তপ্ত ভালোবাসা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ৫৩

0
617

#তপ্ত ভালোবাসা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ৫৩

.
🍁
আমাদের কিছুক্ষণ মন্ত হয়ে বসে থাকার পর হঠাৎই কেউ হটহট শব্দ করে আমাদের রুমে দরজা কেউ খুলে দেয়। দরজা খুলার শব্দ কানে আসতেই চমকে উঠে সামনের দিকে তাকাতেই চোখে সামনে রিদ খানকে দরজা খুলতে দেখি। অনাকাঙ্ক্ষিত উনাকে দেখে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে উনার কিছু বুঝে উঠার আগেই আমি দৌড়ে গিয়ে উনার গলা জরিয়ে ধরি নিজের দুহাতে।আমার দুইপা ফ্লোর থেকে এক ফুট উচ্চতায় অবস্থান করছে। আমি এমন হঠাৎ জরিয়ে ধরায় উনি তাল সামলাতে না পেরে দুই কদম পিছিয়ে গিয়ে একহাতে দেয়াল ধরে অন্য হাতে আমার কমর চেপে ধরে শক্ত করে………

.

আমার হঠাৎ এই আক্রমণে উনি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর কি হয়েছে বুঝতে আশ্চর্য হয়ে খুশিতে আমাকে নিজের দু’হাতে জরিয়ে ধরে সাথে সাথে আমার গলায় মুখ গজায়। আমি উনার এমন ছুঁয়া পেয়ে সাথে সাথে কেঁপে কেঁপে ওঠি। উনি আমাকে আদুরের সাথে জরিয়ে ধরতে দেখে আমি নিজের দু’হাতে উনার দুগাল আঁকড়ে ধরে সারা মুখে পাগলের মতো করে চুমু খেতে থাকি মূহুর্তেই। আমি কি করছি সেটা তখন আমার জ্ঞান ছিল না যে। তবে তখন আমার শুধু মনে হচ্ছিল আমি উনাকে ছাড়া একটা মূহুর্তে থাকতে পারবো না বা আর কোনো কারণে উনাকে হারাতে চাই না। আমার উনাকে চাই-ই চাই। আমার মধ্যে বিঘত ছয় মাসের উনার জন্য সব ভালোবাসা আজ এই মূহুর্তে প্রকাশ পাচ্ছে অবুঝের মতো করে। আমার এমন আচরণে মূহুর্তে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায় কেয়া ও বর্ষা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে হা হয়ে থাকিয়ে থাকে কিন্তু আমার সেই দিকে কোনো খেয়াল নেই আমি আমার মতো করে উনাকে চুমু খাওয়ায় মহাব্যস্ত। বর্ষা ও কেয়া সাথে সাথে উনি আমার এমন কাজে শকট খেয়ে যায় তবে আমাকে আঁকলিয়ে রাখে শক্ত করে নিজের সাথে। আমি উনার চোখ মুখ গালে ঠোঁটে ছোট ছোট চুমু পাগলের মতো করে খেতে খেতে একটা সময় উনার চোখে দিকে আমি আমার দৃষ্টি স্থির করি। আমার দৃষ্টিতে অনুতপ্ত ও উনার জন্য শত ভালোবাসা থাকলেও উনার দৃষ্টিতে ছিল আমার জন্য ভরপুর নেশা। কেমন একটা নেশাক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। আমি উনার এমন নেশাক্ত দৃষ্টি দেখে কিছুক্ষণ অবুঝের মতো করে মন্ত হয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ আমার বোধগম্য হয় যে আমি কি করছি এতক্ষণ উনার সাথে। হঠাৎ মনে হওয়া বিষয় ভাবতেই আমি লজ্জায় সিটিয়ে যাচ্ছি মূহুর্তেই। যে আমি কি করে এতক্ষণ উনার সাথে এমন একটা কাজ করতে পারলাম এটি মনে করতেই আমি দ্রুত উনার গাল থেকে হাতটা সরিয়ে নেই আর নিজের নজর নিচে নামিয়ে নেয়। উনার বাধন থেকে নামার জন্য আস্তে আস্তে নড়াচড়া করতে থাকি আর চেষ্টা করতে থাকি কিন্তু এতেও আমি সফল হতে পারিনি কারণ উনার শক্ত হাতের বাঁধনে আমি আবদ্ধ ছিলাম তাই কোনো রকম ভাবেই ছাড় পাচ্ছিলাম না। এবার উনি আমাকে লজ্জা পেতে দেখে বাঁকা হেঁসে উঠে আমাকে জরিয়ে ধরা অবস্থায় আরও উপরে তুলে ফেলে এতে করে আমি ভিষণ বাজে অস্থিরতার শিকার হচ্ছিলাম কিন্তু উনি বেশ মজা পাচ্ছিল আমাকে লজ্জা দিতে পেরে। উনি আমাকে উনার কোল থেকে নামার জন্য নড়াচড়া করতে দেখে বাঁকা হেঁসে নিষিদ্ধ সুরে বলে উঠে…………

.

—” উঁহুম, নড়াচড়া করো না। আমার পর্বটা এখনো প্রকাশ পাইনি বাকি হয়েছে সেটা……

.

উনার এমন কথায় এবার আমি ইতস্তত বোধ করছিলাম। আমি নিজের দোষে নিজের পায়ে কোরাল মেরেছি। আর যার জন্য আমাকে এতটা লজ্জা জনক পরিস্থিতি শিকার হতে হচ্ছে। আর কেয়া ও বর্ষা আমার থেকে নিজেদের হা হওয়া দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে এবার উনার ওপর নিক্ষেপ করে করে। বর্ষা উনার দিকে তাকাতেই উনি চোখে ইশারায় বর্ষা ও কেয়াকে বাহিরের চলে যেতে বলে। উনার ইশারা পেতেই বর্ষা ও কেয়া বিনা বাক বয়ে চুপচাপ রুম থেকে বাহিরের চলে যায় ধীর পায়ে হেঁটে। ওরা বাহিরে যেতেই উনি নিজের একহাতে রুমের দরজা আটকিয়ে দিয়ে সাথে সাথে আমাকে উনার কোলে তুলে নিয়ে বিছানার ওপর বসে আমার উনার কোলের উপরে বসিয়ে রেখে। বাঁকা হেঁসে বলে উঠে……

.

—” আমাকে পাগল করে। এখন এতো সহজে যেতে দিব তোমায়। তোমার কি মনে হয় আমি খুব ভালো রিত।

.

উনার এমন কথায় মাথা নিচু করে চুপ বসে রই। কারণ উনাকে বলার মতো কোনো ভাষায় আমার জানা ছিল না সেই মূহুর্তে। আর আমি বাহ উনার সাথে হঠাৎ এই অদ্ভুত আচরণ কেন করলাম তাও জানি না। তাই এই মূহুর্তে আমি লজ্জা মরে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথে নেই আমার। উনি আমাকে আজ লজ্জায় ফেলতে ফেলতে মেরে ফেলবে। উনি আমাকে লজ্জা পেতে দেখে বলে উঠে……

.

—” উফ, বউ আমার লজ্জা পেতেও জানে।তাহ আমি শুরু করবো যেটা তুমি করেছিলে আমার সাথে। কি ইউনিক কিছু চাও নাকি সেইমটই করবো তোমার মতো হুম…….

.
উনার এমন কথায় আমি আর সয্য করতে না পেরে আস্তে করে বলে উঠি……..

.

—” আমি ইচ্ছা করে করেনি তো ঐটা…….

.

আমার কথা পিষ্টে উনি কাট কাট উত্তর দিয়ে বলেন……

.

—” কিন্তু আমিতো ইচ্ছা করেই করবো ঐটা…….

.

কথাটা বলেই উনি উনার একহাতে আমার কমড় জরিয়ে ধরে অন্য হাতে আমার মাথা চেপে ধরে নিজের কাছে এনে আমার কপালে ঘাড়ো ভাবে একটা চুমু খাই।
উনার এমন কাজে আমি কেঁপে ওঠে সাথে সাথে নিজের দুহাতে উনার শাটের কলার আঁকড়ে ধরি চোখ বন্ধ করে নিয়ে। আমার এমন কাজে উনি আমাকে আরও গভীর ভাবে নেই নিজের সাথে। একে পর এক চুপ আমার কপালে চোখে মুখে খেয়ে নিয়ে আস্তে করে আমার গলার মুখ গজায়। উনার এমন কাজে আমি মূহুর্তেই আমি কেঁপে ওঠে সাথে সাথে আরও টেনে ধরি উনাকে নিজের সাথে। আমি কি করছিলাম তখনও আমার বোধগম্য ছিল কিছু।

.

.

🍁
রিদ খানের ড্রয়িংরুমে বসে আছি আমি, একা বসে তা নয়। আমার সাথে উপস্থিত সবাই রয়েছে। বর্ষা, কেয়া, রিদ খান, আসিফ ও আমি। আসিফ ও বর্ষা কিছু একটা বিষয় নিয়ে গভীর ভাবে আলোচনা করছে আর উনি ল্যাপ্টপের সামনে বসে কিছু একটা করছে মনোযোগ সহকারে। আর আমি চুপ করে বসে থাকার চেষ্টা করছি কারণ আমি কেয়ার জন্য চুপ থাকতে পারছি না কোনো ভাবেই। কারণ কেয়া আমাকে নানান সব প্রশ্ন করে বিবৃত করছে খনে খনে। আর যার কোনো উত্তরই আমার কাছে নেই। কেয়া শত প্রশ্নের কারণ হলো আমি আর রিদ খানকে নিয়ে। কেন আমি এমনটা করলাম। আমাদের মাঝে গভীর কোনো সম্পর্ক আছে কিনা। আর উনার সাথে রুমের ভিতর এতক্ষণ যাবত কি করছি। এতদিন যাবত রিদ খান আর আমার সম্পর্কে কথা ওকে কেন জানায়নি আমি ইত্যাদি সব প্রশ্ন করে করে আমাকে বিব্রত করছে ও সাথে আমার মাথাটা খাওয়ার চেষ্টা করছে। কেয়া আমাকে নিয়ে অনেকটা অস্থির থাকলেও বর্ষার কোনো রকম মাথা ব্যাথা নেই আমাকে নিয়ে । কেয়া এবারও চুপ থাকতে দেখে বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে………

.

—” তুই কি কিছু বলবি পৃপ্তী। সেই কখন থেকে মুখে তালা এঁটেছ বসে আছিস।

.

কেয়া কথায় আমার কোনো রকম হেলদোল না দেখে এবার আরও ক্ষেপ্ত হয়ে রাগান্বিত ফেস নিয়ে চলে যায় রিদ খানের সামনে উনাকে মনোযোগ সহকারে কাজ করতে দেখে কেয়া বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে…….

.

—” আপনি সবসময় এতো কাজ কাজ করেও পৃপ্তীকে কখন পটালেন নিজের জন্য সেটাই তো বুঝতে পারছি না আমি।

.

.

.
চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here