#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ৩৪
.
🍁
ডাইরি ৫ম পাতা….
.
বর্ষার কোলে মাথা দিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদার সময় হঠাৎ করে আমাদের রুমের দরজার কেউ খটখট শব্দ করে বেল বাজিয়ে উঠে জোর তালে। দরজা খটখট শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠে বর্ষা ও কেয়া। দরজা পিছনে কে হতে পারে সেটা বুঝেই বষা দ্রুততা সঙ্গে আমার চোখে মুখের পানি নিজের দু’হাতে পরিষ্কার করে। ইশারায় চুপ থাকতে বলে, আমাকে স্বাভাবিক বগিতে শুইয়ে দেয় কম্বল মুড়ি দিয়ে বিছানার মধ্যে। সাথে এটাও বলে দেয় আদেশ স্বরুপ, যাতে আমার কান্নার শব্দ দরজাই আসাগত ব্যাক্তির কান অবধি না পৌঁছায়। যদি যায় তাহলে সমস্যায় আমিই পড়ে যবো বেশটা। তাই কেয়াকেও বলে দেয় আমার সাথে শুইয়ে পরার জন্য ঘুমের ভান ধরে। বাকিটা বর্ষায় বুঝে নিবে। বর্ষা আমাকে আর কেয়াকে ঠিকঠাক ভাবে শুইয়ে দিয়ে দ্রুততা সঙ্গে নিজেকে হালকা এলোমেলো ভাব করে, দরজা খুলে দরজা সামনে এলোমেলো অবস্থা দাঁড়িয়ে পরে ঘুম ভান ধরে। পরে ঘুম ঘুম চোখে সামনে দিকে তাকিয়ে থেকে ঘুম জড়িত কন্ঠে আস্তে করে বলে উঠে…..
.
—” গুড মুর্নিং মাদার…..
.
বর্ষাকে ঘুমে দুলতে দেখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মাদার। বর্ষার দিকে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রুমের ভিতর প্রবেশ করে মাদার। চারপাশে নিজের সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে আমাকে আর কেয়াকে বিছানার উপর শুইয়ে থাকতে দেখে মাদার বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলে…..
.
—” এতটা সকাল অবধি তোমরা ঘুমাচ্ছো! সেটা কি এখন আমাকে বিশ্বাস করতে হবে বর্ষা?…
.
মাদার এমন কথায় মূহুর্তে থতমত খেয়ে যায় বর্ষা। মাদার যে কতটা বুদ্ধিমান মানুষ সেটা আরও আগেই বর্ষা। তাই মাদারকে মিথ্যা কিছু বানিয়ে বানিয়ে বলাটা যতটা না বিপদজনক। তার চেয়ে বেশি বিপদজনক হলো মাদারকে সেই মিথ্যা বিশ্বাস করানো। তাই বর্ষা নিজের চুরি ধরার পরার ভয়ে দ্রুত এগিয়ে এসে মাদারকে বিশ্বাস দেওয়ার জন্য দ্রুত থতমতিয়ে বলে উঠে…
.
—” না মাদার, একদমই না। …
.
বর্ষার এমন কথায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মাদার বর্ষার দিকে, পরে নিজের একটা ভ্রুঁ উঁচু করে বলে…..
.
—” তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছো যে, তোমাদের এতটা সকাল অবধি ঘুমাচ্ছো সেটা আমাকে বিশ্বাস না করতে তাই তো….
.
বর্ষা মাদারকে বুঝানোর উদ্দেশ্য। আবারও দ্রুত বললো…..
.
—” না না মাদার সেটা মোটেও নয়। আমি বুঝতে চাইছি যে আমরা সত্যি সত্যি ঘুমাচ্ছিলাম সেটা। সত্যি বলছি মাদার…..
.
—” এতটা সকাল অবধি কেন? আর পৃপ্তী কোথায়?…. (কঁপাল কুঁচকে)
.
—” এইতো মাদার কেয়ার পাশে শুয়ে আছে বিছানার। ঘুমোচ্ছে ওহ।
.
—” হুম। আচ্ছা, ডাকো ওদের দুজনকে আমার কিছু কথা আছে তোমাদের সাথে। সেটা বলে চলে যাবো আমি, সো ফাস্ট।
.
—” মাদার ওরা তো ঘুমোচ্ছে। ওদের……..
.
বর্ষার বাকি কথা গুলো শেষ করার আগেই, মাদার রাগী দৃষ্টিতে তাকায় বর্ষার দিকে। তাই বর্ষা চুপ থেকে আস্তে করে শুধু কেয়াকে ডেকে তুলে মাদারের সামনে বসায়। আমাকে না ডেকে তুলে। কারণ যদি আমি এই মূহুর্তে মাদার সামনে উঠে বসি তো মাদার আমার চোখে মুখে ফুলা ফুলা ভাব দেখেই বুঝতে পারবে আমি যে এতক্ষণ যাবত কান্না করেছি। আর সেটা কেন করেছি সেটাও বলতে হবে আমাকে। মাদার যদি সবটা শুনতে পারে তো কারও এই গর্দান থাকবে না মাথায় কারণ আমাদের আশ্রম থেকে সকাল সকাল কোথাও বেড় হতে পারবে না সকাল দশটার আগে এবার যতটাই জরুরি কাজ হোক না কেন। আমি মাদারের ভয়ে কম্বলে ভিতর ঘাপটি মেরে শুয়ে রই। আমি শুয়ে থাকা অবস্থায় কেয়া আর বর্ষা মাদারের সামনে উঠে দাঁড়িয়ে পরে। আমাকে শুয়ে থাকতে দেখে মাদার কিছু বলতে যাবে। তার আগেই বর্ষা মাদারকে বলে উঠে…..
.
—” মাদার আমাদের বলুন না কি কথা। আমরা না হয় পৃপ্তীকে পরে বলে দিব ঘুম থেকে উঠার পর। আসলে মাদার আপনি নিজেও তো জানেন পৃপ্তী কতটা ঘুমে কাঁচা এখন ডাকলেও উঠবে না ঘুম থেকে। উল্টো আপনার সময় নষ্ট করবে পৃপ্তী। তার চেয়ে বরং আপনি আমাদের দুজনকে বলুন আমরা পরে পৃপ্তীকে বলে দিব ব্যাস।
.
বর্ষার এমন কথাটা গ্রহণ যোগ্য হলো মাদারের কাছে। তাই মাদার নিজের মাথাটা হালকা নাড়িয়ে সুমতি জানিয়ে বললো….
.
—” ঠিক আছে। তাহলে শুনো দশটা দিকে তোমাদের তিনজনকে একটা লিস্ট দেওয়া হবে। সেটা নিয়ে একটা এডেস অনুযায়ী দিয়ে আসবে সাথে তোমাদের তিন জনের জন্য তিনটা প্যাকেট থাকবে সেই গুলো নিয়ে আসবে। সেই প্যাকেট এ যাহ থাকবে সেটা পড়ে সন্ধ্যা দিকে রেডি হয়ে থাকবে। তোমাদের তিনজনকে নিয়ে একটা ইভেন্ট এ যাবো। তোমাদের সাথে আমি আর তোমাদের ফাদার ছাড়া দশজন লোক থাকবে এই আশ্রমের। তাই লেট না করে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকবে কেমন। এই কথাটা পৃপ্তীকেও বলে দিবে। গড ইট…
.
মাদারের এমন কথায় কেয়া ও বর্ষা এক সাথে বলে উঠে…..
.
—” ওকে মাদার…….
.
—” হুমমম, মনে থাকে যেন….
.
মাদার নিজ বাক্য শেষ করেই চলে যায় বাহিরের দিকে। মাদারকে চলে যেতে দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে বর্ষাও কেয়া। পরে দুজনেই চোখাচোখি করে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে এসে কম্বলের ওপর দিয়েই আমাকে জরিয়ে ধরে শক্ত করে।
.
ডাইরি ৬ষ্ঠ পাতা………
.
রাস্তা কানিক ঘেঁষে হাঁটছি আমি আর আমার দুই চলন পাখি বর্ষাও কেয়া। আমাদের সাথে আরও রয়েছে আমার জিনিস বহনকারী আশ্রমের রহিম কাকা। উনার হাতে আশ্রমের কিছু জিনিসপত্র ও আমাদের তিনটা শপিং ব্যাগ রয়েছে। উনি আমাদের আগে আগে হাঁটছে আর আমরা উনার পিছন পিছন হাঁটছি হেলেদুলে গুনগুন করতে করতে মনে সুখে। আর কিছুক্ষণ আগেই মাদারের দেওয়া লিস্টটা জায়গায় অনুযায়ী পৌছিয়ে দিয়ে। এখন আবারও আশ্রমের ফিরে যাচ্ছি আপন গতিতে। গায়ে আমাদের আশ্রমের ইউনিফর্ম পড়া সাথে তিন জনই একি স্টাইলের চুল গুলো দুটো করে বেনী বেঁধে রেখেছি মাথায়। আমি দুই বেনী ধরে হেলতে দোলতে সামনে দিকে এগিয়ে যেতেই, হঠাৎ করে চোখে পড়ল তিন তিনটা কালো গাড়ি রাস্তার পাশ ধরে দাঁড়ানো সারি বন্ধ ভাবে। আর গাড়ি গুলোর সামনে কিছু একটা নিয়ে বেশ গন্ডগোল হচ্ছে জোর তালে। চারপাশে মানুষ রয়েছে বেশ অনেকই। কিন্তু কেউ কিছু বলার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারছে না, হয়তো ঝামেলা সৃষ্টিকারীর ভয়ে। তাই তো এতটা গন্ডগোলের মধ্যেও সবাই নির্রব দর্শকের মতো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে চারপাশে ভীড় জমিয়ে রেখে ।
.
আমি, বর্ষা আর কেয়া, এতটা ভীড় দেখে কৌতূহলী হয়ে, এইসব ভীড় টেলে একপাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মূলত, কি হচ্ছে সেটা দেখার জন্য। আমরা তিন জন গিয়ে দাড়াতেই চোখে পড়ল সকালে গুন্ডা গুলোকে, এবারও একটা ভদ্রলোক নির্বিবাদে জোড়ালো ভাবে হকিস্টিক দিয়ে মারছে। আসিফ নামক বজাত লোকটি একপাশে দাঁড়িয়ে আছে ওদের সামনে। আর ওদের বস রিদ খান নামক ভয়ানক লোকটি চেয়ারের মধ্যে পায়ে ওপর পা তুলে বসে আছে আরাম করে। মনে হচ্ছে এখানে কোনো এন্টারটেইনমেন্ট নামক টিভি সোও চলছে। যেটা দেখে উনি স্বতঃস্ফূর্ত সাথে বসে বসে দেখে মজা নিচ্ছে। আমি এদের চোখের সামনে আবারও পরতে দেখে মূহুর্তে চমকে উঠে ভয় পেয়ে সাথে সাথে। পরে সকালে ঘটনা গুলো মনে করতেই ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায় গলা শুকিয়ে যায় আমার।
.
আমি একটা শুকনো ঢুক গিলে ভীতু চোখে ওদেরকে দেখতে দেখতে আস্তে করে বর্ষার পিছনে লুকিয়ে পরি গুন্ডা গুলো কেউ দেখা আগে। বর্ষার পিছনে লুকিয়ে থাকার অবস্থায় এই রিদ খান নামক ভয়ানক লোকটার দিকে তাকায় ঘৃণিত চোখ বষার পিছনে লুকিয়ে থাকার অবস্থায়। কারণ আজ এই খারাপ লোকটাকে পর পর দুইবার চোখের সামনে গুন্ডামী করতে দেখে আমার সুপ্ত মনের একরাশ নয় অংশ ঘৃণা জম্মু নেই এই ব্যাক্তিটির (রিদ) জন্য । কারণ উনি বাবার সমান বয়স্কলোক মারতে দ্বিধা বোধ করছে না কোনো ভাবেই। একটা ব্যাক্তি কতটা খারাপ হলে এমনটা করতে পারে সেটা অন্তত আমার জানা নেই। তাই আমি উনার (রিদ) দিকে ঘৃণিত চোখে তাকায় বষার পিছন থেকে। উনি তখনো শান্ত দৃষ্টিতে সামনে দিকে তাকিয়ে ছিল স্থির ভাবে….
.
.
.
চলবে……….
.
🍁
ডাইরি ৫ম পাতা….
.
বর্ষার কোলে মাথা দিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদার সময় হঠাৎ করে আমাদের রুমের দরজার কেউ খটখট শব্দ করে বেল বাজিয়ে উঠে জোর তালে। দরজা খটখট শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠে বর্ষা ও কেয়া। দরজা পিছনে কে হতে পারে সেটা বুঝেই বষা দ্রুততা সঙ্গে আমার চোখে মুখের পানি নিজের দু’হাতে পরিষ্কার করে। ইশারায় চুপ থাকতে বলে, আমাকে স্বাভাবিক বগিতে শুইয়ে দেয় কম্বল মুড়ি দিয়ে বিছানার মধ্যে। সাথে এটাও বলে দেয় আদেশ স্বরুপ, যাতে আমার কান্নার শব্দ দরজাই আসাগত ব্যাক্তির কান অবধি না পৌঁছায়। যদি যায় তাহলে সমস্যায় আমিই পড়ে যবো বেশটা। তাই কেয়াকেও বলে দেয় আমার সাথে শুইয়ে পরার জন্য ঘুমের ভান ধরে। বাকিটা বর্ষায় বুঝে নিবে। বর্ষা আমাকে আর কেয়াকে ঠিকঠাক ভাবে শুইয়ে দিয়ে দ্রুততা সঙ্গে নিজেকে হালকা এলোমেলো ভাব করে, দরজা খুলে দরজা সামনে এলোমেলো অবস্থা দাঁড়িয়ে পরে ঘুম ভান ধরে। পরে ঘুম ঘুম চোখে সামনে দিকে তাকিয়ে থেকে ঘুম জড়িত কন্ঠে আস্তে করে বলে উঠে…..
.
—” গুড মুর্নিং মাদার…..
.
বর্ষাকে ঘুমে দুলতে দেখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মাদার। বর্ষার দিকে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রুমের ভিতর প্রবেশ করে মাদার। চারপাশে নিজের সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে আমাকে আর কেয়াকে বিছানার উপর শুইয়ে থাকতে দেখে মাদার বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলে…..
.
—” এতটা সকাল অবধি তোমরা ঘুমাচ্ছো! সেটা কি এখন আমাকে বিশ্বাস করতে হবে বর্ষা?…
.
মাদার এমন কথায় মূহুর্তে থতমত খেয়ে যায় বর্ষা। মাদার যে কতটা বুদ্ধিমান মানুষ সেটা আরও আগেই বর্ষা। তাই মাদারকে মিথ্যা কিছু বানিয়ে বানিয়ে বলাটা যতটা না বিপদজনক। তার চেয়ে বেশি বিপদজনক হলো মাদারকে সেই মিথ্যা বিশ্বাস করানো। তাই বর্ষা নিজের চুরি ধরার পরার ভয়ে দ্রুত এগিয়ে এসে মাদারকে বিশ্বাস দেওয়ার জন্য দ্রুত থতমতিয়ে বলে উঠে…
.
—” না মাদার, একদমই না। …
.
বর্ষার এমন কথায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মাদার বর্ষার দিকে, পরে নিজের একটা ভ্রুঁ উঁচু করে বলে…..
.
—” তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছো যে, তোমাদের এতটা সকাল অবধি ঘুমাচ্ছো সেটা আমাকে বিশ্বাস না করতে তাই তো….
.
বর্ষা মাদারকে বুঝানোর উদ্দেশ্য। আবারও দ্রুত বললো…..
.
—” না না মাদার সেটা মোটেও নয়। আমি বুঝতে চাইছি যে আমরা সত্যি সত্যি ঘুমাচ্ছিলাম সেটা। সত্যি বলছি মাদার…..
.
—” এতটা সকাল অবধি কেন? আর পৃপ্তী কোথায়?…. (কঁপাল কুঁচকে)
.
—” এইতো মাদার কেয়ার পাশে শুয়ে আছে বিছানার। ঘুমোচ্ছে ওহ।
.
—” হুম। আচ্ছা, ডাকো ওদের দুজনকে আমার কিছু কথা আছে তোমাদের সাথে। সেটা বলে চলে যাবো আমি, সো ফাস্ট।
.
—” মাদার ওরা তো ঘুমোচ্ছে। ওদের……..
.
বর্ষার বাকি কথা গুলো শেষ করার আগেই, মাদার রাগী দৃষ্টিতে তাকায় বর্ষার দিকে। তাই বর্ষা চুপ থেকে আস্তে করে শুধু কেয়াকে ডেকে তুলে মাদারের সামনে বসায়। আমাকে না ডেকে তুলে। কারণ যদি আমি এই মূহুর্তে মাদার সামনে উঠে বসি তো মাদার আমার চোখে মুখে ফুলা ফুলা ভাব দেখেই বুঝতে পারবে আমি যে এতক্ষণ যাবত কান্না করেছি। আর সেটা কেন করেছি সেটাও বলতে হবে আমাকে। মাদার যদি সবটা শুনতে পারে তো কারও এই গর্দান থাকবে না মাথায় কারণ আমাদের আশ্রম থেকে সকাল সকাল কোথাও বেড় হতে পারবে না সকাল দশটার আগে এবার যতটাই জরুরি কাজ হোক না কেন। আমি মাদারের ভয়ে কম্বলে ভিতর ঘাপটি মেরে শুয়ে রই। আমি শুয়ে থাকা অবস্থায় কেয়া আর বর্ষা মাদারের সামনে উঠে দাঁড়িয়ে পরে। আমাকে শুয়ে থাকতে দেখে মাদার কিছু বলতে যাবে। তার আগেই বর্ষা মাদারকে বলে উঠে…..
.
—” মাদার আমাদের বলুন না কি কথা। আমরা না হয় পৃপ্তীকে পরে বলে দিব ঘুম থেকে উঠার পর। আসলে মাদার আপনি নিজেও তো জানেন পৃপ্তী কতটা ঘুমে কাঁচা এখন ডাকলেও উঠবে না ঘুম থেকে। উল্টো আপনার সময় নষ্ট করবে পৃপ্তী। তার চেয়ে বরং আপনি আমাদের দুজনকে বলুন আমরা পরে পৃপ্তীকে বলে দিব ব্যাস।
.
বর্ষার এমন কথাটা গ্রহণ যোগ্য হলো মাদারের কাছে। তাই মাদার নিজের মাথাটা হালকা নাড়িয়ে সুমতি জানিয়ে বললো….
.
—” ঠিক আছে। তাহলে শুনো দশটা দিকে তোমাদের তিনজনকে একটা লিস্ট দেওয়া হবে। সেটা নিয়ে একটা এডেস অনুযায়ী দিয়ে আসবে সাথে তোমাদের তিন জনের জন্য তিনটা প্যাকেট থাকবে সেই গুলো নিয়ে আসবে। সেই প্যাকেট এ যাহ থাকবে সেটা পড়ে সন্ধ্যা দিকে রেডি হয়ে থাকবে। তোমাদের তিনজনকে নিয়ে একটা ইভেন্ট এ যাবো। তোমাদের সাথে আমি আর তোমাদের ফাদার ছাড়া দশজন লোক থাকবে এই আশ্রমের। তাই লেট না করে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকবে কেমন। এই কথাটা পৃপ্তীকেও বলে দিবে। গড ইট…
.
মাদারের এমন কথায় কেয়া ও বর্ষা এক সাথে বলে উঠে…..
.
—” ওকে মাদার…….
.
—” হুমমম, মনে থাকে যেন….
.
মাদার নিজ বাক্য শেষ করেই চলে যায় বাহিরের দিকে। মাদারকে চলে যেতে দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে বর্ষাও কেয়া। পরে দুজনেই চোখাচোখি করে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে এসে কম্বলের ওপর দিয়েই আমাকে জরিয়ে ধরে শক্ত করে।
.
ডাইরি ৬ষ্ঠ পাতা………
.
রাস্তা কানিক ঘেঁষে হাঁটছি আমি আর আমার দুই চলন পাখি বর্ষাও কেয়া। আমাদের সাথে আরও রয়েছে আমার জিনিস বহনকারী আশ্রমের রহিম কাকা। উনার হাতে আশ্রমের কিছু জিনিসপত্র ও আমাদের তিনটা শপিং ব্যাগ রয়েছে। উনি আমাদের আগে আগে হাঁটছে আর আমরা উনার পিছন পিছন হাঁটছি হেলেদুলে গুনগুন করতে করতে মনে সুখে। আর কিছুক্ষণ আগেই মাদারের দেওয়া লিস্টটা জায়গায় অনুযায়ী পৌছিয়ে দিয়ে। এখন আবারও আশ্রমের ফিরে যাচ্ছি আপন গতিতে। গায়ে আমাদের আশ্রমের ইউনিফর্ম পড়া সাথে তিন জনই একি স্টাইলের চুল গুলো দুটো করে বেনী বেঁধে রেখেছি মাথায়। আমি দুই বেনী ধরে হেলতে দোলতে সামনে দিকে এগিয়ে যেতেই, হঠাৎ করে চোখে পড়ল তিন তিনটা কালো গাড়ি রাস্তার পাশ ধরে দাঁড়ানো সারি বন্ধ ভাবে। আর গাড়ি গুলোর সামনে কিছু একটা নিয়ে বেশ গন্ডগোল হচ্ছে জোর তালে। চারপাশে মানুষ রয়েছে বেশ অনেকই। কিন্তু কেউ কিছু বলার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারছে না, হয়তো ঝামেলা সৃষ্টিকারীর ভয়ে। তাই তো এতটা গন্ডগোলের মধ্যেও সবাই নির্রব দর্শকের মতো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে চারপাশে ভীড় জমিয়ে রেখে ।
.
আমি, বর্ষা আর কেয়া, এতটা ভীড় দেখে কৌতূহলী হয়ে, এইসব ভীড় টেলে একপাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মূলত, কি হচ্ছে সেটা দেখার জন্য। আমরা তিন জন গিয়ে দাড়াতেই চোখে পড়ল সকালে গুন্ডা গুলোকে, এবারও একটা ভদ্রলোক নির্বিবাদে জোড়ালো ভাবে হকিস্টিক দিয়ে মারছে। আসিফ নামক বজাত লোকটি একপাশে দাঁড়িয়ে আছে ওদের সামনে। আর ওদের বস রিদ খান নামক ভয়ানক লোকটি চেয়ারের মধ্যে পায়ে ওপর পা তুলে বসে আছে আরাম করে। মনে হচ্ছে এখানে কোনো এন্টারটেইনমেন্ট নামক টিভি সোও চলছে। যেটা দেখে উনি স্বতঃস্ফূর্ত সাথে বসে বসে দেখে মজা নিচ্ছে। আমি এদের চোখের সামনে আবারও পরতে দেখে মূহুর্তে চমকে উঠে ভয় পেয়ে সাথে সাথে। পরে সকালে ঘটনা গুলো মনে করতেই ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায় গলা শুকিয়ে যায় আমার।
.
আমি একটা শুকনো ঢুক গিলে ভীতু চোখে ওদেরকে দেখতে দেখতে আস্তে করে বর্ষার পিছনে লুকিয়ে পরি গুন্ডা গুলো কেউ দেখা আগে। বর্ষার পিছনে লুকিয়ে থাকার অবস্থায় এই রিদ খান নামক ভয়ানক লোকটার দিকে তাকায় ঘৃণিত চোখ বষার পিছনে লুকিয়ে থাকার অবস্থায়। কারণ আজ এই খারাপ লোকটাকে পর পর দুইবার চোখের সামনে গুন্ডামী করতে দেখে আমার সুপ্ত মনের একরাশ নয় অংশ ঘৃণা জম্মু নেই এই ব্যাক্তিটির (রিদ) জন্য । কারণ উনি বাবার সমান বয়স্কলোক মারতে দ্বিধা বোধ করছে না কোনো ভাবেই। একটা ব্যাক্তি কতটা খারাপ হলে এমনটা করতে পারে সেটা অন্তত আমার জানা নেই। তাই আমি উনার (রিদ) দিকে ঘৃণিত চোখে তাকায় বষার পিছন থেকে। উনি তখনো শান্ত দৃষ্টিতে সামনে দিকে তাকিয়ে ছিল স্থির ভাবে….
.
.
.
চলবে……….