবো।এই কেসে বেশি দেরি করা যাবে না।”
এবার আর শ্রেয়া প্রশ্ন না করে পারলো না।বলে ওঠে,”আপনি এতটা শিওর নিয়ে বলছেন কিভাবে?”
মিসেস তানহা এবার হেসে দেয়।হাসি থামিয়ে বলে,”আমরা তো উকিল।আমাদের নজর খুব তীক্ষ্ণ।আর চারপাশের খোঁজ খবর নেওয়াটাও আমাদের কাজ।হয়তো অন্য কোনো কারণে জানতে পেরেছি।কিন্তু যতটুকু জানতে পেরেছি তাতে এটা শিওর তুমি বেশিদিন এই ঝামেলায় থাকবে না।খুব তাড়াতাড়ি তোমার সমস্যার সমাধান হবে।”
“কিন্তু কিভাবে?”
“বেশি কিছু তো বলা যাবে না।এই কেসের কিছুটা ইনফরমেশন আগে পেয়েছিলাম।কিন্তু এটা অন্যের ব্যাপার।যেটা কাউকে শেয়ার করার রাইট আমাদের নেই।”
“ওহ,ওকে ম্যাম।তাহলে আমি আসি।”
“ওকে, বাই।”
বেড় হয়ে গেলো শ্রেয়া।মিসেস তানহা দেখলেন শ্রেয়ার যাওয়া।এখন তার নেক্সট ক্লায়েন্ট দেখতে হবে।এটাই তার কাজ।নির্দিষ্ট চেয়ারে বসে প্রতিনিয়ত একের পর এক ক্লায়েন্ট দেখা।
রাস্তার পাশ দিয়ে দেওয়াল ঘেসে হাঁটছে শ্রেয়া।মাথায় তার অনেক চিন্তা।প্রথম চিন্তা এগুলো সৃষ্টি বেগমকে বলবে কিভাবে।তারপর ভাবছে জীবনটা কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে।সে অফিসের কাজগুলো ভালোভাবে করতে পারবে তো।এরকম আরো ভিন্ন কথা মাথায় ঘুরছে।হাঁটতে হাঁটতে কিছুটা কাচা বাজারের দিকে আসে শ্রেয়া।প্রয়োজনীয় সবজি নিয়ে বাসায় আসে।রান্না করতে হবে এখন তার।একা একা খেতে বসাটাও যেনো আরেক অলসতা।এতদিন পাঁচজনের রান্না করতো।আজ সে একার রান্না করবে।কিন্তু মন তার ওই শশুর বাড়িতে আছে।মনে মনে ভাবছে ওরা এখন অনেক কষ্টে আছে।সবথেকে বেশি অসুবিধা রুবিনার।তিনি না খেয়ে থাকতে পারে না আর বাইরের খাবার তো মোটে খায় না।রনির মুখটা যখন কল্পনা করে তখন খুব কান্না পেলো শ্রেয়ার।হাজার হোক দেড় বছর সংসার করেছিলো শ্রেয়া।
চলবে…?