দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা) #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া #পর্বঃ_০৬

0
385

#দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া
#পর্বঃ_০৬
.

🍂
ভার্সিটির মাঠে বসে আছি আমি আমার সামনে বসে আছে হেনা মনা আর একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে আমাকে কাল কোথায় ছিলাম, হুট করে কেন হাওয়া হয়ে গেলাম, আমাকে ফোন করেছে কিন্তু ফোন এ খুঁজে পাচ্ছে না ইত্যাদি,,, আমি অসহায় ফেস করে নীরব স্রোতার মতো ওদের কথা শুনছিলাম,, কি বলবো ওদেকে,,, যে কাল একটা বজ্জাত এসে আমার ফোনটাকে অকালে মৃত্যুবরণ ঘটিয়ে গেছে, ফোনটাকে ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়ে গেছে এজন্য আমাকে ফোনে খুঁজে পাচ্ছিল না,,,,

এসব ভাবতে ভাবতে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ওদিকে সব খুলে বললাম যে কি হয়েছিলো, ওরা সব শোনার পর বলে

–” দোস্ত আমার(হেনা) মনে হয় লোকটা মধ্যে নিশ্চিত কোন ঘাপলা আছে। নয়তো তোর দাদাজানের সামান্য কর্মচারী হয়ে এতটা শাসন কখনোই করার কথা না। আমি কেমন রহস্য রহস্য গন্ধ পাচ্ছি তোর কি মনে হয় হেনা?

হেনার কথায় মনা ও সায় জানালো। কিন্তু আমি কিছুই বললাম না কারণ আমার মাথায় কিছুই ঢুকেনি ওদের কথা। এখানে রহস্যের কি আছে আমি বুঝি না। তাই এসব কথা বাঁধ দিয়ে, মনাকে বলে উঠি,,,

—” মনা কাল তোকে একটা ছেলের সাথে বেশ হেঁসে হেঁসে কথা বলতে দেখেছিলাম আমি। কে ছিল ছেলেটা? তোর ভাই বুঝি,,,,

আমার কথায় মনা নড়েচড়ে বসে আমার দিকে খানিকটা রাগী ভাবে তাকিয়ে বলে,,,,

—” লাইক সিরিয়াসলি মায়া, তোর কি ধারণা ছেলেটা আমার ভাই হবে বুঝি?

মনার কথায় অসহায় ফেস করে ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠি,,,

—” মনে না হওয়া কি আছে এখানে,,, একটা ছেলে একটা মেয়ের সাথে কথা বললেই যে তাদের দেখে নেগেটিভ মাইন্ডের নিতে হবে এমন মেয়ে আমি নয়, আমি সবসময় সবকিছু পজিটিভ মাইন্ডের নিয়ে থাকি বুঝলি। তাই তো বললাম যে ছেলেটা তোর ভাই হয় কি না।

কথাটা বলে মনার দিকে ভালো করে তাকালাম আমি,,, ওর ফেস দেখে মনে হচ্ছে ভুল জায়গায় ভুল বাণীর শুনিয়ে ফেলেছি,,,,, মনা রেগেমেগে আমাকে বলে উঠে ,,,

—” এই একদমই নিজের মতো করে সবাইকে ভাববি না ওকে। সবাই তোর মতো না যে প্রেম করবে না। তুই প্রেম করিস না বলে যে বাকি সবাইও প্রেম করবে না এরকম ভাবাটাও ভুল। তাছাড়া ছেলেটা আমার বয়ফ্রেন্ড ছিল বুঝলি,,

মনা আরো কিছু বলতে যাবে এমন সময় ওর ফোন বেজে ওঠে ফোনের স্ক্রীনে তাকিয়ে মুহূর্তে লজ্জা নেমে আসে ওর চোখে মুখে। খানিকটা লাজুক হেঁসে মনা ফোন রিসিভ করে অন্য পাশে চলে যায়,,,আমি আর হেনা, মনার যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি,, এই বুঝি প্রেম আহা কি প্রেম,,,আচ্ছা প্রেমে পড়লে বুঝি মানুষ লজ্জা পাই যা এই মুহূর্তে মনা পাচ্ছে এটাকে কি প্রেম লজ্জা বলে,,,

আমিও কি প্রেমলজ্জা পাব, প্রেম নামক বিষয়টি মাধ্যমে কিন্তুু আমি কার সাথে প্রেম করব দাদা সাথে নাকি দাদী সাথে, আচ্ছা ডাইভার চাচা সাথে করব নাকি আমার বডিগার্ডদের সাথে, এসব বসে ভাবছিলাম তখনিই কেউ পেছন থেকে বলে উঠে মায়াপরী কেমন আছো,,,

আমি ঘাড় গড়িয়ে পেছনে তাকালাম সাথে সাথে চোখে পড়ল সাব্বির ভাইকে, উনার সাথে আছে আরও তিনটা ছেলে ২টা মেয়ে,,,, আমি সৌজন্যতার খাতিরে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে উনাকে বললাম,,,

—” ভালো আছি,,, আপনি কেমন আছেন ভাইয়া,,,

উনি আমার কথা বুকে হাত দিয়ে মিষ্টি হেসে উপরে তাকিয়ে বলেন,,,

—” ভালো আর থাকতে দিলা কই তুমি,,,

উনার কথায় আমি কিছুই বুঝলাম না কিন্তু পরক্ষণেই আবার বলে উঠে উনি,,,

—” এখানে কি করছো তুমি,,,

–” কিছু না ভাই আড্ডা দিচ্ছিলাম, আপনি এখানে কি করছেন,

সাথে সাথে উনি বলে ওঠেন,,,

—” তোমাকে দেখতে এসেছিলাম,

আমি ভ্রু কুচকে তাকালাম উনার দিকে আমাকে দেখতে এসেছেন কিন্তু কেন,,,

উনার কথায় উনি নিজেই বোকা বনে গেলেন ইতস্তত বোধ করে আমতা আমতা করে বলে উঠে,

–” না এমনি আর কি তোমাকে দেখছিলাম এখানে বসে আছো তাই এদিকে আসা আর কি,,, (হাসি দিয়ে),,, আচ্ছা আমরা কি তোমাদের সাথে জয়েন করতে পারি আড্ডায়,,,

আমি মাথা নাড়ালাম যার অর্থ হা,,,
উনারা বসতেই পাশ থেকে একজন মেয়ে বলে ওঠে,,,

—” দোস্ত ভাবি তো পিচ্চি, তুই কেমনে কি করবি,,,

জবাবে উনি শুধু হাসলে,,,পরে উত্তর দেন

—” আমি পারবো আমার পিচ্ছিকে কে আঁগলে রাখতে,,,(সাব্বির)

উনাদের কথায় আমি নড়েচড়ে বসি কৌতুহল নিয়ে প্রশ্ন করি,,,

—” ভাইয়া আপনি কি প্রেম করেন মানে আপনি কি প্রেমলজ্জা পান,,,,

—” না প্রেম করিনা তবে একজনকে খুব ভালবাসি,, তবে প্রেমলজ্জা কি,,?(সাব্বির)

—” এ আপনি প্রেম লজ্জা জানেন না আজব মানুষ তো আপনি, আচ্ছা আমি বলি প্রেম করলে মানুষ যেমন লজ্জা লজ্জা নিয়ে প্রেমিক এ সাথে কথা বলে তাই প্রেমলজ্জা যেমন মনা পাচ্ছে লজ্জা,,, কেমন লজ্জা লজ্জা ভাব ওর দেখেন,,,

আমার কথায় সবাই চোখ বড় বড় করে তাকায় মনার দিকে,, আর মনা কাশি নামক রোগে সাথে সাথে আকান্ত হয়ে পরে যায় যা এ মূহুর্তে আমার চরম বিরক্তি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে,,, কারণ এমন ইমপন্টেন একটা বিষয়ে ওহ হুট করে যক্ষা রোগি হওয়া মানে কি আছে সেটাই বুঝলাম না আমি,,,,

মনার অবস্হা, আর আমার কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠে এবং মনা একপাশে কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে থাকে অসহায় ফেস করে,,, তখনি সাব্বির ভাই বলে উঠে,,,,

—” মায়াপুরী প্রেমে পড়লে মানুষ একটু আকটু লজ্জা পেয়ে থাকে,,, তুমি যখন কাউকে ভালবাসবে তখন তুমিও তার জন্য লজ্জা পাবে,,,(সাব্বির)

—” আবার ভালোবাসা,,, ভালোবাসাই দেখি সবিই হয় আচ্ছা এই ভালোবাসা আমি কোথায় পাবো,,, (উৎসাহিত কন্ঠে)

আমার দিকে অসহায় ফেস করে বলেন

—” ভালোবাসা পাওয়া যায় না ভালোবাসা হয় বুঝলে,,,,(সাব্বির)

—” ভালোবাসা হয়,, ভালোবাসা কোথায় হয় ফ্যাক্টরিতে, নাকি কোনো কিছুতে জম্ম হয়,,,, বলুন না (খুশি হয়ে)

–” এভাবে হয় না,,,

পরে বুকে হাত দিয়ে দেখান এখানে হয় ভালোবাসা,,, যা এক ভয়ঙ্কর ফিলিংস,,, যা ধীরে ধীরে তোমার মাথায় নেশার মতন চেপে বসবে এবং সে নেশা কাটানো জন্য তোমার তখন সেই নেশাব্যাক্তিকে চাই তাকে একবার দেখার জন্য তোমার মন ছটপট করবে এক অন্য রকম অস্থিরতাই ভুগবে তুমি,,,, সেটাই ভালোবাসা,,, (সাব্বির)

আমি মনোযোগ সহকারে ওনার কথা এতক্ষণ শ্রবণ করছিলাম এখন মনে মনে ভাবছি এখন আবার আমাকে নেশা করতে হবে ভালোবাসার জন্য আর কি কি করতে হবে আল্লাহ জানে,,,,

সবার সাথে আড্ডা শেষ করে বিদায় নিয়ে গাড়িতে বসে বসে ভাবছি,, কি কিভাবে নেশা করা যায়,,, কোন নেশাটা করলে ভালোবাসা টা হবে তাড়াতাড়ি এ চিন্তা মাঝে চট করে আমার বডিগার্ড কে বলি আমি,,,

—” আচ্ছা নেশা সম্পর্কে আপনাদের কেমন আইডিয়া আছে মানে কোন নেশা করলে ভালো হবে,,, কোন নেশাটা ব্যান্ডের হবে,,

আমার কথা চোখ বড় বড় করে তিনজনে তাকায় কি বলছি আমি বুঝার জন্য প্রশ্ন করে,,,

—” নেশা জিনিস দিয়ে কি করবেন ম্যাডাম আপনি(আশিক আমার বডিগার্ড)

ভালোবাসা পাওয়ার জন্য নেশা করব,,,তাই আমাকে বলুন যে কোন নেশা টা করলে ভালো হবে সেটা আমাকে এনে দাও (আমি)

—” ম্যাম বস্ শুনলে আমাদেরকে চাকরি থেকে বের করে দিবে, আর যদি শুনে আমরা আপনাকে নেশার জিনিস এনে দিয়েছি তাহলে আমাদের কারও গর্দান থাকবে না,,, বুঝার চেষ্টা করুন ম্যাম (রাফিন আমার অন্য বডিগার্ড এর নাম)

—” তাহলে তোমার বসকে বল যে আমার জন্য নেশা নিয়ে আসতে ভালোবাসার নেশা নয়তো তোমরা নিয়ে আসবে আমার জন্য ,,, আমার ভালোবাসার নেশা চাই ই চাই ব্যাস,,,,(আমি)

আশিক আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে কাকে যেন ফোন করেন বলেন,,,,

—” বস্ ম্যাম নেশা করতে চাচ্ছেন কোন নেশাটা ভালো হবে জানতে চাইছে,,, আমাদেকে নেশা এনে দিতে বলছে,,, ভালোবাসার নেশা লাগবে ম্যামের (একদমে কথাগুলো বলে থামে আশিক)

ফোনের ওপাশ থেকে কি বললো জানিনা তবে মূহুর্তে আশিকের হাত পা কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেল,, আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন আজ আমার কপালে দুঃখ আছে,,,,,
,
চলবে,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here