ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো (৩৩)

0
315

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(৩৩)
” তোর বোন কোথাই? ”
সারারাত নাইট ডিউটি করে ঘুমিয়ে ছিল কবির। সেই ঘুমের তেরোটা বাজায় ফোন। কানে তুলতে না তুলতেই গম্ভীরভাবে প্রশ্ন ছুঁড়ে তানভীর। বন্ধুর এমন কন্ঠে চট করে উঠে বসে কবির। নিজেকে ধাতস্থ করে। জানতে চায়,
” কি হয়েছে? ”

” দেখ তোর বোন কোথায়? এক্ষুনি।”

কবির বিছানা ছাড়ে। বড় বড় পা চালায়। বাসার সামনে আসতেই লাবিবার ক্যাটস দরজার সামনে চোঁখে পড়ে।
” বাসাতেই আছে।”

” দেখে রাখ। আমি আসছি তোর বোনকে নিতে। ”

কবির কিছু বলতে যাবে তার আগেই ঘ্যাট করে ফোন কেটে দেয়। কাহিনী কি? জানার জন্য তানভীর কে উল্টো কল করে। কানে আসে যানবাহনের শব্দ। তানভীর ড্রাইভ করছে বুঝতে পারে। তবুও জিজ্ঞেস করে, ” তানভীর। কি প্রব্লেম? বল। আমি দেখছি ব্যাপারটা। ”

” বউ আমার কাছে ভালোবাসার আর্জি পেশ করেছে। এটা সত্য নয়। সত্যটা হচ্ছে বউ আমার লাইফে পুরোপুরি ভাবে এন্ট্রি নিতে চাইছে। ”

” দেখ বারাবাড়ি কিছু করিস না। ”

” জানিনা। ”

কবির চিন্তিত মুখে লাবিবার রুম টেনে টেনে বের করে নিয়ে আসে। জানতে চায়,
” কি করেছিস তুই? ”

” কিছুই না।”

” কিছুই না তাহলে তানভীর এতো রেগে আছে কেন?”

” জানিনা।”

” মার খাবি বলে দিলাম লাবিবা। কি করেছিস বল। তানভীর যদি এখানে এসে সিনক্রিয়েট করে ব্যপারটা কাকার কানে গেলে বারাবারি পর্যায়ে চলে যাবে। কি করেছিস বল।”

” বারাবারি। ”

” কতটা?”

” বেশি না। একটুখানি। ”

” কেন করিস এসব? তুই কি বুঝিস না?”

” আমি যদি অশান্তির ভেতরে থাকি তাহলে কাউকে শান্তিতে থাকতে দিবো না। ”

” যা ইচ্ছা কর। ভাই ভাই বলে পরে চিল্লাবি না।”

গাড়ির শব্দ পেয়ে লাবিবা রুমে গিয়ে মুখ লুকায়। তানভীরের সামনে যেতে চায় না। বাইরে মা আছে ভাই আছে তারা সামলে নিবে। লাবিবা বাইরে যাবে না। কিন্তু তানভীর এসে মা ভাইকে দেখেও দেখলো না। ডাইরেক্ট দরজায় এসে কড়াঘাত ফেললো। কবির কিছু বলবে বলে কাঁধে হাত রাখলো। তানভীরের কড়া চাহনিতে আওয়াজ বেরোলো না।
” লাবিবা। ওপেন দ্যা ডোর। কাম আউট। ”

দরজায় পর পর কড়াঘাত পড়ে। লাবিবা দরজা খোলার সাহস পাচ্ছে না। সাবিনা এতোক্ষনে জানতে চাইলো,
” কি হয়েছে বাবা?”

” আপনার মেয়ের মতিভ্রম হয়েছে।”
দাঁতে দাঁত চেপে আওড়ানো দেখে সাবিনা আর কথা বললো না। লাবিবা দরজা খুলছেনা দেখে তানভীর সাবিনার দিকে এগিয়ে যায়।
” আম্মু আপনার মেয়েকে দরজা খুলতে বলেন। আমি এমনিতেই ডিস্টার্ব। বেশী রেগে গেলে কি করে বসবো তখন আমাকে বলতে আসবেন না।”

” সেটা তো বুঝেছি বাবা। কিন্তু আমার মেয়েটা করেছে কি সেটা তো জানতে হবে নাকি? তুমি তো বলছো না।”

” ও কিছুই করেনি। করেছেন আপনারা। এমন একটা ছেলের সাথে মেয়েকে মিশতে দিয়েছিলেন যে বিয়ের পরেও আপনার মেয়ে সেই ছেলের মায়া ত্যাগ করতে পারছেনা। ”

” এতো বড় কথা বলো না। কোনো মায়া টায়া নেই। হয়তো ছেলেটাই আমার মেয়ের পিছে পড়ে আছে। আমি ডেকে দিচ্ছি। ভয় পেয়ে আছে। রাগারাগি করোনা।”

সাবিনার ডাক শুনে লাবিবা স্বস্তি পায়। দরজা খুলতেই তানভীর হুড়মুড় করে ডুকে। কব্জি চেপে বাহিরে বের করে আনে।
“চলো ”

“কোথায়?”

” আমি যেখানে নিয়ে যাবো সেখানে। ”

” আমি যাবো না আপনার সাথে। ”

“কথা বাড়াবেনা। চলো বলছি।”

” আম্মু আমি যাবোনা। তুমি কিছু বলছোনা কেন?ভাইয়া?”

কবির বলে, ” তানভীর প্লিজ। বোন আমার।”

” আমার বউ। একটা কথা বলবিনা। ”

সাবিনার দিকে তাকাতেই সাবিনা বলে,
” নিয়ে যাও ওকে।”

লাবিবা চিৎকার দিয়ে উঠে। ছটফট করে হাত ছাড়ানোর জন্য। বাম হাতে কামড় বসাতেই তানভীর ছেড়ে দেয়। কিন্তু লাবিবা সুবিধা করে উঠতে পারে না। এক চান্সেই ঘাড়ে তুলে নেয়।

খান বাড়িতে সবাই ছুটছে তানভীরের পিছু পিছু। বাড়ির পুরুষদের ফোন দেওয়া হয়েছে। ছোট ছেলে রাগের মাথায় বউ তুলে নিয়ে এসেছে। নিশ্চয় বড় সড় কোনো ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে নয়তো তাদের ধৈর্য্যবান ছেলে এমন অধৈর্য্যের পরিচয় দিতো না। লাবিবা ভয়ে কাঁপছে। তানভীরকে বকে ঝকে সোহানা বের করে দিয়েছে রুম থেকে। বর্তমানে লাবিবা শ্বাশুড়ী মা সোহানার বুকে মুখ গুঁজে আছে। তানভীরের রাগের তোপে লাবিবা এখনও কাঁপছে। এতো রাগ মানুষটার আজ নিজের চোখে দেখলো। সোহানা এতো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছে লাবিবা একটারও উত্তর দিচ্ছে না। উত্তর দেবার অবস্থায় লাবিবা নেই। একটু আগে অনেক কথাই সে বলে ফেলেছে। তার আগে পর পর দু গালে দুটো থাপ্পড় খেয়েছে । তানভীর তাকে রুমে এনেই দরজা বন্ধ করে দেয়। রাগের মাথায় লাবিবার দু গালে দুটো থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। টসটসে গালে পাঁচ আঙুলের ছাপ পড়ে যায়। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে লাবিবা।‌ হিজাবের উপর দিয়েই চুলের মুঠি চেপে ধরে শক্ত করে, ব্যথায় লাবিবা চিৎকার করে উঠে। লাবিবার চিৎকারের শব্দে তানভীর আরও রেগে যায়। মুখের উপর মুখ এনে বলে,
” বাপ বেটিতে কি পেয়েছিস কি আমাকে? কি শুরু করেছিস আমার সাথে ? বল? উত্তর দে। আমার কথা কেনো শুনিস না? কখনও কোন বিষয়ে না করেছি তোকে? কোন বাধা এসেছে আমার থেকে? শুধু বলেছিলাম ঐ ফাহাদ্দাইর সাথে যোগাযোগ রাখবি না। ইভেন আমি ছাড়া কোনো বাইরের ছেলেই যেনো তোর কাছাকাছি না আসতে পারে। তাঁদেরকেই জায়গা দিয়ে রেখেছিস তুই। নোংরামো শুরু করেছিস! আমাকে কি তোর চোখে পড়ে না? ”

“চুল ছাড়ুন ব্যথা পাচ্ছি আমি।”

” ব্যথা পাবার জন্যই তো ধরেছি। ব্যথা তোর একারই লাগে? আমার লাগে না? ”

আরো শক্ত করে চেপে ধরতেই চিৎকার করে উঠে লাবিবা। ” আহ খান সাহেব!” চোখ বন্ধ করে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলতেই চুলের গোছা ছেড়ে দেয় তানভীর। কিন্তু উপর থেকে এক বিন্দু সরে দাঁড়ায় না। লাবিবা কাঁদতে কাঁদতেই বলে , ” এতো জেলাসি কেনো আপনার? আমাকে তো ভালোই বাসেন না। ”

” একবার ও বলেছি তোকে ভালোবাসি না? কতটা ভালোবাসি তুই কল্পনাও করতে পারবিনা।যন্ত্রনা কর,ব্যাথা দে, বকা দে গালি দে যা ইচ্ছে কর কিন্তু কোনো পরপুরুষকে জীবনে জড়াতে কেনো যাস? কয়েকটা দিন তোর সহ্য হয়না তাইনা? আর তোর জন্য আমি তিনবছর ধরে অপেক্ষা করে যাচ্ছি।”

” আমি কাউকে জড়াচ্ছি না। শুধু শুধু আমাকে অপবাদ দিবেন না। আমি এতোটা গাধা না। কিন্তু গাধামোটা করে ফেলেছি ভূলবশত। আপনার জন্যই করেছি। না আপনি আমার প্রতি কেয়ার দেখাতেন না আমি আপনার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়তাম। বিয়ের সময় আব্বুর সাথে কি কন্ট্রাক করেছেন তিন বছর দূরে থাকবেন নাকি চার বছর দূরে থাকবেন আমাকে বলেছিলেন সেসব কথা? নাকি আপনি এটা অস্বীকার করবেন আপনার প্রতি আমি আগে থেকেই দূর্বল সেটা আপনার অজানা? আমার অপরাধ কোনটা? আমি সত্যটা মুখের উপর বলি সেটা? কসম করে বলছি আপনার জন্য কেনো আমার আগে থেকে সফট কর্ণার সৃষ্টি হয়েছিলো আমি জানি না। আমার এতে কোন হাত নেই। যখন বিয়েটা হলো তখন আমি এটাকেই আগলে ধরতে চেয়েছিলাম। বাঙালি মেয়েদের দুর্বলতা ঠিক এই জায়গায়। কিন্তু যখন বুঝলাম আমার উপর বিরক্ত হয়ে দূরে সরে গেলেন তখন আমি আমার ভূলটা বুঝতে পারলাম। কিন্তু একটা উত্তর আমি আপনার থেকে চাই । আপনি কেনো আমাকে একা ছাড়েন নি? সব সময় আমার পাশে ছায়া হয়ে থেকেছেন অথচ সামনে আসেন নি। মিথ্যা বলতে চাইবেন না। আপনি একশ হাত দূরে থাকলেও আমি আপনার উপস্থিতি বুঝতে পারি। যদিও সেই উত্তর আমার জানা। আপনি বলবেন দায়িত্ব থেকে এটা করেছেন। শুধু দায়িত্ববোধ থাকলে লোক লাগিয়ে দিতেন নিজে আসতেন না। সেসব যাই হোক। আমি অনেক জালিয়েছি আপনাকে। আপনার সম্মান নষ্ট হয় এমন কাজ করেছি। সব কিছুর জন্য ক্ষমা চাইছি। আপনার আর কোনো প্রব্লেম হোক আমি চাইনা। আপনার কাছে আমি আমার মানসিক শান্তি ভিক্ষা চাইছি। দম বন্ধ লাগে। মরে যাই আমি।প্লিজ মুক্তি দিন আমায়। আপনার কোনো সম্পত্তি আমি নিবো না প্রমিজ আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিন।”

তৃতীয় থাপ্পড় টা এই সময় ঠিক বাম গালে পড়ে। ঠোঁট কেটে রক্ত গড়িয়ে পড়ে। লাবিবা চোখ কুঁচকে শক্ত হাতে দেওয়া ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করে। ডিভোর্সের কথা শুনে তানভীরের মেজাজ সপ্তম আকাশে।
” ডিভোর্স নিয়ে কি করবি তুই? তোর বাপের ঠিক করা ছেলেকে বিয়ে করবি? কান খোলে শোনে রাখ। তোকে ডিভোর্স দিবো না আমি। কোনো মুক্তি নেই তোর। তোর এইসব অবাধ্যপনা ছুটাবো আমি। ”
রক্ত জমা ঠোঁটে তাচ্ছিল্য হাসে লাবিবা ।

” ভালোবাসলে মানুষ ছেচড়া হয়ে যায় তাইনা? ছিহ! কত ছেচড়া আমি!”
চারপাশে তাকিয়ে ড্রীম লাইটের মৃদু লাল আলোয় ভালো ভাবে দেখে ঘরটা ।

” আপনার রুম বুঝি? নাকি গেষ্ট রুমে নিয়ে এসেছেন আমায়? ভাগ্যিস অবাধ্যপনা করেছিলাম! আপনি যে মানুষ! আবাধ্যপনা না করলে আপনার অন্দরমহলে ঢুকার ভাগ্য টাও আমার হতো না। আমার দুর্ভাগ্য! অসময়ে লক্ষ্যে পৌঁছে আমার মন একটুও আনন্দিত না।”

লাবিবার কষ্ট ভরা কন্ঠ ছুঁয়ে দিতে সক্ষম হয় তানভীরকে। ভূল তারও কম নয়। আমরা যখন একটা জিনিস খুব করে চাই তখন প্রতিনিয়ত ছটফট করি। সময়ের সাথে সাথে যখন বুঝে যাই এ আমার হবার নয় তখন না চাইতেও একটা বিতৃষ্ণা চলে আসে কারণ তখন মস্তিষ্ক সেটাই বারবার রিকভার করে। একদিন হুটহাট পেয়ে গেলেও ততোটা তৃপ্তি আসেনা যতটা তার পাওয়ার প্রবল ইচ্ছার সময় পেলে হতো। তানভীর নিজের কথা ভেবে দূরে সরে এসেছে। লাবিবাকেও সময় দিতে চেয়েছে। অথচ এই সিদ্ধান্ত লাবিবার মনে উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে সে কথা মাথায় আসেনি। রাগটা ক্রমশ কমে আসে। কিন্তু তানভীরও ভাঙবে না। কিছুক্ষণ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। যাবার আগে কাঁচের ফুলের জারটা এক লাথিতে ভেঙে যায়। চমকে উঠে ঝরঝর করে কেঁদে দেয় লাবিবা।

দরজার সামনে সোহানা অনেকক্ষন থেকে দরজা ধাক্কাচ্ছিলো। সাউন্ড প্রুফ রুম! ভেতরে কি হচ্ছে তার ধারণা ছিলো না। ছেলেকে এভাবে বেরিয়ে যেতে দেখে তাড়াতাড়ি করে রুমে ঢুকে ফ্লোরে ভাঙা কাঁচের মেলা চোখে পড়ে। লাবিবাকে জড়িয়ে ধরতেই তাঁকে ঝাপটে ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। মাঝে মাঝে কেঁপে কেপেও উঠে। কি হয়েছে? কেনো এতো রাগ? কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না।

রাত করে বাড়ি ফিরে এই ঘটনা শুনে ইসমাইল অস্থির হয়ে যায়। পারে না তখনই খান বাড়িতে আসতে। তানভীরের সাথে যে কথাই থাক এমপি সাহেবের কান অব্দি দেওয়া যাবে না। বেয়াই বাড়ি এতো রাতে ব্যপারটা খুবই খারাপ দেখায়। কিন্তু সেখানে তার মেয়ে আছে। ভালোয় ভালোয় আনলে সেটা অন্য কথা। কিন্তু রাগের মাথায় আনাতে সে একটুও ভরসা পাচ্ছে না। ফোনের উপর ফোন করেই যাচ্ছে। ফিরোজ তাকে আস্বস্ত করে তার মেয়ে ঠিক আছে। তার কাছেই আছে।

জবেদা ঝাড়ু দিচ্ছে মেঝেটা। বড় পানির জার! কাঁচা ফুলগুলো রাখা হয়। সেই জারটা ভেঙে টুকরো টুকরো। খাটের নিচেও ছড়িয়ে গেছে দু একটা। সেগুলো বের করতে মাথা ঢুকিয়ে দিয়েছে জবেদা। মেঝেতে পানি ছড়িয়ে গেছে। জবেদার শাড়ির পাড় ও ভিজে গেছে কিছুটা। লাবিবা কোণায় বসে দেখছিলো চুপচাপ।সে জবেদাকে চাঁপা গলায় ডাকে, ” শোনো। ”
জবেদা হাসি মুখে উত্তর করে,
” জী ভাবী। ”

” তুমি কে?”

” আমি হলাম এই বাড়ির সবার হেল্পিং হ্যান্ড। জবেদা।”

” জবেদা আপা। এটা কার রুম?”

” আপনার আর ছোট ভাইজানের রুম। সুন্দর গোছগাছ করা না? আমিই গুছায়ে রাখি প্রতিদিন। ”

” আচ্ছা। ”

” রুম পরিস্কার করে গেলাম। আপনি বিছানায় গিয়ে বসেন ভাবী। ”

” তুমি যাও। ”

” আচ্ছা। ”

তামিম এসে বেশ বকাঝকা করে তানভীরকে। নিতু ইসলামও হাজির হয়। সোহানাও ছাড় দেয়না। ফিরোজ খান ছেলেকে কোনো প্রশ্ন করে না। তবে উত্তরের আশায় বসে থাকে। যদিও তিনি ভালো করেই জানেন তানভীর উত্তর দিবেনা। দেওয়া উচিতও না। স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সমস্যা নিজেদেরকেই মিটিয়ে নিতে হয়। গার্ডিয়ান অব্দি পৌঁছানোর প্রয়োজন নেই। যত বেশি এটা নিয়ে আলোচনা হবে ততো বেশি ঘেটে ঘ হবে। তিনি কিছু মনে না করলেও বাকিরা খুব রেগে আছে। প্রশ্নের ঝুড়ি থামবেনা বুঝতে পেরে তিনি মুখ খুলেন।
” তানভীর। ঝামেলার সৃষ্টি করেছো গোপনে গোপনে। মিমাংসাও করবে গোপনে গোপনে।”

” জী পাপা।”

” সোহানা বউমাকে খায়িয়েছো?”

” খেতে চায়না। তবুও জোর করাতে একটু খেলো।”

” তানভীর সকালে যেন আমি কোনো ঝামেলা না দেখি। সবাই যাও ঘুমিয়ে পড়ো। ”

নিতু ইসলাম বাগড়া দেয়।
” তানভীর। তুমি লাবিবার কাছে যাবে না। ওর ভয় কমুক তারপর যাবে। এখন যাওয়া ঠিক হবে না।”

” কথা বলে আসি খালামনি।”

” সকালে বলো। তামিমের রুমে গিয়ে ঘুমাও।”

” জরুরী কথা আছে খালামনি। শেষ করে আসি।”

” এখন না যাওয়াই ভালো তানভীর।”

ফিরোজ খান ডাকেন, ” মিতু।”

” জি দুলাভাই।”

” ভয় পাওয়া ভালো। কিন্তু ভয়টা লালন করা ভালো না। ওকে যেতে দাও।”

” জি দুলাভাই।”

” তানভীর যাও বউমার কাছে যাও।”

” জি পাপা। ”

“শোনো । তুমি যা করেছো ঠিক করনি। গায়ে হাত তোলে তো একদমই ঠিক করনি। নেক্সট টাইম যেন আমি এসব না শুনি।”

” জি পাপা।”

” মিউচুয়াল হয়ে যাও। না হলে বোঝাও। না বুঝলে কান ধর ,সরি বলো। পা ধরে ক্ষমা চাও। পা ধরতে লজ্জা করো না। বউয়ের পা ধরে ক্ষমা চাইলে কখনও সম্মান যায়না বরং বাড়ে। কারণ এই কাজটা সবাই করতে পারে না। ”

চলবে___

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here