#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_4
রুহি চকলেট পেয়ে এত খুশি যে চড়ের খাওয়ার কথা ভুলে গেছে!এটা তো রোজকারে কাহিনী এজন্য রুহিও আর কিছু মনে করে না।মুগ্ধের হাত মার খায় আর চকলেট পেলে সব ভুলে যায়।রুহি চকলেট খেতে ভালবাসে বলে মুগ্ধও বাইরে গেলে চকলেট আনতে ভুল করে না।মুগ্ধর রুম থেকে রুহি বের হয়ে চকলেট খেতে খেতে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে নিচে চলে গেল।
–
রাতের বেলায় সবাই এক সাথে ডিনার করতে বসে!রুহি বকবক করছে আর বাকিরা শুনছে।মুগ্ধ ভেবে পায় না একটা মানুষ এত কথা বলে কি করে?মুগ্ধ এতক্ষণ চুপ থেকে মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছিলো!মুগ্ধ এবার মুখ তুলে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো…
মুগ্ধঃএখন তো তুই খেতে বসেছিস তাই না!এবার তো দয়া করে মুখটা বন্ধ কর!এখন যদি তুই মুখটা বন্ধ না করিস তো তোরে ১৮০’ ডিগ্রি এংগেলে এমন থাটিয়ে থাপ্পড় দিবো যে তোর মুখটা বামদিকে বাঁকা হয়ে যাবে।এবার বল তুই থাপ্পড় টা খাবি নাকি মুখটা বন্ধ রাখবি….
রুহিঃ আসলে আমি কথা না বলে থাকতে পারি না!কথা না বললে আমার পেট কামড়ায় আর কথাগুলো পেটের মধ্যে খিচমিচ করে।
মুগ্ধঃ ওহহ্!তাহলে এদিকে আয় থাপ্পড়টা খেয়ে যা।
রুহিঃ না থাক!আমি কষ্ট করে চুপ করেই থাকবো।
–
তারপর চুপচাপ খাওয়া শুরু করলো!রুহির খেতে খেতে বিষম লাগে! মুগ্ধ তারাতারি করে রুহিকে পানি এগিয়ে দেয়!রুহি বিশ্বকরা জয় করা হাসি দিয়ে মুগ্ধকে ধন্যবাদ দেয়!তারপর খাওয়া শেষ করে ঘুমাতে চলে যায়।
–
পরেরদিন সকালে রুহির আম্মু বাসায় চলে আসে!রুহির বাসা রাস্তার এপাশে আর মুগ্ধদের বাসা রাস্তার ওপাশে। রুহি মুগ্ধর আম্মুকে বলে ওর বাসায় চলে আসে!রুহি বাসায় এসে উরাধুরা গান বাজিয়ে নাচানাচি শুরু করছে!রুহি ওর রুমের বারান্দায় দাড়িয়ে গান গাইছে…
–
ও কাউয়া রে কাউয়া রে তুই অপরাধী রে
আমার যত্ন গড়া গাল দুটোই লাল করে দিলি রে….
একটা সময় তোরে আমি মানুষ ভাবিতাম
কিন্তু তুই তো মানুষ না আস্ত একটা খাটাশ পোলা রে…আগে না জানিতাম।
–
পুরো গান না শেষ করতেই ঠাস্ কেউ ওর গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়!রুহি গালে হাত দিয়ে সামনে থাকা মানুষটার দিকে তাকিয়ে আছে!কারন থাপ্পড়টা দিয়েছে মুগ্ধ… মুগ্ধর দিকে রুহি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে জানতে চাইলো! যে এবার কেন মুগ্ধ তাকে মারলো!ও তো এবার কিছু করে নি।
–
রুহিঃ আমি এবার কি করছি??এখন তো বিনা দোষে আমাকে মারলে…আমার গাল টা কি তোমার সরকারি মনে হয়??যখন ইচ্ছা হয় দুম করে মেরে দাও…
মুগ্ধঃ তোর গাল সরকারি না বেসরকারি জানার প্রয়োজন মনে করিনি। শুধু জানি আমার সাথে যতদিন ছ্যাচড়ামি করবি তুই দিন আমার সাথে মার খাবি…
রুহিঃকখন ছ্যাচড়ামি করলাম??সকাল সকাল মারলে বাট কি জন্য মারটা খেলাম যদি বলতে,তাহলে মনে একটা শান্তি বিরাজ করতো।কারন আমার মত নিরীহ আর ভদ্র মেয়ে কে তুমিই শুধু বিনা দোষেই মারো।
মুগ্ধঃতুই ভদ্র মেয়ে????? তোর এই গানের মানে কেউ না বুঝলেও আমি ঠিকই বুঝি।(দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ কি বুজলে আমি তো ওই কাউয়াকে গান শুনাচ্ছিলাম।
(মা গো মা খাটাশটার মাথায় কত ব্রেণ!বুঝে ফেলছে রে…)
মুগ্ধঃআমি কালো ড্রেসআপ পড়ে আছি এজন্য তুই আমাকে কাউয়া বলছিস?আমি বুঝতে পারবো না মনে করছিস।নিজেকে খুব চালাক ভাবিস তাই না (দাঁতে দাঁত চেপে)
রুহিঃ…..ইয়ে ম ম মা মানে আসলে তা না
(হারামজাদা, কুওা,খাটাশ তোর এত বুঝতে কে বলছে!নরম গালে পেয়ে বার বার গরম থাপ্পড় দিতে ভালোই লাগে তাই না।দাড়া আমি তোর সাঁতার কাটার ব্যবসথা করছি। মনে মনে)
মুগ্ধঃঅসভ্য মেয়ে একটা!সব সময় দুষ্টু বুদ্ধি ছাড়া একটাও ভাল বুদ্ধি নাই।
রুহিঃ ভাইয়া তবে গানটা কিন্ত দারুন হয়েছে তাই না।আমি অনেক বুদ্ধি দিয়ে বানিয়েছি
মুগ্ধঃ চুপ কর নইতো থাটিয়ে আর একটা থাপ্পড় দিবো।সারাটাদিন বকবক করতে করতে কানের পোকা বের করে দেয়…বাঁচাল একটা।
রুহিঃভাইয়া আমি কথা বলে, তোমার কানের পোকা বের করে দেওয়ার পর কি! তুমি আবার ওদের তোমার কানের ভেরত ঢুকতে দাও!না মানে তুমি কি কানের ভেতর পোকার চাষ করো..
মুগ্ধঃরুহি আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে! সত্যি বলছি তোকে কিন্ত আমি মেরেই ফেলবো এবার…..অসভ্য, ফাজিল মেয়ে (কথাটা বলে চলে গেল)
–
মুগ্ধ অাজকে কালো শার্ট, কালো প্যান্ট,কাল ব্লেজার,কালো সু, আর কাল সানগ্লাস পড়ে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলো!তখন রুহি মুগ্ধকে দেখে ওই গানটা গাইছিলো।তাই মুগ্ধ একটা থাপ্পড় দিয়ে রুহির গানের পারিশ্রমিক টা হাতে নাতে দিয়ে দিলো।মুগ্ধ চলে যাওয়ার পর রুহি নিচে এসে ড্রয়িংরুমের সোফাতে দুই পা তুলে গালে হাত দিয়ে গাল একা একা টিপছিলো!রুহির আম্মু এসে রুহিকে বললো..
–
আম্মুঃকি রে মুগ্ধ কে বেরিয়ে যেতে দেখলাম।দিতে এসেছিলো নাকি?তা কয়টা দিলো?
রুহিঃএকটা দিসে.. (গালে হাত বুলাতে বুলাতে)
আম্মুঃওহহ্!আর একটা দিতে পারলো না।
রুহিঃ ওই কুওাটা তোমার মেয়েকে মেরে যায় আর তুমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখ। (কাঁদো কাঁদো মুখে)
আম্মুঃ মুগ্ধ হুটহাট করে বাসায় আমাদের বাসায় আসে না!আর আসলে তোকে চড় দিতে আসে।আর তুই মার খাস তোর দুষ্টুমির কারনে আর মুগ্ধ যে ছেলে বিনা দোষে কাউকে মারবে না।
রুহিঃহুমম তোমার মুগ্ধ তো বিশ্বের সব চেয়ে ভাল ছেলে!ওরে ভাল ছেলের নোবেল টা দিয়ে দাও….নোবেল না পেলে একটা RFL বদনা উপহার দাও।এত চড় খেয়ে আমার মনে হচ্ছে দিন দিন আমার গালটা অবশ হয়ে যাচ্ছে। তোমার মুগ্ধর যে হারে আমাকে মারে একদিন দেখবে আমার গাল সত্যি সত্যি বাঁকা হয়ে গেছে…
–
রুহি সোফা থেকে উঠে মুগ্ধদের বাসায় যায়!তারপর রান্না গিয়ে দেখে মুগ্ধর আম্মু বরইয়ের আচার বানিয়েছে এখনো বয়ামে রাখে নি!কিছুক্ষণ আগেই করছে মনে হয়!রুহি আশে পাশে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে পুরো এক কড়াই আচার নিয়ে মুগ্ধর রুমে চলে যায়!তারপর মুগ্ধ রুমে বসে বসে মনের সুখে আচার খেয়ে চলে আসে!বিকাল ৪টার দিকে রুহির কোচিং আছে এজন্য রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ে!রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে সামনে তাকিয়ে দেখে দুইটা ছেলে মেয়ে দুজন দুজনার হাত ধরে কথা বলতে বলতে বলতে আসছে আর হাসছে…..
–
রুহি দুষ্টু হেসে ওই ছেলে আর মেয়েটার সামনে গিয়ে দাড়ায় আর ছেলেটির দিকে তাকিয়ে বলে…
রুহিঃভাইয়া এই আপুটা মোটেও ভাল দেখতে না!আগের দুইটা আপু দেখতে পুরাই জখাম ছিলো।এই আপুটার চোখ টা একটু ট্যারা…
–
রুহি এই কথাটা বলে মুচকি হেসে চলে যায়!আর একবার পেছনে তাকিয়ে দেখে ওদের মাঝে ঝগড়া শুরু হয়ে গেছে!রুহি মুচকি এসে মনে মনে বলে….
রুহিঃ এসব ঠুনকো ন্যাকামির নাম দিসে ভালবাসা!কি কি বললো পরখ না করে ভুল বুঝাবুঝি শুরু।ভালবাসার মানে বুঝে না আর ভালবাসি ভালবাসি করে চিৎকুর দেয়!আমার জানেমান টা কে যে কবে পাবো!আমার জানুটা এমন হবে না মে বি।
–
রুহি, সুমি আর ইরা কোচিং ক্লাসে বসে সামনে দিকে তাকিয়ে আছে ঠিকই বাট ওদের কানে ইয়ারফোনে কোকা কোলা তু গানটা বাজছে।কেউ ধরতে পারবে না যে এরা তিনজন টিচারকে এভাবে ঢপ মারছে।এভাবে তিনটা ক্লাস শেষ করে তিনজন হাঁটছে আর আইসক্রিম খাচ্ছে। রুহি পার্কের মত একটা জায়গাতে এসে বসে পড়ে!সুমি আর ইরাও বসে পড়ে… হুট করে সুমি রুহির দিকে তাকিয়ে বলে।
–
সুমিঃরুহি আমার মনে হয় মুগ্ধ ভাইয়া তোকে খুব ভালবাসে!এজন্য তোকে এত শাষণ করে।কেউ যদি কাউকে এমন ভালবাসে তাহলে এমন করেই শাষণ করে।
রুহিঃ ভাট বকা কম কর!ভুলভাল বকিস না তো।মুগ্ধ ভাইয়া যদি আমাকে ভালবাসতো তাহলে সারাদিনে এমন ভাবে মারতো না।কুওাটা আমাকে না মারলে মনে হয় ওই কুওাটাও শান্তি পায় না!আর তুই বলছিস আমাকে ভালবাসে!বালের ভালবাসা….
ইরাঃ আচ্ছা রুহি ভাইয়া তোকে থাপ্পড় মারে তুই কিছু বলিস না কেন??
রুহিঃকি বলবো??আমার অভ্যাস হয়ে গেছে বরং একদিন যে মুগ্ধ ভাইয়ার হাতে মার না খেলেই আমার গাল চুলকায়।
সুমিঃহা হা হা
–
রুহি, সুমি,ইরা ওখান থেকে সোজা শপিংমলে চলে যায়!তারপর হুদাই ঘুরে বেড়ায় আর ঘুরতে ঘুরতে রুহি একটা ছেলেদের ওয়াচ খুব পছন্দ হয়!রুহি কি মনে করে ওয়াচ টা নিয়ে নিলো।রুহি, ইরা আর সুমি তিনজনেই একই রকম চুরি নিলো।তারপর বাসায় যাওয়ার উদেশ্যে বেরিয়ে পড়লো।
–
ওদিকে মুগ্ধ অফিস থেকে বাসায় ফিরে ওর রুমে ঢুকেই চোখ ছানাবড়া!মুগ্ধ চিৎকার করে ওর আম্মুকে ডাকলে!মুগ্ধর ডাক শুনে ওর আম্মু দৌড়ে আসে। মুগ্ধ ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো…
আম্মুঃকি রে কি হয়েছে?এমন চিৎকার করছিস কেন তুই??বাসায় ডাকাত পড়ছে নাকি…
মুগ্ধঃআমার বেড শীটে কে বরইয়ের আচার লেপ্টে রাখছে!আর পুরো রুমের এই অবস্থা কেন???(চিৎকার করে)
To be continue……
(কেমন লাগছে গল্পটা বলো….আজকে তোমরা বড় বড় কমেন্ট করো তো দেখি কেমন পারো। এত কষ্ট করে লিখি আমি,শুধু তোমাদের জন্য। আর তোমরা এত কিপ্টামি করে কেন শুনি???😜😜)