#পতিতা_বউ
৭ম পর্ব
নুহা আর অনিমা ক্লাস শেষ করে বের হতেই একদল মেয়ে এসে তাদের ঘেরা করলো। নুহার চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখতে দেখতে হাসাহাসি শুরু করে দিলো। একজন বলে উঠলো,
>>সিস দেখ কি ব্যাকডেটেট। আফিফ কিনা শেষমেশ এমন মেয়ের সাথে। জাস্ট ভাবা যায় যাই না।
একটা মেয়ে সানগ্লাস খুলে নুহার পা হতে মাথা পর্যন্ত দেখতে লাগলো।মেয়েটির পড়নে একটি শর্ট জিন্স আর টি-শার্ট।চুলের স্টাইল বোল্ড টাইপের। নুহার এসবে অনেক অস্বস্তি হচ্ছিলো। সে চুপচাপ সব সহ্য করছিলো। মেয়েটি নুহাকে জিজ্ঞেস করলো,
>>ফার্স্ট ইয়ার?
>>জি।
>>ওহ আই সি। তা কতদিন এর রিলেশন আফিফ এর সাথে?
>>মানে?
>>হোয়াট মানে? প্রেম কতদিন এর? কতদিন ধরে চলছে এইসব।
নুহা কোনো উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে থ মেরে। সে মনে মনে ভাবছে “এই ছেলের জন্য আমি সব দিক দিয়েই বিপদে পড়ছি। উফফ ইচ্ছে করছে তাকে গলা টিপে মেরে ফেলি। আর সহ্য হচ্ছে না। ” নুহা ভেতরে ভেতরে ফুলে ফেঁপে উঠছে। তার প্রচন্ড রাগ উঠছে। হঠাৎ মেয়েটি চিল্লিয়ে উঠলো,
>>হেই ইউ টক টু মি ড্যাম ইট!
>>আই এম নট আন্সারেবল টু ইউ। হু আর ইউ টু ইন্টারফেয়ার ইন মাই পার্সোনাল লাইফ?
মাইন্ড ইউর ওন ওয়ার্ক।
নুহা এক নিঃশ্বাসে এসব বলে অনিমার হাত ধরে ওকে টেনে নিয়ে সেখান হতে চলে আসলো। সে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
এদিকে জাইরা রেগেমেগে আগুন হয়ে আছে।
সে চিৎকার চেঁচামেচি করছে,
>>কাল পড়শুর একটা মেয়ে কথা কিভাবে বলছে দেখেছো? হাউ ডেয়ার শি টু টক টু মি লাইক দিস। এই মেয়েকে আমি নিজের মত করে হ্যান্ডেল করবো। আর আফিফ কে তো আমার চাই ই চাই। বাই হুক অর বাই ক্রুক।
নুহা আর অনিমা ভার্সিটি গেইটে আসতেই দেখে অনিমার বাবা এসেছেন। অনিমা নুহা কে বিদায় দিয়ে চলে গেলো বাবার সাথে। নুহা আফিফ কে কল দেওয়ার জন্য ফোন বেড় করলো। তার দ্বিধা বোধ হচ্ছে। কল দিবে কি দিবেনা ভাবতে ভাবতে দিয়েই ফেললো। ওপাশ হতে আফিফ ফোন ধরে বললো,
>>পার্কিং লটে আছি। কাম ফাস্ট।
এইটুকু বলেই টুক করে কল কেটে দিলো। নুহা ভাবলো “কেমন মানুষ রোবটের মত কথা বলেই গেলো। কিছু বলার সুযোগ ও দিলোনা”। এসব ভাবতে ভাবতে সে পার্কিং লটের দিকে হাটা দিলো।
আফিফ রাফির সাথেই বসে ছিলো। নুহার কলে তার কেমন যেন ফিল হচ্ছিলো তাই এক নিঃশ্বাসে এভাবে বলেই কল কেটে দিলো। রাফি ভাইয়ের এই কান্ড দেখে হাসতে হাসতে খুন। নুহা ও চলে আসলো। রাফির যেন হাসি আরো দ্বিগুণ বাড়ছে তাও হাসি চাপিয়ে রেখে নুহা কে বললো,
>>হাই। আপনি নুহা তাই না?
>>আসসালামু আলাইকুম। জি আমিই নুহা।
>>ওয়ালাইকুম সালাম। হ্যা দেখেই চিনতে পেরেছি। আমি আফিফ এর ছোট ভাই। ভাই থেকেই আপনার ব্যাপারে জানলাম।
>>ওহ আচ্ছা।
রাফি আফিফের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো,
>>ব্রো আমার ভাবী হিসেবে খারাপ না।
আফিফ রাফির কথায় পুরাই থ। এমনেই নুহাকে দেখেই সে চুপচাপ হয়ে আছে তার উপর রাফির কথায় একটু লজ্জা পেলো সে। রাফি বিদায় নিয়ে চলে গেলেই আফিফ আর নুহা রওনা দিলো।
পথিমধ্যে,
>>আচ্ছা আফিফ আপনার সাথে কি কোন মেয়ের রিলেশন আছে?
>>না তো। হঠাৎ এই কথা কেনো?
নুহা সব ঘটনা খুলে বললো। আফিফের এসব শুনে প্রচন্ড রাগ উঠেছে। সে নুহা কে বললো,
>>ওর নাম জাইরা। আমার পিছে পড়ে আছে প্রায় তিন বছর ধরে। আমি পাত্তা দেয়না। বলতে গেলে আমার পুরো লাইফে একমাত্র তুমিই একটা মেয়ে যার সাথে এত দূর আমার।
>>কেন? মেয়েটা অতটাও খারাপ না। দেখতে অবশ্য সুন্দরই।
>>হাহাহা। হাসালে নুহা। মেয়ে রিয়েলি?
মেয়ে কি এমন হয়? বেহায়াপনায় মেয়েদের মানায় না। নিজের সাথে ওকে কম্পেয়ার করে দেখো একবার।
নুহা মনে মনে ভাবছে ” আফিফ আমার পরিচয় এখনো জানেননা আপনি। আমার চেয়ে তো সে শতগুণ ভালোই আছে। একজন পতিতার সাথে তাকে কম্পেয়ার করে আর লাভই বা কি।” নুহা একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
চলবে…
[নেক্সট পার্ট রাতেই দিবো নাকি কালকে? মতামত চাই]