তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৫০

0
548

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৫০

.
🍁
—” তোর কি মনে হয় আমি মেয়েদের জীবন নষ্ট করে বেড়ায়। তোর যাহ মনে হয় তাই আমি করি। এবার বল তুই আমার কি করতে পারবি। তুই পুলিশের কাছে যাবি চল তোকে আমিই নিয়ে যাচ্ছি সেখানে। তোর সেখানে গিয়ে আমার নামে কমপ্লেন করার সাথে সাথে ওরা তোকেই জেলে ভরে দিবে কোনো কথা ছাড়ায়। কারণ রিদ খান এমনি এমনি মাফিয়া কিং হয়েছে না। বাংলাদেশ পুরো প্রত্যেকটা থানার পুলিশ আমার পকেটে রাখা। তুই যার কাছে যাবি ঘুরে ফিরে আমাকে পাবি। বাকি রইলো আমার শারীরিক চাহিদা কথা তাই না, তোর কথা মতো তোকে তো আমার ইউস করা কথা আমার তাই তো। কারণ তুই তো আমার টাকা কিনা নারী চল আজই সেই কাজটাও করে ফেলি তোর সাথে আমার শারীরিক চাহিদা মিটিয়ে নেই………

.

উনি কথা গুলো শেষ করেই আমার আরও একধাপ কাছে এসে গলা চেপে ধরে শক্ত হাতে। উনার নিশ্বাসে প্রশ্বাস সাথে আমি নিশ্বাস ভারি খাচ্ছে খনে খনে। উনি আমার চোখে মুখে দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রাগে রি রি করতে করতে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে উঠে………

.

—” আমাকে ক্ষেপাসনা। আমাকে ক্ষেপালে তার পরিনতি খুবই ভয়ানক কিছু হবে যাহ মেনে নেওয়া তোর বা অন্য কারও স্বাদের বাহিরের কিছু হবে।
আমাকে কোনো কাজে জন্য বাধ্য করিস না কখনোই। কারণ বাধ্য থাকাটা আমার রক্তে নেই। আর তোর মতো মেয়েকে দুই মিনিট ও লাগবে না আমার দুনিয়া থেকে গায়েব করে দিতে। তাই আমি যাহ চাই তাই আমাকে করতে দে নয়তো…..

.

উনার এমন হাড় কাঁপানো কাজে ও কথায় ভিতর থেকে নাড়িয়ে তুলে আমাকে। আমি আবারও উনার এমন ভয়াবহ রাগে স্বীকার হলাম। আমি উনার সাথে কাটানো ছয়টা মাসে ভুলে গিয়ে ছিলাম উনার এই ভয়ানক রাগের কথা। কিন্তু আজ আবারও মনে হয়ে গেলে উনার সেই গুন্ডামী রুপের কথা। আর মনে হওয়ার সাথে সাথে যেন ভয়টা ও দ্বিগুণ হাড়ে বেড়ে গেল উনার জন্য আমার সেই সাথে ঘৃণাটাও হচ্ছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ। কারণ প্রথম প্রথম মনে হতো উনি শুধু মানুষ মারে নিদয় ভাবে কিন্তু আজকে জানতে পারলাম উনি আমাদের মতো মেয়েদেরকে নিয়ে ও ব্যবসা করে আর এতে করেই ঘৃণাটা যেন প্রচুর হচ্ছে। আমি সেই ঘৃণার রেশ ধরে উনাকে বাকি কথা গুলো শেষ করতে না দিয়ে উনার থেকে নিজের গলা ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে আটকে আসা গলায় বলে উঠি…….

.

—” নয়তো কি? আপনি আর কতটা ক্ষতি করবেন আমাদের? আপনি মানুষ নামে আস্ত একটা পশু সমতুল্য। আপনি সহ এই আশ্রমের প্রত্যেকটা লোক নারী পাচার সামিল রয়েছে। ফাদার, মাদার, মীর্জা শেখ, তার ছেলে জিসান শেখ, সাথে আপনিও। না জানি আপনাদের সাথে আর কে কে আছে? আমি আপনাদের সবার মখুশ সবার সামনে তুলে ধরবো পুরো সমাজের সামনে আমি ভয় পাইনা কাউকে। মরলে মরবো তবুও আপনাদের সমাজের সামনে তুলে মরবো তার আগে নয়। যে আপনারা মেয়ে ব্যবসা করে বেড়ান ছিঃ……..

.

আমার এমন কথায় যেন উনি আরও রেগে যায় দ্বিগুণ। হিংস্র প্রাণীর মতো ক্ষেপে গিয়ে আমার গলা আরও শক্ত করে চেপে ধরে দেয়ালের সাথে বাড়ি খাওয়ায়। উনার আমার গলা শক্ত করে দেয় ধরায় আমি এবার ঠিক করে নিশ্বাস নিতে না পেরে কাশতে কাশতে হা হয়ে নিশ্বাস নেওয়া চেষ্টা করতে থাকি। কিন্তু তারপর ও উনার থেকে বিন্দু মাত্র ছাড় পাচ্ছি না উল্টো আরও বেশি উনার রাগে স্বীকার হচ্ছি। উনি রাগান্বিত ফেসে আমাকে হুমকি স্বরুপ দাতে দাঁত চেপে বললো……

.

—” সেটাতো আমাদের কাজ। তোদের মতো মেয়ে আমি রোজ একটা করে ভোগ করি তাহলে তুই বাদ থাকবি কেন। আজকে তোর পর্বটা ও শেষ করবো তোকে ভোগ করে। তোকে আমি আমার ভোগের জন্যই রেখেছি তাহলে তোকে আমি ছাড় দিব কেন?

.

কথা গুলো বলে আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আমাকে সাথে সাথে নিজের কাঁধে তুলে নেই দক্ষ হাতে। আর আমি উনার পিছনে থেকে পিঠের উপর কিল ঘুষি মারছি নিজেকে বাঁচার জন্য। উনি আমাকে নিয়ে আমার রুমে দরজা ধরে বেড় হবো তার আগেই হাজির হয় বর্ষা ও কেয়া। আমার এই অবস্থা দেখে মূহুর্তে চমকিত হয় বর্ষাও কেয়া। কি হয়েছে জানার জন্য রিদ খানকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিদ খান হিংস্র চেহেরাটা দেখে সাথে সাথে চুপ করে যায় বর্ষা। বর্ষা চুপ করে গেলেও কেয়া দমে যায় নি রিদ খানের হিংস্র চেহেরাটা পিছনে। কেয়া উত্তেজিত হয়ে একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে আর রিদ খান থেকে আমাকে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে প্রাণপূণ ভাবে। রিদ খানকে কোনো ভাবেই আমাকে নিয়ে যেতে পারছে না বলে। উনি রেগে আসিফকে হাক ছেড়ে ডেকে বলে উঠে……..

.

—” আসিফইইইই…..

.

উনার এমন ডাকে দৌড়ে এগিয়ে আসে আসিফ। রিদ খানের দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে চারপাশে শুক চোখে পযবেক্ষন করে বুঝতে পারে এখানে কি হচ্ছে। আসিফ সবটা বুঝতে পেরে বিনিময় সুরে আস্তে করে বলে…….

.

—” জ্বিই ভাই বলুন…..

.

আসিফের এমন কথায় রিদ খান কেয়াকে উদ্দেশ্য করে আসিফ শক্ত গলায় বললো……

.

—-” মিস কেয়ার মনে হয় প্রেশার ফল করেছে। তার জন্য এমন ছটফট করছে আমার সামনে নিজের বান্ধবীকে বাঁচাতে। এর মনে হচ্ছে জানে মায়া নেই তাই বান্ধবী সাথে সাথে নিজেকে বিলাতে চাই অন্য কারও ভাগে। তাই মিস কেয়াকে কিছু একটা কর। আমার কাজে কোনো বাঁধা পছন্দ না সেটা তোর অবশ্যই জানা আছে।

.

উনার এমন হুমকি স্বরুপ কথা শুনে আসিফ সাথে সাথে নিজের মাথা নাড়িয়ে সুমতি জানিয়ে বলে উঠে…..

.

—” জ্বিই ভাই…..

.

কথাটা বলার সাথে সাথে আসিফ ও কেয়াকে পাঁজর কোলে তুলে নিয়ে সামনে দিকে এগিয়ে যায় বিনা বাক বয়ে। আর কেয়াও আমার মতোই নিজেকে বাঁচানোর জন্য হাত পা ছোড়াছুড়ি করতে থাকে একক ভাবে…

.

আমার সাথে সাথে কেয়াকেও ধরে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে রিদ খানের সাথে। আমাকে আর কেয়াকে যখন রিদ খান জোর করে সাথে নিয়ে যাচ্ছিল তখনও বর্ষা চুপ করে পাশে দাঁড়িয়ে সবটা দেখছিল করুণ চোখে কাউকে কিছু না বলে। এতে করে আমি আর কেয়া যতটা না আবাক হয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলাম যখন বর্ষা রিদ খানের ডাকে সাড়া দিয়ে ছিল। আমাকে রিদ খান কাঁধে তুলে কিছুটা পথ এগিয়ে যেতেই হঠাৎ থেমে গিয়ে পিছনে ফিরে না তাকিয়ে বর্ষাকে উদ্দেশ্য আদেশ স্বরুপ করে বলে উঠে……….

.

—” মিস বর্ষা আপনাকে আমার আজকের রাতটা প্রয়োজন হতে পারে। তাই কোনো রকম কথা না বলে চলুন আমার সাথে……

.

উনার এমন কথায় উনি বর্ষাকে কি বুঝালো জানি না। তবে সাথে সাথে বর্ষার চোখে মুখে ভয়ে চাপ স্পষ্ট ফুটে ওঠে মূহুর্তেই। আর বর্ষা ভয়টা নিজের মধ্যে সংযম রেখে ভয়াৎ কন্ঠে বললো……

.

—” তার মানে কি পৃপ্তী সবকিছু জানতে…….

.

বর্ষাকে বলতে না দিয়ে রিদ খান শক্ত গলায় বলে উঠে…….

.

—” বেশি কথা পছন্দ নয় মিস বর্ষা। কি হয়েছে সেটা সময়ে সাথেই বুঝতে পারবেন। আর আপনি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন সেটা একটু শুক চোখে পযবেক্ষন করে নিন একটু। আমার মনে হয় আপনি আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন।

.

উনার এমন কথা বর্ষা ভূত দেখার মতো করে চমকে উঠে চারপাশে দ্রুত নিজের চোখ বুলাই। বর্ষা চারপাশে কি দেখলো তা জানি না। কিন্তু চারপাশটা একটু দেখেই চুপ করে যায় আপনা আপনি। আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ চলে আসে রিদ খানের পিছন পিছন। আমি বর্ষার এমন কন্ডে হতভম্ব হয়ে যায় সাথে সাথে। সাথে এটা ভাবতে থাকি কি এমন লুকাচুরি খেলছে বর্ষা আর রিদ খানের মাঝে। আমার এমন চিন্তা ভাবনায় মাঝে রিদ খান থেকে ছোটার জন্য হাত পা ছোড়াছুড়ি করতে থাকি আর চিৎকার করে আশ্রমের সবাইকে বলতে থাকি আমাদের বাঁচানোর জন্য রিদ খানের হাত থেকে। কিন্তু আমাদের কান্না শুনে কেউ এগিয়ে আসিনি রিদ খানের সামনে। উল্টো পিছন থেকে মাদার দাঁড়িয়ে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল একটা পিলারের পিছনে হয়তো আমাদের মধ্যে সবকিছুই শুনতে পেয়ে আড়ালে থেকে। মাদারের রাগান্বিত ফেস দেখে বুঝতে পারি আমি। হয়তো এখন অজানা কোনো জাল বুনবে আমাদের জন্য হয়তো নতুন কোনো ফাদ আঁটবে আমাদের জন্য।

.

.

.

(দশমিনিট পর দ্বিতীয় পর্বটা দিব ইনশাল্লাহ)

.

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here