তোমাকে_চাই_নিরবধি (৭ লেখনীতেঃ #সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

0
132

#তোমাকে_চাই_নিরবধি (৭
লেখনীতেঃ #সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী
Story Link-গল্পের লিংক (রিভিউ+আলোচনা)💓

নিরব নিরবচ্ছিন্ন একটি দুপুর! দোতলা’র কক্ষ থেকে কাঠের জানালার গ্রিল ধরে উদাসীন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে, কুহেলিকা। খোলা জানালা থেকে মৃদু মৃদু দক্ষিণা হাওয়া এসে ছুঁয়ে দিচ্ছে তার মায়াবী মুখটা’কে। স্নিগ্ধ মুখটায় আজ একবিন্দুও উচ্ছাস কিংবা হাসি নেই, রয়েছে বেদনার চিহ্ন।
দুপুরে’র স্নান সেড়েছে কিছুক্ষণ হলো। ভেজা লম্বা চুল গুলো তার খোলাই রয়েছে। পিঠ জুড়ে খোলা চুল গুলো বাতাসের তালে তালে চোখেমুখে আঁচড়ে পড়ছে। দুষ্ট কোনো বালকের ন্যায় বারবার ছোট চুল গুলো উত্যক্ত করছে তাকে। তবুও বিরক্ত হচ্ছে না মেয়েটা। এসবের কিছুতেই তার ধ্যান জ্ঞান নেই যেন।

তার দৃষ্টি জমিদার বাড়ির বিশাল গেইটে’র দিকে স্থির। চাতক পাখির মতো একটুখানি আশা নিয়ে অপেক্ষা করছে কারো। দুই চক্ষুদ্বয় খুঁজে চলছে, মনের পুরুষকে। জানে সে এখানে নেই, তবুও অপেক্ষা করছে সে।
আচ্ছা, তার বিয়ে হয়েছে শুনলে কি তাকে উপেক্ষা করে দিবে তার প্রণয়ের প্রিয় মানুষটি, না-কি সবকিছু ভুলে তাকে আগলে নিবে তার বক্ষদ্বয়ে? সে-কি তাকে ছুঁয়ে দিবে ভালোবেসে না-কি অন্য কেউ ছুঁয়েছে ভেবে ছুঁড়ে ফেলে দিবে? আচ্ছা, সে যদি তার প্রণয়কে প্রত্যাখ্যান করে। এমনটা যদি হয়, ছোট ভাইয়ের বউ হয়েছে বলে মেনে নিলো ভাগ্য কে। তাহলে, তার কি হবে? সারাজীবন এই খারাপ লোকটার সাথে কাটাতে হবে? ভাবতেই বুকের বাঁপাশে চিনচিন ব্যাথা অনুভব হলো, তার। চক্ষুদ্বয় হতে গড়িয়ে পড়লো দু’ফোঁটা অশ্রুকণা! এরিমধ্যে দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হলো। ছোট্ট আম্মার কণ্ঠ।

“আম্মাজান! আমরা ভিতরে প্রবেশ করিবো, কি?”

তড়িঘড়ি করে চোখের কার্ণিশে’র অশ্রুবিন্দু হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে অবলীলায় মুছে নিলো, কুহেলিকা। একবার দরজায় দৃষ্টিপাত করলো সে। মৃদু কণ্ঠে শুধালো,

“ভিতরে আসুন ছোট আম্মা। কপাটের খিল খোলাই রয়েছে।”

অনুমতি পেয়ে ততক্ষণাৎ কাঠের কপাট ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করলো, আয়শা খাতুন। তার পিছনে পিছনে, সালমা বেগম, কিরণমালা, বিন্দু, তরিকুল। কুহেলিকা নত মাথায় সেখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। বড় আম্মা, ছোট্ট আম্মা দু’জনই এগিয়ে আসলো তার অতি নিকটে। দু’জনের হাতেই রয়েছে ভারী ভারী অলংকার ও দামী কিছু শাড়ী। পরমুহূর্তেই মেয়েটার মলিন মুখ পর্যবেক্ষণ করে আয়শা খাতুন তার মাথায় একখানা হাত রেখে কোমল কণ্ঠে শুধালো,

“আপনার কি হইয়াছে, আম্মাজান? মুখখানা এতো বেজার করিয়া রাখিয়াছেন কেন? মন খারাপ?”

কুহেলিকা’র মনের ব্যথা প্রকাশ করার সাহস হলো না। কিই বা বলবে সে? তাদের এক পুত্রবধূ হয়ে মন খারাপ অন্য পুত্রের জন্য। এই ব্যাপারটা কতটা বি’শ্রী! উনারা নিশ্চয়ই পুত্রবধূর মুখে এমন কথা মেনে নিবেন না। তুলকালাম ঘটিয়ে ফেলবে। লোক জানাজানি হবে। এতে ঝামেলা বাড়বে বৈকি কমবে না। তাছাড়া সময় এসে এমনিতেই জানান দিবে। সবটা বিবেচনা করে কুহেলিকা ততক্ষণাৎ মাথা ঝাঁকিয়ে জানান দিলো, “তার মন খারাপ না।”

“তাহলে, একটুখানি হাসেন তো দেখি আম্মাজান! নতুন বধূ’র এইরকম বেজার মুখ কি ভালো লাগে?”

কুহেলিকা কিচ্ছুটি বললো না। মলিন মুখে একটুখানি হাসার বৃথা চেষ্টা করলো। বড় আম্মা তাকে আরো একবার আগাগোড়া পর্যবেক্ষণ করলো। পড়নে তার আটপৌরে একখানা শাড়ী। শরীরে সাজসজ্জার কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করেনি মেয়েটা। জমিদার বাড়ির বউ’কে কি এতো সাদামাটা মানায়! তাদের পোশাক-আশাকে থাকবে আভিজাত্যের ছাপ, সারা অঙ্গে থাকবে অলংকার। সেখানে মেয়েটা একদম সাদামাটা হয়ে আছে। তাদের জন্য ইহা বড়ই লজ্জা জনক।
পরমুহূর্তেই, তার একখানা হাত ধরে পালঙ্কে’র কাছে নিয়ে গেলো বড় আম্মা। তাকে ঘিরে চারপাশে বসলো ভাই-বোন ও বড় আম্মা, ছোট আম্মা। সবার মাঝে বসেও বারবার দরজার দিকে চোখ বুলাচ্ছে, কুহেলিকা। তার নয়ন জোড়া নিজ আম্মা জানকে খুঁজে চলছে। গতকাল থেকে এই মানুষটা একটিবারের জন্যও তার কাছে আসেনি কিংবা একটিবার কুহেলিকা’র খোঁজ করেনি। আজও সবাই আসলো তার কাছে অথচ তার আম্মাজান একটিবারের জন্য আসলো না এখানে। মায়ের প্রতি অভিমান গাঢ় হলো মেয়েটার। সেও আম্মাজানকে আর খুঁজবে না, একদম কথাও বলবে না! ততক্ষণাৎ চাপা অভিমান নিয়ে ষোড়শী বালিকা চোখ ঘুরিয়ে দৃষ্টি স্থির করলো মেজেতে।

এরিমধ্যে বড় আম্মা নিজের হাতের গহনা’র বক্স গুলো কুহেলিকা’র হাতে তুলে দিয়ে বললো,

“এই গয়না গুলো আগে থেকেই আমাদের অনাগত পুত্রবধূদের জন্য তৈরী করিয়া রাখিয়াছি আমরা। এখন তুমি যেহেতু আমাদের ছোট বধূ, আজ থেকে এগুলো তোমার।তুমি এগুলো যেমন ইচ্ছে ব্যবহার করিবে, বুঝিয়াছো আম্মা? সবসময় অলংকার পরিধান করিয়া থাকিবে। জমিদার বাড়ির বধূূদের এই নিয়ম পালন করিতে হয়। আমরাও করিয়াছি।”

পাশ থেকে ছোট আম্মা তার হাতে একজোড়া স্বর্ণে’র মোটা বালা পড়িয়ে দিয়ে বললেন,

“হাত একদম খালি রাখিবে না,আম্মা। এই বালা খুলিবে না কখনো। বিবাহিত মেয়েরা হাত খালি রাখিলে স্বামীর অমঙ্গল হয়। তাছাড়া, বালা বিবাহিত মেয়েদের বিবাহের চিহ্ন!”

কুহেলিকা’র কান্না পেলো। যে মানুষটাকে একদম সহ্য হচ্ছে না, আজ তার মঙ্গল অমঙ্গলের কথা ভাবতে হচ্ছে তাকে। যদিও বালা পরিধানের সাথে স্বামী’র মঙ্গল অমঙ্গলের জোড়ালো কোনো ভিত্তি নেই। এটা শুধুমাত্র একটা কুসংস্কার। তবুও আগেরকার মানুষজন এগুলো বড় মান্য করিয়া আসিয়াছে। কুহেলিকা নিজের হাতের দিকে এক পলক তাকালো। সোনার বালা দু’টো তার ফর্সা হাতে চিকচিক করছে।

তান্মধ্যে বিন্দু বুবু’র দু’হাতে টুকুস টুকুস দু’টো চুমু খেয়ে উচ্ছাসিত কণ্ঠে শুধালো,

” বুবু! তোমার হাতে এগুলো বড় ভালো লাগছে। এগুলো খুলো না কখনো। দেখো, ফারহান ভাই দেখিলেও বড্ড খুশী হইবে।”

বিন্দু কথাগুলো বলেই খিলখিল করে হাসলো। ওর কথা শুনে একসাথে বাকিরাও হেসে উঠলো। কুহেলিকা সবার সামনে বড় লজ্জা পেলো।
একটুখানি বাচ্চা মেয়ে সে কিনা পাকা পাকা কথা বলছে। ফারহান ভাই খুশী হইবে মানে! পরমুহূর্তেই কুহেলিকা বোনের দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে শক্ত কণ্ঠে শুধালো,

“একদম থা’প্প’ড়ি’য়ে দাঁত ফেলে দিবো, বেয়াদব মেয়ে! যা এখান থেকে।”

বিন্দুর হাসি-হাসি মুখ চুপসে গেলো। সে-কি কোনো ভুল কথা বলিয়াছে? হঠাৎ বুবুর এতো রাগের কারণ খুঁজে পেলো না, সে। নিজেকে শুদ্ধ করতে মন খারাপ করে বড়আম্মা’র উদ্দেশ্য করে শুধালো,

“বড়আম্মা তুমি বলো, এগুলো বুবু’র হাতে ভালো লাগছে না? দেখলে, বুবু শুধু শুধু আমার সাথে রাগ দেখালো।”

বড়আম্মা বিন্দুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তার সাথে তাল মিলিয়ে বললো,

“হ্যাঁ’রে! বিন্দু ঠিক বলেছে, খুব ভালো লাগছে। আমাদের পুত্র’তো আজ তোমার হাতে হারাবো,কুহেলিকা।”

নিজ কথা শেষে নিজেই হাসলো, বড়আম্মা। তার সাথে ঠোঁট টিপে হাসলো বড়রা। কুহেলিকা লজ্জায় মাথা নুয়ে ফেললো। যা দেখে আরো একদফা হাসলো সবাই।
শুধুমাএ ছোট্ট তরিকুল বিস্মিত চোখে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। এসব কথা তার বোধগম্য হলো না। হাসির মতো ঠাট্টার কোনো কারণও সে কিছু খুঁজে পেলো না।

পরমুহূর্তে ছোট আম্মা কিছু দামী শাড়ী এগিয়ে দিয়ে বললো,

“হয়েছে গো মেয়ে, আর লজ্জা পেতে হবে না! পড়নের শাড়ীটা পাল্টে এর থেকে একটা লাল শাড়ী পরিয়া আসো তো,আম্মাজান! এভাবে নতুন বউ বউ লাগছে না তো, তোমাকে।”

কুহেলিকা আর দেরী করলো না। বড়দের মাঝে বসে তীব্র অস্বস্তি কাটাতে দ্রুত একখানা শাড়ী নিয়ে হাম্মাম খানায় ঢুকে পড়লো।
.
.
জমিদার বাড়ির কর্তারা বাহির থেকে শুকনো মুখে মাএই মহলে প্রবেশ করলো। তাদের উপর দিয়ে বড় ঝড় বয়ে যাচ্ছে, চিন্তায় চোখমুখ শুকিয়ে একাকার। আলতাফে’র খু’নী’র কোনো হদীস পাওয়া গেলে না। তাকে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে আজ। সেখান থেকেই মাএ ফিরেছে তারা।

জমিদার শাহজালাল একটু বেশিই চিন্তিত! তাদের বিশাল জমিদারি কেউ ছিনিয়ে নিতে চাইছে, না তো?
কেউ যে খুব গোপনে তাদের উপর বড় কোনো ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে আলতাফ খু ন হওয়ার সাথে সাথে তা আরো স্পষ্ট হলো। কিন্তু, খু’নী কে? হিসাবে মেলে না। নিজ কক্ষে আরামকেদারায় বসে চোখ বন্ধ করে সূক্ষ্ম ভাবে চিন্তা করছে সে। এরিমধ্যে জমিদারে’র বড় গিন্নি এসে কোমল কণ্ঠে শুধালো,

“ভোজন কক্ষে আসুন। আব্বাজান অপেক্ষা করছে আপনার।”

দুপরে এখনো খায়নি কেউ। চিন্তায় খাওয়াতেও রুচি আসছে না তার। তবুও উঠে দাঁড়ালো সে। আব্বাজান’কে অমান্য করার সাহস হলো না। জমিদার শাহজালাল আসতেই পুরুষেরা সবাই নিজ খাওয়ায় মনোযোগী হলো। শাহজালাল নিজের প্লেটের খাবার নাড়াচাড়া করছে, কেবল। আশেপাশে চাইলো বার কয়েক। তাদের এতো বড় বিপদ অথচ ফারহান’কে একটিবার কোথাও দেখা গেলো না। কোথায় ছেলেটা? পরক্ষণেই গম্ভীর হয়ে ছোট গিন্নি’কে উদ্দেশ্য করে শুধালো,

“তোমার পুত্র কোথায়? তাকে দেখছি না যে!”

কেঁপে উঠলো আয়শা খাতুন। এতক্ষণ টেবিলের এক কোণায় দাঁড়িয়ে ছিলো সে। স্বামী’র প্রশ্নে আরো জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়ালো। এই লোকটা’কে সে অকারণেই অনকটা ভয় পায়। তাছাড়া, ফারহান কোথায় গিয়েছে সে জানে না। এরিমধ্যে পিছন থেকে ফারহান বললো,

“আমি এখানে, আব্বাজান! কেনো খোঁজ করিয়াছেন। কোনো দরকার?”

ভোজন কক্ষে’র সবাই দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো, সদর দরজায়। ফারহান মল্লিক মাত্রই ফিরছে মহলে। নিজের বিশ্বস্ত লোকদের নিকট সীমন্ত’কে শহরে পাঠানোর সব ব্যাবস্হা করে এসেছে আজ। বিকেলে তারা নিয়ে যাবে, সীমন্ত’কে।
ফারহান দাম্ভিক রুপেই বড়বড় পা ফেলে ভিতরে প্রবেশ করলো। পাশের আরাম কেদারায় বসে ছিলেন, দাদিজান। নাতিকে দেখেই উনি মুখ বাঁকিয়ে বললো,

“আসছে, নবাব!”

তার কথা কারো বোধগম্য হলো না। উনি ততক্ষণাৎ সুড়সুড় করে নিজের কক্ষে চলে গেলেন।
ছেলেকে দেখেই শাহজালাল প্রশ্ন করলেন,

“কোথায় থাকো, তুমি? কোথায় ছিলে সারাদিন।”

ফারহান দাদাজানের মুখের দিকে তাকালো একবার। তান্মধ্যে দাদাজান বলে উঠলেন,

“দরকারী কার্যে আমি তাকে পাশের গ্রামে পাঠিয়ে ছিলাম, পুত্র। তুমি অহেতুক প্রশ্ন করো না। নিজের খাওয়ায় মনোযোগী হও। খাবার সময় এতো কথা আমার পছন্দ নয়!”

কথা বাড়ালো না আর শাহজালাল। নিজের প্লেটের দিকে মনোযোগী হলো। দাদাজান আকবর পুনরায় ফারহান’কে বললেন,

“তুমি ক্ষুধার্ত! সারাদিন কিছু খাওনি বোধহয়। আসো আমাদের সাথেই বসে পড়ো। বউমা দাদাভাই’কে খাবার দেও।”

ফারহান বিনা বাক্যে বসে পড়লো নিজের নিদিষ্ট আরাম কেদারায়। তারও ভীষণ খিদে পেয়েছে। রেণু বেগম এগিয়ে আসলেন। ফারহান’কে খাবার বেড়ে দিলেন। এরিমধ্যে ফারহান চাপা কণ্ঠে একবার শুধালো,

“কুহেলিকা খেয়েছে, চাচিজান।”

রেণু তাকে আশ্বাস দিয়ে বললো,

“তার খাবার কক্ষে পাঠাইয়াছি, আব্বা। তুমি খেয়ে নেও।”

ফারহান আর কিচ্ছুটি বললো না। সবাই যে যার মতো খাচ্ছে। যদিও একবার জাবেদ মল্লিক সীমান্ত কোথায়, জানতে চেয়েছিলেন। তাকে থামিয়ে দিয়েছেন তার পিতা। মিথ্যা করে বলছেন, বাণিজ্য কাজে শহরে গিয়েছে সীমান্ত নানুভাই। কিছুদিন থাকবে সেখানে।

শাহজালাল ও জাবেদ নিজেদের খাবার শেষ করে উঠে দাঁড়ালেন। দাদাজান ও ফারহানের খাবার শেষ হয়নি। তারা আরাম করে খাচ্ছেন।
এরিমধ্যে, সদর দরজায় কয়েকখানা ঘোড়া’র গাড়ি থামলো। বিরাট শোরগোল শোনা গেলো।

চলবে……..

[কেমন হয়েছে আজকের পর্ব? সবাই রেসপন্স করবেন। ভুলত্রুরি ধরিয়ে দিবার অনুরোধ রইলো। ]

#কালেক্ট_গল্প_কথা
Story Link-গল্পের লিংক (রিভিউ+আলোচনা)💓https://facebook.com/groups/329590663119170/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here