#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_6
রুহিঃআসলে আমি পরীক্ষা করছিলাম! কুকুরের কাতুকুতু আছে কি না??? (বএিশ পাটি দাঁত বের করে)
–
রুহির কথা শুনে মুগ্ধ চোখ বড় বড় করে একবার তাকিয়ে! বাসার উদেশ্যে হাটা ধরলো!এই মেয়ের থাকা মানে নিজেকে এখন পাগল প্রমান করা!মুগ্ধ রুহির কথা শুনে কি বলবে সেটা খুঁজে না পেয়ে চোখ,মুখ খিচে হাঁটছে! মুগ্ধ এত জোরে হাটছে যে রুহি মুগ্ধর সাথে হাটতে পারছে না।
রুহিঃ দাঁড়াও ভাইয়া!!!!!! আমি তোমার সাথে হাঁটতে পারছি না।এত ছোট ছোট পা নিয়ে কেউ এত জোরে হাটে। (নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে)
মুগ্ধঃ……
রুহিঃআমি তোমার সাথে এত জোরে হাটতে পারছি না বা*!একটু আমারে কোলে নাও না!আল্লাহ তোমার ভাল করবে।একবারেই ১০/১২ টা ছালপালের বাবা হওয়ার তৌফিক দান করবে। (হাঁপাতে হাঁপাতে)
মুগ্ধঃ…..
রুহিঃযা বাবা এত রেগে গেলো কেন?আমি তো একটা ভালো জিনিসই পরীক্ষা করছিলাম।তবে হারামজাদা কুকুরটা ফলাফল বোঝার আগেই যে দৌড়ানি দিলো!আচ্ছা কুকুর মনে হয় রাগ করছে ওর ঘুমটা ভেঙ্গে দেওয়ার কারনে!যাই হোক কুকুরের কাতুকুতু পরীক্ষা করছিলা এটা কালকে ইরা আর সুমিকে বলবো! ওরা যদি জিজ্ঞাসা করে যে কুকুরটাকে কুতুকুতু দেওয়ার পর কুকুরটা কি করলো?তখন বলবো খিলখিল করে হাসছিলো….আর আমি কুকুরের দাঁত দেখে ক্রাস খেয়েছি।
–
রুহি একপ্রকার দৌড়াচেছ..রুহি পেছন থেকে বার বার ডাকছে বাট মুগ্ধ কোন কথা না শুনে হনহন করতে করতে বাসায় ভেতর ঢুকে গেল।রুহিও ওর বাসায় চলে গেল…
–
পরেরদিন সকালে মুগ্ধ জগিং করতে গিয়ে রুহির বাবার সাথে দেখা হয়।মুগ্ধ রুহির বাবাকে দেখে বলে…
মুগ্ধঃমেজ বাবা আসসালামু আলাইকুম! কেমন আছেন?
রুহির বাবাঃওয়ালাইকুম সালাম! আমি ভাল আছি! তা তুমি কেমন আছো প্রিন্স চামিং…
মুগ্ধঃজি!আমিও ভালো আছি।
রুহির বাবাঃ আব্বু সন্ধ্যার সময় কি তুমি খুব বিজি থাকো.???
মুগ্ধঃ না মেজবাবা!তেমন কোন কাজ থাকে না। কেন কোন দরকার??
রুহির বাবাঃআসলে রুহির জন্য যতটা টিচার রেখেছি রুহি কোন না কোন ভাবে টিচারকেই অত্যাচার করে ভাগিয়েছে।এই মেয়ের জন্য আমি অতিষ্ঠ। তুমি যদি ওকে সন্ধ্যার পর পড়াতে অনেক ভাল হতো!কারন একমাএ রুহি তোমাকেই একটু ভয় পায়।
মুগ্ধঃ আচ্ছা মেজবাবা তাই হবে!আজকে থেকে সন্ধ্যায় আমার বাসায় রুহিকে পাঠিয়ে দিবেন।আচ্ছা মেজ বাবা ভালো থাকবেন।আজকে আসি তাহলে আল্লাহ হাফেজ
রুহির বাবাঃ আল্লাহ হাফেজ
–
রুহির বাবা বাসায় গিয়ে রুহিকে বললো আজকে থেকে রুহিকে মুগ্ধর কাছে পড়তে যেতে!রুহি তো যায় যায় অবস্থা এমনিতেই থাপ্পড় খেয়ে গালটা এখন প্রায় সময় অবশ থাকে!আর পড়া না পারলে রুহিকে যে কি করবে মুগ্ধ সেটা রুহির ভাবলেই ওর গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। রুহি ওর বাবাকে এত এত ভুজুংভাজুং দিয়েও মুগ্ধর কাছে পড়তে না যাওয়া থেকে বাঁচতে পারলো না।রুহি এজন্য রাগ করে সকালে কিছু না খেয়ে কলেজের উদেশ্যে বের হলো…
–
মুগ্ধ তখন অফিসে যাচ্ছিল!রুহিকে কলেজে যেতে দেখে!মুগ্ধ বললো রুহিকে ওর গাড়িতে উঠতে বাট রুহি মুগ্ধর কথা শুনেও না শোনার ভান করে চলে যাচ্ছিলো!মুগ্ধ রুহিকে আবার ডাকলো। রুহি মুগ্ধ কাছে গিয়ে দাতে দাত চেপে রেগে গিয়ে বললো…
–
রুহিঃ শালা হাদারাম তুই আসলেই খাটাশ!কুওা একটা! তোর জন্য আমি একটুও শান্তি পায় না আমি।আর আমি তোর কাছে কিছুতেই পড়তে যাবো না! শালা নাইজেরিয়ার কালা হাতি!দেখতে তো পুরাই জলহস্তী’ আর কন্ঠ তো পুরাই ষাড়….
মুগ্ধঃ রুহি!!!!!!!!!!
রুহিঃকি রুহি!কে রুহি!চুপ! একদম চুপ! আর একটা কথা বললে তোর পেছনে বোম বেঁধে দিবো শালা কুওা ভাইয়া। আর আমি তোর কাছে কিছুতেই পড়তে যাবো না! যদি আমাকে ডাকতে আসিস তো তোর পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দিবো।যত্তসব আপদ আমার ঘাড়েই জুটে…. (কথাটা বলে চলে গেল)
–
রুহি রাগের মাথায় যা মুখে এসেছে তাই বলেছে!কি বলছে আর কাকে বলছে তার খেয়াল নেই।মুগ্ধকে রুহি এইসব বলে হনহন করতে করতে চলে গেল।মুগ্ধ রেগে চোখ লাল করে রুহির দিকে তাকিয়ে বললো।
–
মুগ্ধঃতুই পড়বি না তোর বাপ পড়বে!দাড়া তোকে একবার বাগে পায় তারপর তোরে….. ফাজিল মেয়ে! আমার ষাড় বলার মজা তোকে এবার বোঝাবো….(দাঁতে দাঁত চেপে)
–
মুগ্ধ রাগে গজগজ করতে করতে অফিসে চলে গেল!মুগ্ধর রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে!ওদিকে রুহি রুহিও রাগে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সামনে একটা টাইগারের ক্যান দেখে দিলো এক কিক!আর ক্যান টা গিয়ে একটা বাচ্চা মেয়ের মুখে লাগলো আর বাচ্চাটি গগন ফাটানো চিৎকুর দিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। রুহি আশ-পাশ না তাকিয়ে চোখ মুখ খিচে দৌড় দিল!তারপর হাঁপাতে হাঁপাতে কলেজে এসে পৌঁছালো।
–
ইরা,সুমি আর রুহি তিন জন ক্লাসে বসে আছে! সামনের দিকে তাকিয়ে! আর jisam 2 মুভিটা নিয়ে ফিসফিসিয়ে গল্প করেই যাচ্ছে। রুহির একটা কথা শুনে ইরা আর সুমি একটু শব্দ করেই হেসে দেয়।টিচার এসে ওদের তিনজনকে দাড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলো ওরা হাসছে কেন??রুহি ফট করে বললো…
–
রুহিঃস্যার আসলে আপনি যেটা বুঝাচ্ছেন ইরা আর সুমি বুঝতে পারেনি তাই আমি ওদের বুঝাচ্ছি
স্যারঃইরা, আর সুমি এবার বুঝতে পারছো তো!
সুমিঃহুমম! হুমমম স্যার আমরা বুঝি গেছে!কারন রুহি শুদ্ধ বাংলা ভাষায় যেভাবে বোঝালো তা না বুঝে আর কই যাবো (ইরাকে গুতো মেরে)
ইরাঃহুম! হুম! আমারও বুঝতে কোন সমস্যা নাই।আমি সব বুঝে গেছি স্যার। (হাসার চেষ্টা করে)
রুহিঃ আপনার আর কষ্ট করতে হবে না স্যার!আমি আছি তো..
(হুমম যদি একবার জানতেন ওদের কি বোঝালাম! তাহলে আমাকে আর কলেজে রাখতেন না ভাও সরি স্যার!সুন্দর করে টিসি ধরিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিতেন।মনে মনে)
স্যারঃহুম! সমস্যা থাকলে আমাকে জানিও
–
তারপর একটা ক্লাস করে ওরা কলেজের পেছন গেট দিয়ে বেরিয়ে গেল। রুহি ইরা,আর সুমিকে জোর করে ধরে নিয়ে এসেছে ওর বাসায়! রুহির আম্মু ওদের দেখে বললো…
আম্মুঃকি রে তিন পড়াচোর? তোরা কি আজকেও কলেজ ফাঁকি দিলি…??
রুহিঃ আম্মু এভাবে বলো না! আমরা হলাম শিক্ষিত চোর বার বার মুখের উপর এভাবে বলে লজ্জা দিও না তো।
আম্মুঃ তা তিন পড়াচোর একসাথে হাজির!এবার বল তো চলে আসলি কেন??কাহিনী কি??
রুহিঃ আমাদের কলেজের যে প্রোফেসর আছে!উনার বউয়ের বাচ্চা হবে। এজন্য কলেজ ছুটি দিয়ে দিয়েছে।
আম্মুঃ তোর কলেজ প্রোফেসরকে তো আমি দেখছি!উনার বয়স পয়তাল্লিশ বছর তো হবেই।এই বয়সে বাচ্চার বাবা…(অবাক হয়ে)
রুহিঃ ম ম মানে হুমম ওই আর কি!মার খাওয়ার যেমন বয়স নাই তেমনি বাচ্চা নেওয়ারও সময় -সীমা নাই গো মাদার বাংলাদেশ।
আম্মুঃএক থাপ্পড় দিবো!যা জানিস না তা নিয়ে কথা বললে।
রুহিঃহুম আমার এত জানার দরকার নাই!যা সত্যি তাই বললাম।এখন যাও আমাদের খেতে দাও খুব খুধা লাগছে।
(ডাহা মিথ্যা কথা তো বলে দিলাম!এই কথা যদি বেচারা প্রোফেসর জানতো তাহলে এতক্ষণ দাঁত কেলিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যেত।বেচারা প্রোফেসরের অজান্তেই আবার উনাকে আবার বাবা বানিয়ে দিলাম।এই বয়সে বাবা হওয়া ফিলিংসটা কেমন জানতে পারলে মন্দ হতো না।যাই হোক আম্মু কে ঢপ মেরে এবারের মত বেঁচে গেলেই কেল্যাফতে। মনে মনে)
–
রুহি ওর আম্মুকে ভুজুংভাজুং দিয়ে ম্যানেজ করে নিলো!রুহি, সুমি,ইরা সবাই ড্রয়িং রমের সোফায় বসে গল্প করা শুরু করলো!রুহি গল্প করতে করতে সামনে থাকা বরইয়ের আচারটা দেখে সাথে সাথে বয়ামের ভেতর হাত ঢুকিয়ে খেতে শুরু করলো!তিনজনে বসে বসে আচার খাচ্ছে হুট করে রুহির মুগ্ধর কথা মনে পড়লো!রুহির এটাও মনে পড়লো যে সকালে রুহি মুগ্ধকে ঠিক কি কি বলছে?রুহির তো এবার যায় যায় অবস্থা!রুহি মনে মনে মুগ্ধকে কি ভাবে ভুজুংভাজুং দিবে সেই পরিকল্পনা করতে থাকে।তারপর রুহি,সুমি,ইরা,আর ওর আম্মু মিলে বিরিয়ানী রান্না করলো! আর জমপেশ খেলো বাট রুহির মনে মনে মুগ্ধকে নিয়ে একটু ভয় কাজ করছে! আর রুহি ভাবছে আজকে মুগ্ধ ওকে পেলে কাচাই ছিঁড়ে খাবে….
–
সন্ধ্যার আজানের পর রুহি আজকে ভদ্র মেয়ের মত তারাতারি করে পড়তে বসেছে!রুহির বাপি রুহির মতলব বুঝতে পেরে! রুহির বাপি নিজে গিয়ে মুগ্ধদের বাসার গেট অবধি রেখে আসলো রুহিকে !ওদিকে মুগ্ধ অফিস থেকে ফিরে সাওয়ার নিয়ে বেডে আধাশোয়া অবস্থায় বসে কফি খাচ্ছিলো আর লেপটপে কিছু করছিলো।রুহি মুগ্ধধ বাসায় ড্রুয়িং রুমে ঢুকে! কাউকে না পেয়ে একটু জোরেই বললো…
–
রুহিঃ মুগ্ধ!ওইই মুগ্ধ!ওই মুগ্ধর বাচ্চা! ওহহহহহ মুগ্ধ ভাইয়া বাসায় আছো!?? ভাইয়া ও ভাইয়া!ও মুগ্ধ ভাইয়া আছো নাকি হিসু করতে গেছো… (জোরেই)
মুগ্ধ রুহির সব কথা ওর রুমে বসেই শুনতে পাচ্ছিলো বাট কোন কথা বলছিলো না।
–
কারে সাড়া শব্দ না পেয়ে রুহি মুগ্ধর রুমের সামনে এসে দাড়িয়ে ভাবছে ঢুকবে নাকি উল্টো ঘুরে দৌড় দিবে!রুহি মনে সাহস নিয়ে উল্টো ঘুরে দৌড় দেওয়ার আগেই মুগ্ধ ভেতর থেকে বলে উঠলো…
মুগ্ধঃরুমের বাইরে দাড়িয়ে কি করছিস?রুমে ঢুকার জন্য কি তোকে চিঠি পাঠাতে হবে। (গম্ভীর কন্ঠে)
রুহিঃ না না! এই তো আমি এসে গেছি।।মুগ্ধ ভাইস ভালো আছো!শরীর ভালো আছে!ঠান্ডা লাগিও না কেমন!কিছু খাবে আমি বানিয়ে দিবো।মন ভালো আছে তো???
(আল্লাহ গো এবারে মত বাঁচিয়ে দাও!আর কোনদিন এসব হাজিবাজি বলবো না।ভয়ে উল্টো পাল্টা বলে ঘেটে ঘ না করে ফেললেই হয়!মনে মনে)
মুগ্ধঃবেডে বস! আর বই বের কর। আচ্ছা রুহি তুই সকালে আমাকে ষাড় বললি কেন?? (শান্ত কন্ঠে)
রুহিঃ তোমাকে ষাড় বলছি বলে কি তুমি রাগ করছো ভাইয়া? আচ্ছা আর তোমাকে ষাড় বলবো না।তোমাকে এইবার থেকে বলবো রাম-পাঠা….এবার তো হাসো(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)
মুগ্ধঃ……
To be continue……
(রুহিকে এবার রোমান্টিক থেরাপি দিলে কেমন হয়??তোমরা বলো?তোমরা যা বলবে তাই হবে……??)