#এক_ফালি_প্রণয়|১৬|
#শার্লিন_হাসান
” আরে রাফি ওকে কিডন্যাপ করতে চেয়েছিলো। ওটাকে মেরে তোমার ভালোবাসাকে উদ্ধার করে আনলাম। এবার আমায় পুরষ্কিত করো ভাইয়া।”
লাস্ট কথাটা আস্তেই বলে পূর্ণ। তখন তূর্ণ বলে, ” বাজে কথা ছাড় পূর্ণ। আমি নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি।”
” মজা করছি রে ভাই।”
থেমে,
“তোমায় কিছু বলার ছিলো।”
আগামী কালকে বলিস। এখন আমার কাজ আছে।
“ঠিক আছে।”
কথাটা বলে তূর্ণ প্রস্থান করে। পূর্ণ কপাল স্লাইড করতে,করতে বসে পড়ে। সে তো জানতো আজকে রোদ কিডন্যাপ হবে। এটাতে পুরো দমে পূর্ণ নিজেই সাহায্য করেছে। পূর্ণ বুঝতে পারছে না কী করবে। রোদ কখনো জানতে পারলে হয়ত ঘৃ’ণা করবে তাকে। কিন্তু তাতে পূর্ণর কিছু যায় আসে না। সে নিজেই তো রোদকে সহ্য করতে পারে না। শুধু নিজের ক্যারিয়ারের জন্য বাধ্য হয়ে নাটক করছে নাহলে রোদ কে পাত্তা দেওয়ার জন্য পূর্ণর বয়ে গেছে। কিন্তু রোদ তো সিরিয়াস হয়ে গেছে পুরো দমে। পূর্ণ চায় না তাকে ভালোবেসে কষ্ট পাক। দুই মেরুর দু’জন মানুষ কখনো এক হতে পারবে না। এটা কখনোই সম্ভব নয়। তূর্ণ রোদকে ভালোবাসে এটা পূর্ণ বিশ্বাস করে। কিন্তু চাইলে এখন রোদকে তূর্ণর হতে দিবে না পূর্ণ। কিছুতেই না। গেমটা তাঁদের মধ্যে আসল গুটি হাত ছাড়া হয়ে গেলে গেম ওভার। সেজন্য গেমটা চালিয়ে নিতে হলে গুটি তো নিজের করেই রাখতে হবে। পূর্ণ হাসে! ডেভিল হাসি দেয়।
” মিস তাহসিনা খানম রোদেলা কী এক প্রোপার্টি তোমার বাপ তোমায় দিয়ে গেলো। কী আফসোস এই প্রোপার্টির প্রতি এতো মানুষের লোভ জানো তো? তোমায় মে’রে প্রোপার্টি নিজেদের করতে দু’বার ও ভাববে না। তবে পূর্ণ এমন না। তার এসবে ইন্টারেস্ট নেই।”
পূর্ণ উঠে দাঁড়ায়। তখন আবার শরীফ শিকদার এসে তাকে পুনরায় বসিয়ে দেয়। পূর্ণর বিরক্ত লাগছে শরীফ শিকদারকে। চোয়াল শক্ত করে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নেয় সে। তখন শরীফ শিকদার বলেন, ” পূর্ণ বাবা রেগে যাচ্ছো কেন?”
” এখন কথা বলার মুড নেই আমার। আপনি আসুন! পরে আলোচনা হবে।”
“ঠিক আছে তাহলে তুমি রুমে যাও।”
********
রোদ রুমে বসে আজকের কথা ভাবছে। ভাগ্যিস পূর্ণ ঠিক সময়ে তাকে বাঁচিয়ে নিয়েছে। নাহলে কী অঘটন ঘটতো। ওই৷ লোকগুলো বোধহয় পূর্ণর পাঠানো ছিলো যারা তাকে ওই গোডাউন থেকে সরিয়ে এনেছে। রোদ তেমন কাউকেই দেখেনি গোডাউনে। সে যে কিডন্যাপ হয়েছে না কেউ থ্রেট দিলো, না কেউ কোন ক্ষতি করার জন্য আসলো। কিন্তু এটা করে লাভ কী হলো?
‘ যাই হোক পূর্ণ ভাইয়া আসলেই এক কাঠি উপরে। সব দিক খেয়াল রাখে। রোদের ব্যপার গুলো ভালোই লাগে।’
ফ্রেশ হয়ে তার বড় মামীর রুমে যায় রোদ। রোদকে দেখে শারমিন আঞ্জুম এলবামটা সরিয়ে রাখে। রোদ গিয়ে সেটা আবার হাতে নেয়। এলবামে রোদের বড় মামু অর্থাৎ পূর্ণর বাবার সাথে রোদের একটা ছবি। রোদ তাতে হাত ভোলায়। প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে রোদ বলে, “মামী সিনথি আওুকে কেমন লাগলো?”
“মেয়ে তো মাশাল্লাহ। তূর্ণ ও রাজী রোদ।”
রোদ হাসে। তূর্ণ রাজী এটা ভাবতে পারেনি রোদ। শারমিন আঞ্জুমের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে রোদ রুম থেকে বেড়িয়ে করিডোরে আসতে অপজিটের রুম থেকে কেউ রোদের হাত টান দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে নেয়। আচমকা হওয়ায় রোদ ভয় পেয়ে যায়। পরক্ষনে পূর্ণকে দেখে বলে, ” এগুলো কেমন কাজ? ”
“আরে রোদ রেগে যাচ্ছে। তোমায় এনেছি আমায় একটু হেল্প করার জন্য।।””
“কী হেল্প?”
ব্রু কুঁচকে বলে রোদ। তখন পূর্ণ শুধায়, ” আমার সাথে কাজ খুঁজবে। কাজ খুঁজে বের করতে পারলে সেটাই করবে।”
” শয়তান সব মনে হয় তোমার সাথে।”
“আচ্ছা রোদেলা তুমি আমায় স্বপ্নে দেখো?”
” আসলে আমি দোয়া পড়ে ঘুমাই তো! তাই কোন শয়তা’নকে স্বপ্নে দেখি না।”
“আমাকে এভাবে বললে?”
“আমার বয়ে গেছে তোমায় স্বপ্নে দেখতে।”
“এভাবে বলো কেন? আমায় একটু সন্মান করো। আমি তোমার বড় ভাই রোদেলা।”
” যারা সন্মান খুঁজে নেয় তাঁদের আমি সন্মান দেই না।”
“আচ্ছা যাও আমার রুম থেকে।”
রোদ মুখ বাকিয়ে প্রস্থান করে। পূর্ণর মত সে বুঝে না।
রাতে সবাই মিলে ডিনার করতে বসে। রোদ কোথায় গেছে এই প্রশ্নটা সবাই করে। পূর্ণর দিকে তাকায় রোদ। পূর্ণ চোখের ইশারা দিতে রোদ বলে, ” আসলে কাজ একটু বেশী ছিলো তাই। আর পূর্ণ ভাইয়ার সাথে একটু লেকের কাছে গিয়েছিলাম।”
” এখানে দেখি আই কন্টাক্ট হচ্ছে।”
মাঝখানে বা হাত ঢুকায় শূন্য। তখন আবার রোদ চিৎকার করে উঠে। সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে। পূর্ণ নিজের পা সরিয়ে নেয়। সে শূন্যকে লা’ থি দিতে গিয়েছিলো বেশী কথা বলার জন্য। কে জানতো সেটা রোদের পায়ে লাগবে। পূর্ণ কোনরকম খেয়ে সবার আগে চেয়ার ছেড়ে দেয়। শূন্য আস্তে ধীরে খাচ্ছে। তার মনে হলো এখানে খাবার টেবিলে বসেও রোদ,পূর্ণ প্রেম করছে। সে পুরো দমে এবার শিওর ওদের মাঝে কিছু একটা আছে। শূন্যর নিজেকে নিয়ে প্রাউড ফিল হচ্ছে। ফাইনালী সে সাকসেস তার ভাবনায়।
পরের দিন সকালে সূর্য উদয়ের সাথে,সাথে ঘুম ভাঙে পূর্ণর। উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয় সে। আজকে পার্টি অফিসে কাজ আছে তার।
তূর্ণ আজকে অফিস যাবে না। আজকের সময়টা বাড়ীতেই কাটাবে। কাজের প্রেসার বেশী পড়ায় এখন একটু রেস্ট নেয়। বাকীটা পূর্ণ দেখে নিবে।
সকালের নাস্তাটা সেরে তূর্ণ নিজের রুমের সোফায় বসে ফোন স্ক্রোল করার জন্য ফোনটা হাতে নেয়। ওয়েলপেপারের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। কখন আবার শূন্য রুমে আসে। তূর্ণ টের পায়নি শূন্যর উপস্থিতি। শূন্য গলা খাকারি দিতে তূর্ণ চমকে তাকায়।
“কিছু বলবি?”
” ফাইলটা তোমার কাছে। ”
তূর্ণ টেবিলের উপর থেকে ফাইলটা শূন্যকে দেয়। শূন্য সেটা হাতে প্রস্থান করে।
শেষ বিকেলের দিকে কাজ সেরে পূর্ণ বাড়ী ফিরে। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে পানির বোতল হাতে সোফায় বসে।
তখন তূর্ণ আসে সেখানে। পূর্ণ তাড়া দেখিয়ে বলে, ” কথা আছে তোমার সাথে।”
“আগে ফ্রেশ হয়ে নে।”
“ঠিক আছে।”
**********
সিনথি তূর্ণর ছবি দেখে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রয়। আফিয়া ইসলাম মেয়ের দিকে তাকায়। এমন চুপচাপ দেখে সিনথিকে ধাক্কা দিয়ে বলে, ” কী হয়েছে সিনথি? বিয়েতে তুমি রাজী না?”
“এই ম্যানার্সলেস লোককে কোথা থেকে তুলে এনেছো তোমরা?”
” তুলে আনবো কেন?”
” এই লোককে আমার বাড়ীর ঠিকানা কে দিয়েছে।,”
“কীসব উল্টাপাল্টা বলছো তুমি?”
“আরে আম্মু এই লোকটা আস্ত ব’জ্জাত।”
” সিনথি! এসব আর কাউকে বলো না। শিকদার পরিবারের সামনে তো ভুলেও না। তাদের আদরের বড় দুলালের নামে এসব শোনলে বিয়ে ভে’ঙে দিবে।”
“তাতে কী? ছেলের অভাব পড়েছে নাকী?”
“ছেলের অভাব পড়েনি তবে ভালো ছেলের অভাব পড়েছে।”
“একে কোন দিক দিয়ে তোমার ভালো মনে হয় আম্মু?”
” তুমি কী আহিয়ানের সাথে পূর্বপরিচিত?”
” এই লোকটার নাম আহিয়ান?”
” আহিয়ান শিকদার তূর্ণ।”
“দুইদিন আগে আমায় গাড়ী দিয়ে ধাক্কা মেরেছিলো এনি। হাতে ব্যথা পেয়েছি। জানো আম্মু গাড়ী থেকে নেমে উল্টো রাগ দেখিয়েছে আমার সাথে। একবার ও স্যরু বলেনি। এমনকি জিজ্ঞেস ও করেনি ব্যথা পেয়েছি কীনা। এমনকি হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার কথাও মুখ দিয়ে বের করপনি। এমনকি টাকা ও দেয়নি ঔষধ কিনে খাওয়ার। দেখো কী লেভেলের কিপ্টা।”
“হয়ত তাড়া ছিলো।”
“ভদ্রতার অভাব বটে।”
★★★★★
রাতের ডিনার করে পূর্ণকে নিয়ে তূর্ণ ছাঁদের দিকে রওনা হয়। ততক্ষণে পূর্ণ একটা সিগারেট ধরায়। ধোঁয়া শূন্যে উড়িয়ে দিতে,দিতে পূর্ণ শুধায়, ” আসলে ওইদিন রোদকে আমি মা-রতে চেয়েছিলাম নদীতে চুবিয়ে। ছেলেটা আমারই পাঠানো লোক ছিলো। কিন্তু সেদিন তুমি বাঁচিয়ে নিয়েছে ওকে। আমি সব জানি ভাইয়া। এমনকি গতকালকের লোক গুলো তোমার পাঠানো যারা রোদকে রাফির গোডাউন থেকে উদ্ধার করে এনেছে। কিন্তু রোদ জানে ওকে আমি বাঁচিয়েছি গতকাল।”
#চলবে
” আরে রাফি ওকে কিডন্যাপ করতে চেয়েছিলো। ওটাকে মেরে তোমার ভালোবাসাকে উদ্ধার করে আনলাম। এবার আমায় পুরষ্কিত করো ভাইয়া।”
লাস্ট কথাটা আস্তেই বলে পূর্ণ। তখন তূর্ণ বলে, ” বাজে কথা ছাড় পূর্ণ। আমি নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি।”
” মজা করছি রে ভাই।”
থেমে,
“তোমায় কিছু বলার ছিলো।”
আগামী কালকে বলিস। এখন আমার কাজ আছে।
“ঠিক আছে।”
কথাটা বলে তূর্ণ প্রস্থান করে। পূর্ণ কপাল স্লাইড করতে,করতে বসে পড়ে। সে তো জানতো আজকে রোদ কিডন্যাপ হবে। এটাতে পুরো দমে পূর্ণ নিজেই সাহায্য করেছে। পূর্ণ বুঝতে পারছে না কী করবে। রোদ কখনো জানতে পারলে হয়ত ঘৃ’ণা করবে তাকে। কিন্তু তাতে পূর্ণর কিছু যায় আসে না। সে নিজেই তো রোদকে সহ্য করতে পারে না। শুধু নিজের ক্যারিয়ারের জন্য বাধ্য হয়ে নাটক করছে নাহলে রোদ কে পাত্তা দেওয়ার জন্য পূর্ণর বয়ে গেছে। কিন্তু রোদ তো সিরিয়াস হয়ে গেছে পুরো দমে। পূর্ণ চায় না তাকে ভালোবেসে কষ্ট পাক। দুই মেরুর দু’জন মানুষ কখনো এক হতে পারবে না। এটা কখনোই সম্ভব নয়। তূর্ণ রোদকে ভালোবাসে এটা পূর্ণ বিশ্বাস করে। কিন্তু চাইলে এখন রোদকে তূর্ণর হতে দিবে না পূর্ণ। কিছুতেই না। গেমটা তাঁদের মধ্যে আসল গুটি হাত ছাড়া হয়ে গেলে গেম ওভার। সেজন্য গেমটা চালিয়ে নিতে হলে গুটি তো নিজের করেই রাখতে হবে। পূর্ণ হাসে! ডেভিল হাসি দেয়।
” মিস তাহসিনা খানম রোদেলা কী এক প্রোপার্টি তোমার বাপ তোমায় দিয়ে গেলো। কী আফসোস এই প্রোপার্টির প্রতি এতো মানুষের লোভ জানো তো? তোমায় মে’রে প্রোপার্টি নিজেদের করতে দু’বার ও ভাববে না। তবে পূর্ণ এমন না। তার এসবে ইন্টারেস্ট নেই।”
পূর্ণ উঠে দাঁড়ায়। তখন আবার শরীফ শিকদার এসে তাকে পুনরায় বসিয়ে দেয়। পূর্ণর বিরক্ত লাগছে শরীফ শিকদারকে। চোয়াল শক্ত করে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নেয় সে। তখন শরীফ শিকদার বলেন, ” পূর্ণ বাবা রেগে যাচ্ছো কেন?”
” এখন কথা বলার মুড নেই আমার। আপনি আসুন! পরে আলোচনা হবে।”
“ঠিক আছে তাহলে তুমি রুমে যাও।”
********
রোদ রুমে বসে আজকের কথা ভাবছে। ভাগ্যিস পূর্ণ ঠিক সময়ে তাকে বাঁচিয়ে নিয়েছে। নাহলে কী অঘটন ঘটতো। ওই৷ লোকগুলো বোধহয় পূর্ণর পাঠানো ছিলো যারা তাকে ওই গোডাউন থেকে সরিয়ে এনেছে। রোদ তেমন কাউকেই দেখেনি গোডাউনে। সে যে কিডন্যাপ হয়েছে না কেউ থ্রেট দিলো, না কেউ কোন ক্ষতি করার জন্য আসলো। কিন্তু এটা করে লাভ কী হলো?
‘ যাই হোক পূর্ণ ভাইয়া আসলেই এক কাঠি উপরে। সব দিক খেয়াল রাখে। রোদের ব্যপার গুলো ভালোই লাগে।’
ফ্রেশ হয়ে তার বড় মামীর রুমে যায় রোদ। রোদকে দেখে শারমিন আঞ্জুম এলবামটা সরিয়ে রাখে। রোদ গিয়ে সেটা আবার হাতে নেয়। এলবামে রোদের বড় মামু অর্থাৎ পূর্ণর বাবার সাথে রোদের একটা ছবি। রোদ তাতে হাত ভোলায়। প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে রোদ বলে, “মামী সিনথি আওুকে কেমন লাগলো?”
“মেয়ে তো মাশাল্লাহ। তূর্ণ ও রাজী রোদ।”
রোদ হাসে। তূর্ণ রাজী এটা ভাবতে পারেনি রোদ। শারমিন আঞ্জুমের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে রোদ রুম থেকে বেড়িয়ে করিডোরে আসতে অপজিটের রুম থেকে কেউ রোদের হাত টান দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে নেয়। আচমকা হওয়ায় রোদ ভয় পেয়ে যায়। পরক্ষনে পূর্ণকে দেখে বলে, ” এগুলো কেমন কাজ? ”
“আরে রোদ রেগে যাচ্ছে। তোমায় এনেছি আমায় একটু হেল্প করার জন্য।।””
“কী হেল্প?”
ব্রু কুঁচকে বলে রোদ। তখন পূর্ণ শুধায়, ” আমার সাথে কাজ খুঁজবে। কাজ খুঁজে বের করতে পারলে সেটাই করবে।”
” শয়তান সব মনে হয় তোমার সাথে।”
“আচ্ছা রোদেলা তুমি আমায় স্বপ্নে দেখো?”
” আসলে আমি দোয়া পড়ে ঘুমাই তো! তাই কোন শয়তা’নকে স্বপ্নে দেখি না।”
“আমাকে এভাবে বললে?”
“আমার বয়ে গেছে তোমায় স্বপ্নে দেখতে।”
“এভাবে বলো কেন? আমায় একটু সন্মান করো। আমি তোমার বড় ভাই রোদেলা।”
” যারা সন্মান খুঁজে নেয় তাঁদের আমি সন্মান দেই না।”
“আচ্ছা যাও আমার রুম থেকে।”
রোদ মুখ বাকিয়ে প্রস্থান করে। পূর্ণর মত সে বুঝে না।
রাতে সবাই মিলে ডিনার করতে বসে। রোদ কোথায় গেছে এই প্রশ্নটা সবাই করে। পূর্ণর দিকে তাকায় রোদ। পূর্ণ চোখের ইশারা দিতে রোদ বলে, ” আসলে কাজ একটু বেশী ছিলো তাই। আর পূর্ণ ভাইয়ার সাথে একটু লেকের কাছে গিয়েছিলাম।”
” এখানে দেখি আই কন্টাক্ট হচ্ছে।”
মাঝখানে বা হাত ঢুকায় শূন্য। তখন আবার রোদ চিৎকার করে উঠে। সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে। পূর্ণ নিজের পা সরিয়ে নেয়। সে শূন্যকে লা’ থি দিতে গিয়েছিলো বেশী কথা বলার জন্য। কে জানতো সেটা রোদের পায়ে লাগবে। পূর্ণ কোনরকম খেয়ে সবার আগে চেয়ার ছেড়ে দেয়। শূন্য আস্তে ধীরে খাচ্ছে। তার মনে হলো এখানে খাবার টেবিলে বসেও রোদ,পূর্ণ প্রেম করছে। সে পুরো দমে এবার শিওর ওদের মাঝে কিছু একটা আছে। শূন্যর নিজেকে নিয়ে প্রাউড ফিল হচ্ছে। ফাইনালী সে সাকসেস তার ভাবনায়।
পরের দিন সকালে সূর্য উদয়ের সাথে,সাথে ঘুম ভাঙে পূর্ণর। উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয় সে। আজকে পার্টি অফিসে কাজ আছে তার।
তূর্ণ আজকে অফিস যাবে না। আজকের সময়টা বাড়ীতেই কাটাবে। কাজের প্রেসার বেশী পড়ায় এখন একটু রেস্ট নেয়। বাকীটা পূর্ণ দেখে নিবে।
সকালের নাস্তাটা সেরে তূর্ণ নিজের রুমের সোফায় বসে ফোন স্ক্রোল করার জন্য ফোনটা হাতে নেয়। ওয়েলপেপারের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। কখন আবার শূন্য রুমে আসে। তূর্ণ টের পায়নি শূন্যর উপস্থিতি। শূন্য গলা খাকারি দিতে তূর্ণ চমকে তাকায়।
“কিছু বলবি?”
” ফাইলটা তোমার কাছে। ”
তূর্ণ টেবিলের উপর থেকে ফাইলটা শূন্যকে দেয়। শূন্য সেটা হাতে প্রস্থান করে।
শেষ বিকেলের দিকে কাজ সেরে পূর্ণ বাড়ী ফিরে। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে পানির বোতল হাতে সোফায় বসে।
তখন তূর্ণ আসে সেখানে। পূর্ণ তাড়া দেখিয়ে বলে, ” কথা আছে তোমার সাথে।”
“আগে ফ্রেশ হয়ে নে।”
“ঠিক আছে।”
**********
সিনথি তূর্ণর ছবি দেখে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রয়। আফিয়া ইসলাম মেয়ের দিকে তাকায়। এমন চুপচাপ দেখে সিনথিকে ধাক্কা দিয়ে বলে, ” কী হয়েছে সিনথি? বিয়েতে তুমি রাজী না?”
“এই ম্যানার্সলেস লোককে কোথা থেকে তুলে এনেছো তোমরা?”
” তুলে আনবো কেন?”
” এই লোককে আমার বাড়ীর ঠিকানা কে দিয়েছে।,”
“কীসব উল্টাপাল্টা বলছো তুমি?”
“আরে আম্মু এই লোকটা আস্ত ব’জ্জাত।”
” সিনথি! এসব আর কাউকে বলো না। শিকদার পরিবারের সামনে তো ভুলেও না। তাদের আদরের বড় দুলালের নামে এসব শোনলে বিয়ে ভে’ঙে দিবে।”
“তাতে কী? ছেলের অভাব পড়েছে নাকী?”
“ছেলের অভাব পড়েনি তবে ভালো ছেলের অভাব পড়েছে।”
“একে কোন দিক দিয়ে তোমার ভালো মনে হয় আম্মু?”
” তুমি কী আহিয়ানের সাথে পূর্বপরিচিত?”
” এই লোকটার নাম আহিয়ান?”
” আহিয়ান শিকদার তূর্ণ।”
“দুইদিন আগে আমায় গাড়ী দিয়ে ধাক্কা মেরেছিলো এনি। হাতে ব্যথা পেয়েছি। জানো আম্মু গাড়ী থেকে নেমে উল্টো রাগ দেখিয়েছে আমার সাথে। একবার ও স্যরু বলেনি। এমনকি জিজ্ঞেস ও করেনি ব্যথা পেয়েছি কীনা। এমনকি হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার কথাও মুখ দিয়ে বের করপনি। এমনকি টাকা ও দেয়নি ঔষধ কিনে খাওয়ার। দেখো কী লেভেলের কিপ্টা।”
“হয়ত তাড়া ছিলো।”
“ভদ্রতার অভাব বটে।”
★★★★★
রাতের ডিনার করে পূর্ণকে নিয়ে তূর্ণ ছাঁদের দিকে রওনা হয়। ততক্ষণে পূর্ণ একটা সিগারেট ধরায়। ধোঁয়া শূন্যে উড়িয়ে দিতে,দিতে পূর্ণ শুধায়, ” আসলে ওইদিন রোদকে আমি মা-রতে চেয়েছিলাম নদীতে চুবিয়ে। ছেলেটা আমারই পাঠানো লোক ছিলো। কিন্তু সেদিন তুমি বাঁচিয়ে নিয়েছে ওকে। আমি সব জানি ভাইয়া। এমনকি গতকালকের লোক গুলো তোমার পাঠানো যারা রোদকে রাফির গোডাউন থেকে উদ্ধার করে এনেছে। কিন্তু রোদ জানে ওকে আমি বাঁচিয়েছি গতকাল।”
#চলবে