#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২৫
” এই যে মিসেস দুয়া! আধ ঘন্টা সময় দিলাম। এরমধ্যে সাজুগুজু করে রেডি হয়ে পড়ুন। বাহিরে যাবো। ”
দুয়া’র কর্ণে কথাটা পৌঁছালো ঠিকই। তবুও মেয়েটি কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো না। তার মনে যে অভিমানের পাহাড় তৈরি হয়েছে! তা ভঙ্গ করা বিনা সে শুনবে না কিছুই।
.
আঁধার রজনী। বিছানায় শুয়ে রয়েছে দুয়া। দেহে জড়ানো পাতলা ব্ল্যাংকেট। ম্লান হয়ে রয়েছে বদন। বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে ইউনিভার্সিটির সে-ই অপ্রত্যাশিত মুহূর্তগুলো। তূর্ণ ভার্সিটিতে গেলে সর্বদা বুঝি এমনই হয়? সে তো জানতোই না। তারা ভিন্ন ভিন্ন ডিপার্টমেন্টের লেকচারার এবং স্টুডেন্ট। তাই এতটা কাছ থেকে কখনোই এমন দৃশ্য অবলোকন করা হয়ে ওঠেনি। যদিওবা দুয়া জানতো মেয়েরা আদ্রিয়ান স্যারের জন্য ফিদা। তাই বলে এসব হয়ে থাকে! আর তার অর্ধাঙ্গ মশাই? সেজেগুজে রাজাবাবু হয়ে ভার্সিটি যায় আর মেয়েরা তাকে অনায়াসে গলাধঃকরণ করে! ইশ্! ওই মুহূর্তগুলো চোখের পর্দা হতে সরে যাচ্ছে না কেন? কেন তাকে বারবার দুঃখ দিতে ভেসে উঠছে! কেন? সে মানতেই পারছে না তার একান্ত মানুষটির জন্য বহিরাগতদের এত উ*ন্মাদনা! এত কাণ্ড! মানবে কি করে? আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণ’র জীবনে একমাত্র নারী হলো সে। জাহিরাহ্ দুয়া। তূর্ণ’র অর্ধাঙ্গিনী। যেখানে সে আজ পর্যন্ত তার বিয়ে করা বরের জন্য কোনোরূপ উ*ন্মাদনা প্রদর্শন করেনি সেখানে বাইরের মেয়েগুলো…! নোনাজলে ভরপুর হলো মেয়েটির আঁখি যুগল। অদৃশ্য যাতনায় ক্লিষ্ট অন্তঃস্থল। ঠিক তখনই কর্ণ কুহরে পৌঁছালো পুরুষালি কণ্ঠস্বর,
” এই যে মিসেস দুয়া! আধ ঘন্টা সময় দিলাম। এরমধ্যে সাজুগুজু করে রেডি হয়ে পড়ুন। বাহিরে যাবো। ”
দুয়া’র কর্ণে কথাটা পৌঁছালো ঠিকই। তবুও মেয়েটি কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো না। তার মনে যে অভিমানের পাহাড় তৈরি হয়েছে! তা ভঙ্গ করা বিনা সে শুনবে না কিছুই। মশাইয়ের কেমন বোধহীন আচরণ! বউ অভিমান করেছে সে খবর অবধি রাখে না। নিজের মতো দিনটি কাটিয়েছে। এখন রাতদুপুরে এসে অর্ডার করছে! বাহিরে যাবে নাকি? হুহ্! যাবে না দুয়া। সে যেন একাকী যায়। তবে দুয়া তার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে ব্যর্থ হলো। তূর্ণ মহাশয়ের এক বজ্র ধমকেই মেয়েটা কুপোকাত। সুরসুর করে রেডি হতে গেল তূর্ণ’র বাছাই করা পোশাক নিয়ে। তবে মনের মাঝে থাকা অভিমান এখন এভারেস্ট ছুঁই ছুঁই!
…
সমতল আরশির সম্মুখে দাঁড়িয়ে দুয়া। দীঘল কালো কেশে চিরুনি চালনা করে চলেছে। মলিন তার মুখখানি। হঠাৎই ডান কাঁধে পুরুষালি স্পর্শ অনুভূত হলো। কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই তাকে পেছন ফিরে দাঁড় করালো তূর্ণ। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দু’জনে। অভিমানিনী কন্যা অবনত করে নিলো মুখশ্রী। তূর্ণ তা লক্ষ্য করেও কিচ্ছুটি বললো না। বরং হাঁটু গেড়ে বসলো। আলতো করে দু হাতে শাড়ির কুঁচি ধরলো। অনভিজ্ঞ হাতে যথাসম্ভব শাড়ির কুঁচি ঠিকঠাক করে দিলো। দুয়া অবাক নেত্রে তা দেখতে লাগলো। অভিমানের পাহাড় কি সামান্য হ্রাস পেল! শাড়ির কুঁচি ঠিকঠাক করে উঠে দাঁড়ালো তূর্ণ। বাঁ হাতে লালচে চুলে ব্যাক ব্রাশ করে বললো,
” কোনো আর্টিফিসিয়াল রঙচঙ ইউজ করবে না। শুধুমাত্র মায়াবী আঁখি জোড়া কাজল কালো রেখায় রাঙাবে। গট ইট?”
মেয়েটিকে কিছু বলবার সুযোগ না দিয়েই সেথা হতে প্রস্থান করলো তূর্ণ। বিস্মিত চাহনিতে তাকিয়ে রইলো দুয়া!
•
তমস্র রজনী। আঁধারে ঘনিভূত বসুন্ধরা। হিমেল হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে গাত্র। ডার্ক ব্লু রঙা পাঞ্জাবির স্লিভ গুটিয়ে কনুইয়ে তুলে রাখলো তূর্ণ। আঙ্গুল চালনা করলো চুলের ভাঁজে। তখনই দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো বাড়ির মূল ফটকে। মুহুর্তের মধ্যেই শান্ত হয়ে গেল অশান্ত-অবাধ্য হৃদয়! তার হৃদয়ের প্রশান্তির মূল উৎস, তার মাইরা যে এগিয়ে আসছে তারই পানে। স্ট্রিট লাইটের কৃত্রিম আলোয় তূর্ণ দেখতে লাগলো তার মাইরা’কে। মেয়েটির পড়নে ডার্ক ব্লু রঙের এমব্রয়ডারেড বর্ডার স্যাটিন জর্জেট শাড়ি। দীঘল কালো কেশগুচ্ছ খুলে রাখা। বেলি ফুলের মালা জড়ানো চুলের পেছনাংশে। মায়াবী আঁখি যুগল রাঙানো কাজল কালো রেখায়। ঠোঁটে লিপস্টিকের মৃদু ছোঁয়া। ডান হাতে শাড়ির কুঁচি আঁকড়ে ধীরপায়ে হেঁটে আসছে মেয়েটি। যার প্রতিটি কদমে মানুষটির হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে। দূর হতেই বেলি ফুলের সুবাস কড়া নাড়ছে নাসারন্ধ্রে। মা’তাল হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে অন্তঃস্থল। নিজেকে সামলানো দুষ্কর হয়ে উঠছে। এ কি মোহনীয় রূপে নিজেকে উপস্থাপন করলো মাইরা! সে যে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ছে! বেসামাল-বেকাবু হচ্ছে পৌরুষ চিত্ত। অর্ধাঙ্গিনীর রূপের বহরে তার মতো নগণ্য প্রেমিক পুরুষ যে অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে! বড় বড় শ্বাস ফেলে নিজেকে ধাতস্থ করার প্রয়াস চলমান রাখলো তূর্ণ।
সম্মুখে এসে দাঁড়ালো দুয়া। অভিমানিনী আড়চোখে তাকালো তার সুদর্শন একান্ত জনের পানে। ডার্ক ব্লু রঙা পাঞ্জাবি জড়িয়ে সুঠামদেহে। পাঞ্জাবীর বুকের বাম পার্শ্ব কারুকার্য খচিত। লালচে চুলগুলো কিঞ্চিৎ এলোমেলো করে রাখা। চশমা বিহীন আঁখি যুগলে অবর্ণনীয় মুগ্ধতা! আস্তে করে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো মেয়েটি। র’ক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়লো দু কপোলে। মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় ডান হাতটি বাড়িয়ে দিলো তূর্ণ। নিজস্ব অভিমান একপাশে রেখে মেয়েটি স্বামীর হাতে হাত রাখলো। পুরুষালি হাতের মাঝে শক্ত রূপে আবদ্ধ হলো কোমল হাতটি। দু’জনে একত্রে পদযুগল ফেলে বেরিয়ে এলো
‘ ছায়াবিথী ‘ হতে।
…
রাতের শহরে এগিয়ে চলেছে রিকশা। পাশাপাশি বসে একজোড়া কপোত-কপোতী। দু’জনের গাত্র প্রায় ছুঁই ছুঁই। চন্দ্রিমার উজ্জ্বলতায় উজ্জ্বল তারা দু’জনে। হিমশীতল পবনে গাঁয়ে কাটা দিচ্ছে বুঝি। অর্ধাঙ্গিনীর অবস্থা অনুধাবন করতে পারলো তূর্ণ। নিভৃতে আরেকটু ঘনিষ্ট হয়ে বসলো। ডান হাতটি শাড়ির ফাঁক গলিয়ে স্পর্শ করলো কটিদেশ। শিউরে উঠলো মেয়েটি। অবাক নেত্রে তাকালো স্বামীর পানে! তূর্ণ পুরুষালি হাতে কটিদেশ আবদ্ধ করে নিজের পানে টেনে নিলো। নিজস্ব উষ্ণতার সান্নিধ্যে মাইরা’য় উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে লাগলো। উষ্ণতা অনুভব করে মেয়েটি আরো গুটিয়ে গেল। মিশে রইলো একান্ত মানুষটির বক্ষপটে। কর্ণযুগল ঠেকে বক্ষে। বক্ষপিঞ্জরের অন্তরালে লুকায়িত হৃদযন্ত্রটির স্পন্দন স্পষ্ট রূপে কর্ণ কুহরে পৌঁছাতে লাগলো। দুয়া আঁখি পল্লব বন্ধ করে বক্ষস্থলে আরো মিশে গেল। ডান হাতে আঁকড়ে ধরলো পাঞ্জাবীর বুকের অংশ। বিমোহিত হয়ে শ্রবণ করতে লাগলো হৃৎস্পন্দনের সুমধুর ধ্বনি। তূর্ণ’র অধর কোণে ফুটে উঠলো মোহনীয় দ্যুতি।
..
নদীর পাড়ে পাশাপাশি বসে দু’জনে। উপভোগ করে চলেছে রাতের অবর্ণনীয় সৌন্দর্য! নিশাকরের দ্যুতি ছড়িয়ে নদীর বুকে। শীতল পবনে জুড়িয়ে যাচ্ছে তনুমন। আশপাশে দন্ডায়মান অগণিত বৃক্ষ বুঝি পাহারাদারের ন্যায় তাদের আগলে রাখছে। পবনের ছোঁয়ায় নৃত্যরত নদীর জল। পাশাপাশি বসে দু কপোত কপোতী। অসীম সুখে আচ্ছাদিত হয়ে চলেছে অন্তঃপুর। অভিমানিনীর অভিমান ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে বহু পূর্বেই। তবুও নীরবতা বিরাজমান। যা আর সহ্য হলো না প্রেমিক পুরুষটির। নিমিষেই বাঁ হাতে মাইরা’কে নিজের পানে টেনে নিলো। চমকিত রমণী কিছু বলতে উদ্যত হতেই তার ওষ্ঠে তর্জনী ছুঁয়ে থামিয়ে দিলো তূর্ণ। নয়নে মিলিত হলো নয়ন। অতিবাহিত হলো কয়েক পল। দুয়া’র কর্ণ কুহরে পৌঁছাতে লাগলো পুরুষালি ভারিক্কি স্বরের অসাধারণ ছন্দ ভাণ্ডার,
” এভাবেই সম্পূর্ণ আড়ষ্ট হয়ে পড়ি ;
তোমাকে ছাড়াতে গেলে আরো ক্রমশ জড়িয়ে যাই আমি,
আমার কিছুই আর করার থাকে না।
তুমি এভাবেই বেঁধে ফেলো যদি দূরে যেতে চাই,
যদি ডুবে যেতে চাই, তুমি দুহাতে জাগাও,,
এমন সাধ্য কি আছে তোমার চোখের সামান্য আড়াল হই, দুই হাত দূরে যাই, যেখানেই যেতে চাই,
সেখানেই বিছিয়ে রেখেছো ডালপালা
তোমাকে কি অতিক্রম করা কখনো সম্ভব!!
– মহাদেব সাহা ”
বিমোহিত রমণী বাকশূন্য হয়ে পড়েছে! অনিমেষ নেত্রে তাকিয়ে অর্ধাঙ্গের পানে। এত সুন্দর-অসাধারণ শব্দমালার বিপরীতে কি বলা যায় বুঝতেই পারছে না। তাই তো তাকিয়ে নিঃশব্দে। তূর্ণ দূরত্ব ঘুচিয়ে আরো নিকটে এলো। দু’জনের মধ্যিখানে ইঞ্চির তফাৎ মাত্র। তূর্ণ’র তপ্ত শ্বাস আছড়ে পড়ছে মেয়েটির মায়াময় মুখশ্রীতে। নিভু নিভু করছে আঁখি পল্লব। ওষ্ঠে তপ্ত শ্বাস ফেলে তূর্ণ বললো,
” তোমার চোখের সামান্য আড়াল হই কিংবা দু হাত দূরে যাই। যেখানেই যেতে চাই, সেখানেই বিছিয়ে রেখেছো মায়াবী ডালপালা। তোমাকে কি অতিক্রম করা কখনো সম্ভব? সম্ভব নয়। তবুও তুমি হীনমন্যতায় ভুগছো? কেন মেয়ে? তুমি কি দেখতে পাচ্ছো না এই আঁখি জোড়ায় তোমার জন্য কতখানি স্নিগ্ধতা বিরাজমান? তুমি কি শুনতে পারছো না এই হৃদয় তোমার নামে দিবা-রাত্রি সুমধুর ধ্বনিতে মুখরিত? সত্যিই কি তুমি এতখানি অবুঝ? তবে কি করে তোমায় বোঝাবো আমার হৃদয়ে লুকানো প্রেমের সীমা-পরিসীমা? ”
অপলক চাহনিতে তাকিয়ে রইলো মেয়েটি। তার পানে জিজ্ঞাসু নয়নে তাকিয়ে তূর্ণ। নিজেকে ধাতস্থ করতে সক্ষম হলো দুয়া। নয়নে নয়ন মিলিয়ে একান্ত মানুষটির কপোলে বাঁ হাতটি রাখলো। মধুর কণ্ঠে বলতে লাগলো,
” এ নয়ন জোড়ায় বিরাজমান স্নিগ্ধতা সত্যিই আমার তরে? তবে এই স্নিগ্ধতা আমি আম”রণ দেখতে চাই। করতে চাই উপলব্ধি। এ হৃদয় যে সুমধুর ধ্বনিতে মুখরিত তা যদি সত্যিই আমার বিহনে হয়ে থাকে তবে..! আমি জীবনের শেষ মুহূর্ত অবধি এই ধ্বনি শুনতে চাই। আজীবন লেপ্টে থাকতে চাই এই মানুষটির বুকে। বলো প্রিয়। আমি জানতে চাই তোমার হৃদয়ে লুকানো প্রেমের সমস্ত সীমা-পরিসীমা। মাপতে চাই তোমার প্রেমক্ষেত্র। ”
দুয়া বাক্যমালা সম্পূর্ণ করতে না করতেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো তূর্ণ। পেশিবহুল দু হাতে মাইরা’কে সন্নিকটে টেনে নিলো। আবদ্ধ করলো বাহুডোরে। বাম হাতটি কটিদেশে স্থাপিত তো ডান হাতটি আঁকড়ে রয়েছে পৃষ্ঠদেশ। বক্ষস্থলে সম্পূর্ণ রূপে মিশিয়ে নেবার প্রয়াস চালিয়ে গেল মানুষটি। লাজে রাঙা মেয়েটিও আজ লাজের গণ্ডি পেরিয়ে এলো। কোমল দু হাতে আঁকড়ে ধরলো অর্ধাঙ্গের পৃষ্ঠদেশ। বদ্ধ হলো আঁখি পল্লব। পৃষ্ঠে নখ বিঁধে যাচ্ছে তবুও টু শব্দটি করলো না তূর্ণ। সে তো মগ্ন তার মাইরা’তে। দু’টো তৃষ্ণার্ত হৃদয় একে অপরের সনে লেপ্টে। মিটিয়ে চলেছে সমস্ত তৃষ্ণা। অগণ্য সময় পেরিয়ে গেল। চোখ মেলে তাকালো তূর্ণ। বাহুডোরে আবদ্ধ মেয়েটির মুখশ্রী মুখোমুখি আনলো। ধীরগতিতে নেত্রপল্লব মেলে তাকালো দুয়া। সিক্ত তার আঁখি যুগল। তূর্ণ দু হাতের আঁজলায় অর্ধাঙ্গিনীর মুখশ্রী আগলে নিলো। অগ্রসর হলো তার মুখখানা। ললাটের মধ্যিখানে ছুঁয়ে দিলো ওষ্ঠ। আবেশে মুদিত হলো মেয়েটির নেত্রজোড়া। দু নেত্রপাতা অনুভব করলো আর্দ্র স্পর্শ। শিহরণে আবিষ্ট মেয়েটি বাঁ হাতে অর্ধাঙ্গের কাঁধ এবং ডান হাতে পাঞ্জাবীর বুকের অংশ আঁকড়ে ধরলো। তূর্ণ ওষ্ঠের গাঢ় ছোঁয়া এঁকে দিলো ফুলো ফুলো দু কপোলে। অতঃপর তার অবাধ্য দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো নে”শালো ওষ্ঠাধরে। শুকনো ঢোক গিললো মানুষটি। আলতো করে বৃদ্ধাঙ্গুল ছুঁয়ে দিতে লাগলো অধরে। অধরে রূক্ষ হাতের স্পর্শ। শিউরে উঠলো মেয়েলী সত্ত্বা। তূর্ণ অধর পানে অগ্রসর হতে উদ্যত হতেই বাঁধা প্রাপ্ত হলো। লাজে রাঙা মেয়েটি তড়িৎ মুখ লুকালো একান্ত জনের বক্ষস্থলে। নিঃশব্দে হেসে উঠলো তূর্ণ। দু হাতের বাঁধনে বন্দিনী করে নিলো তার মাইরা’কে।
•
নিশুতি রাত। পাশাপাশি শুয়ে দু’জনে। নয়নে মিলিত নয়ন। চোখেমুখে তৃপ্তির আভা। তূর্ণ নীরবে এগিয়ে এলো। অধর ছুঁয়ে দিলো ললাটে। দুষ্টু হেসে বললো,
” পরীক্ষা দেখে বেঁচে গেলেন বিবিজান। নাহলে আজ আমি ফুল ফর্মে ছিলাম। এক দমে সেঞ্চুরি করে তবেই ক্ষ্যা’ন্ত হতাম। ”
লাজে রাঙা মেয়েটি অর্ধাঙ্গের বক্ষপটে মুখ লুকিয়ে নিলো। বিড়বিড় করে আওড়ালো,
” বেলাজ পুরুষ। ইশ্! ”
সশব্দে হাসলো তূর্ণ। মাইরা’কে বুকে আগলে নিয়ে আঁখি পল্লব বন্ধ করলো। আজ তার সবচেয়ে তৃপ্তিকর নিদ্রা হতে চলেছে। তার হৃদয়ে লুকানো প্রেম যে সফলতার পানে কয়েক ধাপ ধাবিত হয়েছে! দু’জনের চোখেমুখেই তৃপ্তির ছাপ। আঁখি পল্লব বন্ধ করে একে অপরকে আঁকড়ে দু’জনে পাড়ি জমালো ঘুমের রাজ্যে।
চলবে.
[ আসসালামু আলাইকুম পাঠক বন্ধুরা। সম্পূর্ণ পর্বটি ছিল প্রেমময়। তূর্ণ এবং দুয়া’কে ঘিরে। কেমন লাগলো তূর্ণয়া স্পেশাল পর্বটি? কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না যেন। ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থাকার জন্য। ]