তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৪৬

0
498

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪৬

.
🍁
আমি উনার কথায় ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় উনার দিকে উনার চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে বলি……..

.

—-” তার মানে আমি আপনার আপন জন…….

.

আমার দৃষ্টিতে উনি নিজের দৃষ্টি স্থির রেখে বলে উঠে….

.

—” হুমমমমম আমার আপন জন, আমার পিচ্চি ম্যাডাম…….

.
উনার চোখে দিকে তাকিয়ে বলে উঠি…..
.

—” আর বর্ষা?

.

আমার এমন প্রশ্নে রিদ খান উনি আমার গালে একহাত রেখে গালের স্লাইড করতে করতে বলে উঠে…..

.

—” তোমাকে দিয়ে আমার বাকি সব সম্পর্ক স্হাপন করা। আমার লাইফে তুমি ছাড়া আর দুটো পারসোন আছে যারা আমার কাছে ইম্পরট্যান্ট। আর বাকি সব অপশনাল পারসোন আমার কাছে।

.

উনার এমন কথায় মূহুর্তে আমার মাথায় বেশ কয়েটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো ক্ষণে ক্ষণে। তার মধ্যে প্রথম প্রশ্নটা হলো যে আমি ছাড়া বাকি পারসোন গুলো কারা? উনার কি বউ আছে নাকি মা বাবা কথা বলছে উনি আমাকে? দ্বিতীয়টা হলো আমি উনার জন্য এতটা ইম্পর্ট্যান্ট কেন? তৃতীয় হলো বর্ষা কি তাহলে উনার জন্য ইম্পর্ট্যান্ট নাহ? আমার এমন ঘুরপাকের মধ্যে দিয়ে হালকা কপাল কুচকে উনাকে প্রশ্ন করে বলি……

.
—” দুটো পারসোন কে? আপনার মা বাবা বুঝি?

.

আমার এমন কথায় মূহুর্তে উনি আমার গাল থেকে হাতটা ছেড়ে দিয়ে ঠিক হয়ে বসে সোজাসাপ্টা উত্তরে বলে উঠে…..

.
—” আমার মা-বাবা কেউ নেই। তারা আমার চার বছর বয়সেই মারা যায় একটা কার এক্সিডেন্টে তাদের কথা আমার কিছুই মনে নেই। এখন তাদের নিয়ে আমার কোনো রকম ভাবান্তর নেই। কারণ যাদের আমি ঠিক করে দেখিনি তাদের নিয়ে আমার কোনো রকম দুঃখ নেই। তাই তাদের ছাড়াও আমার লাইফে দুটো মানুষ আছে যাদের জন্য আমিটা অনেক ইম্পরট্যান্ট।

.

উনার মা বাবা নেই কথা শুনেই মনে মধ্যে কেমন একটা মায়া কাজ করলো মূহুর্তেই উনার জন্য। উনি যে আমার মতো এতিম এটা কখনোই উনাকে দেখা সেটা বুঝা যায় না। হয়তো উনি কাউকে বুঝতে দেয় না। সবসময় নিজেকে সবার সামনে নিজের শক্ত ভাবে প্রকাশ করে তাই হয়তো আজ পযন্ত উনার একাকিত্বটা কেউ বুঝতে পারে না। এমনকি আমিও না। আমি বুঝি যাদের মা বাবা না থাকে তারা নিজেদের কতটা অসহায় হয় এই দুনিয়াতে। আমি সম্পূর্ণ বিষয়টি এক মনে ভেবে নিয়ে তাকায় উনার দিকে মায়াময় দৃষ্টিতে, উনার দিকে তাকিয়ে থেকে কাতর কন্ঠে বলে উঠি………

.

—” আপনি কি খুব বেশি মিস করেন আপনার মা বাবাকে আমার মতো……

.

কথায় পেক্ষিতে উনি সাথে সাথে সোজাসাপ্টা উত্তরে বলে উঠে……

.

—” না আমি তাদের মিস করি না কখনোই। তাদের মিস করার মতো কখনো কোনো কারণ খুঁজে পাই নি। কারণ তাদের জায়গায়টা আমার জীবনে অন্য কেউ দক্ষল করে নিয়েছে অনেক আগেই । আর আমি তাদের নিয়ে হেপি তাই অন্য কাউকে নতুন করে প্রয়োজন হয় না।

.

উনার কথায় কৌতুহলী হয়ে বলে উঠি…….

.

—” কে আছে আপনার জীবনে আপনার বউ বাচ্চা?

.

আমার এমন কথায় ঘাড় ঘুরিয়ে বাকা হয়ে তাকায় আমার দিকে, পরে আমার কথায় উত্তরে হালকা বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে……

.

—” বউ আর বাচ্চা। নিজের বউই বাচ্চা হয়ে বসে আছে, বউ যে হবে কোন কালে তারই ঠিক নেই আবার বাচ্চা।

.

উনার এমন কথায় এবার কপাল কুচকে এলো আমার। উনার এলোমেলো উত্তরে এবার আমি নিজেই কনফিউজড হয়ে যাচ্ছি। তাই উনার থেকে সম্পূর্ণ বিষয়টি জানার জন্য আবারও কৌতুহলী হয়ে বলে উঠি……..

.

—” বলুন না কে?

.

আমাকে কৌতুহলী চোখে উনার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আস্তে করে বলে উঠে…….

.

—” আছে কেউ….

.

কথাটা বলেই সাথে সাথে উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে সোজা সামনে দিকে হাটতে থাকে গাড়ির উদ্দেশ্য। উনার হঠাৎ এমন কান্ডের আমি চমকে উঠে তাল সামলাতে না পেরে সাথে সাথে নিজের দুহাতে উনার গলা জরিয়ে ধরি। সম্পূর্ণ বিষয়টি কি হয়েছে বুঝতে পেরে সাথে সাথে হাত পা ছুঁড়াতে থাকি উনার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য। কিন্তু কোনো ভাবে ছুঁড়তে পারছিলাম না আমি। আমি যতই উনার থেকে ছুটতে চাই উনি ততই আমাকে আরই শক্ত করে চেপে ধরে নিজের সাথে। আমি একটা সময় কান্ত হয়ে চুপচাপ বসে থাকি উনার কোলে। উনি আমাকে কোলে করে গাড়িতে সামনের সিটে বসিয়ে দিয়ে আমার পাশের সিটে বসে পরে কার ড্রাইভিং করার জন্য চুপচাপ। গাড়িতে বসে আমি প্রথম প্রথম উনাকে বেশ বিরক্ত করলেও উনি সারাটা পথ চুপ করেই ছিলেন।

.

কিছুক্ষণ কার ড্রাইবিং করার পর রিদ খানের গাড়িটি এসে থামে বিশাল একটি বাড়ির সামনে। গেটের সামনে গাড়িটি আসতেই দুটো দারোয়ান সালাম দিয়ে দ্রুত গেইড খুলে দেয়। রিদ খানের গাড়িটি বিশাল বাগান ধরে একটা মহলের সামনে এসে থামে। আমি গাড়িটির ভিতর থেকেই বাড়িটির বাহিরের দৃশ্য দেখে হা হয়ে তাকিয়ে থাকি। বাড়ির চারপাশে পরিবেশটা দেখে বুঝা যাচ্ছে কোনো রাজা তার শখের বশে এই মহলটি তৈরি করেছে বিলাশ বহুল জীবন যাপন করার জন্য। আমি সম্পূর্ণ মহলটি হা হয়ে তাকিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছি গাড়ি থেকে নেমে জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে। আমার এমন করা মধ্যে দিয়েই রিদ খান আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে বিশাল ড্রয়িংরুমে সোফায় বসিয়ে দিয়ে আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আমার হাত দুটো চেপে ধরে বিনিময় সুরে বলে উঠে…….

.

—” লাইফে ফাস্ট কোনো মেয়েকে আমার পারসোনাল বাংলোতে নিয়ে এসেছি আর সেটাও তুমি। আর সেই সাথে কোনো মেয়েকে যদি ছুঁইয়ে থাকি সেটা তুমি। তোমাকে এখানে নিয়ে আসার দুটি কারণ।

.

কিছুটা থেমে আবারও বলে উঠে……

.

—” প্রথম হলো আমি চাই তুমি আমাকে ফিল করো। দ্বিতীয় তুমি শুধু আমাকেই ফিল করু সেটা ইচ্ছাকৃত হোক বা তোমার অনিচ্ছা হোক।

.

উনার কথার মানে বুঝতে না পেরে হালকা কপাল কুচকে বলে উঠি……
.

—” মানে…….

.
—” মানেটা খুব সহজ, যাহ আমার চাই তা আমার চাই-ই চাই সেটা নিয়ে আমি কখনোই কম্পোমাইজ করি না। এমন কি আমার চাওয়া জন্য যদি আমারই আপনজন কেউ আমাই সামনে এসে দাঁড়ায়, তাহলে তাকেও আমি আমার সামনে থেকে সরিয়ে দিতে দ্বিধা বোধ করবো না সে যেন হোক না কেন । তুমিটা আমি চাই-ই চাই যে কোনো কিছু মূলেই……..

.

উনার কথায় আমি মূহুর্তেই হালকা ভরকে গিয়ে বলে উঠি……

.

—” আপনিটা জানি কেমন, কখনোই বুঝতে পারি না।

.

—” আমি কি চাই সেটা আমিতে সীমাবদ্ধ। সময়টা আমি ঠিক করি আর সবাই আমার ঠিক করা সময়ে চলে। তাই আমাকে আপাতত তোমার না বুঝলেও চলবে তুমি শুধু আমাকে ফিল করো সেটাই তোমার প্রধাণ কাজ। আর তার জন্য আমিই তো আছিই। আর তার শুরুটা আজ থেকেই করা যাক……….

.

( দুটো পার্টের বদলে একটা পার্ট বড় করে দিলাম)

.

.

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here