তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________48

0
590

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________48

কেটে গেছে সাপ্তাহ খানিক……….
নিরব এখন মোটা-মুটি সুস্থ । তাই আজ নিরবকে ডুবাই পাঠানোর জন্য এয়ারপোর্টে নিয়ে আসছে নিদ্র,আর তার সব বন্ধুরা । এখান থেকে আবার লন্ডনের জন্যও চলে যাবে রাশেদ, সুজন আর সাব্বির । তারা আর দেশে থাকবে না । দেশে আসছে অনেক দিন হয়ে গেছে । রাশেদের বাবা তো সেই রকম খেপে আছে রাশেদের উপর । এয়ারপোর্টের সামনে দারিয়ে সালমাকে ভিডিও কল করলো নিদ্র । কিছুখন পর কল রিসিপ করলো সালমা । শাড়ির আচল দিয়ে কপালের ঘাম, থুতনির নিচের ঘাম মুছে ফোনের স্কিনে তাকালেন তিনি । নিদ্র একটা নিশব্দের হাসি দিয়ে বললো ।

:+কেমন আছো চাচি আম্মা ।(নিদ্র)

সালমাও হেসে বললো ।

:+এই তো ভালো । তুমি কেমন আছো ।(সালমা)

সালমার কথা শুনে, নিদ্র এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো ।

:+হ্যাঁ,,,আমরাও ভালো আছি । আচ্ছা,, যে জন্য কল করলাম,, দেখো ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র ফোনের পিছনের কেমেরা দিয়ে নিরবে দেখালো । নিরবকে দেখা মাত্র সালমা চোখ বুঝে নিলেন । কারন নিরবের মুখে একটা খত দাগ গভির ভাবে দেখা যাচ্ছে । আর সেই দাগ মুখে দগ দগ করছে । সালমা নিজেকে সামলিয়ে আবার ফোনের স্কিনে তাকালেন । দু’টো ফোটা চোখের পানি গাল বেয়ে পড়ার গেই হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে নিলেন সালমা । এসব ছেলের জন্য কাদতে নেই । কত মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনি মিনি খেলে এরা কে যানে । তার ভাইয়ের ছেলে না হলে । কখনোই নিরবকে ছেরে দিতে বলতেন না সালমা । নিদ্রকে ভাঙা গলায় আস্তে করে সালমা বললো ।

:+ওর কাছে ফোন’টা দাও তো ।(সালমা)

সালমার কথা শুনে, নিদ্র, রাহুলের হাতে ফোন দিয়ে বললো ।

:+ফোন’টা ওকে দে । চাচি আম্মা কথা বলবে ।(নিদ্র)

রাহুল, নিদ্রর হাত থেকে ফোন নিয়ে নিরবের দিকে বারিয়ে দাঁত কটমট করে বললো ।

:+নে ধর । তোর ফুফি, তোর সাথে কথা বলবে ।(রাহুল)

নিরব অসহায় দৃষ্টিতে রাহুলের দিকে তাকিয়ে ফোন’টা হাতে নিলো । মুখের সামনে ফোন আনতেই, সালমা, নিরবকে বললেন ।

:+কিরে,,,, বলে ছিলাম না । ভালো হয়ে যা, এখনো সময় আছে । আমার কথা তো শুনিস নি । এখন কেমন লাগছে । আমি এখনো আবার বলছি, ভালো হয়ে যা । অনেক মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনি মিনি খেলেছিস তুই ।(সালমা)

সালমার শেষের কথা শুনে, নিরব অবাক দৃষ্টিতে সালমার দিকে তাকালো । সালমা একটু হেসে বললো ।

:+তুই ভাবছিস আমি কি করে যানলাম । যে তুই অনেক মেয়ের জীবন নিয়ে ছিনি মিনি খেলেছিস । শুন তোর বেপারে খোজ নেওয়া এটা একটা বেপার না । হারুন ভাইয়ের ছেলে আমাকে সব বলছে । তুই কত ভালো ছেলে । আমি এমন যানলে কখনো তোকে দেশে আসতে বলতাম না । চলে যা এই দেশ থেকে । আর কখনো যেন তোকে এখানে না দেখি । তাহলে পরের বার আর আমি সুপারিশ করবো না, তোকে ছেরে দেওয়ার জন্য ।(সালমা)

কথা গুলো বলে সালমা খট করে কল কেটে দিলো । নিরব সুধু অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল । রাহুল এগিয়ে গিয়ে নিরবের হাত থেকে ফোন টান দিয়ে নিয়ে নিলো । এরপর কিছু কাগজ পত্র নিরবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো ।

:+এখানে তোর পাসপোর্ট, ভিসা আর সব কাগজ পত্র আছে । এখন সামনে থেকে তাড়াতাড়ি দৌড় দে । নাহলে লাত্থি মাইরা এয়ারপোর্টের ভিতরে পাঠামু ।(রাহুল)

রাহুলের কথা শুনে, নিরব শুকনো ঢোক গিলে সেখান থেকে এয়ারপোর্টের ভিতরে চলে গেল । সে আর কাওকে কিছু বললো না । রাহুলের কান্ড দেখে সবাই হাসতে লাগলো । জেক হাসতে হাসতে বলে উঠলো ।

:+বেচারা ভিষন ভয় পেয়েছে ।(জেক)

আবারো সবাই হেসে উঠলো । রাশেদ বললো ।

:+তাহলে আমরাও যাই । আমাদেরও সময় হয়ে আসছে ।(রাশেদ)

নিদ্র, রাশেদের কথা শুনে বললো ।

:+যা, তবে সময় মতো আবার চলে আসবি ।(নিদ্র)

সাব্বির পাস থেকে বলে উঠলো ।

:+গুরু,, এবার গেলে মনে হয় আর তাড়াতাড়ি আসতে পারবো না । আমাদের আব্বারা যে মিলে খেপে আছে ।(সাব্বির)

সুজন হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো ।

:+সময় হয়ে গেছে । ভিতরে চল । লেট হয়ে যাবে নাহলে ।(সুজন)

এই বলে নিদ্র, জেক আর রাহুলের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল সুজন, সাব্বির আর রাশেদ ।

:+দেখ বৃষ্টি পাগলামি করিস না । এভাবে কত দিন কলেজ অফ রাখবি । আজকেও কলেজে গেলি না । সামনে ফাইনাল পরিক্ষা আসছে ।(রুমি)

নিজের রুমে বেডের উপর শুয়ে আনবান বকছিল বৃষ্টি । তখনি রুমি এসে উপরোক্ত কথা গুলো বললো । বৃষ্টি চোখ লাল করে রুমি দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো ।

:+আমি পাগলামি করবো না,,,,,,,, আমি । আমি তো ওই নিদ্রর বাচ্চাকে দেখেই ছারবো । ওই মেয়েকে আমি জানে মেরে ফেলবো । পুরো কলেজের সামনে অপমানিত হতে হয়েছে ওই মেয়ের জন্য । আমি ওকে খুন করবো ।(বৃষ্টি)

রাগে গর্জিয়ে উঠে, বেডের পাসের ছোট টেবিলের উপর থেকে, ফুল দানি ফ্লোরে ছুরে মারলো বৃষ্টি । বিকট একটা শব্দ হলো । রুমি ভয়ে কেপে উঠলো । বৃষ্টি আবারো চিৎকার করে বলে উঠলো ।

:+ছারবো না আমি ওকে । খুন করবো । ওর রক্ত চুষে খাবো আমি ।(বৃষ্টি)

বৃষ্টি চিৎকার করছে দেখে, রুমি ভয়ে বলে উঠলো ।

:+বৃষ্টি আসতে চিৎকার কর । তোর আব্বু এসব শুনলে, তোকে জানে মেরে ফেলবে । এমনি তেই তোর উপর অনেক রাগ, তোর আব্বুর ।(রুমি)

রুমির কথা শুনে বৃষ্টি থমথমি খেয়ে যায় । সে তো এখন বাসায় । তার আব্বু এসব কথা শুনলে তো, তাকে মেরেই ফেলবে । বৃষ্টি তাড়াতাড়ি বেড থেকে নেমে, ফ্লোর থেকে ফুল দানির ভাঙা টুকরো গুলো কুরিয়ে, বরান্দার এক কোনায় লুকিয়ে রাখলো । এরপর আবার বেডের উপর এসে চুপচাপ শুয়ে পরলো । রুমি এগিয়ে গিয়ে বৃষ্টির বেডের পাসে বসে বললো ।

:+জেদ ছেরেদে বৃষ্টি । নিদ্র ভাইয়ার পিছনে আর লাগিস না । উনি তো বলে দিয়েছেন, উনি অন্য কাওকে ভালোবাসেন । তাহলে উনার পিছনে ঘুরার আর কোনো মানে হয় না । তুই নতুন করে, তোর মতো, আবার কাওকে খুজে নে ।(রুমি)

রুমির কথা শুনে, ঠাসস করে রুমির গালে চড় বসিয়ে দিলো বৃষ্টি । এরপর রুমির গলা চেপে ধরে দাঁত কটমট করে বললো ।

:+তুই বলে ছিলি না,, ও আমার নাগড় । তাহলে এখন কেন বলছিস? ওর পিছু ছারতে । ও আমার নাগড়ই হবে । আমি জোর করে হলেও ওকে আমার নাগড় বানাবো । হ্যাঁ,,,,,ও আমারই নাগড় হবে ।(বৃষ্টি)

এই বলে রুমিকে ধাক্কা মেরে বেডের উপর ফেলে দিলো বৃষ্টি । রুমি নিজের গলায় দু’হাত দিয়ে ডতে লাগলো । এরপর নিজেকে শান্ত করে বেডের উপর শোয়া থেকে উঠে বসে রুমি আবার বলে উঠলো ।

:+তুই অনেক ছেলের সাথে রিলেশন করেছিস বৃষ্টি ।(রুমি)

রুমির কথা’টা শুনে, মুখ বাকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে বৃষ্টি মুখে আওয়াজ করলো ।

:+তো ।(বৃষ্টি)

রুমি এবার একটু নিচু স্বরে বলে উঠলো ।

:+রিলেশনের সাথে সাথে শারীরিক সম্পর্ক,,,,,,,,,।(রুমি)

রুমি আর কিছু বলার আগেই, রুমির মুখ নিজের ডান হাত দিয়ে চেপে ধরলো বৃষ্টি । এরপর দাঁত কটমট করে বললো ।

:+হ্যাঁ,,করছি । কিন্তু এখন তো আর করছি না । তাহলে সমস্যা কি । আমি ওই নাগড় কে চাই । ওকে আমি, আমার করেই ছারবো । ওই নিদ্র বেটাকে আমার করেই ছারবোওওওওওওওও ।(বৃষ্টি)

রুমিকে আবার ঝারা মেরে বেডের উপর ফেলে দিয়ে খানিক’টা চিৎকার করেই বললো বৃষ্টি । রুমি নিজেকে সামলিয়ে, বৃষ্টির বেড থেকে নেমে দারিয়ে বললো ।

:+আমি এতোদিন যানতাম না, তুই এমন একটা বাজে মেয়ে । আজ প্রথম আমি শুনেছি তোর অনেক গুলো ছেলের সাথে রিলেশন ছিল । আবার তাদের সাথে শারিরীক সম্পর্কও ছিল । আজকে যখন কথা গুলে শুনলাম, আমার বিশাস হচ্ছিল না । কিন্তু এখন এখানে এসে, আমার সব কিছু ক্লিয়ার হয়ে গেছে । আজকের পর থেকে তুই আর আমাকে কল করবি না । তোর সাথে বন্ধু এখানেই শেষ । কথা’টা মাথায় ঢুকিয়ে নে । আমি যতো টুকু যানি,, তোর বাবা কখনো অপরাধ খমা করবেন না । তাই বলছি ভালো হয়ে যা ।(রুমি)

কথা গুলো বলে, বৃষ্টির রুম থেকে হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল রুমি । বৃষ্টি পিছন থেকে মুখ বাকিয়ে বলে উঠলো ।

:+যা যা । তোর মতো ফকিন্নি, ছোট লোক, বান্ধবী আমার লাগবে না । আমাকে কি করতে হবে, সেটা আমি ভালো করেই যানি ।(বৃষ্টি)

————————————-

সন্ধা ৭টা বাজে………….
ছাদের দোলনার উপর দোল খাচ্ছে তৃপ্তি, নীলা আর সুমি । তৃপ্তি নিজের ফোন দিয়ে উরা ধুরা গেম খেলছে । নতুন ফোন পেয়ে তার কোনো খুশির সীমা নেই । নীলা মন খারাপ করে নতুন টিকটক আইডিতে টিকটক দেখছে । সুমি নিজের ফোন দিয়ে ফেসবুকে ভিডিও দেখছে । কিছুদিন আগেই নিদ্রর কাছ থেকে ছাদের চাবি নিয়েছে তৃপ্তি । যাই হোক,,,,। সবাই সবার ফোন নিয়ে যখন ব্যস্ত । তখনি নীলা বলে উঠলো ।

:+রাত ৭টা বেজে গেছে । আমাদের নিচে যাওয়া উচিত ।(নীলা)

নীলার কথা শুনে, সুমি নীলার দিকে তাকালো । তৃপ্তি ফোনের দিকে তাকিয়েই বললো ।

:+যাবো তো,,,, আরো একটু বসো । এই লেভেল শেষ করে নেই ।(তৃপ্তি)

কথা’টা শুনে তৃপ্তির ফোনের দিকে উকি মেরে তাকালো নীলা আর সুমি । সুমি হেসে বলে উঠলো ।

:+কেন্ডিকেস খেলছে । এরকম একটা দামি ফোন পেলে মানুষ কতো কিছু করে । আর এই মেয়ে সারাদিন গেম আর কাটুন নিয়ে পড়ে থাকে ।(সুমি)

সুমির কথা শুনে, নীলা, তৃপ্তিকে জরিয়ে ধরে, তৃপ্তির কাধে চিবুক ঠেকিয়ে বললো ।

:+ওকে,,, ওর মতো থাকতে দে সুমি । ও এমন ভাবেই ঠিক আছে ।(নীলা)

হঠাৎ নীলার কিছু মনে পরতেই, তৃপ্তিকে ছেরে দিয়ে দোলনা থেকে নেমে দারালো । এরপর কিছু’টা ভয়ান্তক গলায় নীলা বললো ।

:+আমাদের তাড়াতাড়ি নিচে যাওয়া লাগবে । নিদ্র যদি চলে আসে, তাহলে আমাদের খবর করে ছারবে । সেদিন টিকটক করার পর কি চড়’টা মেরে ছিল সুইটিকে,, মনে নেই । এখন যদি আবার এসে বলে, রাতে ছাদে কি করছিস তোরা? তখন কি হবে?(নীলা)

নীলার কথা শুনে, সুমি চট করে দোলানা থেকে নেমে দারিয়ে শুকনো ঢোক গিললো । তৃপ্তি আগের ভঙ্গিতেই বসে গেম খেলছে । নীলার কথা যেন তার কানে পৌছায়নি । নীলা তৃপ্তিকে কিছু বলতে যাবে, তার আগেই পিছন থেকে কেও বলে উঠলো ।

:+হুমমমম,,,,চড়ের কথা মনে থাকলে, এই সন্ধা রাতে এখানে কি করছিস তোরা ? (নিদ্র)

নিদ্রর গলার আওয়াজ শুনে ভয়ে পেয়ে পিছনে ঘুরে তাকালো নীলা আর সুমি । তৃপ্তি নিদ্রর কথা গুলো পুরো ক্লিয়ার শুনতে না পারলেও, ফোন থেকে মাথা তুলে সামনে তাকিয়ে ছিল । কিন্তু তার সামনে নীলা আর সুমি দারিয়ে থাকায়, অপর সামনের ব্যক্তিকে দেখলো না সে । নীলা যেই ভয় পেয়ে ছিল । ঠিক সেটাই হলো । নিদ্র সেই প্রশ্ন’টাই করে বসছে তাদের । সুমি শুকনো ঢোক গিলে আস্তে করে বললো ।

:+আমরা চলেই যাচ্ছিলাম ভাইয়া । কিন্তু তৃপ্তি আমাদের কথা শুনছে না ।(সুমি)

নিদ্র, সুমি আর নীলার মাঝখান দিয়ে তৃপ্তিকে এক নজর দেখলো । তৃপ্তি খুব মনোযোগ দিয়ে গেম খেলছে । নিদ্র, নীলা আর সুমিকে হাতে ইয়ারা করে বললো ।

:+তোরা যা ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা আর চেহারা দেখে, নীলা কিছু একটা আন্দাজ করতে পেরে মুচকি হেসে সুমির হাত ধরে বললো ।

:+চল আমরা যাই ।(নীলা)

এই বলে নিদ্রর পাস কাটিয়ে নীলা চলে যাচ্ছি । হঠাৎ নিদ্র বলে উঠলো ।

:+নীলা দারা ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, নীলা দারিয়ে পিছনে ঘুরে নিদ্রর দিকে প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে তাকালো । নিদ্র বললো ।

:+তোর টিকটক আইডি ফেরত দেওয়া হয়েছে । ******* পাসওয়ার্ড দিয়ে চেক করে নিস ।(নিদ্র)

নীলা খুশিতে গজগজিয়ে উঠে টিকটকে ঢুকে, লগইনে গিয়ে, নিদ্রকে বললো ।

:+কি পাসওয়ার্ড বলছেন ভাইয়া ।(নীলা)

নিদ্র আবার পাসওয়ার্ড বললো । নীলা পাসওয়ার্ড তুলে লগইন কতেই নীলার পুরাতন টিকটক একাউন্ট ফিরে এলো । নীলার তো খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করছে । কিন্তু নিদ্রর সামনে কি করে লাফাবে । তাই সে শান্ত হয়েই মুখে চড়া হাসি এনে বললো ।

:+থ্যাংস,, নিদ্র ভাইয়া ।(নীলা)

এই বলে নীলা তার একাউন্টের ভিতরে গেল । একাউন্টের ফলোয়ার 2 M ছুই ছুই । নীলা বাক রুধ হয়ে সুমির হাতে ফোন দিলো । সুমিও তাকিয়ে শকড খেলো । এক ভিডিও’তে নীলার টিকটক একাউন্ট 2 মিলিয়ন ফলোয়ারে ছুই ছুই হয়ে দারিয়েছে । নীলা খাম্বার মতো নিদ্রর দিকে তাকিয়ে দারিয়ে রইলো । নিদ্র কপাল কুঁচকে বললো ।

:+একাউন্ট ফিরিয়ে দিয়েছি । আবার দেখিস, ওকে নিয়ে টিকটক করিস না । আর ওকে এগুলো শিখাবিও না । তাহলে চিরদিনের জন্য তোর এই টিকটক আইডি বন্ধ করে দেবো ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, হুস আসে নীলার । সে চট করে বলে উঠলো ।

:+না না না । আমি আর জীবনেও ওকে নিয়ে টিকটক করবো না । ওকে আমি এগুলো দেখাবোও না । এই কানে ধরছি ।(নীলা)

বলেই নীলা তার কান ধরলো । নিদ্র ডান হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে কপাল চুলকে বললো ।

:+এখন এখান থেকে যায় ।(নিদ্র)

নিদ্রর আদেশ পেয়ে, নীলা খুশিতে গর্জিয়ে উঠে সুমির হাত ধরে টেনে ছাদ থেকে নেমে গেল । আর নিদ্র মুচকি হেসে পিছনে ঘুরে তৃপ্তির দিকে তাকালো । তৃপ্তি দোলনার উপর বসে এখনো এক মনে গেম খেলে যাচ্ছে । নিদ্র আস্তে করে দোলনার কাছে গিয়ে, তৃপ্তিকে দু’হাত দিয়ে কোলে তুলে নিলো । হঠাৎ এমন হওয়ায় তৃপ্তি থমথমি খেয়ে নিদ্রর মুখের দিকে তাকালো । ফোন’টা হাত থেকে পরে যেতে নিলে, দু’হাত দিয়ে শক্ত করে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে তৃপ্তি । নিদ্র মুচকি হেসে তৃপ্তিকে কোলে নিয়ে দোলনার উপর বসে পরলো । তৃপ্তি প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিদ্রর দিকে । নিদ্র কখন আসছে সে বুঝতে পারছে না । হঠাৎ তৃপ্তির মনে এলো, সে তো এখন ছাদে । তার সাথে তো নীলা আর সুমি ছিল । তাহলে ওরা কোথায় । তৃপ্তি এদিক ওদিক তাকিয়ে নীলার আর সুমিকে দেখতে না পেয়ে, শুকনো ঢোক গিললো । আপনা আপনি গালে হাত চলে গেল তৃপ্তির । নিদ্র এটা দেখে হাসলো, যেই হাসির কোন শব্দ নেই । তৃপ্তির গালের উপরের হাত টাতে নিদ্র আস্তে করে ঠোঁট জোরা ছোয়ালো । তৃপ্তি চট করে গাল থেকে হাত সরিয়ে নিদ্রর দিকে তাকালো । নিদ্র নিজের ঠোঁট জোরা এবার চেপে ধরলো তৃপ্তির গালের সাথে । তৃপ্তি শীতল বরফের মতো হিম হয়ে যাচ্ছে । নিদ্রর গালের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি তৃপ্তির গালে সুইয়ের মতো লাগছে । তৃপ্তি একটু মোচড় দিয়ে উফফ করে মুখে একটা আওয়াজ করলো । নিদ্র, তৃপ্তির গাল থেকে ঠোঁট জোরা ছারিয়ে নিলো । এরপর তৃপ্তির দিকে কিছু’টা সরু চোখে তাকালো নিদ্র । তৃপ্তি খানিক’টা লজ্জা পেয়ে নিদ্রর বুকে মাথা ঠেকালো । নিদ্র দু’হাত দিয়ে তৃপ্তিকে জরিয়ে ধরলো । তৃপ্তি একটু সময় পর আবারো ফোনে মন দিলো । নিদ্র আকাশের দিকে তাকালো । আকাশে আজ চাঁদ উঠেছে । বেস উজ্জ্বল ভাবেই উঠেছে । নিদ্র, তৃপ্তির মাথার চুলে নাক ডুবিয়ে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো । আর তৃপ্তি, নিদ্রর বুকে মাথা ঠেকিয়ে ফোনে গেম খেলতে লাগলো । থেকে থেকে দমকা হাওয়ায় বাতাস আসছে । সেই বাতাসে তৃপ্তির চুল গুলো হেলতে দুলতে নিদ্রর সারা মুখে খেলা করছে । দোলনা’টা হালকা দুলছে । নিদ্রর গায়ের গরম উশ্ন ভাব তৃপ্তির সারা শরীরে ছেয়ে যাচ্ছে । তৃপ্তি আরো একটু নড়ে চড়ে নিদ্রর শরীরের সাথে মিসলো । নিদ্র ছোট করে তৃপ্তিকে ডেকে উঠলো ।

:+কিউটি ।(নিদ্র)

তৃপ্তি আস্তে করে হুম আওয়াজ করলো । নিদ্র আকাশের দিকে এলো মেলো চোখে তাকিয়ে বললো ।

:+চাঁদ’টা বেস সুন্দর তাই না ।(নিদ্র)

তৃপ্তি ফোনে গেম খেলতে খেলতে মুখে আবারো হুম আওয়াজ করলো । নিদ্র আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে তৃপ্তির দিকে তাকালো । ফোনে গেম খেলছে দেখে বিরক্ত হলো নিদ্র । এমন একটা মুহুর্তে ফোন চালালে ভালো লাগে । চট করে টান দিয়ে তৃপ্তির কাছ থেকে ফোন নিয়ে পকেটে পুরে নিলো নিদ্র । তৃপ্তি মুখ কালো করে নিদ্রর দিকে তাকালো । নিদ্র, তৃপ্তির নাকের সাথে নাক ঘসা দিয়ে বললো ।

:+আকাশের দিকে তাকা, দেখ চাঁদ’টা কতো সুন্দর । ঠিক তোর মতো ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, তৃপ্তি আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+চাঁদ দেখার কি আছে । ওটা তো প্রতিদিনই আকাশে উঠে ।(তৃপ্তি)

:+কিন্তু আমার কাছে আজকের ওই চাঁদ স্পেসাল । এই দিন আর আসবে কিনা যানি না ।(নিদ্র)

তৃপ্তিকে আরো নিজের সাথে মিসিয়ে বললো নিদ্র । তৃপ্তিও নিদ্রর বুকে মাথা ঠেকিয়ে এবার আকাশের দিকে ভালো করে তাকালো । সে বুঝার চেষ্টা করলো, যে চাঁদের মধ্যে আজ এমন কি স্পেশাল আছে । কোনো কিছু দেখতে না পেয়ে তৃপ্তি বললো ।

:+কৈ,, আমি তো কোনো কিছু দেখতে পারছি না ।(তৃপ্তি)

নিদ্র, তৃপ্তির চুলে নাক ডুবিয়ে দিয়ে বললো ।

:+তোর কিছু দেখা লাগবে না । সুধু চুপচপা বসে থাক ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, তৃপ্তি চুপচাপ বসে রইলো । কেমন একটা ভালো লাগা মন ছুয়ে যাচ্ছে তৃপ্তির । নিদ্রর হাত দু’টোর উপর নিজের হাত দু’টো রাখলো সে । এরপর আকাশের ওই চাঁদের দিকে অপলকে তাকিয়ে রইলো । কি আছে ওই চাঁদে বুঝার চেষ্টা করছে তৃপ্তি । নিদ্র, তৃপ্তির শেম্পু করা চুলের ঘ্রাণ নিচ্ছে । দু’জনের দৃষ্টি আকাশের চাঁদের দিকে বিচোরন । চাঁদের উপর থেকে দৃষ্টি সরছে না নিদ্রর আর তৃপ্তির । দোলানা’টা ধিরে ধিরে এপাস ওপাস দুলছে । আজকের এই সময়’টা যেন এখানে থেমে যায়, এটাই চাওয়া নিদ্রর ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

[।কপি করা নিষেধ।]

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here