#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪২
.
🍁
বন্ধ দরজার ভিতরে বসে আছি আমি, কেয়া ও বর্ষা। স্বাভাবিক অবস্থায় বসে আছি সেটা কিন্তু মোটেও নয়। হাত পা বাধা অবস্থায় বসিয়ে রেখেছে রিদ খান আমাদের চেয়ারের সাথে। বন্ধ দরজার ভিতরে বসিয়ে রাখলেও রুমটি কিন্তু অন্ধকার নয়।ভরপুর লাইটিং এর সাথে বসিয়ে রেখেছে আমাদের রিদ খান, বিশাল বড় একটি রুমের ভিতর। ঝাঁক ঝমক রুমটি দেখে মনে হচ্ছে এটি কোনো আলিসান বাড়ি হবে কারও। আর এই কাউকে ও রিদ খানই হবে। কারণ আমাদের চারপাশে ভরপুর বডিগার্ড রয়েছে রিদ খানের। তাই আমি অনাহেষেই বলতে পারি এটি রিদ খানেই অন্য একটি বাড়ি। আমাদের তিন জনকে রিদ খান বিগত তিন ঘন্টা যাবত ধরে এই রুমটিতে বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখেছে বুন্ধি দশায়। আমরা তিন জনই শুরুতে চটপট করতে করতে একটা সময় শান্ত হয়ে যায় কান্তিতে। আর আমাদের বেঁধে রেখে গুন্ডা মহাশয় মানে রিদ খান কোথায় আছে সেটা আপাতত বলতে পারছি না।
.
বুন্দী দশায় বসে থাকতে থাকতে আমি একটা সময় ঘুমে ঝিমতে থাকি। আমি ঘুমের ঘরে ঢলে পড়তেই হঠাৎই কেউ রুমের ভিতর প্রবেশ করে ধুপ ধাপ পা ফেলে। আমি ঘুমের ঘরে চমকে উঠে সেদিকে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদ খানকে। উনি আমাদের সামনে দাড়াতেই পাশ থেকে একটা বডিগার্ড এসে উনাকে একটা চেয়ার এগিয়ে দেয় দ্রুততা সঙ্গে। উনি সেই চেয়ারটায় পায়ে ওপর পা তুলে আমাদের উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন সিক্ত কন্ঠে বললো……
.
—” তো ম্যাডামদের চটপট করা শেষ? নাকি আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে হাত পা নাড়াচাড়া করার জন্য এখান থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য হুমমম।
.
উনার এমন বেখেয়ালি কথায় আবারও ক্ষেপ্ত হয় আমরা তিন জনই। আর হবো বা না কেন? উনি আমাদের জোর করে চেয়ার সাথে বেঁধে আটকিয়ে রেখেছেন রুমের ভিতর। আর আমরা নড়াচড়া করলেই দোষ। আর উনার কথা অনুযায়ী, উনি জোর করতে পারবে আর আমরা নড়াচড়া করতেও পারবো না এখান থেকে ছুটাবার জন্য। উনার আমাদের জোর করে বেধে রাখাটা ছিল মহাকাজ। আর আমাদের নড়াচড়া ছিল মহাপাপ। উনার বলা কথা গুলো শুনেই মূহুর্তেই রাগটা যেন মাথায় চেপে বসে। আমি সেই রাগের বশে রিদ খানকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই পাশ থেকে বর্ষা ক্ষেপ্ত সুরে রিদ খানকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..
.
—” রিদ খান আপনার মনে হচ্ছে না, আপনি আমাদের সাথে বেশি বেশি করছেন? আশ্রম থেকে তুলে এনে এখানে বেঁধে রেখেছেন জোর করে। সাথে একে পর এক ভয় দেখিয়ে চলছেন পৃপ্তীকে শুরু থেকে। আর এখন আপনি পৃপ্তীর সাথে সাথে আমাদেরও ভয় দেখাতে চাইছেন। সেটা কেন করছেন আপনি আমরা জানতে চাই?
.
—” আপনার এতো কেন উত্তর দিতে বাধ্য নয় আমি মিস। কারণ এটাই গেইম? আর আমার এই গেইমের প্রথম চলটাই হলো আপনার ফ্রেন্ডকে দিয়ে মানে মিস পৃপ্তীকে দিয়ে। আর এখন আপনারা দুই জনও অংশীদারী হয়ে গেলে এই গেইমের।
.
উনার এমন কথায় আমরা তিন জনই ঘাড় দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে এক সঙ্গে বলে উঠি…..
.
—” মানেহহহহহহ…….
.
—” ওহ বেশ কৌতুহল দেখছি সবার চোখে এরপর কি-হয় সেটা নিয়ে তাই তো। যাই হোক, তবে হ্যাঁ খুবই ইন্টারেস্টিং কিছু হতে চলছে আপনাদের সাথে।
.
রিদ খানের এমন ঘুর প্যাচ কথায় কিছুই বুঝতে না পেরে ঘুর আপত্তি জানায় বর্ষা। তাই রেগে উত্তেজিত হয়ে উচ্চ স্বরে সে বলে উঠে……
.
—” আপনি আমাদের সাথে কি করতে চাইছেন সেটা স্পষ্ট ভাষায় কেন বলছেন না। কেন আটকিয়ে রেখেছেন আমাদের এখানে।
.
রিদ খান বিরক্তি ভাব প্রকাশ করে বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে দাতে দাঁত চেপে বলে উঠে…..
.
—” আপনি বেশি চেচামেচি করেন মিস। যেটা আমার মোটেও পছন্দ না। সবসময় নিজের জবান কন্ট্রোলে রাখবেন মিস বর্ষা। আর নয় তো আমি বেশিক্ষণ নিজেকে কন্ট্রোলে রাখতে পারবো না। এমনটা যাতে না হয় আপনার জবানের সাথে সাথে নিজের জীবনটাও হারাতে হয় আপনাকে।
.
বর্ষাকে শাসাতে দেখে আমি সাথে সাথে রাগান্বিত ফেস করে বলে উঠি…..
.
—” আপনি আমাদের মারতে চাইলে আমরাও আপনাকে ছেড়ে দিব না খারাপ লোক……
.
—” তোমাকে ছাড়তে কে বলে আমাকে, আমি তো চাই তুমি আমাকে ধরেই রাখো। আমি কিছু বলবো না তোমাকে। আর বাকি রইলো তোমার ফ্রেন্ড বর্ষা তারও ব্যবস্হা আমি করে রেখেছি আগের থেকেই। আজকে পর থেকে সেও কখনোই আর আমার সাথে চেচামেচি করে কথা বলতে পারবে না।
.
কথা গুলো বলেই আসিফকে শব্দ করে ডেকে বলে, আমাকে আর কেয়াকে এই রুম থেকে নিয়ে যেতে বর্ষাকে একা রিদ খানের সাথে রুমের ভিতর রেখে যেতে। সেই সাথে রুমের সব গুলো বডিগার্ডকেও বাহিরের চলে যেতে বলে। রিদ খানের এমন কথায় তখন কলিজা কেঁপে ওঠে আমাদের তিন জনই। রিদ খান বর্ষার সাথে খারাপ কিছু করবে এটা ভেবে আমরা তিন জনই চিৎকার করে উনার কাছে বলছি এমন কিছুই উনি বর্ষার সাথে না করতে। কিন্তু রিদ খান আমাদের কোনো কান্নায় পাত্তা না দিয়ে, বডিগার্ড দিয়ে আমাকে ও কেয়া রুমে থেকে বেড় নেই অন্য একটা রুমে নেওয়ার জন্য। আমরা রুম থেকে বের হতেই রিদ খান রুমের ভিতর থেকে দরজাটি আটকিয়ে দেয় উচ্চ শব্দ করে। আর আমাদের সাথে সাথে ভিতর থেকে বর্ষাও ননস্টপ চিৎকার করছে রিদ খান থেকে বাঁচা জন্য।……….
.
(জানি আপিরা ছোট হয়েছে কিন্তু আমার পরীক্ষা চলছে তাই ছোট করে লেখেছি তাও তোমাদের মন রক্ষা জন্য)
.
.
.
চলবে……….