#সন্ধ্যারাতে_শালুক_ফোঁটে ❤️
#আদনীন_নিশাত_তারান্নুম_চৌধুরী ❤️
#পর্বসংখ্যা-(১৬)
_______________________________
যেভাবে পর্দা পালন করতে হবে,একজন নারীর পর্দা পালনের তিনটি পর্যায় রয়েছে। যথাঃ গৃহে অবস্থানকালীন পর্দা,বাইরে গমনকালীন পর্দা এবং বৃদ্ধা অবস্থায় পর্দা।
কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেকটি পর্যায়ে পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। সামনে পর্দার তিনটি পর্যায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করবো।
গৃহে অবস্থানকালীন পর্দা: নারীর প্রধান আবাসস্থল হলো তার গৃহ। সাধারণত গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করা নারীর জন্য শোভনীয়। এ জন্য আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে তাদের গৃহাভ্যন্তরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“তোমরা তোমাদের গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করো,প্রাচীন জাহেলী যুগের নারীদের ন্যায় নিজেদেরকে প্রর্দশন করো না। (সূরা আহযাব: ৩৩)
আল্লামা ইবনে কাসীর (রহ.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন,“নারীর প্রকৃত অবস্থানক্ষেত্র হচ্ছে তার গৃহ। নারী প্রয়োজন ব্যতীত গৃহের বাইরে যাবে না বরং গৃহেই অবস্থান করবে।”(তাফসীরে ইবনে কাসীর: ৬/৪০৯)
মূলত নারী নিজেকে যত সংযত ও আবৃত রাখে আল্লাহ তায়ালার কাছে সে ততোই প্রিয় হয়ে ওঠে। ইসলামের দৃষ্টিতে তার মর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব ততোই উচ্চতর হয়ে ওঠে। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,“নারী তার পালনকর্তার সর্বাদিক নিকটে তখনই থাকে যখন সে তার গৃহে অবস্থান করে।”(সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৫৯৯)
তাই মুমিন নারীদের উচিত গৃহাভ্যন্তরে এমনভাবে অবস্থান করা যাতে আত্মীয় বা অনাত্মীয় কোনো গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষের দৃষ্টিতে সে না পড়ে। আর এভাবে গৃহে অবস্থান করার মাধ্যমেই পর্দার যথার্থতা অর্জিত হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,“যখন তোমরা তাদের (নবী পত্মীদের) কাছে কিছু চাইবে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। (সূরা আহযাব: ৫৩)
এ আয়াতে বিশেষভাবে নবী-পত্মীদের কথা উল্লেখ থাকলেও এ বিধান সমগ্র উম্মতের জন্য ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য। এ বিধানের সারমর্ম এই যে,নারীদের কাছ থেকে ভিন্ন পুরুষদের কোনো ব্যবহারিক বস্তু,পাত্র,বস্ত্র ইত্যাদি নেয়া জরুরী হলে সামনে এসে নেবে না বরং পর্দার আড়াল থেকে চেয়ে নিবে। এ নির্দেশনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে,নারীরা তাদের গৃহে অবস্থানকালীন মুহূর্তেও গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষ,নিকটাত্মীয় হোক বা দূরাত্মীয় সকলের কাছ থেকে সম্পূর্ণ পর্দার আড়ালে অবস্থান করবে। তবে প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল থেকেই কথা বলবে। আর পরপুরুষরাও পর্দার আড়াল থেকেই কথা বলতে হবে। এতে পর্দার অপরিহার্যতা পরিস্ফূটিত হয়। আয়াতের শেষাংশে পর্দার গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে যে,পর্দার এ বিধান পুরুষ ও নারী উভয়ের অন্তরকে মানসিক কুমন্ত্রণা থেকে পবিত্র রাখার উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে। এখানে প্রণিধানযোগ্য বিষয় এই যে,এস্থলে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর পুণ্যাত্মা পত্মীদেরকে পর্দার বিধান দেয়া হয়েছে,যাদের অন্তরকে পবিত্র রাখার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে যেসব পুরুষকে সম্বোধন করে এই বিধান দেয়া হয়েছে,তারা হলেন রাসূলে করীম (সা.) এর সাহাবায়ে কিরাম,যাদের মধ্যে অনেকের মর্যাদা ফেরেশতাগণেরও উর্ধ্বে। কিন্তু এসব বিষয় সত্ত্বেও তাদের আন্তরিক পবিত্রতা ও মানসিক কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য পুরুষ ও নারীর মধ্যে পর্দার ব্যবস্থা করা জরুরী মনে করা হয়েছে। (তাহলে বলুন তো ) আজ এমন ব্যক্তি কে,যে তার মনকে সাহাবায়ে কিরামের পবিত্র মন অপেক্ষা এবং তার স্ত্রীর মনকে পুণ্যাত্মা নবী-পত্মীদের মন অপেক্ষা অধিক পবিত্র হওয়ার দাবি করতে পারে। আর এটা মনে করতে পারে যে,নারীদের সাথে তাদের মেলামেশা কোন অনিষ্টের কারণ হবে না!”(তাফসীরে মা’আরেফুল কুরআন: ৭/১৯৫)
এছাড়াও বহু বিশুদ্ধ হাদীস থেকেও প্রতিভাত হয় যে,উম্মাহাতুল মুমিনীন বা নবীপত্মীরা সাধারণত তাদের গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করার মাধ্যমেই পর্দা পালন করতেন। আল্লাহ তায়ালা মুমিন নারীদেরকেও অনুরূপভাবে পর্দা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“হে নবী! মুমিন নারীদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে তবে যা সাধারণত (অনিচ্ছা সত্ত্বে) প্রকাশিত হয়ে যায় তা ভিন্ন। তারা যেন ওড়না দিয়ে তাদের বক্ষকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী,পিতা,শ্বশুর,পুত্র,স্বামীর পুত্র,ভ্রাতা,ভ্রাতুষ্পুত্র,ভগ্নিপুত্র,আপন নারীগণ,তাদের মালিকানাধীন দাসী,যৌনকামনামুক্ত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্য কারো কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন তাদের গোপন সাজ্জসজ্জা প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ,তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর,যাতে তোমরা সফল হতে পার।”(সূরা নূর: ৩১)
এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে,নারীরা মাহরাম পুরুষ অর্থাৎ এমন পুরুষ যাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ,তারা ব্যতীত অন্য কোনো পুরুষের সামনে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবে না। এতে পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয়। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,“তোমরা নারীদের নিকট যাওয়া থেকে বিরত থাকো। তখন এক আনসার সাহাবী বললেন,“হে আল্লাহর রাসূল! দেবরের ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?” তিনি বললেন,“দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য।”(বুখারী: ৫২৩২)
আলোচ্য হাদীসে ব্যবহৃত ‘হামউ’ শব্দের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে স্বামীর নিকটাত্মীয়। শব্দটির উদ্দেশ্য ব্যাপক। শব্দটি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,স্বামীর যেকোনো দিকের ভাই,চাচা,মামা,খালু,ফুফা এবং তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে সন্তান। যেমন: দেবর,ভাসুর,চাচা শ্বশুর,মামা শ্বশুর,তাদের প্রত্যেকের ছেলে সন্তান ইত্যাদি।
ইমাম তিরমিযী,লাইস ইবনু সা’দ,আল্লামা কাযী ইয়ায ও তাবারী সহ বহু আলেম অনুরূপ ব্যাখ্যা করেছেন। অর্থাৎ নারীর জন্য তার দেবর,ভাসুর,চাচা শ্বশুর,মামা শ্বশুর ও তাদের ছেলেদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা থেকে দূরে থাকতে হবে যেভাবে মৃত্যু থেকে দূরে থাকতে চায়। আর এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো,নারীরা তাদের গৃহে অবস্থানকালীন মুহূর্তে মাহরাম নয় এমন সকল পুরুষ থেকে পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলবে। অর্থাৎ নারীরা এমনভাবে গৃহে অবস্থান করবে যাতে নিকটাত্মীয় বা দূরাত্মীয় কোনো গায়রে মাহরাম বা বেগানা পুরুষের নজরে সে না পড়ে। গৃহে অবস্থানকালীন মুহুর্তে এভাবে পর্দাবৃত থাকা নারীর জন্য অপরিহার্য।
এছাড়াও বাইরে গমনকালীন পর্দা: বলা বাহুল্য যে,নারীদের জন্য গৃহের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। এজন্য ইসলাম প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে,পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সা.) তার স্ত্রী হযরত সাওদা (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,“প্রয়োজনে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।”(বুখারী: ৪৭৯৫)
মূলত ইসলাম একটি সর্বাঙ্গীন ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। তাই মানব প্রয়োজনের সকল দিকই ইসলামে বিবেচিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে পর্দাবৃত হয়েই বাইরে বের হতে হবে। কিছুতেই পর্দাহীনভাবে বের হওয়া যাবে না। এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) বলেন,“নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু,যখনই সে পর্দাহীনভাবে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে উঁকি মেরে তাকায়।”(তিরমিযী: ১১৭৩)
আর পবিত্র কোরআনে নারীদেরকে বাইরে গমনকালীন মুহূর্তে পূর্ণ পর্দা পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালার সুস্পষ্ট নির্দেশ,“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী,কন্যা এবং মুমিন নারীদেরকে বলুন,তারা যেন (প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময়) তাদের (পরিহিত) জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।”(সূরা আহযাব: ৫৯)
এ আয়াতে নারীদেরকে বাইরে গমনের সময় তাদের পরিহিত জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইমাম কুরতুবী (রহ.) বলেন,“জিলবাব হলো নারীর এমন পোশাক যা দিয়ে তারা পুরো দেহ ঢেকে রাখে। অর্থাৎ বাইরে গমনের সময় দেহের সাধারণ পোশাক-জামা,পাজামা,ওড়না ইত্যাদির উপর আলাদা যে পোশাক পরিধান করার মাধ্যমে নারীর আপাদমস্তক আবৃত করা যায় তাকে জিলবাব বলা হয়। আমাদের দেশে যা বোরকা নামে পরিচিত।”
এ থেকে বুঝা যায় যে,বাইরে গমনের সময় বোরকা পরিধান করে আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়া আবশ্যক। আর আয়াতে জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে,তা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নেয়া। যা সাহাবী,তাবেয়ী ও নির্ভরযোগ্য মুফাসসিরদের তাফসীর থেকে প্রতিভাত হয়।
এ প্রসঙ্গে আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,“আল্লাহ তায়ালা (এ আয়াতে) মুমিন নারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন,প্রয়োজনে তারা যখন বাইরে যাবে তখন তারা যেন জিলবাব দিয়ে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) তাদের মাথার উপর দিক থেকে তাদের মুখমণ্ডলও আবৃত করে নেয়। তবে তারা (চলাফেরার সুবিধার্থে) একটি চোখ খোলা রাখবে।”(ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)
প্রখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মদ ইবনে সিরীন (রহ.) বলেন,“আমি আবীদাহ সালামানীহকে এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম তখন তিনি তার মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নিলেন। অর্থাৎ তিনি বুঝিয়েছেন যে,এ আয়াতে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”(ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)
সাহাবী ও তাবেয়ীগণের পরবর্তী মুফাসসিরদের ব্যাখ্যার দিকে তাকালেও দেখা যায় যে,ইবনে জারীর তাবারী,ইবনে কাসীর,বায়যাবী,বাগভী,নাসাফী,সুয়ূতি,আবু বকর জাসসাস,মুফতি মুহাম্মদ শফিসহ সব তাফসীরকারকগণ এ আয়াতের অনুরূপ ব্যাখ্যাই করেছেন। অর্থাৎ সকলে একমত পোষণ করেছেন যে,এ আয়াতে নারীদেরকে তাদের চেহারাসহ আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে বাইরে গমনকালীন পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয়। আর এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো,কোনো প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যেতে হলে তখন তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে চেহারাসহ গোটা দেহ আবৃত করে পূর্ণ পর্দার সঙ্গে বের হওয়া। যা সর্বসম্মতিক্রমে ফরয।
এক্ষেত্রে জিলবাব বা বোরকা পরিধানের মাধ্যমে আপাদমস্তক আবৃত করে নিবে। প্রয়োজনে চেহারা বা মুখমণ্ডলের জন্য আলাদা নিকাব ব্যবহার করবে। আর হাতের কব্জি ও পায়ের গোড়ালীর জন্য মোজা পরিধান করবে। তবে চলাফেরার সুবিধার্থে রাস্তা-ঘাট দেখার জন্য শুধু চোখ খোলা রাখবে।
বৃদ্ধা অবস্থায় পর্দা: বয়স্ক নারীদের জন্য পর্দা পালনের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা গ্রহণেন অবকাশ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,“অতিশয় বৃদ্ধা নারী,যারা বিবাহের আশা রাখে না,তাদের জন্য অপরাধ নেই,যদি তারা তাদের সৌর্ন্দয প্রদর্শন না করে তাদের অতিরিক্ত বস্ত্র খুলে রাখে। তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা,সর্বজ্ঞ।”(সূরা নূর: ৬০)
আয়াতের নির্দেশনা হলো,যে বৃদ্ধা নারীর প্রতি কেউ আকর্ষণ বোধ করে না এবং সে বিবাহেরও যোগ্য নয় তার জন্য পর্দার বিধান শিথিল করা হয়েছে। গায়রে মাহরাম ব্যক্তিও তার কাছে মাহরামমের ন্যায় হয়ে যায়। মাহরামদের কাছে যেসব অঙ্গ আবৃত করা জরুরী নয়। বৃদ্ধা নারীদের জন্য গায়রে মাহরাম পুরুষদের কাছেও সেগুলো আবৃত করা জরুরী নয়।
এরূপ বৃদ্ধা নারীর জন্য বলা হয়েছে,“মাহরাম পুরুষদের সামনে যেসব অঙ্গ খুলতে পারবে,গায়রে মাহরাম পুরুষদের সামনেও সেগুলো খুলতে পারবে।”(তাফসীরে মা’আরেফুল কুরআন: ৬/৪৩৯)
এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো,“চরম বার্ধক্যে পৌঁছার কারণে যেসকল নারী বিবাহের উপযুক্ত নয় এবং যাদের প্রতি কারো আকর্ষণ সৃষ্টি হয় না,এ ধরনের বৃদ্ধা নারীর জন্যই এ বিধান। তাদেরকে এই সুবিধা দেয়া হয়েছে যে,গায়রে মাহরাম পুরুষের সামনে অন্যান্য নারীদেরকে যেমন আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হয়,তাদের জন্য তা জরুরী নয়। এ রকম বৃদ্ধা নারীগণ তা ছাড়াই পরপুরুষের সামনে যেতে পারবে। তবে শর্ত হল,তারা তাদের সামনে সেজেগুঁজে যেতে পারবে না। এর সঙ্গে স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে,তাদের ক্ষেত্রে বিধানের এ শিথিলতা কেবলই জায়েয পর্যায়ের। সুতরাং তারা যদি বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে এবং অন্যান্য নারীদের মত তারাও পরপুরুষের সামনে পুরোপুরি পর্দা রক্ষা করে চলে তবে সেটাই তাদের জন্য উত্তম।”(তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন: ২/৪৬৮)
পরিশেষে এ বিধানের ব্যাপারে সারকথা হলো,কোরআন-সুন্নাহর আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে হিজাব বা পর্দা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নারী জাতির জন্য এক ফরয বিধান। সর্বাবস্থায় এ বিধানের প্রতি পূর্ণ সমর্পিত থাকা অপরিহার্য। তবে চিকিৎসা ইত্যাদি বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন মাফিক শিথিলতা গ্রহণের অবকাশও অবশ্যই রয়েছে।
এছাড়াও ইবনে জাওযীর থেকে বর্ণিত। ইমাম আহমদ (র.) বলেছেন,“নারীদের প্রকাশ্য সৌন্দর্য হলো কাপড় আর নারীদের শরীরের সবকিছু এমনকি নখও পর্দার অর্ন্তভুক্ত।”(যাদুল মাসীর ৬/৩১)
এ থেকে সহজেই অনুমেয় আমাদের পর্দা কেমন হওয়া উচিৎ!
“আর তোমরা তাঁর রাসূল (সা.) এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।”(সূরা আহযাব-৫৩)
এই আয়াতে প্রমাণ হয় রাসূল (সাঃ) স্ত্রীগণ ও গায়রে মাহরাম থেকে পর্দা করতেন!
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। “আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম তখন সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আমাকে দেখে চিনে ফেললো। কেননা সে আমাকে হিজাবের হুকুম হওয়ার আগে দেখেছিলো। তখন সে ইন্নালিল্লাহ বলে উঠলো,আমি তার ইন্নালিল্লাহ বলার শব্দে আমি জেগে উঠি তখন আমি ওড়না দিয়ে আমার মুখ ঢেকে ফেলি।”(সহীহ বুখারী : ৫/৩২০,সহীহ মুসলিম : হা/২৭৭০,জামে তিরমিযী : হা/৩১৭৯) এই হাদিস টিও অকাট্য দলিল।
উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালমা (রা.) বর্ণনা করেন,“আমি এবং মাইমুনা (রা.) রাসূল (সা.) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় অন্ধ সাহাবী ইবনে উম্মে মাখতুম (রা.) সেখানে আসতে লাগলেন। তখন রাসূল (সা.) বললেন,“তোমরা পর্দা করো,আড়ালে চলে যাও।” আমি বললাম,“ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি তো অন্ধ,আমাদের দেখতে পাচ্ছেন না।” তখন রাসূল (সা.) বললেন,“তোমরাও কি অন্ধ?তোমরা কি তাকে দেখতে পাচ্ছো না?”(আবু দাউদ : হা/২/৫৬৮)
দুনিয়ায় থাকা কালেই যিনি জান্নাতের সর্দারনী হওয়ার সুসংবাদ পেয়েছিলেন সেই নুরে নন্দিনী খাতুনে জান্নাত মা ফাতিমা (রা.) এর পর্দার কঠোরতা দেখে অবাক না হয়ে পারা যায় না! মৃত্যুর পূর্বেই তিনি বলে গেছেন,“আমাকে যেন রাতের আঁধারে দাফন করা হয়,কারন আমি চাইনা দিনের আলোতে আমার শরীরের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ কেউ দেখুক!”
পর্দা না করার শাস্তি ও কোন কোন নারী জাহান্নামে যাবে। নারীদের এ ব্যাপারে চিন্তা করা উচিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,“যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে এবং রমযানের রোযা রাখবে,স্বীয় গুপ্তস্থানকে হেফাজত করবে (পর্দা রক্ষা করে এবং ব্যভিচার থেকে বিরত থেকে) আর স্বামীর আনুগত্য করবে এমন নারীর জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে। যে দরজা দিয়ে ইচ্ছেমত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে”(তিরমিযী ও তাবরানী)
উপরোক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় মেয়েদের জন্য বেহেশত গমন খুবই সহজ। তবে অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন,একবার ঈদুল ফিতরের দিন রাসূল (সা.) ঈদগাহে গিয়ে উপস্থিত
মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন,“হে নারী সম্প্রদায়! দান-খয়রাত করো কেননা আমাকে অবগত করানো হয়েছে দোজখের অধিকাংশ অধিবাসি তোমাদের নারী সম্প্রদায়রই হবে।”(দীর্ঘ হাদীসের অংশ বিশেষ বুখারী,মুসলিম)
প্রথমোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় মেয়েদের জন্য জান্নাতে গমন খুবই সহজ,কিন্তু তবুও কেন নারীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ জাহান্নামে যাবে?এই প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (সা.) বিভিন্ন হাদীসে নারীজাতির এ বিপর্যয়ের কারণ নির্ণয় এবং তার প্রতিকার বর্ণনা করেছেন। কয়েকটি কারণ উল্লেখ করছি।
হযরত আলী এবং ফাতেমা (রা.) উভয়ে একদা রাসূল (সা.) এর কাছে গিয়েছিলেন উদ্দেশ্য ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ করা। সেখানে গিয়ে রাসূল (সা.) কে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখতে পেলেন। ক্রন্দন তাদের উপর বিস্তার লাভ করলো। অতঃপর হযরত আলী রাসূল (সা.) এর কাছে ক্রন্দনের কারণ জানতে চাইলে রাসূল (সা.)
বললেন,“মিরাজের রাতে আমি উম্মতের নারীদেরকে জাহান্নামে বিভিন্ন ধরণের ভয়ংকর ও কঠিন আযাবে লিপ্ত দেখেছি যা স্মরণ করে আমি কাঁদছি।” মহানবী (সা.) নারীজাতির শাস্তির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,
১) “আমি জাহান্নামে একজন মহিলাকে তার মাথার চুল দ্বারা ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম,ঐসময় তার
মাথার মগজ ফুটন্ত পানির ন্যায় টগবগ করে ফুটছিল।”
২) “জাহান্নামে একজন মহিলাকে স্বীয় জিহ্বায় ঝুলন্ত
অবস্থায় দেখতে পেলাম অর্থাৎ মুখ গহ্বর থেকে জিহ্বা টেনে বের করে সমস্ত শরীরের ওজন জিহ্বার উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।”
৩)“একজন মহিলাকে স্বীয় স্তনে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম অর্থাৎ সমস্ত শরীরের ওজন স্তনের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।”
৪)“একজন মহিলাকে তার পদযুগল বক্ষে এবং হস্তদয় ললাটে আবদ্ধাবস্থায় জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে দেখতে পেলাম।”
৫)“একজন মহিলার মুখমন্ডল শুকরের ন্যায় এবং শরীরের বাকী অংশ গাধার ন্যায় দেখতে পেলাম। সে ছিল অসংখ্য সাপ বিচ্ছু দ্বারা বেষ্টিত।”
৬)“একজন মহিলাকে কুকুরের আকৃতিতে দেখতে পেলাম। যার মুখ গহব্বরে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করে মলদ্বার দিয়ে বের হচ্ছিল। তার শাস্তি প্রয়োগে নিয়োজিত ফেরেশ্তাগণ তাকে কঠোরভাবে প্রহার
করছিল।”
এগুলোই ছিল রাসূল (সা.) বর্ণিত জাহান্নামে নারীদের শাস্তির ছয়টি দিক। এ ছয়টি দিক অবহিত হওয়ার পর নবী কন্যা ফাতিমা (রা.) এ শাস্তির কারণ জানতে চেয়ে আরজ করলেন,“আব্বাজান! মহিলাদের এই ভয়াবহ শাস্তি ভোগের কারণ কি?” উত্তরে মহানবী (সা.) ইরশাদ করলেন,
১) নারী শাস্তির ১ম কারণঃ
🔹সে চলার পথে পর পুরুষ থেকে নিজের চুলকে ঢেকে
রাখতো না। নগ্ন মাথায় পর পুরুষকে দেখানোর জন্য চুল ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়াতো। আল্লাহ তা’আলা পবিত্র
কুরআনে মহিলাদেরকে মাথা ঘাড় ও বুক মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ বর্তমান
সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় মহিলারা মাথার চুলকে কত বাহারী প্রসাধনীতে রূপসজ্জায় সাজিয়ে নানা ঢংয়ে রাস্তায় বেপর্দা অবস্থায় চলাফেরা করছে। অথচ পর্দা সহকারে চলা,চুল ঢেকে রাখা সকল নারীর উপর ফরজ। তাই সকল নারীদের উচিৎ তারা যেন কঠোরভাবে পর্দার হুকুম মেনে ঘরে-বাইরে চলাফেরা করে নিজেদেরকে এই ভয়াবহ আযাব থেকে রক্ষা করে।
২) নারী শাস্তির ২য় কারণঃ
🔹তারা কথাবার্তায় স্বামীকে কষ্ট দিত তাদের জবান থেকে শাশুড়ি আত্মীয়-স্বজন এমনকি প্রতিবেশী পর্যন্ত নিরাপদ থাকতো না। অনেক মহিলা আছে যারা নামাযে কালামে খুবই পাকা কিন্তু মুখের বচন বিষের মত,এই
শ্রেণীর নারীরা নামাযে পাকা পোক্ত হওয়া সত্ত্বেও কুরুচীপূর্ণ অশ্লীলভাষী হওয়ার কারণে জাহান্নামে কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হয়ে যাবে।
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,“মুসলমান হচ্ছে ঐ ব্যক্তি,যার হাত মুখ এবং আচরণ থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে।”(মুসলিম)
৩) নারী শাস্তির ৩য় কারণঃ
🔹অবৈধ সম্পর্ক হচ্ছে নারী শাস্তির তৃতীয় কারণ। মহানবী (সা.) যে মহিলাকে স্তনে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেলেন তার কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,“ঐ নারী ছিলো বিবাহিতা,সে বিবাহিতা হওয়া সত্ত্বেও তার সম্পর্ক ছিল পর পুরুষের সাথে। আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে লজ্জাস্থান হেফাজতকারী মহিলাকে জান্নাতী বলে ঘোষণা করেছেন।”(সূরা মুমিনূনঃ ০৫)
অন্য আয়াতে যিনাকারী মহিলা এবং যিনার পরিবেশ সৃষ্টিকারীনী মহিলা সম্পর্কে কঠোর আযাব ও শাস্তির কথা ঘোষণা করেছেন। (সূরা নূরঃ ০২)
৪) নারী শাস্তির ৪র্থ কারণঃ
🔹নারী শাস্তির চতুর্থ কারণ হচ্ছে ইবাদতে অনিহা। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন,“জাহন্নামে স্বীয় পদযুগল বক্ষে এবং হস্তদয় কপালে স্থাপিত অবস্থায়
সাজাপ্রাপ্তা মহিলারা দুনিয়ায় ফরজ গোসল এবং ঋতুবতী হওয়ার পরবর্তী পবিত্রতা অর্জনে উদাসীন ছিল। নামায যথারীতি পালন করা তো দূরের কথা বরং নামায বা অন্যান্য ইবাদত নিয়ে উপহাস করতো। গোসল ফরজ হওয়ার সাথে সাথে তা করে নেওয়া
উত্তম,অহেতুক অলসতাবশতঃ দেরী করার দ্বারা কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং এটা হারাম। তদরূপভাবে ঋতুবতী মহিলার ঋতুস্রাব বন্ধ
হওয়ার সাথে সাথে গোসল করে নেওয়া উচিৎ। অথচ আজকাল মহিলাদের মধ্যে এটা নিয়ে খুবই উদাসীন ভাব লক্ষ্য করা যায়। অনেক আগেই স্রাব বন্ধ হওয়া সত্ত্বেও গোসল না করে বসে থাকে। এরই মধ্যে নামাযের ওয়াক্ত চলে যায়। নামায নিয়ে বিদ্রপ করা এটা নারী শাস্তির অন্যতম কারণ। আজকের সমাজে দেখা যায় নামায মোটেই গুরুত্ব দিয়ে পড়ে না। নামাযের ওয়াক্ত চলে যায় তাদের কোন খবর থাকে না। কোন জায়গায় বেড়াতে গেলে তো কথাই নেই,প্রসাধনী নষ্ট হওয়ার ভয়ে নামাজের কাছেই যায় না,অথচ কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব হবে। (তিরমিযী)
রাসূলে কারীম (সা.) বলেন,“নামায হচ্ছে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্যকারী।”(বুখারী)
তাই সাবধান হে নারীগণ! নামাযকে গুরুত্ব সহকারে আদায় করুন।
৫) নারী শাস্তির ৫ম কারণঃ
🔹পরনিন্দা ও মিথ্যা হচ্ছে নারী শাস্তির পঞ্চম কারণ। এই শাস্তির কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূল (সা.) বলেন,“এ মহিলা পরনিন্দা ও মিথ্যা বলতে অভ্যস্ত ছিল। পরনিন্দা ও মিথ্যা বলা মহাপাপ। পবিত্র কুরআনে পরনিন্দাকে মৃত ভাইয়ের গোস্ত খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে।”
অতএব সকলকে মিথ্যা,পরনিন্দা ও চোগলখুরী থেকে বাঁচা আবশ্যকীয়।
৬) নারী শাস্তির ৬ষ্ঠ কারণঃ
🔹হিংসা ও খোঁটা দেওয়া। রাসূল (সঃ) জাহান্নামের যে মহিলাকে মুখচ্ছবি কুকুর আকৃতির ও তার মুখে আগুন ঢুকে মলদ্বার দিয়ে বের হতে দেখেছেন সে ছিল হিংসুক ও খোটা প্রদানকারীনি। হাদীস শরীফে এসেছে,রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,“তোমরা হিংসা হতে দূরে থাকো কেননা হিংসা নেকীকে ধ্বংস করে,যেমন আগুন শুকনো কাঠকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে।”(মুসলিম)
উপকার করে খোঁটা দেয়া সম্পর্কে রাসূল (সা.) ইরশাদ
করেন,“তিন ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন অনুগ্রহ দৃষ্টি দিবেন না। এদের মধ্যে একজন হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে অপরকে অনুগ্রহ বা উপকার করে খোঁটা দেয়।”(বায়হাকী)
উপরোল্লেখিত শেষ পর্যায়ে চারটি অপরাধ। যথাঃ
মিথ্যাবলা,পরনিন্দা করা,খোঁটা দেওয়া ও হিংসা করা।।এগুলো নারী পুরুষ সবার মধ্যে পাওয়া যায়। তাই নারী পুরুষ সবার উচিৎ উপরোক্ত বদ অভ্যাসসমূহ থেকে নিজেকে রক্ষা করা। তাছাড়া আমাদের পরিবারে মা,বোন ও স্ত্রী সহ অনেক মহিলা লোক আছেন,তাদেরও সাবধান করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন।”
সব শুনে প্রভা শিউরে উঠলো। আর কিছু বলতে পারলো না।
__________
চলবে।