রাঙিয়ে_দাও #পর্ব_১৯ #লেখনীতে_শারমীন_ইসলাম

0
121

#রাঙিয়ে_দাও
#পর্ব_১৯
#লেখনীতে_শারমীন_ইসলাম

ফজরের সালাত আদায়ের মধ্যেমে প্রতিটি মুসলমানের মনে যেমন অনাবিল প্রশান্তি বয়ে আনে,তেমন জীবনে বয়ে আনে কল্যাণ।নামাজ অন্যরকম প্রশান্তি,যা দ্বিতীয় আর কোনো মধ্যেমে সেই প্রশান্তি উপলব্ধি করা যায়না।
ফজরের সালাত আদায়ের মধ্যেমে সেই হৃদয় শীতল করার মতো প্রশান্তি,অনবদ্য সুখ,কল্যাণ জেনো একটু বেশিই অনুভব করা যায়।

ফজরের সালামের পর সেই শরীর মন জুড়ানো প্রশান্তি আর তৃপ্ত হৃদয় নিয়ে বাড়ি ফিরলো প্রহান।আজ একটু দেরীই হলো বাড়িতে ফিরতে।নামাজ পড়ে মুখ পরিচিত কিছু মানুষের সাথে কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়েছে তার।বাহিরের ঘনঘটা অন্ধকারত্ব মিলিয়ে গিয়ে যখন সুবহেসাদিকের আলো ছড়িয়ে পড়লো চারদিকে তখনই বাড়িতে ফিরলো প্রহান।রুমে ঢুকতেই আপনাআপনি নজর চলে গেলো নিজের রুমের বিশাল জায়গাজুড়ে নেওয়া বেড টার দিকে।সঙ্গে সঙ্গে পায়ের চলন ধীর হয়ে এলো তার।আরও দুকদম সামনে বাড়াতেই পাজোড়া পুরো স্থির হয়ে গেলো।নজর জোড়া পলকহীন হয়ে গেল বেডে শয়নরত লতাঙ্গ ফর্সা শরীরের রমণীর পানে।যে কিনা নির্দ্বিধায় শান্ত মেয়ের মতো ঘুম কাতুরে হয়ে পড়ে আছে তার বেডের উপর।

সাদা আর গোলাপিরঙা ফুলের মিশ্রণের বেডকভারের উপর শুয়ে থাকা লালপরী কোলবালিশ জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে।তার ঘুমকাতুরে মায়াবিনী মুখ।এলোমেলো মেঘরাশি চুল।ফর্সা চিকন হাত,খোলা পায়ের অংশ। নজর কাড়লো প্রহান।শান্ত নজরে কিছু সময় সেদিকে তাকিয়ে থেকে ভাবলো।এই রমনী এখানে কি করছে? নিজের ইচ্ছেতে তো কারন ছাড়া কোনোমতেও তার এখানে থাকার কথা নয়।তবে?তবে কি তারই নজরের ভ্রম।হয়তো!সঙ্গে সঙ্গে নজর জড়ো বন্ধ করে নিলো প্রহান।কিছুক্ষণ যেতেই ফের খুলে ফেললো।নাহ…সেই একই মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্যময়ী দৃশ্য।তবে কি সত্যিই সেই অনাকাঙ্ক্ষিত রমণী তারই বিছানায় ঘুমিয়ে আছে।তবে কেনো?নিজের মনে প্রশ্নটা আওড়িয়ে ও পা ধীর কদমে বাড়ালো সেই রমণীর পানে।বেডের কাছে যেতেই সেই রমণীর সৌন্দর্যময়ী রূপবলী আর-ও নজর ধাঁধালো ।কিছুটা ঝুঁকে সেই গোলগাল মায়াবিনী মুখের দিকে তাকিয়ে রইল প্রহান।নিজের মনের ভ্রম কাটানোর জন্য পরপর দু’বার ডাক দিলো সেই রমণীকে।

—এই প্রান।

ঘুমের ঘোরে গলার তফাৎ বুঝতে পারলোনা প্রান্তি।প্রথমবারের ডাক কানে না গেলেও দ্বিতীয়বারের ডাক আবাছা হয়ে কানে গেলো তার।একটু নড়েচড়ে ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললো।

—আমার খুব ঘুম পাচ্ছে বড়আম্মা।ডেকো না আমা….

কথা শেষ না করেই চুপ হয়ে গেলো সে।নিজের মনের ভ্রম কাটতেই মুখে প্রশান্তিময় হাসি ছুটলো প্রহানের।মাথাটা আরও ঝুঁকিয়ে নিয়ে প্রান্তির গালে আলতোকরে ঠোঁট বসিয়ে গভীর চুমু গেলো সে।ফের মুখ উঁচু করে নিজের হাত দ্বারা প্রান্তির মুখের এলোমেলো চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে কপালেও প্রগাঢ় চুমু বসালো। দীর্ঘ সময়টা পার করলো সেখানে।গভীর ঘুমের মধ্যেও প্রান্তি সেটা অনুভব করলো।ফের আবার-ও ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে উঠলো।

— তুমি আমায় এতো ভালোবাসো কেনো বড়আম্মা?

প্রহানের পুরুষালী পুরো লালরঙা ঠোঁটজোড়া তখনও প্রান্তির ফর্সা নিটোল কপাল ছুঁয়ে আছে।প্রান্তি ঘুম জড়ানো কন্ঠে কথাটা বলতেই মৃদু ঠোঁট প্রসারিত করে চোখজোড়া বন্ধ করে ফেললো সে।মৃদুস্বরে বললো।

—তুই সুখ,তুই শান্তি,তুই মানেই আমার প্রশান্তি।তুই নামক চঞ্চলা হরিনীতে এই প্রহান কি অনুভব করে এটা যদি তুই জানতি।তোকে না ভালোবেসে উপায় আছে?

প্রহানের মৃদুস্বরে বলা কথার আর উত্তর এলোনা।ঠোঁট সরিয়ে মুখ উঁচু করে প্রান্তির মুখের দিকে তাকালো প্রহান।মেয়েটার ভারী নিঃশ্বাস বলে দিচ্ছে মেয়েটা গাঢ় ঘুমে।সেদিকে বেশ কিছুসময় তাকিয়ে, পায়ের কাছ থেকে হালকা কাথাটা নিয়ে প্রান্তির অর্ধ শরীর জড়িয়ে দিলো সে।ফ্যানের বাতাসে বারংবার এলোমেলো করে দেওয়া প্রান্তির চুলগুলো আবারও নিজের হাত দ্বারা মুখ মুছে দেওয়ার মতো করে সরিয়ে দিল।নিজের লোভ সংযাত করতে না পেরে আবারও প্রগাঢ় চুমু বসালো প্রান্তির কপালে।তবে এবার আর সময় নিলোনা মূহুর্তেই সরে এলো।মেয়েটার যতো কাছে থাকবে, মেয়েটা ততোই তাকে টানবে।তাই নিজেকে আপতত সংযাত রাখার জন্য মেয়েটার থেকে দূরে থাকায় শ্রেয়।

ফজরের নামাজের পর বাড়িতে এসে রোজ ঘুম দেয় প্রহান।আজ আর দিলো না সে।মেয়েটার কাছে ঘুমানো এখন মোটেও উচিত হবে-না তার।যদিও নিজেকে সংযাত রাখার ক্ষমতা আছে তার।তবুও তার প্রান বলে কথা।মেয়েটাকে কারনে অকারণে বুকে জড়িয়ে রাখতে ইচ্ছে করে তার।সেই ইচ্ছেটুকু যদি সংযাত না রাখতে পারে।এতে যদি মেয়েটার মনে তারজন্য বিরূপ ধারণা হয়।তাদের সম্পর্কটা সহজ হয়ে আসছে।কোনো কারনে সেই সহজ হয়ে আসা সম্পর্কটা আবারও কঠিন হয়ে যাক।এটা সে আর চায় না।বুকশেলফ থেকে কুরআন শরীরখানা নিয়ে সোফায় গিয়ে বসলো প্রহান।কুরআন শরীর খানা খোলার আগে আর-ও একবার শান্ত নজরে দেখে নিলো বেডে শয়নরত রমণীকে।শান্ত নজরে বেশ কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে কুরআন তেলওয়াতে মনোযোগ দিলো।

.

সকাল প্রায় নয়টার দিকে ঘুম ভাঙলো প্রান্তির।ঘুম ভাঙতেই উঠে বসলো সে।চোখ মেলে তাকাতেই বুঝতে পারলো।এটা তার রুম নয়।তবে খুব পরিচিত একজন মানুষের রুম।নিজের নজরের ভ্রম মনে করে চোখবুঁজে ধপাস করে ফের আবারও বেডে শুয়ে পড়লো।বালিশে মাথা রাখতেই সুপরিচিত সেই সুগন্ধে নিজেকে পাগল করা, মাতাল হয়ে যাওয়ার মতো সুগন্ধটা নাকে লাগতেই সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ক সচল হলো প্রান্তির। অনুভব করলো এটা তার বেডরুম নয়।আবার একপ্রকার তারই রুম তারই বেড।আস্তে আস্তে মনে পড়ে গেলো কালকে রাতের কথাগুলো।আসবে না আসবে না করেও ঘুমের চোটে উপায় না পেয়ে আসতে হলো।আগেপিছে ভাবার মতো সময় দেয়নি গভীর নিদ্রা তাকে।কাল মরনের ঘুম পেয়েছিলো তার।

তবে কি মানুষটা এখনো আসেনি?সে যে বেডে একাকি শুয়ে আছে এটা সে বেশ অনুভব করতে পারছে।তবে মানুষটা কোথায়?তখন চোখ মেলে তাকাতেই তাকে যে দেখে নি।চোখ বন্ধ রেখেও বুঝতে পারলো রুমের মধ্যর নিঃশব্দতা।যদিও মানুষটা রুমে থাকাকালীন সবসময় এরকমই শান্ত থাকে।হঠাৎ লজ্জায় আড়ষ্ট হলো প্রান্তির শরীর মন।চোখ মেলে যদি মানুষটাকে দেখতে হয়? কি বলবে সে?যদিও মানুষটার মুখে মুখে উত্তর দেওয়ার স্বভাব আছে তার।উঠতে তো হবে?চোখতো তাকে খুলতেই হবে?সে যতোই লজ্জা লাগুক না কেনো।ধীরে ধীরে চোখ মেলে উঠে বসল প্রান্তি।রুমের চারপাশজুড়ে
নিশ্চুপ আর শান্ত পরিবেশ।ফ্যানের শা-শা শব্দ ছাড়া কোথাও কোনো একটু-ও শব্দ নেই।বরাবরের মতো শুনশান রুম।গায়ের দিকে নজর গেলো প্রান্তির।শরীরে কাঁথা জড়ানো দেখে কপাল কুঁচকে ফেললো।সে তো গায়ে জড়িয়ে ঘুমাইনি।তবে?ফের ভাবনা ঘুরিয়ে ফেললো, ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব লাগলে ঘুমের মধ্যে তো সে কাঁথা জড়িয়ে নেয়।হয়তো সেরকমই জড়িয়ে নিয়েছে।
সেদিকে কিছুক্ষণ নজর রেখে কাঁথাটা সরিয়ে ফেললো প্রান্তি।এলোমেলো গায়ের ওড়নাটা ঠিক করে নিয়ে ডান পাশে নজর পড়তেই চোখজোড়া স্থির হয়ে গেলো তার।বই হাতে শান্ত আর গভীর নজরে বইয়ের দিকে তাকিয়ে সোফায় বসে আছে মানুষটা।ভার্সিটিতে রোজার ছুটি চলেছে,হয়তো ছুটির কারনে ভার্সিটিতে যাওয়ার তাড়া নেই বিধায় বাড়িতে যেভাবে তার কাটে সেভাবেই কাটাচ্ছে মানুষটা।অথচ আস্ত একটা বউ তার সামনে ঘুমিয়ে আছে সেদিন খেয়াল ধ্যান না দিয়ে। তিনি বইয়ের মধ্যে ডুবে আছেন।এ কেমন বর হলো তার?মামাতো ভাই ছিলো ঠিকই ছিলো বর হওয়া মোটেও উচিত হয়নি মানুষটার।একদমই না।

—তুই হঠাৎ এই রুমে ঘুূমালি যে?

ভাবনা কাটলো প্রান্তির।প্রহানের গলা পেতেই নড়েচড়ে বসলো সে।মানুষটার নজর বইয়ে ডুবে।অথচ সে উঠেছে এটা খেয়াল করলো কিকরে?মনের প্রশ্ন মনের মধ্যে চাপা দিয়ে গলার স্বর নিচু করে বললো।

—কাল রাতে আমার ফ্যানে সমস্যা হয়েছিলো,চলছিলো না।তাই..

প্রান্তির দেওয়া উত্তরটা ঠিক পছন্দ হলো না প্রহানের।তবে সঠিক উত্তর পাওয়ার জন্য বউটাকে তার ঘাঁটাতে হবে আর রাগাতেও।আর রাগানোর জন্য তাকে উল্টো পাল্টা কথা বলতেও হবে।

—বাড়িতে তো আরও রুম খালি পড়ে ছিলো।তবে হঠাৎ আমার রুমে?

কপাল কুঁচকে গেল প্রান্তির।মানেটা কি?তাকে অন্যঘর দেখাচ্ছে মানুষটা।সে অধিকার দেখায় না বলে,তাইবলে কি এই রুমটা তার নয়?এটা তারও রুম।সে যখন ইচ্ছে এসে এই রুমে ঘুমাবে,যা ইচ্ছে তাই করবে তাতে ওই মানুষটার কি?সে জিজ্ঞেস করার কে?তবে সত্যি বলতে বাড়িতে যে আরও কিছু ঘর আছে এটা কাল রাতে তার মাথায় ছিলোনা।বুবুমনি পথে দেখিয়ে দিলো আর সে দ্বিধান্বিত হয়েও সেই পথে অনুসরণ করল।মাথায় অন্য কোনো ভাবনা ঢুকতেই দিলো না।তাই বলে মানুষটা তাকে অন্য ঘর দেখাবে?এটাতো তারও ঘর।সেদিন তো একবার বলেছিলো মানুষটাকে তবে আবারও কেনো বলতে হচ্ছে তাকে।আর তার কারনে কি এতো অসুবিধা হলো মানুষটার,যে তাকে অন্য ঘর দেখাতে হচ্ছে। ভিষন
মন খারাপ হলো প্রান্তির।মন খারাপ নিয়ে কপাট রাগ দেখিয়ে বললো।

—এ-রুমে আমার ঘুমানোতে আপনার অসুবিধা হয়েছে কোথায়?আগে সেটা বলুন?

মনেমনে হাসলো প্রহান।বউটা ক্ষেপে গেছে তার।যেমন উত্তরটা সে প্রান্তির কাছ থেকে আশা করছিলো ঠিক তেমন রূপে জবাবদিহিতা করছে মেয়েটা।তবে বইয়ের থেকে মনোযোগ বিচ্ছিন্ন করলো না প্রহান,বাইয়ের পাতায় শান্ত নজর ডুবিয়ে প্রান্তির কথার উত্তর সরূপ সে বললো।

—আমি কখন বললাম আমার অসুবিধা হয়েছে!তবে যে রমনী এই রুমের মালিক আর মালিকের জিনিসপত্রের উপর জুলুম করা ছাড়া এই রুমে প্রবেশ করে-না।অসহ্য লাগে।সেই রমনী আজ তারই অত্যাচারিত বেডের উপর আরামে শুয়ে আছে।এটাই…

মন আরও খারাপ হয়ে গেলো প্রান্তির।আশেপাশে গুচ্ছিত রাখা সকল জিনিসপত্রের দিকে একবার নজর বুলিয়ে ফের নিজের বসে থাকা বেডের উপরে নজর দিলো।সে কি আর জানতো এই রুমটা একদিন তারই হবে।তবে কি আর ওসব করতো বরংচ আরও সযত্নে সংরক্ষণ করে রাখতো।কিন্তু তখনতো তার হুশ জ্ঞান ছিলোনা। মানুষটার উপরের রাগ উঠলেই এই রুমের জিনিসপত্রের উপর রাগ মেটাতো সে।আর সেই পুরানো কথা মনে করিয়ে মানুষটাই তাকে খোঁটা দিচ্ছে। কেঁদে কেটে ভাসিয়ে দেওয়ার মতো মন খারাপ হয়ে গেলো প্রান্তির তবে কাদলো না সে।আগে যা গেছে তা গেছেই।
এই রুমটা এখন তারও।অর্ধেক ভাগআছে এই রুমটাতে তার।তা যখন ইচ্ছে সে এই রুমে আসতে পারে।যা ইচ্ছে তাই ও করতে পারে।মানুষটা খোঁটা দেওয়ার কে?যদিও রুমটাতে অর্ধ ভাগ আছে মানুষটার।তবে বিয়ে করার আগে এই রুমের ভাগ তাকেও দিতে হবে এটা মানুষটার খেয়ালে ছিলোনা।এখন তো কথা শোনালে হবে না।তাই
নিজেকে শক্ত রেখে রুক্ষ গলায় প্রহনাকে উদ্দেশ্য করে বললো।

—এটা আমার-ও রুম।আমি যখন ইচ্ছে এই রুমে এসে যা ইচ্ছে তাই করতে পারি।এই রুমের জিনিসপত্র এলোমেলো করতে পারি,বেডে ঘুমাতে পারি।যা ইচ্ছে তাই করতে পারি।আপনি বলার কে?যদিও এই রুমে৷ অর্ধ অধিকার রয়েছে আপনার।তবুও আমার এই রুমে থাকাতে যদি আপনার অসুবিধা হয় তবে আপনি অন্য ব্যবস্থা করতে পারেন।আমি জানি এরুমে আমার থাকাতে অসুবিধা আছে আপনার।তবুও আমার কিচ্ছু করার নেই।আপনার বেশি অসুবিধা হলে আপনি অন্য কোথায় গিয়ে ঘুমাবেন।

কথাগুলো বলতে গলা কেঁপে উঠলো প্রান্তির।হঠাৎকরে অপছন্দনীয় মানুষটা এতো আপন এতো কাছের কি করে হয়ে গেলো?কেনো মানুষটার এতো কাছে থাকতে মন চায় তার সবসময়।নাহলে কাল রাতে বুবু মনির এক কথায় সে এরুমে এসে থাকলো কি-করে?নিজেকে এতোটা বেহায়া বানিয়ে ফেললো কি-করে?এখন কথা শুনে নির্লজ্জের মতো সেই কথার প্রতিত্তোরও করতে হচ্ছে।গভীর মনোযোগ বইয়ে থাকলেও খেয়াল ছিলো প্রান্তির কথাতে।প্রান্তির শেষ কথাগুলো কানে যেতেই মুখ উঁচু করে তাকালো প্রহান।মূহুর্তেই প্রহানের নজরে ভেসে উঠলো একটা আত্মসম্মানী নারী মুখাবয়ব।তার কথাতে যে মেয়েটার আত্মসম্মানে আঘাত লেগেছে বুঝতে অসুবিধা হলো না।তবুও কথার ছল যে এখনো বাকি।সকাল সকাল মেয়েটাকে আরও একটু চটিয়ে দিতে যে তার খুব ইচ্ছে হলো।মেয়েটার ক্ষেপে যাওয়া তীক্ষ্ণ রূপটা যে বড়োই সৌন্দর্যময়ী।যা দেখতে বেশ আদূরী আদূরী।উঠে দাঁড়ালো প্রহান।ধীর কদমে প্রান্তির দিকে এগোলো।প্রান্তিরও অবিচল নজর।প্রান্তির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো প্রহান।সেই অবিচল নজরে নজর রেখে বললো।

—এতোই যখন অধিকার সচেতন নারী।তবে সেদিন যে বললাম ওখানে তোর পাওনাটা গুছিয়ে রেখেছি সেটা কেনো ছুঁয়েও দেখলি না।অপছন্দনীয় মানুষটার দেওয়া জিনিস বলে ইচ্ছে করলো না খুলে দেখতে?ওসবের অধিকার চাইনা তোর?

উত্তর দিলো না প্রান্তি।ওখানে গুছিয়ে রাখা পাওনাটা বলতে বুঝতে অসুবিধা হলো তার।তবে প্রহান থামতেই কিছু সময় বাদে বুঝতে পারলো কিসের কথা বলছে মানুষটা।আরেহ সেদিন তো ওই উপহারের গায়ে লেখা বাক্যগুলো দেখে তার কেমন অদ্ভুত অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিলো বিধায় সেটা ভুলেও খুলতে সাহস হয়নি তার। খুলে দেখাও হয়নি।তাই বলে কি মানুষটা তাকে না বুঝে কথা শোনাবে।প্রান্তির ভাবনার মাঝেই প্রহান ফের বলে উঠলো।

—যারজন্য এই রুমের অর্ধ অধিকার তোর।সেই মানুষটার রুমের সম্পূর্ণ ভাগটা তো না-হয় পেয়ে গেলি তবে রুমের মালিকের ভাগটা যদি না পাস।যেভাবে রুমসহ জিনিসের উপরে অধিকার সচেতন তুই
মালিকের উপর তো সেই অধিকার সচেতন নস।রুমসহ
জিনিস তো নাহয় তোর হয়ে গেলো মানুষটা যদি তোর নাহয়।তবে?

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here