#প্যারাময়_লাভ❤❤
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_34
রুহির কথা শুনে মুগ্ধ কি বলবো বুঝতে পারছে না!আপাতত রুহিকে কি বলা উচিত মুগ্ধর জানা নেই…
–
মুগ্ধ রুহির দিকে একটা কাগজ এগিয়ে দেয় আর সেই কাগজ টা খুলে দেখে আর রুহি সাথে সাথে দাড়িয়ে যায়!৩মিঃ শান্ত চোখে কাগজটা দিকে তাকিয়ে থেকে রুহি উরাধুরা ডান্স করতে শুরু করলো!আর বাসা ভর্তি গেস্ট রুহির দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে!রুহি ভুলে গেছে অনেক চোখ ওর দিকেই তাকিয়ে আছে!রুহির তো খুশিতে পাগল হওয়ার উপক্রম কারন রুহি A+ পেয়েছে!রুহি খুব ভাল করেই জানে রুহি অনেক ভাল পরীক্ষা দিয়েছে ফেল করবে না!মুগ্ধ যে রুহিকে ঢপ মারছে রুহি বুঝতে পেরে মুগ্ধকে ওইসব বলছিলো!রুহি হুট করে চিৎকার করে বললো….
–
রুহিঃ কেউ সাকি সাকি গানটা বাজাও রে!আমি উরাধুরা ডান্স করবো!আর গান ছাড়া মন ভরে ডান্স করতে পারছি না
মুগ্ধর আম্মুঃরুহি মা কি হয়েছে তোর?? এমন করছিস কেন??
রুহির আম্মুঃ এসব কেমন পাগলামি রুহি!সবাই দেখছে… (রুহিকে থামানোর চেষ্টা করে)
রুহিঃ আম্মু আজকে আমি অনেক খুশি!আম্মু আমি মুগ্ধকে দেওয়া আমার কথা রাখতে পেরেছি।আম্মু আমি A+ পেয়েছি (অনেক খুশি হয়ে)
–
রুহির কথা শুনে সবার খুশি আর ধরে না!মুগ্ধ রুহি কান্ড দেখে হা করে তাকিয়ে আছে!তারপর সবাই যথারীতি দুপুরে সবাই খাওয়া -দাওয়াত শেষ করে এবং হৈ-হুল্লোড় করে অনুষ্ঠান শেষ করে!তারপর রুহি আর মুগ্ধকে রুহির বাপি ওদের বাসায় নিয়ে যায়! মুগ্ধও একদম নতুন জামাইযের মতই পাঁচ রকমের মিষ্টি, ফল থেকে শুরু করে অনেক খাবার নিয়ে যায়।মুগ্ধ রুহির সাথে ওদের বাসায় গিয়ে সবার সাথে বেশকিছুক্ষণ কথা বলে বাইরে চলে যায়!আর রুহি সবার সাথে আড্ডা দিতে থাকে!
–
রুহি বেডের উপর বসে আছে আর ভাবিরা কাজিন সবাই মিলে রুহিকে ঘিরে ধরে বসে আছে!আর এভাবে ঘিরে ধরার কারন! মুগ্ধ কি এমন করছিলো যে খাট ভেঙ্গে ফেলছে এই কাহিনী শুনবে!আর পরে ওরা পাশের রুমে গিয়ে কি কি করছে??ভাবিরা রুহিকে এটা জিজ্ঞাসা করছে আর রুহি কথা কাটিয়ে এটা ওটা বলছে!রাত ১১ টার দিকে মুগ্ধ মন ভুলে ওর বাসায় চলে গিয়েছিলো তারপর আর ঘুরে রুহির বাসায় যায়!রুহির আম্মু মুগ্ধকে দেখে বলে ফ্রেশ হয়ে রুহি নিয়ে খেতে আসতে!মুগ্ধও মুচকি হেসে জি বলে রুহীর রুমে চলে আসে…
–
মুগ্ধর রুহির রুমের দরজাতে এসে দাঁড়াতেই চোখ ছানাবড়া কারন সবাই রুহিকে নিয়ে অলরেডি টানাটানি শুরু করছে!আর মুগ্ধ অবাকের চরম শিখায় কারন ভাবিরা রুহি জিজ্ঞাসা করছে..
ভাবিঃ এই রুহি বল না মুগ্ধ কালকে কি কি করলো???
রুহিঃ প্যাকপ্যাক করো না তো গেমস্ টা খেলতে দাও..
–
মুগ্ধ দরজায় দাড়িয়ে ওদের কথা শুনছিলো! তারপর মুগ্ধ গিয়ে বেডে বসে রুহির কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে! উপস্থিত সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।মুগ্ধ রুহির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে পাশে রেখে দিল!আর মুগ্ধর চুল গুলো টেনে দিতে বলো।মুগ্ধ এবার ভাবিদের দিকে তাকিয়ে বললো…
মুগ্ধঃ ভাবি কি যেন জানতে চাচ্ছিলেন??
ভাবিঃ কালকে রাতে খাট ভাংলো কি করে? এটাই জানতে চাচ্ছিলাম।
মুগ্ধঃ শুধু মুখে বলবো নাকি কাজে করে দেখাবো…
ভাবিঃ আম (চোখ বড় বড় করে)
রুহিঃ কি বললে তুমি (মুগ্ধর চুল ধরে টেনে)
মুগ্ধঃআউচচ!রুহি চুল ছাড় আমি ব্যাথা পাচ্ছি তো।আরে গাধী আমি করে দেখাবো বলি নি।আমরা ভাইয়া আছে কি করতে!!!!
ভাবিঃ ওরে ফাজিল
মুগ্ধঃরুহি একটা কথা কি জানিস??
রুহিঃনা জানিনা তুমিই বলে দাও কি কথা??
মুগ্ধঃভাবিরা আসলে তাদের ফাস্ট নাইনের কথা ভুলে গেছে! এজন্য তোর থেকে শুনতে চাচ্ছে।
ভাবিঃ না গো দেবর জি!আমাদের ফাস্ট নাইটের কথা আমাদের সবারই মনে আছে! বাট তোমার ভাইরা তোমাদের মত খাট ভেঙ্গে ফেলে নি…(মুখে টিপে হেসে)
মুগ্ধঃ এজন্য আপনাদের বুঝি আপসোস হচ্ছে…!!
রুহির আম্মুঃ রুহি মুগ্ধকে নিয়ে খেতে আয়!!!(বাইরে থেকে)
–
তারপর সবাই আস্তে আস্তে রুমে থেকে বেরিয়ে গেল!রুহি মুগ্ধ চুল একটু জোরে টান দিলো।মুগ্ধ কিছু বলতে যাবে তখন মুগ্ধর ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দিলো।তারপর তারাতারি করে মুগ্ধকে সরিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল।মুগ্ধ দুষ্টু হেসে রুহির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর পা বাড়ালো ওয়াশরুমের দিকে….
–
রুহিরা সবাই এক সাথে খেতে বসেছে!রুহির আম্মু মুগ্ধকে এটা-ওটা তুলে দিচ্ছে। আর রুহি ভ্রু কুচকে সেটাই দেখছে!রুহি রাগে দুঃখে কি করবে বুঝতে পারছে না।রুহি চোখ ছলছল করে ওর বাপির দিকে বললো…
রুহিঃ বিয়ের পর সব মেয়েরা পর হয়ে যায়।এটাই তার প্রমাণ
রুহির বাপিঃ এই কথা বলছিস কেন মা??কি হয়েছে??
রুহিঃ আমার যে এতিমের মত বসে আছি!আমার যে আর একটু ভাত,মাংস,আর সালাড লাগবে কেউ তুলে দিচ্ছো না কেন?শুধু মুগ্ধর দিকেই খেয়াল রাখছো! বলি আমি কি ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে গেছি যে আমার কথা তোমরা ভুলে গেছো।
রুহির আম্মুঃ তুই তুলে নিয়ে খা!সব তো সামনেই রাখা আছে
রুহিঃ না! না! না! না! আমাকে তুমিই তুলে দাও।আমার তুলে নিয়ে কষ্ট হচ্ছে।
রুহির বাপিঃ আচ্ছা আমি তুলে দিচ্ছি!বলো কি নিবে?
রুহিঃ আম্মু মুগ্ধকে এখন ইলিশ মাছের যে পিস টা তুলে দিসে আমি সেটাই নিবো।
আম্মুঃ দেখছো কেমন ফাজিল মেয়ে! আর কি মাছ নেই নাকি যে তোর ওই মাছ টাই খেতে হবে।
রুহিঃ আমি ওইটাই খাবো মানে ওইটাই খাবো!এই মুগ্ধ ওই মাছ টা আমাকে দাও তা না হলে তোমার কলেরা,ডায়রিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস, সব একসাথে হবে!আর তোমার খাবারে বড় বড় লোভ দিবো! যাতে তুমি সারাজীবন বাথরুমের বাসিন্দা থাকো।
রুহির বাপিঃ ছিঃ! এসব কেমন কথা রুহি..
রুহিঃ এসব এমনই কথা..
মুগ্ধঃ তুই কি আমার উপর জেলাস ফিল করছিস??
রুহিঃ হুমম!জেলাসের বাবা মা সহ তার সাত গুষ্ঠীকে ফিল করছি।
–
মুগ্ধ রুহিকে ওর মাছটা দিয়ে দিলো!আর রুহি খাওয়া শুরু করলো!রুহির আম্মু মুগ্ধকে আরেক পিস মাছ দিল!রুহি মুগ্ধর থেকে এই মাছটাও নিয়ে নিলো।পরপর তিন পিস মাছ মুগ্ধকে মাছ দেওয়ার পর! রুহি এক রকম ডাকাতের মত করে ছেো মেরে মুগ্ধর থেকে মাছ কেড়ে নেয়!রুহির এভাবে মাছ নেওয়া দেখে মনে হয় পৃথিবীতে এই মাছ একপিসই আছে!আর মুগ্ধর ভাগের মাছটাই রুহির এখন না খেলে পৃথিবী উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করবে!চার বারের বেলায় রুহির আম্মু মুগ্ধর প্লেটে মাছ দিলো আর বাকি সবাই রাগী চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে থাকলো!মুগ্ধ রুহির আম্মুকে বার বলছে আর না দিতে কারন মুগ্ধর পেট ভরে গেছে বাট রুহির আম্মু কথা শুনছে না।
রুহি আবার মুগ্ধর প্লেটের দিকে হাত বাড়াতেই খেয়াল করলো সবাই ওর দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!রুহি বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে বললো…
–
রুহিঃ আমি আর খাবো না!এমনতি দেখলাম। আমি এত খায় নাকি!আমি তো ছোট বাচ্চা
মুগ্ধর আম্মুঃ তোর জন্য ছেলেটা ঠিকমত খেতেও পারলো না।তোর মাথায় কি সত্যিই আর বুদ্ধি হবে না।
মুগ্ধঃ মেজ আম্মু আমি পেট ভরেই খেয়েছি! আর বিড়াল রা যে ইলিশ মাছ পছন্দ করে এতো সবার জানা তাই না…
রুহিঃ তুমি কি আমাকে কিছু বললে??
মুগ্ধঃ না তো!আমি আবার তোকে কি বলতে যাবো।আর আমার পাগল ছাগলের সাথে এত কথা বলার কোন ইচ্ছে আমার নাই
–
মুগ্ধর কথা শুনে সবাই মুখ টিপে টিপে হাসছে!তারপর খাওয়া দাওয়ার ল্যাটা লুকে যে যার রুমে গেল।রুহি বেডে চার হাত পা ছাড়িয়ে শুয়ে আছে!মুগ্ধ রুহিকে ভালো করে শুতে বললো!বাট রুহি কোন কথা শুনলো না বরং আরো এলোমেলো হয়ে শুয়ে পড়লো!মুগ্ধ দুষ্টু হেসে রুহির উপর ভর ছেড়ে দিলো!রুহি মুগ্ধর সাথে কোন কথা বলছে না! রুহি ওর মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিলো!মুগ্ধ হাত দিয়ে আর রুহির মুখটা সোজা করলো বাট রুহির আবার মুখটা ঘুরিয়ে নিলো।মুগ্ধ রুহির দিকে তাকিয়ে বলছে…
–
মুগ্ধঃ এমন গাল ফুলিয়ে রাখার কারন কি??
রুহিঃ….
মুগ্ধঃ রাগ করার কথা আমার আর উল্টে তুই রাগ করি বসে আছিস??
রুহিঃ কেন তোমার রাগ করার কথা কেন??
মুগ্ধঃ আমার ভাগের মাছ বার বার খেয়ে নিলি!রাগ তো তাহলে আমারই তো করার কথা তাই না।
রুহিঃ…..
মুগ্ধঃবলবি তো মুখ গোমরা করে রাখছিস কেন??
রুহিঃ তোমার ভাগের মাছ খেয়েছি তাই খোটা
দিচ্ছো?
মুগ্ধঃ খোটা কখন দিলাম!
রুহিঃ এখনই তো খোটা দিলে!আমি সব বুঝি
মুগ্ধঃ হুমম আমি জানি তুই সব বুঝিস! বাট যা বুঝিস প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই বুঝিস।বল মন খারাপ কেন??
রুহিঃমন খারাপের কারন আছে তাই…
মুগ্ধঃ কি কারন সেটাই তো জানতে চাচ্ছি!!
রুহিঃ তিন তিনবার বিয়ে করলে তাও একবারো প্রপোজ করলে না।একবারো বললে না আমাকে ভালোবাসো বাট হুয়াই মুগ্ধ হুয়াই!!!
মুগ্ধঃ তোর মুখে মুগ্ধ আমার নাম টা শুনে আমার নামটা ধন্য! আর প্রপোজ না করলে কি ভালবাসা যায় না।নিজের বউকে ভালবাসি এই কথা কি এখন মুখে বলে বোঝাতে হবে ??
রুহিঃ একদম কথা প্যাচাবে না বলে না।এত কথা আমি বুঝি না..
মুগ্ধঃ তাহলে এখন আমার কি করতে হবে??
রুহিঃ আমাকে প্রপোজ করতে হবে…
মুগ্ধঃ সেইম কথা যদি আমি বলি!আমাদের ছেলেদেরকেই কেন বার বার প্রপোজ করতে হবে শুনি…
রুহিঃ তারমানে তুমি বলছো যে আমি তোমাকে প্রপোজ করবো..
মুগ্ধঃ হুমমম
–
রুহি মুগ্ধকে ওর উপর থেকে উঠতে বললো!তারপর আগে রুমের দরজা টা আটকে দিলো।মুগ্ধ তখন পেছনে ঘুরে হাসছিলো!রুহি দৌড়ে গিয়ে মুগ্ধর পিঠে উঠে পড়লো!আর একটু হলেই দুইজনেই পড়ে যেত।মুগ্ধ নিজেকে সামলে নিলো!রুহি মুগ্ধকে বারান্দা যেতে বললো তারপর রুহি মুগ্ধকে বলে ওকে যাতে নামিয়ে দেয় আর পাশে রাখা চেয়ারে বসতে বললো!মুগ্ধ চেয়ারে বসতেই রুহি মুগ্ধর কোলে উঠে বসে! মুগ্ধ রুহির কোমর জড়িয়ে ধরে। রুহি তখন মুগ্ধকে বলে….
রুহিঃ আমি এখন তোমাকে প্রপোজ করবো আমার কাজে একদম বাধা দিবে না।
তারপর রুহি বাম পাশে হাতটা বাড়িয়ে টবে রাখা ক্যাকটাসের চারা গাছ টা নিলো।
তারপর……
To be continue…..
(রেসপন্স পাচ্ছি না কেন???গল্প কি ভালো হচ্ছে না…🤔🤔)