Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বাড়িওয়ালি
পর্ব,,,১৫
লেখক,,, Junior
অনেকক্ষণ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম,,,, তারপর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম,,,,
কিরে এতক্ষণ কই ছিলি,,, কত বাজে দেখছিস,,,মা
আলামিন দের সাথে দেখা করতে গেছিলাম,,, কত আর বাজবে,,, 9 টার মত ,,, আমি
ঘড়ি কি দেখছিস,,, নাকি না দেখেই বলতেছিস,,,,,মা
মার কথা শুনে,, ঘড়ির দিকে তাকালাম,,,, তাকিয়ে দেখি,, এগারোটা বেজে গেছে,,,, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে এগারোটা বেজে গেছে,,, খেয়ালই করিনি,,,
আসলে বুঝতে পারিনি,,, তোমরা খাওয়া-দাওয়া করছো,,, আমি
না,,, তোকে রেখে কি করে খাবো,,, তাছাড়া অনিতাও খেতে চাইলো না,,, বলল তুই আসলেই নাকি খাবে,,,মা
ওহহহ,, ঠিক আছে তাহলে অনিতাকে ডাক দাও,,,
তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমাতে গেলাম,,,,,অনিতা মার সাথে ই ঘুমিয়েছে,,,, আমি আর,, রাকিব একসাথে ঘুমিয়েছি,,,
সকালবেলা,,, আগেই ঘুম থেকে উঠলাম,,, মাকে বলে রেখেছিলাম আগেই যেন ডাক দেয়,,, তাড়াতাড়ি যেতে হবে,,,, দেখলাম অনিতা এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি,,, কিছুক্ষণ পর মাকে দিয়ে ই অনিতাকে ডাক দেওয়ালাম,,,,দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,,,
সবাই মিলে সকালের ব্রেকফাস্ট টা করে নিলাম,,,,
তারপর রেডি হয়ে,,অনিতাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম,,, আসার সময় ,,
সাবধানে যাস,,,বাবা,,,,মা
হুম তোমরা ভালোভাবে থেকো,,,আর কোনো কিছু লাগলে বলো কিন্তু,,,, আমি
ঠিক আছে,,,এখন থেকে বলবো,,,,,মা
আন্টি ভালো থাকবেন,,আর বিয়ের আগের দিন আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিবো নি যাইয়েন কিন্তু,,, অনিতা
হুম মা,,যাবোনি,,, তুমি চিন্তা করো না,,, সাবধানে যেও কেমন,,,,মা
রাকিব কে দেখলাম তাকিয়ে আছে আমার দিকে,,আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না,,, রাকিব কি বোঝাতে চাচ্ছে,,, কিছু টাকা দিলাম,,,
এই টাকাগুলো নে,,, কিছু কিনে খাস,,,আর মাকে দেখে রাখিস,,আর শুনলাম অনেক দুষ্টু হয়ে গেছিস বলে,, দুষ্টুমি না করে মন দিয়ে পড়াশোনা কর, ,,, আমি
হুম ভাইয়া,,,বলেই দিলো এক দৌড়,,,,
তারপর মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে,,,রওনা দিলাম,,,,
আমি গাড়ি চালাতে লাগলাম,,,, কিছুক্ষণ পর ,,,
রাশেদ গাড়ি থামাও,,,, তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে,,,,অনিতা
কি বলবে বলো,,, গাড়ি থামাতে বলছো কেন,,,, আমি
আমি বললাম তুমি থামাও,,,অনিতা
ঠিক আছে,,আর একটু সামনে গিয়ে দাড় করাই,,, আমি
হুম,,, আমি
বুঝতে পারছি না,,অনিতা কি এমন বলবে যে,,গাড়ি থামাতে বলছে,,,,, একটু পর একটা নির্জন জায়গায় গাড়ি থামালাম,,,,
বলো কি বলবে,,, আমি
তুমি এত স্বার্থপর কেন,,,,অনিতা
কেন,, আমি আবার কি করলাম তোমার সাথে,,, আমি
কি করোনি,,, তোমার বাবা মারা গেছে,,, এটা আমাকে এতদিন বলোনি কেন,,, অনিতা
আরে এসব কথা তুলছো কেন,,,, বাবা তো অনেক আগেই মারা গেছে,,, এসব বলে কি লাভ,,, চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে,,, আমি
কথা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করো না ,,, যা বলছি ভালোভাবে উত্তর দাও,,, অনিতা
কি উওর দেবো,,,হ্যা,,,বাবা তো আমার মারা গেছে,,,এখানে তোমাকে কি বলবো,,, তাছাড়া এর আগে তো অনেক বার বলতে চেয়েছি ,,,শুনেছো কখনো আমার কথা,,,,,এখন এসব কথা তুলছো কেন,,,, আমি
একদমে কথাগুলো বলে ফেললাম,,, খুব রাগ হচ্ছিল,,,,,
সরি রাশেদ,,, আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দাও,,,, আমি বুঝতে পারি নি,,,অনিতা
কিছু তোমাকে বুঝতে ও হবে না,,, আসলে তুমি আমাকে কোনদিন ভালই বাসনি,,, ভালোবাসলে কখনো অবিশ্বাস করতে না ,,,, আমি
আমি অনেক বড় ভুল করেছি রাতুল,,, প্লিজ এবারের মত ক্ষমা করে দাও,,,,, অনিতা
আচ্ছা ক্ষমা করে দিলে কি সব শেষ হয়ে যাবে,,, আর 4 দিন পর তোমার বিয়ে,,, ভুলে যেও না কিন্তু,,,, সো,,, এই সব পাগলামি বাদ দিয়ে,,, চলো বাড়িতে যাই,,, অনেক কাজ পড়ে আছে,,, আমি
অনিতা আর কিছু বললো না,,,, গাড়িতে উঠে বসলো,,,, আমি আবার গাড়ি চালাতে লাগলাম,,,,, রাস্তায় আর কোন কথা বললাম না,,,, রাগ কি শুধু ওর ই আছে নাকি আমার নাই,,,আমি কতবার বলার চেষ্টা করলাম,,, তখন শুনলোই না,,, আজ আসছে অধিকার ফোলাতে,,,
দুপুরের দিকে অনিতাদের বাড়িতে পৌঁছালাম,,,,তারপর আঙ্কেল আন্টির সাথে কথা বলে ,,যে যার রুমে চলে গেলাম,, কিছুক্ষণ পর আন্টি খাওয়ার জন্য ডাকলো,,,
খেতে গিয়ে দেখলাম,,,অনিতা আসে নি খেতে,,,,আমি বসে খাওয়া শুরু করলাম,,,,
তোমার পরিবারের সবাই কেমন আছে ,,, আঙ্কেল
হুম ,, ভালো আছে আঙ্কেল,,,,, আমি
তোমার মা আর ভাইকে আসতে বলেছো তো,,, আঙ্কেল
হুম বলেছি,,, বিয়ের আগের দিন আসবে,,,, আমি
ওহহ,,,তাই নাকি,,, খুব ভালো লাগলো শুনে,,, তোমার মা আসবে,,,, আঙ্কেল
আচ্ছা রাশেদ ভাইয়া,,অনিতা আপুর কি কিছু হয়েছে নাকি,,,,নিশিতা
নিশিতার কথা শুনে চমকে উঠলাম,,,নিশিতা আঙ্কেল আন্টির সামনে কি বলতেছে,,,, তারপর নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম,,,,
কেন,,, কি হবে,,, আসার সময় তো ভালই ছিল,,, কিছু হয়েছে নাকি,,, আমি
নাহ,, কিছু হয়নি,,,, আসার পর থেকে কারো সাথে ভালো করে কথা বলছে না,,,, আবার খেতে ডাকলাম তাও আসলো না,,, তাই বললাম আর কি,,,,,নিশিতা
ওহহ,, আমিও জানিনা,,, হয়তো জার্নি করে এসেছে,,, তাই এমন করছে,,, আমি
আমার ও তাই মনে হয়,,, আচ্ছা এসব বাদ দিয়ে তোমরা খাও,,,আমি অনিতার রুমে গিয়ে খাবার দিয়ে আসবোনি,,, আন্টি
তারপর খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসলাম,,, আমি তো বুঝতে পারছি,,অনিতা কেন খেতে আসেনি,,, হঠাৎ অনিতা ,, আমার বাবার কথা শুনলো কিভাবে,,হয়তো মা বলেছে,,,এই জন্যই আমি অনিতাকে নিয়ে যেতে চাইনি,,, যাইহোক অনিতার সাথে এই বিষয়ে কথা বলতে হবে আমার,,, যেভাবেই হোক,,, বিষয়টা ঠিক করতে হবে,,,আর চারদিন পর অনিতার বিয়ে,,,এখন অঘটন কিছু ঘটে গেলে,,, আঙ্কেলের সম্মান থাকবে না,,, তার চেয়ে ভালো আগে থেকেই,,, বিষয়টা সেরে ফেলি সেটাই ভালো হবে ,,,,এসব ভাবতে ভাবতে রাফিন কে ফোন দিলাম,,,, কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর ধরল,,,
কিরে কোথায় তুই ,,,,, রাফিন
আমি তো অনিতা দের বাড়িতে,,,, তুই কোথায়,,, আমি
আমিও বাড়িতে আছি,,, কিন্তু একটা সমস্যা হয়ে গেছে রে দোস্ত,,, রাফিন
কি সমস্যা,,, কিছু হয়েছে নাকি তোর,,, আমি
আমার কিছু হয়নি,,, তুই এখন একটু আমাদের বাড়িতে আসতে পারবি,,,, রাফিন
হুম আসতেছি,,,, আমি
এই বলে রাফিনদের বাড়িতে চলে গেলাম,,,, গিয়ে দেখলাম পিয়ালী ও ওদের বাড়ি আছে ,,,,
কি হইছে রে,,, এত তাড়াতাড়ি আসতে বললি,,,, আমি
বন্ধু খুব বড় সর্বনাশ হয়ে গেছে,,,, কি করবো কিছুই বুঝতে পারতেছি না,,, রাফিন
কি সর্বনাশ,,, আর পিয়ালী তোদের বাড়ি কেন,,,, আমি
দোস্ত,,, পিয়ালির মা বাবা রোড এক্সিডেন্ট এ মারা গেছে তিন দিন আগে,,, সেইজন্য ও অফিসে যাই নি,,, রাফিন
কি😱😱😱😱 কিভাবে হল এটা,,, আমি
ওর বাবা-মা মার্কেট করতে গিয়েছিল,,, পিয়ালির অফিস ছিল বলে যেতে পারেনি,,,, আসার সময় রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছে,,, আমি পিয়ালী কে হাসপাতাল থেকে আমাদের এখানে আনছি,,, ওর এই শহরে আপন বলতে বলে কেউ নেই,,,, রাফিন
রাফিনের কথা শুনে পিয়ালির কাছে গেলাম,,,, আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল,,,, আমি কি বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না,, কী বলে সান্ত্বনা দেবো,,,,
পিয়ালী কেঁদোনা,,, যা হবার তা তো হয়েই গেছে,,, আল্লাহ যা করে,, ভালোর জন্যই করে,,, আর কাঁদছো কেন,,, আমরা তো আছি,,,আমি
আমার সাথে এরকম হলো ভাইয়া,,, আমি কি ভুল করেছিলাম যে,,, আল্লাহ আমার সাথে এরকম করলো,,, পিয়ালী
প্লিজ কেঁদোনা,,, সবাইতো আর চিরদিন বেঁচে থাকে না,,,, নিজেকে শান্ত করো,,, আমি
কিভাবে শান্ত হবো ভাইয়া,,,, এখন আমার কি হবে,,, কেউ নাই আমার এই পৃথিবীতে এখন,,, পিয়ালী
আর এভাবে বলছ কেন,, কেউ নাই তো কি হয়েছে,,, আমিতো আছি,,, রাফিন আছে,,,, আমরা তোমার দেখাশোনা করে,,, তোমার কিছু হবে না দেখো,,, আমি
আমার কথাগুলো শুনে পিয়ালী আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল,,,, আমিও পিয়ালী কে জড়িয়ে ধরলাম,,, কি করব,,, মেয়েটা অনেক নার্ভাস হয়ে গেছে,,,,
তারপর পিয়ালী কে অনেক বোঝালাম,,, কিন্তু কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছে না,,,,, আমাকে আসতে দিতে চাচ্ছে না,,,, অনেক কষ্টে বুঝিয়ে,,, সন্ধ্যার দিকে অনিতাদের বাড়ির দিকে গেলাম,,,,
আমাকে দেখে আঙ্কেল আন্টি দৌড়ে আসলো,,,,,
কোথায় গিয়েছিলে রাশেদ,,,, তোমাকে কতবার ফোন দিয়েছি,,,, একবারও ফোন ধরোনি,,,, আঙ্কেল
একটু ব্যস্ত ছিলাম,,, তাই খেয়াল করিনি,,, কেন কি হয়েছে আঙ্কেল,,, আপনাদের এমন দেখাচ্ছে কেন,,, কোন কিছু কি হয়েছে,,, আমি
হুম বাবা,,, অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে গেছে,,,
অনিতা এমন কাজ করবে,, কখনো ভাবতে পারিনি,,, আঙ্কেল
আঙ্কলের কথা শুনে বুকের মধ্যে কেমন যেন করে উঠলো,,, কি হচ্ছে আমার সাথে,,, আবার কি অনিতা,,,,,
চলবে
ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক এবং কমেন্ট করবেন
ধন্যবাদ সবাইকে,,,,