#ডুবেছি_আমি_তোমাতে
#Aiza_islam_Hayati
#পর্ব_১৮
লায়ানা ফোন কেটে দিতেই কান থেকে ফোন সরিয়ে আনে আহনাভ।ফোনের দিকে তাকিয়ে থেকে অসহায় কণ্ঠে শুধায়,”আমার এই শত শত প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর তো তুমি ছাড়া কেউ বলতে পারবে না হায়া।গত কাল কী তোমায় এতই কষ্ট দিয়ে দিলাম যে তুমি আমায় এড়িয়ে যাচ্ছ?”
.
দরজার নব ঘুড়িয়ে আহনাভের ঘরে আহির প্রবেশ করে।আহনাভ আহিরের দিকে তাকিয়ে ফোন বিছানার এক পাশে রেখে দিয়ে বলে উঠে,” সরি রে আমার জন্য মুগ্ধ আপ্পি বিয়েটা ভাঙ্গার কথা বলেছে।”
আহির এগিয়ে আসে,আহনাভের পাশে বসে আহনাভের কাঁধে হাত রেখে বলে,”ওরে বাবা আহনাভ নাকি আমাকে সরি বলছে?শুন ভাই তুই আমার থেকে দের মাসের ছোট তাও সবসময় তোর কথা বার্তায় মনে হয় তুই আমার থেকে বেশি বড় ,একেবারে বুইড়া বেডা।”
আহনাভ আড় চোখে তাকায়।আহির হেসে বলে,” তোর আমার ভাই ভাই সম্পর্কে এই ছোট থেকে এই অব্দি তুই কখনো মারপিট করেও আমাকে সরি বলতি না।আজ কেনো বলছিস বল তো?বড় বাবার কাছে মার খেয়েও বলেছিস কখনো যে, আহির আই এম সরি?আরো বড় বাবাকে বলতি তুমি এমন করো যেনো ও তোমার আপন ছেলে আমি না।” বলেই হো হো করে হেসে ফেলে আহির।
আহনাভ বিছানার হেড বোর্ডে ঠেস দিয়ে বলে,” তুই উগণ্ডাদের মত না হেসে আসল কথা বল তো ভাই। কেন এই রাতের বেলা আমার ঘরে আসলি?”
আহির ঠিক হয়ে বসে বলে,”শুন আহনাভ হায়াতি মেয়েটা তোকে সত্যি পাগলের মত ভালবাসে তুই শুধু শুধু মেয়েটাকে কষ্ট দিসনা।”
আহনাভ চোখ বন্ধ করে ফেলল বলা শুরু করলো,” আহির আমরা যেইদিন আশ্রমে গিয়েছিলাম সেইদিন আমিও গিয়েছিলাম হায়ার কাছে,ওকে সুযোগ দেয়ার জন্য।ভেবেছিলাম ঐদিন ওর সব পাগলামো নিজের করে নিবো।কিন্তু আমি দেখলাম আহান এসে হায়ার পাশে বসলো আমিও এগিয়ে গেলাম দেখলাম হায়া আহান কে বলা শুরু করলো।” আহনাভ থেমে যায়।আহনাভকে থামতে দেখে আহির ভ্রু কুঁচকে বলে,” থেমে গেলি কেনো?”
আহনাভ দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলে,” অনেক কিছুই বলেছিল আহানকে তার মধ্যে একটি কথা বলেছিল আহান কে যে ‘ আমি তোমাকে উন্মাদের মত ভালোবাসি। ‘ তারপর মনে হলো হায়া মেয়েটা ভালো না।কেমন মেয়ে ও আমাকে একবার ওর ভালোবাসার কথা বলছে আবার ওই আহান কে।তারপর থেকে এক রাগ চেপে বসলো।কাল ওকে কিছু কথা বলে ফেলেছি রাগের বসে, সত্যি আহির আমার ওই আহানের সাথে ওকে ভালো লাগছিলো না একদম না।”
“শুন ভাই তুই এইসব নিয়ে হায়াতির সাথে কথা বলে দেখতে পারিস শান্ত হয়ে।দেখবি তুই ভুল প্রমাণিত হবি কারণ হায়া তো নিজের মুখে বলেছে আহান ওর ভাই তাহলে এইসব কিভাবে সম্ভব হয়।”
“আরেহ ওর সাথে আজ কত বার কথা বলার চেষ্টা করলাম ও তো আমাকে এড়িয়ে চলেছে বারবার।”
“ওহ।আমাদের কাল নেক্সট ইন কোম্পানিতে যাওয়ার কথা তোর মনে আছে?কাল তো আমাদের হায়াতির সাথে ফাইনাল মিটিং তুই বরং কাল ওর সাথে সামনা সামনি কথা বলে নিস আর যদি তাতে না হয় আহানের সাথে কথা বলে নিস।”
“ঠিক আছে।”
আহির বিছানা থেকে উঠে দাড়িয়ে বলে,” তাহলে ব্রো ঘুমাও আমি যাই শান্তির এক ঘুম দেই বরং,আজ আমার হবু বউ বিয়ে ভাঙ্গার কথা বলে তো আমাকে পাগল বানিয়ে ফেলেছিল পুরো।”
…..
লায়ানা ঘুম থেকে উঠেই ঘরে পায়চারি করছে।একা একাই বিড়বিড় করে বলছে,”ইশ লায়ানা আজ তো আহনাভদের সাথে ফাইনাল মিটিং কীভাবে ওর সামনে যাবি?আমি ওকে গত কাল পুরোটা দিন এড়িয়ে গেলাম।আর আজ ওর সামনে যেতে চাই না ওকে দেখলেই আমি গোলে মিউনিজ হয়ে যাবো ।আহা লায়ানা তোর তো মন চাইছে এখন ভে ভে করে কাঁদতে। ”
আহান পিছন থেকে এসে লায়ানার পিঠে থাপ্পড় দিয়ে বলে,”কীরে পেত্নী এইভাবে ঘরে পায়চারি করছিস কেনো?”
লায়ানা এক লাফ দিয়ে সরে যায়,বুকে থুথু দিয়ে বলে ,”শয়তান উগান্ডার তিন নাম্বার বাচ্চা তোরে এমন লাত্থি মারবো উগান্ডায় গিয়ে পড়বি।”
আহান বুকে দুই হাত গুঁজে বলে,”আজব আমি কী করলাম।”
লায়ানা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে,”কী করলাম মানে?এইভাবে এসে পিছন থেকে থাবড়া দেস কেন?”
” বাদ দে , আজ তুই কী অফিস যাবি?”
“হ্যা যেতে তো হবেই আজ একটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে তাও আবার আমার হবু জিজুর সাথে।”
“মিটিং ছাড়া আর কোনো কাজ আছে?”
“নাহ নেই।ওই দুই ঘণ্টা লাগবে মিটিং শেষ করতে তারপর বাড়ি চলে আসবো।”
“আরেহ মাই সিস্টার বাড়ি কেন আসবি।সামনে আপুর আকদ,শুন ওদের দুজনের জন্য আমি আর তুই একটা গিফট কিনতে যাবো আজ।তুই রেডি হয়ে নে আমিও তোর অফিস যাবো আজ,তোর মিটিং শেষ অব্দি বসে থাকলাম।”
লায়ানা মিষ্টি হেসে বলে,” এত সুন্দর আইডিয়া তোর গোবর মাথায় কইথেকা আসে রে?”
আহান আড় চোখে তাকিয়ে বলে,”আমি নিচে অপেক্ষা করছি তুই রেডি হয়ে চলে আয়।”
.
আহান ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে,লায়ানা দরজা আটকে রেডি হয়ে নেয়।আয়নার সামনে দাড়িয়ে লায়ানা ভাবনায় পড়ে গেলো, চুল কী ছেড়ে দেয়া যায় নাকি বেঁধে নেয়া যায়।আজ লায়ানা ফরমাল ড্রেস আপ করলো না,(পরনে মিষ্টি রঙের সাধারণ একটি থ্রি পিস)।আর ভাবলো না একটা হাত খোঁপা করে নিল লায়ানা।বিছানার উপর থেকে ফোন টা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
আধ ঘণ্টায় আহান,লায়ানা পৌঁছে যায় নেক্সট ইন এর সামনে।লায়ানা গাড়ি থেকে বেরিয়ে ভিতরে চলে যায়,আহান চলে যায় পার্কিং লটে গাড়ি রাখতে।
.
লায়ানা ভিতরে ঢুকেই নিজের কেবিনে চলে যায়। পরে রাফি সহ আহান কেবিনে প্রবেশ করে।রাফি লায়ানার সামনে এসে বলে,” ম্যাম মিটিং রুমে সব কিছু তৈরি।”
লায়ানা টেবিল থেকে ট্যাব টা নিয়ে বলে,” তো ওনারা কী এসেছে?”
” জি ম্যাম পাঁচ মিনিটের মধ্যেই চলে আসবে,ওনারা এখন অন দা ওয়ে।আপনি যদি মিটিং রুমে চলে যেতেন।সব একবার দেখে নিতেন ঠিক আছে কিনা।”
“ঠিক আছে চলো রাফি আর আহান তুই এইখানেই থাক।”
“ঠিক আছে যা তুই।”
.
লায়ানা ডিজাইন প্রেজেন্টেশন এর সব কিছু চেক করে নিজের চেয়ারে বসে আছে।লায়ানা ফোন স্ক্রল করছিল তখনই দরজা ঠেলে রাফি প্রবেশ করতে করতে বলে,”স্যার আসুন আপনারা।”
লায়ানা হাতের ফোন রেখে দিয়েছে কিন্তু দরজার দিকে একবারও তাকিয়ে দেখে নি।আজকে তো লায়ানা পণ করে নিয়েছে এই আহনাভের দিকে তাকিয়েও দেখবে না।
আহনাভ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে লায়ানার দিকে ,মনে মনে আওড়ালো,” এমন করে বসে আছে কেনো?মনে হচ্ছে এই মিটিং রুমে ও ছাড়া কেউই নেই।”
.
আহির,আহনাভ ডান দিকের সাজানো চেয়ার গুলোর মধ্যে দুইটা চেয়ার টেনে দুইজন বসে পড়লো।
.
লায়ানা আহিরের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে হাঁসি ফুটিয়ে বলে,”তো মাই হবু জিজু মিটিং শুরু করি তাহলে?”
আহির মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।লায়ানা মিটিং শুরু করে,আহনাভের দিকে একবারও তাকিয়ে দেখে না।আর এই আহনাভ সেই লায়ানার দিকেই তাকিয়ে আছে।
.
দুই ঘণ্টায় মিটিং শেষ করে লায়ানা।আহনাভ দুই হাত বুকে গুঁজে এখনও লায়ানার দিকে তাকিয়ে আছে।লায়ানা আহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,” তো ডিজাইন এর ফাইনাল প্রেজেন্টেশন কেমন লাগলো জিজু?”
আহনাভ ও আহির দাড়িয়ে যায়।আহনাভ বলে,” তোমার জিজু পড়ে বলুক,আমি বলছি।তোমার সাথে আমাদের ডিল পাক্কা।আমার পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট তমালকে পরশু কানাডা পাঠানোর ব্যাবস্থা করবো ও গিয়ে ঐখানের জায়গা রেডি করবে।তারপর আমরা গিয়ে কাজ স্টার্ট করতে পারি।”
লায়ানা আহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,” ডান।”
আহির বোকা বোকা চাহনিতে একবার লায়ানা আর আহনাভের দিকে তাকায়।আহির মনে মনে বলে,” খাইসে ভালো করেই রেগে আছে হায়াতি।এ তো আহনাভের দিকে তাকাচ্ছেও না।”
আহনাভ বলে উঠে,” এই আমার দিকে তাকাচ্ছো না কেনো?”
লায়ানা কিছু বলে না অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে।রাফি মিটিং রুমে ঢুকে লায়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,”ম্যাম আহান বসে আছে।আপনার তো মিটিং শেষ আপনি কী এখন যাবেন?”
লায়ানা কিছু বলবে তার আগেই আহনাভ বলে উঠে,” এক মিনিট এক মিনিট।রাফি আহান কোথায়?”
” স্যার, আহান ম্যাম এর কেবিনে।”
“আমাকে হায়ার কেবিনে নিয়ে চলো আমার আহানের সাথে কিছু পার্সোনাল কথা আছে।”
লায়ানা ভাবনায় পড়ে গেলো,”এই আহনাভ কী আহান কে উল্টো পাল্টা কিছু বলবে নাকি?” লায়ানা ভাবনা থেকে বেড়িয়ে মুখ খুলে কিছু বলার আগেই আহনাভ রাফিকে নিয়ে চলে যায়।
.
লায়ানা পনেরো মিনিট ধরে নিজের কেবিনের বাইরে দাড়িয়ে আছে।একবার এইদিকে যাচ্ছে তো আরেকবার ওইদিক যাচ্ছে।এখন তো দাড়িয়ে দাড়িয়ে নখ কামড়াচ্ছে।লায়ানা বিড়বিড় করে বলে উঠলো,” এই আহনাভ আমার ভাইয়ের সাথে কী করছে?আমার ভাইকে কিছু করলে না ওকে আমি পানিতে চুবিয়ে ধরে রাখবো।”
আহনাভ কেবিনের দরজা ঠেলে বেরিয়ে আসলো।লায়ানাকে দেখে আহনাভ ঠোঁট টিপে হেসে লায়ানার দিকে এগিয়ে আসলো।লায়ানার খোঁপায় হাত দিয়ে চুল খুলে দিল আহনাভ।লায়ানার মুখ হা হয়ে গিয়েছে,লায়ানা ধমকে বলে উঠে,” অসভ্য লোক আমার চুল কেনো খুলে দিলে?একটা মেয়ের চুলে হাত দাও শরম করে না?”
আহনাভ আরো এগিয়ে গিয়ে ঝুঁকে লায়ানার কানে ফিসফিস করে বলে,”তুমি তো বারংবার আমার কাছে চলে আসো তখন তোমার শরম কোথায় থাকে হায়া?তোমাকে খোলা চুলে খুব মানায় বুঝলে।এইভাবে চুল একদম বেঁধে রাখবে না।নাহলে আমার চোখে যত বার পড়বে তত বার চুল ছুঁয়ে দেবো,তোমার ঐ বেঁধে রাখা চুল উন্মুক্ত করে দেবো।”
লায়ানার সর্বাঙ্গে এক শিহরণ বয়ে গেলো,লায়ানা শুকনো ঢোক গিলে ছিটকে সরে আসলো।চেঁচিয়ে বলে উঠলো,” আহান তুই কই ,আমি নিচে গাড়িতে গিয়ে বসছি তুই আয় তাড়াতাড়ি।
লায়ানা এক দৌড়।আহনাভ ঐখানেই দাড়িয়ে বলে উঠে,” হায়া দাড়াও।আমার তোমার সাথে কথা আছে।”
লায়ানা করিডোর পেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে চেঁচিয়ে বলে উঠে,” আমার তোমার সাথে কোনো কথা নেই মিস্টার আহনাভ।”
.
আহনাভ লায়ানার যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে,বিড়বিড় করে বলে,”আমার দিকে তাকাতে এত্ত ভয় পাও তুমি হায়া।আমিতো পেয়ে গিয়েছি আমার সকল উত্তর।তুমি আমাকেই ভালোবাসো।তুমি শুধু আমার।ভালোই হলো তুমি আমার এই ধীরে ধীরে তৈরি করা গোছানো জীবনে এসে আবারও জীবন টাকে তোমার পাগলামিতে অগোছালো করে দিলে,নাহয় এই আহনাভ তো ভালোবাসায় বিশ্বাস করতেই ভুলে গিয়েছিল।”
আহনাভ হেঁসে ফেলে আবার বলে,” আজ পালিয়ে গেলে কাল কিভাবে পালাবে হায়া পাখি?কাল তো তোমাদের ফ্যামিলির সাথে আমাদের শপিং এ যাওয়ার কথা আছে তখন কোথায় পালাবে এই আহনাভ থেকে।কাল তো ঠিক এই হায়া পাখিকে ধরে ফেলবো।”
আহান কেবিন থেকে বেরিয়ে আহনাভ এর সামনে এসে দাড়িয়ে বলে,” আমার বোন তোমাকে অনেক ভালোবাসে ওকে কখনো কষ্ট দিও না নাহলে এই ভাই সহ্য করবে না কিছু।”
আহনাভ আশ্বাসের স্বরে বলল,”তুমি চিন্তা করো না আহান।তোমার এই বোন কে কখনো কষ্ট দিবো না।আর না কখনো কষ্ট পেতে দিবো।”
আহান সৌজন্যমূলক হেসে চলে যায়। আহির পিছন থেকে আহনাভের পিঠে থাপ্পড় দিয়ে বলে,” কী ব্রাদার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে নাকি।”
আহনাভ আহিরকে ধরে আহিরের পিঠে কিল বসিয়ে দিয়ে বলে,”আমাকে থাপ্পড় মারিস!”
আহির পিঠে হাত দিয়ে বলে,”বাড়ি গিয়ে বাকি মারামারি করবো চল এইখানে দাড়িয়ে মান সম্মান খোয়াতে চাই না।”
.
আহান, লায়ানা মিলে আহির আর মুগ্ধতার জন্য গিফট কিনে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়।দুজন সদর দরজা দিয়ে কথা বলতে বলতে ঢুকছিল।হঠাৎ দুজন কথা থামিয়ে হাতের ব্যাগ গুলো পিছনে লুকিয়ে ফেলে।আহান বিড়বিড় করে বলে উঠে,” বইন আমি ব্যাগ নিয়ে ভাগি তুই আপু কে সামলা।”
আহান দৌড় দিতেই মুগ্ধতা বলে উঠে,” এই ব’জ্জা’ত কোথায় দৌড়াচ্ছিস?আর তোর হাতে ঐটা কী?”
লায়ানা দাঁত কেলিয়ে মুগ্ধতার দিকে এগিয়ে যায়। মুগ্ধতাকে জড়িয়ে ধরে একেবারে মুগ্ধতার মুখ নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে,” আরেহ দেখ না আমাকে কী সুন্দর লাগছে।”
“আরেহ তুই ঐটা ছাড়।আমি ওর পিছনে যাই ”
মুগ্ধতা দৌড় লাগায় উপরের তলায় যাওয়ার জন্য।দৌড়াতে দৌড়াতে বলে উঠে,”কী এমন যে এইভাবে পালাইলি রে আহাইন্না।”
আহান এতক্ষনে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিয়েছে।শপিং ব্যাগ গুলো আলমারিতে লুকিয়েও ফেলেছে।
মুগ্ধতা আহান এর ঘরের সামনে এসে দরজায় বাড়ি দিয়ে বলে,” দরজা খোল আহান নাহলে দরজা ভেংগে ফেলবো।”
ভিতর থেকে আহান বলে উঠে,”বইন মাফ করো আজকের জন্য।এই দরজা ম’রে গেলেও আহান খুলতে পারবে না ছেড়ে দাও~~”
“তাহলে তুই ভিতরেই থাক।আমি আসছি।”বলেই মুগ্ধতা গিয়ে একটা তালা নিয়ে চলে আসলো।আহানের ঘরের বাইরের দিক থেকে তালা দিয়ে মুগ্ধতা বলে,”থাক ভাই তুই ভিতরেই থাক।ম’র, তোর ম’রা’র আগে এই দরজা কেউ খুলবে না কারণ তুই বলসোস তুই ম’র লে ও দরজা খুলবি না।”
লায়ানা নিচ থেকে দাড়িয়ে বলে,” আরেহ খুলে দে দরজাটা এমন করিস না আমার একটা মাত্র ভাই তার বিয়ে খাওয়ার আগে চল্লিশা খাওয়ার ব্যবস্থা করিস না।”
মুগ্ধতার মা ইয়াশা এই চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলে,”কী হয়েছে এত চেঁচামেচি কীসের?”
লায়ানা ইয়াশাকে সব বললে ইয়াশা বলে উঠে,” মুগ্ধতা ওর ঘরের দরজা খোল বলছি।ছেলে টা কী এমন করেছে যে এরকম করছিস দরজা টা খুলে দেহ এখনি।”
মুগ্ধতা বলে,” খুলবো না আমি ওর ঘরের দরজা।ও বলেছে ও না ম’র’লে কেও দরজা খুলতে পারবে না তাই আমিও খুলবো না।”
“তোর এই ছোট বেলার অভ্যাস এখনও গেলো না।খোল দরজা এরকম হার্টলেশ কেনো মেয়েটা বুঝি না।” ইয়াশা থামতেই মুগ্ধতা বলে উঠে,” তোমারই মেয়ে ভুইলো না হে।”
“তুই খোল নাহলে আমি ওপরে আসছি।”
” আসো আসো আমি তাও খুলবো না।”
“এই মেয়েটা কিছু দিন পর বিয়ে হয়ে যাবে তখন কি জামাই এরকম কিছু বললে এইভাবে দরজা বন্ধ করে রাখবি তালা দিয়ে?”
মুগ্ধতা খুশিতে এক লাফ দিয়ে বলে,” ওয়াহ মাম্মি কেয়া আইডিয়া দিয়া হেইন উম্মাহ।”
“ফা’জি’ল মেয়ে গেট খোল ওর রুমের।”
ভিতর থেকে আহান করুন স্বরে বলে,” বইন প্লিজ দরজা খুলে দাও।আমার এখনও বিয়ে করা বাকি বউ নিয়ে ঘুরতে যাওয়া বাকি।পোলাপাইন দের ডাইপার চেঞ্জ করার মুহুর্ত বাকি আহ আমার নাতি পুতি দেখা বাকি সর্ব পরি আমার পেত্নী বোনদের বিয়ে দেখা বাকি এত্ত তারাতারি উপরে যাওয়ার টিকেট এর ব্যাবস্থা কইরো না।”
“আচ্ছা খুলে দিবো এক শর্তে।”
আহান চট করে বলে ফেলে,” কী শর্ত?”
“তুই যে বললি বিয়ের পর ডাইপার চেঞ্জ করবি নিজের বেবিদের।তখন তোর বেবি যত বছর ডাইপার পড়বে তত্ব বছর তোর ডাইপার চেঞ্জ করতে হবে প্লাস পরাতেও হবে।আর ভাইয়ের বউকে দিয়ে করালে তোকে এইভাবে বন্দী কী তোকে একটা দ্বীপে ছেড়ে দিয়ে আসবো।যেইখান থেকে আসাও পসিবল না।”
“প্রমিজ আমি করবো ওইসব।আমি থাকতে আমার আদরের বউকে কখনো করতে দিবো না এমন কাজ।”
“তাও খুলবো না।” বলেই চলে যেতে নিলে নিচে থেকে লায়ানা বলে উঠে,” প্লিজ খুলে দে দরজা টা।”
মুগ্ধতা ফিরে আসলো দরজার তালা খুলে দিয়েই আবার চলে গেলো।লায়ানা টেবিলে বসে এক গ্লাস পানি খেয়ে বিড়বিড় করে বলে,”বেচারা আহাইন্না।”
#copyrightalert
#চলবে।