#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________36
(বোনাস পর্ব)
“বর যাত্রী এসে গেছে” বলে জোরে চিৎকার করতে করতে মিমরের রুমের ভিতরে প্রবেশ করলো মিমি । সবার সাজ-গোছ প্রায় শেষ । তৃপ্তির সাজ একটু খানিক’টা বাকি ছিল । কারন সে সবার শেষে সাজতে বসেছে । বর পক্ষ এসে গেছে সুনে মিমের রুমের ভিতর থেকে হুর মুড়িয়ে বেরিয়ে গেল সবাই । সুধু নীলা আর তৃপ্তি মিমের সাথে মিমের রুমে থেকে গেল । নীলাও চলে যেত,,, কিন্তু নীলা যেতে পারেনি তৃপ্তির জন্য । কারন তৃপ্তির সাজ এখনো শেষ হয়নি । নীলা তৃপ্তির কপালে ছোট একটা কালো টিপ লাগিয়ে চট করে দারিয়ে বললো ।
:+একদম পারফেক্ট লাকছে । পুরো পুতুল পরি ।(নীলা)
পাস থেকে মিম বলে উঠলো ।
:+আপু,,, তোমার সাজ সেই সুন্দর । কি করে পারো এমন সাজ দিতে । যাকে যেই সাজ দিয়েছো,,, তাকেই সেই সাজ মানিয়েছে ।(মিম)
নীলা একটু গলা খেখিয়ে ভাব নিয়ে বললো ।
:+ও অনেক কষ্টে সিখেছি ।(নীলা)
মিম আবার বললো ।
:+মানতে হবে আপু,,,তুমি পাল্লারের মেয়েদের থেকেও অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছো ।(মিম)
নীলা মিমের দিকে এক পলক তাকিয়ে ফের তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আজকে আমাদের সুইটিকে দেখে পুরো ফিট হয়ে যাবে নিদ্র ।(নীলা)
তৃপ্তি নীলার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বললো ।
:+ফিট হয়ে যাবে মানে,,,,। ভাইয়া ফিট হবে কেন ।(তৃপ্তি)
নীলা মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো ।
:+ও কিছু না । এমনি বললাম আর কি ।(নীলা)
নীলার কথা সুনে ভ্র-কুঁচকে নীলার দিকে তাকালো মিম ।
:+আপু তুমি যানো এই বিষয়’টা ।(মিম)
মিমের কথা সুনে নীলা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না । তখনি মিম আবার বললো ।
:+লুকিয়ে লাভ নেই আপু । আমি সব যানি ।(মিম)
মিমের কথা সুনে নীলা মিমের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো ।
:+তাহলে আর কি বলবো ।(নীলা)
মিম মুখ বাকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে মুখে হুম আওয়াজ করলো । নীলা দু’হাত বুকে গুঁজে তৃপ্তির দিকে ভালো করে তাকালো । কোন কিছু মিসিং আছে কিনা দেখার চেষ্টা করছে । মিম বধূ বেসে নিজের বেডের উপর মাঝ খানে বসে আছে । নিদ্রর দেওয়া কানের দুল জোরা পরেছে সে । তখনি লম্বা লম্বা পা ফেলে মিমের রুমের ভিতরো প্রবেশ করলো ইকরা ।
:+আপু,,, এখানে দারিয়ে আছেন কেনো । বর পক্ষকে গেট ধরতে হবে না,,,, চলুন ।(ইকরা)
ইকরার কথা সুনে ধেন ভাঙলো নীলা, তৃপ্তি আর মিমের । নীলা মিমের দিকে একবার তাকিয়ে আবার ইকরার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আচ্ছা,,, ওরা কি গেটের কাছে চলে এসছে ।(নীলা)
ইকরা মাথা নারিয়ে মুখে বললো ।
:+হ্যাঁ,,, চলে আসছে ।(ইকরা)
নীলা তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে ইকরাকে বললো ।
:+তুমি যাও আমি আসছি ।(নীলা)
ইকরা আবার দুরুত্ব পায়ে মিমের রুম থেকে বেরিয়ে গেল । নীলা মিমের কাছে গিয়ে মিমকে বেডের উপর ঠিক মতো বসিয়ে দিলো । এরপর নীলা মিমকে ভালো করে দেখে বললো ।
:+হুম,,,পারফেক্ট আছে । আচ্ছা ,,, মিম আমরা আসছি । তুমি একটু খানি বসো ।(নীলা)
মিম মাথা নারিয়ে সাই দিলো । নীলা তৃপ্তির কাছে গিয়ে তৃপ্তির হাত ধরে মিমের রুম থেকে বেরিয়ে আসলো । মিমের বুক’টা দুরুদুরু করছে । এতোখন প্রজন্ত যেমনি হোকনা কেন । কিন্তু এখন বর পক্ষ এসে গেছে সুনে মিম ঘন ঘন ঢোক গিলছে । এদিকে এখন আর কেও নেই । সবাই ওদিকে বেস্ত । মিমের এখন ভিষণ কান্না পাচ্ছে । কিন্তু কাদতে পারছে না মেকাপ মুছে যাবে এই ভয়ে । ওই সময় নিদ্রর কাছে গিয়ে কান্না কাটি করায় একটু খানি মেকাপ মুছে গিয়ে ছিল । নীলা সেটা অনেক কষ্টে ঠিক করেছে । নীলা আর তৃপ্তি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেটের দিক যাচ্ছিল । তখনি ইকরা একটা ট্রে নিয়ে তাদের কাছে আসলো । তৃপ্তি ট্রে টার দিকে তাকালো । দেখলো তিনটে গ্লাসে সরবত আর ছোট দু’টো প্লেটে দু’টো করে চারটে মিষ্টি । ইরকা, নীলা, আর তৃপ্তিকে আসতে দেখে গেটের সামে যাওয়ার জন্য যায়গা করে দিচ্ছে সবাই । বর পক্ষের ছেলেরা হা করে তাকিয়ে আছে তিন রমনির দিকে । ইকরা আগে হাটছে আর নীলা, তৃপ্তি ইকরার পিছু পিছু হাটছে । ইকরা এসে বরের সামনে টেবিলের উপর ট্রে’টা রাখলো । টেবিলের এক পাসে বুকে দু’হাত গুজে দারিয়ে তিন রমনিকে দেখছে নিরব । সামিয়াকে এখনো দেখা যাচ্ছে না । কোথায় আছে কে যানে । ইকরা একবার চার পাসে চোখ বুলিয়ে নিলো । কারন সামিয়াকে এখন দরকার । মেয়েটা খুব ভালো করে গেটে যেড়া করতে পারে । এটা ইকরা এর আগে একবার দেখে ছিল । ইকরার চার পাসে তাকানো দেখে তৃপ্তি বললো ।
:+কিছু খুচ্ছো আপু ।(তৃপ্তি)
তৃপ্তির কথা সুনে বর পক্ষের ছেলেরা বুকে হাত দিয়ে বলে উঠলো ।
:+আয় হায় । বলেন কি বেয়াইন । কাকে খুচ্ছেন,,, আমরা তো এখানে ।(বর পক্ষের একটা ছেলে)
ছেলেটার অযুক্তি সংঘত কথায় ইকরা এবং তৃপ্তি অনেক বিরক্ত হলো । ইকরা তৃপ্তিকে বললো ।
:+সামিয়াকে দেখছি না,,,,,,,,,,,।(ইকরা)
তখনি সামিয়া পিছুন থেকে বলে উঠলো ।
:+আমি এসে গেছি ।(সামিয়া)
সামিয়ার কথা সুনে পিছনে ঘুরে তাকালো ইকরা নীলা,আর তৃপ্তি । সামিয়াকে দেখে ইকরার মুখে হাসি ফুটে উঠলো । সামিয়া এসে দারালো ইকরা নীলা আর তৃপ্তির পাসে । ইকরা সামিয়াকে বললো ।
:+এতোখন কোথায় ছিলে ।(ইকরা)
সামিয়া ইকরার কানে কানে ফিস ফিস করে বললো ।
:+পরে বলবো ।(সামিয়া)
ইকরাও আর কথা বারালো না । সুরু হয়ে গেলো সামিয়ার যেড়া । বর পক্ষকে সরবত খেতে আহ্বান করছে সে । নিরব বুকে দু’হাত গুজে এক রমনির দিকে অপলকে তাকিয়ে আছে । এই একটু খাটো রমনি’টা তার মনের গহিনে তোল পার সুরু করে দিয়েছে । বর,,, ওরুপে নিলয়,,, নিরবকে ভাবান্তক দেখে নিরবের পায়ে গুতু দিলো । ভাবনার মাঝ থেকে বেরিয়ে আসলো নিরব । নিরবের এমন চাহনি তৃপ্তির অনেক বিরক্তি লাকছিল । সে হাস ফাস করছিল এতোখন । নিরব সেটারই মঝা নিচ্ছিল । ভবনার যগত থেকে বেরিয়ে নিলয়ের দিকে তাকালো নিরব । নিলয় চোখের ইসারায় নিরবকে কাছে ডাকলো । নিরবও কান পাতলো নিলয়ের মুখের সামনে । এতখনি নিলয় বলে উঠলো ।
:+তুই কিছু বলছিস না কেন ভাই । এগুলো আদো খাওয়ার যোগ্য হবে কিনা কে যানে । তুই তো এমন নিরব ছিলি না । এমন নিরব হয়ে গেলি কি করে । তোর নামের সাথে কি সত্যি সত্যি নিরবতা নিয়ে আসছিস তুই ।(নিলয়)
নিলয়ের কথা সুনে নিরব একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার সোজা হয়ে দারালো । নিরবের উপর এখন এখানে কতো মেয়ে ক্রাশ খেয়ে বসে আছে কে যানে । লামিয়া,সনিয়া,সাথী,এরকম আরো অনেক মেয়েরা নিরবের দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো । ফর্সা চেহারা,,, বেস লম্বা । কপালের উপরের কিছু চুল নাকের ডগায় এয়ে পরেছে । নিরব গলা খেখিয়ে বললো ।
:+আপনারা তো জেদ করাছেন সরবত খাওয়ার জন্য । এম আই রাইট ।(নিরব)
নিরবের ভাব দেখে ইকরার, নীলার, তৃপ্তির,সামিয়ার,গা জ্বলে যাচ্ছে । সামিয়া দাত কটমট করে বললো ।
:+আপনি কি কানে কম শুনেন । তখন থেকে আমি কি বলছি তাহলে ।(সামিয়া)
সামিয়ার রিয়েক্ট দেখে নিরব হাত বারিয়ে একটা সরবতের গ্লাস হাতে নিলো । এরপর নাকের কাছে নিয়ে বুজার চাস্টা করলো এতে কি আছে । এরকম ভাবে তিন’টা সরবতের গ্লাস নাকের কাছে নিয়ে আবার ট্রে’তে রেখে দিলো । এরপর নিরব হো হো করে হেসে উঠে নিলয়ের উদ্দেশ্য বললো ।
:+ভাই নিলয় ।(নিরব)
নিলয় নিরবের দিকে তাকালো । নিরব আবার হো হো করে হেসে উঠলো । তৃপ্তি, নীলা, সামিয়া, ইকরা সহ সবাই আবুলের মতো নিরবের দিকে তাকিয়ে রইলো । নিরব কোন মতে হাসি থামিয়ে নিলয়ের গালে আলতো করে হাত রেখে বললো ।
:+ভাই আমার । তুই কি খাবি বল । মরিচ, হলুদ, নাকি লবন ।(নিরব)
নিরবের কথা সুনে সামিয়া চোখ বড়ো বড়ো করে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে আবার ইকরার দিকে তাকালো । ইকরারও একই অবস্থা । বর পক্ষের ছেলেরা সবাই হো হো করে হেসে উঠলো । কিন্তু সামিয়া হার মানতে নারাজ । সে নিরবের উদ্দেশ্য বললো ।
:+কি গেরান্টি আছে,,, যে আমাদের সরবতে মরিচ, হলুদ, লবন আছে ।(সামিয়া)
নিরব সামিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+আমি কি বলছি তোমাদের সরবতে মরিচ, হলুদ, লবন আছে ।(নিরব)
নিরবের কথা বলার ধরন দেখে সামিয়া সুকনো একটা ঢোক গিলো । নিজের কথায় নিজেই ফেসে গেলো । সামিয়া ইকরার দিকে তাকালো । ইকরা বররের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+সিদা মুদ্দে পের আ যাইয়ে দুলাভাই । পেয়চে নিকালো ।(ইকরা)
ইকরার কথা সুনে বর পক্ষের ছেলেরা হা করে তাকিয়ে রইলো । একটা ছেলে এগিয়ে এসে বললো ।
:+কিতনে পেয়চে চাহিয়ে আপ লো গো কো বেয়াইন ।(ছেলে)
ছেলেটার কথা সুনে ইকরা ভাব দেখিয়ে বলে উঠলো ।
:+১০হাজার পেয়চে নিকালো ।(ইকরা)
এদের কথা সুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠলো । ইকরা খুব বিরক্তি হলো । নীলা বলে উঠলো ।
:+দুলাভাই বেসি দেরি কইরেন না । ওদিকে আপনার মেহবুভা বসে আছে । তারাতাড়ি ১০হাজার দিয়ে দিন ।(নীলা)
নীলার কথা বলতে দেখে নিরব বুকে দু’হাত গুজে সোজা হয়ে দারিয়ে বললো ।
:+যাদি না দেই ।(নিরব)
এবার তৃপ্তি মুখ খুললো ।
:+তাহলে যেভাবে আসছেন সেভাবে চলে যান ।(তৃপ্তি)
সোজা সাপটা বলে দিলো তৃপ্তি । তৃপ্তির কথা সুনে সবাই ভ্র-কুচকে তৃপ্তির দিকে তাকালো । সামিয়া তো সক হয়ে তাকিয়ে আছে তৃপ্তির দিকে । নিরব নিজকে কিছু’টা সামলিয়ে বললো ।
:+না,, বিয়ে তো আমরা করেই যাবো । কিন্তু টাকা ওতো দিতে পারবো না । যদি নিতে হয় তাহলে ১ হাজার দিতে পারি ।(নিরব)
নিরবের এই কথা সুনে তৃপ্তি টেবিলের উপর একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো ।
:+১০হাজার,,,, মানে,,,১০হাজার । এক টাকাও কম হলে ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না ।(তৃপ্তি)
তৃপ্তিকে যত দেখছে তত অবাক হচ্ছে সবাই । যেই মেয়েটা একজন অপরিচিত মানুষের সাথে সামান্য কথা বলতে ভয় পায় । আর আজ সেই মেয়েটা এতো জোর গলায় কথা বলছে । তৃপ্তির হাত টেবিলের উপর থাকায় সামিয়া তৃপ্তির হাতের উপর হাত রেখে বললো ।
:+হ্যাঁ ১০ হাজারের এক টাকাও কম হলে চলবে না ।(সামিয়া)
সামিয়ার কান্ড দেখে ইকরা আর নীলাও তৃপ্তির হাতের উপর হাত রেখে বললো ।
:+এক টাকাও কম হলে চলবে না ।(নীলা আর ইকরা)
এদের এমন কান্ড দেখে বর পক্ষের সবাই হতবাক । নিলয় নিরবের দিকে অসহায় দিষ্টিতে তাকালো । নিরব বুঝে নিলো বন্ধু তাহার ১০ হাজার দিতেই রাজি । বিয়ে না করে সে ফিরবে না ।
:+ওকে,,,, ওকে,,,,যাস্ট ওয়েট ।(নিরব)
এই বলে নিরব পকেট থেকে টাটকা টাটকা ১০ হাজার টাকা বের করে দিলো । তৃপ্তি ছৌ মেরে নিরবের হাত থেকে টাকা নিয়ে নিলো । তৃপ্তির কান্ড দেখে সবাই হতো ভাক ।
★
:+ভাইয়া,,, এই ভাইয়া,,, উঠো,,, বর পক্ষ চলে এসছে ।(সজিব)
সজিবের কথায় ঘুম ভাঙলো নিদ্রর । ফোন মুভি দেখতে দেখতে কখন যে মিমির বেডের উপর ঘুমিয়ে পরেছে খেয়ালই নেই । সজিবের ধাক্কা খেয়ে ঘুম ভাঙে তার । নিদ্র আর-মোড়া ভেঙে হাই তুলতে তুলতে উঠে বসে বললো ।
:+কখন এসছে ।(নিদ্র)
সজিব ভ্র-কুচকে নিদ্রর দিকে একবার তাকালো । এরপর চট করে উত্তর দিলো ।
:+এসেছে তো প্রায় আধা ঘণ্টা হয়ে গেছে ।(সজিব)
নিদ্র অবাক হয়ে বললো ।
:+আমাকে এতোখন ডাকিস’নি কেন ।(নিদ্র)
:+ডেকেছি তো দুলাভ,,,,,,।(সজিব)
সজিবকে পুরো কথা শেষ না করতে দিয়ে নিদ্র সজিবের মুখ চেপে ধরলো ।
:+খবদার মাই পিচ্চি সালা বাবু । এই কথা কারো সামনে বলিয়েন না । তাহলে আমার আস্থ থাকবে না । আপাদত সব মেনেজ করে নেই তারপর ডাকিয়েন হ্যাঁ ।(নিদ্র)
এই বলে নিদ্র আসতে করে সজিবের মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিলো । সজিব হাসতে হাসতে কুটি কুটি হয়ে মিমির বেডে উপর গড়া গড়ি খেতে লাগলো । নিদ্র পরলো এক মোহা বিপদে । এই ছেলের সামনে সব বলে এখন মুসকিলে পরলো সে । নিদ্র নরম গলায় সজিবকে বললো ।
:+সজিব ভাই আমার । বুঝার চেস্টা কর । তোর আব্বু আম্মু সুনলে অনেক যামেনা করবে ।(নিদ্র)
সজিব কোন মতে হাসি থামিয়ে উঠে বসলো । এরপর বললো ।
:+আচ্ছা ভাইয়া,,, কাওকে কিছু বলবো না । এখন বাহিরে চলো । খুব খিদে পেয়েছে ।(সজিব)
:+ওকে চলো ।(নিদ্র)
এই বলে নিদ্র মিমির বেডের উপর থেকে নেমে মিমির ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে এসে দারালো । এরপর নিজেকে একটু পরি পাটি করে সজিবকে নিয়ে মিমির রুম থেকে বেরিয়ে আসলো সে । নিদ্র মিমের রুমের সামনে এসে ভিতরে একটু উকি মারলো । দেখলো মিমের পাসে তৃপ্তি, নীলা, সামিয়া, আরো অনেক মেয়েরা বসে আছে । সাথে কয়েক’টা ছেলেও আছে । কিন্তু তাদের মাঝে একজনে দেখে বেস অবাক হলো নিদ্র । আর সে হলো তৃপ্তির আম্মু । তিনি একটা ছেলেকে দেখিয়ে সবাইকে কি যেন বলছেন । ছেলে গুলোকে এর আগে দেখেনি নিদ্র । নিদ্র ভেবে নিলো এরা বর পক্ষের । নিদ্রকে দরজার সামনে দারিয়ে থাকতে দেখে ফেললো সালমা । তিনি হাতের ইসারায় নিদ্র মিমের রুমের ভিতর ডাকলেন । নিদ্রও চুপচাপ সজিবকে নিয়ে মিমের রুমের ভিতর প্রবেশ করলো । নিদ্র রুমে প্রবেশ করতেই কয়েক’টা মেয়ে নরে চরে বসলো । এটা দেখে নিরব একটু অবাক হলো । সে এতোখন প্রজন্ত এখানে বসে আছে কিন্তু কেও একটু নড়া চরাও করলো না । কিন্তু এই ছেলে আসাতেই সবার মাঝে কেমন একটা ভাব ভাব ফুটে উঠলো । নিদ্র আসতেই একটা মেয়ে চেয়ার থেকে উঠে নিদ্রকে বসতে দিলো । নিদ্র মেয়ে’টার দিলে ভ্র-কুচকে তাকালো । মেয়ে’টা লজ্জা কিত মুখ নিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে । নিদ্র চেয়ার’টা নিজের দিকে টেনে সজিবকে কোলে নিয়ে বসে পরলো । সালমা বললো ।
:+নিদ্র বাবা । এই হলো নিরব । আমার ভাইয়ের ছোট ছেলে । সজিব এহলো তোর মামাতো ভাই ।(সালমা)
সালমার কথা সুনে সজিব মুখ বাকালো । নিরবকে তার মোটেও পছন্দ হয়নি । সালমা নিদ্রকে দেখিয়ে নিরবকে বললো ।
:+নিরব,,,এ হলো আমার ভাসুরের ছেলে নিদ্র । আর ওর কোলে যে বসে আছে সে তোর একমাত্র ফুফাতো ভাই ।(সালমা)
নিরব নিদ্রর দিকে তাকিয়ে হাত বারিয়ে বললো ।
:+হাই,,,আমি নিরব ।(নিরব)
নিদ্রর মন চাচ্ছে না এই ছেলেটার সাথে হাত মিলাতে । কিন্তু তাকে সালমার দিকে তাকিয়ে হলেও মেলাতে হবে । নিদ্র আসতে করে নিরবের হাতের সাথে হাত মিলিয়ে বললো ।
:+আমি নিদ্র । নিদ্রায়ন আহমেদ নিদ্র ।(নিদ্র)
নিদ্রর নাম বলার স্টাইল দেখে কয়েকটা মেয়ে লুতু পুতু হয়ে নিদ্রর দিকে তাকালো । নিদ্র নিরবের হাত থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিলো । নিরবও আসতে করে হাত সরিয়ে নিলো । মিম চুপচাপ বসে আছে । সাথে বাকি রাও । সালমা বলে উঠলো ।
:+আচ্ছা,, এখন তো পরিচিত হয়ে গেলে সবাই । এবার আসো আগে খাওয়া দাওয়া করে তারপর কথা বলো । চলো সবাই ।(সালমা)
এই বলে সালমা মিমের বেডের পাস থেকে উঠে দারালো । এরপর নিরবের দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+চল,,, আগে খেয়ে নে । তারপর কথা বলিস ।(সালমা)
সালমার কথা সুনে নিরব তৃপ্তির দিকে তাকালো । তৃপ্তি মুখ বাকিয়ে অন্য দিকে তাকালো । নিরব বললো ।
:+ফুফি তৃপ্তি খাবে না ।(নিরব)
এই কথা সুনে নিদ্রর চেয়াল শক্ত হয়ে উঠলো । সে যা ভেবেছিল তাই সঠিক । ছেলেটা মোটেও সুভিদের নয় তাকে সর্তক থাকতে হবে । সালমা একটু হেসে বললো ।
:+না ও একটু পরে খাবে । তোমার অনেক দুর থেকে এসছো,,, তোমরা আগে খেয়ে নাও । পরে ওরা খাবে ।(সালমা)
নিরব আর কিছু বললো না । সালমা নিদ্রর দিকে তাকালো । দেখলো নিদ্রর কপালের রগ টান টান হয়ে দারিয়ে গেছে । সালমা একটা সুকনো ঢোক গিললো । মনে মনে বলে উঠলো ।
:+হায় আল্লাহ । এই ছেলের এখন আবার কি হয়েছে । আল্লাহ সব শান্ত রাখো তুমি । এখানে যাতে কোন গন্ডগোল না হয় ।(সালমা)
মনে মনে এগুলো বলে সালমা কাপা কাপা হাতে নিদ্রর কাধে হাত রেখে বললো ।
:+নিদ্র বাবা । খাবে চলো । সেই সকালে খেয়েছো ।(সালমা)
সালমার আদুরে কথা সুনে নিরব ভৌরকে গেল । সে অবাক হয়ে সালমার দিকে তাকালো । যেন নিজের মেয়ের জামাইকে ডাকছে খাওয়ার জন্য । মিমও এতে বেস অবাক হয়ে তাকালো সাথে সবাই । নিদ্র নিজেকে শান্ত করে নিলো ।
:+আমি আসছি আপনি যান ।(নিদ্র)
নিদ্রর সাভাবিক কথা সুনে সালমা একটা সস্থির নিশ্বাস ছারলেন । এরপর নিরবকে তারা দিয়ে বললেন ।
:+আয় আয় । খাবি চল ।(সালমা)
এই বলে সালমা মিমের রুমের বাহিরে দিকে হাটা ধরলো । নিরবও আর বসে না থেকে সেও সালমার পিছু নিলো । সাথে নিরবের বন্ধুরাও । সাথে কয়েকটা মেয়ে এসেছিল তারাও । মিমের দরজার পাসে গিয়ো নিরব আবার পিছনে ঘুরে নিদ্রর দিকে তাকালো । এরপর পুরো রুমে চোখ বুলালো । দেখলো সব মেয়েরা লুতু পুতু হয়ে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে । যেন এখনি তাকে খেয়ে ফেলবে । বেচারা একা মাথা নিচু করে বসে আছে । নিরব এবার বেস বুঝতে পারলো এই ছেলে যেখানে থাকবে সেখানে তার কোন দাম থাকবে না । নিরব আবার সামনের দিকে ঘুরে মিমের রুম থেকে বেরিয়ে গেল । নিদ্র আর-চোখ একবার নিরবের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো । সবাই বেরিয়ে যেতেই মিম তার কাজিন দের উদ্দেশ্য বললো ।
:+তোরাও যা খেয়ে নে ।(মিম)
ইকরা বললো ।
:+আমরা খেয়ে নেব মানে । আমরা তোর বররের সাথে খাবো ।(ইকরা)
মিম ভ্র-কুঁচকে ইকরার দিকে তাকিয়ে বললো ।
:+সবাই আমার বররের সাথে খেতে বসবে কি করে । এখানে কতো জন আছে,,,, খবর আছে তোমার ।(মিম)
মিমের কথা সুনে নিদ্র মুচকি হাসলো । “আমার বর” কথা’টা ভাবতেই নিদ্রর উচ্চ স্বরে হাসি পাচ্ছে । মেয়েটা মানিয়ে নিয়েছে বেস । নিদ্র খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারছে । ইকরা বললো ।
:+তাও ঠিক,,, সবাই এক সাথে বসা যাবে না । আচ্ছা ঠিক আছে । আমি, নীলা আপু, তৃপ্তি, আর সামিয়া তোর সাথে বসবো । আর বাকিয়ে যাও গিয়ে খেয়ে নাও ।(ইকরা)
ইকরার কথা সুনে লামিয়া ঠোঁট বাকিয়ে বললো ।
:+নিজেরা আনন্দ করবে । আর আমাদের সেখান থেকে ভাগিয়ে দিচ্ছে ।(লামিয়া)
লামিয়ার এমন বক্তব্য সুনে ইকরা কপট রাগি সুরে বললো ।
:+লামিয়া এখানে কোন ডান্স হচ্ছে না যে আমরা আনন্দ করবো । এখানে,,, যাই হোক । তোরা তাড়াতারি এই রুম থেকে বের হ ।(ইকরা)
ইকরার রাগ দেখে লামিয়া আর কোথা বারালো না । সে রাগ দেখিয়ে সেখান থেকে চলে গেল । সাথে সব মেয়ে রাও । এখন সুধু মিম, ইকরা,তৃপ্তি,সামিয়া,আর নীলা আছে । সাথে নিদ্র আর সজিব । সজিব বলে উঠলো ।
:+ভাইয়া খিদে পেয়েছে চলো আমরাও খেয়ে নেই ।(সজিব)
নিদ্র মাথা তুলে একবার সবার দিকে তাকালো । মিম করুন দৃষ্টিতে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে । ইকরা বললো ।
:+হ্যাঁ,, ভাইয়া আপনাও যান খেয়েনিন ।(ইকরা)
ইকরার কথা সুনে নিদ্রর ইকরার দিকে একবার তাকিয়ে নীলা আর তৃপ্তির উদ্দেশ্য বললো ।
:+নীলা,তৃপ্তি চল খাবি ।(নিদ্র)
নিদ্রর এই কথা সুনে সবাই ভ্র-কুঁচকে নিদ্রর দিকে তাকালো । মিম বললো ।
:+প্লিজ ওরা থাকুক । আমার সাথে না হয় খাবে ।(মিম)
নিদ্র আর-চোখে একবার মিমকে দেখে নিলো এরপর একটা জোসে শ্বাস নিয়ে বললো ।
:+না ওরা এখন খাবে ।(নিদ্র)
মিম করুন দিষ্টিতে নিদ্রর দিকে তাকালো ।
:+প্লিজ ।(মিম)
নিদ্র কিছু’টা কপট রাগ দেখিয়ে বললো ।
:+আমি কথা বলছি যে কানে যাচ্ছে না তৃপ্তি ।(নিদ্র)
নিদ্র ঝা ঝালো কন্ঠ সুনে কেপে উঠলো সবাই । ইকরার তো রিতি মতো কাপা কাপা অবস্থা । তৃপ্তি কিছু না বলে রাগ দেখিয়ে মিমের বেড থেকে নেমে মিমের রুম থেকে বেরিয়ে গেল । তৃপ্তির পিছু পিছু নীলাও বেরিয়ে গেল । এবার মিম কাদো কাদো সুরে বললো ।
:+আমার কি কোন সপ্ন পুরোন হবে ।(মিম)
নিদ্র একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো ।
:+কারো সপ্ন কখনো পুরোন হয় না । এখানে একটা পরিস্থিতি ঘটতে যাচ্ছে । যার পূর্বাভাস পাচ্ছি আমি । প্লিজ মিম মন খারাপ করো না । তুমি তোমার কাজিন দের নিয়ে এনজয় করো । আর সামিয়া তো আছেই ।(নিদ্র)
মিম কাদো কাদো হয়ে বললো ।
:+প্লিজ আমার এই শেষ ইচ্ছা’টা পুরোন করেন ।(মিম)
:+সরি মিম ।(নিদ্র)
এই বলে নিদ্র মিমের রুম থেকে বেরিয়ে আসলো । মিম এবার ঠুকরে কেদে উঠলো ।
——————————-
বিকের ৪টা বাজে…………
খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই এদিক সেদিক ঘুরা ঘুরি করছে । কাজি সাহের বিয়ে পরানোর কাজ সুরু করে দিয়েছেন । মিম স্টেজে নিলয়ের পাসে বসে আছে । নিদ্র বেস কিছু খন ধরে তৃপ্তিকে দেখছে না । এদিকে কাজি সাহেব মিমকে কবুল বলতে বলছেন । মিম একবার তার বাবা মায়ের দিকে তাকাচ্ছে আবার নিদ্রর দিকে । নিদ্র বুকে দু’হাত গুজে দারিয়ে দেখছিল । মিমের চোখে চোখ পরতেই সে চোখে হসারা করলো মিমকে কবুল বলতে । মিমের বুকের ভিতর’টা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে এবার । তবুও সে তার বাবা মায়ের দিকে তাকালো । হঠাৎ নিদ্রর চোখ একদিকে আটকে যায় । দু’হাত মুঠি বব্দ করে ফেলে নিদ্র । কপালে রগ টান টান হয়ে দারিয়ে গেছে । চোখ দু’টো রক্তা জবা ধারন করছে । নিদ্র দেখলো মিমদের বাড়ির ভিতরে নিরব হাতে একটা গোলাপ নিয়ে তৃপ্তিকে দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে তৃপ্তির সারা মুখে গোলাপ ফুল’টা দিয়ে ছুয়ে নারা চারা করছে । তৃপ্তি ছুটার বার্থ চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না । নিদ্র লম্বা পা ফেলে সেদিকে এগিয়ে গেল । গিয়ে খপ করে নিরবের হাত ধরে ফেললো নিদ্র । তৃপ্তি তাড়াতাড়ি এসে নিদ্রর পিছনে লুকালো । নিদ্র নিরবের হাত’টা ঝারি মেরে ছেরে দিলো । পিছন থেকে একটা ছেলে এসে নিদ্র গালে ঠাস করে চড় মেরে বললো ।
:+তোর সাহস তো কম না । আমার বন্ধুর কাজে বাধা দেস । ভালোয় ভালোয় এখান থেকে ফোট । ভাবিকে,,,,,,,,,।(ছেলে)
ছেলেটা আর কিছু বলার আগেই নিদ্র ছেলেটার গলা চেপে ধরলো ডান হাত দিয়ে । নিরব এগিয়ে আসতেই নিদ্র বাম হাত দিয়ে নিরবের গলা চেপে ধরলো ।
:+কুত্তার*চ্চা তোর সাহস হয় কি করে আমার জানের দিকে চোখ তোলার ।(নিদ্র)
এই বলে নিদ্র নিজের গায়ের সর্ব শক্তি দিয়ে নিরব আর তার বন্ধুর গলা চেপে ধরলো । একটু দুর থেকে বজলুর এটা দেখতে পায় । তিনি চিৎকার করে নিদ্রর কাছে দৌড়ে আসেন । নিদ্র হাত নিরব আর তার বন্ধর গলা থেকে ছুটানোর চেস্টা করেন তিনি । সাথে আরে অনেকেই এসছে ছুটাতে । অনেক ধস্তাধস্তির পর নিদ্র হাত নিরব আর তার বন্ধর গলা থেকে সরাতে পারলো । প্রায় অধেক মরনের দরজায় নিরব আর তার বন্ধুকে নিয়ে গিয়েছিল নিদ্র । গলা থেকে হাত সরতেই ফ্লোরে লুটিয়ে পরলো তারা । মুহুতেই বিয়ে বাড়ির মাঝে হা হা কার হই হুলুস্থুল সুরু হয়ে গেলো । নিদ্রকে কিছুতেই থামাতে পারছেন না বজলুর । বজলুরকে আর সাথে দুজনকে ঠেলে নিদ্র তেরে তেরে আসছে নিরবের দিকে । তাড়াতাড়ি বর পক্ষের কিছু লোক নিরব আর তার বন্ধুকে সেখান থেকে নিয়ে গেল । সালমা সুধু হতো ভাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন । বজলুর অনেক কষ্টে নিদ্রকে শান্ত করে । কিন্তু নিদ্রর রাগ এখনো কমছে না । সে তৃপ্তি হাত ধরে টেনে বিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে এলো । সবাই সুধু হতো ভাক হয়ে তাকিয়ে ছিল নিদ্রর দিকে । মুহুর্তের মাঝে কি থেকে কি হয়ে গেলো কেও বুঝতেই পারলো না । মিম অঝোর ধারায় কান্না করছে । কান্না করতে করতে তিন বার কবুল বলে দিলো সে ।
#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,
(।কপি করা নিষেধ।)
[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দিষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]