তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৪৩

0
663

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪৩

.
🍁
আমরা রুম থেকে বের হতেই রিদ খান রুমের ভিতর থেকে দরজাটি আটকিয়ে দেয় উচ্চ শব্দ করে। আর আমাদের সাথে সাথে ভিতর থেকে বর্ষাও ননস্টপ চিৎকার করছে রিদ খান থেকে বাঁচা জন্য।……….

.

ননস্টপ দরজায় ধাক্কিয়ে কান্না করতে করতে ডেকে চলছি আসিফ ও তার দলবলদের বিঘত দুই ঘন্টা যাবত আমি আর কেয়া। কিন্তু বাহির থেকে কারও কোনো সাড়া শব্দ পাচ্ছি না বিন্দু মাত্র। কান্নায় আর ননস্টপ দরজার ধাক্কায় এক প্রকার কান্ত হয়ে পরি আমি ও কেয়া। শরীরের অবশিষ্ট শক্তি না থাকায় কান্না করতে করতে দরজার সামনে বসে পরি আমরা দুজন। জানি না বর্ষার সাথে কি হচ্ছে বা বর্ষা এই মূহুর্তে কেমন আছে। আমাকে আর কেয়াকে বর্ষা থেকে আলাদা করে এই বিশাল বড় রুমটিতে বন্ধ করে রেখেছে টানা দুই ঘন্টা হয়েছে। আর এই দুই ঘন্টা যাবতই কান্না করে চলছি বর্ষার জন্য। আজ যদি আমার জন্য বর্ষার কিছু হয়ে যায় তো কি করে নিজেকে সামলাব আমি, কারণ একমাত্র বর্ষায় তো আমাদের আপন জন বলতে। বাকিরা তো সব পর্মালিটি আত্মীয়তা। আমাদের মতো এতিমদের বাস্তবে কোনো সত্যিকারের পরিবার হয় না যাহ হয় সবিই মুখে মুখে আত্মীয়তা। আমার এত সব মুখ আত্মীয়তার মাঝেও একজনই ছিল যে আমার সকল বিপদে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে বাবা মায়ের মতো বর্ষা। আর সেই বর্ষাই আমার জন্য কথা বলতে গিয়ে এতো বড় বিপদের সমূহীন হতে হয়েছে ওকে। আর আজ যদি আমাদের কারও কিছু হয় তাহলে আমাদের পিছনে কান্না করার মতো কেউই থাকবে না।

.

দরজার সামনে বসে কথা গুলো ভেবেই চিৎকার করে কান্না করে উঠি যে আমাদের মতো এতিমদের লাইফে এতো শত বিপদ কেন দেয় আল্লাহ, যখন উনি জানে আমাদের এসব বিপদ থেকে বাঁচার মতো কেউ নেই পাশে। আমার আর কেয়ার চিৎকার করে কান্না করার মধ্যে দিয়ে হঠাৎই কেউ একজন আমাদের রুমের দরজার খুলে দেয় সামনে দাড়িয়ে পরে। আমি দরজার খুলার শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠে সামনে দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ খানকে। রিদ খান নিজের চোখে মুখে কঁচকে আমাদের দিকে প্রশ্নবোধক চাহনিতে তাকিয়ে আছে। উনাকে দেখে মনে হচ্ছে এখানে কি হচ্ছে উনি কিছুই জানে না আর আমাদের এতো কান্না মানেটা কি হয়তো উনি এই মূহুর্তে বুঝতে পারছে না। আমি উনার এমন চাহনি দেখে ঘৃণিত চোখে তাকিয়ে থেকে রিদ খানকে উপেক্ষা করে উঠে সাথে সাথে প্রাণপূণ দৌড় লাগায় বর্ষার রুমের দিকে। আমার দৌড়ানোর সাথে সাথে কেয়াও আমার পিছন পিছন দৌড়াতে থাকে বর্ষার উদ্দেশ্য।

.

দুই হাতে দরজা ধাক্কা দিয়ে বর্ষার রুমে প্রবেশ করি আমি আর আমার পিছন পিছন প্রবেশ করে কেয়া। হতভম্ব হয়ে রুমের ডুকে অস্থিরতার সাথে চারপাশে বর্ষাকে খুঁজে চলছি কান্নারত অবস্থায়। অস্থিরতার সাথে বর্ষাকে খুজতে খুজতে রুমের এক কোণায় এলোমেলো অবস্থায় ঘাপটি মেরে বসে থাকতে দেখি বর্ষাকে অন্ধকারের মধ্যে। বর্ষাকে চোখে পড়তেই দৌড়ে গিয়ে বর্ষার সামনে বসে পরি হাটু গেড়ে। আমার সাথে সাথে কেয়াও বর্ষার পাশে হাটু গেড়ে বসে পরে। বর্ষাকে এলোমেলো অবস্থায় দেখে কলিজা কেঁপে ওঠে আমার আমি মূহুর্তে দু’হাতে বর্ষাকে জরিয়ে হু হু শব্দ করে কান্না করে উঠি উচ্চ স্বরে। আমি বর্ষাকে জরিয়ে ধরতেই বর্ষাও আমাদের দুইজনকে একসাথে জরিয়ে নিয়ে কান্না করে উঠে শব্দ করে।

.

বর্ষাকে কি বলে শান্তনা দিয়ে বুঝাবো সেই ভাষায় এই মূহুর্তে আমার কাছে নেই। আমি নিজেই বাক্য হীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছি। তাই চুপ চাপ কান্না করেই চলছি বর্ষাকে জরিয়ে ধরে। আমার এমন কান্নার মধ্য দিয়ে হঠাৎই বর্ষা আমাদের ছেড়ে দিয়ে বস্তুতার সহিত আমাকে আর কেয়াকে ভালো করে দেখে নিয়ে আচমকাই আমার দুগাল আঁকড়ে ধরে বস্তু হয়ে বলে উঠে……….

.

—” তোর কিছুই হবে না পৃপ্তী। আমি আছি তো তোর পাশে তোর বোন তোর বর্ষা হুমমম। সব ঠিক হয়ে যাবে এবার আর আমরা একা নয় আমাদের পিছনে লোক আছে। যারা আমাদের সেইফ করবে। তোর কিছুই হবে না। আমি হতে দিব না।

.

বর্ষার উত্তেজিত হওয়া কন্ঠে কথা গুলো শুনে মূহুর্তে চুপ করে যায়। বর্ষার এই মূহুর্তে কি হয়েছে সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার একটা মূহুর্তের জন্য বুক পেটে কান্না আসছে বর্ষার জন্য, হয়তো বর্ষা রিদ খানের সাথে আজকে ঘটনার জন্য পাগল টাইপ কিছু হয়ে গেছে তার জন্য তো বর্ষা নিজের ক্ষতিটা দেখতে না পেয়ে আমাকে বাঁচানোর কথা বলছে। আমি তো ঠিকই আছি কিন্তু বর্ষা যে ঠিক নেই সেটা বুঝতে পারছে না। বর্ষাকে এমন করতে দেখে পাশ থেকে কান্না জড়িত কন্ঠে কেয়া বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……

.

—” বর্ষা প্লিজ তুই শান্ত হ, পৃপ্তী ঠিক আছে ওর কিছুই হয়নি। তুই প্লিজ নিজেকে শান্ত কর।

.

কেয়ার এমন কথায় বর্ষা ওর দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠে……..

.

—” না পৃপ্তী ঠিক নেই। শুধু পৃপ্তী নয় আমরা কেউ ঠিক নেই। আমরা কেউ সেইফ না ঐ মানুষ গুলোর হাতে। যাদের নিজের আপন জন মনে করেছি তারা আসলে মানুষই নয় তারা তো সবকয়টি লেজহীন পশু। দেখতে মানুষের মতোই কিন্তু ওরা মানুষ নয়। তাই ওদের হাত থেকে আমাদের সবাইকে বাঁচতে হবে। তোকে, আমাকে, পৃপ্তীকে আমাদের তিনজনকেই। বিশেষ করে পৃপ্তীকে বাঁচাতে হবে আমাকে আসল ঝুকিপূর্ণ তো ওর জীবনেই ঐ পশুজাতদের হাতে। তোরা তো জানিস না আমাদের আ…………

.

—” ওদের আপাতত বাকিটা না জানলেও চলবে রাইট মিস বর্ষা। আর যদি আপনাদের কান্না করার পর্বটা শেষ হয়ে থাকে তো তিন জনই ফেশ হয়ে দুপুরের খাবার ক্ষেতে নিচে চলে আসুন দ্রুত…

.

পিছন থেকে কারও কথা আসতেই চমকে উঠে পিছন ফিরে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ খানকে। রিদ খান স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে আমাদের কথা গুলো বলেন অ্যাটিটিউড সাথে। উনার এমন কথা মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আমার একে উনার জন্য বর্ষা পাগল হয়ে গেছে উল্টো পাল্টা বলছে তার ওপর আবার এখানে এসে আমাদের খাবার নিবেদন করছে। আমাদের খাবার নিবেদন না করে মেরে ফেললেই তো হয়। আমাদের এতো বড় সর্বনাশ না করলেই তো হতো।

.

আমি রাগান্বিত ফেস নিয়ে উনাকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই বর্ষা আমাকে আর কেয়াকে ফেলে রেখে দৌড়ে গিয়ে রিদ খানের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে দুহাত জোড় করে ননস্টপ লাগাতার উনাকে শুকরিয়া ও ধন্যবাদ জানিয়েই চলছে, বর্ষাকে সত্যিটা সাথে পরিচয় করানোর জন্য রিদ খানকে। রিদ খান বর্ষাকে কি এমন সত্যি জানালো তা জানি না তবে বর্ষা হঠাৎ এমন করতে দেখে আমি আর কেয়া চমকে উঠে দাঁড়িয়ে পরি হা হয়ে সেই দিকে তাকিয়ে থেকে । আর এটা ভাবতে থাকি যে কি এমন হয়েছে রুমের ভিতর যে একদিনই বর্ষার মতো মেয়ে রিদ খানের ফ্রেন হয়ে গেছে পরো দমে। আর যাই হোক হয়তো খারাপ কিছুই ঘটেনি বর্ষার সাথে এটা ভেবে সস্থির নিশ্বাস ফেলি আমি। কারণ যদি খারাপ কিছু ঘটতো তাহলে এতক্ষণ হয়তো বর্ষা অনেক কিছু করে ফেলতো নিজের সাথে। কিন্তু এতো কিছু মাঝেও একটা কিন্তু থেকেই যায় যে বর্ষাকে দুই ঘন্টা যাবত রিদ খান কি এমন সত্যি বললো যার কারণে বর্ষার মতো মেয়ে রিদ খানকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে? আর বর্ষাও বা আমাদের কি বলতে চেয়েছিল যাহ রিদ খানের জন্য বলতে পারেনি বর্ষাকে থামিয়ে দিয়েছে।

.

( আপিরা প্রথম কয়েক দিন পরীক্ষা ছিল তাই গল্প দিতে পারিনি। পরীক্ষা মধ্যে দিয়ে আমাদের পরীক্ষা আবার স্থগিত করা হয়। ভাবলাম গল্পটা আমার কন্টিনিউস করবো কিন্তু তা করার আগেই আমার নানা ভাই মারা যায়। কষ্টে আর পরিবেশ ঠিক না থাকায় সবমিলিয়ে অগোছালো একটা পরিবেশ পরে যায় আর যার জন্যই গল্প লিখতে পারিনি কোনো ভাবেই। আপিরা হয়তো আমার কষ্টটা বুঝবেন আশা করি, মন মানসিকতা ভালো না থাকলে কি আর গল্প লেখা যায়। সবকিছুর জন্যই ক্ষমা চাচ্ছি এতদিন অপেক্ষা করানোর জন্য। আর আজ থেকে রোজ গল্প দেওয়ার চেষ্টা করবো শেষ না হওয়া অবধি ইনশাল্লাহ)

.

.

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here