#আশার_হাত_বাড়ায় |১৬|
#ইশরাত_জাহান
🦋
ঢাকার বড় একটি রেস্টুরেন্টের সামনে দাড়ালো ফারাজের গাড়ি।শ্রেয়া গাড়ি থেকে নেমেই দেখতে থাকে আর শুকনো ঢোক গিলতে থাকে।হাতে থাকা ফাইলটি নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।ফারাজ ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি থেকে বের হয়।শ্রেয়াকে দেখে বলে,”ডোন্ট ওরি।আমি আছি তো।”
শ্রেয়া একটু শান্তি পেলো।ফারাজ সবকিছু সামলে নিবে। আর কোনো চিন্তা থাকে না।শ্রেয়াদের পিছনে আরেকটি গাড়ি এসে থামে।সেখান থেকে বের হয় এনি।এনি এসে শ্রেয়াকে জড়িয়ে ধরে।শ্রেয়াকে দেখে বলে,”ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস।”
“থ্যাংক ইউ,এনি।”
সবাই মিলে লিফটে উঠে যায়।ফারাজ তার ডান হাত বাড়িয়ে দেয় শ্রেয়ার দিকে।অপলক হয়ে তাকিয়ে আছে শ্রেয়া।হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মানে কি বুঝতে পারছে না শ্রেয়া।লিফটে তো উঠেছে।এনি ওদের পিছনে দাড়িয়ে দেখছে।কিছুক্ষণ পর ফারাজ তাকালো শ্রেয়ার দিকে।তারপর নিজের হাত দেখে বলে,”I didn’t want to hold your hand.Give me my file.”
বলেই ফারাজ ইশারা করে শ্রেয়ার হাতে শক্ত করে ধরে রাখা ফাইলের দিকে।লজ্জা পেলো শ্রেয়া।এনি মুচকি হেসে বলে,”আরে শেহনাজ, ফাইলগুলো একটু চেক করতে চায় হ্যান্ডসাম।তাই হাত বাড়িয়েছিলো।এটা বসদের একটি ট্র্যাডিশনাল ওয়ার্ক।এভাবে হাত বাড়িয়ে দিবে আর তার এসিস্ট্যান্ট তাকে ফাইল দিবে। এম আই রাইট হ্যান্ডসাম?”
“ইয়াহ একচুয়ালি আমিও অভ্যস্ত হয়েছি এমন বিহেভ করে।”
শ্রেয়া ওর হাতে থাকা ফাইল ফারাজকে দিয়ে দিলো।ওটা দেখতে থাকে ফারাজ।এর মধ্যেই লিফট এসে কাঙ্ক্ষিত ফ্লোরে থেমে যায়।ফারাজ ফাইলগুলো আবার শ্রেয়াকে দিয়ে আগে আগে যেতে থাকে।এনি ও শ্রেয়া তার পিছনে।রেস্টুরেন্টের বড় একটি টেবিলে বসে আছে বিদেশী ক্লায়েন্ট।ফারাজ এসে তাদের সাথে হ্যান্ডশেক করে।এনি ওদের কাছে আসতেই ওরা এনির ডান হাত নিয়ে হ্যান্ডশেক করে এনির হাতের পিঠে ছোট করে একটি কি”স করে দেয়।যেটা দেখে শ্রেয়ার চোখ বড় বড় হয় যায়।বিপাকে পড়ে যায় শ্রেয়া।এভাবে সে কিছুতেই করতে পারবে না। চাকরি করতে গেলে এগুলো করতে হবে নাকি?তাহলে তো চাকরিটাই বাদ।লোকগুলো এবার শ্রেয়াকে দেখে তাদের হাত বাড়িয়ে দেয়।শ্রেয়ার হাত কাপছে।ও হাত বাড়াবে না।ফারাজ এটা লক্ষ্য করে বলে,”she follows Bengali customs.”
“Oh!I see.She is looking so beautiful.”(একজন ক্লায়েন্ট বলে)
বিপরীতে আরেক ক্লায়েন্ট বিড়বিড় করে বলে,”Also hot.”
সকাল সকাল দরজা ধাক্কানোর শব্দে ঘুম ভেংগে যায় অহনার।বিরক্ত লাগছে তার।মাত্র দশটা বাজে।দরজা খুলতেই দেখতে পেলো হুইল চেয়ারে করে বসে আছে মিসেস নাজমা।হামি দিতে দিতে অহনা বলে,”কি হয়েছে?এত সকাল সকাল ডাকছেন কেনো?”
“এত সকাল সকাল!এই মেয়ে তোমাকে না বলেছিলাম আমার সকালের খাবার তুমি রান্না করবে।করেছো?”
“না।”
“তোমাকে কি ফ্রীতে টাকা দিবো আমি?যাও ভালোভাবে রান্না করো।”
“একদিনে কি রান্না শেখা যায়?আমি তো রান্না পারি না।”
“সার্ভেন্ট আছে কিচেনে।গেলে দেখতে পাবে।ওরা শিখিয়ে দিবে।”
অহনা আর কোনো কথা না বলে চলে যেতে নেয়। আবারও পিছন থেকে মিসেস নাজমা বলেন,”নামাজ পড়েছো সকালে?অবশ্য ঘুম থেকেই তো মাত্র উঠলে।আমার খাবার রেডি নেই আর তুমি পড়বে নামাজ!”
“না পড়িনি।তো কি হয়েছে?”
“আমি বেনামাজীর হাতে কিছু খাই না।”
খুশি হয় অহনা।ঘরের দিকে যেতে যেতে বলে,”তাহলে তো ভালো।আপনার সার্ভেন্টদের বলুন রান্না করতে।আমি আরেকটু ঘুমিয়ে নেই।”
চোখ ছোট ছোট করে মিসেস নাজমা বলেন,”তোমাকে কি আমি এখানে ফাও কাজে টাকা দিবো?”
“আরে দিবেন তো মাত্র ওই কয় টাকা।তার জন্য এত ফরমায়েশ কেনো?”
“শোনো মেয়ে তোমার কাছে ওটা ওই কয়টাকা হতে পারে কিন্তু আমার কাছে ওগুলো আমার ছেলের খাটনির টাকা।যাও নামাজ পড়ে আমার জন্য রান্না করো।”
“রান্নার সাথে নামাজের কি সম্পর্ক?”
“অন্যদের ব্যাপার জানি না আমি এমনটা করি তাই তুমি আমার মন মতো চলবে।নাহলে তোমার চাকরি বাদ।”
এবার বাধ্য হলো অহনা।বিরক্তির সাথে বলে,”আমি নামাজ পারি না।”
মিসেস নাজমা যেনো আকাশ থেকে পড়লেন।এই মেয়ে নামাজ পড়তে পারে না।বলেন,”দুনিয়ায় শিক্ষিত হয়ে লাভ নাই।আখিরাতের জন্য করা কাজগুলোই তোমার আসল শিক্ষা।তাই এভাবে ডেঙডেঙ করবে না।এবার থেকে আমি শিখিয়ে দিব।চলো আজকে শুধু ফরজ আদায় করবে।আজ থেকে তুমি আমার সাথে ঘুমাবে।ভোরে উঠে নামাজ পড়বে আমার সাথে।”
বিরক্ত হলেও অহনা চলে যায় মিসেস নাজমার সাথে।টাকার জন্য নিজের বাজে অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে।
বাজারের মধ্যে তর্ক বিতর্ক চলছে দুই ব্যক্তির।একজন সবজিওয়ালা আর আরেকজন সৃষ্টি বেগম।সবজিওয়ালা সবজির দাম যা বলছেন তা শুনে সৃষ্টি বেগম তেতে ওঠেন।তার ভাষ্যমতে দাম নাকি তিনগুণ বেশি। রিমলি পাশে দাঁড়িয়ে সৃষ্টি বেগমকে থামানোর ব্যার্থ চেষ্টা করছে।কোনো কিছুতে কাজ হচ্ছে না।সৃষ্টি বেগম জোরে জোরে চিল্লিয়ে বলেন,”আমি এসবের দাম জানি না ভাবছেন। আরে এগুলো তো আমাদের বাড়ির সামনে এমনি এমনি হয়।এসব সবজি আমাদের বাড়িতে হইলে লোকে আরো আমাদের বাসায় এসে সবজি নিয়ে যেতো।”
অমুক সবজি এত দামে কিনেছি তমুক সবজি এত দামে কিনেছি।এখন দুদিনে দাম বেড়ে গেলো?এরকম বলতে থাকে সৃষ্টি বেগম।চেঁচামেচির আওয়াজে সেখানে লোকজন জড়ো হয়।কথা কাটাকাটির মাঝে সবার কানে ভেসে আসে,”এখানে কি হচ্ছে?”
সবাই তাকালো সেদিকে।পুলিশের পোশাক পরে দাড়িয়ে আছে শিহাব।সৃষ্টি বেগম এবার শিহাবের কাছে এসে বলেন,”দেখো বাবা এই সবজি আমরা কিনতাম বিশ টাকা দিয়ে।এখানে উনি বলছে এর দাম ষাট টাকা।আমার কথা হইলো যশোরের থেকে দাম বেশি হোক তাই বলে এত? বিশের জায়গায় নাহয় ত্রিশে ধরা হোক।কিন্তু ষাট তো অনেক বেশি।”
শিহাব এবার সৃষ্টি বেগমকে কিছু বোঝাতে যাবে ওমনি রিমলি এসে সৃষ্টি বেগমকে বলে,”কি করছো মা?এমনি সময় তো মুখ ফোটে না তোমার।এখন কেনো এত তর্ক?”
ক্ষেপে গেলেন সৃষ্টি বেগম।রাগ দেখিয়ে বলেন,”আরে আগে না হয় চুপ থাকার কারণ ছিলো।আমার মেয়ে যখন রাস্তা পেয়েছে আমি কেনো নিজে ঠকব আর বাকিদের ঠকতে দিবো?আগে আমার সামর্থ্য ছিলো না আমিও প্রতিবাদ করতাম না।এবার থেকে করব।দেখি কে কি বলে।”
“আরে মা তুমি কি শুরু করছো?মানুষ কি বলবে?”
আর কোনো কথা হবার আগে শিহাব বলে ওঠে,”এটাই তো জাতীয় মায়ের পরিচয়।”
রিমলি এবার অবাক হয়ে বলে,”মানে?”
“মানে এই যে আণ্টি যেটা করছে আর কি।এই যেমন আমি এত সকালে ডিউটি আছে তাই রেডি হলাম কিন্তু আমার মা আমাকে বাজারের ব্যাগ দিয়ে বলে বাজার করতে।না করলে হরতাল শুরু করবে।তাই বললাম আর কি হরতাল করা মায়েদের জাতীয় কাজ।”
চারপাশের মানুষ হেসে দেয়।শিহাব এসে সবজিওয়ালাকে বলে,”উনি যে দামে বলছে সেই দামে বিক্রি করো।নাহলে কিন্তু তোমার দোকানের সবজি নিয়ে তদন্ত করা হবে। টাটকা সবজি তো তোমরা কোনোদিন দিবে না।অন্তত দাম তো কমিয়ে রাখবে।”
শিহাবকে দেখে ভয় পায় সবজিওয়ালা।ঢোক গিলে বলে,”আচ্ছা আচ্ছা।উনি যে দাম বলছে ওই দামে দিবো।নেন সবজি নেন।”
সৃষ্টি বেগম খুশি হয়ে সবজি নিতে নিতে শিহাবের দিকে তাকিয়ে বলে,”ধন্যবাদ বাবা।”
তারপর সবজিওয়ালাকে দেখে বলে,”এমনি সকাল দশটার পরে আসছি।তার উপর আবার দেখা যায় সবজিগুলো শুটকো শুধু পানি ছিটানো।এসব ভেজাল বিক্রি করো আবার চড়া মূল্য দিয়ে।এভাবে করলে আমরা না খেয়ে মরে যাবো।তাই অন্তত সবকিছু না হোক কিছু সবজির দাম কম রাখা ভালো।অন্তত শাক পাতাগুলো।এত দাম দিলে গরীবরা শাক ভাজিটাও তৃপ্তি করে খেতে পারবে না।”
শিহাব তাকিয়ে আছে রিমলির দিকে। রিমলির সেদিকে পাত্তা নেই।সে তো তার মতো সৃষ্টি বেগমকে শাক সবজি বেছে দিচ্ছে। রিমলির চোখে মুখে রোদ আসতে থাকে।যার কারণে চোখ পিটপিট করে কাজ করছে রিমলি।বাজারে লোকজন যাতায়াতের ফলে এমনটা হচ্ছে।সূর্য বরাবর থাকায় লোকজন যাওয়া আসার ফলে কখনও রোদ এসে বিরক্ত করে তো কখনও লোকেদের ছায়া।শিহাবের কাছে ভালো লাগছে রিমলিকে এভাবে বিরক্তির সাথে কাজ করতে দেখে।সৃষ্টি বেগম এবার শিহাবের দিকে ফিরে বলেন,”তুমি কি কিনবে বাবা?মনে তো হয় না আমাদের মত শাক সবজি কিনবে।”
রিমলি ব্যাগে সবজি ঢুকিয়ে শিহাবের দিকে ফিরে বলে,”উনি যাই কিনুক না কেনো আমাদের কি?চলো তো এখন।”
“মায়ের সাথে এভাবে কথা বলতে নেই।এটা ব্যাড মেনার্স।”
চোখ ছোট ছোট করে রিমলি।সৃষ্টি বেগম খুশি হয়ে বলেন,”শিখে নে কিছু।তুই তো উড়নচণ্ডী।দেখেছিস পড়াশোনা করে শিক্ষিত হলে চাকরি পাওয়া যায়।”
শিহাব এতক্ষণ সৃষ্টি বেগমকে খুশি করার জন্যই কথাগুলো বলতে থাকে। রিমলির দিকে তাকিয়ে বলে,”সমস্যা নেই শিখে যাবে(বিড়বিড় করে)”।একটু জোড়ে বলে,”আপনাদের বাসা কথায় আন্টি?আসেন আমি পৌঁছে দেই।”
রিমলি বলে ওঠে,”তার দরকার নেই।আপনি আপনার মত বাজার করুন।সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ।”
বলেই হাঁটতে থাকে রিমলি।শিহাব তার বন্ধুকে কল দিয়ে বলে,”ব্যাটা বাজার করে আমার মায়ের কাছে সব ভালোভাবে দিবি।আমি চলে যাচ্ছি।”
ওপাশ থেকে শিহাবের বন্ধু রামিম বলে ওঠে,”সে কি!আমি এতগুলো বাজার নিয়ে যাবো কিভাবে?”
“যেভাবে আমার টাকা মাইরিং করে খাওয়াস তোর বউকে সেভাবে।পুলিশের টাকা মিথ্যা বলে অনেক খেয়েছিস এবার বোঝ ঠেলা।আমি যাই তোর হবু ভাবীকে দেখে আসি।”
বলেই কল কাটে শিহাব।অবাক হলো রামিম।নিজেকে নিজে বলে,”টাকা মাইরিং করি বলে আমাকে দিয়ে কাজ করাবে!ব্যাটা আবার কোন মেয়ে জুটালো কে জানে?”
ল্যাপটপ দেখিয়ে ফারাজ সবাইকে সবকিছু বুঝিয়ে বলছে।শ্রেয়ার থেকে একেক ফাইল চাইলে শ্রেয়া সেগুলো দিতে থাকে ফারাজকে। ফাইলগুলো খুলে খুলে এক একটা স্টেপ বুঝিয়ে দিতে থাকে ফারাজ।সবকিছু দেখে একজন ক্লায়েন্ট বলে,”ওকে তাহলে আপনারা মডেল রেডি রাখবেন।আমরা পৌঁছে যাবো আপনার অফিসে।”
ফারাজ বুঝলো তাদের এই ডিল ফিফটি পার্সেন্ট কনফার্ম।বাকিটা মডেল তাকে যেভাবে ড্রেসের সাথে প্রেজেন্ট করে আর কি।সব শেষে সবাই উঠে পড়ে টেবিল থেকে।ফারাজ হ্যান্ডশেক করে বলে,”Nice to meet you.”
ক্লায়েন্টরাও বলে,”We also Mr Faraj Chowdhury.”
বলেই বিদায় নেয় ফারাজ শ্রেয়া ও এনি।একজন ক্লায়েন্ট তাকিয়ে আছে শ্রেয়ার যাওয়ার দিকে।লিফটের মধ্যে এসে এনি বলে,”আমরা আমাদের ডিলটি পেয়ে যাবো।এটা আমার মন বলছে।যেভাবে দিন রাত এক করে কাজ করছি আমরা।কোম্পানি হাইপে উঠতেই হবে।”
ফারাজ এবার শ্রেয়াকে বলে,”সবকিছু মন দিয়ে শুনেছেন মিস শ্রেয়া।আমাদের কিন্তু নেক্সট প্রজেক্ট হিসেবে মডেলকে আনা হবে।ঢাকার বেস্ট পার্লার আর মডেলদের নাম্বার আমার কাছে আছে।আপনি ওদের সাথে কাউন্সেলিং করে ওদের ইমপ্রেস করবেন।পাঁচজন মডেলের মধ্যে আপনার আর এনির যাকে পছন্দ হবে তাকে দিয়ে আমরা কোম্পানির প্রমোট করব।”
“ওকে স্যার।”(একটু ভীত ভাব নিয়ে।তবে শ্রেয়ার বিশ্বাস সে পারবে।সাথে তো এনি আছে)
ফারাজ আর শ্রেয়া মিলে এনিকে বিদায় দিয়ে গাড়িতে ওঠে।ঠিক তখনই ফারাজের ফোন বেজে ওঠে।ফোন হাতে নিয়ে ফারাজ দেখতে পায় মিমির স্কুল থেকে কল এসেছে।ফারাজ ভ্রু কুঁচকে বলে,”মিমির স্কুল থেকে কল কেনো?”
ভাবতে ভাবতেই রিসিভ করে ফারাজ।ওপাশ থেকে মিমির প্রিন্সিপাল বলেন,”মিস্টার চৌধুরী বলছেন?আমি মিমির স্কুল প্রিন্সিপাল।”
“জি ম্যাম।আমি মিমির বাবা ফারাজ চৌধুরী।”
“একচুয়ালি আপনাদের পার্সোনাল ইস্যু নিয়ে এখানে বাচ্চাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হয়েছে।মিমি মেয়েটি খুবই ডিস্টার্ব এখন।কান্না করছে।অবশ্য এতক্ষণ সে অনেক তর্ক বিতর্কে ছিলো।আমি প্রত্যেক গার্জিয়ানকে ডেকেছি।আপনাকেও আসতে হবে।”
পাশ থেকে মিমির কান্না ভেজা কণ্ঠে চিল্লানো শোনা যায়।মিমি বলে,”নো আমার পাপা বেস্ট আমিও বেস্ট।তোমরা পঁচা।তোমরা আমাকে আগে বাজে কথা বলেছো।”
ফারাজ বুঝলো তার আর অহনার ব্যাপার মিডিয়া হওয়ার কারণে এখন মিমিকে কথা শোনাচ্ছে।ফারাজ বলে,”আমি আসছি।”
কল কেটে ফারাজ ড্রাইভারকে বলে,”মিমির স্কুলের দিকে চলেন আংকেল।”
শ্রেয়া আতঙ্কের সাথে বলে,”এনি প্রবলেম স্যার?”
“আমার করা কাজ আমার মেয়ের উপর ইফেক্ট পড়ছে।ওকে ওর ফ্রেন্ডদের সামনে অনেক কিছু নিয়ে ফেস করতে হচ্ছে।”
গাড়ি এসে থামলো মিমির স্কুলের সামনে।ফারাজ সিটবেল্ট খুলতে খুলতে বলে,”আপনি আসেবন না মিস শ্রেয়া।লোকে আপনাকে আর আমাকে একসাথে দেখলে সন্দেহ করে বাজে মন্তব্য রটাবে।আমি ফেস করলেও আমার মেয়ে ছোট মানুষ।ও ফেস করতে পারবে না।”
অগত্যা শ্রেয়া বের হলো না।ফারাজ ঠিক কথাই বলেছে।এখন মিমির এই অবস্থায় সে বের হলে বাকি গার্জিয়ান অনেক কথা সৃষ্টি করবে।
চলবে…?
আমাকে কয়েকদিন একটু গ্যাপে গ্যাপে গল্প দিতে হবে।ঈদের পরেই পরীক্ষা শুরু।সবকিছুর তাড়াহুড়া এমনভাবে এসে পড়েছে যে রোজা রেখে পড়াশোনা ও আলাদা কাজ তো থাকেই।ঘরোয়া কাজ পড়াশোনা করে দিনে অর্ধেকের মত গল্প লিখি।তাই দেরি হচ্ছে।সত্যি বলতে বিভিন্ন চরিত্রে নিয়ে আলাদা কথোপকথন মাথায় কাজ করে আমার।কিন্তু লেখার সময় কমিয়ে এসেছে।তাই আপনারা একটু মানিয়ে নিন।আমি নিজেও চেষ্টা করি গল্প রেগুলার দেওয়ার।