#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
#পর্বঃ১২
বৃষ্টি মেঘের হাত ধরে বসে আছে কোন কথা বলছে না শুধু মেঘের মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে।প্লিজ মেঘ একবার চোখ খুলো তোমার বৃষ্টির সাথে কথা বলো।
আকাশ;;বউমনি তুমি শান্ত হও মেঘ ঠিক হয়ে যাবে।
বৃষ্টি;;ভাইয়া তুমি বাড়ি যাও।এই রক্তমাখা সার্ট টা পাল্টে তুমি দাদির কাছে যাও আমি মেঘের সাথেই আছি।
আকাশ,ওকে বউমনি তুমি মেঘের কাছেই থাকো আমি আসি, এই বলেই আকাশ বের হয়ে যায়।
মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই হঠ্যাৎ করেই বৃষ্টির চোখ লেগে যায়।মেঘের হাত ধরেই বৃষ্টি ঘুমিয়ে পরে।কিছুক্ষন পরে মেঘের একটি আঙ্গুল নড়ে উঠে।বৃষ্টি নিজের হাতের মধ্যে কিছু একটা অনুভব করাতে ঘুম ভেঙে যায়।বৃষ্টি তার হাতের দিকে তাকাতেই দেখে যে মেঘের আঙ্গুল নড়ছে।বৃষ্টি তারাতারি করে ডক্টর কে ডেকে আনে। ডক্টর এসে মেঘ কে চেকাপ করে বৃষ্টির দিকে মুচকি হেসে তাকিয়ে বলে, মেঘ স্যার এখন বিপদ মুক্ত।বৃষ্টি ডক্টরের মুখ থেকে এইটা শুনা মাএই অনেক খুশি হয়ে ডক্টর কে ধন্যবাদ জানায়।ডক্টর হাসি মুখে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।বৃষ্টি, আল্লাহ তোমার দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া তুমি আমার মেঘকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছো। এইটা বলেই বৃষ্টি মেঘের কাছে বসে আস্তে করে ডাকতে থাকে।মেঘ পিটপিট করে চোখ খুলেই বৃষ্টির কান্নামাখা মুখ টা তার চোখে পরে।
মেঘ;;বৃ,,বৃষ্টি,,,,আ’ম ব্যাক,,,,বৃষ্টি আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে মেঘকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।তুমি খুব খারাপ মেঘ।তুমি শুধু শুধু আমাকে কষ্ট দেও।মেঘ নিজের হাত দিয়ে আস্তে করে বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে।তুমি কি ভেবে ছিলে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো।পৃথিবী উল্টে গেলেও বৃষ্টির কাছ থেকে তার মেঘ কে কেউ আলাদা করতে পারবে না।
বৃষ্টি,তুমি জানো না মেঘ আমি কতোটা ভয় পেয়ে ছিলাম।তোমার এক্সিডেন্টের কথা শুনার পর যেনো আমার পুরো দুনিয়া থেমে গেছে।নিজে কে পাগল পাগল মনে হয়েছে।
মেঘ;; ও হো তাই না কি।মিসেস:বৃষ্টি মেঘ আহমেদ চৌধুরী যে ভয় পায় তা আমার জানা ছিলো না।
বৃষ্টি;;এই অবস্থাতেও তোমার মজা করতে মন চাইছে।মেঘ কে ছেড়ে আকাশ কে কল করে বৃষ্টি,,,
আকাশ;;হ্যালো বউমনি বলো।মেঘ ঠিক আছে তো?
বৃষ্টি,তুমি কোথায় ভাইয়া।তারাতারি হসপিটালে চলে আসো।
আকাশ;;আমি তো গাড়ি তে দাদির কাছে যাচ্ছি। কি হয়েছে বউমনি, মেঘ ঠিক আছে তো।আমি আসছি এখনি আসছি।আকাশ কল কেটে ইউটান দিয়ে হসপিটালে দিকে রওনা দেয়।
বৃষ্টি হাত থেকে ফোন টা রেখে দিয়ে দেখে যে মেঘ উঠে বসার জন্য চেষ্টা করছে কিন্তুু উঠতে পারচ্ছে না ভিষন কষ্ট হচ্ছে।বৃষ্টি তারাতারি করে মেঘ কে ধরে পিছনে বালিশ দিয়ে বসিয়ে দেয়।
আমাকে বলেই তো হয় একা উঠার চেষ্টা করছো কেনো।
মেঘ, আর শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে না তাই নিজেই একা বসার চেষ্টা করছি।দুইজনের কথার মাঝে আকাশ কেবিনে ঢুকে দেখে মেঘে বসে আছে আর তার সাথে বৃষ্টি।মেঘ কে সুস্থ দেখে আকাশ সাথে সাথে দৌড়ে গিয়ে মেঘ কে জড়িয়ে ধরে।
মেঘ,কিরে এইভাবেই কি ধরে রাখবি এইবার তো ছাড়,,,,আমার কিছুই হয়নি আমি তোর সামনে সুস্থ ভাবেই বসে আছি।
আকাশ,তুই জানিস না মেঘ এই অবস্থায় তোকে দেখে আমার অবস্থা কেমন হয়ে ছিলো।এক মূহুতের জন্য মনে হয়েছে আমি তোকে হারিয়ে ফেলেছি।
মেঘ,আরে ভাই আমার দেখ, আমি আবার তোদের কাছে ফিরে এসেছি আর শোন না আমার আর এখানে থাকতে ভালো লাগছে না।
আকাশ,এখনো তো পুরোপুরি সুস্থ না তুই আর দুইটো দিন এইখানেই থাক।একটু ভালো হলেই তোকে নিয়ে যাবো।
মেঘ,না,,,আমি আর এখানে থাকতে পারবো না আর তুই খোজ নিয়েছিস আমার এই এক্সিডেন্ট কি ভাবে হলো,,,??
আকাশ;; হুম খোজ নিয়েছি আর আমি এইটার ও জানি কে করিয়েছে??
মেঘ;;কে সে??
আকাশ;;শফিক শেখ এই কাজ করিয়েছে।যাকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে তাকে আমি সোজা উপরে পাঠিয়ে দিয়েছি।সব কিছু শুনার পর মেঘ প্রচুর রেগে যায়।মেঘের এমন রাগ দেখে কাদে হাত রেখে চোখ দিয়ে ইশার করে বৃষ্টির দিকে তাকাতে বলে।বৃষ্টি মেঘের এমন চেহারা দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে।বউমনি তুমি মেঘের কাছে থাকো আমি ডক্টরের সাথে কথা বলে আসি যে মেঘকে কবে নিয়ে যেতে পারবো।আকাশ সাথে সাথেই কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।
✨✨✨
আমি কিছুই ভাবতে পারছি না রাতুল,মেঘ কিভাবে বেচেঁ গেলো।এতো বড় একটা এক্সিডেন্ট হওয়া সত্বেও কিভাবে বেচেঁ গেলো আর যাকে দিয়ে এই কাজ টা করিয়েছি তাকেও তো পাওয়া যাচ্ছে না।
রাতুল;;স্যার আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আমি একটা কথা বলতে পারি।
শফিক;;হুম বলো,,,,
রাতুল, মেঘের না কি একটা বান্ধুবী আছে নাম টিনা। এই মেয়েটা কে ব্যবহার করে যদি আমরা মেঘের ক্ষতি করি তাহলে কেমন হবে স্যার,,,,
শফিক;; কি বললে তুমি, মেঘের বান্ধুবী টিনা,,হুম নাম টা শোনা শোনা লাগছে।অনেক ভালো আইডিয়া রাতুল,সেই জন্যই তো আমি তোমাকে এতো পছন্দ করি।তুমি এই টিনার উপর নজর রাখো কি করে কোথায় যায়,এই টিনার বিষয়ে সব খবর আমার চাই।
রাতুল;;ওকে স্যার,,,আমি আপনা কে এই টিনার বিষয়ে সব খবর সময় মতো দিয়ে দিবো।এই বলেই রাতুল বের হয়ে যায়।
এইবার মতো বেচেঁ গেলেও পরের বার বেচেঁ ফিরতে পারবি না মেঘ।তোর কাছের মানুষ তোর ক্ষতি করবে,এই বলেই শফিক বাকাঁ হাসি দেয়।
—-আকাশ কেবিনে ঢুকেই বলে বউমনি মেঘ কে আরও দুইদিন হসপিটালে থাকতে হবে।মেঘের শরীর এখনো অনেক টাই দূর্বল তাই ডক্টর বলেছে আরও দুইদিন থাকলে ভালো হবে।
মেঘ,কিন্তুু আমার তো এইখানে ভালো লাগছে না।আমি এখানে থাকতে পারবো না।তুই ডক্টর কে বল আমি আজ এখনি চলে যাবো।
—-আচ্ছা, তুমি কেনো এতো জিদ করছো।তোমার শরীর এখনো অনেক টাই দূর্বল আর এইদিকের কথা চিন্তা করতে হবে না আকাশ ভাইয়া আর রনি সামলে নিবে।তুমি পুরাপুরি সুস্থ হয়ে তারপর যাবে।আমি চাই না দাদি তোমাকে এই অবস্থায় দেখে অসুস্থ হয়ে যাক।আমি দাদি কে তেমন কিছু খুলে বলি নি।
আকাশ,হ্যাঁ মেঘ বউমনি ঠিক বলেছে তুই ভালো ভাবে সুস্থ হয়ে নে।(আমি জানি মেঘ তুই কেনো এখান থেকে চলে যেতে চাইছিস)আর শোন, তোর কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে না আমি আর রনি আছি আমরা দুইজন সামলে নিবো সেই সময় আকাশের এক গার্ড কল করে,,,
আকাশ;;হুম বলো,,,,
গার্ড;;স্যার এই মাএ শফিকের লোক রাতুল তে দেখলাম একটা হোটেলের ঢুকতে।
আকাশ;;সাথে আর কেউ,,,,
গার্ড;; না স্যার একা,,,এখন কি করবো স্যার।
আকাশ;; কিছুই করতে হবে না,,ওকে ফলো করো কোথায় যায় কার সাথে দেখা করে।সব কিছু আমাকে বলবে।
গার্ড;;ওকে স্যার,,বলেই ফোন টা রেখে দেয়।
মেঘ;;কার ফোন আকাশ আর কার উপর নজর রাখতে বললি।কিরে চুপ করে আছিস কেনো।
—–যখন ধরে আনবে তখন দেখতে পারবি।এখন এইসব নিয়ে কথা বলার দরকার নেই।বউমনি তুমি একটা কাজ করো তুমি বাসায় চলে যাও আমি মেঘের সাথে আছি কাল থেকে তুমি এইখানেই আছো।
বৃষ্টি,কিন্তুু ভাইয়া কি করে ওকে রেখে যাই।আমি আছি তো বউমনি তুমি যাও।আমি মেঘ কে দেখে রাখবো চিন্তা করো না।
বৃষ্টি;;হুম,,,বলেই বৃষ্টি একজন গার্ডকে নিয়ে বের হয়ে যায়।
মেঘ;;এইবার বল কি হয়েছে।কার ফোন ছিলো??
আকাশ;;সব গার্ডদের বলে ছিলাম রাতুল উপর নজর রাখতে। তাই আর কি বললাম যে ওর উপর নজর রাখতে।
—-শুধু নজর রাখতে বললি কেনো,মেরে ফেলতে বললি না,,কথা টা মেঘ অনেক হিংস্র ভাবে বললো,,,,,,
#চলবে,,,,,
(গল্পটা আজকে ছোট করে দিয়েছি।জানি না কি লিখেছি,,আজকের পর্ব টা সাজিয়ে লিখতে পারি নি।ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।গল্প টা দেরি করে দেয়ার জন্য সরি)