#তপ্ত ভালোবাসা
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_০৫
.
🍁
একঘন্টা যাবত ঝিম মেরে বসে আছি আমি,,, আমাকে যে বাঁধা অবস্থা থেকে ছেড়ে দিয়েছে এমন কিছুই না, উল্টো আমাকে এক গাধা মশার কামড় সাথে ছেড়ে দিয়ে গেছে পাগলটা,,, কতটা তার ছেঁড়া পাবলিক হলে একটা মেয়েকে মশার কামড় খাওয়ার জন্য একা রেখে যায় আল্লাহ জানে,,, একটা কোয়েল পযন্ত লাগিয়ে দিয়ে গেল না,, ভাবা যায় কত বড় অপদার্থ ছেলেটা,,, না আমি তো ভাবতেই পারছি না, মাত্র পাঁচ টাকা জন্য আমার সাথে এতটা কিপ্টামি করছে রিদ খাঁন,, মশার কামড় খাওয়াচ্ছেন আমাকে ছেহহ, আমাকে বললেই হতো আমি নাহয় লাল বালতিটা সাথে আরও পাঁচ টাকা বেশি দিয়ে দিতাম,,, তারপরও এতটা কিপ্টামি,,, সাংঘাতিক লোক রিদ খাঁন বাপরে,,,
.
আমি বাঁধা অবস্থা রুমের মধ্যে বসে বসে অনেকটা চঞ্চল দৃষ্টিতে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি,,, মাথাটা যেন স্থির করতেই পারছি না আমি,,, আমার এমন অস্থিরতা কারণ হলো রাস্তা খুঁজছি এখান থেকে পালানোর জন্য,,, কিন্তুু আপাতত আমি সেই কোনো রাস্তায় খুঁজে পাচ্ছি না রুম টিতে,, কারণ রুমটি বিশাল বড় হলেও সেটি এক দরজা বিশিষ্ট,, আর সেটি রিদ খান বাহির থেকে বন্ধ করে রেখে গেছে,,, তাই আপাতত আমার পালানোর রাস্তা বন্ধ,, তাই হতাশ চোখে আহত হচ্ছি বারবার,, এই লোকটাকে যতটা উন্নত ভেবে ছিলাম ততোটাও উন্নত করতে পারেনি, রুম টিতে আরও একটি দরজাই রাখতে পারলো না আমার পালানোর জন্য ছেহহহ ,,, কি আর উন্নতি করবে খারাপ লোকটা,,,
.
আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝে আবারও কেউ খটখট শব্দ করে দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে,,, আমার অস্থির চোখ দুটো মূহুর্তেই ছোট ছোট হয়ে স্থির হয় দরজা দিকে,, কে রুমে প্রবেশ করেছে তা দেখার জন্য ব্যাক্তিটির ছায়ামূর্তিটি অনুসরণ করে ওপরে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ নামক ভয়ানক প্যারাবাসিকে,,, উহুম একা নয় সাথে আরও চার পাঁচ জন প্যারাবাসি রয়েছে পিছনে,, মানে আসিফ, একজন হজুর টাইপ লোক, অন্য জন্য দুজন উকিল টাইপের লোক,,, দেখে তো আমার সেরকমটাই মনে হচ্ছে, যাকগে সাথে আরও একজন বাদুর টাইপ লোকও আছে কালো করে, খুব সম্ভবত নাইজেরিয়াটি বডিগার্ড হবে,, আহা কি সুন্দর কালার, একদম মন জুড়ানো টাইপ যা মনের ভিতরে লেগেছে আমার,,,,
.
আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কালো নাইজেরিয়া বডিগার্ডটিকে পযবেক্ষন করছি বেশ মনোযোগ সহকারে,, আমাকে এমন করে তাকাতে দেখে রিদ খাঁন ও চোখ মুখ হালকা কুঁচকে আমার দৃষ্টি অনুসরণ করে পিছনে তাকায় উনার কালো নাইজেরিয়া বডিগার্ড এর দিকে,,, পরে সেই দৃষ্টি আবারও ঘাড় ঘুরিয়ে আমার ওপর নিক্ষেপ করে,,, আর আমি হা করে তাকিয়ে আছি কালো মানিক এর দিকে,,, যেন এই মূহুর্তের এই কালো মানিক ছাড়া অন্য কিছু চোখে পরছে না আমার,,, তাই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছি আমি,,, আমার এমন তাকানোতে উপস্থিত সবাই আমার দৃষ্টি অনুসরণ করে পিছনে তাকায় কালো নাইজেরিয়া বডিগার্ড এর দিকে,,, থমথমে পরিবেশ সবাই একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে,, কারও মুখে কোনো কথা নেই,, শুধু আমার দিকে তাকিয়ে বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করছে,, কি এমন দেখছি,,
.
কিন্তুু আমার এমন করে তাকানোতে পছন্দ হলো রিদ খাঁনের সে আমার সামনে সোফায় আরাম করে বসে হাতে ইশারায়, আমার স্বাদের কালো মানিককে চলে যেতে বললো,,, ইশারা পেয়ে সাথে সাথে রুম থেকে প্রস্হান করলো বডিগার্ডটি,, সে চলে যেতেই চমকে উঠলাম আমি, কালো মানিক চলে যাচ্ছে বিষয় মেনে নিতে পারলাম না আমি, তাই দ্রততার সঙ্গে বলে উঠি,,,,
.
—“এ্যাঁহ, আমার কালো মানিক….
.
আমার এমন কথায় থমথমে খেয়ে যায় সবাই তা তাদের ফেস দেখেই বুঝতে পারছি আমি,, আমার দিকে কেমন গোল গোল চোখে তাকিয়ে আছে,, আমি তাদের এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে আবারও বাঁধা অবস্থায় দরজা দিকে উঁকি ঝুঁকি মারছি আমার কালো মানিক কে দেখার আশায়,, ব্যাটার কালারের ওপর ক্রাশ খাইছি আমি,,, তাই এমনি এমনি তোহ আর ছেড়ে দেওয়া যাবে না তাই না,,,
.
কারও গম্ভীর কন্ঠ কানে আসতেই মনোযোগ ভস্ম হলো আমার,, আমি পাশ ফিরে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ খাঁনের গম্ভীর ফেস,, উনি সোফায় আয়েশ করে বসে পায়ে ওপর পা তুলে,, হাতের ইশারায় আমার সামনে লোক গুলো কে কিছু একটা ইশারা করে বসতে বলে,,,
.
উনার এমন ইশারা পেয়ে বিনা বাক বয়ে হজুর আর দু’জন উকিল টাইপ লোক আমার সামনে বসে পরে,,, আমি তাদেরকে আমার সামনে বসতে দেখে কোতুহলী চোখে বারবার উঁকি ঝুঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করছি যে ব্যাটা গুলো আসলেই কি করছে,,,
.
উকিল দুটো কিছু পেপারে কিসব লিখা লিখি করছে বেশ মনোযোগ সহকারে,,, তাদের এমন মনোযোগ সহকারে লিখতে দেখে চোখ ছোট ছোট হয়ে আসে মূহুর্তেই,, সাথে সাথে একঝুঁলি প্রশ্নরা ভর করে আমার মাথায়,, আর সেই চিন্তার সাথে সাথে চমকে উঠলাম আমি,,, আল্লাহ এই অপদার্থ ব্যাটা আমার বাবার সম্পত্তির হাতানোর জন্য উকিল এনে এই ব্যবস্হা করেছে আমাকে চেয়ারে সাথে বেঁধে রেখে,, ৷ ব্যাটা আমাকে ভাঙা লাল বালতিও দিবে,,, আবার আমার বাবার সম্পত্তির ও নিবে,, আমাকে এতোটা ঠকাবে,, কতো বড় মাপের গুন্ডা এই রিদ খাঁন ভাবা যায়,, নাহ ভাবা যায় না আমি তোহ ভাবতেই পারছি না,, আমিও দিব না আমার বাবার সম্পত্তির,, আর কেন বা দিব আমাকে একটা কোয়েল পযন্ত লাগিয়ে দেয়নি মশার কামড় থেকে বাঁচা জন্য,,, আর তাঁকে দিব আমার বাবা সম্পত্তি মগেরমুলুক নাকি হুহ্,,,
.
আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝেই একজন উকিল আমার দিকে কিছু পেপার এগিয়ে দিয়ে,, ভয় ভয় কন্ঠে বলে উঠে,,,
.
—” এটাতে সাইন করে দিন ম্যাডাম….
—” করবো না সাইন আমি… (নাহুচ সুরে)
—” প্লিজ ম্যাডাম… (করুন কন্ঠে)
.
উকিল বাবু করুন কন্ঠ শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আমার,,, আজব প্রাণী আমার বাবা সম্পত্তি নিয়ে যাচ্ছে একটা মানুষ জোর করে,,, আর তাকেই আমি বাবার সম্পত্তি এমনি এমনি দিয়ে দিব মগেরমুলুক পেয়েছে সবকিছু ব্যাটা ফাজিল। ঝাঁজালো কন্ঠে বলে উঠি….
—” প্লিজ কি হ্যাঁ,, দিব না আমি আমার বাবা সম্পত্তি,,, যান তো আপনি….
—” বাবার সম্পত্তি…? (ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
.
সব কয়টা পাঁজিলের দল আমাকে বুলিয়ে বালিয়ে আমার বাবা সম্পত্তি হাতড়াতে চাইছেন,,, এখন আবার আমার সামনে এমন একটা ভাব করছেন যেন জীবনে সম্পত্তির শব্দটি শুনেনি,,, আমি উকিল কথা শুনে কপাট রাগ দেখিয়ে বলে উঠি….
.
—” জ্বি বাবার সম্পত্তি,, উনি আমার ভাগে সম্পত্তি হাতড়ানো জন্য আমাকে এখানে বেঁধে রেখেছেন,,, আপনাদের দিয়ে পেপারে সাইন করাচ্ছে আমার বাবার সম্পত্তির জন্য। আপনি জানেন না?
.
আমার এমন কথায় মূহুর্তে সবাই থমথমে খেয়ে বসে আছে,,, পরে ভীতু চোখে পাশ ফিরে তাকায় রিদ খাঁনের দিকে,, উনি তখনো স্বাভাবিক ভাবেই বসে আছে গম্ভীর মুখে,,, আর একহাতে একটা ছোট কাঁচে শিশা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে বেশ মনোযোগ সহকারে,,, সবাই উনাকে এতটা স্বাভাবিক দেখে একটা শুকনো ঢুক গিলে আবারও আমার দিকে তাকায়,,, পরে আমার সামনে বসে থাকা উকিলটি নিজের চুপসে যাওয়া ফেস নিয়ে আমতা আমতা করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,,
.
—” এই গুলা সম্পত্তি পেপার নয়, বিয়ে পেপার ম্যাম….
.
বিয়ে শব্দটি শুনেই কপাল কুচকে এলো আমার,, কিসের বিয়ে, কার বিয়ে, জানার জন্য কপাল কুচকেই আবারও প্রশ্ন করে বসি,,,,৷
.
—” বিয়ে,,! কার বিয়ে…?
.
আমার এমন প্রশ্নে পাশ থেকে আসিফ ঝটপট সুরে বলে উঠে,,,,
.
—-” জ্বি বিয়ে… ভাইয়ের বিয়ে আজ তাই এদের এখানে আনা হয়েছে ম্যাম….
.
কথায় গুলো বলেই আবারও ঝটপট তাড়া দিয়ে উকিল দুটোকে উদ্দেশ্য করে আসিফ নামক অপদার্থটি বলে উঠে…..
.
—” কি হলো আপনারা বসে আছেন কেন.. কাজ শুরু করুন,,, ভাইয়ে সাথে ভাবির বিয়েটা শেষ করুন তাড়াতাড়ি…..
.
ভাবি শব্দটি কানে আসতেই চমকে উঠলাম আমি,, এক পলক রিদ খাঁনকে দেখে সাথে সাথে চোখ তুলে তাকায় আসিফের দিকে। খানিকটা কোতুহল নিয়ে বলে উঠি….
.
—” আপনার ভাই ভাবি বিয়ে করবে বুঝি?
.
আমার এমন কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় আরিফ সহ সবাই। আমার সেদিকে বেশ একটা ভাবান্তর হলো না। আমি আছি আমার চিন্তায়! উনি আমাকে উনার বিয়ে খাওয়া জন্য এ-ই ভাবে ধরে বেঁধে রেখেছেন ভাবা যায়? কিন্তু আমাকে বললেই তো হতো আমি নাহয় সবাইকে নিয়ে চলে আসতাম উনার (রিদ) বিয়েতে। এই ভাবে ধরে বেঁধে আমাকে বিয়ে খাওয়ার জন্য রাখার কোনো মানে আছে আজব।
.
আমার এমন কথা শুনে আরিফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই পাশ থেকে উনি (রিদ) দাঁতে দাঁত চেপে ধরে। শিশাটাকে শক্ত করে চেপে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,
.
—” নো মোর ওয়াট,,,
.
বলেই আবারও উকিল গুলোকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,,
.
—” কাজ শেষ করুন দ্রুত….
.
উনার এমন গম্ভীর টাইপের রাগে কথায় কেঁপে ওঠে উকি বাবু,, ভয়ে সিটিয়ে যাওয়ায় অবস্থায় আমার দিকে ভয় ভয় নজরে তাকিয়ে থেকে কাপা কাপা সুরে বলে উঠে….
.
—” ম্যাম প্লিজ সাইনটা করে দিন….
.
—” সাইনটা করে দিলে, আমার বাবা সম্পত্তি চলে যাবে নাতো উকিল বাবু…..(তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
—-” নাহ ম্যাম… (ভয়ে ভয়ে)
—” সত্যি তো…( ভ্রু কুঁচকে)
—” জ্বি ম্যাম….
.
উকিল বাবু কথা শুনে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেললাম আমি,,, যাক বাবা অবশেষে আমার বাবার সম্পত্তিতে বেঁচে গেল,, এটা ভেবেই আমার মনে শান্তি বয়ে গেল,,, আর সেই শান্তির রেশ ধরে আবারও বলে উঠে….
.
—” আচ্ছা আমাকে কি সাক্ষী জন্য সাইনটা করতে হবে নাকি,,, কিন্তুু আপনার ভাবিকে দেখছি না কেন… আর আমার হাতটা না খুলে দিলে সাইটা করবো কিভাবে… তাই আমাকে খুলে দেওয়া হোক…..
.
আমার কথায় আরিফ এগিয়ে এসে আমার হাতের বাধন খুলে দেয়.. হাতছাড়া পেতেই আমি দুহাত উপরে তুলে কুরমুরিয়ে উঠি.. টানা কই ঘন্টা যাবত আমাকে এখানে বসে রেখেছে আমি নিজেও জানি না, তাই কমড়টা সাথে সাথে শরীরটাও ম্যাজম্যাজ করছে আমার…
.
চেয়ারে বসা অবস্থায় কুড়মুড়ে উড়ছি আমি,, পা দুটি আমার ঝিম ধরায়, চেয়ারে ওপর দুই পা ভাজ করে আরাম করে বসি আমি… আমাকে এমন করতে দেখে সবাই চোখ ছোট ছোট করে করুন ভাবে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে,, আমি তাদের সবার এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে বলে উঠি….
.
—” আমার পা ব্যাথা করছে এখন,, সাথে আমার মুডটাও সুইমিং করছে,,, তাই আমি কিছুক্ষন রেস্ট নিব তারপর, আপনাদের ভাইয়ের বিয়েটা খাব ঠিক আছে,,, আর সাইনটা আমি তখনই করে দিব নে ওকে….
.
বলেই চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বসে পরি আমি.. আমাকে এই ভাবে বসতে দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে রিদ খাঁন,,, নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে ঝাঁজালো কন্ঠে বলে উঠে,,,,
.
—” এমনি এমনি সাইনটা করবা নাকি, গুলি খেয়ে সাইনটা করবে….. আই সয়ার তোমাকে শুট করতে দ্বিতীয় বার ভাববো না আমি… তাই কোনো কথা না বলে,,, জাস্ট ডু ইট… (পেপার দেখিয়ে)
.
উনার এমন ঝাঁজালো কন্ঠে শুনে খানিকটা ভরকে যায় আমি,, উনার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে কলমটা হাতে নিয়ে বিনা বাক বয়ে সাইনটা করে দেয় আমি…. এই লোকের সাথে কথা বলায় বেকার, বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গেছে লোকটা,, বউকে ধরে না এনে অন্য একটা মেয়েকে বেঁধে রেখেছে বিয়ের সাক্ষী বানানো জন্য, বউয়ের সাইন না নিয়ে আমাকে গুলি করে মারার হুমকি দিচ্ছে বদ লোকটা,,, আজব পাবলিক সব-কয়টা হুহহহ,,,,, নিশ্চিত এই লোকের বউটাও পাগলই হবে,,, স্বামী পাগল, বউও পাগল, আর বাচ্চাও হবে পুড়া পাগল… সব কয়টার পাগলের দল,,, কথা গুলো ভাবতেই মনে মধ্যে সুখ নামক পাখিটি লাফাতে থাকে প্রচন্ড গতিতে,,, আমি সেই সুখে কাতর হয়ে ঘাপটি মেরে গালে হাত দিয়ে বসে পরি চেয়ারের,,,
.
আমার সাইন করার সাথে সাথে রিদ খাঁনও সাইনটা করে দেয় দ্রত…. পরে আবারও কিছু ইশারা করতেই হজুর টাইপ লোকটা কিছু পড়তে শুরু করে দেয়,,, আমি উনার হঠাৎ কাজে গোল গোল চোখে তাকায় উনার দিকে বেশ মনোযোগ সহকারে উনার বলা কথা গুলো শুনছি কৌতূহল হয়ে গালে হাত দিয়ে… উনি নিজের মতো করে পড়াটা শেষ করে বলে উঠে…..
.
—” বল মা কবুল….
.
—-” কেন..? (স্বাভাবিক ভাবেই)
—” বিয়ে করার জন্য মা…..
কাজি সাহেবের এমন কথায় মূহুর্তে আকাশ থেকে পরলাম আমি,,, কি বলে এই লোক, এই বয়সে এসে আবারও বিয়ে করতে চাই,, তাও আমাকে আল্লাহ.. ছি ছি কি বাজে লোক উনি,,, বুড়ো বয়সে এসেও বিয়ে করতে চাই,,,, তাই রেগে খানিকটা উচু সুর বলে উঠি…..
—” ছিহ আমি আপনাকে বিয়ে করবো না।
যান তো আপনি। আসছে বুড়ো বয়সে আমাকে বিয়ে করতে।
.
আমার নাহুচ বংগির কথায় কাজি সাহেব ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় মূহুর্তেই। আমার কথায় কি বলবে? কিছুই ভেবে না পেয়ে পাশ ফিরে তাকায় রিদ খাঁনের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে। কাজি সাহেব তাকাতেই রিদ খান দাঁতে দাঁত পিষে কটমট করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,,,
.
—” শাট আপ ইডিয়ট! কোনো কথা নয়। কবুলটা বলে বিয়েটা করো চুপচাপ। বেশি কথা বলাটা আমার পছন্দ নয়…
.
উনার এমন খাপছাড়া কথায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলাম আমি,, এই লোক বলে কি আমাকে একটা বুড়ো লোকের সাথে বিয়ে দিতে চাইছে, আমি সেটা মেনে নিব নাকি… তাই আমিও তেজ দেখিয়ে রেগে উনাকে (রিদ) উদ্দেশ্য করে বলে উঠি…..
.
—” বললেই হলো নাকি,, আমি কিছুতেই বাবার বয়সী লোকটাকে বিয়ে করবো না… আর আপনি শুনুন, (কাজিকে উদ্দেশ্য করে) আমি আপনাকে বিয়ে করবো না,,, আমার আপনার ওপর কোনো ইন্টারেস্ট নেই,,, এবার আপনি আসুন,,,
.
বলেই ঘাপটি মেরে বসে পরলাম চেয়ারে,, থমথমে পরিবেশ দেখে আসিফ ধীর গলায় আস্তে করে বলে উঠে…….
.
—” ভাবী, উনার সাথে আপনার বিয়ে হচ্ছে না। বিয়েটা হচ্ছে ভাইয়ে সাথে… (রিদ খাঁনকে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে)
.
আসিফ এর হাতে ইশারা অনুসরণ করে রিদ খাঁনকে এক পলক দেখে স্বস্হির নিশ্বাস ফেলে বেখেয়ালি ভাবেই গালে হাত দিয়ে বলে উঠি…..
.
—” তাহলে ঠিক আছে,,, বেচে গেলাম বুড়ো স্বামী হাত থেকে,, উনাকে বিয়ে করতে হবে তাই তো… (রিদ খাঁনকে উদ্দেশ্য করে দেখিয়ে)
.
আমার কথায় তুমুল গতিতে মাথা নাড়িয়ে সুমতি জানা আসিফ, যার অর্থ হ্যা তাকেই বিয়ে করতে হবে আমাকে…. প্রথমে কথাটি বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও আরিফ এর মাথা নাড়িয়ে সুমতি জানানোতে সবটা পরিস্কার হয়ে আসে আমার কাছে,, রিদ খাঁনকে বিয়ে করতে হবে ভাবতেই চেয়ার থেকে লাফিয়ে ওঠি আমি,,, আর সাথে সাথে অবিশ্বাস গলায়,চেচিয়ে বলে উঠে…..
.
—-” কিহহহহহহহ,,,,, উনাকে বিয়ে করতে হবে আমায় অসম্ভব….
পেইজের লিংক..
https://www.facebook.com/profile.php?id=100069402592136
চলবে…………..