‘সুদর্শন শঙ্খচিল’
[০৪]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
“নতুন বিয়া কইরা মাইয়া মাইনষের শরীলের সুয়াদ পাইয়া ঘরে ফিরনের কথা কি মুনে থায়ে না?”
রনিত আর পলক আজকে বাসায় ফিরল। বাসার সবাই ওদের উপরে রেগে আছে৷ রনিতের আম্মু পলকের সাথে একটা কথাও বললেন না। উনি রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলেন। তখন রনিতের দাদী মন্তব্যটি করলেন। রনিত মাথা নিচু করে চলে গেল। ওর দাদী রাশভারী মানুষ। উনি মজা করা মোটেও পছন্দ করেন না। সে দাঁড়িয়ে থাকলে উনি আরো কথা শুনাতেন। এজন্য রনিত ইচ্ছে করেই ওখান থেকে চলে গেল। পলক ওখানেই দাঁড়িয়ে রইল। সে কি করবে বুঝতে পারছে না। ওর এখন রুমে যাওয়া উচিত নাকি ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে কথা শুনা উচিত? কোনটা করলে ওকে আর কেউ বকবে না? শ্বশুরবাড়িতে কি এত ভেবে ধাপ ফেলতে হয়? নিজের বাড়ি হলে এতক্ষণে সে পুরো বাড়ি দাপিয়ে বেড়াতো৷ বিয়ে ব্যাপারটা এত কঠিন কেন? এসব কথা পলকের মাথায় ঘুরছে। পলক অনেক সাহস জুগিয়ে রুমের দিকে পা বাড়াবে, তখনই দাদী বলে উঠলেন, “ছিঃ! ছিঃ! বাসর ঘর থেইকা কেউ ঘুরতে বাইর হয়? বাপ-মায়ে কিছু শিখায় নাই? নাকি গতর দিয়া ব্যাডা মাইনসেরে বশ করাই শিখাইছে।”
পলকের সঙ্গে এর আগে কেউ এমন ভাষায় কথা বলেনি। পলক মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলছে। দাদী এখন বাবা-মা তুলে কথা বলছেন, বাবা-মাকে তুলে কথা বললে সবারই বুকে গিয়ে বিঁধে।
দাদী পান বানিয়ে মুখে পুরে পলকের দিকে বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে চলে গেলেন। পলক চোখ মুছে রুমের দিকে পা বাড়াল। রনিত ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বলল, “কিছু মনে করো না। সবাই রেগে আছে তো, এজন্য এভাবে কথা বলল। একটু সময় দাও, সব ঠিক হয়ে যাবে।”
পলক মলিন হাসি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল। রনিত দীর্ঘশ্বাস ফেলে শরীরে শার্ট জড়িয়ে বাইরে গেল। রনিতের বড় ভাবি দিশা ফোঁড়ন কেটে বলল, “কি গো রনিত! বউয়ের আঁচল থেকে বের হতে ইচ্ছেই করে না নাকি? এত বউ পাগল হলে কবে থেকে?”
রনিত এক টুকরো পরোটা কেবল মুখ দিতে যাচ্ছিল, তখনই ওর ভাবির কথা শুনে খাওয়া থামিয়ে বলল, “আমিও বড় ভাইয়ের মতোই হয়েছি। দুই ভাই একই পথে না চললে লোকে কি বলবে, বলো?”
রনিতের কথার মানে বুঝে দিশা মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেল।
তুয়া তুরাগের রুমে গিয়ে দেখল তুরাগ ঘুমাচ্ছে। আজকে ছুটির দিন, তাই সে বাসাতেই আছে। তুয়া এসে তুরাগকে খোঁচাচ্ছে, কিন্তু তুরাগের উঠার নাম নেই। তুয়া আদুরে সুরে বলছে, “এই ভাইয়া উঠো না! আমাকে ঘুরতে নিয়ে চলো না! শোনো না ভাইয়া, আজকে আমাকে অনেক গুলো চুড়ি কিনে দিবা।”
তুয়া এসব বলে যাচ্ছে আর তুরাগ শুধু হুম হুম করছে। আজকে পহেলা বৈশাখ। চারদিকে আনন্দমুখর পরিবেশ। তুয়া তুরাগের সাথে বেড়াতে যেতে চাচ্ছে। বেড়াতে যাবে বলে সে লাল সাদা রংয়ের পোশাক শরীরে জড়িয়ে সুন্দর করে সেজেছে। তুরাগের সাথে না পেরে তুয়া একাই বের হলো। মিতু রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল। তুরাগের আম্মু এসে তুরাগকে বকতে লাগলেন। তখন তুরাগ উঠে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে বাইক নিয়ে তুয়াকে খুঁজতে গেল।
তুরাগ বিরক্ত হয়ে বলল, “এই তুলার অত্যাচারে আমি পাগল হয়ে যাব। ওর বরটার যে কি হাল হবে, একথা ভাবলে ওই বেচারার জন্য আমারই কষ্ট লাগছে।”
ইচ্ছে আজকে লাল টকটকে ফ্রক পরেছে, দুই পাশে পুতুল ব্যান্ড দিয়ে ঝুঁটি করেছে, চোখে কাজল দিয়েছে। সে তুয়ার সাথে বেড়াতে যাবে, কিন্তু এসে শুনল তুরাগ-তুয়া কেউ নেই। ইচ্ছে ঠোঁট ফুলিয়ে বাসায় চলে গেল। বাসায় গিয়ে চিৎকার করে কাঁদছে, “আমি বেলাতে দাবো। আমালে তেউ নিয়ে দাও।”
মেয়ের চিৎকারে ইচ্ছের আম্মুর মন চাচ্ছে ওর পিঠে কয়েক ঘা বসিয়ে দিতে। উনার জ্বর এসেছে তাই শুয়েছিলেন। ওর বাবাও নেই, অফিসের কাজে ঢাকা গেছেন। ওর আম্মু বিরক্ত হয়ে বললেন, “আমি যেতে পারব না। তোর যার সাথে ইচ্ছে তুই যা।”
ইচ্ছে ছোট ছোট হাতে চোখ মুছে বলল, “আততা।” কথাটা বলেই ইচ্ছে দৌড়ে এসে হাত দিয়ে প্রত্যয়ের ফ্ল্যাটের দরজা ধাক্কা দিচ্ছে আর বলছে, “দলজা খোলো। তালাতালি দলজা খোলো।”
প্রত্যয়ের আম্মু দরজা খুলে ইচ্ছেকে দেখে মুচকি হাসলেন। ইচ্ছে তাড়াহুড়ো করে বাসায় ঢুকে প্রত্যয়ের আম্মুকে বলল,”আমাল প্রত্তুয় কই?”
প্রত্যয়ের আম্মু বললেন, “রুমে ঘুমাচ্ছে।”
ইচ্ছে দৌড়ে চলে গেল প্রত্যয়ের রুমে। প্রত্যয় দুই ঘন্টা হলো ঘুমিয়েছে। ইচ্ছা প্রত্যয়ের হাত ধরে টেনে উঠালো। প্রত্যয় ইচ্ছেকে দেখে মুচকি হেসে বলল, “কি হয়েছে রাজকন্যা? তুমি কাঁদছ কেন?”
ইচ্ছে মন খারাপ করে বলল, “তোমাল সাতে বেলাতে দাবো। টুয়া আপু আমাকে নিয়ে দাই নি। ওলা সবাই পঁতা।” কথাটা বলে সে প্রত্যয়ের হাত ধরে টানতে লাগল। এই কয়েকদিনে ইচ্ছের প্রতি প্রত্যয়ের মায়া হয়ে গেছে। ওর আদুরে কথা গুলো তাঁর খুব ভালো লাগে। ইচ্ছের জোরাজুরিতে প্রত্যয় ফ্রেশ হয়ে একটা ব্লু শার্ট আর জিন্স পরে রেডি হলো। ইচ্ছে মুখ বাঁকিয়ে বলল, “ভালো জামা পলো।”
প্রত্যয় হেসে বলল, “এটাই তো ভালো জামা ইচ্ছেমণি।”
ইচ্ছে মানতে নারাজ। সে কিছুতেই প্রত্যয়ের ড্রেস পছন্দ করছে না। প্রত্যয় ইচ্ছেকে কোলে নিয়ে ওর সব ড্রেস দেখাল। ইচ্ছে মাথা নাড়াল, যার মানে একটাও ভালো না। প্রত্যয় বলল, “তাহলে তুমিই বলো আমি কেমন ড্রেস পরব?”
ইচ্ছে ডানে বামে কাত হয়ে বলল, “এপাশে কাতা ওপাশে কাতা। ওই জামা পলো।”
প্রত্যয় বুঝল ইচ্ছে কোন ড্রেসের কথা বলছে। প্রত্যয় হেসে ওর সব পাঞ্জাবী গুলো বের করে ইচ্ছেকে বলল, “তুমি পছন্দ করে দাও আমি কোনটা পরব?”
ইচ্ছে কিছুক্ষণ গবেষণা করে হালকা সবুজ রংয়ের একটা পাঞ্জাবী দেখিয়ে বলল, “এতা পলো।”
প্রত্যয় হেসে ড্রেস বদলে সবুজ পাঞ্জাবী আর সাদা চুরিদার পরে আসলো। ছোট বাচ্চাদের আবদার গুলোকে গুরুত্ব দিতে হয়। প্রত্যয়ের ছোট বোন নেই। এজন্য এসব আবদার করার মানুষও ছিল না। আজকে ইচ্ছে যখন এমন আবদার করল তখন সে ফেলতে পারল না। এক কথায়, সে বাচ্চাদের খুব পছন্দ করে। প্রত্যয় রেডি হয়ে ইচ্ছেকে নিয়ে বের হলো। প্রিয়ম ইচ্ছেকে দেখে অন্য দিকে তাকিয়ে বলল, “খুব পঁচা লাগছে।”
ইচ্ছে ঘাড় কাত করে প্রিয়মের দিকে এমন ভাবে তাকাল, যেন সে চোখ দিয়ে ওকে গিলে খাব। ইচ্ছের তাকানো দেখে প্রত্যয় সহ ওর আব্বু-আম্মু হেসে উঠলেন। প্রিয়ম বলল,”ভাইয়া, আমিও তোমার সঙ্গে যাব।”
ইচ্ছে তখন চিৎকার করে বলল, “না, তুমি প্যালা।”
কথাটা বলে সে প্রত্যয়ের হাত ধরে টানতে লাগল। প্রত্যয় ওদের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল। প্রিয়ম আপেলে কামড় বসিয়ে ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বলল, “আম্মু, এই পিচ্চিটাকে দেখে আমার বিয়ে করার স্বাদ মিটে গেছে। আমারও যদি এমন মেয়ে হয়, তাহলে আমার জীবনের অবস্থা দফারফ হয়ে যাবে।”
ছেলের কথা শুনে ওর আম্মু শব্দ করে হাসলেন। প্রত্যয় যাওয়ার আগে ইচ্ছের আম্মুকে বলে গেল। যাতে উনি ইচ্ছেকে না খুঁজেন। প্রত্যয়ের আঙ্গুল ধরে ইচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে, যার ফলে ওর ঝুঁটি দু’টো দুলছে। প্রত্যয় হাসি মুখে ইচ্ছের সাথে কথা বলতে বলতে রিকশায় উঠে বসল। তাঁরা আজকে সারাদিন ঘুরবে।
তুরাগ অনেক কষ্টে তুয়াকে খুঁজে পেয়েছে। মিতু আর তুয়া মিলে তুরাগকে জ্বালিয়ে মারছে। তুরাগ মনে মনে বলল,”এসব মেলাতে মেয়েদের নিয়ে পাগলেরা আসে।” তুয়া আর মিতু মিলে অনেক কেনাকাটা করল, খাওয়ার কথা নাহয় বাদই দিলাম। মেলাতে এসে না খেলে কি হয়? তিনজনে মিলে ফুচকা খাচ্ছিল, তখন তুরাগের এক বন্ধু এসে বলল, “মাম্মা আমরা একটা পাখি খুঁজে পাচ্ছি না। আর তুই দু’টো পাখি নিয়ে ঘুরছিস?”
তুরাগের বন্ধুর কথা শুনে তিনজনে খাওয়া থামিয়ে দিল। তুরাগের সেই বন্ধু দাঁত বের করে হাসছে। মিতু আর তুয়া দু’জনে মাথা নিচু করে নিলো। তুরাগ মুখ কাচুমাচু করে আছে। তুরাগের বন্ধু আবার বলল, “দু’টোই কিন্তু নজর কাড়া, আমাকে একটা ধার দে।”
তুরাগ উঠে ওর বন্ধুর কলার চেপে ধরল। তুয়া আর মিতু দু’জনেই দাঁড়িয়ে গেল। তুরাগ রেগে বলল, “ওরা আমার বোন হয়। মনমানসিকতা ঠিক করে মুখে লাগাম দিয়ে কথা বল। এখানে শুধু কপোত-কপোতীরা আসে না। কোনো ভাই তাঁদের বোনদের নিয়েও আসে। পাঁচ মিনিট আগেও তুই আমার বন্ধু ছিলি বলে ছেড়ে দিলাম। নয়তো তোকে মেরে এখানেই পুঁতে দিতাম।”
কথাটা বলে তুরাগ তুয়া আর মিতুকে নিয়ে চলে গেল। ওর বন্ধু জানতো না এরা তুরাগের বোন। তুরাগ কখনো বাসায় বন্ধুদের আনতো না। এজন্য ওর বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই জানে না তুরাগের বোন আছে। তুরাগের সাথে দু’টো মেয়ে দেখে সে মজা নিতে এসেছিল। সে একবারও ভাবেনি মেয়ে দু’টো ওর বোন হতে পারে। এজন্য যতই কাছের বন্ধু হোক, যখন তখন এসব মজা করা ঠিক না।
রনিত পলকের জন্য মেলা গিয়ে বাসার সবার জন্য খাবার এনেছে। পলককে নিয়ে তো সে মেলাতে যেতে পারব না। বাসায় অনেকে এটা নিয়ে কথা শুনাবে। তাই রনিত পছন্দ করে পলকের জন্য সাদা আর লাল চুড়ি এনেছে। কিন্তু দুঃভাগ্য বশত চুড়ি গুলো দিশার চোখে পড়ে গেল। সে ন্যাকা কান্না করে ওর বরকে বলল, “রনিত মেলা থেকে ওর বউকে চুড়ি এনে দিয়েছে। তুমি কেন দিলে না?”
এসব কথা নিয়ে দু’জনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া লেগে গেল। একপর্যায়ে বাসার সবাই জেনে গেল রনিত বউয়ের জন্য চুড়ি এনেছে। রনিতের দাদী রেগে রনিতকে বললেন, “বাইতে তো দুইডা বউ, একজনের লাইগা চুড়ি আনছোস ক্যান? তোর বউ কি মানা করছে দিশার লাইগ্যা চুড়ি আনতে? মাইয়া তো দেহি বহুত সেয়ানা।”
রনিত দাদীর দিকে তাকাল। কিছু একটা হলেই দিশা ব্যাপাটাকে তিল থেকে তাল করে। তারপর সব দোষ গিয়ে চাপে পলকের ঘাড়ে। পলক রান্নাঘরে রান্না করছে আর চোখ মুছছে। সামান্য চুড়ির জন্য এত কিছু হবে জানলে রনিত চুড়িই আনতো না। সে ওর দাদীকে বলল, “নিজের বউকে শখ করে কিছু দিতে পারব না, এই নিয়মের কথা আগে বলো নি কেন? আর আমি অন্যের বউয়ের শখ আহ্লাদ মিটাতে যাবই বা কেন?”
রনিতের কথা শুনে ওর দাদী রেগে গেলেন। রনিত উনাকে কিছু বলতে না দিয়ে পলককে বলল, “আমার শার্ট আইরণ করে দাও এক্ষুনি। এক্ষুনি মানে এক্ষুনিই।”
কথাটা বলে রনিত চলে গেল। দিশা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে রুমে বসে কাঁদছে। রনিতের বড় ভাই রেগে বাইরে চলে গেল। মাত্র আশি টাকার চুড়ির জন্য এত অশান্তি হলো। পলক হাত মুছে রুমে চলে গেল। যদিও রনিতের সব শার্ট আইরণ করাই আছে। দাদীর হাত থেকে বাঁচাতে সে কৌশলে পলককে ডেকে নিলো।
প্রত্যয় আর ইচ্ছে একটা গাছের নিচে বসে হাওয়াই মিঠাই খাচ্ছে। প্রত্যয় ইচ্ছেকে হাত ভর্তি চুড়ি, মাটির পুতুল, খেলনা বাটি কিনে দিয়েছে। ইচ্ছের খুশি যেন আর ধরে না। সে হাত নাড়িয়ে চুড়িতে শব্দ করে খিলখিল করে হাসছে। ইচ্ছে হাসতে হাসতে সামনে তাকিয়ে দেখল তুয়া আর তুরাগ। সে দৌড়ে ওদের কাছে গিয়ে ওদের ডেকে আনল। তুরাগ এসে প্রত্যয়ের সাথে কথা বলল। ইচ্ছে তুয়ার হাত আর ওর হাত প্রত্যয়ের দিকে বাড়িয়ে বলল, “প্রত্তুয় দেকো তো কাল চুলি বেশি সুন্দল? আমাল নাকি টুয়া আপুল?
প্রত্যয় দু’জনের হাতের দিকে তাকাল। ইচ্ছের হাতে লাল-নীল চুড়ি আর তুয়ার হাতে লাল-সাদা চুড়ি। প্রত্যয় একবার তুয়ার দিকে তাকাল হেসে বলল, “ইচ্ছেমণির চুড়ি গুলো খুব সুন্দর। তোমার তুয়া আপুর গুলো পঁচা।”
ইচ্ছে বিশ্বজয় করা হাসি দিল। তুয়া নাক ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকাল। তুয়ার মুখটা দেখে প্রত্যয় মিটিমিটি হাসছে। তুয়া বাজখাঁই গলাতে তুরাগকে বলল, “ভাইয়া, আমাকে কি চুড়ি পছন্দ করে দিলে? আমাকে আবার চুড়ি কিনে দাও এক্ষুণি।”
তুরাগ করুণ চোখে তুয়ার দিকে তাকাল। তুয়া অলরেডি ওর পকেট ফাঁকা করে দিয়েছে। তুরাগ জানাল ওর পায়ে ঝি ঝি লাগছে সে হাঁটতে পারবে না। তুয়া ছলছল চোখে তুরাগের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রত্যয় দুই-ভাই বোনের ঝগড়া দেখছে। তুয়া আড়চোখে একবার ইচ্ছের চুড়ির দিকে তাকাচ্ছে, একবার ওর চুড়ির দিকে। তুয়া কান্নামিশ্রিত গলায় তুরাগকে বলল, “ভাইয়া চলো। আমি আরো চুড়ি কিনব।”
তুরাগ বোনের দিকে বিরক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। প্রত্যয় বলল, “ভাইয়া যখন হাঁটতে পারছে না, তুমি চাইলে আমি যেতে পারি।”
তুরাগও প্রত্যয়ের সাথে তুয়াকে পাঠাল। তুরাগ ইচ্ছে আর মিতুকে নিয়ে গাছের নিচে বসল। প্রত্যয় তুয়াকে চুড়ির দোকানে নিয়ে গেল। এত গুলো চুড়ি দেখে তুয়ার চোখ ধাধিয়ে গেল। সে বুঝতে পারছে না কোনটা নিবে। প্রত্যয় এক মুঠো নীল চুড়ি তুয়ার দিকে এগিয়ে দিল। তুয়ার এক পলকে চুড়ি গুলো পছন্দ হয়ে গেল। সে প্রত্যয়ের হাত থেকে চুড়ি গুলো ছিনিয়ে নিলো। প্রত্যয় বলল, “সব ড্রেসের সঙ্গে কাঁচের চুড়ি মানানসই নয়। অন্য চুড়ি নাও।”
To be continue…!!