তুমি সুখের বৃষ্টি হয়ে ঝড়ো – পর্ব ২০

0
431

#তুমি_সুখের_বৃষ্টি_হয়ে_ঝড়ো
#সমুদ্রিত_সুমি
পর্ব ২০

নিজেকে এই মুহূর্তে খুব অসহায় লাগছে ধূসরের।কারণ তাঁকে যেভাবে তার শালিরা পঁচাচ্ছে,তাতে তাঁকে পঁচা আলু বললেও কম হবে।একটু আগের পরিবেশ দেখে যতটা ভয়ে হাত-পা কাঁপছিলো তাঁর।এখন সেই পরিবেশে কিনা হাসি তামাশা হচ্ছে। কি হবে কি হতে পারে এটা ভেবে ধূসরের ঘাম ছুটে যাচ্ছিলো,সেখানে এখন মজা হচ্ছে। উপফ সত্যি সে পাগল।কিন্তু ওই ঘরে তো সত্যি ভোরের বাবা বন্দী আছেন।তাহলে নিশ্চয়ই কিছু একটা হবে।হয়তো একটু সময়ের দরকার। কিন্তু কি হবে।ভোরের দাদিমা’কেও আঁটকে রাখা হয়েছে। আসলে ভোর কি করতে চাইছে।আর যদি কিছু করতেই চায়। তাহলে এমন নিশ্চিন্তে আছে কি করে।কোন রকম কোন উত্তেজনা নেই নিজের মাঝে।এমন ভাবে সবার সাথে কথা বলছে,যেন কিছুই হয়নি, না হবে।কিন্তু কিছু তো হবে।তখনই সিমা বললো।

ওহে দুলাভাই এতো কি ভাবছেন। কিছু বলুন। তা আপনি নাকি আপুকে বিয়ে করছেন।হানিমুনে যাননি কেন?

হানিমুন, তোমার বোন তো হানি মানেই জানে না।

ভোর চোখ মোটা করে তাকাতেই ধূসর চুপসে গেলো।ভোরের চোখ রাঙানি দেখে রিনা বললো

আপু প্লিজ বেচার দুলাভাইকে ওভাবে ভয় দেখাস না।এমনই তোর ভয়ে সে এতোক্ষণ ধরে চুপচাপ ছিলো।যা-ও একটু কথা বলবে তা-ও তোর চোখ রাঙানি দেখে বলবে না।

উনি সব সময় উল্টো পাল্টা কথা বলে।উনাকে কথা বলতে না দেয়াই ভালো।

হুম সেটা তো বুঝলাম, কিন্তু আপু তুমি আমায় এয়ারপোর্ট থেকে এখানে কেন নিয়ে এলে। কি করতে চাইছো।

অনেক কিছু সিমা, একটু পরই যানতে পারবি।তারপর ভোর ওদের রেখে বাহিরে চলে এলো।সাথে সাবু এলো।

সাবু তাঁকে বসিয়েছিস।

হুম বসিয়েছি, যা করার তাড়াতাড়ি কর।

হুম

ভোর নিজের জায়গা থেকে কিছুটা দূরে এগিয়ে গেলো।যেখানে খুব পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখা একটি ঘর।সেখানে বসতেই মিনিট পাঁচেক পর,সফিউল মোর্সেদ চলে এলো ভোরের কাছে।ভোরকে দেখে সফিউল একটুও অবাক হয়নি।হয়তো এই জায়গায় ভোরকেই সে আশা করেছিলো।কিন্তু কি হবে সেটা সে বুঝতে পারছে না।তাই সে সরাসরি বললো—

আমার মেয়ে কোথায়

আছে

কোথায়,তাঁর কি ক্ষতি করেছিস তুই।

কোন ক্ষতি আমি করিনি।

তাহলে ধরে নিয়ে এসেছিস কেন?

কে বললো ধরে নিয়ে এসেছি।

তাহলে তখন ওই কথা গুলো।

ওগুলো তো আমরা ইচ্ছে করে করেছি।

কি চাস বল

তুমি কি চাও

কিছু না।

আরে বলো,যা চাইবে তাই পাবে।

ভোরের কথায় সফিউলের চোখ চকচক করে উঠলো।এ যেন মেঘ না চাইতেই জলের মতো।তাই সে ফটাফট উত্তর দিলো।

সম্পত্তি

সব দিব কিন্তু একটা শর্ত আছে।

কি শর্ত

তোমাকে তোমার পাপের সব কিছু স্বীকার করতে হবে।

কোন পাপের কথা বলছিস।

আমার মায়ের সাথে করা পাপ।

ভোরের মুখে কথাটা শুনে সফিউল একটু চমকে উঠলো।কিন্তু কিছুই বললো না।চুপচাপ বসে রইলেন।

ভয় নেই, কেউ নেই আশেপাশে। কিনবা আমি নাটক সিনেমার মতো আড়ালে রেকর্ডও করছি না।তাই নির্ধায় বলতে পারেন।সেদিন কেন এমনটা করেছিলেন।

মনে তো হচ্ছে সবই জানিস।তাহলে নতুন করে জানার কি আছে।আর চাচার কাছে জানতে চাইছো কিভাবে তোমার মা’কে ধর্ষণ করেছি।বেস আর কিছু বলার প্রয়োজন হলো না।ভোর সামনে রাখা একটি পেপারে সাইন করে দিলো।সাইন শেষ হলেই সেটা সফিউলের হাতে গুঁজে দিয়ে বললো।

পাপ বাপ কেও ছাড়ে না।আপনি কি করে বুঝলেন আপনি বেঁচে যাবেন।যে সম্পত্তির জন্য আপনার এতো আয়োজন। সেই সব সম্পত্তি আপনার হাতে।দেখেন তো আপনি এই সব সম্পত্তি দিয়ে নিজের ছেলেকে বাঁচাতে পারেন কিনা।আমি আপনার মতো কুৎসিত মনের মানুষ নই।যে সিমাকে অপহরন করে আপনায় ব্ল্যাকমেল করবো।শুধু একটু ভয় দিয়েছিলাম এই যা।এই অপহরণ, ভয় দেখানো এগুলো একমাত্র সিনেমাতেই মানায় বাস্তবে নয়।আপনার ছেলে হাসপাতালে ভর্তি আছে।যান গিয়ে দেখুন তাঁকে বাঁচাতে পারেন কিনা।আর হ্যা সব কিছু কিন্তু লিখে দিয়েছি।পারলে মিলিয়ে নিন।আমি আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি না।শুধু সুযোগ দিচ্ছি নিজেকে বাঁচানোর। দেখুন বাঁচাতে পারেন কিনা? এই কথা গুলো বলেই ভোর চলে গেলো তাঁর বাবা-র কাছে।আর সফিউল কিছু বুঝতে না পেরে অসহায় হয়ে বসে রইলো।কোন ছেলে কার কথা বলছে।আফিম নাকি সাবু।

ভোর দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতেই সমিউল বলে উঠলো।
কে,কে এসেছে।

আমি,আপনার সন্তান হয়েও যে আপনার সন্তান নয় সে।

আমাকে ধরে এনেছো কেন?

কিছু সত্যির মুখোমুখি করতে।

একদম মায়ের মতো হয়েছিস।ঠিক মায়ের রূপ।

হুম ঠিক বলেছেন মায়ের মতো।কিন্তু সত্যি কি জানেন।মায়ের মতো না সব কিছু নয়।অনেক কিছুই বাকি আছে মায়ের মতো হওয়ার জন্য। আচ্ছা আব্বা সেদিন রাতে মায়ের গায়ে আপনি হাত তুলেছিলেন কেন? কি অন্যায় ছিলো আমার মায়ের।আপনার মনে কি কখনো প্রশ্ন জাগেনি,আমার মায়ের মতো মানুষ কেন আপনাকে ফাঁসিয়েছে।তাঁর যে পরিবারে জন্ম হয়েছে। সেই পরিবার আপনাদের থেকে কম কোথায়।আমার মা’কে তো আপনি চিনতেনই না।তাহলে সে কি করে আপনায় ফাঁসাল। এসব বাদ দিলাম। একটা কথা বলুন তো,সেদিন আমার মা কেন এতো মানুষকে ছেড়ে আপনার নাম নিতে গেলো।কেনই বা আপনায় বিয়ে করে এতো বছর আপনার পরিবারের প্রতিটা সদস্যের অত্যাচার সয্য করলো।এমন তো নয় তাঁর এই পৃথিবীতে কেউ ছিলো না।তাহলে।আচ্ছা সব বাদ দিলাম।কিন্তু এটা বলুন। আমার মা বিয়ে হওয়ার পর থেকে, যে কিনা সদর দরজা থেকে বাহিরে যায়নি।তাঁর গর্ভে কি করে অন্যকারো সন্তান আসলো।ভেবেছেন কখনো।এটা ভেবেছেন কখনো আপনার বাবা কেন আমার মা’কে সাপোর্ট করতো।আমি তো সারাজীবন জানতাম সন্তান যতোই খারাপ হোক।বাবা-মায়ের কাছে তাঁরা সব সময় নির্দোষ হয় ।তাহলে সেই বাবা কেন আপনাকে দোষী ভেবেছে।আপনার বাবা-র নাতী-তো আমি একা ছিলাম না।তাহলে কেন সম্পত্তির বেশির ভাগ অংশ আমার আর মায়ের নামে লিখে গেছে। দিনের পর দিন কেন আপনার মা আপনাকে নিজের স্ত্রী বিরুদ্ধে উস্কেছে।জানি উত্তর নেই।নেই কোন কথা।আমি বলি শুনুন।সেদিন আপনার জায়গায় আপনার ভাই ছিলো।যে কিনা আপনি সেজে আমার মায়ের সাথে অন্যায় করেছিলো,আপনায় ফাঁসাতে।আপনাদের গোপন শত্রুতার জন্য বেচারি আমার মা ফেঁসে গেছে। বলির পাঠা হয়েছে আপনার ভাইয়ে। সেদিন অন্ধকারে আমার মা কারো মুখ দেখেনি কিন্তু নাম শুনেছিলো।কার নাম জানেন, আপনার নাম।আসলে এমনটাই প্ল্যান হয়েছিলো।এটা ভাবতেই পারেন আমি মিথ্যা বলছি।এখন বাড়িতে যান,গিয়ে দেখুন আপনার বাড়িতে আপনার জায়গা হয় কিনা।আর হ্যা আমি সব কিছুর প্রমান দিলেও,আমি যে আপনার মেয়ে এটার প্রমান দিতে পারবো না।কারণ আমি আপনার মেয়ে।মেয়ে হয়ে কি করে বাবা-র কাছে প্রমান দিবো আমি তাঁর মেয়ে।এটা আমার রুচিতে বাঁধে ।আর ওই যে দেখছেন বসে আছে চুপচাপ যে মহিলা।তিনি আপনার মা নন।শত মা। যাকে বলে বাবা-র স্ত্রী। হ্যা সে আপনার মা নয় আপনার বাবা-র স্ত্রী।আচ্ছা আব্বা কখনো আপনার সন্দেহ হয়নি,কেন দাদা অফিস থেকে ফিরেই আপনার কাছে জানতে চাইতো,তাঁর আড়ালে আপনার মা আপনার গায়ে হাত তুলতো কিনা।সে আপনায় ঠিক মতো খেতে দিতো কিনা।কখনো আপনার ভাইয়ের জন্য আপনায় বকেছে কিনা।কিন্তু আপনি এতটাই অন্ধ ছিলেন কুহেলি বেগমের মিথ্যা ভালোবাসায়। যে সব সময় বলবেন না।তাই সত্যি কিছু চোখে পড়েনি।আব্বা আমি আপনার মেয়ে হয়েও কখনো আপনার ভালোবাসা পাইনি।আমার মা কিছু না করেও সারাজীবন আপনার অত্যাচার সয়ে গেছে। আব্বা শুনেছি একটা কুকুর বাড়িতে থাকলে,মানুষের তাঁর প্রতিও মায়া জন্মে যায়।আর আমার মা তো একজন মানুষ ছিলো।তাঁর প্রতি কেন আপনার কোনদিনও ভালোবাসা জন্ম নেয়নি।আব্বা একদিন আমার মায়ের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে জানতে চাইতেন। কেন, সে আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলো।কেন সে আপনায় ফাঁসিয়েছে।আব্বা মেয়েরা জীবনের থেকেও নিজের সম্মানকে বেশি ভালোবাসে। ভয় পায় সেই সম্মান হারাতে।আর সেই মেয়ে কিনা নিজে থেকে নিজের সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিলো।একটুও কি মন বলেনি।হ্যা সামিউল জানতেচা ইনুর কাছে,সে কেন তোর সাথে এমন করলো? সে কেন তোর জীবনটা নষ্ট করলো।আব্বা মনে রাখবেন সব কথার সৃষ্টি হওয়ার আগে কিন্তু কিছু কথার সূচনা হয়।কোন কথা আগে থেকেই হাওয়ায় ভাসানো হয় না।ওই যে কথায় আছে,কিছু ঘটে বাকিটা রটে।তেমনই হয়েছে আমার মায়ের সাথে। আজ উল্টো আমায় প্রশ্ন না করে ওই যে বসে আছে তাঁকে জিজ্ঞেস করুন সে সত্যি আপনার মা কিনা? এই একটা উত্তর যদি আপনি পেয়ে যান।বাকি গুলোও পাবেন।

স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সামিউল। তাঁর ফাঁকা মস্তিষ্ক জানান দিচ্ছে। হ্যা তাঁর উচিত তাঁর মায়ের কাছে জানতে চাওয়া ? সত্যি সে তাঁর ছেলে কিনা।এটা সত্যি তো কেন সেদিন ইনু তাঁর নাম নিয়েছিলো।না ইনু তাঁকে আগে থেকে চিনতো না সে ইনুকে চিনতো।তাহলে ইনু কেন তাঁর নাম নিয়েছিলো। আর সব থেকে বড় কথা তাঁরা তো দু’দিন হয়েছিলো দেশের বাড়িতে গিয়েছিলো।এরমাঝে তো কারো সাথে তাঁর শত্রুতা হয়নি। তাহলে।তাই সামিউল সামনেই বসে থাকা তাঁর মায়ের সামনে গিয়ে বসে পড়লেন।মুখ থেকে বাঁধন খুলে দিতেই কুহেলি বেগম জোরে জোরে শ্বাস নিতে রইলো।

মা,ভোর যা বলছে তা কি সত্যি। সত্যি তুমি আমর মা নও।ইনুর সাথে ভাই অন্যায় করেছিলো।শুধুমাত্র সম্পত্তির জন্য। মা বলো। আমাকে আর অন্ধকারে রেখো না।কিছু বলো মা।মা আজ কেন আমার ইচ্ছে করছে ভোরকে বিশ্বাস করতে।তোমার চোখে কেন আমি মিথ্যা দেখছি।বলো মা বলো।কিছু বলো।

হ্যা, হ্যা ভোর ঠিক বলেছে।তুই আমার ছেলে না।তোর বাবা-র দ্বিতীয় স্ত্রী আমি ছিলাম।আমার থেকে বেশি তোর বাবা তোর মা’কে ভালোবাসত।তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করেছিলো।শুধু সন্তানের জন্য। একটা মেয়ের কি শুধু সন্তান জন্ম দেওয়াই কাজ।দিনের পর দিন তোর বাবা আমাকে অবহেলা করে তোর মায়ের কাছে থাকতো।অর্ধেক রাতে আমায় একা রেখে তোর মায়ের কাছে চলে যেত।এতোই যখন তোর মা’কে ভালোবাসত তাহলে আমাকে বিয়ে করার কি প্রয়োজন ছিলো।এতো কষ্ট দিয়েও তোর বাবা শান্ত হয়নি।তোকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলো।উফপ সেই যন্ত্রণা আমি কিছুতেই ভুলতে পারছিলাম না।আমার পাশের বালিশে ঘুমিয়ে তোর মরা মায়ের জন্য চোখের জল ফেলতো তোর বাবা।আর আমি যে কষ্ট পাচ্ছি তা তিনি কোনদিনও দেখিনি বা দেখতে চায়নি।তাহলে সে কি করে বুঝলো আমি তোকে এতো সহজেই মেনে নিবো।তাই আমি আমার মতো করে তোকে মানুষ করেছি।অন্যায় করিয়েছি সফিউলকে দিয়ে আর দোষ দিয়েছি তোর।ইনু ছিলো আমার একটা গুটি,কিন্তু আমার খেলা ঘুরিয়ে দিয়ে ইনু তোকে বিয়ে করে বসে।তাই আমরা নতুন প্ল্যান করি তোর কানে বিষ ঢালার।আর তুই তো আমার হাতেই ছিলো।তাই সুবিধা হয়েছে তোকে নাচাতে।কিন্তু বেগড়া দেয় তোর বাবা।সে সব জেনে যায় ইনুর থেকে।আর তখন চাইলেও কোন কিছু ঠিক করা সম্ভব নয়।তাই তাঁর সম্পত্তি ভোর আর তাঁর মায়ের নামে লিখে দেয়।আমাদের প্ল্যান আবারও ফেল করে।তাই আমরা নতুন প্ল্যান করি তোকে মেরে ফেলার, কিন্তু সেই কথা শুনে নেয় ইনু।তোকে সেদিন রাতে এই বিষয়ে জানাতে চাইলে তুই উল্টো রিয়াক্ট করি।আর মাথা গরম করে ইনুর গায়ে হাত তুলিস।ইনু ভোর রাতেই মারা যায়।ভেবেছিলাম আমাদের কাজ আরো সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু আফিম এসে আবারও বেগড়া দেয়।তাই ওকে সামলাতে ইচ্ছে করে ভোরকে ধূসরের সাথে বিয়ে দেই।কিন্তু তাঁর দু’দিন পর জানতে পারি।ধূসর আর কেউ না ইনুর বোনের ছেলে।বেপারটা শুধু আমি জানতাম।তাই আর কাউকে বলিনি।আমি প্রতিশোধ নিতে চেয়েছি,আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের।কিন্তু ওরা সবাই নিজেরাই নিজেদের আমার প্রতিশোধের আগুনে জ্বালিয়েছে।আমার কিছুই করার ছিলো না।

মা,কি বলছো তুমি।

যা বলছি এটাই সত্যি।কথাটা বলেই মুখ ফিরিয়ে নিলো কুহেলি বেগম। আর মেঝেতে বসে পড়লো সামিউল। এতোদিন সে মিথ্যা মোহে পড়ে দু’টো মানুষের জীবন নষ্ট করেছে।একজনের ছেলেবেলা আর আরেকজনের জীবন।তাঁর দারা এতো বড় পাপ হয়েছে। ইনু অন্যায় না করেও তাঁকে কষ্ট পেতে হয়েছে। দিনের পর দিন। বিনা অন্যায়ের জন্য শাস্তি পেয়েছে একজন নির্দোষ মানুষ। শুধুমাত্র তাঁর ভুলের জন্য। সম্পত্তি বুঝি সম্পর্কের থেকেও বেশি মূল্যবান।এসব ভাবতেই কেমন দম বন্ধ লাগছে সামিউলের। সে কিছুতেই শ্বাস নিতে পারছে না।তাঁর কষ্ট হচ্ছে। ভিষণ কষ্ট হচ্ছে। একটা মানুষ তাঁকে নিরদ্বিধায় ভালোবেসে গেছে, নিজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।আর সে কিনা সেই মানুষটাকে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।যাঁদের আপন ভেবে এই মানুষ গুলোকে পর ভেবেছে,আসলে তাঁরাই তাঁর পর।সত্যি কেন এতো কঠিন হয়।এই বোঝা যে বয়ে নিয়ে যাওয়া ভিষণ কষ্ট। সত্যি কেন এতো ভারি।যা এই শক্ত শরীর টাও নিতে পারছে না।কেন কখনো সে একটু সত্যি জানার চেষ্টা করেনি।কেন তাঁর মনে হয়নি শূন্য চোখে দেখা সব সত্যি না।ইনু বলেই চিৎকার দিলো সামিউল।

চলবে,,,

যাদের কাছে গল্পটা বাংলা সিনেমার মতো লাগছে,তাঁদের বলবো,প্লিজ আপনারা গল্পটা এরিয়ে যান।কেননা আপনাদের কমেন্ট দেখে খারাপ লাগা থেকে গল্প লেখার আগ্রহ হারিয়ে যায়।তাই কিছু মানুষের জন্য সবার আশা ভঙ্গ করতে পারি না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here