ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (১৭)

0
234

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(১৭)
চিন্তায় চিন্তায় জ্বর চলে এলো লাবিবার । এখন সে শয্যাশায়ী। যে পড়া লেখার জন্য এতোকিছু সেই পড়ালেখা কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? গ্ৰামার বইয়ে তুলে দিলে সেটা মুখস্থ করার আগে মনে পড়বেনা লাবিবা যে একজন ছাত্রী। জীবন এখন তানভীর ময়। এই আছে! এই নেই! ধরতে গিয়ে উড়িয়ে দেই অবস্থা। সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছে সে প্রচুর। ভাঙা গলায় সাবিনাকে ডাকলো, ” আম্মু?”

সাবিনা ডাক শুনে রুমে এলো । মেয়েকে চিত হয়ে পড়ে থাকতে দেখে অস্থির হলো।
” কি হয়েছে? লাবিবা?”

” ফোনটা চার্জে। একটু দাও না। ”

সাবিনা ফোন এনে হাতে দিলো। সন্দেহ বশত হাত চেপে ধরলো। ছেড়ে দিয়েই কপালে হাত রাখলো। ঘাড়েও রাখলো। চিন্তিত হলো।
” গা দেখছি একটু গরম! মাথা ব্যথা করছে? শরীর কেমন লাগছে? ”

” এনার্জি পাচ্ছি না আম্মু।”

“সারাদিন খেয়েছিস কিছু? কোথায় কোথায় ঘুরলি? ”

লাবিবা উত্তর দিলো না। সারাদিন খেলো আর কই ! খাওয়া দাওয়া সব চান্দে উঠিয়ে দিয়েছে তানভীর। পেটুক লাবিবা এখন অনীহায় ভুগছে। রেস্টুরেন্ট তো তখনি ছেড়েছে। দূরত্ব বাড়িয়েছে তানভীরের থেকেও। কিন্তু বাসায় ফেরেনি। শীতের আগের ঠান্ডা বাতাসে গা ভাসিয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছে নদীর পাড়ে বসে একাকী। কেউ দেখেনি কেউ জানেনি। সেজন্যই বোধহয় গা টা এমন লাগছে। লাবিবা তানভীরের নাম্বারে একটা মেসেজ পাঠায়।
” আমার ধারণা আপনি আজীবন ব্যাচেলর লাইফ লিড করতে চাইছেন। ঠিক আপনার ভাইয়ের মতো। সেজন্যই আপনার পাপা আপনাদের উপর বিরক্ত। কথাটা কতটুকু সত্যি? উত্তর জানাবেন। কারণ এই উত্তরটুকুই আমাকে পথ দেখাবে। ”

সেন্ড করে দিয়েই ফোনটা বালিশের পাশে রাখে। বুক অব্দি কম্বল টেনে চোখ বন্ধ করে। এভাবে কতক্ষণ সময় পার হয় জানা নেই। হটাৎ ই কপালে ঠান্ডা অনুভুত হওয়ার চোখ মেলে। কপালে জলপট্টি। সাবিনা মেয়ের পাশে বসে কপালে জলপট্টি দিচ্ছে। লাবিবা বিরক্ত হয়। সরিয়ে দিয়ে উল্টো ঘুরে শোয়। সাবিনা চেতে উঠতেই বলে, ” আম্মু প্লিজ! কিচ্ছু হয়নি আমার। দিতে হবেনা জলপট্টি।”

” আরে শরীরটা গরম লাগছে। একটু পরেই দেখবি ধুমিয়ে জ্বর চলে আসছে। আয় জলপট্টি দিয়ে দেই।”

“লাগবেনা।”

” লাগবেনা আবার কি? জ্বর কমবে কিভাবে তাহলে?”

” একটা কাজ করো তাহলেই জর কমে যাবে।”

” কি কাজ?”

” তোমার বেয়াইয়ের নাম্বারটা আমার ফোনে তুলে কল দাও। আর বলো, আমার জ্বর আসছে। বাকিটা উনিই করবে।”

” আরে উনারা অস্থির হয়ে পরবে এটা শুনলে। কত ভালোবাসে তোকে। দেখলাম তো। একদম কাছ ছাড়া করছিলো না।”

” হোক একটু অস্থির। আমিতো চাই অস্থির হোক। তোমরা একাই কেন হবে?মেয়ে বিয়ে দিয়েছো এখন শ্বশুড়বাড়ির লোকজনও অস্থির হোক। ”

সাবিনা আর মেয়ের সাথে পেরে উঠেনা। কিছুতো একটা হয়েছেই। জামাইয়ের সাথে দেখা করতে গেলো ফিরে এসেই মেজাজ খারাপ করছে। ঝগড়া হলো নাকি? সাবিনা বেয়াইকে ফোন দেবার আগে লাবিবাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলো। একটু চিন্তিতও হলো। জানতে চাইলো,
” জামাইকেও কি ফোন দিয়ে_ ”

” খবরদার। ”

কথা শেষ করার আগেই নিষেধ বার্তা। রাগে ফুঁসছে লাবিবা। সাবিনা আলগোছে উঠে যায়। বেয়াইকে তৎক্ষণাৎ কল দিয়ে লাবিবার ব্যপারটা জানায়।

তানভীর বেশ ক্লান্ত। বাসায় ফিরেই ফ্রেস হয়ে রেস্ট নিলো। ডিনার সেরে এসে ঘুমানো যাবে এবার। ডাইনিং এ গিয়ে ফুল ফ্যামিলিকে একসাথে পেলো ‌। মামাতো বোন প্রমিও আছে। ফিরোজ খান ছেলেকে একবার দেখে খাওয়া শুরু করলো। খাবারের পর কথাটা বলবে মনঃস্থির করলো। অযথা খাবারটা নষ্ট করতে চাইলো না। যথা সময়ে খাবার শেষ হতেই মুখ খুললো। হাসিমুখে জিজ্ঞেস করলো,
” দিনকাল কেমন যাচ্ছে তানভীর?”

” ভালো পাপা। ”

” আমি তোমার উপর গর্বিত। ”

” কি নিয়ে পাপা?”

” এইযে তুমি আমাকে এতোবড় একটা গিফট দিলে।আমি স্বীকার করছি। শত খোঁজেও নিজের জন্য এরকম একটা পুত্রবধূ আনতে পারতাম না।”

তানভীর মৃদু হাসে। লাস্ট খাবারটা মুখে তুলে বলে,
” তুমি আবার এই টপিক নিয়ে পরলে পাপা!”

” পড়তে বাধ্য হলাম। তোমার কথাই ঠিক। অবশ্যই আমার পুত্রবধূ ধৈর্য্যশীল এবং বোঝদার। নয়তো তোমার সাথে মনোমালিন্য হবার পর জ্বর বাঁধিয়ে ফেলেও একটা টু শব্দ করলো না! ”

” জ্বর কিভাবে বাধালো?”

” সারাদিন তো তোমার সাথেই ছিলো আমি কিভাবে বলবো! ছিহ বাবা! আমি তোমার মমকে কখনোই উনিশ ছেড়ে বিশ করতে দিই না অসুস্থ হয়ে কষ্ট পাবে বলে! আর তোমার বিয়ের কদিন যেতে না যেতেই এই অবস্থা! সোহানা! তোমার ছেলে আমার পুত্রবধূ কে কতটুকু ভালো রেখেছে সে আমার দেখার বিষয়! ”

তানভীর ততোক্ষনে উঠে গেছে। টিস্যুতে হাত মুছে ঝড়ের বেগে বেডরুম থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে ফিরে এসে সদর দরজার দিকে লম্বা পা ফেলে। তামিম ডেকে উঠে, ” তানভীর! কোথায় যাচ্ছিস এভাবে?”

ব্যস্ত পায়েই ছোট্ট করে উত্তর দেয়,
” আসছি। ”

ছেলের গতি দেখে ফিরোজ মৃদু হাসে। একটা ছেলে অন্তত সংসারী হোক। এতেই শান্তি পাবে।

ঘুম থেকে উঠেই লাবিবা চমকালো। সাবিনাকে বের করে দিয়ে একটু ঘুমিয়েছিল। সেই ঘুম আবার সাবিনার ডাকেই ভাঙলো। জামাই এসেছে অথচ মেয়ে পড়ে পড়ে ঘুমোবে এটা কেমন কথা! বেডের পাশেই মোড়াতে বসে স্বয়ং তানভীর। লাবিবার দিকে কঠিন মুখ করে বসে আছে। লাবিবাও তানভীরের দৃষ্টিতে দৃষ্টি ফেলে। বিরবিরিয়ে উচ্চারণ করে,
” স্যার!”

” বাহ! এই টুকুতেই এই অবস্থা!”

তানভীর তাচ্ছিল্য সুরে হাসলো। লাবিবার রাগ হলো। গাল ফুলালো। কম্বল সরিয়ে উঠে বসলো। অভিমানে অন্যপাশে মুখ ঘুরিয়ে বললো,
” আপনিই কেন?”

” দেখতে এলাম কত ডিগ্ৰি জ্বর হয়েছে। দেখি এদিকে আসো।”

” আমি ঠিক আছি। ”

” সেটাতো দেখেই বুঝতে পারছি। তুমি ঠিক আছো। কিন্তু তোমাকে দেখতে এসে আমি অসুস্থ বোধ করছি। যাওতো আম্মুকে বলো আমার জন্য স্ট্রং কফি করে দিতে। মাথাটা খুব ধরেছে।”

ক্লান্ত মুখ দেখে লাবিবাও বুঝলো মাথা ধরেছে। কম্বলের নিচ থেকে না উঠে রুম থেকেই গলা বাড়িয়ে ডাকলো,
” আম্মু একটা স্ট্রং কফি করে দাওতো।‌”

কিচেন থেকে সাবিনাও চেঁচিয়ে বললো,
” কফি না ভাত খেয়ে যা। রাত অনেক হলো। ”

” তোমার জামাইয়ের জন্য।”

বলেই লাবিবা তানভীরের দিকে তাকালো। চোখে চোখ পড়তেই মাথা নুইয়ে ফেললো। একটুখানি যেন লজ্জাই পেলো। তখনই হন্তদন্ত হয়ে সাবিনা ঘরে এলো। জামাই ঘরে তাই এতোক্ষণ এ ঘরে পা রাখেনি। এবার আর না এসে পারলো না। তানভীর কে জিজ্ঞেস করলো,
” কফি কেন বাবা? ভাত খেয়ে যাও। আমি খাবার গরম করছি তোমার জন্য। ”

” আমি খেয়ে এসেছি আম্মু। আপনি কষ্ট করবেনা না খামখা। একটা কফি হলেই চলবে।”

” আচ্ছা দিচ্ছি। লাবি মা উঠে আয়। খেয়ে যা।”

” আমার ক্ষিধে নেই আম্মু।”

” রাতে না খেয়ে ঘুমায় না মা। খেয়ে যা।”

” উহু খাবো না।”

তানভীর বলে , ” আম্মু। রুমেই দিয়ে যান। আমি খাওয়াচ্ছি ওকে।”

সাবিনা বেরিয়ে যেতেই লাবিবা জেদ ধরে।
” আমি খাবো না। ”

” সারাদিন খাওনি। এখন একটা টু শব্দও করবেনা। চুপ চাপ খেয়ে নিবে। ”

“আপনার কথা শুনবো না।”

“স্যার আমি তোমার ভুলে গেছো?”

“সেটা কলেজে এখানে না।”

” হাজব্যান্ড তোমার।”

” আপনি তো মানেন ই না।”

” কখন বললাম মানি না? এইযে তোমার দেনমোহর শোধ করলাম, তোমার সব কিছুর দায়িত্ব নিলাম, তুমি অসুস্থ শুনে দেখতেও চলে এলাম। না মানলে কি এসব করতাম? হাজব্যান্ড হিসেবে একটা দায়িত্ব আছেনা?”

“আমার দায়িত্ব নেওয়া লাগবে না। আমি একাই ভালো। আমার আব্বু আছে। আপনি কষ্ট করে এসেছেন। দেখা শেষ। ধন্যবাদ। বেশী রাত হয়ে যাবে। বাড়ি চলে যান। ”

“খেয়ে নাও চলে যাচ্ছি।”

” আমার ক্ষিধে মরে গেছে। ”

“খাবার খেয়ে জিন্দা করো।”

“উফফ!”

” উফফ টু। ”

সাবিনা প্লেটে করে লাবিবার খাবারটা দিয়ে গেলো। তানভীরের কফিও দিয়ে গেলো। তানভীর মগে এক চুমুক দিয়ে লাবিবাকে ইশারা করলো।
” তাড়াতাড়ি খাও। পরে আবার আমার যেতে লেট হয়ে যাবে। ”

লাবিবা প্লেটের দিকে তাকিয়ে আছে দেখে তানভীর তাড়া দিলো। লাবিবা অসহায়ত্ব প্রকাশ করলো।
” সত্যিই আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। সারাদিন না খেয়ে ক্ষিধেটা মরে গেছে। ”

” আমার কফি শেষ হওয়ার আগে যেনো প্লেটটা ফাঁকা হয়। তুমি তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ না করলে আমার আবার লেইট হবে।‌ রাতের বেলা! তুমি তো আবার আমাকে নিয়ে ভাবো। আমার ভালো চাও কিনা!”

কথাটা যে ঠেস দিয়ে বললো লাবিবা বেশ বুঝতে পেরেছে। তাই সে এমন তাড়াহুড়ো করে খেলো যে গলায় কয়েকবার আটকে গেলো। ততবার পানি খেয়ে থামতেও হলো। প্রত্যেক লুকমা মুখে তুলার আগে তানভীরকে আড় চোখে দেখলো। তানভীর ইশারা করতেই গপাগপ করে গিললো। লেট না করতে চেয়ে আরও লেট হলো। তানভীর ঠিক ততক্ষনই ধীরে সয়ে কফিটা চালিয়ে গেলো। ঠান্ডা কফি লাস্টে কিছুটা মগে পড়ে রইলো। হাত ধুয়ে লাবিবা মগ সহ প্লেট কিচেনে রেখে এলো। সাবিনাকে নিয়ে যেতে বললেও এলো না। লাবিবাকেই রেখে আসতে হলো। রুমে এসে দেখলো তানভীর গলার পাশে শার্টের বোতাম খুলছে। লাবিবা দেখতে দেখতেই এসে বিছানায় ঠিক আগের জায়গায় বসলো। পায়ের উপর কম্বল টেনে তানভীরকে বললো,
” এখন আপনি যেতে পারেন। ”

তানভীর বড় সড় একটা হামি তুললো। লাবিবা ভ্রু কুচকালো। তানভীর পকেট থেকে ফোন ওয়ালেট বের করে ওয়ার্ডড্রোবের উপরে রাখলো। তারপর লাবিবার দিকে এগিয়ে এলো।
” আজ সারাদিন কি কি করেছি জানো? তোমাকে টাইম দিয়েছি। কলেজে গিয়েছি। বিকালে একটা মিটিং এ এটেন্ড করেছি। তারপর কিছু ফ্রেন্ডসদের সাথে মিট করেছি। বাসায় ফিরে ফ্রেস হয়ে ডিনার সেরে তোমার খবর পেয়ে দৌড়ে এসেছি। এতো এতো কাজের পর আমি এখন বেশ টায়ার্ড ফিল করছি।মনে হয়না এখন ড্রাইভ করে এতোটা রাস্তা যেতে পারবো। আমার রেস্ট প্রয়োজন। আমি দু ঘন্টা ঘুমোবো। দু ঘন্টা পর আমাকে ডেকে দিবে।”

বলেই লাবিবার পাশে শুয়ে পড়লো। লাবিবা চেঁচিয়ে উঠলো।
” মানে কি? তাহলে তো ফিরতে আরও রাত হয়ে যাবে।”

” তোমার কি মনে হয় আমি মেয়ে? চুপ থাকো। তুমি এতোক্ষণ ঘুমিয়েছো এখন আমাকে ঘুমোতে দাও। এখানেই বসে পাহারা দাও। ঠিক দু ঘন্টা পর আমাকে ডেকে দিবে। গুড নাইট।”

” আমি আপনাকে কিছুতেই ঘুমোতে দিবো না। ”

” লাবিবা। আমি সত্যিই টায়ার্ড। প্লিজ লুক এট মি।”

” আমি যতক্ষন আমার প্রশ্নের উত্তর না পাচ্ছি ততোক্ষন আপনার দিকটা কিছুতেই দেখবো না। ”

” ওকে। জাস্ট ওয়ান কোয়াশ্চন।”

” আপনি বিয়েটা কেনো করেছেন আমায়? ”

প্রশ্নটা শুনে তানভীর তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলো না। সরল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো লাবিবার দিকে। চোখ বন্ধ করে আবার খুললো। ধীরে ধীরে বললো,
” আপেলের মত থুতনিটা কামড়ে খেয়ে নিতে মন চেয়েছিল। তাই বিয়ে করেছি। ক্যান আই ট্রাই ওয়ানস?”

তানভীর এক লাফে লাবিবার কাছে চলে এলো। লাবিবার থুতনি পুরোটাই মুখে ভরিয়ে নিয়ে কামড়ে ধরলো। ঘটনা এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যে লাবিবা আত্মরক্ষার সময় পেলো না। তীব্র ব্যথায় গোঙাল!
” স্যারররর!”

তানভীর ছেড়ে দিয়েই মুখোমুখি হলো। ঠোঁটে আঙুল চেপে ধরে শাষালো।
” হিসসসস_____! নো মোর ওয়ার্ডস।”

তানভীর ঘুমিয়ে‌ লাবিবার দিকে মুখ করেই নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছে। লাবিবা পড়েছে বেকায়দায়। মানুষটা তাকে কতভাবে যে শেষ করবে আল্লাহ ই জানে! বিয়ের পর থেকে একটুও শান্তি পাচ্ছেনা। লাবিবার ভোলা ভালা শান্তিপ্রিয় জীবন এখন তানভীর নামক মানুষটা ঘ্রাস করছে। তারপর এই হুট হাট অস্বাভাবিক কর্মকান্ড। লাবিবাকে শেষ করে দিচ্ছে। ভবিষ্যত নেই জেনেও কেনো এভাবে হুট হাট কাছে আসে ? লাবিবা থুতনিতে হাত রাখলো। ইসস! ছুয়া যাচ্ছেনা। জ্বলে উঠছে। লাবিবা ফোনের ক্যামেরায় নিজেকে দেখলো। পাজি লোকটা দাগ বসিয়ে দিয়েছে। এ মুখ এখন লাবিবা কাকে দেখাবে? হায় হায়! কি লজ্জা! এরকম পাগলামি কেউ করে? দু ঘন্টা হতে চললো। লাবিবার ইচ্ছে করছে না ডেকে দিতে। ইসস! কি সুন্দর ঘুমিয়ে আছে! জলজান্ত এতো বড় একটা মানুষ! কেউ মানুক আর না মানুক মানুষটা তার স্বামী! যাকে দেখে মুহূর্তে ই মেয়েরা আকর্ষিত হয়ে পড়বে সেই মানুষ টা লাবিবার স্বামী! নিজের পুরুষ। লাবিবা ভেতরে ভেতরে পুলকিত হয়।
অবাধ্য নজরে চুলের আগা থেকে পায়ের নগ পর্যন্ত আগাগোড়া ভালো করে পর্যবেক্ষন করে। সুপুরুষ! তার সুপুরুষ! হৃদয়ে শিহরণ জুড়ে। সব চেয়ে বেশি টানে সেই পুরুষালী বুক। ডানপাশটায় শার্ট নেমে যেতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। একটা ঘোরের মাঝে চলে যায় লাবিবা। হাত না বাড়িয়ে দেয় পা বাড়িয়ে। স্পর্শ করে তানভীরের খোলা বুক। পুরো পা টাই গলিয়ে দেয় বুকের উপরে। অনুভব করে নিঃশ্বাসের উঠা নামা। লাবিবার পুরো শরীরে শিহরণ জাগিয়ে তুলে। চোখ বন্ধ করে নিজেকে দমাতে লেগে পড়ে। ডেকে দেবে না আর তানভীর কে। যদি উঠে পড়ে তাহলে আটকাবে। অনুরোধ করে বলবে,
” থাকুন। গভীর রাত। ফিরে নাই গেলেন আজ।”

চলবে ___

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here