বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প #পর্ব-৩২ #লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

0
877

#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব-৩২
#লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )

সময়টা এখন মধ্যরাতটি বলা চলে। অনেকক্ষণ যাবত বিছানায় ঘাপটি মেরে বসে আছে হুর। ডান হাতের তর্জনী আংগুল দাঁতের মাঝে নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছে।চোখের দৃষ্টি রয়েছে ব্যালকনির দরজার দিকে। দৃষ্টিগোচরে ব্যালকনির দরজা ব্যতীত কোন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তবুও সে দিক থেকে চোখ সরাচ্ছে না। রাতের খাবার টেবিলের ওপর রাখা। রুদ্ধ রাগে ক্ষোভে জানিয়ে দিয়েছে সে আজ রাতের খাবার খাবে না।হুর কয়েকবার তাকে বললে ও কোন কাজ হয়নি। তাই নিরত্তর হয়ে বিছানায় বসে আছে। আর ভাবছে রুদ্ধকে কিভাবে খাবার খাওয়াবে। দুপুরের খাবারও গোল্লায় গেছে। এখন স্ত্রী হয়ে সে যদি রাতের খাবার তাকে না খাওয়াতে পারে তাহলে সে কেমন স্ত্রী?এত কিছু চিন্তা ভাবনা করে সে উদ্যোগে নেমেছে,যে করেই হোক রুদ্ধকে রাতের খাবার খাওয়াবেই।

ফট করে মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। বিছানা থেকে উঠে ব্যালকনির দিকে এগিয়ে গেল।কাঁচের দরজা ছেলে ব্যালকনিতে প্রবেশ করতেই নাকে বিশ্রী এক গন্ধ আসলো।নাক খাড়া করে ভালোভাবে শুকে বুঝলো এটা সি/গা/রে/টের গন্ধ।আপনা আপনি ভ্রু কুঁচকে এলো।সি/গা/রে/টের গন্ধ কোথা থেকে আসলো তা পরখ করতে লাগলো। চোখ আটকে গেল কিনারায় থাকার রুদ্ধের দিকে।এক পা সোজা আর এক পা বাঁকা করে ব্যালকনির গ্রিলে এক হাত ঠেকিয়ে আরেক হাতের তর্জনী ও মধ্য আঙ্গুলের মাঝে সিগারেট নিয়ে ফুকছে।সেকেন্ডের জন্য হুরের হৃদয় থমকে গেল।আজকে বিস্ময়ের উপর বিস্ময় হচ্ছে সে। আজ রুদ্ধের নতুন কয়েকটা রূপ প্রদর্শন হচ্ছে।হতবাক হয়ে কয়েক পলক রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে বড় বড় পা ফেলে তার কাছে গেল।অবাকতার স্বরে বললো,

“আপনি সি/গা/রে/ট খান?

ধ্যান ভেঙ্গে গেল রুদ্ধের। গভীর মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা ভাবছিল সে। তবে তার ভাবনার মাঝে হুর ব্যাঘাত ঘটিয়ে দিল। হুরের দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার আকাশের মুখ পানে চাইল। দুই ঠোঁট চোকা করে মুখের ভেতর জমিয়ে রাখা ধোয়া বের করল।মুখভঙ্গি কঠিন তবে কন্ঠ শীতল।

“শুধু সিগারেট না সি/গা/রে/ট এর বাবাকেও খাই।

বিমূঢ় হয়ে গেল হুর। কথা বলার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলল।টুকুর টুকুর নয়নে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইল।আহাম্মকের মতো জিজ্ঞেস করল।

“সি/গা/রে/টের বাবাকেও খান মানে?

কাশির মাত্রা কমছে বয় বাড়ছে।তা দেখে রুদ্ধ হাতে থাকা সি/গা/রেট ফেলে দিল।ট্রাউজারের পকেটে দুই হাত গুঁজে নিল।স্ট্রং হয়ে দাঁড়িয়ে নির্দ্বিধায় বলতে লাগলো।

” ম/দ, গা/জা সবই আমি খাই।

চোখ গোলগাল করে তাকাল হুর।মাথা ঘুরতে লাগলো। বলে কি এই ছেলে!ম/দ গা/জা সব খায়?মাথায় হাত দিয়ে বিড়বিড়িয়ে হুর বলে,

“হে খোদা, আমি তাহলে এক গা/জা/খোর কে করে করলাম?এক নেশাখোর আমার জামাই?হে বিধাতা!এটাই কি আমার ভাগ্যের লিখন ছিল?

পুরো কথা না শুনলেও কিছুটা শুনেছে রুদ্ধ।ত্যাড়ামো ভাবে উত্তর দেয় রুদ্ধ,

” এই গা/জা/খোর এর সাথেই তোমার সংসার করতে হবে।

হুর চমকিত হয়ে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে তড়িঘড়ি করে বলে,

“এমদমই না!আমি কোনো গা/জা/খোর এর সাথে সংসার করতে পারবো না।

রাগী মুখভঙ্গি তীক্ষ্ণ চোখ।তবে কণ্ঠশীতল,
“সংসার করবে না, তাহলে কি করবে?ছেড়ে দিবে আমায়?

দ্রুত উত্তর দেয় হুর,
” অবশ্যই!আপনায়..

সাথে সাথে দু হাত দিয়ে হুরের গলা চে/পে ধরল রুদ্ধ।নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে হুরের। রুদ্ধর হাত ছাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।ব্যর্থ হচ্ছে।যখন নিশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে যাবে অবস্থা। তখনই রুদ্ধ হুরের গলা ছেড়ে সেকেন্ড খানিক সময় অপচয় না করে হুরের ঠোঁট আঁকড়ে ধরে।শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে বেচে যেই না শ্বাস নিতে যাবে সেই মুহূর্তে আবার দম বন্ধ হয়ে গেল তার।শ্বাস নেয়ার জন্য গলা কা/টা মুরগীর ন্যায় ছটফট করছে।রুদ্ধের বু/কে পিঠে কিল ঘুষি মারছে।তাও লাভ হচ্ছে না।রুদ্ধের শক্তির কাছে তার শক্তি একেবারেই তুচ্ছ।খামচি দেয়াই কমতি ছিল। তাও দিয়ে দিল হাতে। তবুও রুদ্ধ তাকে ছাড়ছে না।চোখের কোণ বেয়ে অশ্রু গরিয়ে পড়ছে।তাও রুদ্ধর ছাড়ছে না।শরীর নেতিয়ে পড়লো। রুদ্ধর শরীরে নিজের সবটা ভার ছেড়ে দিল হুর। এবার হুরকে ছেড়ে দেয় রুদ্ধ। হুরকে দু হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।হুর রুদ্ধের বু/কে মাথার এক সাইড ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগল।ঠোঁট কাপছে।রুদ্ধ হুরকে কোলে তুলে নিল।কোলে নিয়েই বিছানায় বসলো।ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি শিথিল হলো।বুক থেকে মাথা উঁচু করে চোখের পানি মুছল।আলতো হাতে হুরের গাল চেপে ধরলো।হুরের গালে নাক ডুবিয়ে রুক্ষ কন্ঠে বলে,

“ঠিক এই ভাবে দমবন্ধ করে দিব,ছেড়ে যাওয়ার নাম বললে।এবার মায়ায় পড়ে ছেড়েছি,পরের বার ছাড়ব না।

গালে হালকা ভাবে কামড় দিল।নিষ্প্রাণ হয়ে রুদ্ধের অত্যাচার সহ্য করছে হুর।তবে এতসবের মাঝে একটা বিষয় মাথায় ভালো ভাবে ঢুকিয়ে নিল,রুদ্ধকে ছাড়ার নাম নিলে বা তাকে ক্ষ্যাপালে দুনিয়া থেকে অন্তর্হিত হয়ে যাবে।রুদ্ধ হুরকে কোল থেকে নামাতে চায়।হুর আঁকড়ে ধরে তার পাতলা টি-শার্ট।ডুকরে কেঁদে উঠে।রুদ্ধ নিরুত্তর হয়ে হুরের কান্না দেখছে।চোখের পানি মুছেও দিচ্ছে না,আর না কান্না করতে বারণ করছে।চোখের পানির সাথে নাকেও পানি জড়ো হল।মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে নাকের পানি পরিষ্কার করতে হবে।নাহলে নাক বেয়ে মুখের ভেতর ঢুকে যাবে।হুর রুদ্ধের পাতলা টি-শার্টেই নিজের নাকের পানি মুছে নেয়।আড়চোখে একবার দেখে। তার মুখশ্রী স্বাভাবিক।আশকারা পেল হুর।আরো কান্না করতে লাগল।আরো একবার নাকের পানি মুছল।হুরের এমন ঢং দেখে রুদ্ধ বলে উঠে,

” আর কতক্ষন লাগবে?

রুদ্ধ কিসের “কতক্ষনের” কথা বলল বুঝল না হুর।তাই প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইলো। তা দেখে রুদ্ধ বলে,

“তোমার কান্না শেষ হতে কত সময় লাগবে?

কান্না বন্ধ করে ফ্যালফ্যাল করে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে আছে হুর। লোকটা কি তাকে অপমান করল?হ্যাঁ, করল তো!এই লোক কতটা ইতর হলে এভাবে বউয়ের কান্না দেখে এমনটা বলতে পারে!বউ কান্না করলে স্বামী দরদ দেখাবে,আদর করে তার কান্না থামাবে।তা না করে উল্টো তাকেই উপহাস করে কথা বলছে। অভিমান হলো প্রচুর।অভিমানে আবার কান্না চলে আসলো।হিচকি তুলে কান্না করতে লাগল।শান্ত স্বরের রুদ্ধর ধমকি কানে আসল,

“আর একবার যদি বলতে হয় কোল থেকে সরতে,তাহলে তুলে এক আছাড় মারব।

হাতের তালু দিয়ে চোখের পানি মুছে রুদ্ধের কোল থেকে নেমে পড়ল।রুদ্ধের দিকে একবারও তাকাল না। তাকাবে না। আর তাকাবে না। এমন স্বামী সে একদমই চায়নি। সে তো চেয়েছিল,তার স্বামী তাকে আদর করবে,ভালোবাসবে,কেয়ার করবে৷তা না করে কথায় কথায় ধমকি দেয়।মেরে ফেলতে চায়।এমন স্বামীর কাছে ভিড়েও দেখবে না সে। পণ করলো যতক্ষন না পর্যন্ত রুদ্ধ তাকে তার সাথে যেচে কথা বলবে,ততক্ষন অব্দি সে কথা বলবে না।মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে ফিরে থম মেরে বসে রইলো।কিছুক্ষন পর অনুভব হল তার বাহু ধরে কেউ টানছে।পাশ ফিরে তাকাতেই দেখল রুদ্ধ তাকে টানছে।ক্ষিপ্ত হল হুর। হাত ঝাড়া মেরে বললো,

” কি হয়েছে টানাটানি করছেন কেন?

“এসো খাবার খাবে!

” আমি খাব না, আপনার ইচ্ছে হলে খান।আর একদম বিরক্ত করবেন না আমায়!

রুদ্ধ হুরের কোমড় চেপে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।ভাতে তরকারি মাখিয়ে হুরের মুখের সামনে ধরল।মুখ ফিরিয়ে নেয় হুর। তা দেখে রুদ্ধ গম্ভীর কন্ঠে বলে,

“জলদি খাও!ক্ষুধা লেগেছে আমার।

রুদ্ধের দিকে ঘুরে ফিরে তার দিকে তাকাল হুর।রুদ্ধের কথা দ্বারা বুঝল হুর খাবার খেলে সেও খাবে।আচানক প্রফুল্ল হয়ে উঠল তার মন। দ্রুত গতিতে শরীর এবং মাথা দুলিয়ে রুদ্ধের দিকে তাকালো। বড় করে হা করল। হাঁ করে রাখা মুখের ভেতর খাবার চালান করল রুদ্ধ।গুটিসুটি মেরে বাচ্চাদের মত বসে খাবার খাচ্ছে হুর। আর রুদ্ধ একটু একটু করে মুখের ভেতর খাবার তুলে দিচ্ছে তাকে। কয়েক লোকমা খাবার খাওয়ার পর হুর আর খেতে চায় না। না, খাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে হুর রুদ্ধকে বলে তাকেও খেতে। তবে রুদ্ধ ঝোল জাতীয় তরকারি তেমন খায় না। তাই হবে মানা করে দেয়। নাছোড়বান্দা হুর তা মানে না। হুর মনে পড়েছে রুদ্ধ তাকে খাবার খাইয়ে দিয়ে সে খাবার খাবে না। তাই তার সাথে খেতে বলছে। হুরের জিদের কাছে হার মানে রুদ্ধ।বাধ্য হয়ে হুরের খাবার খেতে লাগলো।রুদ্ধের অগোচরে বিশ্বজয়ের হাসি হাসলো হুর।

খাবার শেষে হুর ফ্রেস হয়ে কম্বলের ভেতর ঢুকে যায়। কাত হয়ে ফোন স্কর করতে থাকে। রুদ্ধ গেছে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে। বেশ সময় নিয়ে ওয়াশরুমের সময় কাটিয়ে বের হয়ে আসে। রুমের বাতি বন্ধ করে ফেইরি লাইট জ্বালিয়ে দিল।বিছানায় উঠে হাটের পর্দা নামিয়ে দিল। কম্বলের ভিতর ঢুকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল। টি সার্টের ভেতর হাতে ঢুকিয়ে ঠান্ডা হাত হুরের পেটে রাখল। কেঁপে উঠল হুর। হাত থেকে ফোন রেখে ঘোরার চেষ্টা করল। সোজা হয়ে শুইতেই রুদ্ধ হুরের কাঁধে নিজের মাথা ঠেকিয়ে এক পা তার শরীরের উপর ছেড়ে দিল।হুরের বাম হাতে নিজের চুলে রাখল।চুল টেনে দিতে বলল। হুর চুল টেনে দিতে লাগলো। আজ লোকটাকে কোন কিছু বলতে চাইছে না সে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে কিছু একটা নিয়ে ডিপ্রেসড আছে।রুদ্ধ মাথা উঁচু করে হুরের থুতনির সাথে নিজের ঠোঁট ঠেকালো। সেভাবেই রইল। ফেইরি লাইটের আলোয় স্পষ্ট করে চেহারা দেখা যাচ্ছে।হুর ভীত গলায় প্রশ্ন করল,

“ওই লোকটা কি আপনার বাবা?

প্রশ্ন করার সময় গলা ভেঙে আসছিল হুরের। তাও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে প্রশ্নটা করল। রুদ্ধ হুরের দিকেই তাকিয়ে ছিল। হুর যে ভয় পেয়ে তাকে প্রশ্ন করেছে তাও বুঝতে পারল।হুরকে আর একটু নিবিড় ভাবে আঁকড়ে ধরে হুরের থুতনিতে নিজের ঠোঁট ঠেকিয়ে বলতে থাকে।

“এক সময় ছিল, এখন না।

চমকে উঠল হুর। এক সময় ছিল, এখন না! তার মানে কি?চমকিত চোখ নিয়ে রুদ্ধকে পুনরায় কোন প্রশ্ন করার পূর্বে রুদ্ধ হুরের ঠোঁটে নিজের আঙ্গুল ঠেকায়। চুপ করিয়ে দেয় হুরকে।একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিজে বলে,

“আমার বাবা এবং মায়ের লাভ ম্যারেজ ছিল। দুজন দুজনকে খুবই ভালবাসতো।আমার বয়স যখন পাঁচ তখন থেকে আমার চোখে অনেক কিছুই ধরা দিতে লাগলো। বাবা অনেক রাত করে বাড়ি ফিরতে লাগলেন। মাকে আগের মত সময় দিতেন না।কথায় কথায় ঝগড়া লেগে যেত। আম্মুর দোষ না থাকলেও সে আব্বুর সাথে কথা বলতো।রাগ ভাঙ্গাতো।কিন্তু বাবা কয়েকদিন ঠিক থাকলে আবার আগের মত বদমেজাজী হয়ে যেত।এমন চলল ২ বছর। একদিন হুট করে বাবা বাসায় এক আন্টিকে নিয়ে আসে।আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিনি শকড্।শুরু হয়ে যায় বড়সড় এক ঝামেলা। সেদিন মা অনেক কেঁদেছিলেন। বাবার পায়ে ধরেন।বাবার মায়া হয় নি। সেদিন আমাকে আর মাকে বাসা থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন।অসহায় সেদিন রাস্তা রাস্তায় ঠোকর খেয়েছি। আশ্রয় হল মামার বাড়ি। সেখানেও মা কে কম কথা শুনতে হয় নি। উঠতে বসতে খোটা শুনতে হয়েছে।প্রিয় জন থেকে আঘাত পেয়ে মানসিক ভাবে একেবারেই ভেঙে পড়েছিল মা।তার উপর মামিদের করা অত্যাচারে আরো ভেঙে পড়লেন।এসব সহ্য করতে না পেরে মা স্টোক করেন। সে যাত্রায় ই মা মারা যান। একা ফেলে যান আমায়। মায়ের পর অত্যাচার শুরু হয় আমার উপর।তারা ধরে মারতো আমায়। খেতে দিত না। ঠিক মতো ঘুমাতে দিতো না।পড়তে দিত না,স্কুলে যেতে দিত না।তাই একদিন স্কুলের নাম করে পালিয়ে গিয়েছিলাম।দৌড়াতে দৌড়াতে এক গাড়ির তলে পড়ে গেছিলাম।গাড়ির নিচে পড়ে গুরুতর অবস্থা হয়ে যায় আমার। সেদিন শুরু হয় আমার জীবনের নতুন এক অধ্যায়।হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তিনি আমার চিকিৎসা করেন।আমার কেউ নেই শুনে এসে আমায় নিজের কাছে রাখেন। নিজের ছেলের মত আমায় লালন পালন করেন। তার জন্যই আমি আজ এই অব্দি এসেছি। আমার এই সব কিছুর পিছনে তার অবদান রয়েছে। সাধারণ রুদ্ধ থেকে গ্যাংস্টার রুদ্ধতে পরিণত হয়েছি আমি।

থেমে যায় রুদ্ধ।এই প্রথম কেউর সাথে এত কথা বলল সে। মন খুলে বলল।শান্তি অনুভব হচ্ছে। মনে হচ্ছে বুক থেকে পাথর নেমে গেছে।রুদ্ধের অতীত শুনে কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল হুর।বুক ভারী হয়ে আসল।রুদ্ধের বাহু শক্ত করে আঁকড়ে ধরলো।আনমনে রুদ্ধের কপালে নিজের ওষ্ঠ ছোয়ালো।

“চলিত”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here