★★★ক্রাশ যখন বড় আপু★★★
#লেখক_আসিফ
~~~পর্ব_১৫~~~
.
.
— জামাইবাবাজি যে এটা কে?(মাইশার আব্বু আমরা বাসায় যাওয়ার পথে)
— আংকেল,,,আমার চাচাতো বোন,,নিধি আজ ই কুমিল্লা থেকে এসেছে?(আমি)
নিধি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে আজ কিছু একটা করে ফেলবে।।।
— আচ্ছা যাও উপরে যাও?আমি একটু ঘুরে আসছি।।(আংকেল)
— হুম,<(আমরা ঊপরে ঊঠতেছি) -- আসিফ,,,ওনি তোমাকে জামাই বাবাজি কেন বললো।।।?(নিধি) -- বাসায় চল সবকিছু বলছি।।।(আমি) তার পর বাসায় গিয়ে,,,নিধি সবার সাথে দেখা করে।।ফ্রেশ হয়ে আমাকে জামাই কেন বলছে তার উত্তর সুনতে বসে আছে।।।।নীলা,,আপু, মাইশা সবাই আছে।। নিধিকে সব কিছু বুজিয়ে বললাম।।।।নিধি,,,আমাদের এই অবস্থার কথা সুনে হাসতে লাগলো।।।যাই হওক ভুল ত বুঝে নি।।। আজ আমরা ঠিক করলাম ছাদে একটা পার্টি দিবো।।। যেই ভাবা সেই কাজ,,,হালকা খাবার আয়োজন করলাম।।।তিথী,,সাদিয়া,,সবাই থাকবে।।। কিন্তু হঠাৎ মাইশার আব্বু আমাকে আর নিধিকে তাদের বাসায় দাওয়াত দিয়ে গেলো।।রাতে এক সাথে খাবে তাই।।। নিধিকে যেহেতু আগে থেকে সব কিছু বলে রাখছি,,,সো এখন অভিনয়টা ঠিক ঠাক ভাবে করতেই হলো।।। সন্ধ্যায় মাইশাদের অখানে খেতে গেলাম।।আংকেল কে সালাম জানিয়ে,,,খাওয়ার জন্য প্রিপেরেশন নিচ্ছি।কিন্তু আংকেল নিধিকে উল্টা পাল্টা প্রশ্ন শুরু করে দিছে।।। -- নিধি তুমি জানো ত,,,,মাইশার সাথে যে আসিফের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে?(আংকেল) -- জ্বি আজই জানলাম,,,আমার মনে হয় বাসার কেউ জানে না?(নিধি) --জানে ত আসিফের আব্বুর সাথে কথা হইছে।।।(আংকেল) -- অহ আচ্ছা,,, কবে বিয়ে ঠিক হইছে আংকেল?(নিধিও বাড়িয়ে বলছে) -- এই ত পরিক্ষার পর,,,(আংকেল) -- ভালো।।। এদিক দিয়ে তিথী ফোন দিচ্ছে ছাদে যাবার জন্য,,,। আংকেল এর কাছে বিদায় নিয়ে ছাদে,,,,চলে গেলাম।। তার পর নিধিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। সবাই অনেক খুশি আমার ভালোবাসার মানুষকে দেখতে পেয়ে।।।যার জন্য আমি মরে যেতাম।।যার বিয়ে আটকিয়ে অন্য কারো হতে দেয় নি।। কিছুদিন ঘুরাঘুরি আর মজা করে,,,মাইশা আজ চলে গেছে।।।মন টা খারাপ হয়ে আছে।।আমি বাড়িতে যাবো ১০ দিন পরে।।। নিধিকে অনুরোধ করে বলে দিছি।।যেন বাসায় আমার আর মাইশার পেচ গুলো বাসায় না জানায়।।। দুপুরের দিকে খুব বমিবমি ভাব হচ্ছিল।।বাথরুমে গিয়ে,,,বমি করলাম।।মুখ ভর্তি রক্ত,,,খুব ভয় পেয়ে যাই।।কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল চলে যাই।।। ডাক্তার,, আমাকে পরিক্ষা করে,,,এমন কিছু বললো।।যা সুনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।। বসা থেকে দাড়ারে পারছি না।। চার দিক যেন অন্ধকার হয়ে আসছে।।। মাইশা আমাকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে। -- হ্যালো মাইশা বল?(আমি) -- কই তুই,,,বাসায় নেই,,,কখন থেকে ফোন দিচ্ছি? (মাইশা রাগের সুরে বলছে) -- কেন কি হয়েছে?(নিজেকে কন্ট্রোল রেখে বলছি) -- রাফি ফোন করেছে,,,?(মাইশা) -- ফোন করলে কথা বল?(আমি) -- বলছি ত,,,রাফি আমাকে আবার ফিরে পেতে চায়।(মাইশা) -- এত কিছু পরও তুই ফিরে যাবি??? (আমি হাসপাতাল থেকে বের হচ্ছি আর হাটছি।।) -- দেখা করতে বলছে,,,,চল যাই?(মাইশা) -- আমি একটা কাজে আছি,,তুই যা,?(আমি ফোন টা রেখে দেই) রাফি হলো,,,মাইশার খালাতো ভাই।।আমার সাথে মাইশার পরিচয় হএয়ার আগেই রাফির সাথে রিলেশন ছিল মাইশার।।। আমার সাথে যখন মাইশার বন্ধুত্ব হয়।।তখন থেকে মাইশা আঠার মতো লেগে আছে।।আমি মাইশাকে প্রথমে এড়িয়ে চললে অ। পরে মাইশাকে রেস্পন্স দিতে শুরু করি।।।এক সাথে কলেজ যাওয়া,,,,বাসায় আসা।।।ঘুরতে যাওয়া।।বিভিন্ন ট্রুরে যাওয়া।।।আরো কত কি। আমরা মনে হয়েছিল,,দুটি দেহে একটি প্রান।।।কেউ কাউকে ছাড়া কিছু বুজতাম না।।। রাফির সাথে সময় কাটানোর থেকে মাইশা আমার সাথেই বেশি সময় কাটাতো।।তাই ত মাইশাকে ভুল বুজতে শুরু করে রাফি।।।একদিন রাফি আমাদের একসাথে ফুসকা খেতে দেখে,,,তখন সে এসে মাইশাকে যা তা বলে অপমান করে।।।মাইশা সেদিন অনেক কাদে।।রাফি ভেবে নিয়েছিল আমার আর মাইশার প্রেম চলছে।।।আমি রাফিকে বুঝাতে চাই কিন্তু রাফি আমাকে একটা চর মারে।।। কিন্তু আমি হাল ছাড়ি নাই,,প্রতি নিয়ত রাফিকে বুঝানোর চেস্টা করেছি।।। সেদিন ফুসকা দোকান থেকে মাইশা কাদতে কাদতে বাসায় ফিরে,,,। আর রাফির সাথে যোগাযোগ রাখে নাই। কিন্তু মাইশা বলেছিল,,,রাফিকে নিয়ে তার জরিয়ে থাকা কষ্টের কথা।।। মাইশা তখন নবম শ্রেনীতে পড়তো,,,আর রাফি এইস এস সি দিবে।।।মাইশাকে রাফি প্রপোজ করে,,,ফেলে,,,মাইশা তখন ভালো করে বুজতেও শিখে নি।।।মাইশার রাফিকে অনেক ভালো লাগতো।।স্মার্ট ভদ্র ছেলে রাফি।। একবছর তাদের প্রেম ভালোই চলে যায়,,,।রাফিও সেই পরিক্ষায় ফেইল করে বসে।।রাফির বাসায় চলে বিশ্বযুদ্ধ।। রাফির মা ছিল অনেক রাগী,,,,। যেভাবেই মাইশার সাথে রাফির সম্পর্ক যেনে যায় মাইশার বড় খালা।।।রাফি ছিল অনেক বড়লোক বাপের ছেলে।।মাইশাদের থেকেও অনেক গুন। রাফির মা,,,বেপারটা যেনে রাফির ফেল হওয়ার পেছনে মাইশাকে দুষারুপ করতে থাকে।। সোজা চলে আসে মাইশাদের বাসায়।।।মাইশার আব্বু রাফির মা কে অনেক সম্মান করে বড় বোন বলে কথা।। রাফির মা এসে,,,মাইশার আব্বুকে নানা ভাবে অপমান করে।।।মেয়েকে দিয়ে সম্পদ হাতানোর কথাও বলে রাফির মা।। মাইশাকে ত,,,বাজে মেয়ে এই মেয়ে সেই মেয়ে বলে যায়।।।সেই দিন থেকে মাইশার বাবা ও তার খালার সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়।।।মাইশাকে মাইশার আব্বু অনেক মারে,,,।।যাকে কোনো দিন গায়ে হাত তুলে দেখে নাই।।।সেই মাইশাকে অনেক মেরে নিজের অপমান ডাকতে চেয়েছে।।।মাইশা সেদিন অনেক কাদে।।মাইশা এত কিছু বুজতো না। শুধু মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো আর রাতে মেসেজ।। মাইশা সিদ্ধান্ত নেয় যে।।সে আত্মহত্যা করবে।।কিন্তু নীলা আপুর জন্য সে এটা করতে পারে নাই। ডিপ্রেশন এ ছিল মাইশা অনেক দিন।।। তবে রাফি সব সময় মাইশার খবর রাখতো।। মাইশা প্রথমে যোগাযোগ রাখতে চায় নি।।তবে রাফি মাফ চায় তার আম্মুর ব্যাবহার এর জন্য।।এর পর থেকে তাদের কথা হতো খুব গোপনে। তবে দেখা করিনি একান্ত ভাবে।। মাঝে মাঝে মাইশার স্কুলের সামনে দাড়িয়ে থাকতো রাফি কথা হতো কিছু।।। মাইশা যখন কলেজে উঠে তখন আমার সাথে পরিচয়।।মাইশার আর কোনো ছেলে ফ্রেন্ড নাই আমি ছাড়া।।।মাইশা সব কিছু সেয়ার করেছিল শুধু রাফির সাথে হওয়া সম্পর্ক ছাড়া।।। আমি রাফিকে চিনতাম না,,সেদিন যখন মাইশার সাথে ফুসকা খেতে যাই। সেদিন সব কিছু জানতে পারলাম।। মাইশাকে ভুল বুজে রাফি ব্রেকাপ করে নেয়।আর কয়েকটি বাজে কথাও বলে।।। আমি রাফিকে অনেক বুজিয়ে আসল সত্যটা বলি।।রাফি হয়তো আজ তার ভুল বুজতে পেরেছে।তাই দেখা করতে চায়।। মাইশা আমাকে যেতে বললেও,,,আমার ত,,,মরন ব্যাধি ধরেছে??? বিকেলের দিকে কাউকে কিছু না জানিয়ে অন্ধকার রুমে সুয়ে আছি।আর নিজেকে প্রশ্ন করছি আর কয়েকদিন,,,হয়ত যেকোনো সময় এই অন্ধকার কে আপন করে নিতে হবে।।আর আম্মু,,আব্বু,নিধি,মাইশা,,নীলা আপু মামা,সবার ভালোবাসা খুব মনে পড়ছে।।তাদের কে কি ভাবে জানাবো আমার ব্লাড ক্যান্সার।। . . চলবে...