এলোকেশী কন্যা’- [০১]

0
1749

-‘এলোকেশী কন্যা’-
[০১]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)

(পুরনো গল্পটায় আবার নতুন রুপে ফিরিয়ে আনলাম। পুরনো ভেবে ইগনোর করাটা বোকামি হবে।)

‘অ্যাডভেঞ্চার’ শব্দের উচ্চরণটা শুনতে বেশ কঠিন। তেমনি এর শব্দার্থ টাও। তবে হাস্যকর হলেও সত্যি এই শব্দটাতে অনেকে খুব সহজে আকৃষ্ট হয়। কেন? এর সঠিক উত্তরটা অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরাই বলতে পারবে।
আজ ক্লাস শিক্ষকের থেকে এই শব্দটা শুনেছে চতুর্থ শ্রেনীর মেঘ মেহবুব। ওর পুরো মস্তিষ্ক জুড়ে এখন ‘অ্যাডভেঞ্চার’ শব্দটা ঘুরপাক খাচ্ছে। টিচারের কাছে শব্দটার তাৎপর্য শুনেও সে স্পষ্ট বুঝতে পারে নি। অথচ এই শব্দার্থটা ওর জানা চায় ই চায়। যতক্ষণ না সে এটা স্পষ্ট ভাবে বুঝবে, ততক্ষণ ওর স্বস্তি নেই।
মেঘ বাসায় ফিরে কাঁধের ব্যাগটা সোফায় ছুঁড়ে দৌড়ে রুমে চলে গেল। কোনোমতে ড্রেস বদলে ছুটল ওর দাভাই রোদ মেহবুবের রুমে। এত বড় বাসায় এই দু’টো প্রাণের বসবাস। তাছাড়া আছে বেতনভুক্ত কাজের লোক। রোদ আর মেঘ সম্পর্কে ভাই এবং বন্ধু দু’টোই। আজকে রোদ বিশেষ কারণে অফিসে যায়নি৷ মেঘকে স্কুলে রেখে সে এতক্ষণ বাসাতেই ছিল। ফোন আলাপের মাধ্যমে ওর জরুরী কাজগুলো সম্পূর্ণ করছিল। তখন মেঘ হন্তদন্ত হয়ে রোদের রুমে প্রবেশ করল। রোদকে ব্যস্ত দেখে মেঘ সোফায় বসে মৃদু স্বরে ডাকল,
”দাভাই! দাভাই আমি কিছু বলতে চাচ্ছি। এখন না বললে আমার পেট গুরগুর করছে।”
রোদ মেঘের দিকে একবার তাকিয়ে কথা শেষ করে কল কাটল। মেঘ মিষ্টি হেসে ইশারায় রোদকে ওর পাশে বসতে বলল। রোদ মৃদু হেসে বসে বলল,
“বলো কি বলবে?”
“দাভাই, অ্যাডভেঞ্চার জিনিসটা আমাকে বুঝিয়ে বলো।”
রোদ হাসি মিশ্রিত মুখে মেঘের চুল গুলো ঠিক করে দিয়ে বলল,
“অ্যাডভেঞ্চার মানে দুঃসাহসিকতা অথবা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে অদ্ভুত বা অস্বাভাবিক কাজকে অ্যাডভেঞ্চার বলে।”
“অ্যাডভেঞ্চার কোথায় কোথায় হয়?”
“অ্যাডভেঞ্চার জিনিসটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। সেটা
পাহাড়, সমুদ্রেও হয়। ”
রোদের কথা শুনে মেঘ বিজ্ঞদের মতো মাথা নাড়াল। অর্থাৎ সে বুঝেছে। তারপর কিছু একটা ভেবে দাঁত বের করে হেসে বলল,”আমি পাহাড়ে যেতে চাই দাভাই, প্লিজ!”
রোদ জবাব না দিয়ে ফাইল গুলো গুছিয়ে মেঘকে নিয়ে নিচে গেল। মেঘ বার দু’য়ের একই কথা বলল। রোদ শুনেও নিরুত্তর থেকে মেঘকে খাওয়াতে লাগল। মেঘ রোদের এই নীরবতার মানে বুঝে। তাই সে অভিমান করে উঠে বাগানে চলে গেল। রোদ ডাকলেও শুনল না। অগত্যা রোদ উঠে খাবারের প্লেট নিয়ে মেঘের পাশে গিয়ে বসল। মেঘ অন্য দিকে ঘুরে মুখ গোমড়া করে বসে আছে। আজকে মেঘের জন্মদিন। তাই রোদ মেঘের আবদার উপেক্ষা না করে বলল, ”আচ্ছা যাব ঘুরতে।”
কথাটা শুনে মেঘ মিষ্টি হেসে মুখে খাবার নিলো। খেতে খেতে সে অনেক কথার ঝুলি খুলে বসল রোদের সামনে। ওর কথার সমাপ্ত পার্ট নেই। অনবরত একটার পর একটা বলেই যাচ্ছে। রোদ মেঘকে খাইয়ে দিচ্ছে আর হু হা করে উত্তর দিচ্ছে। কথার ঝুলি নিয়ে মেঘ খাবার খেয়ে রোদের সাথে রুমে গেল। তারপর দুই ভাই রেডি হয়ে গাড়ি নিয়ে একসঙ্গে বেরিয়ে গেল।
মেঘের জন্মদিনে রোদ বাসায় আয়োজন করে না। মেঘও চায় না। তবে এই দিনে রোদ চারটা কাজ অবশ্যই করে। প্রথমে মেঘকে নিয়ে যায়, ওদের বাবা মায়ের কবর জিয়ারত করতে। তারপর যায় এতিম খানায়। সেখানে বাচ্চাদের নতুন পোশাক আর খাবারের আয়োজন সম্পূর্ণ করে। তারপর রাতে বাসায় ফিরে রোদ মেঘকে পায়েস খাইয়ে কপালে উষ্ণ স্পর্শ দেয়। এই কাজটা আগে ওদের আম্মু করতেন। এখন এই দায়িত্বটা রোদ পালন করে। অবশেষে রাতে ঘুমানোর সময় মেঘ রোদের কাছে একটা আবদার করে। আর রোদ হাসি মুখে সেই আবদারটা পূরণ করে। আজকে মেঘ সেই সুযোগটায় কাজে লাগিয়েছে। সে বুদ্ধি করেই আবদার করেছে পাহাড়ে যাওয়ার। ছোট হলেও ওর বুদ্ধি বেশ টনটনা। সে জানত, দাভাই আজ ওর আবদার ফেলবে না। তাই তার এত ছলাকলা। আর রোদও ভাইয়ের মুখে হাসি ফুটাতে সহজেই রাজি হয়ে গেছে। কারণ ওর কাছে মেঘের খুশির থেকে বড় কিছু আর নেই।
প্রতিবারের মতো আজও ওরা সারাদিনের কার্যক্রম শেষ করে বাসায় ফিরেছে। এখন দুই ভাই শুয়ে গল্প করছে। মেঘ রোদের পেটের উপর পা তুলে চিন্তিত সুরে বলল,
“দাভাই, রাতে ঝড়ে আমার ছাদ উড়ে গেলে কি হবে?
“কি আর হবে! তুমি ছাদটা খুঁজে এনে আবার জোড়া লাগিয়ে দিবে।”
“উম আমি পারব না।”
কথাটা বলে মেঘ এক নাগাড়ে বকবক করতে লাগল। রোদ চুপ করে ওর কথাগুলো শুনছে। রাত প্রায় সাড়ে বারোটার দিকে মেঘ বকতে বকতে ঘুমিয়ে গেল। রোদ উঠে মেঘকে সুন্দর করে শুইয়ে নিজেও চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলো। তখন ওর চোখের কোণা বেয়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। আজকের দিনে ওরা বাবা মাকে হারিয়েছিল। উনারা একসঙ্গে গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে মারা গেছেন। আজকের দিনটা যেমন আনন্দের তেমনি কষ্টেরও। রোদের বর্তমানে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন মেঘ। গত দুই বছর ধরে মেঘকে কিভাবে সামলেছে, শুধু সেই জানে। একদিকে ছোট্ট মেঘ, পড়াশোনা, অফিস, শত কষ্ট হলেও সে সবটা সামলে উঠতে পেরেছে। তবে এতকিছুর ভিড়ে ওর হাসিটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। স্বপ্নটাও অনাদরে পথ হারিয়েছে। শখের গিটারটারও ঠায় হয়েছে ধূলো-ময়লাযুক্ত স্টোর রুমে। এখন প্রাণবন্ত ছেলেটার মাঝে গম্ভীরতা এসে ভর করেছে। সে শুধু মেঘের কাছে বেস্ট দাভাই! তাছাড়া সবার কাছে গম্ভীর, রাগী এবং কঠিন চরিত্রের মানুষ। বর্তমানে রোদ পড়াশোনা শেষ করে নিজেদের ব্যবসা দেখাশোনা করছে। ওর বাবার কষ্টে তৈরী ব্যবসার হাল ধরেছে। মেঘের সঙ্গে ওর দুষ্টুমি, খুনশুঁটি, আদর, শাষণ আর ব্যস্ততা নিয়ে ওর সময় গুলো অতিবাহিত হচ্ছে।

পরেরদিনের সকালটা মন ভালো করার মতো একটা সকাল।
অদ্ভুত সৌন্দর্যের অধিকারী পূর্বাকাশের সূর্যের কিরণের ঝলকানি। পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ। আর ব্যস্ত শহরে যানবাহনের হর্ণের শব্দ। তখন ওদের ঘড়িটাও ঠিক ঠিক শব্দ করে জানাল সকালের আগমনী বার্তা। এখন বাজে আট টা নয়। দুই ভাই উঠে ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেয়ে গেল বাস স্ট্যান্ডে। ওদেন গন্তব্য এখন রাঙ্গামাটি। আজকে ওরা রাঙ্গামাটিতে পৌঁছে একটা রিসোর্টে উঠবে। তারপর কালকে সেখান থেকে যাবে, রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ইউনিয়নের কংলাক নামক পাহাড়ে। আজ ঘুরতে যেতে পেরে মেঘের তো খুশির অন্ত নেই। সে জানালার পাশে বসে পোজ দিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। কখনো বা মুখ বাড়িয়ে হা করে বাতাস খাচ্ছে। তো কখনো সিটে পা তুলে বসছে আবার নামাচ্ছে। রাস্তায় কত শত জিনিস দেখে যে প্রশ্ন করছে, তার হিসেব নেই। মাঝে মাঝে অন্য বাসের মেয়েদের হাই করে খিলখিল করে হেসে উঠছে। কোনো মেয়ে দুষ্টুমি করে ওকে ফ্লায়িং কিসও ছুঁড়ে দিচ্ছে। এটা দেখে মেঘ খিলখিল হেসে রোদের গায়ে ঢলে পড়ছে। রোদ বিরক্ত হয়ে মেঘকে দুইবার নিষেধ করল, কিন্তু কে শুনে কার কথা। এখন বাসভর্তি লোকের মাঝে রোদ বকতে চাচ্ছে না। এজন্য চুপ করে ওর কান্ড দেখছে। অপর সিটের মেয়েটা অনেকক্ষণ ধরে ওদের লক্ষ্য করছে। মেয়েটা নিজে থেকে রোদের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,
“হাই! আমি মেহরীন।”
রোদ মেয়েটার দিকে একবার তাকিয়ে ‘ওহ আচ্ছা’ বলে মুখ ফিরিয়ে নিলো। অপরিচিত কারো সঙ্গে সে খেজুরে আলাপে অভ্যস্ত নয়। বিশেষ করে কোনো মেয়ের সাথে। রোদের এমন বেমানান উত্তরে মেয়েটা বুঝল, সে কথা বলতে ইচ্ছুক নয়। তাই ব্যাপারটা স্মার্টলি বুঝিয়েও দিলো। মেয়েটা সিটে হেলান দিয়ে ওদের দিকেই তাকিয়ে রইল। ওর কেন জানি ওদের দেখতে খুব ভালো লাগছে।
তখন মেঘ রোদের সঙ্গে কয়েকটা সেলফি তুলে দাঁত বের করে হেসে বলল,
“দাভাই বলো তো কে বেশি হ্যান্ডস্যাম?”
“অবশ্যই আমি।”
কথাটা শুনে মেঘ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ওই মেয়েটাকে প্রশ্নটা করল। মেয়েটা একবার মেঘের দিকে তো একবার রোদের দিকে তাকাচ্ছে। দুই ভাই সাদা কালো রংয়ের ড্রেস পরিহিত। দু’জনের চোখে ব্ল্যাক সানগ্লাস। দেখতেও ওরা বেশ সুদর্শন। মেয়েটা কাকে রেখে কাকে বলবে ভেবে পাচ্ছে না। তাই সে মুখ কাঁচুমাচু করে আমতা আমতা করতে লাগল। তখন মেঘ রেগে বলল,
“বলতেই তো পারলেন না। তাহলে ভুলেও আর আমাদের দিকে তাকাবেন না। নাহলে আমি চিৎকার করে সবাইকে বলব, আপনি আমাকে চোখ মেরেছেন।”
এতটুকুন বাচ্চার কথা শুনে মেয়েটা অবাক না হয়ে পারল না। বাস ভর্তি লোকের সামনে সে অপমানিত হতে চাচ্ছে না। তাই দ্রুত চোখ সরিয়ে অন্য দিকে তাকাল। আর মেঘ চিপস খেতে খেতে কানে ইয়ারফোন গুঁজে গান শুনতে লাগল। রোদের একটু পর পর ফোনে কল আসছে। সে অফিসের দরকারী কল গুলো রিসিভ করে কথা বলছে। একসময় সে খেয়াল করল মেঘ ঘুমিয়ে গেছে। রোদ মেঘকে বুকে জড়িয়ে ওর কানের ইয়ারফোন খুলে নিলো। পানি নিয়ে হাত ভিজিয়ে মেঘের মুখটা মুছে মৃদু হেসে বলল,”দুষ্টু একটা।”

দুপুরে বাস থামিয়ে সবাইকে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে বলা হলো। রোদ মেঘকে ফ্রেশ করিয়ে একটা টেবিলে গিয়ে বসল। তখন ওয়েটা এসে ওদের অর্ডার নিয়ে গেল। মেঘ টেবিলে দুই হাত রেখে আশে পাশে চোখ বুলিয়ে দেখছে। রোদ রুমাল দিয়ে মেঘের মুখ মুছিয়ে চুল গুলো ঠিক করে দিলো। মেঘ তখন সতর্কতার সাথে রোদকে মৃদু স্বরে বলল,
“দাভাই ওই মেয়েটাকে একটা চিমটি কেটে আসব? দেখো আমাদের দিকে কুটুর কুটুর করে তাকিয়ে আছে।”
” উহুম! তুমি ওইদিকে তাকিও না।”
“উখে।”
তারপর খাবার এলে দু’জনে খাওয়া শুরু করল। রোদ নিজে খাচ্ছে আর মেঘকেও খাইয়ে দিচ্ছে। খেতে খেতে মেঘের চোখ গেল মেহরীনের দিকে। সে মেঘকে ফ্ল্যায়িং কিস ছুঁড়ে ইশারায় কাছে ডাকছে। মেঘ চিবানো থামিয়ে আড়চোখে একবার রোদের দিকে তাকাল। রোদ ওর সামনের গ্লাসে সব দেখতে পাচ্ছে। মেয়েটা অনেকক্ষণ ধরেই এমন করছে। সে কিস গুলো ছুঁড়ছে মেঘকে নয় রোদকে। আর রোদ সব দেখেও চুপ করে আছে। কারণ সে বুঝেছে, মেহরীন গায়ে পড়া টাইপের মেয়ে। সে বাস থেকে নেমেই ইশারায় রোদের ফোন নাম্বার চেয়েছে। আর এসব মেয়েদের রোদের মোটেও সহ্য হয় না। তার ভাষ্যমতে, মেয়ে হবে ভদ্র, শান্ত, বিনয়ী, লাজুক, আর একটু ভীতু টাইপের। তা না মেয়েটা এসবের বিপরীত। এক কথায় লাজ লজ্জাহীন। আর এমন মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে ওর রুচি আসে না। রোদ চুপ করে খাচ্ছে। তখন মেঘ কিছু একটা ভেবে উঠে দাঁড়িয়ে প্রায় চিৎকার করে বলল,
“আপনি এত খারাপ কেন? আমার দাভাইকে চোখ মারতে আপনার লজ্জা করছে না? আপনাকে আর কতবার নিষেধ করব?”
মেঘের আঙ্গুল তুলে বলা কথাটা শুনে সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে সেদিকে তাকাল। বাচ্চা মানুষ নিশ্চয়ই অযথা মিথ্যা বলবে না। তাই সবাই খাওয়া থামিয়ে মেহরীনের দিকে তাকিয়ে আছে। মেহরীন লজ্জায় মাথা নিচু করে উঠে চলে গেল। বিচ্ছু বাচ্চাটা যে ওকে এভাবে কুপোকাত করবে সে ভাবতেও পারে নি। মেহরীনের যাওয়া দেখে মেঘ বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে বসে পড়ল। রোদ মেঘের মুখে খাবার দিয়ে বলল,
“শান্তি হলো?”
“হুম খুব। জানো দাভাই মুগুরকে কুকুর দিতে হয়, নাহলে সে ভদ্র হয় না।”
মেঘের কথা শুনে রোদ মুচকি হেসে বলল,”মুগুরকে নয়। কথাটা হবে, ‘কুকুরকে মুগুর দিতে হয়।’
কথাটা ভুল বলেছে বুঝে মেঘ জিহবায় কামড় বসিয়ে হাসল। রোদও হেসে মেঘের মুখ মুছিয়ে উঠে দাঁড়াল।

To be continue….!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here