Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বাড়িওয়ালী
পর্ব,,,১৪
লেখক,,, Junior
অনিতার কথায় কি বলবো ভেবে পাচ্ছিনা,,,, কিছু বলতে যাব তার আগেই মা খাওয়ার জন্য ডাকলো,,,
এই সুযোগে আমিও কথাটা এড়িয়ে গেলাম,,,,
চলো অনিতা খেতে যাই,,,, মা ডাকতেছে,,, আমি
হুম চলো,,,,অনিতা
খেতে গিয়ে দেখলাম,,, মা রুই মাছের তরকারি রান্না করেছে,,,অনেকদিন পর মায়ের হাতে খাবার খেলাম,,, মায়ের হাতের খাবারে স্বাদ ই অন্যরকম,,, যা অন্য কোন খাবারে নাই,,,,
খুব সুন্দর হয়েছে আন্টি,,,, এত টেস্টি খাবার আমার বাড়িতেও খাই নাই,,,অনিতা
কি যে বলোনা মা,,, তোমরা হচ্ছে ধনী মানুষ,,,, আমি তো এই সামান্য রুই মাছ রান্না করেছি,,,, যতটুকু সাধ্য ছিল ততটুকুই করেছি মা,,, তুমি কিছু মনে করো না,,,মা
আরে আন্টি কি বলেন,,, খাবারটা সত্যি ভালো হয়েছে ,,, আর এতোটুকু বলছেন কেন,,, অনেক কিছুই তো করেছেন,,, শুধু এসব কথা বলে আমাকে লজ্জা দিয়েন না ,,, অনিতা
অনিতার কথা শুনে,, মা মুচকি হাসলো,,,,
খাওয়া শেষ করে,,, রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ গল্প করলাম সবাই মিলে,,, বিকালের দিকে অনিতা কে নিয়ে ঘুরতে বেরোলাম গ্রাম টা দেখতে,,,,
গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অপরূপ,,, এতদিন মনে হয় প্রাণহীন শহরে ছিলাম,,, সেখানে ভালোভাবে শ্বাস ও নেওয়া যায় না,,,,
তোমাদের গ্রামটা কিন্তু খুব সুন্দর,, রাশেদ,,, আমার খুব ভালো লাগছে,,,,অনিতা
তাই নাকি,,, সামনে চলো,,, আরো ভালো লাগবে,,, নদীর পাড়ে যাই চলো,,, আমি
নদী ও আছে তোমাদের গ্রামে,,, তাহলে তাড়াতাড়ি চলো দেরি করছ কেন,,,অনিতা
কই দেরি করলাম,,,, যাচ্ছি তো ,,,, আমি
হুম চলো,,,, অনিতা
যাওয়ার সময় একজন হঠাৎ ডাক দিল,,,
কিরে রাশেদ না,,,,,
খেয়াল করে দেখলাম,,কয়েকজন বন্ধু ,,, ওরা গ্রামেই থাকে,,, খুব ভালো বন্ধু ছিলো আমার,,, শহরে চলে গেছিলাম,,, তাই কারো সাথে তেমন কথা হয়নি,,,,,
অনিতা তুমি একটু দাড়াও,, আমি আসতেছি,,, আমি
কিরে তুই এখানে,,,, দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিস,,, বড়লোক হয়ে গেছিস খুব না,,,, মামুন (গ্রামের বন্ধু)
হারে বড়লোক হতে যাবো কেনো,,, আমি তোদের দেখতে পাইনি,,, দেখতে পেলে অবশ্যই কথা বলতাম,,, আচ্ছা ভুলে হয়ে গেছে,, কেমন আছিস তোরা,,, আমি
আমরা ভালো আছি,,, হঠাৎ কোথায় চলে গিয়েছিলি,,, আমাদের না জানিয়ে,, পরে তোর মার কাছ থেকে শুনলাম তুই নাকি ঢাকা চলে গেছিস,,,, মামুন
হুম রে,, ঢাকায় গেছিলাম,,,, হঠাৎ গেছিলাম তো,, তাই তোদের বলতে পারি নি,,,, কিছু মনে করিস না,, আমি
মনে তো করাই লাগবে মামা,,,, তুই বিয়ে করছিস,,, আর আমাদের দাওয়াত দিলি না,,,, আলামিন (গ্রামের বন্ধু)
কই বিয়ে করলাম,,, পাগল হলে নাকি তোরা,,, আমি বিয়ে করলে তাদের দাওয়াত দিবো না,,, আমি
দাওয়াত আর কই দিলি মামা,,, ওখানে দাঁড়িয়ে আছে ওইটা কে তাহলে,,,, এর আগে তো কোনদিন দেখিনি,,, আলামিন
ওহহ,,, ওইটাই অনিতা,,, যার কথা তোদের আগে বলেছিলাম,,,, আমি
কিইই😱😱😱 ওইটাই অনিতা,,, কিভাবে কি হলো রে বন্ধু,,, কিছুই তো বুঝতেছিনা,,, খুলে বলতো,,, আলামিন
এখন না,,, রাতে দেখা করব নি তোদের সাথে,,, এখন অনিতা কে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি,,,, আমি
ওহহ,, আচ্ছা তাহলে সন্ধ্যায় হাসেম মামার চায়ের দোকানে আসিস,,, অনেকদিন হলো আড্ডা দেই না,,, মামুন
হুম,,, আমি
তারপর অনিতা সাথে আবার হাঁটতে লাগলাম,,,,
ওরা কারা,,, তোমাকে ডাকছিল কেন,,,অনিতা
আমার গ্রামের বন্ধুরা,,,, অনেকদিন পর আসছি তো,, তাই ডাকছিল,,, আমি
ওহহহ,,,, এখন তাহলে নদীর পারে চলো,,,, অনিতা
হুম,,, চলো,,, এত ধৈর্য হারা হচ্ছো কেন ,,, নিয়েতো যাবোই,,, আমি
এই প্রথম নদী দেখব,,, ধৈর্য হারা হবো,, না,,, গ্রামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই,,,, তাই গ্রামে আসাই হয় নাই,,,অনিতা
তাই নাকি,,,, এখনতো এসেছো,,,, চলো তোমাকে আজ অনেক ঘুরে দেখাবো,,, আমি
তারপর অনিতা কে নিয়ে নদীর পাড়ে গেলাম,,, অনিতা তো দেখেই,,, অবাক হয়ে গেছে
এত সুন্দর জায়গা,,,, এর আগে কখনো দেখিনি আমি এত সুন্দর জায়গা,,,, সত্যি খুব সুন্দর,,,, অনিতা
এত প্রশংসা করো না,,, সাঁতার জানো তুমি,,, আমি
হুম একটু একটু পারি,,, কেন,,, অনিতা
নাহহ,, এমনি,,,, তাহলে চলো নৌকা নিয়ে ঘুরতে যাই নদীর মধ্যে,,, আমি
সত্যি 😱😱😱 যাবে,,, আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না,,,, অনিতা
আরে অবিশ্বাসের কি আছে চলো,,,, আমি
একটা নৌকা নিয়ে,, নদীর মধ্যে ঘুরতে লাগলাম,, অনিতা খুব খুশি ছিল,,, ওর হাসিমাখা মুখটা দেখতে,, সুন্দর লাগছিল,,, মনে হচ্ছে সারা জীবন গ্রামে রেখে দেই,,, কিন্তু সেটা তো সম্ভব না,, আর পাঁচ দিন পর ওর বিয়ে,,,,
রাশেদ,,, আমার খুব ভয় করতেছে,,,, অনিতা
কেন ভয় করবে কিসের জন্যে,, আমি তো আছি ,,,, আমি
তবুও ভয় করতেছে,,, তোমার কাছে এসে বসি,,,, অনিতা
আচ্ছা আসো,,,,, আমি
বলার সাথে সাথেই অনিতা এসে,, আমার কোলের উপর বসে পড়ল,,,, আমি ওর কান্ড দেখে অবাক হয়ে গেলাম,,,,
আরে কি করছো,,, পাগল হলে নাকি,,, আমি
কেন কি করলাম,,, ভয় করছিল,, তাই তোমার কাছে এসে বসলাম,,,, অনিতা
ভয় করছিল বলে,,, এত কাছে এসে বসবে,,, এখনতো আমার ভয় করতেছে,,, আমি
তোমার কেন ভয় করবে,,,, আমার তো ভালই লাগছে,, অনিতা
তোমার আর পাঁচ দিন পর বিয়ে কিন্তু অনিতা,,, এসব কি ঠিক,,, তুমি বলো,,, আমি
কি ঠিক,, কি বেঠিক,,, সেটা আমাকে বোঝাতে এসো না,,, বিয়ে তো আমার,,, তাহলে সমস্যা তো আমার হওয়ার কথা,,, তোমার হচ্ছে কেন,,, অনিতা
আর কিছু বললাম না,,, অনেকক্ষণ ঘুরলাম এভাবেই,,, সবই ছিল,,, হাসি ঠাট্টা,,, কিন্তু ভালবাসাটা শুধু ছিল না,,,,,
সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে আসলাম দুজন,,,,
ফ্রেশ হয়ে,,, বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেলাম মাকে বলে,,,
অনিতা,,, মা আর রাকিবের সাথে গল্প করছিলো,,,,
আচ্ছা মা,,, তুমি কত দূর পড়াশোনা করেছ,,,মা
আমার পড়া শেষ আন্টি,,,, অনিতা
কি নিয়ে পড়াশোনা করছো,,,,মা
কমার্স নিয়ে,,, আমাদের কোন ভাই নেই তো ,, তাই বাবার ব্যবসা সামলানোর জন্য কমার্স নিয়ে পড়েছি,,, অনিতা
আমার রাশেদের ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবে,,, কিন্তু ছেলেটা আর পড়তেই পারলো না,,,,মা
কেন কি হয়েছিল আন্টি,,, রাশেদ হঠাৎ পড়া বাদ দিয়ে ছিল কেন,,, অনিতা
সবই কপালের দোষ,,,, তোমার আংকেলের কাঁচা বাজারের ব্যবসা ছিল,,,, অনেক ভালই চলতাম,,, রাশেদ ভালো ছাত্র ছিল,,, তাই শহরে পড়াতে শুরু করলাম,,, কিন্তু হঠাৎ,, তোমার আংকেল রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছিলো,,, তখন পরিবারে অনেক ঋণ ছিল,,,, রাশেদ ও কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না,,, পরে পরিবারের কথা ভেবে,,, ইচ্ছা করেই পড়া ছেড়ে দিয়েছিল,,, আমিও মানা করতে পারি,,, কিভাবে মানা করতাম বলো,,, আমি তো আর টাকা আয় করতে পারতাম না,,,, আন্টি
কী বলছেন এসব আন্টি,,,, এতো কিছু হয়ে গেছে রাশেদের উপর দিয়ে,,, আমিতো কিছুই জানিনা,,,, অনিতা
কেন রাশেদ তোমাকে কিছু বলে নাই,,,,মা
নাতো,, কিছুই বলেনি আমাকে,,,, এত কষ্ট করছে রাশেদ আপনাদের জন্য,,,, অনিতা
হুম,,,, ভাগ্য করে এমন একটা ছেলে পেয়েছিলাম,,,, আমাদের কথা ভেবে,,, ওর নিজের ভালোবাসা বিসর্জন দিয়েছিলো,,,, অনেকদিন দেখেছি,,, রাতে একা একা কাঁদতে,,, কিন্তু আমি দেখেও কিছু করতে পারিনি,,,, আমার করার মত কিছুই ছিলো না,,,মা
এসব বাদ দেন আন্টি,,, এখন তো সব ঠিক হয়ে গেছে,,,, এসব ভেবে আর কষ্ট পেয়ে লাভ আছে,,,, অনিতা
হুম,,, তাই তো আর কষ্ট পাই না,,,, সবকিছু মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি,,,,মা
চলবে,,,
ভালো লাগলে লাইক এবং কমেন্ট করবেন
ধন্যবাদ সবাইকে