#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ৩৩
.
🍁
—” তোর কি দিন তারিখ করতে হবে একে মারার জন্য আসিফ….
.
ডাইরি ৪র্থ পাতা…..
.
আমার জরিয়ে থাকা লোকটি এই কথা গুলো শেষ করার সাথে সাথেই আসিফ নামক লোকটি খুবই ভয়ানক ভাবে শিরাজ নামক লোকটিকে লাটি দিয়ে জোর তালে আঘাত করে মাথায় আর যার ফলে শিরাজ নামক লোকটি উচ্চ স্বরে চিৎকার করে নিজের মাথা দুহাতে চেপে ধরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আর আমি শিরাজ নামক লোকটির চিৎকার শুনে সাথে সাথে আমার চেপে ধরে রাখা ব্যাক্তিটিকে ছেড়ে দিয়ে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ি চিৎকার করে ওঠি প্রাণপূণ। কারণ শিরাজ নামক লোকটির মাথার থেকে অঝোর ধারা রক্ত পড়ার কারণে মূহুর্তেই ভেসে যাচ্ছে পুরো রাস্তা আর যার জন্য শিরাজ লোকটি ব্যাথ্যায় কাতরাচ্ছে রাস্তায় পড়ে। আর এটা দেখে আমি ভয়ে সাথে সাথে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ওঠি সবার সামনে আমার এমন চিৎকার শব্দের মানুষ মারার মহা ব্যস্ত থাকা লোক গুলো একে একে সবাই আমার দিকে তাকায় ভ্রুঁ কুঁচকে।
.
এতক্ষণ তারা তাদের কাজে এতটাই ব্যস্ত ছিল যে আমি নামক প্রাণিটিকে কারও চোখে পড়েনি তাদের কিন্তু আমার হঠাৎ চিৎকার মনোযোগ ভস্ম হয় তাদের, আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে কপাল কুচকে এলো আসিফের নামক প্রাণিটি। যার অথ হলো আমি কে, বা আমি এই মূহুর্তে এখানে কি করছি, আমার এখানে কি কাজ হতে পারে যার জন্য যার জন্য এমন বিপদজনক পরিবেশের উপস্থিত ইত্যাদি বিষয়ক। আর আমি তাদের সবার দৃষ্টি অপেক্ষা করে ভয়ে কাঁপতে থাকি চোখের সামনে এতো এতো ভেসে যাওয়া রক্ত দেখে, রক্তের প্রতি আমার খুব ভয় ছিল। কেন যেন রক্ত বিষয়টি নিতে পারিনা আমি কালেই, রক্তে ক্ষেত্রে এবারও আমার সাথে তাই হয়েছে,
.
চোখের সামনে অতিরিক্ত রক্ত দেখে মূহুর্তেই ঘামতে লাগলাম বড় বড় নিশ্বাস উঠা নামা করতে করতে, শিরাজ নামক লোকটির দিকে ভয়াৎ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে। প্রত্যেকে দৃষ্টি আমার ওপর আর আমার দৃষ্টি শিরাজ নামক লোকটি ওপর। আমি অশ্রু সিক্ত চোখে চোখে শিরাজ নামক লোকটির দিকে তাকিয়ে থাকার সময় তখনই পাশ থেকে আমার জরিয়ে থাকা ব্যক্তিটি আসিফ নামক লোকটিকে উদ্দেশ্য করে হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সাথে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে…..
.
—” আসিফ……
.
আসিফ নামটি ডেকে আসিফ নামক লোকটিকে কি বুঝালো তা আমি বুঝতে না পারলেও আসিফ লোকটি ঠিকই বুঝতে পেরেছেন। তাই সামনের লোকটি নাম ধরে ডাকার সাথে সাথে আসিফ লোকটি জ্বিই ভাই বলে তার হাতে থাকা বন্দুকটা আমার জরিয়ে থাকা লোকটির হাতে তুলে দিয়ে যায় সম্মানের সহিত। আমি লোকটি হাতে বন্দুক দেখে ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায় ভয়াৎ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি আসিফ নামক লোকটি বসের দিকে। বস লোকটা তখনো আমার দিকে তার দৃষ্টি স্থির রেখে দক্ষ হাতে শিরাজ নামক লোকটির ওপর ঠাস ঠাস শব্দ করে পর পর তিন তিনটা গুলি বসায় তার কপাল বরাবর। আমার চোখের সামনে এমনটা হতে দেখে সাথে সাথে চিৎকার করে নিজের দু’হাতে মুখ চেপে ধরি কান্না করতে করতে।
.
আমাকে কান্না করতে দেখে বস লোকটি ক্ষেপ্ত হয়ে আমার দিকে তার নিজের বন্দুকটা তাগ করে মারার জন্য। এমনত অবস্থায় একটি মানুষ যে কতটা অসহায় থাকে সেটা আমি এই পরিস্থিতি শিকার না হলে কখনোই বুঝতে পারতাম না। আমি ভয়ে সিটিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে চলছি দুহাতে মুখ চেপে ধরে রেখে, জানি না কি হয় আমার জীবনের এখান থেকে বেঁচে ফেরতে পারবো কিনা তাও জানা নেই। এই মূহুর্তে আমি মরলে আমার পিছনে কান্না করার মতো আপন জনও নেই শুধু মাদার আর আমার দুই বান্ধবী ছাড়া। আমার এই ছোট জীবনে এমন একটা বাজে পরিস্থিতি শিকার হতে হবে কখনোই সেটা ভাবিনি। এখন তো নিজেকেই মারতে ইচ্ছা করছে আমার, কেন আজকে এখানে আসলাম আর এসেই এই বিপদে সমক্ষীন হতে হলো আমাকে। সাথে নিজের জীবনের জন্য আল্লাহ কাছে নিজের জীবনে প্রাণ ভিক্ষা চাচ্ছিলাম জোড়ালো ভাবে।
.
সাথে এই প্রতিক্ষাও করছিলাম যদি এখান থেকে কোনো রকম বেঁচে ফিরতে পারি নিজ অবস্থানে তো কখনোই এই বাজে টাইপের লোক গুলোর সামনে এসে দাড়াবো না, দরকার হলে আশ্রম থেকেই বের হবো না, তবুও আজ আল্লাহকে আমাকে । আমার এমন প্রাণপূণ প্রতিক্ষার সাথে কান্নারত অবস্থায় চোখ তুলে তাকায় আমার সামনের ব্যাক্তিটি দিকে, লোকটি তখনো আমার দিকে নিজের বন্দুকটা তাগ করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। আমার দৃষ্টিতে ভয় ভয় ভাব থাকলেও লোকটি দৃষ্টিতে ছিল কঠোর, হয়তো হঠাৎ করে আমার এমন ভাবে উনাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটানোটা মোটেও পছন্দ নয় তাদের তাই এতটা কঠোরতার বিরাজ করছে তার মাঝে। আমার এমন চিন্তা ভাবনায় মাঝে বস লোকটি কিছুটা ক্ষেপ্ত সুরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে……..
.
—” মরার আর জায়গায় হলো না, সোজা রিদ খানের বন্দুকে সামনে জায়গায় হলো মরার জন্য। এখন মেরে দেয়, শেষ করে দেয় তোর আটকে আসা শেষ নিশ্বাসটা হুমমম।
.
উনার কথায় আমি ভয়ে আবারও শব্দ করে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠি মূহুর্তেই, আমাকে শব্দ করে কান্না করতে দেখে আরও ক্ষেপ্ত হন রিদ নামক লোকটি তাই রেগে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……
.
—” মেয়েদের প্যাঁচ প্যাঁচ শব্দ করে কান্নাটা মোটেও পছন্দ না আমার, তাই তোমার হাতে জাস্ট টু মিনিট সময় আছে এখান থেকে পালানোর জন্য। আর এই টু মিনিটের ভিতরে যদি তোমার ছায়াও আমার চোখের সামনে পড়ে তো,, আই উইল কিল ইউ জাস্ট গো…….(চিৎকার করে)
.
লোকটি কথা গুলো শেষ করার সাথে সাথেই আমি আর কোনো দিক বিবেচনা না করে প্রাণপূণ দৌড়ায় সামনের দিকে, এক মূহুর্তের জন্যও পিছনে ফেলে তাকানো প্রয়োজনও বোধ করিনি আমি…….
.
টানা দুই ঘন্টা যাবত বর্ষার কোলে মাথা দিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে চলছি আমি । আমার দুই বান্ধবী বর্ষা ও কেয়া সেই তখন থেকে আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করেই চলছে লাগাতার ভাবে, কিছু আমি ওদের এমন বুঝানোর ফলে শান্ত হওয়ার জায়গায় আরও অশান্ত হয়ে পড়ছি বেশটা। আর আমার এমন করার কারণটাও জানে বর্ষা ও কেয়া, তার জন্যই মূলত ওরা আমাকে শান্ত করতে চাইছে জোড়ালো ভাবে, কিন্তু ওদের এতো শত চেষ্টা ফলেও নিজেকে শান্ত করতে পারছি না কোনো ভাবে কারণ চোখের সামনে সামনে এমন ভয়ানক মৃত্যু দেখে বেশ ভয় পেয়েছিলাম ভিতর থেকে আমি। তাই নিজেকে বুঝানোটা অস্বাধ্যকর কিছু হয়ে পরেছি কেয়া ও বর্ষার কাছে।
.
.
(জানি ছোট হয়েছে, কিন্তু ঘুমটা আজ একটু বেশিই পাচ্ছে তাই আর লেখতে ইচ্ছা করছে না)
.
চলবে……….