#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃরিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_১৮
.
🍁
আমার এমন কথায় উনার কোনো ভাবান্তর হল না উনি সামনের দিকে হেঁটে যেতে যেতেই আমাকে উদ্দেশ্য করে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে…….
.
—” মনে আছে তাহলে সেটা তোমার, যে তুমি কারও বিয়ে করা বউ………
.
উনার এমন কথায় আমি মূহুর্তেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পরি রাস্তায়, উনার বলার কথাটা আমাকে অশান্ত করে তুলে মূহুর্তেই, উনি কি বলছেন এই কথাটা, যে আমার মনে নেই কোনো কিছু, আমার আর উনার যতবার দেখার হয়েছে ততবারই উনি আমার সাথে বাজে ব্যবহার করেছে আমার চিন্তা ভাবনায় বাহিরের অত্যাচার করেছেন উনি, তারপর উনি আমারই দোষ দিচ্ছেন এখন, আচ্ছা উনি এই কথাটা মানে কি বুঝালো, আমার এমন চিন্তা ভাবনায় মাঝেই আমি ভাবক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে দৌড়ে আবারও গিয়ে উনার পাশে দাঁড়িয়ে হাটতে হাটতে নাক মুখ ফুলিয়ে বলে উঠি,,,
.
—” কি বলতে চান আপনি, আমাকে কি বুঝাতে চাইছেন আপনি, বিয়ে সম্পর্কে আপনার নিজ মুখে বলা আপনি শুধু আমাকে সারাজীবন কষ্ট দেওয়ার জন্য বিয়ে করেছেন অন্য কিছু নয়, তাহলে আমি কেন মনে রাখতে যাবো বিয়ে নামক কারাগার কথাটা হুমমম,
.
—” আমি তখনও বলেছি এখনো বলছি বিয়েটা শুধু তোমার জন্য একটা সাজা নামক কারাদণ্ড হবে অন্য কিছু না, আর সেই কারাদণ্ডে তোমাকে সর্বোচ্ছ অত্যাচার করতেও পিছু পা হবো না আমি,,,, তবে এতো কিছুর পরও আমাদের বিয়েটার মধ্যে একটা কিন্তুু কিন্তুু ভাব আছে, আর সেটা কি তুমি খুঁজে বেড় করো,, (স্বাভাবিক কন্ঠে)
.
উনার এমন কথায় আমি আবারও নাক মুখ ফুলিয়ে বলে ওঠি…..
—” পারবো না, আমি কোনো কিন্তুু খুঁজে বেড় করতো পারবো না, আমার না আপনাকে চাই না আপনিমূয় বিয়েটা, আর না আপনার অত্যাচার নামক কারাদণ্ডটা, আপনি জড়িত কোনো কিছুই চাই না আমার,,
.
—” তোমার চাওয়া পাওয়া ওপর কোনো কিছুই বিত্তিকর নয়,,
.
উনার এমন কথায় আমিও রেখে শক্ত গলায় বলে ওঠি….
.
—” অবশ্য বিত্তি করে, আর আপনি আমাকে পাচ্ছেন কোথায় অত্যাচার করার জন্য আমি তো আপনার ভাইকে বিয়ে করছি এক মাসের মধ্যেই, সেই আমাকে বাঁচাবে আপনি নামক কারাদণ্ড থেকে,,,,
.
আমার এমন কথায় হঠাৎ উনি থেমে যায়, পরে ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আবারও সামনের দিকে ঘুরে হাটতে হাটতে শান্ত ভাবেই বলে উঠে……
.
—” তাই…. খুব সহজ তাই না…
.
—” হুমম সবটাই সহজ, আর আমি আপনার ভাইকে বিয়েটা করেই ছাড়বো তাও আপনার চোখের সামনেই,,,, (সাহস দেখিয়ে)
.
—” আচ্ছা….. (স্বাভাবিক ভাবেই)
.
আচ্ছা কথা শুনে ভ্রুঁ কুঁচকে এলো আমার উনি এতো সহজেই সবকিছু মেনে নিচ্ছে কোনো রকম রিয়েক্ট করছে কেন, উনিত সহজে কোনো কিছুই মেনে নেই না, তাহলে আমার বিষয়টা কেন মেনে নিচ্ছে, আমাকে কেন এতো সহজেই ছাড় দিচ্ছে,,, আচ্ছা উনার এমন শান্ত ভাবে সবকিছু মেনে নেওয়ার পিছনে বড় কোনো কারণ লুকিয়ে নেই তো পরে আবার আমার মাথায় বড় কোনো বোম ফাটাবে নাতো আল্লাহ,, আমি এমন সব চিন্তা ভাবনায় করেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় উনার দিকে উনার কোনো রকম হেলদোল না দেখে আমি খানিকটা সন্দেহ করে বলে উঠি…..
.
—” আপনি এখন এতটা ভালো সেজে পরে আবার বোম ফাটাবেন নাতো আমার মাথায়….
.
আমার এমন কথায় উনি খানিকটা মজা সুরে বলে উঠে….
.
—” তোমরা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া মানুষ ঝগড়াটে হয় জানতাম, কিন্তুু তোমারা যে বেশি বুঝো সেটা জানা ছিল না, আসলে তোমরা বেশি না বুঝলে ঝগড়াটা হচ্ছে কোথায় থেকে,,,,
.
উনার এমন কথায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলাম আমি, আমরা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া বাসিকে ঝগড়াটে বলছে আর সেটা আমি এমনই এমনই মেনে নিয়ে ছেড়ে দিব নাকি উনাকে, আমরা মোটেও ঝগড়াটে না, অত্যাচার বাসির তো এই রিদ খাঁন কথায় কথায় বাজে কথা শুনাই সাথে খারাপ ব্যাবহারটাও করে,, কথা গুলো ভেবেই আমি খানিকটা রেগে তেজি সুরে বলে উঠি……
.
—” এই একদমই আমাদেরকে ঝগড়াটে বলবেন না । আর আপনাকে কে বলেছে আমরা ঝগড়াটে হুমমম…
,,,,
.
—” কেন লাগে বুঝি… (মজা করে)
.
—” একদমই না, আগে বলুন কে বলেছে আপনাকে যে আমরা ঝগড়াটে,,, (জেদ্দি সুরে)
.
—” তার মানে তুমি মানছো তোমরা ঝগড়াটে,,, (আমাকে ক্ষেপিয়ে)
.
—” একদমই না… (নাহচ করে)
.
আমার এমন নাহুচ সুরের কথা শুনে উনি ভ্রুঁ কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমাকে ক্ষেপাতে বলে উঠে…..
.
—” কিন্তুু টিবিতে তোও বলে উল্টোটা তোমরা নাকি খুব বেশি ঝগড়াটে সবসময় তাই তোও বলে থাকে তোমাদের কথা টিবিতে,,,
.
উনার এমন কথায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলাম আমি কি রকম বাজে টিবি দেখেন উনি, এমন টিবি পাই কই উনি যেখানে আমাদের সম্পর্কে বাজে কথা বলে বেড়ায়, কথা গুলো ভেবেই আমি খানিকটা রাগ নিয়ে উনাকে শাসিয়ে বলে ওঠি……
.
—” তাই তাহলে আজকে থেকে আপনার আর টিবি দেখার দরকারই নেই,,, যেখানে এমন বাজে কথা বলে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে সেটা তো আগেই বাদ,, কোথায় থেকে নিয়েছেন এমন বাজে টিবি যেখানে শুধু ব্রাক্ষ্মবাড়িয়া নিউস দেখাই,, এর থেকে তো আমাদের টিবিটাই ভালো কোনো বাজে নিউস ছড়াই না ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সম্পর্কে হুহহহ,৷
.
—” তাই তাহলে তো তোমাদের টিবি টাই নিতে হবে আমার যৌতুক হিসেবে, বিয়েটা তো করেই নিয়েছি অনেক আগেই এবার যৌতুক হিসেবে তোমার বাবার টিবিটাই নিতে হবে আমার,,, মেয়ে নিব যৌতুক নিব না তাহ কি হয় নাকি….. (মজা করে)
.
আমি আমার ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া বাসিকে নিয়ে চিন্তায় এতো চিন্তায় বিমোহিত ছিলাম যে উনি কি বলেছেন বিষয়টি না বুঝেই আপন মনে উত্তর করে বসি…..
.
—” সেটাই আপনি আমাদের বাড়ির টিবি টাই নিবেন কেমন, ওটাতে সব ভালো ভালো নিউস দেখেই ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে কোনো বাজে কথাও বলে, আর আপনি জানেন কত গুলো চ্যানেল আমাদের টিবিতে…..
.
—” নাতো কত গুলা আসে, আর নাহ বললে জানবো কি করে, সবকিছু তো আপনিই জানেন….
.
—” হুমম জানি তো দাঁড়ান আপনাকেও বলছি আমাদের টিবিতে অনেকককক গুলা চ্যালেন আসে…..
.
—” সেই জন্যই তো তোমার বাবার টিবিটা যৌতুক হিসেবে নিব আমি…..
.
—-” মানে……( বুঝতে পেরে চমকে উঠে)
.
—” কিছু না……. (ঝটপট উত্তর)
.
—” মানে আপনি তো….
.
উনি (রিদ) আমাকে কিছুই বলতে না দিয়ে শক্ত গলায় গম্ভীর মুখে বলে উঠে……
.
—” no More word….
উনার শক্ত গলায় কথা শুনে মূহুর্তে আমি চুপ করে যায়, নিজের মুখে তালা এঁটে উনার সাথে থাল মিলিয়ে সামনের দিকে হাঁটতে থাকি…..
.
.
🍁
শূন্য রাস্তায় ধরে প্রায় এক ঘন্টা যাবত হেঁটে চলছি আমি আর রিদ খাঁন, আশেপাশে না আছে কোনো রকম গাড়ি আর না আছে কোনো মানুষ জন, যেদিকই দৃষ্টি যায় সেইদিকেই শুধু জনশূন্য হয়ে আছে, সবকিছু কেমন নিরব নিস্তব্ধতা ছেড়ে আছে চারদিকে, এমন নিরব নিস্তব্ধতা মাঝে হেঁটে চলছি আমি আর উনি কারও মুখে কোনো কথা নেই আপাতত, উনি চারপাশটা বুঝার চেষ্টা করছে আমি উনার মতিগতি বোঝা চেষ্টা করছি,,, তবে এমন নিস্তব্ধতা মাঝেও পরিবেশটা চোখ জোড়ানো সৌন্দর্য ভরপুর,, আমি উনার সাথে তাল মিলিয়ে হাটতে হাটতে চারপাশের পরিবেশটা ঘুরে ঘুরে সবটা পযবেক্ষন করেই চলছি একমনে, আমার এমন পযবেক্ষন করার মধ্যে দিয়েই খুশিতে গদগদ হইয়া উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠি………
.
—” ইশশশ চারপাশটা কি সুন্দর তাই না….
.
আমার এমন খুশিতে নেচে উঠা দেখেও উনি কোনো কথা না বলে চুপচাপ সামনে দিকে একমনে হেঁটে চলে যেতে লাগলো আমি উনাকে এমন করে হাটতে দেখে গাল ফুলিয়ে উনার পিছন পিছন হাঁটতে থাকি, কিছু দূরে যেতেই আবারও আমি কান্ত হয়ে হাফাতে হাফাতে উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠি,,,
.
—” আমি আর পারছি না হাঁটতে, খুব কান্ত হয়ে পরেছি, কিছু একটা করুন প্লিজ, আপনি না দ্যা রিদ খাঁন….
.
আমার এমন কথায় উনি আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে আবারও সামনে দিকে তাকায় পরে সামনে দিকে তাকাতে তাকাতে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে…..
.
—” তাই, তা ম্যাডাম জন্য কি করতে পারি বলুন, আপনি বললে এই ঘন জংগলের কোনো জংলীর হাতে আপনাকে তুলে দিতে পারি অনাহেষেই, পরে বাজাতে থাকবেন তাদের সাথে ডোল, দুই পাগলে কোম্পানিটা ভালো আসবে….
.
—” ইশশশ আমিও মনে মনে এমনটাই চিন্তা ভাবনায় করছিলাম, তবে সেটা কোনো জংলীর সাথে নাহ আপনার সাথে নিজেকে চিন্তা করছিলাম,,,
.
আমার এমন কথায় উনি কপাল কুচকে আমার দিকে তাকায়, উনাকে এমন করে তাকাতে দেখে আমিও দমে যায়নি উল্টো খানিকটা লজ্জা নিয়ে আস্তে করে বলে ওঠি…….
.
—” হুমমম আপনাকেই নিয়েই চিন্তা করছিলান এতক্ষণ, আসুন আমার এই ঘন জংগলের মধ্যে একটা ঘরে বানিয়ে সেখানে আমি আর আপনি থাকবো, আপনি রোজ আমার কাঁট কেটে বিক্রি করে চাল ডাল দুধ, ফল নিয়ে আসবেন আমি সেইগুলো ভালো করে রান্না করে দিব আপনাকে আর আপনি সেই গুলো বসে বসে আমাকে খাওয়াবে আমার খাওয়া শেষ খয়ে গেলে আপনি সেই গুলো পরিষ্কার করে রাখবেন রান্না ঘরে যেন করে আম্মু রাখে সেইভাবে… পরে আবার আপনি কাঁট কাটতে চলে যাবেন কেমন, ইশশশ আমি তো ভাবতেই পারছি না আমাদের একটা সুন্দর সংসার হবে এই জংগলের মাঝে…..
.
আমাকে এমন কথায় উনি খানিকটা তাকিয়ে থেকে বেঙ্গ করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..
.
—” তা আপনার এমন সুন্দর সংসার এর মধ্যে আমার খাওয়াটা কখনো রুটিনের আছে নাকি, এমনই এমনই না খাইয়ে শুকিয়ে মারার প্ল্যানিং এ করে আছেন আপনি……
.
উনার এমন কথায় আমি উনার দিকে তাকিয়ে থেকে আদুরে সুরের বলে উঠি…..
.
—” আছে তো আপনাকে না খাইয়ে শুকিয়ে মারবো কেন আমি,,,
.
—” অবশেষে আমার খাবার জোটবে তাহলে….. (হাঁটতে হাঁটতে)
.
—” হুমমম, আপনাকে আমি রোজ আনারস আর দুধ দিব খেতে…. (আদুরে সুরের)
.
আমার এমন কথা শুনে উনি মূহুর্তেই দাঁড়িয়ে যায় মাঝ রাস্তা হাটা থামিয়ে দিয়ে, পরে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে…..
.
—” রোজ দিতে হবে নাহ আপনাকে এতো কষ্ট করে আমাকে,, এই খাবার একদিন খেলে পরের দিন সোজা আমাকে ওপরেই পাবে আপনি, আমাকে বললেই হতো খাবার দিবেন নাহ আপনি শুকিয়ে মারা প্লান আছে আপনার…..
গল্পের পেইজ লিংক
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136
.
চলবে………..