স্বপ্নের প্রেয়সী 💖 Part -3

0
109

💖 স্বপ্নের প্রেয়সী 💖
Part -3
________________

ওনি আমার কাছে এসে আমাকে থাপ্পড় দেওয়ার বদলে আমাকে চমকে দিয়ে আমার মুখে তার হাত আলতো ভাবে ছোঁয়ালেন । তার স্পর্শে আমি ইষৎ শিউরে উঠেছি।

ওনার হাত আমার মুখে রেখেই বললেন, “ফারাবি ভয় পাচ্ছিস কেন। আমার দিকে তাকা।”

“উহুহু ”

“ফারাবি প্লিজ।”

তার এমন ঠান্ডা মেজাজ, হৃদয় কাতর আবেদনে না চাইতে ও তার দিকে তাকালাম। চোখ দুটো যেন এক প্রকার আমার সাথে যুদ্ধ করেই ওনার দিকে তাকিয়েছে।

তাকাতেই দেখলাম ওনি আমার দিকে ঘোর লাগানো চোখে তাকিয়ে আছেন। আর আমার অনেকটাই কাছে। শুরুতেই একটু ইতস্তত বোধ করলাম। কারন এই কয়েক মাসে ওনি আমার সামনে তো দূরের কথা আমার সাথে ভালো করে কথাই বলে নি। সব সময় অকারনেই রাগ দেখাতেন।অথচ ওনার সাথে আমার সম্পর্কটা ছিল মশ্রিণ, ঝকঝকে তকতকে। চোখাচোখি হওয়ায় কিছুটা লজ্জা পেলাম। একটা অদ্ভুত শিহরণ অনুভব হতেই চোখ সরিয়ে নিলাম।

ফারহান স্যার আবার বলা শুরু করলেন, “আমি কি চোখ সরাতে বলেছি তোকে? তাহলে চোখ সরালি কেন। আমার দিকে তাকাতে কষ্ট হয়। কেন আমি কি বাঘ না ভাল্লুক যে তকে খেয়ে ফেলব। খেয়ে ফেললেই কি। তুই শুধু আমার দিকে তাকাবি। কই কান্তের দিকে তাকাতে তো ভয় পাচ্ছিলি না।”
____________
2 মাস আগে
[ কান্ত হলো আমার এক ব্যাচ সিনিয়র ভাইয়া। সেই সাথে আমার বান্ধবী শিখার মামাতো ভাই। তাই বেশ কয়েক বার কথা হয়েছে আর একই স্কুল হওয়ায় মোটামুটি ভালোই সম্পর্ক। এমনিতে যদিও ওনার সাথে তেমন কথা হয় না বহুদিন। কিন্তু সেই দিনটা ছিল ওনার জন্মদিন। তাই ওনি আমাদের স্কুলের পাশে যেই পার্কটা আছে সেখানে ওনার বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছিল। আমাকে দেখেই বলল, ‘ হে ফারাবি।”
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম, “জী ভাইয়া। কেমন আছেন?”

“এই তো ভালোই। দেখ না সেই কখন থেকে বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু ওরা সব লাপাত্তা। তা তুমি কেমন আছ?”

একটি মিষ্টি হাসি দিয়ে বললাম, “আলহামদুল্লিহ ভালো।”

“তা এখন কি বাসায় যাচ্ছ?”

” হুম।”

“ফারাবি আজকে না আমার জন্মদিন। ওদের তো আসার নাম ই নেই। চলো আজকে তোমাকে ট্রিট দেই ।”

“শুভ জন্মদিন ভাইয়া। কিন্তু এখন না আমার কাছে তেমন সময় নেই ,অন্য একদিন হবে।”

“প্লিজ ফারাবি। জাস্ট ফাইভ মিনিট। প্লিজ না বলো না।”

একপ্রকার জোড়াজোড়ি শুরু করে দিলেন। কিছুটা বিরক্ত হচ্ছি, কিন্তু প্রকাশ করতে পারছি না। তো আর কি করার অগত্যা যেতেই হলো।
______________

আমরা একটু এগিয়ে একটা কফি হাউসে ঢুকলাম। বসে আছি , ইতস্তত বোধ হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেতে হবে।
কান্ত ভাইয়া বলল, “তো ফারাবি কি নিবে বলো।”

বুদ্ধি করে বললাম কোল্ড কফি। যাতে ফাস্ট যাওয়া যায়।
“আর?”

“আর কিছু না।”

“কি বলো। শুধু কোল্ড কফি আর কিছু তো নাও।”

“না ভাইয়া। আর কিছু নিব না।”

ওনি আর তেমন জোড়াজোড়ি করলেন না। কফিটা ফাস্ট কমপ্লিট করে বললাম, ” ভাইয়া আজ আমি আসি। গিফট টা পাওনা রইল।”

“হা হা আচ্ছা সে রইল পাওনা। কিন্তু আর একটু বসে যাও।”

“না ভাইয়া। অনেকটা দেরি হয়ে গেছে।”

“আচ্ছা এক মিনিট ” বলে পাশের শপ থেকে কিটক্যাট নিয়ে এসে আমাকে দিলেন। কিটক্যাট আর ড্রাক চকলেট বলতে আমি অজ্ঞান। তাই কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নিয়ে নিলাম আর বিদায় জানিয়ে চলে আসলাম।
_______________

বের হতে না হতে, কারো থা প্প ড় পড়লো আমার গালে।
কিছুটা চমকে উঠলাম। পরক্ষণেই যাকে আমার সামনে দেখলাম তার জন্য মোটে ও আমি প্রস্তুত ছিলাম না।ফারহান স্যার! মনে হচ্ছে আমাকে জলন্ত লাভাতে ফেলে দিবেন। চোখ গুলো অসম্ভব লাল। বেশ অনেকক্ষণ ধরে রাগ চেপে আছেন তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বুকে পানিশূন্য অনুভব করছি , হয়ত আমি এখন পানির অভাবে ম রে যাব।
জ্বীভ দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিলাম। আমার হাত থেকে চকলেট গুলো নিয়ে নিয়েছেন তিনি। কি বলব বুঝতে পারছি না। হঠাৎ করেই কিটক্যাট এর দুইটা বক্স ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “স্কুলে পড়াশুনা করতে আসিছ নাকি কফি হাউসে কফি খেতে। চুপ চাপ বাসায় যাবি। নেক্সট টাইম যদি দেখি ঠ্যাং ভেঙে রেখে দিব।”

বলেই কান্ত ভাইয়ার দেওয়া চকলেট গুলো পাশের বাচ্চাদের দিয়ে দিলেন। কিছু না বলে চুপচাপ মাথা নিচু করে বাসার দিকে রওনা দিলাম। পিছে তাকানোর সাহস আমার নেই। থা প্প ড় টা বেশ কষিয়েই দিয়েছেন, মনে হচ্ছে গালটা ফেটেই গেছে। তাড়াতাড়ি হাঁটা শুরু করলাম। মানুষ এতটা নির্দয় হয় কি করে। আমার শিক্ষক বলে কি এভাবে রাস্তা ঘাটে চড় দিবে! ”
_____________________

এই হলো কাহিনি মনে পড়তেই কেঁপে উঠলাম। কিছুটা তুতলিয়ে উওর দিলাম, “তেমন না। আমি তো…”

আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই ওনি রাগি ভাব নিয়ে বলা শুরু করলেন, ” আজকে তোর পড়া দ্বিগুণ করে দিলাম।এটাই তোর শাস্তি। গট ইট কালকে আমি যেন কোনো পড়া মিস না দেখি।”

কথাটা শেষ করেই ওনি গট গট করে বের হয়ে গেলেন ।
___________________

আমি যেন আক্কেল হারিয়ে বেক্কেল বনে গেলাম। কি থেকে কি হলো কিছু ই বুঝলাম না। একটু আগেই তো কত সুন্দর করে বলছিলেন ফারাবি আমাকে বাঘ মনে হয় তোর, তাহলে ভয় পাচ্ছিস কেন। অথচ শেষে রাগ দেখিয়ে দ্বিগুণ পড়া দিয়ে চলে গেলেন!

(আপনাদের মতামত আশা করছি। কেমন হচ্ছে জানাবেন।আর আপনাদের বন্ধুদের সাথে আলোচনা করবেন। বিভিন্ন গ্রুপে রিভিউ দিতে পারেন। পাশে থাকুন , আর বাজে মন্তব্য করবেন না প্লিজ। )

বি:দ্র: ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।

💜 হ্যাপি রিডিং 💜

ফাতেমা তুজ
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here