তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ২৮ .

0
737

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ২৮

.
🍁
খুলা স্থানে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর রিদ খান, আমার দুই চোখে হাজারো প্রশ্নের অজানা উত্তর পাওয়ার দৃঢ় আকাংকা ও প্রতাশা থাকলেও রিদ খানের চোখে তেমন কিছু ছিটা ফোটাও নেই বরং চ উনি এমন একটা ভাব করে দাঁড়িয়ে আছে যেন কিছুই জানে না উনি,, যাহ জানার তা আমার কাছ থেকে নতুন ভাবে জানতে পারবে সবটা, মানে আমি চুর উনি পুলিশ,, যখন আমি খান বাড়ির থেকে উনার গাড়িতে করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম তখনই এই খুলা মাঠে গাড়িটি থামাতে বলি আমি কারণ আমার অনেক কথা জানার আছে রিদ খানের কাছ থেকে, এই মাঠটি আমাদের বাড়ির রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পরে, তাই আমি গাড়িটি থামাতে বললেই উনিও বিনা বাক বয়ে গাড়িটি থামিয়ে দেয় পরে উনি গাড়ি থেকে নেমে আমার সামনে দাঁড়িয়ে পরে কপাল কুচকে তাকিয়ে থেকে,,,, উনার এমন তাকানো মধ্যে দিয়েই হাজারো আশা নিয়ে আমি উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠি…….

.
—” ওগুলো কি ছিল…..

.
আমার এমন প্রশ্নে রিদ খান না জানার ভান করে ভ্রুঁ কুঁচকে বললো….

.
—” কোনটা কি ছিল……

.
—” যেটা আমি দেখেছি…….(স্বাভাবিক কন্ঠে)

.
কর্কশ গলায় বললো…..

.
—” তুমি কোথায় কি দেখছ সেটা তুমি জানো না তো আমি কি করে বলবো…..

.
উনার এমন কর্কশ গলায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে আমি বলি…….
.

—” বাজে কথা বলবেন না একদমই,,,

.
—” বাজে কথা বলা আমার কাজ নয় ওটা তোমার কাজ তাই তুমি জানো সবটা…..

.
আমি উনার এমন হেয়ালি পনা ভাব দেখে করুণ কন্ঠে আহত হয়ে বলি……

.

—” প্লিজ আপনি এমন করছেন কেন আমার সাথে,, প্লিজ বলুন না আপনার গুপ্ত রুমে ওগুলো কি ছিল দেওয়ালে ঝুলানো,,, আর ঐ জিনিস গুলো মধ্যে এতো এতো রক্তের দাগ কিসের ছিল……..

.

আমার কথা গুলো শুনে রিদ খান আমার দিকে কপাল কুচকে তাকিয়ে থেকে বললো……..

.

—” আমার জানা মতো তোমার চোখে কোনো রকম সমস্যা নেই তুমি ভালো করেই দেখছো সবটা আমার গুপ্ত রুমে কি ছিল,, দেখার পরও বুঝে উঠে পারছো কি ছিল ঐগুলো এখন আমাকে প্রশ্ন করছো এতটা উত্তেজিত হয়ে…..

.

উনার কথা গুলো শুনে চমকে উঠে বলি…..

.
—” মানে……

.
দায় সারাভাব নিয়ে বললো…..

.
—” মানেটা খুব সহজ আমি তোমার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নয় রিত….

.
উনার মুখে হঠাৎ করে রিত নামটা শুনে মূহুর্তে চমকে উঠলাম,, এই নামটা যেন আমাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে তুলছে মূহুর্তেই, আমি কাঁপা কাঁপা গলায় তেতলাতে তেতলাতে থেমে থেমে বলি…….

.

—” এই এই নামটা রি রিত আমার খুব….

.
আমার বাকি কথা গুলো শেষ করতে না দিয়ে কথাটা ঘুরানো জন্য উনি কপাট রাগ দেখিয়ে উচ্চ স্বরে বললো…….

—” তুৃমি কি যাবে নাকি আমি চলে যাবো……

.

উনি কি বলছেন কিছুই ডুকছে না আমার মাথায় শুধু আহত হয়ে টলমল চোখে তাকিয়ে রয়েছি উনার দিকে, হ্যা আমি আহত গভীর ভাবে,,, তাই উনাকে আর রাগ না দেখিয়ে টলমলে চোখে কাঁপা কাঁপা গলায় আবারও অনুরোধ সুরে বলি……

.
—” আ আবার ডাকুন এই এই নামটা ধরে…..

.
উনি সম্পূর্ণ বিষয়টি এড়ানো জন্য আমাকে খানিকটা রাগ দেখিয়ে চাপা সুরে বললো…….

.
—” নো মোর ওয়াট চলো……

.
কথা বলেই উনি সামনে দিকে ঘুরে হনহন করে গাড়ি উদ্দেশ্য পা বাড়ায় আর আমি উনার পিছন থেকে সাথে সাথে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে পরি মাটির দিকে তাকিয়ে থেকে কান্না করতে করতে উনাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠি……

.
—” প্লিজ আরও একটা ডাকুন না এই নামটা ধরে…..

.
আমাকে এমন কান্না সিক্ত কন্ঠ শুনে মূহুর্তে উনি থমকে গিয়ে পিছন ফিরে তাকায় দুই হাত মুষ্টি বদ্ধ করে পরে আমার দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে আমার পাশে এসে বসে সুপ্ত কন্ঠে বললো….

.
—” রিত,,, নিয়েছি নামটা হয়েছে শান্তি তোমার ব্যাস এবার যাবে বাড়ি তোমার নয়তো এই খুলা মাঠেই তোমাকে ছেড়ে যেতে দ্বিধা বোধ করবো না……

.

উনার এমন কথায় নিজের দুহাত দিয়ে নিজের মুখটা ডেকে কান্না করতে করতে বলি……

.

—” প্লিজ বলুন আমাকে সবটা, আমি আর পারছিনা কোনো কিছু নিতে……

.
আমার এমন কথায় উনি কিছুক্ষণ স্তব্ধ মেরে বসে থেকে হঠাৎ রহস্য নিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…….

.

—” যা সামনে থেকেও নজরে বাহিরে, যা নজরে থেকেও শুধু খেলাঘর, আর এই খেলাঘরেই তোমার
আপনঘর……..

.
উনার এমন দাদা মূলক কথায় আমি মূহুর্তে চুপ করে নিজের মুখ থেকে হাতটা সরিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে হতবাক হয়ে বলে উঠি……

.
—” মানে……

.
আমার এমন কথায় উনি আবারও স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে……..

.
—” এটা তোমার জন্য এখানে তোমার সব প্রশ্নের অজানা উত্তর লুকিয়ে আছে,, এটা সুলভ করো,, খুঁজো শুরু থেকে কোথায় কি ছুটে গেছে তোমার আর কি রয়েগেছে,,,

.
উনার এমন ঘুরা প্যাচানো কথা আমি গুলিয়ে যাচ্ছি ভিষণ বাজে ভাবে, উনি আমাকে কি বুঝাতে চাইছেন কিছু বুঝতে পারছি না আমি তাই উনাকে আবারও অনুরোধ করে বিনিময় সুরে বলে উঠি……..

.

—” কি বলছেন এসব আমি কিছুই বুঝতে পারছি না,, আমি কিভাবে কি করবো, আপনি আমি কেন খুলে বলছেন না সবটা……
.

—” বুঝতে পারবে তুমি সবটাই, অংক কষে বের করো, তবে আর একটা কথা বুলি,, যতদিন তোমার সব প্রশ্নর উত্তর না পাচ্ছো ততদিন শুরু তুমি শুধু কথা কিনো সবার কাছ থেকে কারও কাছে নিজের কথা গুলো বিক্রি করো না তাহলে বিপদে পরতে পারো, এমনো হতে পারে তুমি সবটা হারাতে পারো মানে তুমি যা চাচ্ছো তার থেকে আরও অনেক বেশি দূরে চলে যেতে পারো,, তাই নিজের কাছেই সব কথা গুলো লুকিয়ে রাখতে হবে কারও কাছে এই বিষয় গুলো শেয়ার করতে পারবে না…….

.

—” তাহলে আমি সবকিছু খুঁজে বের করবো কি করে….

.
স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে……

.

—” আমার বলা প্রতিটা কথা মধ্যে তোমার সব প্রশ্নের উত্তর আছে, এখন আর কিছুই বলতে বাধ্য নয় চলো আমার সাথে অনেকটা সময় হয়ে গেছে…….

.

কথা গুলো বলেই উনি গাড়ি কাছে গিয়ে গাড়ির একটা দরজা খুলার সাথে সাথে আমি পিছন থেকে দাঁড়িয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলে ওঠি…..

.
—” আপনি বাধ্য না হলেও আমার যে রুদ্রের সাথে বিয়ে হতে যাচ্ছে সেটা মনে আছে আপনার……

.
আমার এমন কথার পিষ্টে উনিও রহস্য নিয়ে বলে উঠে…..

.
—” তুমি যে কারও বউ সেটা মনে আছে তোমার……

.
উনার এমন কথায় টলমলে চোখে করুন কন্ঠে বলে উঠি…..

.
—” আপনি আমাকে সবকিছু মধ্যে খুব বাজে ভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন আমি আজ বড্ড অসহায় হয়ে পরেছি…..

.
আমার কথায় উনি নিচে দিকে তাকিয়ে হালকা স্মিত হেসে আবারও আমার দিকে ঘাড় বাকা করে তাকিয়ে বললো…..
.

—” অল্পতেই অসহায় হয়ে গেলে রিত…..

.

কথাটা বলেই আমাকে আর কিছুই বলতে না দিয়ে চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসে, পরে আমাকে উদ্দেশ্য করে গাড়ি হন বাজাতে থাকে লাগাতার, আমি উনার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে ধীর পায়ে আস্তে করে চোখের পানি মুছতে মুছতে উনার পাশের সিটে ওঠে বসি,, আমার দিকে উনি এক পলক তাকিয়ে থেকে গাড়ি চালাতে শুরু করে,,,,,,,

.

গাড়িটি আপন গতিতে চলতে থাকে আপন নিবাসের দিকে আমার বাড়িটি নিদিষ্ট থাকলেও পথটি হয়ে পরেছে অনিশ্চিত সাথে আমার চলার পথ হয়ে পরেছে গন্তব্য হীন,, উনার পথ চলার জন্য নিদিষ্ট গন্তব্য থাকলেও আমি হয়ে পরেছি পথ হারা পথিকের মতো,, কি করবো, কোথায় যাবো, কার কাছে হেল্প চাইবো কিছুই বুঝতে পারছি না, নিজের বড্ড উন্মাদ পাগল পাগল লাগছে, রিদ খান আমাকে অনেকটাই অগোছালো করে দিয়েছে জানা নেই কবে আবার স্বাভাবিক হয় আমার জীবনে…..

.
আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝে হঠাৎ করেই গাড়িটি থেমে যায় আমার বাড়ির সামনে,,, গাড়িটি থামতে দেখে চমকে উঠে উনার দিকে তাকায় আমি আমাকে উনার দিকে তাকাতে দেখে আস্তে করে বলে ওঠে……

.
—” নামো…..

.
উনার এমন কথায় সাথে সাথে আমিও কোনো রকম কথা না বলে চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে যায়, আমি গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে উনি একটা সেকেন্ডও আর এখানে দাঁড়ায় নি দ্রুত গাড়িটি চালিয়ে সামনের দিকে চলে যায়, এতটা দ্রুত যায় যেন উনি কিছু লুকানোর চেষ্টা করছে হয়তো আমার সাথে আরও কিছুক্ষণ থাকলে সেটা ধরা পরে যেতো তাই দ্রুত আমার সামনের থেকে চলে যায়,,, এছাড়া আমি গাড়িতে থাকা কালীনও একটা কথাও বলেনি আমার সাথে চুপ করেই ছিল সারাটা রাস্তা,,,,

.

আমি এমন সব চিন্তা ভাবনায় করতে করতে গেটের ধরে বাড়ির ভিতর ডুকতে চোখে পড়ল আমার আম্মু আর ভাবি বাগানের মধ্যে কিছু একটা করছে আমি তাদের পিছনে থাকার কারণে আমাকে দেখতে পাইনি বাড়িতে ডুকতে,, তাই আমিও তাদের কিছু না বলে চুপচাপ বাসার ভিতর ডুকে নিজের রুমে চলে যায়, নিজেকে বড্ড মাতাল মাতাল লাগছে আগে ফেস হতে হবে নয়তো আম্মু কাছে ধরা পরে যাবার সম্ভাবনায় বেশি,,,,,

.
( রহস্য প্রকাশ পাবে তবে সেটা সময়ে সাথে সাথে ধারাবাহিক ভাবে যদি আগে করি তো কেউ গল্প পরে মজা পাবেন না ধন্যবাদ সবাইকে)
.

.

.

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here